ইসলামি রাষ্ট্রের আয়ের উৎস স¤পর্কে বিস্তারিত লিখুন।

ইসলামী রাষ্ট্রের রাজস্বব্যবস্থা
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন রক্তের প্রয়োজন অনুরূপভাবে প্রয়োজন অর্থের। এ অর্থ ব্যক্তি পরিবার যে
কোন সংগঠন, সংস্থা এবং রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন।
মানুষ যে সব সাংগঠনিক কাঠামোর অধীনে জীবন-যাপন করে তার মধ্যে রাষ্ট্রীয় কাঠামোই সবচেয়ে বড়।
আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্র ব্যবস্থার বাইরে কোন মানুষের অবস্থান নেই বললেই চলে। তাই জনগণের জন্য রাষ্ট্রের
দায়িত্বও অনেক বেশী। জনসাধারণকে অর্থনৈতিক শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তি দেয়া, তাদেরকে ক্ষুধা-দরিদ্রতার
যন্ত্রণা থেকে রেহাই দেয়া, পেট ভরে খাবারের ব্যবস্থা করা, তাদের বস্ত্রের ব্যবস্থা করা, তাদেরকে নানাবিধ
রোগ-ব্যাধি ও অপুষ্টি হতে মুক্তি দেয়া, আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষিত করে তোলা, সুখ-শান্তিতে
বসবাস করার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা একটা আদর্শ রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব।
এ মহান দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রয়োজন অর্থের, প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক পরিকল্পনার। যুগে যুগে
বিভিন্ন অর্থনৈতিক মতবাদ যেমন, পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র বার বার চেষ্টা করেও জনগণকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে
ব্যর্থ হয়েছে।
ফলে একথা আজ প্রমাণিত যে, ইসলামী অর্থনীতিই ভারসাম্যপূর্ণ একটি অর্থনীতি। একমাত্র ইসলামী অর্থনীতিই
ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের মৌলিক সমস্যার সমাধান দিতে পারে।
জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের এ মহান দায়িত্ব পালন করতে অর্থের প্রয়োজন। আর এ অর্থ যোগান দেয়ার যে
ব্যবস্থাপনা রয়েছে তারই নাম রাজস্বব্যবস্থা। আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক চেষ্টিবলের ভাষায়
"রাজস্ব বলতে কোন ব্যক্তি বা দলের সেই অর্থকে বুঝায়, যা সরকারী কার্য স¤পাদনের উদ্দেশ্যে তার নিকট হতে বাধ্যতামূলকভাবে আদায় করা হয়। ইসলামী আইনেও রাষ্ট্রের জন্য রাজস্ব ব্যবস্থা রয়েছে। এ ব্যবস্থা কেমন হবে তার একটা মূলনীতি রয়েছে। এ ইউনিটে রাজস্ব ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক আলোচনা করা হবে। কোন কোন খাত থেকে সাধারণত ইসলামী রাষ্ট্রের আয় হয় তা বর্ণনা করতে পারবেন; যাকাত, ওশর, খারাজ-এর পরিচয় দিতে পারবেন; অর্থনীতির ক্ষেত্রে যাকাত, ওশর ও খারাজ-এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে পারবেন। রাষ্ট্রীয় আয় রাষ্ট্র হচ্ছে নির্দিষ্ট একটি ভূখন্ডের জনসমষ্টিকে সুশৃংখল ও সুন্দর ভাবে পরিচালনার জন্য বৃহৎ একটি সংগঠনের নাম। রাষ্ট্র নামক এ সংগঠনটি তার উপর অর্পিত জনসাধারণের নানা দায়িত্ব পালন করে থাকে। এসব দায়িত্ব পালনের জন্য তার অনেক অর্থের প্রয়োজন। এ প্রয়োজন মেটানোর জন্য জনসাধারণ ও অন্যান্য খাত হতে যে অর্থ আদায় করা হয় তা-ই রাষ্ট্রীয় আয়। রাষ্ট্রীয় আয়ের প্রয়োজনীয়তা একজন ব্যক্তির নিজের জীবনযাত্রা সুষ্ঠুরূপে নির্বাহ করার জন্য অর্থ-স¤পদের প্রয়োজন হয়। একটি পরিবার পরিচালনার জন্যও অর্থের প্রয়োজন হয়। অর্থ ছাড়া ব্যক্তি, পরিবার কোন ক্রমেই জীবন ধারণ করতে সক্ষম হয় না। অনুরূপভাবে একটি সরকারের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ ও দায়িত্ব পালনের জন্যও অর্থ স¤পদের প্রয়োজন। ব্যক্তি তার অর্থনৈতিক চাহিদা পুরণের জন্য যেমনিভাবে নিজস্ব উপায় পন্থা অবলম্বন করে অর্থ উপার্জন করে অনুরূপভাবে রাষ্ট্রও দেশবাসীর নিকট হতে বিভিন্ন কর আদায় করে থাকে। দেশের অন্যান্য স¤পদ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করে। রাষ্ট্রীয় আয়ের মূলনীতি কুরআন ও হাদীসে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে আয়ের মূলনীতি কি হবে তা যেমন বলে দেয়া হয়েছে অনুরূপভাবে রাষ্ট্রের আয়ের ব্যাপারেও সরকারকে কি কাজ করতে হবে তার মূলনীতি বর্ণনা করা হয়েছে। ‘‘ আমি এদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠাদান করলে তারা সালাত আদায় করবে, যাকাত দিবে এবং সৎ কাজের আদেশ দিবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে।’’ (সূরা আল-হাজ্জ : ৪১) এ আয়াত থেকে বুঝা গেল, আল্লাহ তা’আলা রাষ্ট্র বা সরকারকে চার ধরনের কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। তন্মধ্যে একটি হল যাকাত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট খাতের ব্যয় মেটানো সম্ভব। রাসূলুল্লাহ (স.) ইসলামী রাষ্ট্রের আয়-ব্যায় এর মূলনীতি বর্ণনা করত গিয়ে বলেন- تؤخذ من أغنياءهم فترد إلى فقراءهم . “তুমি তাদের (ধনীদের) থেকে যাকাত আদায় করবে এবং তা দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করবে।” (বুখারী) উল্লেখিত বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইসলাম রাষ্ট্রকে আয় করার অধিকার প্রদান করেছে। পাঠ ঃ ১ ব্যয়কে স্থায়ী নৈতিক নিয়মে বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ নীতি অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ে কারও উপর কোন প্রকার জুলুম করা যাবে না। রাজস্ব আদায় করতে ন্যায়পরায়ণতার প্রতি ইসলামী রাষ্ট্রের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা) -এর একটি বক্তব্যে উক্ত মূলনীতির প্রকাশ পায়। তিনি বলেন- و إنى لا آخذ هذا المال يصله إلا لخصال ثلاث أن يؤخذ بالحق و يعطى بالحق و يمنع من الباطل “তিনটি হালাল পন্থা ভিন্ন অন্য কোনভাবে রাষ্ট্রীয় স¤পদে হস্তক্ষেপ করার আমার কোন অধিকার নেই। (১) সত্য ও ন্যায়পরায়ণতার সাথে তা গ্রহণ করা। (২) ন্যায় পথে তা ব্যয় করা। (৩) সকল প্রকার অন্যায় নীতির উর্ধ্বে রাখা।” (কিতাবুল হারাম-১১০) ইসলামী রাষ্ট্র শুধু ব্যয় বহনের জন্যই আয় করে না, দেশের গরীব, দুঃখী ও অভাবগ্রস্ত মানুষের জন্য স্থায়ী কল্যাণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা, বেকারত্ব দূর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ঋণী লোকদের সাহায্য করার জন্য আয়ের ব্যবস্থা করে। ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের উৎস ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের উৎস দু’ধরনের হতে পারেপ্রথমতঃ ইসলামী শরীয়াত তথা কুরআন ও সুন্নাহ কর্তৃক নির্ধারিত আয়। দ্বিতীয়তঃ শরীঅত কর্তৃক নির্ধারিত নয়, তবে সমর্থনযোগ্য এমন আয়। শরীয়ত তথা কুরআন ও সুন্নাহ কর্তৃক নির্ধারিত আয় যে সব আয় ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য শরীঅত কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়েছে তা হল১। যাকাত২। ওশর বা এক দশমাংশ ৩। ওশরের অর্ধেক বা এক বিশমাংশ ৪। খুমুস বা এক পঞ্চমাংশ ৫। সাদাকাতুল ফিতর ৬। মালিকানা বিহীন স¤পদ শরীআত কর্তৃক নির্ধারিত নয় তবে শারীআত কর্তৃক সমর্থিত আয়ের মধ্যে পড়ে এমন আয় ১। খারাজ বা অমুসলিমদের ভূমি থেকে আদায়কৃত কর ২। জিযিয়া বা অমুসলিমদের উপর ধার্যকৃত কর ৩। আমদানী শুল্ক ৪। জরুরী প্রয়োজনে নির্ধারিত কর ৫। সামরিক কর ৬। ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে আয়। প্রথম প্রকার আয়ের উৎসসমূহের বিশ্লেষণ যাকাত জনগণের মৌলিক চাহিদা তথা খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান এর ব্যবস্থা করা ইসলামী রাষ্ট্রের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন, জনগণের কল্যাণ সাধন তার প্রধান কাজ। এ কাজগুলো স¤পাদন করতে যে অর্থের প্রয়োজন তার চাহিদা মেটাতে যাকাত হচেছ প্রধান উৎস। ব্যক্তির নিকট পারিবারিক প্রয়োজন বাদ দিয়ে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণের মূল্য পরিমাণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্যের মূল্য পরিমাণ অর্থ থাকে এবং এক বছর তার নিকট অতিবাহিত হয় উক্ত অর্থের আড়াই ভাগ যাকাত হিসেবে রাষ্ট্রকে প্রদান করা তার উপর ফরয। “তুমি তাদের সম্পদ থেকে সাদকা(যাকাত) গ্রহণ করবে। এর দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র করবে এবং পরিশোধিত করবে।” (সূরা আত-তাওবা : ১০৩) রাসূল (স) আল্লাহর নির্দেশের সার্বিক বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ইয়ামেনের গভর্ণর আবু মূসা আল-আশআরীকে تؤخذ من أغنياءهم فترد إلى فقراءهم ,লনবে ‘‘তুমি তাদের (ধনীদের) থেকে যাকাত গ্রহণ করবে এবং তা দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করবে।’’ (বুখারী) যে সকল ব্যক্তির স¤পদ থেকে যাকাত আদায় করা হবে যাকাত হচ্ছে ধনীদের স¤পদে গরীবদের অধিকার। আল্লাহ তা’আলা শুধু ধনীদের স¤পদে যাকাত ধার্য করেছেন। ধনী বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায় যার কাছে ব্যক্তি ও পারিবারিক খরচ বহন এবং ঋণের দায় শোধের পর সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্যের বাজার মূল্য পরিমাণ অর্থ থাকে এবং তা ১ বছর পর্যন্ত তার হাতে বা ব্যাংকে জমা থাকে। এমন ব্যক্তির উপর যাকাত ধার্য করা হবে এবং তা আদায় করা হবে। প্রধানত দু’ধরনের স¤পদের ওপর যাকাত ধার্য করা হবে। (১) যা প্রকাশ্যভাবে যাচাই করা যায় এমন সম্পদ যথা- গরু, ছাগল, উট প্রভৃতি গৃহপালিত পশু ইত্যাদি। (২) যা প্রকাশ্যভাবে যাচাই করা যায় না এমন সম্পদ- যথা- স্বর্ণ, রৌপ্য, নগদ অর্থ ও ব্যবসার পণ্য ইত্যাদি। ওশর ওশর (عشر (আরবী শব্দ। শাব্দিকভাবে এর অর্থ হচ্ছে এক দশমাংশ বা দশভাগের এক ভগ। ইসলামী অর্থনীতির পরিভাষায়, মুসলমানদের যে সকল জমি বৃষ্টি, ঝর্ণাধারা, নদী ও খালের পানিতে সিক্ত হয়, কিংবা এমনিতেই সিক্ত থাকার ফলে ফসল ও ফলফলাদি উৎপন্ন হয় আর তাতে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে পানি সেচ করার প্রয়োজন হয় না উক্ত জমিতে উৎপন্ন ফসলের দশভাগের একভাগ গরীবদের জন্য আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এর নাম হল ওশর। ওশর ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের একটি অন্যতম উৎস। ইসলামী রাষ্ট্র তার কর্মচারীদের মাধ্যমে ওশর আদায়ের ব্যবস্থা করবেন। নিসফুল ওশর নিসফ (نصف (মানে অর্ধেক। আর ওশর মানে এক দশমাংশ। একত্রে শব্দ দুটোর অর্থ দাঁড়ায় এক দশমাংশের অর্ধেক বা বিশ ভাগের একভাগ। সাধারণত যে সব জমিতে ফসল ও ফলফলাদি উৎপাদন করতে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পানি সেচ দেয়া হয় সে সব জমিতে উৎপাদিত ফসল ও ফলফলাদির বিশ ভাগের একভাগ রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য আদায় করা হয়। খুমুস ইসলামী অর্থনীতিতে রাষ্ট্রীয় আয়ের উৎস হিসেবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল কিছু কিছু স¤পদের এক পঞ্চমাংশ বা খুমুস রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য আদায় করতে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ সকল স¤পদের মধ্যে গনীমতের মাল, খনিজ স¤পদ, সামুদ্রিক স¤পদ, মাটির নীচ থেকে প্রাপ্ত গচ্ছিত স¤পদ উল্লেখযোগ্য। গনীমতের মালঃ শত্রæ পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইসলামী রাষ্ট্রের সৈনিকগণ যে ধন-স¤পদ ও আসবাবপত্র লাভ করে থাকে ইসলামী পরিভাষায় তাকে গনীমতের মাল বলা হয়। এ স¤পর্কে কুরআন মাজীদে আল্লাহ বলেন- ‘‘জেনে রাখ, যুদ্ধে যা তোমরা লাভ কর তার এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহর, রাস‚লের, রাসূলের স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিসকীনদের এবং পথচারীদের।’’ (সূরা আল-আনফাল : ৪১) যুদ্ধের ময়দানে শত্রæপক্ষের যে সব ধন-স¤পদ, অস্ত্র-শস্ত্র যানবাহন ও খাদ্যসামগ্রী মুসলমানদের হস্তগত হবে, তার পাঁচ ভাগের চার ভাগ বিজয়ী সৈনিকদের মধ্যে বন্টন করা হবে, আর অবশিষ্ট এক-পঞ্চমাংশ ইয়াতীম, মিসকীন, অভাবী ও নিঃস পথিকদের মধ্যে বিতরণের জন্য ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুলমালে জমা করা হবে। ইসলামের প্রথম দিকে সৈনিকদের জন্য কোন নির্দিষ্ট বেতন-ভাতা ছিল না। গনীমতের মালের চার-পঞ্চমাংশই তাদের মধ্যে বন্টন করা হতো। বর্তমান যুগে যেখানে সৈনিকদের বেতন নির্দিষ্ট রয়েছে সেখানে গনীমতের মাল তাদের মধ্যে বন্টন করার প্রয়োজন নেই। বরং এ স¤পদ সৈনিকদের বেতন বাবদ খরচ করার জন্য সরকারী কোষাগারে জমা রাখা হবে। খনিজ স¤পদ খনিজ স¤পদ বলতে মাটির নিচে প্রাপ্ত ঐ সকল স¤পদ যা আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণে সৃষ্টি করে রেখেছেন, মানুষ নিজেরা পুতে রাখেনি। সে খনিজ স¤পদ স্বর্ণ, রৌপ্য, তাম্র, লৌহ, সীসা, দস্তা, তেল, গ্যাস, কয়লা ইদ্যাদি যাই হোকনা কেন তার কমপক্ষে এক-পঞ্চমাংশ রাষ্ট্রীয় আয়ের জন্য আদায় করতে হবে। ইমাম আবু ইউসুফ (র) লিখেছেন- كل ما أصيب فى المعادن من الذهب والفضة والنحاس والحديد والرصاص فإن فى ذلك الخمس . ‘‘এভাবে স্বর্ণ, রৌপৗ, তাম্র, লৌহ ও সীসা-দস্তা প্রভৃতি যাবতীয় খনিজ স¤পদ হতে (এক-পঞ্চমাংশ) রাজস্ব আদায় করতে হবে।’’ মূলত জমির মালিক নিজস্ব খরচে খনিজ স¤পদ উত্তোলন করার বেলায় ইসলামী অর্থনীতিতে উল্লেখিত বিধানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। খনিজ স¤পদের রয়ালটি নির্ধারণ করা ইসলামী রাষ্ট্রের উপর ন্যস্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বর্তমান যুগে খনিজ স¤পদের অবস্থা একইরূপ নয়। এবং উৎপন্ন স¤পদের পরিমাণও এক রকম হয় না। এতদ্ব্যতীত উৎপন্ন খনিজ দ্রব্যের বিভিন্নতার দরুন মূল্যের দিক দিয়েও যথেষ্ট পার্থক্য হয়ে থাকে। এমন কি খনিজ দ্রব্য উৎপাদনের ব্যয়ও সকল খনিতে সমান হয় না। কাজেই প্রত্যেকটি খনিজ ‘রয়ালটি’র কোন স্থায়ী পরিমাণ নির্ধারণ সম্ভব নয়। এর পরিমাণ নির্ধারণের ভার ইসলামী রাষ্ট্রের উপরই ন্যস্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রয়োজনে সরকার খনিজ স¤পদের সংশ্লিষ্ট জমি অধিগ্রহণ করে তার পুরোটাই রাষ্ট্রীয় আয়ের উৎস হিসেবে গণ্য করতে পারে। সামুদ্রিক স¤পদ সকল প্রকার সামুদ্রিক স¤পদ ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের অন্যতম উৎস। সামুদ্রিক স¤পদ বিশেষ করে মৎস্য ও মুক্তা আহরণের উপর কর ধার্য হতে পারে। হযরত উমর (রা) সামুদ্রিক স¤পদের উপর কর ধার্য করেন এবং তা যথাযথভাবে সংগ্রহ করার জন্য ভারপ্রাপ্ত কর্মচারী নিযুক্ত করেছিলেন। কোন এক কর্মচারীর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলন, ‘সমুদ্র হতে উৎপন্ন সকল দ্রব্য হতেই রাজস্ব বাবদ এক-পঞ্চমাংশ আদায় করতে হবে। কারণ, এটাও আল্লাহ তাআলারই একটি দান। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এ মতই পোষণ করতেন। নদী, ঝিল, বিল ইত্যাদি হতে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণে যে মৎস্য উৎপাদন করা হয় তারও একপঞ্চমাংশ ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুলমালের প্রাপ্য হবে। হযরত উমর ইবনে আবদুল আজীজের মতেও জলভাগ হতে যা কিছু উৎপন্ন হবে, তা হতেও রাজস্ব আদায় করতে হবে। কারণ তা স্থলভাগের খনিজ স¤পদেরই সমতুল্য। فيما أخرج االله من البحر الخمس . “আল্লাহ তাআলা সমুদ্রে যে সমস্ত স¤পদ সৃষ্টি করেছেন তা হতে রাজস্ব বাবদ এক-পঞ্চমাংশ আদায় করতে হবে।” ভ‚-গর্ভে গচ্ছিত স¤পদ “ভূগর্ভ হতে প্রাপ্ত ধন” অর্থাৎ কোন ব্যক্তির পুঁতে রেখে যাওয়া স¤পদ যা মালিক বা তার উত্তরাধিকারীরা ভাল করে জানে না। পরবর্তীতে কেউ তা সন্ধান পেল এবং তা উত্তোলন করল। এ ধরনের স¤পদও ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের উৎস হবে। এ ধরনের স¤পদকে “রিকায” বলে। রাসূল (স)-এর উপর ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য এক পঞ্চামাংশ কর নির্ধারণ করেছেন। রাসূল (স.) বলেন- الخمس الركاز فى و “রেকায বা ভূগর্ভ হতে প্রাপ্ত স¤পদের এক পঞ্চমাংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে।” সাদাকাতুল ফিতর রমযান শেষে ঈদের দিন ধনী ব্যক্তির গরীবদের মধ্যে যে শস্য কিংবা তার মূল্য বন্টন করে তাকে সাদকাতুল ফিতর বলে। এ সাদকা প্রত্যেক ধনী ব্যক্তি তার পরিবারের সকল সদস্যের পক্ষ হতে আদায় করতে বাধ্য। ইসলামী অর্থনীতির দৃষ্টিতে এটাকেও রাষ্ট্রীয় আয় হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ইমাম বুখারী (র) লিখেছেন“ইসলামী খিলাফতের যুগে এ সাদকাও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হতো এবং তা হতে পরিকল্পনানুযায়ী নির্দিষ্ট এলাকার গরীবদের মধ্যে বন্টন করা হতো।” মালিকানাহীন স¤পদ ইসলামী রাষ্ট্র সমগ্র দেশের জনগণের দায়িত্বশীল। অতএব দেশের যে সব ধন-স¤পদের কোন মালিক বা উত্তাধিকারী নেই, তার মালিক হবে ইসলামী রাষ্ট্র। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে তা জমা হবে এবং রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনেই তা ব্যয় করা হবে। হযরত উমর (রা) মিসরের শাসনকর্তার এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, “যে মৃত ব্যক্তির, উত্তরাধিকারী নেই তার যাবতীয় ধন-স¤পদ বায়তুলমালে জমা হবে।” নবী করীম (স) ইরশাদ করেছেন - أنا وارث من لا وارث له أرثه و أعقل عنه . ‘‘যার কোন উত্তরাধিকারী নেই, তার উত্তরাধিকারী আমি। আমি-ই তার পরিত্যক্ত স¤পত্তি পাব এবং তার পক্ষ হতে দায়িত্ব পালন করব।” (কিতাবুল আমওয়াল-২২১) বস্তুত নবী করীম (স) রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেই এ কথা ঘোষণা করেছিলেন। সুতরাং এ স¤পদ রাষ্ট্রের। হযরত ওমর ফারূক ও (রা) এরূপ নির্দেশ দিয়ে বলেছেন- من كان له عقب فادفع ميراثه إلى عقبه و من لم يكن له عقب فاجعل ما له فى بيت مال المسلمين فإن ولاءه للمسلمين . ‘‘যার উত্তরাধিকারী থাকবে, মৃত্যুর পর তার ধন-স¤পত্তি তার উত্তারাধিকারীদের মধ্যে বন্টন কর। আর যার উত্তরাধিকারীরূপে পশ্চাতে কেউ নেই, তার ধন-স¤পদ মুসলমানদের বায়তুলমালে জমা করে দাও। (ফুত‚হু মিসর ও আখবারূহা) যেসব পড়ে থাকা মাল কোথাও পাওয়া যাবে এবং যার মালিক খুঁজে পাওয়া যাবে না, তাও অনুরূপভাবে ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের উৎস হবে। দ্বিতীয় প্রকার আয়ের উৎসসমূহের বিশ্লেষণ ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য যে সকল আয়ের উৎস রয়েছে তন্মধ্যে দ্বিতীয় প্রকারে এমন কিছু খাত রয়েছে যার পরিমাণ আল্লাহ তাআলা কিংবা রাসূল (স) নির্ধারণ করে যান নি। তা নির্ধারণের দায়িত্ব ইসলামী রাষ্ট্রের উপর ন্যস্ত। সময় ও অবস্থার চাহিদার আলোকে ইসলামী সরকার তার পরিমাণ বাড়াতে বা কমাতে পারে। অবশ্য এ ক্ষেত্রেও কর নির্ধারণের মৌলিক নীতি অবশ্যই অনুসরণ করা হবে। উক্ত খাতগুলোর বিশ্লেষণ নি¤œরূপ ঃ খারাজ বা অমুসলিমদের ভূমি রাজস্ব ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের উৎসসমূহের অন্যতম হচ্ছে খারাজ (خراج ।( খারাজ শব্দটি মূলত ফারসী থেকে এসে আরবী ভাষায় ব্যবহৃত হচ্ছে। শব্দটির অর্থ হল ঞধী (ট্যাক্স) বা কর। ইসলামী অর্থনীতির পরিভাষায়, খারাজ বলতে অমুসলিমদের মালিকানা ও ভোগকৃত জমি হতে যে রাজস্ব আদায় করা হয় তাকে খারাজ বলে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল খারাজের কোন পরিমাণ নির্ধারণ করে দেননি। ইসলামী রাষ্ট্রই খারাজের পরিমাণ নির্ধারণ করবে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কর নির্ধারণে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে যাতে কারো উপর অন্যায় না হয়। বিশেষজ্ঞ একটি টিম গঠন করে তাদের মাধ্যমে খারাজের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে জমির পরিমাণ, গুণাগুণ ও উর্বরতা, পানি সেচের আবশ্যকতা ও অন্যাবশ্যকতার প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। জিযিয়া বা অমুসলমানদের উপর ধার্যকৃত কর জিযিয়া কর ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের আর একটি প্রধান উৎস। ইসলামী রাষ্ট্রের অনুগত অমুসলিম নাগরিকদের নিকট হতে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন পুরণের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি বিশেষ কর গ্রহণ করা হবে। ইসলামের অর্থনৈতিক পরিভাষায় তাকে ‘জিযিয়া কর’ বলে। জিযিয়া কর অর্থ ‘বিনিময়’। রাষ্ট্র প্রজা-সাধারণের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করে, তাদেরকে নিরাপত্তা দান করে, তাই-এর বিনিময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী কর আদায় করার অধিকার রাখে। ‘জিযিয়া’ অনুরূপ একটি কর। কুরআন মাজীদের নি¤েœাদ্ধৃত আয়াতে এ কথাই বলা হয়েছে। َ ‘‘যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিযিয়া দেয়।’’ (সূরা আত-তাওবা : ২৯) অর্থাৎ ইসলামী রাষ্ট্রের অধীন অমুসলিম প্রজাদের প্রধানত দু’টি কর্তব্য রয়েছে। রাষ্ট্রের পূর্ণ আনুগত্য ও বশ্যতা স্বীকার করা এবং রাষ্ট্রীয় কার্যপরিচালনায় আর্থিক প্রয়োজন পূরণের জন্য সাধ্যানুসারে নির্ধারিত কর প্রদান করা। বাহ্যত মনে হতে পারে যে, জিযিয়া কর নির্ধারণের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র অমুসলমানদের প্রতি সমান আচরণ করেনি। কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, ইসলামী রাষ্ট্রকে হেফাজত করা, তার কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করার মূল দায়িত্ব মুসলমানদের উপর, তা সত্তে¡ও তারা রাষ্ট্রের ব্যয় মেটাতে ওশর, নিসফ (অর্ধ) ওশর ইত্যাদি কর প্রদান ছাড়াও যাকাত প্রদান করে থাকে এবং প্রয়োজনে নিজেদের জীবন ও স¤পদ দিয়ে দেশকে রক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করে। অমুসলিমদের উপর যাকাত নেই, দেশ রক্ষার কাজে তারা কোন অর্থ ব্যয় কিংবা জীবন দান করেনা অথচ দেশের সার্বিক সুবিধা তারাও ভোগ করে। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যায়ে সমতা নিয়ে আসার জন্য তাদের উপর জিযিয়া কর ধার্য করা হয়েছে। জিযিয়া করের পরিমাণ ইসলামী আইনে নির্ধারিত নেই। এটা রাষ্ট্রের উপর ন্যস্ত। অবস্থা ও চাহিদার আলোকে এ করের পরিমাণ কম বা বেশী হতে পারে। জিযিয়া সাধারণত মুদ্রায় আদায় করা হবে। কিন্তু পার¯পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিশেষ কোন শিল্পপণ্যের আকারেও তা আদায় করা অসংগত হবে না। নবী করীম (স) ও খোলাফায়ে রাশেদূন বিভিন্ন শিল্পোৎপাদনকারীদের নিকট হতে জিযিয়া বাবদ শিল্পপণ্যও গ্রহণ করেছেন। ব্যবসা পণ্যে ধার্যকৃত কর প্রত্যেক রাষ্ট্রই নিজ দেশের শিল্প-বাণিজ্যের উৎকর্ষ সাধন এবং বৈদেশিক শিল্পপণ্যের আমদানীতে নিরূৎসাহিত করার চেষ্টা করে থাকে। ইসলামী রাষ্ট্রকে এজন্য সর্বপ্রথম বৈদেশিক পণ্য আমদানী নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তার উপর শুল্ক ধার্য করতে হয়। অনুরূপভাবে অন্য রাষ্ট্রের যেসব নাগরিক ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে থেকে ব্যবসায়বাণিজ্য করবে এবং অর্থ বিনিয়োগ করবে তাদের উপরও এ শুল্ক ধার্য করা হবে। কারণ তাদের জানমাল ও ব্যবসা বাণিজ্যের নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব ইলামী রাষ্ট্রের উপর অর্পিত এবং এ দায়িত্ব পালনের বিনিময়ে তাদেরকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় শুল্ক আদায় করতে হবে। ইসলামের ইতিহাসে হযরত উমর রা.-এর সময়ই এ শুল্ক সর্বপ্রথম ধার্য হয়েছিল। বস্তুত এ শুল্ক প্রদান করেই বিদেশী নাগরিকগণ ইসলামী রাজ্যে ব্যবসায়-বাণিজ্য ও জান-মালের পূর্ণ নিরাপত্তা লাভ করতে পারে। এ ধরনের করের পরিমাণ অবস্থা, স¤পদ ও চাহিদার প্রেক্ষিতে ইসলামী রাষ্ট্র নির্ধারণ করবে। আর আদায়কৃত শুল্ক রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হবে। জরুরী প্রয়োজনে নির্ধারিত কর ইসলামী রাষ্ট্রের কোষাগার বিশেষ সময় বা পরিস্থিতিতে স¤পূর্ণরূপে শূন্য হয়ে পড়ে ; কিংবা ব্যয় অপেক্ষা আয় কমে যায়। জরুরী পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ার ফলে যেমন কোন নতুন জাতীয় কল্যাণমূলক পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্য অধিক অর্থের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, অথবা সকল প্রকার আয়ের পরেও রাজ্যের সকল মানুষের মৌলিক চাহিদা পূর্ণ করা সম্ভব না হয়; বা বন্যা, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ ও বৈদেশিক আক্রমণের সম্ভাবনা দেখা দেয়, তখন ইসলামী রাষ্ট্র দেশবাসীর উপর অতিরিক্ত কর ধার্য করতে পারবে। তাবুক যুদ্ধের সময় নবী (স) যাকাত, ওশর ইত্যাদি আদায় করার পরও আকস্মিকভাবে আরো অধিক অর্থের প্রয়োজন বোধ করেছিলেন এবং মুসলমানদের কাছে তিনি সে জন্য অর্থ সাহায্যের দাবি পেশ করেন। সাময়িক কর সাধারণত ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় কার্য সমাধানের জন্য এবং দেশ ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বায়তুলমালে স¤পদ জমা থাকলে জনগণের উপর অতিরিক্ত কর ধার্য করা ঠিক নয়। তবে দেশ ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যদি ইসলামী রাষ্ট্রে অর্থের খুবই প্রয়োজন হয় এবং বায়তুলমালে স¤পদের ঘাটতি পড়ে তখন জানগণের স¤পদের উপর যে কর নির্ধারণ করা হয় তাকে সাময়িক কর বলে। ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে আয় সাধারণভাবে রাষ্ট্রের যে আয় হয়ে থাকে, সেই অনুসারেই রাষ্ট্রের যাবতীয় খরচ বহন করা বাঞ্ছনীয়। অবশ্য জরুরী পরিস্থিতিতে আকস্মিক প্রয়োজন দেখা দিলে জরুরী কর ধার্য করে তা পূরণ করতে হয়। কিন্তু তাতেও যদি প্রয়োজন পূর্ণ না হয় তখন সরকারকে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ঋণ গ্রহণ করতে হয়। পাঠোত্তর মুল্যায়ন নৈর্ব্যক্তিক উত্তর-প্রশ্ন সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন দিন ১। ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের মধ্যে পড়ে ক. শুধু ওশর (১০ ভাগের ১ ভাগ); খ. শুধু জিযিয়া কর; গ. শুধু যাকাত; ঘ. সব উত্তরই সঠিক। ২. মুসলমানদের জমিতে উৎপাদিত ফসলের উপর যে রাজস্ব ধার্য করা হয় তাকে বলা হয় ক. ওশর; খ. খুমুস; গ. খারাজ; ঘ. জিযিয়া। ৩. যাকাত হলক. একটি চাঁদা বিশেষ; খ. একটি কর বিশেষ; ঘ. স¤পদ স¤পর্কিত ইবাদাত; ঙ. জমির ফসলের উপর ধার্যকৃত রাজস্ব যা প্রদান করা একটি এবাদত। ৪. সামুদ্রিক স¤পদে করের পরিমাণ হচ্ছেক. ওশর বা এক দশমাংশ; খ. খুমুস বা এক পঞ্চমাংশ; গ. শতকরা আড়াই ভাগ; ঘ. অর্ধেক। সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন ১. রাষ্ট্রীয় আয়ের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করুন ২. রাষ্ট্রীয় আয়ের ক্ষেত্রে মূলনীতি কী ? লিখুন। ৩. ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের উৎস কি কী ? সংক্ষেপে বলুন। ৪. যাকাত কী ? যাকাত ইসলামী রাষ্ট্রের আয়ের প্রধান উৎস-প্রমাণ পেশ করুন। ৫. ওশর বলতে কী বুঝায় ? কী ধরনের ফসলের ওশর দিতে হয় ? ৬. খারাজ কী ? কারা কিসের ভিত্তিতে ইসলামী রাষ্ট্রকে খারাজ প্রদান করবে ? ৭. জিযিয়া বলতে কী বুঝায় ? জিযিয়া কাদের উপর ধার্য করা হয় এবং কেন ? ৮. ইসলামী রাষ্ট্রের ব্যয়ের ঋণ গ্রহণ কী বৈধ ? কেন ? ৯. সামরিক কর কখন গ্রহণ করা হয়? ১০. কর নির্ধারণের ক্ষেত্রে মূলনীতি কি? বিশদ উত্তর-প্রশ্নঃ ১. ইসলামি রাষ্ট্রের আয়ের উৎস স¤পর্কে বিস্তারিত লিখুন। ২. ইসলামী শরীআত কর্তৃক নির্ধারিত আয়সমূহ স¤পর্কে বিস্তারিত লিখুন। ৩. শরীয়ত কর্তৃক সমর্থিত আয়সমূহ স¤পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]