মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকারের পরিচয় লিখুন। আসহাবুল ফুরূদ কাদেরকে বলা হয়? এরা কত জন এবং তাদের কয়টি অংশ? বর্ণনা করুন। আসাবা কাকে বলে? আসাবা কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকারের পরিচয় লিখুন।

ভ‚মিকা
لᡒ لرِّ جَ الِ نَ صᛳِبٌ مِّ مَّ ا تَ رَ كَ ٱل᠔ وَ الِ دَ انِ وَ ٱلأَ قْ ᖁ َᗖ ُونَ وَ لِ ل ِّ سَ ቯءِ نَ صِ ᛳبٌ مِّ مَّ ا تَ رَ كَ
ٱل᠔ وَ الِ دَ انِ وَ ٱلأَ قْ ᖁ َᗖ ُونَ مِ مَّ ا قَ لَّ مِ نْ هُ أ᠐ وْ ك᠐ ثُ رَ نَ صِ ᘘᚏا᠍ مَّ فْ رُ وضا᠍ .
‘পুরুষদের জন্য সে সব ধন-স¤পদে নির্দিষ্ট অংশ রয়েছে, যা পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়-স্বজনরা রেখে গেছে,
অনুরূপভাবে স্ত্রীলোকদের জন্যও সে সব ধন-স¤পদে অংশ রয়েছে, যা পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছে,
তা অল্প কি বেশি হোক, এক নির্ধারিত অংশ।’ (সূরা আন্-নিসা : ৭)
লোকেরা যে ধন-স¤পদ সংরক্ষিত করে রেখে যায়, তা তাদের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। এই
বণ্টনে পুরুষ-নারী উভয় শ্রেণীর লোকেরা মীরাস বা অংশ পাওয়ার অধিকার স¤পন্ন হলে পুরুষ-নারী উভয়ই
অংশীদার হবে। তা কেবল পুরুষ উত্তরাধিকারীরা পাবে, নারীরা পাবে না, কিংবা কেবল নারী উত্তরাধিকারীরা
পাবে, পুরুষরা পাবে না, কুরআন তা অগ্রাহ্য করেছে। ইসলাম-পূর্ব জাহিলিয়াতের সময়ে নারী ও নাবালেগ
সন্তানরা তা পেত না। তখন সামাজিকভাবে এই নীতি স্বীকৃত ও কার্যকর ছিল না, বংশের মধ্যে যারা যুদ্ধ করতে
পারে, অস্ত্রচালাতে ও গনীমতের মাল লাভ করতে সক্ষম, কেবল তারাই পিতা-মাতার রেখে যাওয়া স¤পদের
উত্তরাধিকারী হত। কুরআন এ নীতিকে রহিত করে দিয়েছে।
এছাড়া দান বা ওছিয়াতের মাধ্যমেও অন্যের সহযোগিতা করার জন্য ইসলামে জোর তাগিদ রয়েছে। তবে
এক্ষেত্রে কতিপয় নীতিমালা অবশ্য পালনীয় যা অত্র ইউনিটে আলোচিত হয়েছে। মহান আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং আমাদের সৃষ্টিকর্তা। তিনি ভাল করেই জানেন মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার কে কতটুকু
পাবে। কাকে কতটুকু দিলে তার প্রতি কোন অন্যায় অবিচার হবে না। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে এ বিষয়টি অত্যন্ত
পরিস্কার। তিনি নারী-পুরুষ উভয়ের সঠিক পাওনা তাঁর বাণীতে ¯পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের প্রকারভেদ
মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারগণ দুই প্রকারÑ
১. আসহাবুল ফুরূদ (নির্ধারিত অংশ প্রাপ্ত উত্তরাধিকারীগণ)
২. আসাবা (অবশিষ্টাংশ প্রাপ্ত উত্তরাধিকারীগণ)
আসহাবুল ফুরূদ
যেসব উত্তরাধিকারীদের জন্য ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত হিসসা বা অংশ রয়েছে তাদেরকে আসহাবুল
ফুরুদ বলে।
আসহাবুল ফুরুদ মোট ১২ জন, এর মধ্যে চারজন পুরুষ এবং আটজন নারী। এ ১২ জন বিভিন্ন অবস্থায় মৃতের
স¤পদের যে সব অংশ পাবেন তা হল- দুইভাগের এক অংশ, চার ভাগের এক অংশ, আট ভাগের এক অংশ,
তিন ভাগের দুই অংশ, তিন ভাগের এক অংশ এবং ছয় ভাগের এক অংশ।
পুরুষগণ হলেন১. মৃতের পিতা,
২. মৃতের দাদা /মৃতের পিতার দাদা (এভাবে যত উপরে যাক না কেন)
৩. মৃতের বৈপিত্রেয় ভাই,
৪. মৃতের স্বামী।
নারীগণ হলেন১. মৃতের স্ত্রী
২. মৃতের কন্যা
৩. মৃতের ছেলের কন্যা, মৃতের নাতীর কন্যা (এভাবে যত নিচে যাকনা কেন)
৪. মৃতের সহোদর বোন
৫. মৃতের বৈমাত্রেয় বোন
৬. মৃতের বৈপিত্রেয় বোন
৭. মৃতের মাতা
৮. মৃতের দাদী
আসাবা
আসহাবুল ফুরূদ তথা নির্ধারিত অংশীদারগণকে তাদের অংশ প্রদান করার পর বাকী সমুদয় পরিত্যক্ত সম্পদের
উত্তরাধিকার যারা হবেন তাদেরকে আসাবা বলে।
আসাবার প্রকারভেদ
আসাবা বা অবশিষ্টাংশের অধিকারীগণ তিন প্রকারÑ
১. উত্তরাধিকারী স্বয়ং নিজেই আসাবা,
২. উত্তরাধিকারী অন্যের মধ্যস্থতায় আসাবা,
৩. উত্তরাধিকারী অন্যের সঙ্গীরূপে আসাবা।
উত্তরাধিকারী স্বয়ং নিজেই আসাবা
ঐ সকল পুরুষকে ‘‘স্বয়ং নিজেই আসাবা’’ বলা হয় মৃত ব্যক্তির সঙ্গে যাদের সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে নানীর
মধ্যস্থতা নেই। তারা চার শ্রেণীতে বিভক্তÑ
১. মৃত ব্যক্তির অধঃস্তন বংশধর অর্থাৎ পুত্র, পৌত্র, প্রপৌত্র ইত্যাদি যতই নি¤েœযাক না কেন।
২. মৃত ব্যক্তির উর্ধতন পুরুষ অর্থাৎ পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ এভাবে যতই উপরের দিকে যাক না কেন।
৩. মৃতের পিতার পুত্র অর্থাৎ মৃতের ভাই, ভ্রাতুষ্পুত্র, এভাবে যত নি¤েœযাক না কেন।
৪. মৃতের পিতামহের পুত্র অর্থাৎ মৃতের চাচা, চাচাত ভাই, এভাবে যত নি¤েœযাক না কেন।
এদের মধ্য হতে যদি একাধিক উত্তরাধিকারী একত্রিত হয়ে যায় যেমন মৃতের পিতা, পুত্র, ভাই, চাচা ইত্যাদি
তাহলে যে ব্যক্তি মৃতের অধিক নিকটতম সেই উত্তরাধিকার হিসেবে অগ্রাধিকার পাবে। যথা-ছেলে ও নাতী যদি
একত্রিত হয় তাহলে ছেলে অগ্রাধিকার পাবে। এককথায় নৈকট্যের দিক থেকে যে নিকটতম সেই অগ্রাধিকার
পাবে, এ নীতির ভিত্তিতেই এ প্রকার আসাবার মধ্যে মৃতের সম্পদ বণ্টন করা হয়।
অন্যের মধ্যস্থতায় আসাবা
“অন্যের মধ্যস্থতায় আসাবা’’ সে সব মহিলা উত্তরাধিকারীগণকে বলা হয় যারা নিজেরা সরাসরি আসাবা হতে
পারেনা। তবে সরাসরি আসাবাগণের মধ্যস্থায় আসাবায় রূপান্তরিত হয়। তারা চার জন মহিলা। যথাÑ
১. মৃতের কন্যা, মৃতের ছেলের সঙ্গে আসাবায় রূপান্তরিত হবে।
২. দুই কন্যার বর্তমানে পৌত্রিরা বঞ্চিত হয়ে যাবে, তবে পৌত্রিদের সঙ্গে যদি পৌত্র অথবা প্রপৌত্র থাকে তাহলে
তাদের সুবাদে পৌত্রিরা আসাবায় রূপান্তরিত হবে।
৩. মৃতের সহোদর বোন, মৃতের সহোদর ভাই এর মধ্যস্থ্যতায় আসাবায় রূপান্তরিত হবে।
৪. মৃতের বৈমাত্রেয় বোন, মৃতের বৈমাত্রেয় ভাই এর সুবাদে আসাবায় রূপান্তরিত হবে।
এদের মধ্যে মৃতের পরিত্যক্ত ও অবশিষ্ট সম্পদ একজন নারী একজন পুরুষের অর্ধেক পাবে, এ নীতির
ভিত্তিতে বণ্টন করা হবে।
অন্যের সঙ্গীরূপে আসাবা
অন্যের সঙ্গীরূপে আসাবা সে সব মহিলা উত্তরাধিকারীগণকে বলা হয় যারা অন্য এমন মহিলার সঙ্গে আসাবারূপে
গণ্য হয় যারা একাকী নিজেরা আসাবা হয় না। যেমন মৃতের কন্যার সঙ্গে মৃতের বোন আসাবা হিসেবে গণ্য হবে।
১. যাদের জন্য ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত অংশ রয়েছে তারা হল আসাবা/আসহাবুল ফুরূদ/নারী/পুরুষ
২. আসহাবুল ফুরূদ ১২ জন যাদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী/ ৪ জন পুরুষ এবং ৮ জন নারী/৮ জন
বয়স্ক এবং ৪ জন শিশু/ ৭ জন নারী এবং ৫ জন পুরুষ।
৩. আসাবা হল- যারা মৃতের উত্তরাধিকারী নয়/ যাদের জন্য নির্দিষ্ট অংশ নেই/ যারা অন্যদের দেওয়ার পর
অবশিষ্টাংশের উত্তরাধিকারী/ কোনটিই ঠিক নয়।
৪. মৃতের দাদী আসহাবুল ফুরূদের অন্তর্ভুক্ত/ আসাবার অন্তর্ভুক্ত /সবসময় বঞ্চিত/উত্তরাধিকারী নন।
৫. মৃতের কন্যা কোন আসাবার অন্তর্ভুক্ত ?
স্বয়ং নিজেই আসাবা/অন্যের মধ্যস্থতায় আসাবা/অন্যের সঙ্গীরূপে আবাসা/ কোন আসাবাই নয়।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকারের পরিচয় লিখুন।
২. আসহাবুল ফুরূদ কাদেরকে বলা হয়? এরা কত জন এবং তাদের কয়টি অংশ? বর্ণনা করুন।
৩. আসাবা কাকে বলে? আসাবা কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকারের পরিচয় লিখুন।
৪. স্বয়ং নিজেই আসাবা এর পরিচয় লিখুন। এরা কয়জন ও কে কে? বর্ণনা করুন।
৫. অন্যের মধ্যস্থতায় আসাবা -এর পরিচয় লিখুন, এরা কয়জন এবং কে কে? উল্লেখ করুন।
৬. অন্যের সঙ্গীরূপে আসাবা-এর পরিচয় দিন এবং এরা কয়জন ও কে কে? বর্ণনা করুন।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. আসহাবুল ফুরূদ স¤পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখুন।
২. আসাবা স¤পর্কে বিস্তাবিরতভাবে লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]