ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ বিস্তারিত লিখুন। ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতিসমূহ বিস্তারিত আলোচনা করুন।

ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য
ইসলামী রাষ্ট্র একটি আদর্শ ভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে এর কতিপয় অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে ইসলামী রাষ্ট্রের
উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচিত হলকুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক রাষ্ট্র
একটি জাতি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সামনে আত্মসমর্úণ করবে। তার
অধীনে কর্তৃত্ব নেতৃত্বের পরিবর্তে তাঁর প্রতিনিধি তথা খলীফার ভূমিকা গ্রহণ করবে এবং সে সব বিধি-বিধান
এবং নির্দেশাবলী কার্যকর করবে, যা আল-কুরআন এবং রাসূলের মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছে। একটি স্বাধীন
জাতির পক্ষ থেকে বুঝে শুনে এহেন ঘোষণার মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র অস্তিত্ব লাভ করে।
সার্বভৌমত্ব আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট
ইসলামী রাষ্ট্রে সার্বভৌমত্ব আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। এ রাষ্ট্র ধর্ম যাজকদের কোন বিশেষ শ্রেণীকে আল্লাহর
বিশেষ ক্ষমতার ধারক-বাহক মনে করে না। সমস্ত ক্ষমতা এই শ্রেণীর হাতে ন্যস্ত করার পরিবর্তে ইসলামী রাষ্ট্র
দেশের মধ্যে বসবাসকারী সকল ঈমানদার লোককে আল্লাহর খিলাফত তথা প্রতিনিধিত্বের ধারক-বাহক মনে
করে। আর এদের হাতেই শরীআত মোতাবেক রাষ্ট্রীয় বিধান প্রয়োগের চাবিকাঠি ন্যস্ত করে।
ইসলামী রাষ্ট্র একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র
রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা, পরিবর্তন এবং পরিচালনা ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে জনগণের রায় অনুযায়ী হতে হবে, পাশ্চাত্য
জমহুরিয়াত বা গণতন্ত্রের এই নীতির সাথে ইসলামী রাষ্ট্র একমত। কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্রের জনগণ বলগাহীন
নয়। রাষ্ট্রের আইন-কানুন জনগণের জীবন-যাপনের মূলনীতি, অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক নীতি, রাষ্ট্রের উপায়
উপকরণ সব কিছুই জনগণের ইচ্ছানুযায়ী হবে এমন নয়। এমনও হতে পারে না যে, যেদিকে জনগণ ঝুঁকে
পড়বে, ইসলামী রাষ্ট্রও সেদিকেই ঝুঁকে পড়বে। বরং আল্লাহর বাণী এবং রাসূলের হাদীস নিজস্ব নিয়ম-নীতি;
সীমারেখা, নৈতিক বিধি-বিধান এবং নির্দেশাবলী দ্বারা জনগণের ইচ্ছা-বাসনা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। রাষ্ট্র এমন
এক সুনির্দিষ্ট পথে চালিত হয়, যার পরিবর্তন সাধনের ক্ষমতা শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ কারো
নেই। সামাজিকভাবে গোটা জাতিও যদি এর পরিবর্তন সাধান করতে চায় বা করে ফেলে তাহলে মুসলিম
জনগণ ঈমানের গন্ডী থেকে দূরে সরে যাবে।
ইসলামী রাষ্ট্র একটি আদর্শ ভিত্তিক রাষ্ট্র
ইসলামী রাষ্ট্র একটি নির্দিষ্ট আদর্শ অর্থাৎ ইসলামী আদর্শ ভিত্তিক রাষ্ট্র। তাই এ রাষ্ট্র পরিচালনা স্বভাবতই
তাদের কাজ হতে পারে যারা তার মৌলিক দর্শন এবং বিধি-বিধান স্বীকার করে। কিন্তু তা স্বীকার করে নাএমন ব্যক্তি সে রাষ্ট্র সীমায় আইনের অনুগত হয়ে বাস করলেও রাষ্ট্র পরিচালনা করার দায়িত্ব পাবে না।
তাদেরকে সেসব নাগরিকের অধিকার দেওয়া হবে যারা ইসলামী রাষ্ট্রের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হয়।
ইসলামী রাষ্ট্র একটি আদর্শিক বিশ্বরাষ্ট্র
ইসলামী রাষ্ট্র এমন এক রাষ্ট্রব্যবস্থা যা বংশ, বর্ণ, ভাষা এবং ভৌগোলিক জাতীয়তার পরিবর্তে শুধু নীতি
আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত। পৃথিবীর যে কোন অঞ্চলের মানবজাতির যে কোন সদস্য ইচ্ছা করলে সে মূলনীতি
স্বীকার করে নিতে পরে। কোন প্রকার ভেদ বৈষম্য ছাড়াই সম্পূর্ণ সমান অধিকার নিয়ে সে ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত
হতে পারে। এ আদর্শের ভিত্তিতে বিশ্বের যেখানেই কোন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে নিশ্চিতভাবে তা হবে ইসলামী রাষ্ট্র,
তা আফ্রিকায় প্রতিষ্ঠিত হোক কি এশিয়ায় ; সে রাষ্ট্রের পরিচালকমন্ডলী কালো হোক বা সাদা হোক, ধনী হোক
বা দরিদ্র হোক। এ ধরনের একটি নিরংকুশ আইন ভিত্তিক রাষ্ট্রের বিশ্বরাষ্ট্রে (ড়িৎষফ ংঃধঃব) রূপান্তরিত হওয়ায়
কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলেও যদি এ ধরনের অনেক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, তাও ইসলামী রাষ্ট্র
হিসেবে গণ্য হবে। কোন জাতীয়তাবাদী দ্ব›দ্ব সংঘাতের পরিবর্তে সে সব রাষ্ট্রের মধ্যে পরিপূর্ণ ভ্রাতৃসুলভ
সহযোগিতা সম্ভব। কোন এক সময় তারা একমত হয়ে বিশ্ব ফেডারেশন ( প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র
ইসলামী রাষ্ট্রে রাজনীতিকে স্বার্থের পরিবর্তে নীতি-নৈতিকতার অনুগত করা এবং আল্লাহভীতি ও পরহেজগারীর
সাথে তা পরিচালনা করা সে রাষ্ট্রের মৌল প্রাণ শক্তি।
নৈতিক চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্বই ইসলামী রাষ্ট্রে শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র ভিত্তি ও একক মানদন্ড। সে রাষ্ট্রের পরিচালকমন্ডলী
এবং শূরা বা পরামর্শ সভা এর নির্বাচনের ব্যাপারেও শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতার সাথে নৈতিক পবিত্রতাও
সর্বাধিক লক্ষ্যণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ রাষ্ট্রের সকল অভ্যন্তরীণ প্রশাসন পরিচালিত হবে আমানত, সততা,
বিশ্বস্ততা ও পক্ষপাতমুক্ত সুবিচারের ভিত্তিতে। আর তার বৈদেশিক নীতি সম্পূর্ণ সততা ও ন্যায়-নিষ্ঠার উপর,
চুক্তি-অঙ্গীকারের প্রতি আস্থাবান হয়ে, শান্তিপ্রিয়তা ও আন্তর্জাতিক সুবিচার এবং সদাচরণের ভিত্তির উপর
প্রতিষ্ঠিত হবে।
ন্যায়ের বিকাশ ও অন্যায়ের বিনাশ
ইসলামী রাষ্ট্র নিছক পুলিশের দায়িত্ব পালন করার জন্য নয়। শুধু আইন-শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা এবং দেশের
সীমান্ত রক্ষা তার কাজ নয়; বরং তা হচ্ছে একটি আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র। সামাজিক সুবিচার, ন্যায়ের বিকাশ ও
অন্যায়ের বিনাশ সাধনের জন্যই ইসলামী রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক মূল্যমান
অধিকার, মর্যাদা, সুযোগ, সুবিচার, সাম্য, আইনের শাসন, ভাল কাজে সহযোগিতা, মন্দ কাজে অসহযোগিতা,
আল্লাহর সম্মুখে জবাবদিহিতার অনুভ‚তি, কর্তব্যের অনুভূতি ব্যক্তি সমাজ এবং রাষ্ট্র সকলের একই লক্ষে
ঐকমত্য, সমাজের কোন ব্যক্তিকে জীবন যাপনের অপরিহার্য উপাদান উপকরণ থেকে বঞ্চিত থাকতে না দেয়া,
এসব হচ্ছে ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক মূল্যমান
একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা ঃ
ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থায় ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রের মধ্যে এমন এক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যে, রাষ্ট্র লাগামহীন এবং
সামগ্রিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ব্যক্তিকে নিরীহ দাসে পরিণত করতে পারে না। আর ব্যক্তিও সীমাহীন
স্বাধীনতা পেয়ে ঔদ্ধত্যপরায়ণ এবং সামাজিক স্বার্থের দুশমন হতে পারে না। এতে ব্যক্তিকে একদিকে মৌলিক
অধিকার দান করা হয়েছে; অন্য দিকে রাষ্ট্রকে ঊর্ধ্বতন আইন এবং শূরার অনুগত করে ব্যক্তিসত্তা বিকাশের
সকল সুযোগ সুবিধা দান করা হয়েছে। ক্ষমতায় অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ থেকে ব্যক্তিকে নৈতিক নীতিমালার ডোরে
শক্তভাবে বেঁধে দেয়া হয়েছে।্ তার ওপর এ কর্তব্যও আরোপ কর হয়েছে যে, রাষ্ট্র আল্লাহর বিধান অনুযায়ী
কাজ করলে মনে প্রাণে রাষ্ট্রের আনুগত্য শৃংখলায় ফাটল ধরানো থেকে বিরত থাকতে হবে। তার সংরক্ষণে
জান-মাল দিয়ে যে কোন ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। ইসলাম একটি পূর্ণাংগ জীবন দর্শন। ইসলামের
রাষ্ট্র ব্যবস্থা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থারই একটি অপরিহার্য বৃহদায়তন। মূলত ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলিম সমাজ পূর্ণ
একটি রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাজ। ইসলামী নীতি ও কানুন মুতাবিক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত রাষ্ট্রই ইসলামী রাষ্ট্র। অপর
দিকে অন্য কোন নিয়ম বা আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত রাষ্ট্রকে সাধারণ রাষ্ট্র বা বিশেষ আদর্শের রাষ্ট্র হিসেবে
চিহ্নিত করা হয়। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বলতে পুঁজিবাদী, সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রকে বুঝানো হয়। তবে
ইসলামী রাষ্ট্র ও আধুনিক রাষ্ট্রের মধ্যে ব্যাপক আদর্শগত ও মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতি
ক্স ইসলামী রাষ্ট্র একটি ধর্মভিত্তিক আদর্শিক গণতান্ত্রিক জনকল্যাণকর রাষ্ট্রব্যবস্থা।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেন একমাত্র আল্লাহ, যদিও ইসলামী রাষ্ট্রের নেতা নির্বাচন
জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই হয়ে থাকে। আর এ নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান আল্লাহর প্রতিনিধি মাত্র।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের সংবিধান রচনাকারী হলেন মহান আল্লাহ। রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিরা তা কার্যকর করেন মাত্র।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রে যে পদ চায়, সে উক্ত পদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান সরাসরি
মুসলিম জনগণের মতামত ও আস্থার ভিত্তিতে কিংবা জননির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচিত হন।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের নেতা হতে হলে মুসলিম হওয়া শর্ত। এদের মধ্য হতে আস্থাভাজন সৎ, যোগ্য ও
ইসলামের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচনে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে আইন প্রণেতা কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াসের ভিত্তিতে আইন
প্রণয়ন করে থাকেন। এখানে নিজস্ব মতামতের কোন অবকাশ নেই। কাজেই ইসলামী রাষ্ট্রে এককভাবে
মানুষের কোন আইন রচনা করার অধিকার নেই। তবে যে সব ক্ষেত্রে ইসলামী শরীআত রাষ্ট্রপ্রধানকে
এখতিয়ার দিয়েছে সেক্ষেত্রে পরামর্শক্রমে আইন রচনা করতে পারবেন।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রে আল্লাহ প্রদত্ত শরীআত অনুযায়ী দেওয়ানী ও ফৌজদারী সব রকম বিচারব্যবস্থা পরিচালিত
হয়। সকলেই এখানে ন্যায়বিচার পায়। এখানে কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড একটি সুনির্দিষ্ট বিধানের অধীনে পরিচালিত হয়। এখানে ব্যক্তি
মালিকানা স্বীকৃত ; তবে তা অনিয়ন্ত্রিত নয়। এর অর্থব্যবস্থা সুদমুক্ত। তাছাড়া পুঁজিকে নিয়ন্ত্রণ করার
জন্য যাকাত, ওশর, খারাজ, জিযিয়া প্রভৃতি বিধান চালু করা হয়।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের গোটা প্রশাসন ব্যবস্থাকে জনগণের সেবায় নিয়োজিত করা হয়। জনগণের কল্যাণ ও
সেবাদানই এখানে মুখ্য বিষয়। রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে সর্বনি¤œ স্তরের প্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীগণ
নিজেদেরকে জনগণের সেবক হিসেবেই মনে করে।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক নীতি ও নৈতিকতার সুস্পষ্ট বিধানের অনুসরণ করতে বাধ্য। এখানে
নৈতিক মান উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়া হয় রাষ্ট্রের তরফ থেকেই।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার একচ্ছত্র ও নিরঙ্কুশ মালিক হলেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ। রাষ্ট্র
পরিচালনায় মানুষ আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি মাত্র। মহান আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে ইসলামী
শরীআত অনুযায়ী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালিত হয়। সরকার নিজস্বভাবে কোন আইন রচনার
অধিকারী নন।
“বিধান দেয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহরই।” (সূরা-ইউসুফ : ৪০)
ক্স ইসলামী রাষ্ট্র একটি খোদায়ী রাষ্ট্রব্যবস্থা। এখানে আল্লাহকে সর্বময় ক্ষমতার উৎস ও নিয়ন্ত্রক মনে করা হয়।
এর ওপর ভিত্তি করেই আল্লাহর প্রতিনিধিত্বমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্র কোন ভৌগোলিক সীমারেখা, ভাষা বা বর্ণ ভিত্তিক নয়, এটি একটি আদর্শিক চিন্তা ভিত্তিক রাষ্ট্র।
দুনিয়ার যে সব মানুষ একই আদর্শ অর্থাৎ তাওহীদ ও রিসালাতে বিশ্বাসী তারা সবাই ইসলামী রাষ্ট্রের
সদস্যভুক্ত হতে পারে। আদর্শিক চিন্তাভিত্তিক হওয়াতেই বিশ্বব্যাপী ইসলামী রাষ্ট্র গঠিত হওয়া সম্ভব।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের শাসতন্ত্রের প্রধানত মূলভিত্তি ৪টি। কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস। ইসলামী রাষ্ট্রে আল্লাহ
তাআলার বিধি-বিধানই চলু থাকবে সর্বশক্তিমান আল্লাহর বিধানও সর্বোত্তম, সর্বসুন্দর নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ।
মানুষের উপযোগী ও কল্যাণধর্মী। এতে পরিবর্তন বা এর পরিপন্থী বিধান দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।
ক্স ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এটি একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্র দেশের স্বাধীনতা ও
সার্বভৌমত্ব রক্ষার সাথে সাথে সব রকম জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে। নাগরিকদের অন্ন, বস্ত্র,
শিক্ষা, চিকিৎসা, চরিত্র সংশোধন এক কথায় সার্বিক সমস্যার সমাধান করা ইসলামী রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব।
ইসলামিক স্টাডিজ-৪ : ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম
ইউনিট-১ : ইসলামী রাষ্ট্রের পরিচয় পৃষ্ঠা-১৪
অক্ষম, বেকার, বিকলাঙ্গ, ঋণগ্রস্ত এবং যারা সহায়-সম্বলহীন তাদের ভরণ-পোষণের গুরু দায়িত্ব ইসলামী
রাষ্ট্রের।
ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতির সারকথা
আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ)-এর আনুগত্যের স্থান সকল আনুগত্যের উর্ধ্বে থাকবে।
সকল দায়িত্বপূর্ণ পদে শাসক ও কর্মকর্তাদের মুসলিম হতে হবে।
শাসক জনগণের প্রভু নয়, সেবক হবে।
সরকারের বৈধ কাজের আনুগত্য সকলের কর্তব্য।
সরকারের সমালোচনা করার অধিকার সকল নাগরিকের থাকবে।
রাষ্ট্রের আইন-কানুন শরীআত মোতাবেক হতে হবে।
কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে সকল বিরোধ মীমাংসা করতে হবে।
সারকথাঃ ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রগতিশীল কল্যাণকর আদর্শিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা যা বিশ্বমানবতার জন্য একান্তই অপরিহার্য।
নৈব্যক্তিক উত্তর-প্রশ্ন
১. সার্বভৌমত্ব কার জন্য নির্দিষ্ট?
ক. জনগণের জন্য; খ. সরকারের জন্য;
গ. সরকার প্রধানের জন্য; ঘ. একমাত্র আল্লাহর জন্য।
২. ইসলামী রাষ্ট্রের আইন-কানুন চলবেক. জনগণের ইচ্ছানুযায়ী; খ. একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী
গ. রাষ্ট্রপ্রধানের ইচ্ছানুযায়ী; ঘ. কিছু আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী আর কিছু
জনগণের ইচ্ছানুযায়ী।
৩. ইসলামী রাষ্ট্রের সংবিধান রচনাকারী হলেনক. সরকার; খ. সংসদ
গ. বিশেষজ্ঞ মহল; ঘ. মহান আল্লাহ
৪. ইসলামী রাষ্ট্রে যে পদ চায় তাকেক. পদ দেওয়া হয়; খ. পদের অযোগ্য বলে
বিবেচনা করা হয়;
গ. পদের জন্য যোগ্য বিবেচনা করা হয়; ঘ. মহান আল্লাহর বন্ধু মনে করা হয়।
৫. ইসলামী রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্রের মূল ভিত্তি ৪টি-এর একটি হলক. সংসদের মতামত; খ. জনগণের মতামত;
গ. মানব চিন্তা; ঘ. কুরআন।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামী রাষ্ট্র একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র- ব্যাখ্যা করুন।
২. ইসলামী রাষ্ট্র একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্র-ব্যাখ্যা করুন।
৪. ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতিগুলোর সারসংক্ষেপ লিখুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ বিস্তারিত লিখুন।
২. ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতিসমূহ বিস্তারিত আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]