নারী-নির্যাতন এবং ব্যভিচার ও ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ প্রতিরোধে সূরা আল-নূরের বিধান আলোচনা করুন।

সূরা আল-নূরে সমাজ সংস্কারমূলক অনেকগুলো নীতি এবং বিধি-বিধান আলোচিত হয়েছে। এ সকল সামাজিক বিধিবিধান নাযিল করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলিম সমাজকে কলুষমুক্ত রাখা, সমাজে এর বিস্তার রোধ করা। আর যদি সমাজ
কোন কারণে কলুষিত হয়ে যায়, তবে অনতিবিলম্বে তার প্রতিবিধান করা। একমাত্র আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের
মাধ্যমেই মানব সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সুস্থতা ফিরে আসতে পারে। কেননা সুষ্ঠু ও সুস্থ সমাজ জীবন নির্ভর করে সুষ্ঠু
সামাজিক বিধি-বিধানের উপর। আল্লাহ তাআলা সূরা আল-নূরের প্রথম দিকে এমন সব বিধি-বিধান নাযিল করেছেন
যাতে সমাজ কোন অনৈতিক ও চরিত্র বিধ্বংসী বাধিতে আক্রান্তহতে না পারে। আর যদি আক্রান্তহয়েই যায় তা হলে
যেন তা প্রতিরোধ ও নির্মূল করা যায়। এ সূরার শেষার্ধে এমন সব বিধি-বিধান ও উপদেশ প্রদান করা হয়েছে যার
মাধ্যমে সমাজে দোষ ত্রট্টটি, পাপ ও অন্যায়ের উৎসসমূহ বন্ধ হয়ে যায়। নারী নির্যাতন ও ব্যভিচার রোধে সূরা আলনূরে বর্ণিত সামাজিক সংস্কারমূলক বিধানাবলী এখানে আলোচনা করা হলব্যভিচারের শাস্তিসম্পর্কিত বিধান
ব্যভিচার একটি অত্যন্তজঘন্য ও কদর্যপূর্ণ সামাজিক অপরাধ। ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটি একটি মহাপাপ, যা সমাজকে কলুষিত
করে। পরিবারের ভিত্তি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে, দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়। বিবাহ বা পারিবারিক বন্ধনের দিকে নারী
পুরুষের মধ্যে তীব্র অনীহার সৃষ্টি করে। তা ব্যাপক আকার ধারণ করলে সমাজের যুবক-যুবতীরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ
না হয়ে পশুর ন্যায় চরম পাশবিক যৌনতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। এর দরুন পবিত্র মানবীয় বংশধারার বিশেষত্ব হারিয়ে
যায়। যে ব্যক্তি এ কাজের খারাপ পরিণতি অনুধাবন করতে পারবে, এর মানবীয় মর্যাদা বিধ্বংসী ভূমিকা বুঝতে সক্ষম
হবে, সেই সত্যিকারভাবে উপলব্ধি করতে পারবে তা নিষিদ্ধ হওয়ার গভীর তাৎপর্য, এর জন্য প্রণীত শাস্তির বিধানের
যৌক্তিকতা। ব্যভিচারের শাস্তিশুধু ইসলাম ধর্মেরই বর্ণিত হয়নি। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান কাল পর্যন্তসমগ্র মানব
সমাজেই এর শাস্তির বিধান ছিল এবং আছে। আল-কুরআনে সূরা আল-নিসার তৃতীয় রুকুতে ব্যভিচারকে একটি
সামাজিক অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। (সূরা নিসা আয়াত ১৫-১৬) আলোচ্য সূরায় ব্যভিচারকে একটি
ফৌজদারী অপরাধরূপে ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে ব্যভিচারী পুরুষ ও নারীর জন্য শাস্তিস্বরূপ একশত
বেত্রাঘাত নির্ধারণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন-
ٱلزَّ انِیَة ُ وَ ٱلزَّ انِى فَٱجْلِدُوا ْ كُلَّ وَ احِ دٍ مِّنْھُمَا مِئَة َ جَل ْدَةٍ
“ব্যভিচারিনী ও ব্যভিচারী-তাদের প্রত্যেককে একশত কশাঘাত করবে।” (সূরা আন-নূর : ২)
উল্লেখ্য যে, ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ অবিবাহিত হলে সে অবস্থায় এ শাস্তির বিধান প্রযোজ্য। আর বিবাহিত হলে সে
ক্ষেত্রে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার বিধান রয়েছে।
ইসলামের বিধান মতে, অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করার ন্যায় এটিও একটি বড় অপরাধমূলক কাজ। সূরা আল-
ফোরকানের ৬৮নং আয়াতে শিরক, বিনা কারণে নর-হত্যা ও ব্যভিচারকে একই পর্যায়ের জঘন্য অপরাধরূপে চিহ্নিত
করা হয়েছে। হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (র) বলেনالزنا من اعظم شیئا النفس قتل بعد اعلم لا
‘নর হত্যার পর যিনার তুলনায় অধিক অপরাধের কাজ আর কোনটি আছে বলে আমার জানা নেই।’
ব্যভিচারের জন্য নির্ধারিত শাস্তিকতিপয় শর্ত স্বাপেক্ষে বাস্তবায়ন করা যাবে, যা পরবর্তী পাঠে বর্ণিত হয়েছে।
ব্যভিচারী নারী-পুরুষের বিবাহ সম্পর্কিত বিধান
ব্যভিচার শুধু অপরাধই নয় বরং তা অনেক অপরাধের সমষ্টি। তাই ব্যভিচারী নারী ও পুরুষের সঙ্গে সৎ সতী-সাধ্বী
মুমিন নারী-পুরুষের বিবাহ সম্পর্ক স্থাপিত হতে পারে না। এমনকি তাদের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করার নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে। ব্যভিচারের মত গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য এ বিধান রাখা হয়েছে। তবে যারা তাওবা করে
নিজেদের সংশোধন করে নেয় তাদের জন্যে উক্ত বিবাহ সম্পর্কিত বিধান প্রযোজ্য হবে না। কেনান তাওবা ও নৈতিক
সংশোধনের পর তাদেরকে ব্যভিচারী হিসেবে গণ্য করা হবে না।
মিথ্যা অপবাদ আরোপের শাস্তিসম্পর্কিত বিধান
কেউ কাউকে ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ দিলে তা প্রমাণ করার জন্য চারজন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করতে হয়। সাক্ষী
উপস্থিত করতে না পারলে ইসলামী শরীআত এহেন অপবাদকে কঠোর অপরাধ হিসেবে সাব্যস্তকরে। আর এ শাস্তি
স্বরূপ ৮০টি বেত্রাঘাত নির্ধারণ করা হয়েছে। কেউ যাতে কোন পুরুষ বা নারীর প্রতি বিনা প্রমাণে ব্যভিচারের অপবাদ
আরোপ করার দুঃসাহস না পায়। সে জন্য সাক্ষ্য-প্রমাণের বিষয়টিকে এত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
স্বামী-স্ত্রীর প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ সংক্রান্তবিধান
কোন স্বামী যদি স্ত্রীর উপর অথবা স্ত্রী স্বামীর উপর ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ দেয়, তবে তার জন্য ইসলামী শরীআতে
লি‘আনের বিধান রয়েছে।
আর লি‘আন হল- অপবাদ প্রদানকারী স্বামী বা স্ত্রী তার অপবাদের সত্যতার পক্ষে চারবার শপথ করবে এবং পঞ্চম বার
বলবে, সে যদি মিথ্যাবাদী হয়- তাহলে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ণিত হোক। অনুরূপভাবে যাকে অপবাদ দেওয়া
হয়েছে সেও তার পবিত্রতা প্রমাণের জন্য চারবার শপথ এবং পঞ্চমবার উক্ত কথাটি বলবে। এক্ষেত্রে যদি
অপবাদদানকারী শপথ করতে অস্বীকার করে তাহরে তাকে আশিটি বেত্রাঘাত করার বিধান রয়েছে।
ভিত্তিহীন খবর প্রচার শাস্তিযোগ্য অপরাধ
হযরত আশেয়া (রা)-এর উপর মুনাফিকদের আরোপিত মিথ্যা অভিযোগের শাস্তির বিধান ও সূরায় বর্ণিত হয়েছে। যে
সব লোক সমাজে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ ছড়ায় আর নিজেদের কথার সত্যতার
পক্ষে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করতে না পারে তাদের জন্য আশিটি বেত্রাঘাত-এর বিধান রয়েছে। আর অন্য যে কোন
বিষয়ে তাদের সাক্ষীও গ্রহণযোগ্য হবে না। তারা হল পাপী, অন্যায়কারী ও সত্য বিচ্যুত।
এ ব্যাপারে ইসলাম একটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছে আর তা হল-সমাজে সামগ্রিক সুসম্পর্কের ভিত্তি হবে পারস্পরিক
শুভ ধারণা। প্রত্যেক ব্যক্তিকেই নির্দোষ মনে করতে হবে। দোষ বা অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্তসে এ মর্যাদাই
পেতে থাকবে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ রটানো যাবে না।
অপরের গৃহে প্রবেশ সংক্রান্তবিধান
সাধারণভাবে লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, কেউ যেন অপরের ঘরে বিনা অনুমতিতে অবাধে প্রবেশ না করে।
দেখা-সাক্ষাতের ব্যাপারে সামাজিক রীতি-নীতি ও শিষ্টাচার সম্পর্কিত বিধান হল, কারো সাথে সাক্ষাতের প্রয়োজন হলে
প্রথমে অনুমতি নিবে এবং সালাম দিয়ে প্রবেশ করবে। বিনা অনুমতিতে এবং সালাম না দিয়ে কারো গৃহে প্রবেশ করা
অন্যায়। কারণ অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলে কারো একান্তব্যক্তিগত অবস্থা অপরের নিকট প্রকাশ পেয়ে যেতে পারে।
পর নারীর প্রতি বেপর্দা অবস্থায় দৃষ্টিপাত হতে পারে। অবাধ মেলামেশার কারণে যৌন অপরাধে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা
থাকে। তাই অনুমতি ও সালাম ছাড়া অন্যের গৃহে প্রবেশ করাকে আল্লাহ্ কড়াভাবে নিষেধ করেছেন। এ বিধানটিও
নারী নির্যাতন রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দৃষ্টি সংযত ও লজ্জাস্থান নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্তবিধান
ইসলামের বিধান মোতাবেক নারী পুরুষ উভয়ই পরস্পরের প্রতি তাদের লোলুপ দৃষ্টি বিনিময় করা অবৈধ। অর্থ্যাৎ
একজন পুরুষের জন্য নিজের স্ত্রী এবং মুহাররমাত (যাদেরকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা অবৈধ এমন মহিলা) ছাড়া অন্য
কোন স্ত্রীলোককে এবং একজন স্ত্রীলোক নিজের স্বামী ও মুহাররম (যে সমস্তপুরুষকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা বৈধ নয়
এমন পুরুষ) ছাড়া অন্য কোন পুরুষকে কামভাব নিয়ে চোখ ভরে দেখা অবৈধ। নারী-পুরুষ উভয়ে তাদের দৃষ্টিকে
অবশ্যই নিচু ও সংযত রাখবে। এরূপ দৃষ্টি নিক্ষেপকে ইসলামী শরীআত চোখের ব্যভিচার হিসেবে অভিহিত করেছে।
এ বিধান পালিত হলে অবশ্যই সমাজে নারী নির্যাতন কমবে এবং ধর্ষণ ও ব্যভিচার প্রতিরোধ সহজতর হবে।
নারীদের পর্দা সম্পর্কিত বিধান
নারীদের পর্দা সম্পর্কিত বিধান এই যে, নারীরা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় কাজ করতে
পারবে। তবে এ সময় তাকে সংযত হয়ে শালীন ও মার্জিত পোশাক পরে তথা মাথা ও শরীরকে বড় ওড়না বা চাদর
দ্বারা আবৃত করে পর্দাসহ চলতে হবে। নিজেদের সাজ-সজ্জা ও রূপ-লাবণ্য লুকিয়ে রাখতে হবে। কোন অবস্থাতেই তা
বাইরের অপর পুরুষের সামনে প্রকাশ করা যাবে না। শব্দ করে এমন কোন অলংকার পরিধান করে বা খুব আটÑষাট
পোশাক পরিধান করে অথবা শরীরের বেশ কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খোলা থাকে এমন পোশাক পরিধান করে ঘরের বাইরে
যাওয়া অবৈধ। বস্তুত নির্দিষ্ট পরিবেষ্টনীর বাইরে নিদেজের সাজ-সজ্জা ও রূপ-সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে নারীদের
চলাফেরা ও কাজ কর্ম করতে নিষেধ নেই। তবে ইচ্ছা করে বা বেপরোয়াভাবে ঘোরাফেরা করা বা সৌন্দর্য লোলুপ দৃষ্টি
পর নারীদের থেকে ফিরিয়ে নেবে এবং নারীরা পুরুষ কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। আর এতে নারী
নির্যাতনও হ্রাস পাবে।
পুরুষদের পর্দা সম্পর্কিত বিধান
নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য পর্দা মেনে চলা ফরয। পুরুষ তার চোখ পরনারী থেকে নিয়ন্ত্রণ করবে ও সংযত রাখবে।
নিজেকে অবৈধ যৌনাচার থেকে হেফাজত রাখবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন-
قُلْ ل ِّلْمُؤْ مِ نِینَ یَغُضُّوا ْ مِ نْ أ َبْصَارِ ھِمْ وَ یَحْ فَظُوا ْ فُرُ وجَھُمْ ذٰ لِكَ أ َزْ كَىٰ
لَھُمْ إِنَّ ٱللَّھَ خَبِیرٌ بِمَ ا یَصْنَعُونَ
“মুমিনদের বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। এটা তাদের জন্য উত্তম।
তারা যা করে আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।” (সূরা আন-নূর : ৩০)
হাদীসে এসেছে- “চোখের ব্যভিচার হল পরনারীর প্রতি লোলুপ দৃষ্টিতে তাকানো।”
বৃদ্ধা নারীদের পর্দা সংক্রান্তবিধান
বৃদ্ধা নারীদের পর্দা সংক্রান্তবিধানে কিঞ্চিত শৈথিল্য আরোপ করা হয়েছে। তারা যদি নিজেদের ঘরের মধ্যে
স্বাভাবিকভাবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খোলা রাখে, তাতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তারা যেন পর-পুরুষের নিকট তাদের সৌন্দর্য
প্রদর্শন না করে বেড়ায়। বরং বার্ধক্য অবস্থায়ও যদি তারা স্বীয় শারীরিক সৌন্দর্য ও অলংকারাদি সংগোপনে রাখতে
অভ্যস্তহয় তবে তা তাদের জন্য উত্তম।
অবিবাহিত নারী পুরুষদের বিবাহের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্তবিধান
সমাজে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষদের অবিবাহিত থাকাকে অপছন্দনীয় কাজ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। যারা বিবাহের
উপযুক্ত অথচ বিবাহ হয়নি, তাদের বিবাহ সম্পাদনের জন্য অভিভাবকদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রীত দাস-
দাসীদের মধ্যে যারা যোগ্য তাদের বিবাহ সম্পাদন করার জন্য মালিক প্রভুদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেননাঅবিবাহিত অবস্থা অনেক ক্ষেত্রে অশ্লীল কাজের উদ্ভাব হয়ে থাকে। কাজেই বিবাহের উপযুক্ত হলে প্রত্যেক নারীপুরুষকেই বিবাহিত জীবন যাপন করা কর্তব্য। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এ প্রসঙ্গে বলেছেনمنى فلیس سنتى عن رغب من . سنتى من النكاح
“বিবাহ হল আমার নীতি। আর যে ব্যক্তি আমার নীতি উপেক্ষা করবে সে আমার অনুসারী নয়।”
পতিতাবৃত্তি সংক্রান্তবিধান
পতিতাবৃত্তি একটি জঘন্য সামাজিক অপরাধ। ইসলাম বেশ্যাবৃত্তি এবং যারা এ পেশায় নিয়োজিত তাদেরকে কঠোর
ভাষায় নিন্দা করে। তাদের ব্যাপারে কঠোর শাস্তির ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া নারীদের বা দাসীদের ব্যভিচারে বাধ্য
করা, তাদের দ্বারা দেহব্যবসায় বা পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে অর্থোপার্জন করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তদানীন্তন আরব
দেশে দাসীদের দ্বারা এহেন জঘন্য কাজ করানো হতো। এখনো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে পাশ্চাত্য দেশসমূহে
নারীদেরকে এ পেশায় নিয়োজিত রেখে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে এবং পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে আধুনিক সমাজে নারী
নির্যাতন করা হচ্ছে। ইসলাম ব্যভিচারের শাস্তিপ্রবর্তন করে মানবতার জন্য অবমাননাকর জঘন্য কাজ পতিতাবৃত্তি
কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।
সারকথা
সূরা আল-নূরে অবাধ যৌনাচার ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করার জন্য যৌক্তিক ও কার্যকর বিধান দেওয়া হয়েছে। এর
ফলে সমাজ ব্যভিচার, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি ও এ জাতীয় সামাজিক অপবাধ থেকে কলুষমুক্ত থাকবে। পরিবার, সমাজ ও
পরিবেশকে সুস্থ, সুশৃঙ্খল ও বেকারমুক্ত রাখার জন্য ইসলামের বিধানাবলী খুবই উপযোগী।
এ সূরায় নারী নির্যাতন, যৌন অপরাধ ও অশ্লীলতা প্রতিরোধমূলক যেসব বিধানের কথা আলোচিত হয়েছে তা হল নিজ
নিজ দৃষ্টি ও নিজ-নিজ রূপ সৌন্দর্যকে সংযত রাখা এবং দেহ মনের পবিত্রতা, লজ্জাস্থানের নিয়ন্ত্রণ, অপরের ঘরে
প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ, পর্দার বিধান, নার-নারীর অবিবাহিত থাকাকে নিরুৎসাহিত করা ও যাবতীয় অশ্লীলতা থেকে দূরে
থাকার ব্যবস্থা। আর অপরাধ সংঘটিত হলে যেসব দন্ড-বিধান কার্যকর করে সমাজকে সুস্থ রাখার বিধান রয়েছে তাহলব্যভিচারী নারী-পুরুষকে বেত্রাঘাত ও মৃত্যুদন্ড, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের ক্ষেত্রে লি‘আন ও বেত্রদন্ড এবং
বেশ্যা বা পতিতাবৃত্তির নিষিদ্ধতার বিধানাবলী। মূলত এসব বিধান বাস্তবায়ন করে-নারী-পুরুষের সমন্বিত মর্যাদা রক্ষা
করা যায় এবং একটি পূত:পবিত্র ও শান্তিময় সমাজ গড়ে তোলা যায়।
সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন দিন
১. আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ক. শান্তি
খ. উচ্ছৃঙ্খলতা
গ. দরিদ্রতা
ঘ. পশ্চাদপদতা
২. সূরা আল-নূর নাযিলের উদ্দেশ্য হচ্ছেক. সমাজ সংস্কার করা
খ. নারী নির্যাতন রোধ করা
গ. নারী সমাজকে মর্যাদা দান করা
ঘ. সব উত্তরই সঠিক
৩. বিশ্ব সমাজের কাছে ব্যভিচার একটিক. অবৈধ কাজ
খ. নিন্দনীয় কাজ
গ. শাস্তিযোগ্য অপরাধ
ঘ. মহাপাপ
৪. বিবাহ করাক. ফরয কাজ
খ. সুন্নত
গ. মাকরূহ
ঘ. সব ক’টি উত্তরই ঠিক।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর ঃ ১. ক, ২. ঘ, ৩. গ, ৪. ঘ.
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. ব্যভিচারের শাস্তির যৌক্তিকতা আলোচনা করুন।
২. ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদের শাস্তিআলোচনা করুন।
৩. সূরা আল-নূরে নারীর মর্যাদা সংরক্ষণ ও নারী নির্যাতনরোধে যে সকল বিধান নাযিল করা হয়েছে তার যৌক্তিকতা
মূল্যায়ন করুন।
৪. পর্দা সম্পর্কিত বিধানটি আলোচনা করুন।
৫. সূরা আল-নূরে যে সকল সামাজিক বিধান বর্ণিত হয়েছে তা লিখুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. নারী-নির্যাতন এবং ব্যভিচার ও ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ প্রতিরোধে সূরা আল-নূরের বিধান আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]