মায়ের কোলে শিশুদের শিক্ষাদানের গুরুত্ব পারিবারিক পরিবেশে শিশু শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

মায়ের কোলে শিশুর শিক্ষা
ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামে শিক্ষাকে ইবাদাত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মানব জীবনে
দোলনা হতে কবর পর্যন্তশিক্ষার বয়স। তাই শিশুকে মাতৃকোলে থাকা অবস্থা হতেই শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করতে
হবে।
শিশু যখন মায়ের কোলে, তখন থেকেই শিশুর শিক্ষা শুরু হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) -এর বাণী রয়েছে,
‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ততোমরা ইলম অন্বেষণ করবে।’
শিশু মায়ের কোলে থাকাকালীন তাকে আল্লাহর নাম, তাওহীদের বাণী, নবী-রাসূলগণের নাম শিখাতে হবে।
নবী-রাসূল এবং সাহাবা কিরামের কাহিনী শুনাতে হবে। ইসলামের সুমহান শিক্ষার কথা সুমধুর ভাষায় শিশুর
মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। মায়ের মিষ্টিমিষ্টি কথা শিশুর অন্তরে প্রবলভাবে রেখাপাত করে, তাই মা তার শিশুকে
সুন্দর সুন্দর কথা শিখাবেন। শিশুদেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপকারিতা সম্পর্কে শিক্ষা দেবেন। ছেলেমেয়েদের
হাত দ্বারা গরীব মিসকীনকে দান করার অভ্যাস করাতে শিখাবেন। তাদের হাত দিয়ে ভাইবোনদের খাদ্যদ্রব্য
বন্টন করাবেন। অধিক ভোজনের অপকারিতার কথা ছেলেমেয়েদের শুনাবেন। ছেলেমেয়েদের জোরে চীৎকার
করে কথা বলতে বারণ করবেন।
দুষ্ট প্রকৃতির ছেলেমেয়েদের সাথে নিজের ছেলেমেয়েদেরকে মিশতে দেওয়া ঠিক নয়। মিথ্যা ও অহেতুক কথা
এবং চোগলখোরী ইত্যাদি ধরনের অন্যায় অশালীন কাজ থেকে তাদেরকে বিরত রাখতে হবে। শিশুদের অধিক
পরিমাণ ঘুমাতে না দেওয়া এবং ফজরের নামাযের পূর্বে তাদের নিদ্রা ত্যাগ করার অভ্যাস করাতে হবে। বয়স
সাত বছর হওয়ার সাথে সাথে নামাযের অভ্যাস করাবেন। মক্তবে যাওয়ার বয়স হওয়া মাত্র তাদেরকে সর্ব প্রথম
কুরআন মাজীদ শিখানোর ব্যবস্থা করাতে হবে। ছেলেমেয়েদেরকে গান-বাজনা শোনা, টিভি-সিনেমা দেখা এবং
অশ্লীল নভেল নাটক জাতীয় পুস্তকাদি পড়তে দেওয়া থেকে বিরত রাখা তাদের পবিত্র চরিত্রের জন্যই প্রয়োজন।
ছেলে-মেয়েদেরকে নিজেদের কাজ যথাসম্ভব নিজ হাতে করাবার অভ্যাস করার প্রতি লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
ছেলেমেয়েদেরকে খাওয়া-দাওয়া এবং মাহফিল-মজলিস ও লোকসমাজে উঠাবসার আদব-কায়দা, রীতি-নীতি
শিশুকাল থেকেই শিখানো প্রয়োজন। তারা ভাল কাজ করলে তাদেরকে উৎসাহ এবং ধন্যবাদ দিতে হবে। আর
মন্দ কাজ করলে তাদেরকে মৃদু শাসন করা শিশুদের ভবিষ্যৎ সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্যই প্রয়োজন।
পারিবারিক পরিবেশে শিশুর শিক্ষা
ইসলামে পরিবার হচ্ছে গোটা সমাজ বা রাষ্ট্রের ক্ষুদ্রতম অংশ। সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় জীবনে বা জাতীয় জীবনে
সঠিক ভূমিকা পালনের মৌলিক শিক্ষা দেওয়া হয় পারিবারিক পরিবেশে। পরিবারে স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার,
স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার, সন্তানের উপর পিতামাতার অধিকার, পিতামাতার উপর সন্তানের অধিকার,
ভাইবোনের পারস্পরিক অধিকার ইসলামে নির্ধারিত রয়েছে। এরই আলোকে শিশুর দৈনন্দিন জীবনের কর্মধারা
পরিচালিত হয়ে থাকে। বৃহত্তর পরিবেশে সে যে অবদান রাখবে তার প্রশিক্ষণ ঘটে এই ক্ষুদ্রতর অথচ বহুমাত্রিক
পরিবেশে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তা‘আলার ঘোষণা রয়েছে ঃ
ᘌ ٰأ᠐ يُّ هَ ا ٱلᡐ ذِ ينَ آمَ نُ وا᠔ لِ مَ تَ قُ ول᠑ ونَ مَ ا ᢻ َتَ فْ عَ ل᠑ ونَ .
‘হে মুমিনগণ ! তোমরা যা করো না তা কেন বল ?’ (সূরা আস-সাফ্ফ : ২)
এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য যে, সততা, পরোপকারিতা, পরমত সহিষ্ণুতা, দানশীলতা, জীবে দয়া ইত্যাদি
সৎকর্মগুলো পিতামাতা নিজে ব্যক্তিগত জীবনে অনুশীলন করে ছোটদের সামনে তুলে ধরবেন। শিশু পারিবারিক
পরিবেশেই বড়দেরকে সম্মান আর ছোটদেরকে আদর করার শিক্ষা লাভ করে। নামায, রোযা ইত্যাদি ইবাদাতের
শিক্ষা শিশুরা পারিবারিক পরিবেশেই লাভ করে থাকে। আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত এবং পিতামাতার প্রতি সম্মান
প্রদর্শন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে কুরআন মাজীদে উদ্ধৃত হয়েছে-
وَ وَ صَّیْنَا ٱلإِ نسَانَ ب ِوَ الِدَیْھِ إ ِحْسَانا ً .
‘আমি মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি।’ (সূরা আল-আহকাফ : ১৫)
অন্য আয়াতে উদ্ধৃত হয়েছে ঃ
أ᠐ نِ ٱشْ ك᠑ رْ لِ ى وَ لِ وَ الِ دَ ᘌ ْكَ .
‘আমার প্রতি ও তোমার পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও।’ (সূরা লুকমান : ১৪)
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে ঃ কোন পিতা তার সন্তানকে উত্তম শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়ার চেয়ে অধিক উত্তম কোন জিনিস
দিতে পারে না। (তিরমিযী)
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে তথা বিশ্ব মানবতার ক্ষেত্রে মানুষের কর্ম-কৌশলের প্রশিক্ষণও ঘটে পারিবারিক
পরিবেশে। তাই ইসলাম পারিবারিক শিক্ষার উপর অধিক গুরুত্বারোপ করেছে।
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিশুর শিক্ষা
শিশুদের বয়স পাঁচ বছর পূর্ণ হলেই তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য স্কুল-মাদ্রাসায় পাঠানোর
দায়িত্ব মা-বাবার উপর বর্তায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষক মহোদয়কে শিশুদের শিক্ষার প্রতি খুব বেশি
সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। উস্তাদ শিশুদেরকে মিষ্টভাষায়, মধুর ব্যবহারের মাধ্যমে এমনভাবে পড়া দেবেন ও
নেবেন ; যাতে শিশুরা বাড়িতে থাকার চেয়ে প্রতিষ্ঠানে থাকতে বেশি পছন্দ করে। পড়াশুনা করানোর সময়
শিশুদের প্রতি কর্কশ ব্যবহার করা যাবে না। তাদেরকে মারপিট এর পরিবর্তে আদর দিয়ে পাঠের প্রতি উৎসাহী
করতে হবে। শ্রেণীকক্ষে তাদের পাঠ মুখস্থকরানোর চেষ্টা করতে হবে। কোন কথা শিশুরা একবার বলার দ্বারা
বুঝতে না পারলে তা কয়েকবার বলা প্রয়োজন। বোঝার উদ্দেশ্যে শিশুরা প্রশ্ন করলে এতে বিরক্ত হওয়া যাবে না।
ছাত্রদের যোগ্যতা অনুসারে তাদের পাঠ নির্ধারণ করতে হবে। পড়াশুনা করানোর সাথে সাথে অনুশীলনের ব্যবস্থা
রাখা প্রয়োজন। শিক্ষক প্রতিদিনের পড়া ক্লাসে শুনবেন। ক্লাসে প্রত্যহ হাতের লেখা দেখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
জটিল স্থানসমূহের সারাংশ লিখে দেয়া এবং এর উপর মৌখিক আলোচনা করা সমীচীন। মাসিক পরীক্ষার ব্যবস্থা
করা এবং পরীক্ষার পর উচ্চ নম্বরের উপর পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন।
ক্লাসে নিয়মিত ছাত্রদের দ্বারা পাঠ রিডিং পড়ানো প্রয়োজন। কোন পাঠই অপ্রয়োজনীয় মনে করে বাদ দেওয়া
যাবে না। পিছনের পড়া যেন ভুলে না যায় সে জন্য কমপক্ষে সপ্তাহে একবার পিছনের পড়া পুনরালোচনা করা
এবং ছাত্রদের থেকে তা আদায় করা আবশ্যক। পড়ার সাথে সাথে লেখার উপরও জোর দিতে হবে। শিক্ষক
প্রথমে অসংযুক্ত অক্ষর শিখাবেন। তারপর যুক্ত অক্ষর শিখাবেন। অতঃপর হস্তলেখা সুন্দর করার জন্য এবং শুদ্ধ
করে লেখার জন্য প্রতিটি বিষয়ে বাড়ীর কাজ দেবেন এবং বাড়ী থেকে খাতায় লিখে তা শিক্ষককে দেখানোর
ব্যবস্থা রাখবেন।
পড়াশুনার পাশাপাশি শিশুদেরকে আদব-আখলাকও শিক্ষা দিতে হবে। জরুরি দু‘আ-কালাম শিখাতে হবে। পাকপবিত্র হওয়ার পদ্ধতি, পেশাব-পায়খানার নিয়ম-নীতি অবশ্যই শিখাতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য আদর্শ নাগরিক
হিসেবে গড়ে উঠার ব্যাপারে এ সকল বিষয়ের প্রতি যতœবান হওয়া একান্তপ্রয়োজন।
প্রণিধানযোগ্য যে, শিশুদেরকে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে দীনদার, পরহেযগার, আদর্শ ব্যক্তিদের
নিকট তাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক আদর্শবান না হলে ছাত্রদেরকে আদর্শবান বানানো
সম্ভব নয়। কাজেই শিশুদেরকে কোন প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর পূর্বে দেখে নিতে হবে যে, ঐ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ
আদর্শবান, নামাযী ও পরহেযগার লোক কিনা ? এরূপ না হলে ঐ প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে শিক্ষা দেওয়া তাকে ধ্বংস
করার নামান্তর হবে। কেননা শিশুরা সাধারণত অনুকরণপ্রিয় হয়ে থাকে। যা দেখে এবং শোনে তারা তাই নিজ
জীবনে অবলম্বন করে থাকে। শিক্ষক আদর্শবান হলে তারাও সাধারণত আদর্শবান হয়ে উঠে। পক্ষান্তরে শিক্ষক
যদি ধর্মপরায়ণ, পরহেয্গার না হন তাহলে তাদের মধ্যেও দীনদারী আসে না। এ কারণেই প্রখ্যাত ইসলামী
মনীষী আল্লামা ইবন সীরীন (র.) বলেছেন ঃ
ان هذا العلم دين فانظروا عمن تاخذون دينك.
‘এই ইলম হচ্ছে দীন। সুতরাং কার নিকট থেকে দীন হাসিল করছো তা দেখে নিবে।’
উপরোক্ত বাণী থেকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, যার-তার নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যায় না এবং যে কেউ
শিক্ষক হওয়াও সমীচীন নয়। একজন শিক্ষকই হচ্ছেন একজন ছাত্রের জীবন গড়ার কারিগর। সুতরাং শিক্ষককে
নৈতিক আদর্শে ও ধর্মীয় ভাবধারায় বলিয়ান হতে হবে।
শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে সদাচরণ শিক্ষা
মক্তব, মাদ্রাসা বা স্কুলে জ্ঞান অর্জন করা এবং শিক্ষা দেওয়া যেমন জরুরি, অনুরূপভাবে দীনি ইলমের সাথে
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যেমন-শিক্ষক-উস্তাদ, সহপাঠী, প্রমুখ ব্যক্তিদের অধিকার আদায় করাও জরুরি।
ছাত্রদের জন্য শিক্ষক বা উস্তাদ এক বিরাট নি‘আমাত। কাজেই উস্তাদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন
একান্তআবশ্যক। আল্লাহ ও রাসূলের পর মানুষের প্রতি সবচেয়ে বড় দানশীল ব্যক্তি হলেন উস্তাদ। রাসূলুল্লাহ
(স.) সাহাবীগণকে প্রশ্ন করে বললেন ঃ
هل تدرون من اجود قالوا الله و رسوله اعلم قال: الله تعالى أجود جودا
ثم انا اجود بنى ادم واجودهم من ᗷعدي رجل علم علما ف شرە ᘌأتى يوم
القᘭامة اميرا واحدا او قال امة واحدة.
‘তোমরা কি জান, সবচেয়ে বড় দানশীল কে ? জবাবে সাহাবীগণ বললেন, এ সম্বন্ধে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই
অধিক জানেন। তখন রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন ঃ সবচেয়ে বড় দানশীল হলেন আল্লাহ তা‘আলা। তারপর আদম
সন্তানের মধ্যে আমি হলাম সবচেয়ে বড় দানশীল। এরপর বেশি দানশীল ঐ ব্যক্তি যে ইলম শেখার পর এর প্রচারে
আত্মনিয়োগ করে। এরূপ ব্যক্তি কিয়ামাতের দিন একাই একজন নেতার মত অথবা বলেছেন, এক উম্মাত
হবেন।’
কাজেই শিক্ষার্থীর জন্য অপরিহার্য হল উস্তাদকে শ্রদ্ধা করা, তাঁর খিদ্মাত করা এবং নরম ভাষায় তাঁর সাথে কথা
বলা। নামায পড়ে তাঁর জন্য দু‘আ করা। সম্ভব হলে কিছু উপহার প্রদান করা।
রাসূলুল্লাহ (স.) ঘোষণা করেন ঃ
من صنع إلᘭᜓم معروفا فᜓافئوە فان لم تجدوا ما تᜓافئونه فادعوا له حتى
تروا انᜓم قد ᛿افئتموە.
‘কেউ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করলে তোমরা তাকে তার বিনিময় প্রদান করবে। যদি বিনিময় দেয়ার মত কিছু না
পাও তবে তার জন্য তোমাদের মনে এ ধারণা না হওয়া পর্যন্তদু‘আ করতে থাকবে যে, তোমরা তার সমপরিমাণ বিনিময় প্রদান করতে সক্ষম হয়েছ।’
পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা শিক্ষা দান
ইসলামে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যগত দিক থেকে এই গুরুত্বারোপের যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। দৈহিক রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে হলে দেহকে পরিচ্ছন্ন
রাখতে হয়, কাপড় চোপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়, মনোদৈহিক রোগ থেকে বেঁচে থাকার অন্যতম প্রধান চাবিকাঠি পবিত্র দেহ-মন।
কুরআন মাজীদে উদ্ধৃত হয়েছে ঃ
إِ نَّ ٱللᡐ هَ ᘌ ُحِ بُّ ٱلتَّ وَّ ابِ ينَ وَ ᗫ ُحِ بُّ ٱل᠔ مُ تَ طَ هِّ ᠒ᖁ ᗫنَ .
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন।’ (সূরা আল-বাকারা: ২২২)
তাই শিশুদেরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা শিক্ষা দেওয়া এবং সহপাঠীদের সাথে সদ্ব্যবহার শিক্ষা দেওয়া অবশ্য
কর্তব্য।
সহপাঠীদের সাথে বয়স ও মর্যাদানুসারে সদ্ব্যবহার ও ভালবাসার সম্পর্ক বজায় রাখা প্রয়োজন। তাদের সকলের
সাথে ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখাই ইসলামের আদর্শ। ক্লাসে প্রবেশ কালে সহপাঠীদের সালাম দিয়ে ঢুকতে হয়।
ক্লাসে পরে আগমনকারী সাথীকে বসার জন্য জায়গা করে দিতে হয়। মজলিসে কারো দিকে পা ছড়িয়ে বসবে
না। কাউকে তার জায়গা থেকে উঠিয়ে সেখানে বসবে না। কোন কারণবশত ক্লাস থেকে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন
হলে শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে বের হয়ে যাবে। কোন হট্টগোল যাতে না হয় সে দিকে খেয়াল
রাখবে। বাইরে কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে ক্লাসে ফিরে আসবে এবং নিজ জায়গায় চুপচাপ বসে পড়বে। ক্লাসের সহপাঠীদের সাথে সর্বদা হাসিমুখে কথা বলবে। রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন ঃ
ان من المعروف أن ᘌلق أخاك بوجه طلق.
‘তোমার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাও পুণ্যের কাজ।’
অপর এক হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন ঃ
اᝏمل المؤمنين إᘌمانا أحسنهم خلقا.
‘পরিপূর্ণ ঈমানদার ঐ ব্যক্তি যার চরিত্র সর্বোত্তম।’
সারকথা
শিশুরা কাদামাটির মতো। কাদামটি দিয়ে যা ইচছা করা হয় তাই যেমন তৈরি করা যায়, তেমনি শিশুদের যা
শিখানো হয় তাই তারা শিখে এবং রপ্ত করে। সুতরাং মুসলমান হিসেবে প্রতিটি শিশুকে উন্নত চরিত্র শিক্ষা দিতে
হবে। যাতে তারা ফুলের মতো পবিত্র হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। তাদের ধর্মীয় আদর্শ, উন্নত ও পবিত্র চরিত্র
আচার-আচরণ দ্বারা যাতে তারা জাতির ভবিষ্যৎ আদর্শ কর্ণধার হয়ে জাতিকে সৎ আদর্শ নেতৃত্বের মাধ্যমে দুনিয়া
ও আখিরাতের মঙ্গলের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রতিটি মা-বাবার উপর
পবিত্র আমানত হল তাদের সন্তান। শৈশবকালে ছেলে- মেয়েদেরকে ধর্মীয় তথা কুরআন-হাদিসের উন্নত ও আদর্শ
চরিত্র শিক্ষাদান করে এ আমানতের হিফাযত করতে হবে। অন্যথায় তা খিয়ানত হিসেবে আল্লাহর কাছে সাব্যস্ত হবে।
১. ‘‘কবর হতে দোলনা পর্যন্তশিক্ষা গ্রহণ কর’’- এটি কার উক্তি?
ক. আল্লাহ তা‘আলার
খ. হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর
গ. হযরত ফাতিমা (র.) -এর
ঘ. হযরত ইমাম গাযালী (র.)-এর
২. শিশু কথা শিখতে চাইলে তাকে প্রথমে কি শিখানো উচিত?
ক. আল্লাহর একত্ববাদ ও রিসালাতের বাণী
খ. আল্লাহর পবিত্র নামসমূহ
গ. আল্লাহর নাম ও রাসূলের নাম
ঘ. ওলিগণের জীবন কাহিনী।
৩. ‘‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা করো না তা কেন বল?’’ এটি কার বাণী?
ক. আল্লাহ তা‘আলার
খ. হযরত আলী (রা.) -এর
গ. ইমাম আবু হানিফা (র.)-এর
ঘ. মহাপুরুষদের
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. মায়ের কোলে শিশুদের শিক্ষাদানের গুরুত্ব আলোচনা করুন।
২. পারিবারিক পরিবেশে শিশু শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করুন।
৩. প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিশু শিক্ষা কেমন হওয়া প্রয়োজন? সংক্ষেপে লিখুন।
৪. শিক্ষকের সাথে শিশুর আচার-আচরণ কেমন হওয়া উচিত?
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. শিশুদের শিক্ষাদান স¤পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]