স্ত্রী, কন্যা ও নাতীনের অংশ বর্ণনা করুন। সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনদের অবস্থা বর্ণনা করুন। মা, দাদী ও নানীদের অংশ বর্ণনা করুন।

মৃতের পরিত্যাক্ত সম্পদের নির্ধারিত অংশপ্রাপ্ত নারীগণ হলেন ৮ জন। যথা১. মৃতের স্ত্রী
২. মৃতের কন্যা
৩. মৃতের ছেলের কন্যা /নাতীর কন্যা এভাবে যত নিচে থাকনা কেন।
৪. মৃতের সহোদর বোন
৫. মৃতের বৈমাত্রেয় বোন
৬. মৃতের বৈপিত্রেয় বোন
৭. মৃতের মাতা
৮. মৃতের দাদী
নি¤েœপ্রত্যেকের অংশের বর্ণনা প্রদান করা হল।
স্ত্রীর অংশসমূহ
স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত দু’টি অংশ রয়েছে।
১. চার ভাগের এক অংশ পাবে (এক বা একাধিক স্ত্রী) যদি মৃতের ছেলে মেয়ে বা মৃতের ছেলের ছেলে মেয়ে
(নাতী-নাতনী) না থাকে।
২. আট ভাগের এক অংশ পাবে যদি মৃত ব্যক্তির ছেলে মেয়ে বা ছেলের ছেলে মেয়ে (নাতী-নাতনী) থাকে।
এ ছাড়া স্ত্রী তার মৃত স্বামীর সম্পদ ছাড়াও কন্যা হিসেবে মৃত পিতার সম্পদে অধিকার রয়েছে। বোন হিসেবে মৃত
ভাই এর সম্পদে তার অধিকার রয়েছে। মাতা হিসেবে মৃত ছেলের সম্পদে তার অধিকার রয়েছে। এতে প্রমাণিত
হয় যে সম্পদে নারীর অধিকার ইসলাম কোন ভাবেই সংকোচিত করেনি।
কন্যার অংশসমূহ
কন্যার জন্য তিনটি নির্ধারিত অংশ রয়েছে।
১. মৃতের সম্পদের দুই ভাগের এক অংশ পাবে, যদি কন্যা একজন থাকে।
২. তিন ভাগের এক অংশ পাবে যদি কন্য দুই বা ততোধিক থাকে।
৩. যদি মৃত ব্যক্তির ছেলে থাকে তাহলে কন্যা, ছেলের সঙ্গে আসাবা হবে। অন্যান্য অংশীদারকে দেয়ার পর
অবশিষ্ট সম্পদ ছেলে ও কন্যার মধ্যে একজন ছেলে একজন মেয়ের দ্বিগুণ পাবে এ নীতির ভিত্তিতে বণ্টন
করতে হবে।
পৌত্রী বা নাতনীদের অংশের বর্ণনা
পৌত্রী তথা পুত্রের কন্যাগণ মৃতের আপন কন্যাদের মতই। তাদের উত্তরাধিকার লাভের ক্ষেত্রে ছয়টি অবস্থা
রয়েছেÑ
১. মৃতের কন্যা না থাকা অবস্থায় যদি মৃতের একজন পৌত্রী (পুত্রের কন্যা) থাকে তবে সে অর্ধেক (২ ভাগের ১
ভাগ) পাবে।
২. আর যদি দুই বা ততোধিক পৌত্রী থাকে তা হলে তিন ভাগের দুই ভাগ পাবে।
৩. মৃত ব্যক্তির এক কন্যা থাকা অবস্থায় দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে পৌত্রীগণ ৬ ভাগের ১ ভাগ পাবে।
(কেননা কুরআন মাজীদে মেয়েদের সর্বোচ্চ অংশ ৩ ভাগের দুই অংশ বলে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, এক
মেয়ে ২ ভাগের এক ভাগ + পৌত্রীগণ ৬ ভাগের ১ ভাগ পাবে)।
৪. মৃত ব্যক্তির দুই কন্যা জীবিত থাকলে পৌত্রীগণ ওয়ারিস হবে না।
৫. তবে হ্যাঁ, যদি মৃত ব্যক্তির দুই কন্যার সঙ্গে একই স্তরে কিংবা নি¤œস্তরে একজন পৌত্র থাকে, তাহলে পৌত্রীরা
আসাবা হয়ে যাবে। মৃত ব্যক্তির কন্যাদ্বয়ের অংশ দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি তাদের মধ্যে একজন পুরুষ,
দু’জন মেয়ের সমান পাবে এই সূত্র মোতাবেক বণ্টন করা হবে।
৬. মৃত ব্যক্তির ছেলে জীবিত থাকলে পৌত্রীগণ বঞ্চিত হবে।
সহোদর বোনদের অংশের বর্ণনা
মৃতের সহোদর বোনদের পাঁচটি অবস্থা রয়েছেঃ
১. একজন সহোদর বোন হলে মৃতের স¤পদের দুই ভাগের এক ভাগ পাবে।
২. দুই বা ততোধিক সহোদর বোন থাকলে মৃতের স¤পদের তিন ভাগের দুই ভাগ পাবে।
৩. সহোদর বোনদের সমপর্যায়ে তাদের ভাই থাকলে মৃত ব্যক্তির সাথে তাদের সম্পর্ক সমান থাকায় ভাই দ্বারা
তারা আসাবা হয়ে যাবে এবং “একজন পুরুষ দুইজন স্ত্রীলোকের সমান” এ সূত্রানুসারে তাদের মধ্যে স¤পদ
বণ্টন করা হবে।
৪. (মৃত ব্যক্তির) কন্যাগণ বা পুত্রের কন্যাগণের সঙ্গে তারা (আসাবা হিসেবে) অবশিষ্টাংশ পাবে। কেননা,
মহানবী (স) ইরশাদ করেছেনÑ “ভগ্নীদেরকে কন্যাদের সঙ্গে আসাবা বানিয়ে দাও।”
৫. সহোদর ভাই-বোন এবং বৈমাত্রেয় ভাইবোন মৃতের পুত্র, অথবা, পুত্রের পুত্র, অথবা মৃতের পিতার বর্তমানে
বঞ্চিত হয়ে যাবে।
বৈমাত্রেয় বোনদের অংশের বর্ণনা
বৈমাত্রেয় বোনদের অবস্থা (উত্তরাধিকার লাভের ক্ষেত্রে) সহোদর বোনদের অনুরূপ। তাদের সাত অবস্থাÑ
১. একজন বোন থাকলে সে মৃতের রেখে যাওয়া সম্পত্তির অর্ধাংশ পাবে। সহোদর বোন থাকা অবস্থায় এটা
প্রযোজ্য।
২. দুই বা ততোধিক বোন থাকলে তারা দুই-তৃতীয়াংশ পাবে। তবে সহোদর বোন না থাকা অবস্থায় এটা প্রযোজ্য
হবে।
৩. একজন সহোদর বোনের সাথে দুই-তৃতীয়াংশ পূর্ণ করার জন্য বৈমাত্রেয় বোনেরা এক ষষ্ঠাংশ পাবে। অর্থাৎ
সহোদর বোনদের দুই ভাগের এক অংশ এবং বৈমাত্রেয় বোনদের ছয় ভাগের এক অংশ মোট তিন ভাগের দুই
অংশ।
৪. দুইজন সহোদর বোনের বর্তমানে বৈমাত্রেয় বোন নির্ধারিত অংশ থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে।
৫. কিন্তু যদি বৈমাত্রেয় বোনদের সঙ্গে বৈমাত্রেয় ভাই থাকে, তা হলে ঐ ভাই তাদেরকে আসাবায় রূপান্তরিত করে
দেবে। এর ফলে অবশিষ্ট সম্পদ তাদের মধ্যে একজন পুরুষ দুইজন মহিলার সমানÑএই সূত্র অনুসারে বণ্টিত
হবে।
৬. মৃতের কন্যা বা তার পুত্রের কন্যাদের সাথে বৈমাত্রেয় ভগ্নীরা আসাবা হয়ে যাবে। যেমনÑ আমরা পূর্বে
আলোচনা করেছি (বোনদেরকে কন্যাদের সঙ্গে আসাবা বানিয়ে দিতে হবে।)
৭. সহোদর ভাই-বোন ও বৈমাত্রেয় ভাই-বোন মৃতের পুত্র, পুত্রের পুত্র থাকলে অথবা পিতা থাকলে সর্বসম্মতিক্রমে
বঞ্চিত হয়ে যাবে। ইমাম আবু হানীফার মতে মৃতের পিতামহ থাকলেও তারা সকলেই বঞ্চিত হয়ে যাবে। আর
সহোদর ভাই-এর উপস্থিতিতে বৈমাত্রেয় ভাই-বোন বঞ্চিত হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে একাধিক সহোদর বোনের
দ্বারাও নির্ধারিত অংশ থেকে তারা বঞ্চিত হয়ে যাবে, কিন্তু বৈমাত্রেয় ভাই থাকলে তার সঙ্গে আসাবায়
রূপান্তরিত হবে।
বৈপিত্রেয় বোনের অংশ
১. মৃতের পুত্র, পৌত্র, প্রপৌত্র, পিতা এবং দাদা এদের মধ্য হতে যে কোন একজনের বর্তমানে বৈপিত্রেয় বোন
বঞ্চিত হবে।
২. মৃতের যদি একজন বৈপিত্রেয় বোন থাকে তাহলে সে স¤পদের ৬ ভাগের ১ অংশ পাবে।
৩. যদি দুই বা ততোধিক বোন থাকে তাহলে ৩ ভাগের ১ এক অংশ পাবে উল্লেখ্য বৈপিত্রেয় ভাই বোনেরা অংশ
পাওয়ার ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে। ভাই ও বোনদের মধ্যে কোন পার্থক্য করা যাবে না।
মায়ের অংশের বর্ণনা
উত্তরাধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মায়ের তিনটি অংশ রয়েছেÑ
১. ছয় ভাগের এক অংশ পাবেন যদি মৃতের সন্তান বা মৃতের পুত্রের সন্তান যতই অধঃস্থন হোক না কেন অথবা দুই
বা ততোধিক ভাই বা বোন যেই দিকেরই হোক না কেন (সহোদর হোক কিংবা বৈমাত্রেয় অথবা বৈপিত্রেয়)
সর্বাবস্থায় মাতা ছয় ভাগের এক অংশ পাবে।
২. এ সবের কেউ না থাকলে সম্পূর্ণ সম্পত্তির তিন ভাগের এক অংশ পাবে।
৩. স্বামী এবং স্ত্রীর যে কোন একজনের অংশ দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ পাবে। এই অংশটি
দুইটি অবস্থায় প্রযোজ্য-
ক. যদি মৃতের স্বামী এবং মাতা-পিতা জীবিত থাকে।
খ. যদি মৃতের স্ত্রী ও মাতা-পিতা জীবিত থাকে। আর যদি পিতার স্থলে পিতামহ জীবিত থাকে, তা হলে মাতা
সম্পূর্ণ সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পাবে।
দাদী বা নানীর অংশের বর্ণনা
দাদী বা নানী মৃতের রেখে যাওয়া স¤পদের ছয় ভাগের এক অংশ পাবে। সংখ্যার দিক দিয়ে একজন হোক
কিংবা একাধিক। তবে শর্ত হল, সকলেই প্রকৃত ও সমপর্যায়ের হতে হবে। মাতার বর্তমানে সর্বপ্রকার দাদী বা
নানী সবাই বাদ পড়বেন। আর পিতার বর্তমানে দাদীগণ বাদ পড়বেন। আর দাদার বর্তমানে দাদী (আপন
পিতামহী) ব্যতিরেকে অন্যান্য দাদী বাদ পড়ে যাবেন। দাদী দাদার সঙ্গে ওয়ারিস হবেন।
এককথায় উত্তর দিন
১. মৃত ব্যক্তির স্ত্রী কখন স¤পদের আট ভাগের এক অংশ পাবে?
২. মৃত ব্যক্তির কন্যা কখন স¤পদের দুই ভাগের এক অংশ পাবে?
৩. মৃত ব্যক্তির কন্যা কখন আসাবা হবে?
৪. মৃত ব্যক্তির ছেলে থাকলে পৌত্রীরা কী কিছু পাবে?
৫. মৃত ব্যক্তির একজন সহোদর বোন থাকলে সে কতটুকু পাবে?
৬. মৃতের পুত্র থাকলে মৃতের বোনেরা কিছু পাবে কি?
৭. মৃতের দুই জন সহোদর বোনের বর্তমানে বৈমাত্রেয় বোনেরা কী কিছু পাবে?
৮. মৃতের মা কখন স¤পদের ছয় ভাগের এক অংশ পাবে?
৯. দাদী ও নানী কখন বঞ্চিত হবে?
১০. দাদী ও নানী কখন ছয় ভাগের এক অংশ পাবে?
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১. মৃতের স্ত্রীর অংশ স¤পর্কে উল্লেখ করুন।
২. মৃতের কন্যার অংশ উল্লেখ করুন।
৩. পৌত্রী (নাতীনের) অংশ বর্ণনা করুন।
৪. সহোদর বোনদের অংশ বর্ণনা করুন।
৫. বৈপিত্রেয় বোনদের অংশ বর্ণনা করুন।
৬. বৈমাত্রেয় বোনদের অংশ লিখুন।
৭. মায়ের অংশ স¤পর্কেআলোচনা করুন।
৮. দাদী-নানীর অংশ স¤পর্কে লিখুন।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. স্ত্রী, কন্যা ও নাতীনের অংশ বর্ণনা করুন।
২. সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনদের অবস্থা বর্ণনা করুন।
৩. মা, দাদী ও নানীদের অংশ বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]