ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করুন।মদীনা ইসলামী রাষ্ট্রের সচিবালয়

প্রকৃত অর্থে সার্বভৌত্বের অধিকারী কে তা আলোচনা করতে পারবেন।
ইসলামী রাষ্ট্রের কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে মূলনীতি কি তা বর্ণনা করতে পারবেন।
নাগরিকের নৈতিক মান উন্নয়নে ইসলামী রাষ্ট্র বিশেষ কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তার ব্যাখ্যা করতে পারবেন।
ইসলামের অভ্যুদয়ের পর যে মুসলিম সমাজ অস্তিত্ব লাভ করে এবং হিজরতের পর রাজনৈতিক শক্তি অর্জন
করে এর পর মদীনায় একটি ইসলামী রাষ্ট্রের রূপ গ্রহণ করে, যার ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়ে ছিল কুরআন মজীদের
রাজনৈতিক শিক্ষার উপর। সে মদীনা ইসলামী রাষ্ট্র বিভিন্ন দিক থেকে অনন্য সাধারু বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিল।
নি¤েœ বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হলএক ঃ আইনের কর্তৃত্ব এবং সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহর
এ রাষ্ট্রের প্রথম বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, একমাত্র মহান আল্লাহই সার্বভৌমত্বের অধিকারী। ঈমানদারদের শাসন
হচ্ছে মূলত খিলাফত বা আল্লাহর প্রতিনিধিত্বশীল শাসন। কাজেই বলগাহীনভাবে কাজ করার তাদের কোনো
অধিকার নেই। বরং আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ থেকে উৎসারিত আল্লাহর আইনের অধীনে কাজ
করা তাদের অপরিহার্য কর্তব্য। কুরআন মাজীদের যেসব আয়াতে এ মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে তন্মধ্যে নি¤েœাক্ত
আয়াতগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আল্লাহ তাআলা বলেনفىِ
“হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আনুগত্য
কর রাসূলের এবং তাদের, যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী।” (সূরা আন-নিসা : ৫৯)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তাঁর অসংখ্য বাণীতে এ মূলনীতি অত্যন্ত ¯পষ্টভাবে ব্যক্ত
করেছেনঃ
عليكم بكتاب االله فاحلوا ما أحل لكم و حرموا ما حرم عليكم
“আল্লাহর কিতাব মেনে চলা তোমদের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহর কিতাব যা হালাল করে দিয়েছে, তোমরা
তাকে হালাল মানো, আর যা হারাম করেছে, তোমরা তাকে হারাম মানো।” (মুসনাদে আহমাদ)
তিনি আরো বলেন“আল্লাহর তা‘আলা কিছু করুীয় ও বৈধ বিষয় নির্ধারু করে দিয়েছেন, তোমরা তা নষ্ট করোনা, আর কিছু অবৈধ
বিষয় নির্দিষ্ট করেছেন, তোমরা তাতে ঢুকে পড়োনা। কিছু সীমা নির্ধারু করেছেন, তোমরা তা অতিক্রম করোনা,
যে সব ব্যাপারে তিনি মৌনতা অবলম্বন করেছেন তোমরা তার সন্ধানে পড়ো না।”
তিনি আরো বলেন,
إذا أمرتكم بشئ فخذوه و إذا نهيتكم عن شئ فانتهوا عنه
“আমি যখন তোমাদের কোন বিষযের নির্দেশ দেই তোমরা তা গ্রহণ করবে, আর যে বিষয় থেকে নিষেধ করি,
তা থেকে বিরত থাকবে।’’
পাঠ ঃ ৩দুই ঃ সকল মানুষের প্রতি সুবিচার
দ্বিতীয় যে বৈশিষ্ট্যের উপর মদীনা রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল, তা ছিল কুরআন-সুন্নাহর দেয়া আইন যা
সকলের জন্য সমান। রাষ্ট্রের সামান্যতম ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্র প্রধান পর্যন্ত সকলের উপর তা সমভাবে
প্রয়োগ হতো। তাতে কারো জন্য কোনো ব্যতিক্রমধর্মী আচরণের বিন্দুমাত্র অবকাশ ছিল না। কুরআন মাজীদে
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে একথা ঘোষণা করার নির্দেশ দেন ঃ
“এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি তোমাদের মাঝে ন্যায়বিচার করতে।” (সূরা আশ-শূরা : ১৫)
অর্থাৎ পক্ষপাতমুক্ত সুবিচার নীতি অবলম্বন করার জন্য আমি আদিষ্ট ও নিয়োজিত। পক্ষপাতিত্বের নীতি
অবলম্বন করে কারো পক্ষে বা বিপক্ষে যাওয়া আমার কাজ নয়। সকল মানুষের সাথে আমার সমান স¤পর্ক,
আর তা হচ্ছে আদ্ল ও সুবিচারের স¤পর্ক। সত্য যার পক্ষে, আমি তার সাথী ; সত্য যার বিরুদ্ধে, আমি তার
বিরোধী। আমার অনন্তজীবন ব্যবস্থায় কারো জন্য কোনো পার্থক্যমূলক ব্যবহারের অবকাশ নেই। আপন পর,
ছোট বড়, শরীফ ও নিচুর জন্য পৃথক পৃথক অধিকার সংরক্ষিত নেই। যা সত্য তা সকলের জন্যই সত্য; যা
পাপ, তা সকলের জন্যই পাপ ; যা অবৈধ, তা সবার জন্যই অবৈধ ; যা বৈধ, তা সবার জন্যই বৈধ ; যা ফরয,
তা সকলের জন্যই ফরয। আল্লাহর আইনের এ সর্বব্যাপী প্রভাব থেকে আমার নিজের সত্ত¡াও মুক্ত নয়, নয়
ব্যতিক্রম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এ মূলনীতি বর্ণনা করেছেন ঃ
إنما هلك من كان قبلكم إنهم كانوا إذا سرق فيهم الشريف تركوا و إذا سرق فيهم الضعيف
أقاموا عليه الحدود والذى نقس محمد بيده لوأن فاطمة بنت محمد سرقت لقطعت يدها
“তোমাদের পূর্বে যেসব উম্মত ছিল তারা এজন্য ধ্বংস হয়েছে যে, নি¤œ পর্যায়ের অপরাধীদেরকে আইন অনুযায়ী
শাস্তি দিতো, আর উচ্চ পর্যায়ের অপরাধীদেরকে ছেড়ে দিতো। সে সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ,
(মুহাম্মাদের আপন কন্যা) ফাতেমাও যদি চুরি করতো, তবে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে ফেলতাম।”
(বুখারীও মুসলিম)
তিন ঃ মুসলমানদের মধ্যে সাম্যপ্রতিষ্ঠা
এ রাষ্ট্রের তৃতীয় বৈশিষ্ট্য ছিল, বংশ, বর্ণ, ভাষা এবং দেশকাল নির্বিশেষে সকল মুসলমানের অধিকার সমান, এ
মূলনীতির প্রতিষ্ঠা করা। এ রাষ্ট্রের পরিসীমায় কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দল, বংশ বা জাতি বিশেষ কোন অধিকার
লাভ করতে পারেনি, অন্যের মুকাবিলায় কারো মর্যাদা খাটো হতে দেয়া হয়নি।
কুরআন মজীদে আল্লাহ তা‘আলা বলেন ঃ <
“মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই”। (সূরা আল-হুজুরাত : ১০)
তিনি আরো বলেনكْ
“হে মানব ! আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি
বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট
সেই ব্যক্তি অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী।” (সূরা আল-হুজুরাত : ১৩)
নবী করীম (সাঃ)-এর নি¤েœাক্ত উক্তি এ মূলনীতিকে আরও ¯পষ্ট করে ব্যক্ত করেছেন ঃ
إن االله لا ينظر إلى صوركم و أموالكم بل االله ينظر إلى قلوبكم وأعمالكم
“আল্লাহ তোমাদের চেহারা এবং ধন স¤পদের দিকে তাকান না বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও কার্যাবলীর দিকে তাকান” (মুসলিম)
তিনি আরো বলেন,
يا أيها الناس إن ربكم واحد لا مجد لعربى على عجمى ولا لأييض على أسود إلا بالتقوى .
“হে মানব জাতি ! শোন, তোমদের রব এক। অনারবের উপর আরবের বা আরবের উপর অনারবের কোন
মর্যাদা নেই। সাদার উপর কালোর বা কালোর উপর সাদারও নেই কোন শ্রেষ্ঠত্ব। হাঁ, অবশ্য তাক্ওয়ার
বিচারে।” (বায়হাকী)
চার ঃ সরকারের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা
এ রাষ্ট্রের চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল, এ রাষ্ট্রের প্রশাসন, কর্তৃত্ব, ক্ষমতা, ইখতিয়ার ও অর্থ স¤পদকে আল্লাহর
আমানত হিসেবে গণ্য করা হত। আল্লাহভীরু, ঈমানদার এবং ন্যায়পরায়ণ লোকদের হাতে তা ন্যস্ত ছিল। কোন
ব্যক্তি নিজের ইচ্ছামত বা নিজ স্বার্থে আমানতের খেয়ানত করার অধিকার রাখত না। এ আমানত যাদের উপর
সোপর্দ করা হয়েছিল তারা এজন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য ছিল। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মজীদে বলেনঃ
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত তার হকদারকে প্রত্যর্পন করতে। তোমরা যখন মানুষের
মাঝে বিচারকার্য পরিচালনা কামনা করবে তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে
উপদেশ দেন তা কত উৎকৃষ্ট! আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (সূরা আন-নিসা : ৫৮)
রাস‚লুল্লাহ (স) বলেন-
ألا كلكم راع و كلكم مسؤول عن رعيته و الإمام راع و مسئوول عن رعيته
“সাবধান ! তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব স¤পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
মুসলমানদের সর্বোচচ শাসক, তিনিও দায়িত্বশীল তাঁকেও তাঁর প্রজাদের স¤ার্কে জবাবদিহি করতে হবে।”
(বুখারী)
তিনি আরো বলেন,
“মুসলিম প্রজাদের প্রধান দায়িত্বশীল কোন শাসক যদি তাদের সাথে প্রতারুা এবং খিয়ানতকারী অবস্থায় মারা
যায় তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।” (বুখারী)
“মুসলিম রাষ্ট্রের কোন পদাধিকারী শাসক যে নিজের পদের দয়িত্ব পালন করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা সাধনা করে
না, নিষ্ঠার সাথে কাজ করে না ; সে কখনো মুসলমানদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (মুসলিম)
পাঁচ ঃ শ‚রা বা পরামর্শ
এ রাষ্ট্রের পঞ্চম গুরুত্বপ‚র্ণ বৈশিষ্ট্য হল মুসলমানদের পরামর্শ এবং তাদের পার¯পরিক সম্মতিক্রমে রাষ্ট্রের সকল
কার্যক্রম পরিচালিত হত। রাষ্ট্রপ্রধান পরামর্শের ভিত্তিতে সকল কাজ পরিচালনা করতেন। কুরআন মজীদে বলা হয়েছে ঃ
“তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে।” (সূরা আস-শূরা : ৩৮)
তিনি আরো বলেন,
“এবং কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ কর।” (সূরা আলে-ইমরান : ১৫৯)
ছয় ঃ ভালো কাজে আনুগত্য
৬ষ্ঠ মূলনীতি-যার উপর এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত ছিল তা হল, কেবল মারুফ বা ভাল কাজেই সরকারের আনুগত্য
অপরিহার্য। পাপাচারে (মা’সিয়াত) আনুগত্য পাওয়ার অধিকার কারোর নেই। অন্য কথায়, এ ম‚লনীতির তাৎপর্য
এই যে, সরকার এবং সরকারী কর্মকর্তাদের কেবল সেসব নির্দেশই তাদের অধীনস্থ ব্যক্তিবর্গ এবং প্রজাসাধারু
মেনে চলত, যা আইনানুগ এবং বৈধ। আইনের বিরুদ্ধে নির্দেশ দেয়ার তাদের কোন অধিকার ছিল না। কুরআন
মজীদে স্বয়ং রাস‚লুল্লাহ (স)-এর বাইয়াত ও আনুগত্যের শপথ গ্রহণের ক্ষেত্রেও আনুগত্যের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আল্লাহ বলেন,
“এবং সৎকাজে তোমাকে অমান্য করবে না।” (সূরা আল-মুমতাহানা : ১২)
রাসূলুল্লাহ (স) বলেন ঃ
على المسلم السمع و الطاعة للأمير فى المكروه و المحبوب إلا بالمعصية و إذا أمر
بالمعصية فلا طاعة
“একজন মুসলমানের উপর তার আমীরের আনুগত্য করা, শোনা এবং মেনে চলা ফরয ; তা তার পছন্দ হোক
বা অপছন্দ হোক, যতক্ষণ তাকে কোন মা’সিয়াত বা পাপাচারের নির্দেশ না দেয়া হয়। মা’সিয়াত বা অবৈধ
কাজের নির্দেশ দেয়া হলে কোন আনুগত্য নেই।” (বুখারী)
তিনি আরো বলেন ঃ
لا طاعة فى المعصية إنما الطاعة فى المعروف .
“আল্লাহর নাফরমানীতে কোন আনুগত্য নেই ; আনুগত্য কেবল মারূফ বা সৎ কাজে।” (মুসলিম)
সাত ঃ পদমর্যাদার দাবী এবং লোভ নিষিদ্ধ
মদীনা ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি ও বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, সাধারুত রাষ্ট্রের দায়িত্বপূর্ণ পদের জন্য সে
ব্যক্তিই বেশী অযোগ্য-অনুপযুক্ত, যে নিজে পদ লাভের অভিলাষী এবং সে জন্য সচেষ্ট।
আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে বলেন ঃ
“এ তো আখিরাতের সেই আবাস যা আমি নির্ধারিত করি তাদের জন্য যারা এই পৃথিবীতে উদ্ধত হতে ও
বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না।” (সূরা আল-কাসাস : ৮৩)
নবী (স) বলেন ঃ
“আল্লাহর শপথ, এমন কোন ব্যক্তিকে আমরা এ সরকারের পদ মর্যাদা দেই না, যে তা চায় এবং তার জন্য
লোভ করে।” (বুখারী)
“যে ব্যক্তি নিজে তা সন্ধান করে, আমাদের নিকট সে-ই সবচেয়ে বেশী খেয়ানতকারী।” (আবু দাউদ)
আট ঃ রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য
এ রাষ্ট্রের শাসক এবং তার সরকারের সর্ব প্রথম কর্তব্য এই ছিল যে, কোন রকম পরিবর্তন-পরিবর্ধন ছাড়াই
যথাযথভাবে সে ইসলামী জীবন বিধান প্রতিষ্ঠা করবে, ইসলামের চারিত্রিক মানদন্ডানুযায়ী ভাল ও সৎ-গুণাবলীর
বিকাশ ঘটাবে। মন্দ ও অসৎ গুণাবলীর বিনাশ সাধন করব্ েকুরআন মজীদে এ রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য স¤পর্কে বলা হয়েছেঃ
“আমি এদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দিবে এবং সৎ কাজের
নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজ নিষেধ করবে।” (সূরা আল-হজ্জ : ৪১)
কুরআনের দৃষ্টিতে মুসলিম মিল্লাতের অস্তিত্বের মূল লক্ষ্যও এটিই ঃ আল্লাহ বলেন,
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভব হয়েছে; তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দিবে এবং
অসৎ কাজে নিষেধ করবে।” (সূরা আলে-ইমরান : ১১০)
এতদ্ব্যতীত যে কাজের জন্য মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার পূর্বেকার সকল নবী-রাসূল
আদিষ্ট ছিলেন, কুরাআনের দৃষ্টিতে তা ছিল এই ঃ
“তোমরা দীনকে প্রতিষ্ঠা কর এবং তাতে মতভেদ করো না।” (সূরা আশ-শূরা : ১৩)
নয় ঃ ভাল কাজে সহযোগিতা এবং অন্যায় কাজে বাধা প্রদান
এ রাষ্ট্রের আরো একটি বৈশিষ্ট্য এই ছিল যে, মুসলিম সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি সত্য বাক্য উচ্চারু করবে, সৎ ও
কল্যাণের সহায়তা করবে এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের যেখানেই কোন ভুল এবং অন্যায় কাজ হতে দেখবে, সেখানেই
তাকে প্রতিহত করতে নিজের সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। মুসলিম সমাজের প্রতিটি সদস্যের এটা শুধু অধিকারই
নয়, বরং অপরিহার্য কর্তব্যও। এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদের নির্দেশ হচ্ছেঃ
“সৎ ও তাকওয়ায় তোমরা পর¯পর সহযোগিতা করবে এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না।” (সূরা আল-মায়েদা : ২)
তিনি আরো বলেন,
“হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল।” (সূরা আল-আহযাব : ৭০)
এ প্রসঙ্গে মহানবী (স) বলেছেন-
من رآى منكم منكرا فليغيره بيده فإن لم يستطع فبلسانه فإن لم يستطع فبقلبه و ذلك أضعف
الإيمان
“তোমাদের কেউ যদি কোন মুনকার (অসৎ কাজ) দেখ, তবে তার উচিত হাত দিয়ে তা প্রতিহত করা। তা যদি
না পার তবে মুখ দ্বারা বাধা দাও আর তাও যদি না পার তাহলে অন্তর দ্বারা বাধা দেয়ার পরিকল্পনা কর আর
এটা হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতম পর্যায়।” (মুসলিম)
তিনি আরো বলেন,
أفضل الجهاد كلمة حق عند سلطان جائر
“যালেম শাসকের সামনে ন্যায় বা সত্য কথা বলা সর্বোত্তম জিহাদ।” (আবু দাউদ)
তিনি আরো বলেন,
“আমার পর কিছু লোক শাসক হবে, যে ব্যক্তি মিথ্যার ব্যাপারে তাদেরকে সাহায্য করবে, সে আমার নয় এবং আমি ও তার নই।”
১. ইসলামী রাষ্ট্রে সার্বভৌমত্বের প্রকৃত অধিকারীক. জনগণ; খ. সরকার;
গ. মহান আল্লাহ; ঘ. রাষ্ট্র।
২. রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলের আনুগত্য করতে হবেক. সকল আদেশ নিষেধে; খ. শুধু সত্য ও সৎ কাজে;
গ. অন্যায় কাজেও; ঘ. কোনটিই ঠিক নয়।
৩. কাউকে অন্যায় করতে দেখলে হাদীসের নির্দেশ হল প্রথমেক. মুখ দ্বারা বাধা দেবে; খ. হাত দ্বারা বাধা দেবে;
গ. মনে মনে পরিকল্পনা করবে; ঘ. কিছুই করবে না।
৪. কোনটি ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য-
ক. পরামর্শ ভিত্তিক সকল কাজ পরিচালিত করা; খ. ভাল কাজে আনুগত্য;
গ. পদের দাবী করা নিষিদ্ধ; ঘ. সব ক’টিই ঠিক।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামের দৃষ্টিতে সার্বভৌমত্ব কার? সংক্ষেপে লিখুন।
২. ইসলামী রাষ্ট্র শূরা বা পরামর্শ ভিত্তিক পরিচালিত হয়- প্রমাণসহ আলাচনা করুন।
৩. ইসলামী রাষ্ট্র অন্যায়কে বাধা প্রদান করে- প্রমাণসহ উল্লেখ করুন।
৪. একমাত্র সৎ কাজেই অনুগত্য করতে হবে-আলোচনা করুন।
৫. মদীনার ইসলামী রাষ্ট্রের গুরূত্বপূর্ণ ৫টি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করুন।মদীনা ইসলামী রাষ্ট্রের সচিবালয়

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]