মালিক ও শ্রমিকের স¤পর্ক নির্ণয় করে মালিকের অধিকার ও কর্তব্যসসূহ শ্রমের গুরুত্বসহ শ্রমিকের অধিকার ও কর্তব্য স¤পর্কে যা জানেন লিখুন।

ইসলামে শ্রমের গুরুত্ব
জীবিকা অর্জনের অন্যতম উপায় হচ্ছে শ্রম। এ কারণেই মহানবী (স.) শ্রম বিনিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহিত
করেছেন। হযরত আনাস (রা) বলেন, ‘একদা এক আনসারী সাহাবী নবী করীম (স.)-এর নিকট এসে কিছু
চাইলেন। তখন তিনি তাকে বললেন, তোমার ঘরে কি কোন কিছু নেই ? উত্তরে সাহাবী বললেন- হ্যাঁ আছে।
একখানা কম্বল আছে, যার একাংশ আমি পরিধান করি এবং অপর অংশ শয্যারূপে ব্যবহার করি। তাছাড়া পানি
পান করার জন্য একটি পান পাত্রও আছে। রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন, তাহলে এ দু’টো জিনিসই আমার নিকট
নিয়ে এসো। সাহাবী তাঁর উক্ত দু’টো জিনিস নিয়ে আসলে নবী (স.) তা নিয়ে উপস্থিত লোকদের মধ্যে এর
নিলাম ডাকলেন এবং বললেন, এগুলো খরিদ করবে কে ? এক সাহাবী বললেন, আমি এগুলো এক দিরহাম দিয়ে
খরিদ করতে রাযী আছি। রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন, এক দিরহামের চেয়ে অধিক দিয়ে নেওয়ার জন্য কে রাযী ?
এ কথাটি তিনি দু’বার বা তিনবার বললেন। তখন এক সাহাবী বললেন, আমি দুই দিরহাম দিয়ে নেওয়ার জন্য
রাযী আছি। রাসূলুল্লাহ (স.) তাঁকে বস্তু দু’টি দিয়ে তাঁর থেকে দুই দিরহাম গ্রহণ করলেন। তারপর তিনি এ
দিরহাম দু’টি আনসারী সাহাবীকে দিয়ে বললেন, এর একটি দিয়ে তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য খাদ্য ক্রয়
করে তাদেরকে দিয়ে এসো। আর অপরটি দিয়ে একটি কুড়াল খরিদ করে আমার কাছে নিয়ে এসো। সাহাবী
কুড়াল ক্রয় করে এনে রাসূলুল্লাহ (স.)-এর নিকট দিলে তিনি নিজ হাতে এতে হাতল লাগিয়ে দিলেন এবং
বললেন, জঙ্গলে গিয়ে কাঠ কেটে তা বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে থাক। আর আমি যেন তোমাকে পনের দিনের
মধ্যে না দেখি। নবী (স.)-এর নির্দেশে সাহাবী জঙ্গলে গিয়ে কাঠ সংগ্রহ করে তা বাজারে এনে বিক্রি করতে
লাগলেন। তারপর দশ দিরহাম উপার্জন করে তিনি রাসূলুল্লাহ (স.)-এর নিকট ফিরে এলেন এবং এর কিছু অংশ
দিয়ে কাপড় খরিদ করলেন এবং বাকী দিরহাম দিয়ে খাদ্যদ্রব্য খরিদ করলেন। রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন, অপরের
নিকট ভিক্ষার দরুন কিয়ামতের দিনে তোমার চেহারায় দাগ নিয়ে আসা অপেক্ষা জীবিকার্জনের জন্য এটা অনেক
বেশি উত্তম পন্থা।’
এখানে লক্ষ্য করার ব্যাপার হচ্ছে যে, রাসূলুল্লাহ (স.) উক্ত সাহাবীকে ভিক্ষার পরিবর্তে পরিশ্রম করে কাজ করার
প্রতি উৎসাহিত করেছেন। তদুপরি তিনি শ্রম বিনিয়োগের কার্যকর পন্থা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এমনিভাবে
সমাজের বেকার সমস্যা সমাধানেও রাসূলুল্লাহ (স.) বাস্তব ভূমিকা রেখেছেন।
ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল কাজ ও হালাল বিনিয়োগ কিছুমাত্রও লজ্জার ব্যাপার নয়। বরং এ হচ্ছে নবীগণের
সুন্নাত। প্রত্যেক নবীই দৈহিক পরিশ্রম করে উপার্জন করেছেন বলে হাদীসে উল্লেখ রয়েছে। মুসতাদরাকে হাকিম
গ্রন্থে হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, হযরত দাউদ (আ) বর্ম তৈরি করতেন। হযরত আদম
(আ) কৃষিকাজ করতেন, হযরত নূহ (আ) কাঠমিস্ত্রীর কাজ করতেন, হযরত ইদ্রীস (আ) সেলাই কাজ করতেন
এবং হযরত মূসা (আ) রাখালের কাজ করতেন।
উপরোক্ত হাদীসের প্রেক্ষিতে শ্রমের গুরুত্ব ও মর্যাদা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। শ্রম যদি নিচু ধরনের বিষয়
হতো, তাহলে নবীগণের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা এ জাতীয় কাজ সম্পাদন করাতেন না।
শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক
শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে কীরূপ সম্পর্ক হওয়া উচিত এ সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন ঃ
هم اخوانᜓم جعلهم الله تحت اᘌدᘌᜓم فمن جعل الله اخاە تحت ᘌدᘌه
فلᘭطعمه مما ᘌأᝏل و لᘭلᛞسه مما ᘌلᛞس ولا ᘌᜓلفه من العمل ما ᘌغلᘘه فان ᛿لفه
ما ᘌغلᘘه فلᘭعنه علᘭه.
‘তারা (অধীনস্থ ব্যক্তিবর্গ) তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করেছেন। আল্লাহ কারো
ভাইকে তার অধীনস্থ করে দিলে সে যা খাবে তাকে তা থেকে খাওয়াবে এবং সে যা পরিধান করবে তাকে তা
থেকে পরিধান করতে দিবে। আর যে কাজ তার জন্য কষ্টকর ও সাধ্যাতীত তা করার জন্যে তাকে বাধ্য করবে
না। আর সেই কাজ যদি তার দ্বারাই সম্পন্ন করাতে হয়, তবে সে কাজে তাকে অবশ্যই সাহায্য করবে।’
উপরোক্ত হাদীস থেকে নি¤œবর্ণিত মূলনীতিসমূহ প্রতীয়মান হয় ঃ
১. মুসলমান পরস্পর একে অন্যের ভাই। শ্রমিক হলে সে ক্ষেত্রেও এ হুকুম প্রযোজ্য। সুতরাং দুই সহোদর
ভাইয়ের মধ্যে যেরূপ সম্বন্ধ থাকে মালিক ও শ্রমিকের মাঝেও অনুরূপ সম্পর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়।
২. খাওয়া-পরা প্রভৃতি মৌলিক প্রয়োজন পূরণের মান মালিক ও শ্রমিক উভয়ের সমান হতে হবে। মালিক যা খাবে
ও পরবে, শ্রমিককেও তা থেকে খেতে ও পরতে দিবে অথবা অনুরূপ মানের ও অনুরূপ পরিমাণের অর্থ মজুরী
স্বরূপ প্রদান করবে।
৩. সময় ও কাজ উভয় দিক দিয়েই যা সাধ্যাতীত এমন দায়িত্ব শ্রমিকের উপর চাপানো যাবে না। এমনিভাবে
এত দীর্ঘসময় পর্যন্তও একাধারে কাজ করতে তাকে বাধ্য করা যাবে না, যা করতে শ্রমিক অক্ষম। বস্তুত সময় ও
মজুরীর বিষয়ে মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে যে দ্ব›দ্ব এবং মতবৈষম্য বর্তমান পৃথিবীকে বিড়ম্বিত ও বিক্ষুব্ধ করে
তুলেছে এর সঠিক সমাধান এবং উভয়ের মধ্যে ইনসাফপূর্ণ সমন্বয় একমাত্র ইসলামই করতে পারে।
৪. শ্রমিকের পক্ষে কষ্টকর এমন কাজ শ্রমিকের দ্বারা স¤পন্ন করাতে হলে প্রয়োজন অনুপাতে তাকে সাহায্য
করতে হবে। অধিক সময়ের প্রয়োজন হলে সে জন্য তাকে যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। এমনকি অধিক মজুরীর
প্রয়োজন হলে তাও স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে তাকে প্রদান করতে হবে।
কুরআন মাজীদে দুই সম্মানীত নবী হযরত শু‘আইব ও হযরত মূসা (আ)-এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। শু‘আইব
(আ) বলেছেন ঃ
وَ مَ ቯ أ᠑ ر᠒ ᗫدُ أ᠐ نْ أ᠐ شُ قَّ عَ ل᠐ ᘭ ْكَ سَ تَ جِ دُ نِ ى إِ ن شَ اءَ اللᡐ هُ مِ نَ الصَّ الِ حِ ينَ
‘আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তুমি আমাকে সদাচারী পাবে।’ (সূরা আল-কাসাস : ২৭)
এতেও শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়। নবী করীম (স.) শ্রমিকদের প্রতি হৃদ্যতাপূর্ণ
ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। মজুর ও চাকরের অপরাধ অসংখ্যবার ক্ষমা করা তিনি মহত্তে¡র লক্ষণ বলে
ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি নিজেও তাদের প্রতি হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ করতেন। হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) দীর্ঘ
দশ বছর পর্যন্ততাঁর খিদমত করেছেন এবং ছায়ার মতো তাঁর পাশে রয়েছেন। কিন্তু এই দীর্ঘকালের মধ্যে তিনি
তাঁর নিকট কোন কৈফিয়ত তলব করেননি এবং কোন কাজের দরুন তাঁকে কখনো ভর্ৎসনাও করেননি।
মোটকথা শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ক হবে ভাইয়ের মত। শ্রমিক-মালিক কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ভাই হিসেবে
আঞ্জাম দিবে। আর মালিক থাকবে তার প্রতি সহানুভূতিশীল, দয়াবান ও দরদী। মালিক শ্রমিককে শোষণ করবে
না এবং সাধ্যাতীত কোন কাজের দায়িত্বও তার উপর চাপিয়ে দিবে না। এমনিভাবে শ্রমিক ছাটাই করে তাদেরকে
অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিবে না।
মালিকের অধিকার ও কর্তব্য
শ্রমিক ও মালিকের অধিকার ও কর্তব্যের বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান পৃথিবীতে মালিক শ্রমিক
অসন্তোষ, শ্রমিক ছাটাই ও আন্দোলন ইত্যাদি অনভিপ্রেত অবস্থার উদ্ভব হচ্ছে এবং অবস্থা দিন দিন জটিল থেকে
জটিলতর হচ্ছে।
বস্তুত এসব বিষয়ে ইসলামের বক্তব্য অত্যন্তস্পষ্ট। মালিকের প্রধান কর্তব্য হলো কর্মক্ষম, সুদক্ষ ও শক্তিমান এবং
আমানতদার বিশ্বস্তব্যক্তিকে বা ব্যক্তিদেরকে কাজে নিয়োজিত করা। কর্মক্ষম ও আমানতদারী এ দুই গুণ ব্যতীত
কোন কাজে বা শিল্পে সফলতা অর্জন সম্ভব নয়।
কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
إِ نَّ خَ يْ رَ مَ ن᠒ ٱسْ تَ أ᠔ جَ رْ تَ ٱل᠔ قَ و᠒ ىُّ ٱلأَ مِ ينُ
‘তোমার মজুর হিসাবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’ (সূরা আল-কাসাস, : ২৬)
মালিকের দ্বিতীয় কর্তব্য হচ্ছে- সময় ও মজুরি নির্ধারণ করে শ্রমিককে কাজে নিয়োগ করা। অন্যথায় শ্রমিকমালিক অসন্তোষ দেখা দেয় এবং উৎপাদন বিঘিœত হয়। হাদীসে বর্ণিত রয়েছেঃ
ان رسول الله صلى الله علᘭه و سلم نهى عن اسᙬئجار الاجير حتى يᙬبين
له اجرە.
‘মজুরের মজুরী নির্ধারণ না করে তাকে কাজে নিয়োগ করতে রাসূলুল্লাহ (স.) নিষেধ করেছেন।’
ইসলামী অর্থনীতিতে মজুরি নির্ধারণ সূত্র হলো, ন্যূনতম মজুরি প্রত্যেক শ্রমিকের প্রয়োজনানুসারে নির্ধারিত হবে।
অর্থাৎ প্রত্যেক শ্রমিককে কমপক্ষে এমন মজুরি দিতে হবে, যেন সে এর দ্বারা তার ন্যায়ান্গু ও স্বাভাবিক চাহিদা
মিটাতে পারে।
উপরোক্ত হাদীসের আলোকে এ কথা বুঝা যায় যে, মালিক শ্রমিকদের ভরু-পোষণের দায়িত্ব নিবে অথবা এমন
মজুরী দিবে, যাতে তাদের প্রয়োজন মিটে যায়। প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির দক্ষতা, যোগ্যতা,
পরিবেশ, চাহিদা, জীবনযাত্রা ইত্যাদি পর্যালোচনা করে নির্ধারণ করতে হবে। আর এগুলো যেহেতু পরিবর্তনশীল,
তাই শ্রমিকের মজুরির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সাধিত হতে পারে।
মালিক শ্রমিক থেকে কি ধরনের কাজ নিতে চায় তাও পূর্বে আলোচনা করে নেওয়া মালিকের কর্তব্য। কোন
শ্রমিককে এক কাজের জন্য নিয়োগ করে তার সম্মতি ছাড়া তাকে অন্য কাজে নিয়োজিত করা বৈধ নয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে কাজ করা মাত্রই শ্রমিককে তার পারিশ্রমিক প্রদান করা মালিকের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। তবে
অগ্রিম বা অন্য কোন রকম শর্ত থাকলে তা ভিন্ন কথা। বস্তুত মজুর স¤প্রদায় হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কাজ করে
থাকে। তারা তাদের নিজেদের এবং পরিবারবর্গের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের জন্য এ পরিশ্রম করে এবং এই
মজুরিই তাদের একমাত্র উপায়। এমতাবস্থায় তারা যদি পরিশ্রম করে মজুরি না পায় কিংবা প্রয়োজন অপেক্ষা কম
পায় অথবা নির্দিষ্ট সময়মত প্রাপ্য না পায়, তবে তাদের দুঃখের কোন অন্তথাকে না। দুঃখ ও হতাশায় তাদের
হৃদয়-মন চূর্ণ ও ভারাক্রান্তহয়ে যায়। এমনকি তাদের অপরিহার্য প্রয়োজন পূরু না হওয়ার কারণে জীবন ও
সমাজের প্রতি তাদের মনে বীতশ্রদ্ধা ও বিতৃষ্ণার ভাব সৃষ্টি হয় এবং নিজেদের জীবন সম্পর্কে নৈরাশ্য ভাব সৃষ্টি
হয়। আর এটাই স্বাভাবিক। এ সব অচল অবস্থার সমাধানকল্পে রাসুলুল্লাহ (স.) শ্রমিকের মজুরি সম্বন্ধে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন ঃ
اعطوا الاجير اجرە قᘘل ان ᘌجف عرقه.
‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।’
অপর এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন- কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে
প্রকাশ্য অভিযোগ উত্থাপন করবেন। তার মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তি হচ্ছে ঃ
رجل استاجر اجيرا فاستوفى منه ولم ᘌعطه اجرە..
‘যে ব্যক্তি কাউকে মজুর হিসাবে খাটিয়ে ও তার দ্বারা পূর্ণ কাজ আদায় করা সত্তে¡ও শ্রমিকের মজুরি প্রদান করে
না।’
রাসূলুল্লাহ (স.) আরো বলেছেন -
مطل العنى ظلم.
‘ধনী ব্যক্তিদের টালবাহানা করা যুলুম।’
শ্রমের ব্যাপারে শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করে নেওয়া বাঞ্চনীয়। চুক্তি মুতাবিক শ্রমিক থেকে কাজ
আদায় করে নেওয়ার পূর্ণ অধিকার মনিবের থাকবে এবং শ্রমিক মালিকের নিকট কাজের ব্যাপারে জবাবদিহি
করতে বাধ্য থাকবে। এ ক্ষেত্রে কোন শৈথিল্য ও উদাসীনতা গ্রহণযোগ্য হবে না।
শ্রমিকের অধিকার ও কর্তব্য
ইসলাম যেমনিভাবে মালিকদের উপর বিভিন্ন দায়িত্ব-কর্তব্য ও বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, তেমনিভাবে শ্রমিক
ও মজুরদের উপর ও বিভিন্ন দায়িত্ব-কর্তব্য আরোপ করেছে। কারণ সুসম্পর্ক কোন দিনই একতরফাভাবে কায়েম
হতে পারে না। এ জন্য উভয় পক্ষের সদিচ্ছার প্রয়োজন। পারস্পরিক সমঝোতা ব্যতিরেকে তা কোনক্রমেই সম্ভব
হয়ে উঠতে পারে না।
ইসলামের দৃষ্টিতে একজন শ্রমিক নিজের উপর মালিকের কাজের দায়িত্ব নিয়ে এমন এক নৈতিক চুক্তিতে আবদ্ধ
হয় যে, এরপর সে এ কাজ শুধু পেটের জন্য করে না। বরং কাজ করবে আখিরাতের সফলতার আশায়। কেননা
চুক্তিপূর্ণ করার ব্যাপারে কুরআন মাজীদে বর্ণিত হয়েছে
وَ أ᠐ وْ فُ وا᠔ ᗷ ِال᠔ عَ هْ دِ إِ نَّ ٱل᠔ عَ هْ دَ ᛿᠐ انَ مَ سْ ؤُ وᢻ . ً
‘তোমরা প্রতিশ্রæতি পালন করবে। নিশ্চয় প্রতিশ্রæতি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।’ (সূরা বনী ইসরাঈল : ৩৪)
শ্রমিকের দায়িত্ব হচ্ছে- চুক্তি মুতাবিক মালিকের দেওয়া দায়িত্ব অত্যন্তআমানতদারী ও বিশ্বস্তার সাথে সম্পাদন
করা। কুরআন মাজীদে আরো বর্ণিত হয়েছে
إِ نَّ خَ يْ رَ مَ ن᠒ ٱسْ تَ أ᠔ جَ رْ تَ ٱل᠔ قَ و᠒ ىُّ ٱلأَ مِ ينُ .
‘মজুর হিসাবে সেই ব্যক্তি উত্তম হবে, যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’ (সূরা আল-কাসাস : ২৬)
মজুর বা শ্রমিক দায়িত্ব গ্রহণের পর কাজে কোনরূপ গাফিলতি করতে পারবে না। ইসলামের দৃষ্টিতে এ এক
মারাতœক অপরাধ। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন
وَ ᗫ ْــــلٌ لᡒ ل᠔ مُ طَ فِّ فِ ــــينَ ٱلᡐ ــــذِ ينَ إِ ذَ ا ٱ᠔ᜧ ت َ ــــال᠑ وا᠔ عَ ل᠐ ــــى ٱلنَّ ــــاس᠒ ᛒ َسْ ــــتَ وْ فُ ونَ وَ ល ِذَ ا ᛿᠐ ــــال᠑ وهُ مْ أ᠐ وْ
وَّ زَ نُ وهُ مْ ᘌ ُخْ سِ رُ ونَ
‘দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, যারা লোকদের নিকট থেকে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে
এবং যখন তাদের জন্য মেপে অথবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়।’ (সূরা আল-মুতাফফিফীন : ১-৩)
তাফসীরকারগণের মতে, এ আয়াতের মধ্যে মাপে কম-বেশী করার ভাবার্থে ঐ সব মজুরি ও শামিল করা হয়েছে,
যারা নির্ধারিত পারিশ্রমিক পুরোপুরি আদায় করে না এবং কাজে গাফিলতি প্রদর্শন করে।
যে কাজ যেভাবে করা উচিত সে কাজ সেভাবে আঞ্জাম দেওয়া শ্রমিকের দায়িত্ব। রাসূলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন‘যখন কোন বান্দা কাজ করে তখন আল্লাহ চান সে যেন সে কাজ যেভাবে করা দরকার ঠিক সেভাবেই আঞ্জাম দেয়।’
যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা এবং নিজ মালিকের হক্ আদায় করতে থাকে সে ইসলামের দৃষ্টিতে দ্বিগুণ সাওয়াবের
অধিকারী হবে। এ প্রসঙ্গে নবী করিম (স.) ইরশাদ করেন ঃ তিন প্রকারের লোকদেরকে দ্বিগুণ সাওয়াব প্রদান
করা হবে। তাদের একজন সেই ব্যক্তি যে নিজের মালিকের হক্ও আদায় করে এবং সাথে সাথে আল্লাহর হক্ও
আদায় করে।”
শ্রমিকের অধিকার
শ্রমিক-মালিকের যেমন কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে তেমনি তার কিছু অধিকারও রয়েছে। ইসলাম শ্রমিকের
অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করেছে এবং এর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এ ব্যাপারে ইসলামের
প্রথম কথা হল- শ্রমিকের ন্যায্য মজুরী দিতে হবে। কোনরূপ টালবাহানা করা যাবে না। তার প্রতি তার ক্ষমতার
অধিক কোন দায়িত্ব চাপানো যাবে না। শ্রমিক স¤প্রদায় উৎপাদনে শরীক থাকলেও মুনাফায় তাদেরকে অংশীদার
করা হয় না। কিন্তুু ইসলামী অর্থ ব্যবস্থায় লাভের মধ্যেও তাদেরকে অংশীদার করার বিধান রয়েছে। রাসূলুল্লাহ
(স.) ঘোষণা করেন, “শ্রমিকদেরকে তাদের শ্রমার্জিত সম্পদ (লভ্যাংশ) হতেও অংশ দিবে। কারণ আল্লাহর
মজুরকে বঞ্চিত করা যায় না।”
এ জন্যেই ইসলামে মুদারাবাত (অংশীদারী ব্যবসা), মুযারা‘আত (বর্গাচাষ)-এর বিধান দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা,
স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও বাসস্থান ইত্যাদি শ্রমিকদেরও মৌলিক অধিকার। এই অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা মালিক
বা সরকার পক্ষের উপর অপরিহার্য কর্তব্য। ইসলাম শ্রমিকদের স্বাস্থ্যরক্ষার তাগিদ করেছে। প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ
ইব্ন হযম (র.) বলেন, “মালিকের জন্য উচিত শ্রমিকের কাছ থেকে এতটুকু কাজ নেওয়া যতটুকু সে অনায়াসে
সুষ্ঠুভাবে করতে পারে, তার সামর্থ্যে কুলায়। এমন কিছু তার দ্বারা করাতে পারবে না; যার ফলে তার স্বাস্থ্যহানী
ঘটে।”
নবী করীম (স.) নিজে ভৃত্য-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রাখতেন। কেউ রোগাক্রান্তহলে তার চিকিৎসার
ব্যবস্থা করতেন। হযরত ওমর (রা.) ও অসুস্থ কর্মচারীদের সেবা-শুশ্রƒষা ও চিকিৎসা হচ্ছে কিনা এর খোঁজখবর নিতেন। কেউ এই কর্তব্য পালনে অবহেলা করলে তাকে পদচ্যুত করতেন।
শ্রমিক স¤প্রদায় ও তাদের সন্তানদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এমনিভাবে তাদের বাসস্থানের
বিষয়টিরও নিশ্চয়তা বিধান করা মালিক বা সরকার পক্ষের কর্তব্য। শ্রমিকদের চাকরির অধিকারে কোনরূপ
অন্যায় হস্তক্ষেপ করা যাবে না। নানা ছল-ছুতা, মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করিয়ে শ্রমিক ছাটাই করা গুরুতর অন্যায়।
এরূপ অন্যায় হস্তক্ষেপ ইসলামে বৈধ নয়। কোন কারণে শ্রমিকের চাকরি চলে গেলে তার কোন ব্যবস্থা না হওয়া
পর্যন্তরাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে তার ভরুপোষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
উৎপাদনে কোন ঘাটতি দেখা দিলে বা সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হলে এ ক্ষেত্রেও ইসলাম ন্যায়নুগ বিধান দিয়েছে।
ইবন হাযম (রা.) বলেন, ‘যাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তার হাতে যদি
অনিচছাকৃতভাবে ক্ষতি বা কোন কিছু নষ্ট হয়ে যায়, তবে ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব শ্রমিকের উপর বর্তাবে না। বরং
ঘাটতির লোকসান মালিককেই বহন করতে হবে। অবশ্য সে যদি ক্ষতি করার ইচ্ছা নিয়ে তা করে তবে অন্যকথা। আর এ ব্যাপারে কোন সাক্ষী না থাকলে কসমসহ মজুরের কথাই গ্রহণযোগ্য হবে।’
ইসলাম মূলত এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়, যেখানে সবার অধিকারই সংরক্ষিত থাকে এবং চাওয়ার
আগেই স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে প্রত্যেকের অধিকার আদায় করে দিতে সকলেই উদ্বুদ্ধ থাকে। ইসলামী সমাজে কোন দাবী
পেশের দরকার হয় না। যদি কাউকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, তবে দাবী পেশ করার অধিকারও তার
রয়েছে। অধিকার আদায়ের দাবী এ কারো কাছে যাচঞা করা বা প্রার্থনা নয় বা কারো অনুকম্পার বিষয় নয় বরং
এ হচ্ছে তার বাঁচার অধিকার।
বৃদ্ধ ও অসুস্থতার জন্য ভাতা লাভ শ্রমিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এ অধিকারের কথাও স্বীকার
করে। কেননা শ্রমিকের একমাত্র পুঁজিই হল শ্রম। কিন্তুু সে বৃদ্ধ বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বেঁচে থাকার আর কোন
পুঁজিই থাকে না, যা দিয়ে সে অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা করবে। তাই বৃদ্ধ, পঙ্গু, অসুস্থ, অসহায়, বিধবা ও দুর্বল
লোকদের ভরু-পোষণ এর দায়িত্ব সরকারের। সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাদের সমস্তপ্রয়োজন পূরু
করবে। প্রয়োজন অনুযায়ী ভাতা নির্ধারণ করবে এবং তাদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করবে। রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন
‘কেউ সম্পদ রেখে মারা গেলে তার ওয়ারিসগণ এই মালের অধিকারী হবে। আর তাদের ভরণ-পোষণের দায়-
দায়িত্ব আমার’ (অর্থাৎ সরকারের উপর)।
সাহবায়ে কেরামের স্বর্ণযুগে এ মূলনীতির উপরই তাঁরা আমল করেছেন।
সারকথা
জীবিকা উপার্জনের অন্যতম উপায় হচ্ছে শ্রম। ইসলাম শ্রম বিনিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহিত করেছে। ভিক্ষাবৃত্তি
বা পরনির্ভরশীলতাকে ইসলাম নিন্দনীয় কাজ হিসেবে মনে করে। ইসলামে হালাল কাজে ও হালাল বিনিয়োগে
কোন দোষ নেই। বরং এ হচ্ছে নবী-রাসূলগণের সুন্নাত। প্রত্যেক নবী রাসূলই দৈহিক পরিশ্রম করে উপার্জন
করেছেন। যারা শ্রমিক তাদেরকে আল্লাহর রাসূল মালিকের ভাই হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাই মালিক ও
শ্রমিকের মধ্যে উত্তম স¤পর্ক বজায় রাখা ইসলামের নির্দেশ। শ্রমিককে তার ন্যায্য পাওনা যথাসময়ে দিতে দিতে
হবে। শ্রমিকের উপর কোন কষ্টসাধ্য কাজ চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। শ্রমিক ও চাকর যদি বার বার অপরাধ
করে তবে তাকে বার বার ক্ষমা করে দেওয়া ইসলামের বিধান। মহানবী (স.) শ্রমিক ও মজুরের প্রতি হৃদ্যতাপূর্ণ
আচরণ করার শিক্ষা দিয়েছেন। মালিক শ্রমিককে এমন মজুরি দেবে যাতে শ্রমিক জীবন যাত্রা নির্বাহ করতে
পারে। মহানবী (স.) বলেন, শ্রমিকের পরিশ্রমিক ও ঋণ পরিশোধ নিয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালবাহানা করা অন্যায়।
ইসলাম মালিকের উপর যেমন বিভিন্ন দায়-দায়িত্ব, কর্তব্য ও বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, তেমনিভাবে শ্রমিক ও
মজুরের উপরও বিভিন্ন দায়িত্ব ও কর্তব্য আরোপ করেছে। শ্রমিক-মালিকের মধ্যে সুস¤পর্ক বজায় রাখার জন্যই
ইসলাম এ বিধি বিধান দিয়েছে। বৃদ্ধ ও অসুস্থ শ্রমিকের ভাতা লাভ তাদের মৌলিক অধিকার। সুতরাং তাদেরকে প্রাপ্য অংশ যথাযথভাবে দিতে হবে।
উত্তর সঠিক হলে ‘স’ আর মিথ্যা হলে ’মি‘ লিখুন।
১. ইসলাম মানুষকে শ্রম বিনিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহিত করে।
২. প্রত্যেক নবীই দৈহিক পরিশ্রম করে উপার্জন করেছেন।
৩. হযরত আদম (আ.) লোহার কাজ করতেন।
৪. মজুর ও চাকরের অপরাধ একাধিকবার ক্ষমা করার বিধান ইসলামে নেই।
৫. ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক ও মালিকের স¤পর্ক হবে ভাইয়ের মত।
৬. শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান শ্রমিকের মৌলিক অধিকার।
বহু নৈর্বাচনিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তরটি খাতায় লিখুন।
১. নবী করীম (স.) -এর নির্দেশে লোকটি কত দিরহাম উপার্জন করলেন?
ক. দুই দিরহাম
খ. এক দিরহাম
গ. পাঁচ দিরহাম
ঘ. দশ দিরহাম।
২. ভিক্ষাবৃত্তির পরিণতি কি হবে?
ক. জাহান্নামী হবে
খ. কিয়ামাতের দিন চেহারায় দাগ আসবে
গ. গরীব অবস্থায় পুনরুত্থান হবে
ঘ. সকল উত্তরই সঠিক।
৩. হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর খাদেমের নাম ছিলক. মালিক ইবনে আনাস
খ. আনাস ইবনে মালিক
গ. মালিক ইবনে দীনার
ঘ. ইমাম মালিক
৪. ‘‘শ্রমিকের শরীরের ঘাম শুকানোর আগে তার পারিশ্রমিক দিতে হবে’’ -এটি কার নির্দেশ
ক. আল-কুরআনের
খ. মহানবী (স.)-এর
গ. হযরত ওমর (রা.)- এর
ঘ. ইমাম আবু হানিফা (র.)- এর
৫. মুযারা‘আত শব্দের অর্থ হলক. অংশীদারী ব্যবসা
খ. বর্গাচাষ
গ. জমির ফসলের যাকাত প্রদান
ঘ. শ্রমিকের মৌলিক অধিকার।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামে শ্রমের গুরুত্ববর্ণনা করণন।
২. মালিক-শ্রমিকের স¤পর্ক কী হওয়া উচিত- আলোচনা করণন।
৩. মালিকের অধিকার ও কর্তব্য সংক্ষেপে আলোচনা করণন।
৪. শ্রমিকের অধিকার ও কর্তব্য স¤পর্কে সংক্ষেপে লিখুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. মালিক ও শ্রমিকের স¤পর্ক নির্ণয় করে মালিকের অধিকার ও কর্তব্যসসূহ আলোচনা করণন।
২. শ্রমের গুরুত্বসহ শ্রমিকের অধিকার ও কর্তব্য স¤পর্কে যা জানেন লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]