পরিবার বলতে কী বুঝায়? পরিবারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা স¤পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

পরিবার
স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, পিতামাতা, ভাইবোন প্রভৃতি রক্তস¤পর্কিত নিকট আত্মীয়দের সমম্বয়ে গড়ে ওঠা সংক্ষিপ্ত
মানব পরিমন্ডলকে পরিবার বলে। সমাজ জীবনের প্রথম ভিত্তি ও বুনিয়াদ হলো পরিবার। মানব জীবনের যাত্রা
থেকেই এই পরিবার-ব্যবস্থার সূচনা। আদি পিতা হযরত আদম (আ.) ও আদি মাতা হযরত হাওয়া (আ.) এর
মাধ্যমেই এর প্রথম বিকাশ। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ
وَ ᗫ َــا آدَ مُ ٱسْ ــك᠑ نْ أ᠐ نــتَ وَ زَ وْ جُ ــكَ ٱل᠔ جَ نَّ ــةَ فَ ᠑ᝣ ــᢿ َمِ ــنْ حَ ᘭ ْــثُ شِ ــᚊ ْتُ مَ ا وَ ᢻ َتَ قْ ᖁ ᗖ َــا هَ ــᅮ ٰذِ ەِ
ٱلشَّ جَ ر ةَ فَ تَ ᜻᠑ ونَ ا مِ نَ ٱلظᡐ الِ مِ ينَ .
‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং যেথা ইচ্ছা আহার কর; কিন্তুু এই গাছের নিকটবর্তী
হয়ো না। তাহলে তোমরা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে।’ (সুরা আল- আরাফ : ১৯)
এতে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, মানবজীবনের যাত্রা শুরু হয়েছিল পারিবারিক সম্পর্কের পথ ধরেই। পরিবারের পথ
বিন্যাস ছিল স্বামী-স্ত্রীর মাধ্যমে। তারপর তা ধীরে ধীরে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এক আদম (আ.) এর পরিবার
থেকে উৎসারিত হয়েছে অগণিত বনি আদমের বিন্যস্তসংসার। তাই প্রত্যয়ের সাথেই বলা যায়, পরিবারই সমাজ
জীবনের ভিত্তি মূল। পারিবারিক পবিত্রতা ও সুস্থতার উপরই নির্ভর করে সমাজ, রাষ্ট্র এবং বিশ্বময় মানব জাতির
পবিত্রতা ও সুস্থতা।
পরিবারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
সমাজ জীবনের প্রাথমিক ইউনিট পরিবার ঃ মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে মিলে-মিশে, সুখে-শান্তিতে বসবাস
করা মানুষের স্বভাব। সমাজ ছাড়া সভ্য মানুষের জীবন অচল। বৃহত্তর সমাজ জীবনের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান হল
পরিবার। ব্যক্তি জীবনে যে সব সৎ গুণাবলি অর্জন করা হয়, পারিবারিক জীবনেই তার পরিচর্যা হয়ে থাকে। ব্যক্তি
জীবন ভাল না হলে যেমন ভাল পরিবার গঠিত হয় না, তেমনি ভাল পরিবার না হলে, আদর্শ ও সুন্দর সমাজ
গঠিত হয় না।
পরিবার গঠনের উপকরণ ঃ পারিবারিক সুখ-শান্তির জন্য যেমন পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় হওয়া আবশ্যক, তেমনি
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রেম-প্রীতি, সহমর্মিতা, সহানুভূতি এবং পারস্পরিক কর্তব্য ও দায়িত্ব পালন করা
অপরিহার্য। একটি আদর্শ পরিবার গঠনের জন্য যেসব উপাদনের প্রয়োজন তার সবকিছুই ইসলামে বিদ্যমান।
ইসলামী পরিবারে বল্গাহীনতা, দায়িত্বহীনতা এবং উচ্ছৃঙ্খলার কোন স্থান নেই। ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, সমঝোতা,
সহযোগিতা, ¯েœহ-মমতা, প্রেম-প্রীতি, শ্রদ্ধা, ভালবাসা ইত্যাদি গুণাবলি আদর্শ সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত। আর এই
সব গুণের অনুশীলন ও পরিচর্যা পরিবারেই হয়ে থাকে। সুতরাং ইসলামী সমাজ গঠনে ইসলামী পরিবারের গুরুত্ব
অপরিসীম।
পরিবার সমাজ গঠনের ভিত্তিঃ পরিবার হচ্ছে সমাজ জীবনের প্রথম ভিত্তি ও প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান। পরিবার নিয়েই
সমাজ গঠিত হয়। পরিবার যেমন হবে, সমাজও তেমন হবে। সুস্থ ও সুন্দর পরিবারের ওপরই সুস্থ ও সুন্দর সমাজ
ও রাষ্ট্রগঠন নির্ভর করে। সুষ্ঠু পারিবারিক জীবন একটি সুষ্ঠু রাষ্ট্রের প্রতীক। পরিবার মানুষের আদি ও আদিম
সংগঠন। পরিবারকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে বৃহত্তর মানব সমাজ। আদি পিতা হযরত আদম (আ) এবং আদি
মাতা হযরত হাওয়া (আ) সর্বপ্রথম পারিবারিক জীবন গঠন করেন। পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, পুত্র-কন্যা
নিয়ে যে ছোট সংসারটি গড়ে ওঠে তাকেই বলে পরিবার। বিবাহের মাধ্যমে সহযোগিতার ভিত্তিতে নারী-পুরুষ
সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষুদ্র সংগঠন পরিবার গঠন করে। মানব পরিবার গঠনের ভিত্তি হিসেবে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে

فَ ٱنكِ حُ وا᠔ مَ ا طَ ابَ ل᠐ ᠑ᝣ مْ مِّ نَ ٱل ِّ سَ ቯءِ .
‘বিয়ে কর মহিলাদের মধ্য হতে যাদেরকে তোমাদের পছন্দ হয়।’ (সুরা আন-নিসা ঃ ৩)
পরিবার গঠন ও বিয়ে স¤পর্কে মহানবী (সা.) বলেন- ‘বিয়ে আমার সুন্নাত, যে আমার সুন্নাত মোতাবেক আমল
করে না সে আমার উম্মাত নয়।’ (মুসনাদে আহমদ)
ইসলামী পরিবারের ভিত্তিমূল ঃ যে পরিবার ইসলামী ভাবধারা, ইসলামের নীতিমালা ও ইসলামের বিধি-বিধান
অনুযায়ী গড়ে ওঠে এবং পরিচালিত হয় তাকে ইসলামী পরিবার বলে। ইসলামী পরিবারের সকল সদস্যই
মুসলিম। কুরআনের বাণী অনুসারেÑ প্রথম মানব-মানবী আদম (আ) ও হাওয়া (আ)-কে কেন্দ্র করেই ইসলামী
পরিবার গড়ে ওঠে। এই প্রথম পরিবারের সদস্যদ্বয়কে লক্ষ্য করে আল্লাহ তা’আলা বলেনÑ
ᘌ َاآدَ مُ ٱسْ ك᠑ نْ أ᠐ نْ تَ وَ زَ وْ جُ كَ ٱل᠔ جَ نَّ ةَ وَ ᠑ᝏ ᢿ َمِ نْ هَ ا رَ غَ دا᠍ حَ ᘭ ْثُ شِ ᚊ ْتُ مَ ا.
‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং যেখান থেকে ইচ্ছে স্বচ্ছন্দে পানাহার কর।’ (সুরা আলবাকারা : ৩৫)
মানব জীবনের পরিপূর্ণতার জন্য পরিবার ঃ মানব জীবনকে পরিপূর্ণতা দান এবং মানব সৃষ্টির ধারা অব্যাহত
রাখার জন্যে এবং তাদের ওপর খিলাফতের দায়িত্ব অর্পণের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা’আলা আদম ও হাওয়া (আ)-
কে সৃষ্টি করেছিলেন। আর তাঁদের মধ্যে এক মধুর বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। সৃষ্টির শুরু থেকেই নারী-পুরুষ
একে অপরের পরিপূরক, পরিপোষক, একে অপরের ভূষণ হয়ে আছেন। উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক মধুর,
সমঝোতাপূর্ণ, সহানুভূতি ও হৃদ্যতাপূর্ণ হয়। এই পবিত্র উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ আদম (আ)-এর দেহের অংশ
থেকে হাওয়া (আ)-কে সৃষ্টি করেছেন। এ জন্যেই নারী-পুরুষের মধ্যে আদিকাল থেকেই এত মধুর আকর্ষণ এবং
প্রাণের টান বিদ্যমান। আল্লাহ তা’আলা বলেনÑ
ᘌ ٰأ᠐ يُّ هَ ــا ٱلنَّ ــاسُ ٱتَّ قُ ــو ا᠔ رَ ᗖَّ ᠑ᝣ ــمُ ٱلᡐ ــذِ ى خَ ل᠐ قَ ᠑ᝣ ــمْ مِّ ــن نَّ فْ ــس᠏ وَ احِ ــدَ ةٍ وَ خَ ل᠐ ــقَ مِ نْ هَ ــا زَ وْ جَ هَ ــا
وَ ᗖ َثَّ مِ نْ هُ مَ ا ر᠒جَ اᢻ ًك᠐ ثِ يرا᠍ وَ ᙏ ِسَ ቯءً .
‘হে মানব তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তা
থেকে তার জুড়ি সৃষ্টি করেছেন। তিনি তাদের দুজন থেকে বহু নর-নারীর বিস্তার ঘটিয়েছেন।’ (সুরা আন-নিসা :
১)
সুশৃঙ্খল জীবনের জন্য ঃ সমাজে সুখে শান্তিও সুশৃঙ্খল জীবন যাপনের জন্য পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধনের
গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিম পরিবারের ভূমিকা আরও বেশি। পারিবারিক জীবন মানুষকে কুপ্রবৃত্তি, পশুবৃত্তি,
উচ্ছৃঙ্খলতা, সীমালংঘন, অধিকার হরণ, মানবেতর জীবন প্রভৃতি পশু-চরিত্র থেকে মুক্ত ও পবিত্র করে। মানুষকে
সুনিয়ন্ত্রিত, সুশৃঙ্খল, কল্যাণকর এবং পবিত্র গুণ-বৈশিষ্ট্যে প্রতিষ্ঠিত করে।
জাতি গঠন ও বিশ্ব শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য ঃ ইসলামী পরিবারে সদস্যদের মধ্যে প্রেম-প্রীতি, ¯েœহ-মমতা,
সমঝোতা সহানুভূতি, শ্রদ্ধা, ভালবাসা, মর্যাদা, তাহযীব-তামাদ্দুন, আদব-কায়দা, সাহায্য সহযোগিতা এবং
পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সৃষ্টি হয়। যা বৃহত্তর সমাজ ও জাতিগঠনে এবং বিশ্ব শান্তিপ্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। পারিবারিক জীবনের তাৎপর্য বর্ণনা করে আল্লাহ তা’আলা বলেনÑ
وَ مِ نْ آᘌ َاتِ هِ أ᠐ نْ خَ ل᠐ قَ ل᠐ ᠑ᝣ م مِّ نْ أ᠐ نفُ سِ ᜓ᠑ مْ أ᠐ زْ وَ اجا᠍ لᡒ ᙬ َسْ ك᠑ نُ وۤ ا᠔ إِ ل᠐ يْ هَ ا وَ جَ عَ لَ بَ ᚏ ْنَ ᠑ᝣ م مَّ وَ دَّ ةً
وَ رَ حْ مَ ةً .
‘তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের
জীবন সংগিনী যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিলাভ করতে পার এবং তিনি তোমাদের পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা
ও মমতা সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আর-রূম : ২১)
ইহ-পরকালীন কল্যাণের জন্য ঃ সমাজে সুখে শান্তিতে বসবাস এবং ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের জন্য
ইসলামে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। এই বিশাল সৃষ্টি জগতের সব কিছু আল্লাহ তা’আলা পুরুষ ও নারী এই দুই
শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। মানুষের মধ্যেও নারী-পুরুষ এই দুই শ্রেণি রয়েছে। এই দুই-শ্রেণির মানুষ বিবাহের
মাধ্যমে পরিবার গঠন করে ইহ-পরকালীন প্রভ‚ত কল্যাণ করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
وَ مِ ن ᛿᠑ لِّ شَ يْ ءٍ خَ ل᠐ قْ نَ ا زَ وْ جَ يْ ن᠒.
‘আমি প্রত্যেক বস্তুজোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা আয-যারিয়াত : ৪৯)
পরিবার মানব প্রজন্মের ধারা অব্যাহত রাখার প্রতিষ্ঠান ঃ সৃষ্টির প্রত্যেক প্রজাতিই তাদের প্রজন্ম, সন্তান
ধারণ, উৎপাদনের প্রচলিত, প্রকৃতিগত নিজ নিজ জাতীয় সত্তার অস্তিত্ব ও সৃষ্টিশীলতা রক্ষা করে চলেছে তথা
বংশবৃদ্ধি করে চলেছে। আর এই সৃষ্টিশীলতাই হল বিশাল সৃষ্টিজগতের প্রধান বৈশিষ্ট্য। আর এটা পবিত্র
পারিবারিক জীবন ব্যবস্থার অন্যতম উদ্দেশ্য। আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে-
وَ خَ ل᠐ قَ مِ نْ هَ ا زَ وْ جَ هَ ا وَ ᗖ َثَّ مِ نْ هُ مَ ا ر᠒جَ اᢻ ًك᠐ ثِ يرا᠍ وَ ᙏ ِسَ ቯءً .
‘আর তিনি তা থেকেই সৃষ্টি করেছেন তার জুড়িকে এবং তাদের দু’জন থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও
নারী।’ (সুরা আন-নিসা : ১)
মানব সভ্যতার অস্তিত্বের নিদর্শন ঃ অন্যান্য সৃষ্টি জগতের সাথে কিছুটা সামঞ্জস্য থাকলেও সৃষ্টি জগতের
অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় মানব জীবনের ধারা স্বতন্ত্র খাতে প্রবাহিত। মানব জীবন অন্যান্য প্রাণিকুলের মত নয়।
বেঁচে থাকাই মানব জীবনের উদ্দেশ্য নয়। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। মানুষের জীবনের মহৎ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
আছে। তাই মানব জীবন বিশেষ বিধি বিধান ও নিয়ম নীতির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে
রাখার জন্য মানব সমাজের মধ্যে মায়া-মমতা, প্রেম-প্রীতি, মান-মর্যাদা, তাহযীব-তামাদ্দুন, সভ্যতা-কৃষ্টি,
বিবেক-বুদ্ধি, দায়িত্ব-কর্তব্যবোধ, সাহায্য-সহযোগিতা ও সহানুভূতি ইত্যাদি গুণ-বৈশিষ্ট্যের লালন ও বিকাশ
একান্তআবশ্যক। সভ্যতার অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য গুণাবলির বিকাশ ও লালন ক্ষেত্র হচ্ছে- সুশৃঙ্খল, বৈধ এবং
সুনিয়ন্ত্রিত বৈবাহিক সূত্রে গাঁথা পুত:পবিত্র পারিবারিক জীবন। এই পবিত্র দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবন মানুষের
কু-রিপু, পশুবৃত্তি, উচ্ছৃঙ্খলতা, অধিকার হরণ, মানবেতর জীবন যাপন প্রভৃতি পশু চরিত্রকে শুধু দমনই করে না,
বরং মানব জীবনকে সুনিয়ন্ত্রিত, সুসংহত, সৃশৃঙ্খল, কল্যাণমুখী এবং পূত-পবিত্র করতে সহায়তা করে।
পশুত্ব ও মানবেতর জীবন থেকে পরিত্রাণ ঃ নারী পুরুষের লাগামহীন, অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত মেলামেশা মানুষকে
পশুত্ব ও মানবেতর জীবনের অতল অন্ধকারে নিক্ষেপ করে। ফলে গোটা মানব সমাজে যে মারাত্মক কুফল নেমে
আসে, তা থেকে রেহাই পাওয়ার কোন উপায় থাকেনা । ইসলামী পরিবার প্রথা মানুষকে পশুত্ব ও মানবেতর
জীবন থেকে পরিত্রাণ দেয়।
মানব শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশ কেন্দ্র ঃ মানব শিশু অত্যন্তদুর্বল ও অসহায় অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে।
পরিবারে অত্যন্তমায়া-মমতা ও ¯েœহ-যতেœ সে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি লাভ করে। পারিবারিক দৃঢ় বন্ধন ও
লালন-পালন ছাড়া তার দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ও উন্নতি সম্ভব নয়।
মানব শিশুর শিক্ষায়তনঃ মাতা-পিতা সন্তানদের শুধু লালন-পালনই করেন না, তাদের লেখা-পড়া, শিক্ষাসংস্কৃতি, আদব-কায়দা ও জীবন প্রতিষ্ঠায় এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। শিশু-সন্তানের কথা বলা আরম্ভ থেকে
নিয়ে শিক্ষাঙ্গণে প্রবেশের প‚র্ব পর্যন্তপরিবারই হচেছ সন্তানের প্রকৃত শিক্ষা কেন্দ্র। আজকের শিশুকে আগামী
দিনের কর্ণধার হওয়ার প‚র্ব প্রস্তুতি পরিবার থেকেই নিতে হয়। যে পরিবার শিক্ষিত, ভদ্র ও আদর্শবান তাদের
সন্তান-সন্ততিও ভদ্র, শিক্ষিত ও আদর্শবান হয়ে গড়ে উঠে।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, মানুষের জন্য পারিবারিক জীবন এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ
ও অপরিহার্য বিষয়। এছাড়া মানব জীবনের অস্তিত্ব বিকাশ অসম্ভব। মানব সভ্যতার উৎকর্ষসাধন, পূত-পবিত্রকরণ এবং পরিচ্ছন্নতার জন্য ইসলামের পরিবার প্রথা এক অনিবার্য প্রয়োজন।
সারকথা
স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা, ভাই-বোন প্রভৃতি রক্ত স¤পর্কিত নিকট আত্মীয়দের সমন্বয়ে গড়ে উঠা
সংক্ষিপ্ত মানব পরিমন্ডলকে পরিবার বলে। সমাজ জীবনের প্রথম ভিত্তি ও বুনিয়াদ হল পরিবার। মানব জীবনের
যাত্রা লগ্ন থেকেই এই পরিবারের সূচনা। মানব পরিবারের প্রথম সদস্য ছিলেন হযরত আদম (আ.) ও বিবি হাওয়া
(আ)। সমাজ জীবনে পরিবারের গুরত্ব অপরিসীম। ব্যক্তি জীবনে যে সব সৎগুণ অর্জন করা হয়, পারিবারিক
জীবনেই তার পরিচর্যা হয়ে থাকে। আদর্শ সমাজ গঠনের জন্য যাবতীয় গুণের অনুশীলন হয় এই পরিবারে। সুষ্ঠু
পারিবারিক জীবন একটি সুষ্ঠু ও আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক। ইসলামী পরিবারে ইসলামী ভাবধারা, ইসলামের
নীতিমালা ও বিধি-বিধান সুন্দরভাবে অনুশীলন করা হয়। পরিবারের মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে প্রেম-প্রীতি, ¯েœহ
মমতা, সমঝোতা-সহানুভুতি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা, তাহজীব-তামাদ্দুন, আদব-কায়দা, সাহায্য-সহযোগিতা এবং
পার¯পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সৃষ্টি হয়। সভ্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবার যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি মানব
প্রজন্মধারা পবিত্র পন্থায় অব্যাহত রাখাও পরিবারের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য।
১. সমাজ জীবনের ম‚লভিত্তি কি?
ক. সমাজবদ্ধ জীবন যাপন খ. পরিবার
গ. মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজন গ. কোন উত্তরই ঠিক নয়।
২. পরিবার ব্যবস্থার উৎপত্তি কোত্থেকে?
ক. হযরত আদম (আদ.) থেকে খ. হযরত ইবরাহীম (আ.) থেকে
গ. হযরত মুহাম্মদ (স.) থেকে ঘ. হযরত আদম (আ.) ও বিবি হাওয়া থেকে।
৩. বিয়ে করা স¤পর্কে ইসলামের বিধান হলক. বিয়ে করা ফরয খ. বিয়ে করা রাসূলের সুন্নাত
গ. বিয়ে করা হারাম ঘ. সব কয়টি উত্তরই সঠিক।
৪. পৃথিবীর প্রথম মানব কে?
ক. হযরত মুহাম্মদ (সা.) খ. হযরত নূহ (আ.)
গ. হযরত শীছ (আ.) ঘ. হযরত আদম (আ.)।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. পরিবারের উৎপত্তি স¤পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দিন।
২. ‘‘পরিবার সমাজ গঠনের মূলভিত্তি’’- আলোচনা করুন।
৩. সুশৃঙ্খল জাতি গঠনে পরিবারের ভ‚মিকা আলোচনা করুন।
৪. ইসলামী পরিবারের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. পরিবার বলতে কী বুঝায়? পরিবারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা স¤পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]