ইসলামী রাষ্ট্রের উৎসসমূহ ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা স¤পর্কে বর্ণনা করুন।

ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল উৎস
ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা এটা কোন মানুষের আবিষ্কার বা যুগের চাহিদা মাফিক বক্তব্য নয়। বরং ইসলামী রাষ্ট্র
ব্যবস্থার মূল উৎস হচ্ছে কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (স)-এর আদর্শ। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেহেতু স্থিতিশীল কোন
বিষয় নয় বরং তা যুগ ও সময়ের সাথে চলমান ; তাই কুরআন ও হাদীসে কেবল ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার
মূলনীতিসমূহ দেয়া হয়েছে। বাকি খুঁটিনাটি বিষয় রচনা করার ভার যুগের বিশেষজ্ঞদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
তাঁরা ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থাকে যুগের চাহিদা মোতাবেক কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে রচনা করবেন। ফলে দেখা
যায় ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল উৎস দাঁড়ায় ৪টি যা নি¤œরূপ১. আল-কুরআন,
২. সূন্নাহ তথা রাসূলুল্লাহ (স)-এর আদর্শ,
৩. উম্মাতের ইজমা (ঐকমত্য) এবং
৪. কিয়াস বা ইজতিহাদ (গবেষণা)।
নিæে উৎসসমূহের প্রামাণিক বিবরণ পেশ করা হলপ্রথম উৎস ঃ আল-কুরআন
ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রধান ও প্রথম উৎস হচ্ছে আল-কুরআন।
“কিতাবে কোন কিছুই আমি বাদ দেইনি।” (সূরা আল-আন’আম : ৩৮)
অর্থাৎ আল্লাহ বলেছেন, কুরআনে আমি মানবজাতির প্রয়োজনীয় সব কিছুই বলে দিয়েছি কিছুই বাদ রাখিনি।
ইসলামী শরীআতের বিধি-বিধানের দিকে দৃষ্টি দিলে আল্লাহর এ কথার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়। শরীআতের
বিধানে ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ের আইন বিধান প্রদান করা হয়েছে।
যেহেতু ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থায় সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা’আলা, তাই কুরআনে রাষ্ট্রের মূল
বিষয়সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রকৃতি, গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব, শাসন কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্ব, বিচার
ব্যবস্থা প্রভৃতি সব বিষয় সম্পর্কে অকাট্য ও স্পষ্ট বিধান উল্লেখ রয়েছে। যেমন-
“আমি এদের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠাদান করলে নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, সৎকাজের আদেশ
দেবে এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে।” (সূরা আল-হাজ্জ : ৪১)
ক্স সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে কুরআনের ঘোষণা ঃ “তারই জন্য রাজত্ব, আকাশ, পৃথিবী এবং এই উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সবই তাঁর।” (সূরা- যুখরূফ - ৮৫)
“আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী তাদের বিচার নিষ্পত্তি কর এবং তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর
না।” (সূরা আল-মায়িদা : ৪৯)
বস্তুত কুরআনেই ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার কর্মধারা, কার্যসূচি, শাসকবর্গের দায়িত্ব-কর্তব্য ইত্যাদির মূলনীতিসমূহ
স্পষ্ট ভাষায় উপস্থাপিত হয়েছে।
ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার দ্বিতীয় উৎস ঃ রাসূলুল্লাহ (স)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ
ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার দ্বিতীয় উৎস হচ্ছে সুন্নাহ তথা রাসূলুল্লাহ (স)-এর বাস্তব আদর্শ। কুরআনে বর্ণিত
মূলনীতির আলোকে মহানবী (স) ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার বাস্তব রূপায়ণ করেছেন তাঁরই প্রতিষ্ঠিত মদীনার
ইসলামী রাষ্ট্রে। কাজেই বলা যায়- শুধু কুরআনেই নয় ; রাসূলুল্লাহ (স)-এর সুন্নাতেও রয়েছে ইসলামী রাষ্ট্র
ব্যবস্থার ব্যাখ্যা ও বাস্তবরূপ সংক্রান্ত বিধি-বিধান।
মহানবী (স) এর হাদীস পর্যালোচনা করলে যে বিষয়গুলো আমাদের কাছে ¯পষ্ট হয়ে উঠে তা নি¤œরূপক. নেতৃত্ব ও আনুগত্য রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল বিষয়। এ বিষয়ে মহানবী (সাঃ) বলেন -
ক্স “যখন তিন ব্যক্তি পথ চলে, তখন তারা যেন তাদের একজনকে নেতা বানিয়ে নেয়।” (মিশকাত)
ক্স “যে ব্যক্তি নেতার আনুগত্য হতে হাত গুটিয়ে নেবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলী (কুফরী) মৃত্যু।”
খ. নবী (স) -এর পর ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যিনি পাবেন: তার সম্পর্কে মহানবী (স) বলেন ঃ
“বনী ইসরাঈলের নবীগণ শাসন পরিচালনা করতেন। এক নবীর পর আরেক নবী তাঁর স্থলাভিষিক্ত
হতেন। কিন্তু আমার পর আর কোন নবী আসবেন না বরং খলীফা (প্রতিনিধি) হবেন। তিনি মুসলিম
উম্মাহর সকল দায়িত্ব পাবেন।” (বুখারী, মুসলিম)
গ. ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থায় নির্বাচন এক অপরিহার্য ব্যাপার। এ সম্পর্কে নবী করীম (স) বলেন, “যে ব্যক্তি
মুসলমানদের কোন কাজের দায়িত্ব লাভ করে, অতঃপর সে বেশি উপযুক্ত ব্যক্তি থাকতে কম উপযুক্ত
ব্যক্তিকে প্রতিনিধিত্ব দান করে সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল।”
ঘ. মহানবী (স) ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপকার। তাঁর জীবনের দিকে তাকালে দেখতে পাই, তিনি মদীনায়
গিয়ে একটি রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তিনি ছিলেন সে রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। রাষ্ট্র পরিচালনার
যাবতীয় দায়-দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। তাঁর সকল রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড ও কর্মস‚চি এবং যাবতীয়
দলীলপত্র হাদীস ভান্ডারে রক্ষিত আছে।
কাজেই বিনা দ্বিধায় বলতে হয়, রাস‚লুল্লাহ (স)-ই ছিলেন ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার ম‚র্ত প্রতীক এবং বাস্তব
রূপকার।
তৃতীয় উৎস ঃ ইজমা (ঐকমত্য)
ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার তৃতীয় উৎস হচ্ছে ইজমা (ঐকমত্য)। সকল যুগের সকল মুসলমান এ ব্যাপারে ঐকমত্য
পোষণ করে আসছেন যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র ও রাজনীতি অপরিহার্য বিষয়।
এ কারণেই দেখি, নবী করীম (স)-এর পরলোক গমনের পর তাঁর দাফনের কাজ শেষ করার আগেই তাঁর
জায়গায় (খলীফা) নির্বাচন করার জন্য সাহাবীগণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
তাছাড়া সাহাবীদের আমল এবং খুলাফায়ে রাশিদীনের রাষ্ট্র ও শাসন প্রভৃতি থেকে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার
অপরিহার্যতা বোঝা যায়। কাজেই ইজমা (ঐকমত্য) ও ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার অন্যতম উৎস।
চতুর্থ উৎস ঃ কিয়াস বা ইজতিহাদ (গবেষণা)
ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার চতুর্থ উৎস হচ্ছে কিয়াস বা ইজতিহাদ। সকল যুগের সকল মুসলিম পন্ডিত এ বিষয়ে
সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, “জনগণের যাবতীয় ব্যাপার সুসম্পন্ন করা, রাষ্ট্র কায়েম করা ইসলামের সর্বপ্রধান দায়িত্ব।
রাষ্ট্র ছাড়া ইসলাম প্রতিষ্ঠা হতে পারে না। তাছাড়া আল্লাহ তা’আলা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিরোধ এবং
নিপীড়িতদের সাহায্য করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। আর এগুলো রাষ্ট্রশক্তি ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ছাড়া কিছুতেই
সম্পন্ন হতে পারে না।
অতএব শরীআতের আইন জারি ও কার্যকরি করার জন্য ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা একটি অপরিহার্য কর্তব্য।”
(ইমাম ইবনে তাইমিয়া ঃ আস সিয়াসাহ আশ-শারিআহ পৃঃ ১৭২-৭৩)
উপরিউক্ত আলোচনা হতে পরিষ্কার বুঝা যায়, ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা নতুন কোন বিষয় নয়। বরং এটা কুরআন,
সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস দ্বারা প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত বিষয়। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মানবতার কল্যাণ
এবং ঈমানী দাবি পূরণ করা সম্ভব।
রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামের নির্দেশ
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। ইসলামী শরীআতে রয়েছে মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগ এবং
সকল কাজ ও বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট আইন ও বিধান। জীবনের এমন কোন দিক ও বিভাগ নেই যে বিষয়ে
ইসলামী শরীআতে কোন নির্দেশনা পাওয়া যায় না। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থায় রয়েছে ইবাদত, নৈতিক চরিত্র,
আকীদা-বিশ্বাস এবং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক ও কাজ কর্ম এবং লেন-দেন পর্যায়ে সুস্পষ্ট বিধান। গোটা
মানব সমাজের ব্যক্তি ও সমষ্টি সম্পর্কেই সু¯পষ্ট আইন-বিধান রয়েছে ইসলামী শরীআতে। মানব সমাজের
এমন কোন দিক নেই যে স¤পর্কে ইসলামী শরীআতের কোন বিধান নেই।
“কিতাবে কোন কিছুই আমি বাদ দেইনি।” (সূরা আল-আন’আম : ৩৮)
অন্য কথায় আল্লাহর দাবি হলো, কুরআনেই আমি জরুরি সব কথা বলে দিয়েছি, কিছুই বাদ রাখিনি। বস্তুত
ইসলামী শরীআতের বিধানাবলী আল্লাহর এ দাবির সত্যতা অকাট্যভাবে প্রমাণ করছে। শরীআতের বিধানে
ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়েই আইন-বিধান দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রকৃতি, তা পরামর্শ ভিত্তিক
তথা গণতান্ত্রিক হওয়া, শাসন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব, ন্যায়সঙ্গত কাজে তাদের আনুগত্য, যুদ্ধ, সন্ধিচুক্তি প্রভৃতি
সর্ববিষয়ে অকাট্য বিধান রয়েছে ইসলামী শরীআতে। আর তা শুধু কুরআনে বর্ণিত হয়েছে তাই নয়, রাসূলে
কারীমের (স) সুন্নাতেও রয়েছে-এর ব্যাখ্যা ও বাস্তব সম্মত বিধান। কুরআন-হাদীসে আমীর, ইমাম, খলীফা,
সুলতান প্রভৃতি পারিভাষিক শব্দগুলো বারবার ব্যাবহৃত হয়েছে। এ শব্দগুলো দ্বারা বুঝায় সেই ব্যক্তিকে যার
হাতে নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব রয়েছে। আধুনিক পরিভাষায় তাই হলো সরকার বা গভর্নমেন্ট। সরকার বা গভর্নমেন্ট
হলো রাষ্ট্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কাজেই যেসব আয়াতে এবং হাদীসের উক্তিতে এ পরিভাষাগুলো ব্যবহৃত
হয়েছে তাকে বাস্তবায়িত করা একান্তই জরুরি। কেননা এগুলো শুধু পড়া বা মুখে উচ্চারণের জন্য বলা হয়নি,
বরং বলা হয়েছে, ‘‘তা যেমন পড়া হবে তেমনি তা কার্যকর করাও হবে।’’ আর এগুলো কার্যকর করতে হলে
ইসলামী শরী’আতের বিধি-বিধান অনুযায়ি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র কায়েম করা অপরিহার্য।
শরী’আতের নির্দেশ পালন ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
তাছাড়া শরী’আতের এমন অনেকগুলো আইন-বিধান রয়েছে যা কার্যকর করতে হলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না করে
সেগুলোর বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভবপর নয়। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মানুষের পরস্পেেরর বিচার-ফয়সালা করার
এবং আল্লাহর পথে যুদ্ধ করার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যতক্ষণ পর্যন্ত এ কাজ না করবে ততক্ষণ
কোন ব্যক্তি বা সমাজের সাধারণ মানুষের পক্ষে তা বাস্তবায়ন করা কিছুতেই সম্ভবপর হতে পরে না। এজন্যই
জনগণের উপর কোন কিছু কার্যকর করার ক্ষমতা সম্পন্ন রাষ্ট্রব্যবস্থা একান্তই জরুরি। এ কথাটি বোঝাবার
জন্যই ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র) বলেছেন-
إن ولاية أمر الناس أعظم واجبات الدين بل لا قيام للدين إلا بها ولأن االله تعالى
أوجب الأمر بالمعروف والنهى عن المنكر و نصرة المظلوم و كذلك سائر ما
أوجبه من الجهاد والعدل و إقامة الحدود لاتتم إلا بالقوة والإمارة .
“জনগণের যাবতীয় ব্যাপার সুসম্পন্ন করার জন্য রাষ্ট্র কায়েম করা দ্বীনের সর্বপ্রধান অপরিহার্য বিষয়। বরং রাষ্ট্র
ছাড়া দ্বীন প্রতিষ্ঠা হতেই পারে না। এছাড়া আল্লাহ তা’আলা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ের প্রতিরোধ এবং
নিপীড়িতদের সাহায্য করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। এভাবে তিনি জিহাদ, ইসলাম ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দন্ড
জারী করা প্রভৃতি যেসব কাজ ওয়াজিব করে দিয়েছেন তা রাষ্ট্রশক্তি ও রাষ্ট্রকর্তৃত্ব ব্যতীত কিছুতেই সম্পন্ন হতে
পারে না।” (আস-সিয়াসাহ আশ-শারীআহ, পৃ. ১৭২-১৭৩)
অতএব শরীআতের আইন বিধান জারী ও কার্যকর করার জন্য ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা একটি অপরিহার্য
কর্তব্য।
আল্লাহর ইবাদতের জন্য ইসলামী রাষ্ট্র জরুরি
আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদতের দায়িত্ব পরিপূর্ণভাবে পালনের জন্যও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। আল্লাহ
তা’আলা মানব জাতিকে তাঁরই ইবাদত (আনুগত) করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন-
“আমি জিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুধু এ উদ্দেশ্যে যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।” (সূরা আয-যারিআত
: ৫৬)
কুরআনে বর্ণিত এ ইবাদত শব্দটি ব্যাপক অর্থবোধক পরিভাষা। আল্লাহ তা’আলা যেসব কথা, কাজ, (প্রকাশ্য বা
গোপনীয়) ভালবাসেন ও পছন্দ করেন তা সবই এর অন্তর্ভুক্ত।” (ফতওয়া-ই-ইবনে তাইমিয়া)
ইবাদত শব্দের ব্যাখ্যা ও বিশে ষণের দৃষ্টিতে মানুষের যাবতীয় কথ - া, কাজ, আয়-ব্যয় ও পারস্পরিক-সম্বন্ধ,
এক নির্ধারিত পন্থা এবং নিয়ম পদ্ধতি অনুযায়ী সুসম্পন্ন হওয়া অপরিহার্য। তা যদি করা হয় তাহলেই আল্লাহর
মানব সৃষ্ট সংক্রান্ত উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সার্থক হতে পারে। অন্যথায় মানুষের জীবনে আল্লাহর উদ্দেশ্য পূর্ণ হতে
পারে না, মানবজীবন ব্যর্থ ও নিষ্ফল হয়ে যেতে বাধ্য।
কিন্তু মানুষের জীবনকে এদিক দিয়ে সার্থক করতে হলে গোটা সমাজ ও পরিবেশকে এমনভাবে গড়ে তুলতে
হবে যাতে করে এ দৃষ্টিতে জীবন-যাপন করা তাদের সকলের পক্ষেই সহজ সাধ্য হয়ে ওঠে। কেননা মানুষ
সামাজিক জীব। সমাজের মধ্যেই যাপিত হয় মানুষের জীবন। আর মানুষ যে সমাজ ও পরিবেশে বসবাস করে
তার দ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়াই হচ্ছে মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতি। এ স্বভাব-প্রকৃতির ফলেই মানুষ যেমন ভাল হয়
তেমন মন্দও হয়। যেমন হয় হিদায়াতের পথের পথিক তেমনি হয় গোমরাহীর আঁধার পথের যাত্রী। সহীহ
হাদীস থেকে সমাজ ও পরিবেশের এ অনস্বীকার্য প্রভাবের কথা সমর্থিত।
ইসলামী রাষ্ট্রের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায়ই সম্ভব ইসলামের আদর্শ সমাজ গঠন। কেননা এরূপ একটি রাষ্ট্র কায়েম হলেই
ক্ষতিকর মতবাদ প্রচার ও শরীআত বিরোধী কাজকর্ম বন্ধ করা সম্ভব। সমাজকে বিপর্যয় ও পথভ্রষ্টতা থেকে
রক্ষা করতে পারে রাষ্ট্রশক্তি।
রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইসলামী শরীআতের স্বাভাবিক দাবি। তাই ইসলামী শরীআত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জোর তাগিদ
দেয়। এজন্যই মহানবী (স) মদীনায় হিজরত করে একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিজের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা করে আদর্শ রাষ্ট্র স্থাপন করে গেছেন।
১. কোনটি ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার উৎসক. জনগণ; খ. মানব রচিত আইন;
গ. মানুষের ইচছা; ঘ. আল-কুরআন।
২. ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রধান ও প্রথম উৎস হচেছক. আল-হাদীস; খ. গবেষণা;
গ. আল-কুরআন; ঘ. ইজমা।
৩. আমার পর আর কোন নবী আসবেন না বরং খলীফা হবেন, ’এটি কার উক্তি?
ক. হযরত মূসা (আ)-এর; খ. হযরত মুহাম্মদ (স) -এর;
গ. সকল নবীর; ঘ. হযরত ওমর (র) এর।
৪. ইসলামের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং দন্ডাদেশ জারী করা রাষ্ট্র শক্তি ছাড়া কিছুতেই স¤প্ন হতে পারে নাএটি কার উক্তি?
ক. ইমাম আবু হানীফা (রা)-এর; খ. হযরত ওমর (রা)-এর;
গ. ইমাম ইবনে তাইমিয়ার (র)-এর; ঘ. মহানবী (স) -এর।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামী রাষ্ট্রের উৎসসমূহ কি কি? লিখুন।
২. ইসলামী রাষ্ট্রের উৎস হিসেবে আল-কুরআন স¤পর্কে লিখুন।
৩. ইসলামী রাষ্ট্রের উৎস হিসেবে আল-হাদীস স¤পর্কে আলোচনা করুন।
৪. ইসলামী রাষ্ট্রের উৎস হিসেবে ইজমা স¤পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা করুন।
৫. ইসলামী রাষ্ট্রের উৎস হিসেবে কিয়াস স¤পর্কে বলুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামী রাষ্ট্রের উৎসসমূহ বিস্তারিত লিখুন।
২. ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা স¤পর্কে বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]