মুসলিম ও অমুসলিম নাগরিক অমুসলিম নাগরিকদের প্রতি ইসলামী রাষ্ট্র কী ধরনের আচরণ করবে ? বিস্তারিত লিখুন।

ইসলামী রাষ্ট্রে নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। মহানবী (সাঃ) শুধু একটি নতুন ধর্মই প্রবর্তন করেন নি। বরং
তিনি ধর্মের সাথে একটি রাষ্ট্রেরও গোড়া পত্তন করেছেন। ইসলামই সর্ব প্রথম নাগরিকদেরকে জান-মাল
ও ইজ্জত-আব্রæর পূর্ণ নিরাপত্তার অধিকার দিয়েছে। সুতরাং ইসলামী রাষ্ট্রে নাগরিকের বেঁচে থাকার জন্য
যেমনিভাবে অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেই সকল মৌলিক অধিকারের ব্যবস্থা রয়েছে;
অনুরূপভাবে রয়েছে আত্মসম্মান ও মর্যাদার অধিকার, সম্পদের অধিকার, নেতৃত্বদানের অধিকার,
সামাজিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক অধিকার। নবী করীম (সাঃ) তাঁর হাদীসে এ
বিষয়টি পরিস্কারভাবে তুলে ধরেছেন। বিদায় হজ্জের ভাষণে ইসলামী জীবন ব্যবস্থার নীতিমালা বর্ণনা
করতে গিয়ে তিনি বলেছেন ঃ “তোমাদের জান, তোমাদের মাল, তোমাদের মান-সম্মান, এমনই পবিত্র
যেমনি আজকের এ হজ্জের দিনটি তোমাদের কাছে সম্মানিত।” আর এ অধিকারের সাথে দায়িত্ব-
কর্তব্যও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যে আদর্শ ও মূলনীতির উপর ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত তাকে
কে মান্য করে আর কে মান্য করে না সে হিসেবেই ইসলামী রাষ্ট্র স্বীয় নাগরিকদের ভাগ করে থাকে।
ইসলামী পরিভাষায় উক্ত দু’ ধরনের জনগোষ্ঠীকে যথাক্রমে মুসলিম ও অমুসলিম বলা হয়ে থাকে। নাগরিক
নাগরিক শব্দটি নগর শব্দ থেকে গৃহীত। নাগরিক অর্থ নগরের অধিবাসী। শব্দগতভাবে কোন রাষ্ট্রের সদস্যকে
সে রাষ্ট্রের নাগরিক বলা হয়। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিভাষায় নাগরিক বলতে রাষ্ট্রের এমন সব অধিবাসীকে বুঝায়
যারা রাষ্ট্রের যাতীয় কাজে অংশ গ্রহণ করে।
ঠধষঃধষ নাগরিকের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, “নাগরিক সেই ব্যক্তিবর্গ যাঁরা কতকগুলো কর্তব্য ও দায়িত্বের
বন্ধনে রাষ্ট্রের সাথে আবদ্ধ এবং রাষ্ট্রের আনুগত্বের মাধ্যমে এর সুবিধার ক্ষেত্রে সমভাবে অংশীদার।”
কারো কারো মতে নাগরিক হলেন তিনি, যিনি উপলব্ধি করেন যে, সমাজের উচ্চতর নৈতিক কল্যাণ কি উপায়ে
সম্ভব হয় এবং সেই সঙ্গে তিনি নৈতিক মানের উপর দাঁড়িয়ে নিজেকে সার্থক ও বিকশিত করেন।
ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিক
নাগরিকত্বের ভিত্তি ঃ ইসলাম যেহেতু চিন্তা ও কর্মের একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা এবং এ ব্যবস্থার ভিত্তিতে একটি
রাষ্ট্রও কায়েম করে থাকে। তাই ইসলাম তার রাষ্ট্রের নাগরিকদেরকে দু’ শ্রেণীতে ভাগ করে। মুসলিম ও
অমুসলিম। উক্ত নাগরিকগণ হয়তো রাষ্ট্রের স্থায়ী অধিবাসী হবেন অথবা তাঁরা রাষ্ট্রের সাথে আনুগত্যের বন্ধনে
আবদ্ধ হবেন। তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে ও সমষ্টিগতভাবে রাষ্ট্রীয় অধিকার ভোগ করবেন। রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য পালন
করতে বাধ্য হবেন এবং কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত অধিকার রক্ষার জন্য
সরকারের আনুগত্য স্বীকার করবেন।
নাগরিকত্বের বিলোপ
নি¤েœাক্ত কারণে নাগরিকত্বের বিলুপ্তি ঘটে১. স্বেচ্ছায় নিজ রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে অন্য কোন রাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করলে এবং
সে রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেলে স্বীয় রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বিলুপ্ত হয়ে যায়।
২. সৈন্যদল হতে অথবা যুদ্ধক্ষেত্র হতে যদি কেউ পলায়ন করে তা হলে সে রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব হারিয়ে ফেলে।
৩. রাষ্ট্রের কোন অংশ যদি অন্য কোন রাষ্ট্রের নিকট আইনসঙ্গতভাবে হস্তান্তর করা হয় বা জোরপূর্বক দখলকৃত
হয়, তা হলে সে অংশের জনসাধারন নতুন রাষ্ট্রের নাগরিক হবে।
ইসলামী রাষ্ট্রে নাগরিকের গুণাবলী
খোদাভীরু হওয়া ঃ ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিককে খোদাভীরু হতে হবে। যেহেতু ন্যয়নিষ্ঠ ব্যক্তি আল্লাহর নিকট বেশী পছন্দনীয়। আল্লাহ বলেন ঃ
“তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তি অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী।” (সূরা
আল-হুজুরাত : ১৩)
চরিত্রবান হওয়া ঃ ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিককে সৎচরিত্রবান হতে হবে। কারণ সৎচরিত্রই কোন জাতির
উন্নতির বাহন নবী করীম (সাঃ) বলেন ঃ الأخلاق مكارم تمم لأ بعثت “আমাকে উন্নত চরিত্রের
পরিপূর্ণতা দেয়ার জন্য প্রেরু করা হয়েছে।”
বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া ঃ ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিককে বিচক্ষণ ও বুদ্ধিসম্পন্ন হতে হবে। রাষ্ট্রের নাগরিকগণ
যতবেশী উন্নত বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করতে পারবে, সরকার ততই সফলতা অর্জন করবে।
রাষ্ট্রের আনুগত্য করা ঃ সরকারের আনুগত্য স্বীকার ও বিভিন্ন কর্ম এবং নীতিকে মান্য করার মনোভাব
ব্যতীত কেউ সুনাগরিক হতে পারে না। তাছাড়া সমাজের বৃহত্তর স্বার্থকে ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে দেখার মানসিকতা,
আত্মত্যাগ ও আত্মসংযম নাগরিক জীবনের মহৎ গুণ।
সুশিক্ষিত হওয়া ঃ ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিককে সুশিক্ষিত হতে হবে। শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া
কোন জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না। সুতরাং নাগরিক জীবনে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। মহানবী (স)
বলেছেন, “আমি শিক্ষক হিসেবেই প্রেরিত হয়েছি।’’
বিবেকবান ও কর্তব্যবোধ স¤পন্ন হওয়া ঃ ইসলামী রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিককে বিবেক সম্পন্ন এবং
কর্তব্যবোধে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দায়িত্ববোধ যা তাকে সমাজ-সেবার প্রেরনায় উদ্বুদ্ধ করতে সহায়তা করবে।
নাগরিকের শ্রেণী বিভাগ ঃ ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিককে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
(ক) মুসলিম নাগরিক
(খ) অমুসলিম নাগরিক
অমুসলিম নাগরিক তিন ভাগে বিভক্তঃ অনুগত অমুসলিম নাগরিক, ২. চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিক, ৩. যুদ্ধে
বিজিত অমুসলিম নাগরিক।
মুসলিম নাগরিক
যে সব মুসলিম জন্মগতভাবে ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাস করে অথবা অমুসলিম দেশ হতে হিজরত করে মুসলিম
রাষ্ট্রের নাগরিক হয়। তাদেরকে মুসলিম নাগরিক বলে। মুসলিম নাগরিকদের সম্পর্কে কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে।
“যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, আর যারা
তাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য করেছে, তারা একে অপরের বন্ধু ও পৃষ্ঠপোষক। পক্ষান্তরে যারা (শুধু)
ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরত করেনি, হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তোমাদের নেই।”
(সূরা আল-আনফাল : ৭২)
এ আয়াতে নাগরিকত্বের দু’টি ভিত্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম ঈমানদার হওয়া, দ্বিতীয় দারুল ইসলামইসলামী রাষ্ট্রে বসবাস করা। একজন মুসলমান তার ঈমান আছে ; কিন্তু অমুসলিম রাষ্ট্রে আনুগত্য ত্যাগ করে
দারুল ইসলামে এসে যদি বসবাস করতে শুরু না করে, তবে সে দারুল ইসলামের নাগরিক বলে বিবেচিত হতে
পারে না। পক্ষান্তরে দারুল ইসলামের সকল ঈমানদার জনগণ দারুল ইসলামের নাগরিক, তাদের জন্ম দারুল
ইসলামে হোক কিংবা দারুল কুফর থেকে হিজরত করেই আসুক এবং তারা পরস্পর পরস্পরের সাহায্যকারী ও
সহযোগী।
এ মুসলিম নাগরিকদের উপরই ইসলাম তার পরিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার দায়িত্বভার চাপিয়ে দেয়। কারণ তারাই
নীতিগতভাবে এই ব্যবস্থাকে সত্য বলে মানে। তাদের উপর ইসলাম তার পরিপূর্ণ আইন জারী করে,
তাদেরকেই তার সমগ্র ধর্মীয়, নৈতিক, তামাদ্দুনিক এবং রাজনৈতিক বিধানের আনুসারী হতে বাধ্য করে। তার
যাবতীয় কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনের ভারও তাদের উপরই অর্পণ করে। দেশ ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার জন্য সকল
প্রকার আত্মত্যাগ সে কেবল তাদের নিকটই দাবি করে। এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা
নির্বাচনের অধিকার তাদেরকেই প্রদান করে এবং তার পরিচালনার জন্য সংসদে অংশ গ্রহণ এবং তার দায়িত্বপূর্ণ
পদসমূহে নিয়োগ হওয়ার সুযোগ তারাই লাভ করে, যাতে এই আদর্শবাদী রাষ্ট্রের কর্মসূচী ঠিক তার
মূলনীতিসমূহের সাথে সংগতি রেখে বাস্তবায়িত হতে পারে। নবী করীম (স)-এর জীবনকালে এবং খিলাফতে
রাশেদার স্বর্ণযুগে উল্লিখিত মূলনীতিই সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত। যেমন এ সময় শূরার সদস্য হিসেবে কোনো প্রদেশের
গভর্নর হিসেবে কিংবা সরকারী কোনো বিভাগের মন্ত্রী, সেক্রেটারী, বিচারক বা সৈন্য বাহিনীর অধিনায়ক হিসেবে
কোনো অমুসলিমকে নিয়োগ করা হয়নি। খলীফা নির্বাচনের ব্যাপারেও তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি।
অথচ মহানবী (স) -এর যুগেও ইসলামী রাষ্ট্রে তারা বর্তমান ছিলো। এসব রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাদের
অংশগ্রহণের যদি কোনো অধিকারই থাকতো, তবে আল্লাহর নবী তাদের সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করতেন না
এবং স্বয়ং নবী করীম (স) -এর নিকট সরাসরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকগণ ক্রমাগতভাবে ত্রিশ বছর পর্যন্ত খলীফাগণ
ও তাদেরকে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করতেন না।
অনুগত অমুসলিম নাগরিক
ইসলামী রাষ্ট্রের অনুগত অমুসলিম নাগরিক বলতে সেসব নাগরিককে বুঝায় যারা ইসলামী রাষ্ট্রের সীমারেখার
মধ্যে বসবাস করে তার আনুগত্য ও আইন পালন করে চলার অংগীকার করে, চাই তারা দারুল ইসলামে
জন্মগ্রহণ করে থাকুক অথবা বাইরের কোন অনৈসলামিক রাষ্ট্রে (দারুল কুফর) থেকে এসে ইসলামী রাষ্ট্রের প্রজা
হওয়ার আবেদন করে থাকুক। এ দিক দিয়ে তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয় না।
ইসলাম এ শ্রেণীর নাগরিকদের ধর্ম, সংস্কৃতি এবং জান-মাল ও সম্মানের পূর্ণ নিরাপত্তা দান করে। তাদের উপর
রাষ্ট্র কেবল গণআইন জারী করতে পারে। এই গণআইনের দৃষ্টিতে তাদের ও মুসলমান নাগরিকদের সমান
অধিকার ও মর্যাদা দেয়া হয়। দায়িত্ব পূর্ণ পদ ব্যতীত সকল প্রকার চাকুরীতেও তাদের নিয়োগ করা যাবে।
নাগরিক স্বাধীনতা ও তারা মুসলমানদের সমান ভোগ করবে। অর্থনৈতিক ব্যাপারেও তাদের সাথে মুসলমানদের
অপেক্ষা কোনরূপ স্বতন্ত্র আচরণ করা হবে না। রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে তা
সম্পূর্ণরূপে মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকের জন্যেও পূর্ণমাত্রায় ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষিত থাকে। এ পর্যায়ে ইসলামী
আইনবিদরা যে নীতিমালা ঠিক করেছেন তা হলো ঃ
لهم ما لنا و عليهم ما علينا
“আমাদের জন্যে যেসব অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা তাদের জন্যেও তাই এবং আমাদের উপর যেসব দায়িত্ব
তাদের উপরও তাই রয়েছে।”
হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন ঃ
إنما بذلوا الجزية لتكون أموالهم كأموا لنا و دماؤهم كدمائنا
“অমুসলিম নাগরিকরা জিযিয়া কর আদায় করে এ উদ্দেশ্যে যে, তাদের ধন-স¤পদ ও জান-প্রাণ মুসলিম
নাগরিকদের মতই সংরক্ষিত হবে।”
বস্তুত ইসলামী শরীআহ ভিত্তিক রাষ্ট্রে অমুসলিমরা যে বিরাট অধিকার ও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা লাভ করে,
পৃথিবীর অপর কোন নির্দিষ্ট আদর্শিক রাষ্ট্রে এর তুলনা নেই। ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিক শুধু বেঁচেই থাকে
না, বেঁচে থেকে সর্ববিধ অধিকারও লাভ করে। অমুসলিম নাগরিকদের জন্যে স্বয়ং আল্লাহ এবং তাঁর রসূলই
নিরাপত্তার যিম্মাদার। নবী করীম (স) ঘোষণা করেছেন ঃ
من آذى ذميا فأنا خصمه و من كنت خصمه خصمته يوم القيامة
“যে লোক ইসলামী রাষ্ট্রের অমুসলিম নাগরিককে কোনোরূপ কষ্ট দেবে, আমি নিজেই তার বিপক্ষে দাঁড়াবো
এবং আমি যার বিরুদ্ধে দাঁড়াবো কিয়ামতের দিন তার বিরুদ্ধে আমি মামলা দায়ের করবো।”
অমুসলিম নাগরিকদের সম্পর্কে নবী করীম (স) যেসব কথা বলেছেন, তার ভিত্তিতেই ইসলামী আইনজ্ঞগণ
ম্পষ্ট করে বলেছেন যে, অমুসলিম নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান ওয়াজিব এবং তাদের কোনোরূপ কষ্ট দেয়া
সম্পূর্ণ হারাম। জনৈক ফিকহবিদ বলেছেন ঃ অমুসলিম নাগরিককে যদি কেউ কষ্ট দেয়, তাদেরকে কটু কথা
বলে, তাদের পেছনে তাদের সম্মানের উপর বিন্দুমাত্র আক্রমণ করে কিংবা তাদের সাথে শত্রæতার ইন্ধন যোগায়
তাহলে সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের তথা দ্বীন ইসলামের বিধানকে লংঘন করলো।
এসএসএইচএল বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
পৃষ্ঠা-২১৭
আল্লামা ইবনে হাজম বলেন ঃ এ ব্যাপারে ইসলামী আইনবিদদের ইজমা (ঐকমত্য) এই যে, ইসলামী রাষ্ট্রের
অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করার জন্যে যদি কোনো বিদেশী শত্রæ এগিয়ে আসে, তাহলে ইসলামী রাষ্ট্রের কর্তব্য
হবে তার বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং অমুসলিম নাগরিককে রক্ষা করা।
উক্ত দুই প্রকারের নাগরিকরাই সংখ্যালঘু অমুসলিমদের জন্য নির্ধারিত অধিকারগুলোতে সমভাবে অংশীদার।
চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিক
যারা যুদ্ধ ছাড়া অথবা যুদ্ধ চলাকালে ইসলামী রাষ্ট্রে আনুগত্য করতে সম্মত হয় এবং ইসলামী সরকারের সাথে
সুনির্দিষ্ট শর্তাবলী ভিত্তিতে সন্ধিবদ্ধ হয়, তাদের জন্য ইসলামের বিধান এই যে, তাদের সাথে সকল আচরণ
তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তির শর্তানুযায়ী করা হবে। বর্তমান কালের সভ্য জাতিগুলো এরূপ রাজনৈতিক
ধোঁকাবাজিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে যে, শত্রæ পক্ষকে নতি স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কিছু উদার শর্ত নির্ধারু
করে। তারপর যেই তারা পুরোপুরি আয়ত্তে এসে যায় তখনই শুরু হয়ে যায় ভিন্ন ধরনের আচরণ। কিন্তু ইসলাম
এটাকে হারাম ও মহাপাপ হিসেবে গণ্য করে। কোনো জাতির সাথে যখন কিছু শর্ত স্থির করা হয়ে যায় (চাই তা
মনোপুত হোক বা না হোক) তখন তাতে চুল পরিমাণও ব্যতিক্রম করা যাবে না। চাই উভয় পক্ষের অবস্থান,
শক্তি ও ক্ষমতায় যতোই পরিবর্তন আসুক না কেন।
রাসূল (স) বলেন ঃ “যদি তোমরা কোনো জাতির সাথে সন্ধির ভিত্তিতে বিজয়ী হও এবং সেই জাতি নিজেদের
ও সন্তানদের প্রাণ রক্ষার্থে তোমাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর প্রদানের বিনিময় তোমাদের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ
হয় তাহলে পরবর্তী সময়ে ঐ নির্ধারিত করের চেয়ে বিন্দু পরিমাণও বেশী নিও না। কেননা সেটা তোমাদের
জন্য বৈধ হবে না।”
রাসূল (স) বলেছেন ঃ “সাবধান! যে ব্যক্তি কোনো চুক্তিবদ্ধ নাগরিকের উপর যুলুম করবে কিংবা তার প্রাপ্য
অধিকার থেকে তাকে কম দেবে, তার সামর্থ্যরে চেয়ে বেশী বোঝা তার ওপর চাপাবে, অথবা তার কাছ থেকে
কোনো কিছু তার সম্মতি ছাড়া আদায় করবে, এমন ব্যক্তির পক্ষে কিয়ামতের দিন আমি নিজেই ফরিয়াদী
হবো।”
উভয় হাদীসের ভাষা ব্যাপক অর্থবোধক। এ হাদীস দু’টি থেকে কতিপয় সাধারণ বিধান গ্রহণ করা যায়-
♦ নির্ধারিত কর আদায়ের সময় কোনো রকম কমবেশী করা মোটেও বৈধ হবে না।
♦ তাদের জমি-জমার উপর কর এর পরিমাণ বাড়ানো যাবে না।
♦ তাদের জমি দখল করা যাবে না, তাদের ঘরবাড়ী দালান-কোঠাও কেড়ে নেয়া যাবে না।
♦ তাদের উপর কড়া ফৌজদারী দন্ডবিধিও চালু করা যাবে না,
♦ তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতায়ও হস্তক্ষেপ করা যাবে না। তাদের ইজ্জত-সম্মানেরও ক্ষতি করা যাবে না এবং
তাদের সাথে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না, যা যুলুম ও অধিকার হরণের আওতায় পড়ে।
সামর্থ্যরে মাত্রারিক্ত বোঝা চাপানো অথবা সম্মতি ব্যতিরেকে সম্পতি হস্তগত করা অবৈধ।
উপরে বর্ণিত নির্দেশাবলীর কারণেই ফিক্হবিদগণ সন্ধি বলে বিজিত জাতিগুলো সম্পর্কে কোনো আইন প্রণয়ন
করেন নি। বরং শুধু একটি সাধারণ সংক্ষিপ্ত বিধান প্রণয়ন করেই ক্ষান্ত থেকেছেন। আর সেটি এই যে, তাদের
সঙ্গে আমাদের আচরণ স¤পূর্ণভাবে সন্ধির শর্ত অনুসারে পরিচালিত হবে।
ইমাম আবু ইউসুফ লিখেছেনঃ “তাদের সন্ধিপত্রে যা নেয়া স্থির হয়েছে, তাদের কাছ থেকে শুধু তাই নেয়া
হবে। তাদের সাথে সম্পাদিত সন্ধির শর্ত পূরণ করা হবে। কোনো কিছু বাড়ানো যাবে না।”
যুদ্ধে বিজিত অমুসলিম নাগরিক
দ্বিতীয় প্রকারের অমুসলিম নাগরিক হচ্ছে যারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মুসলমানদের সাথে লড়াই করেছে এবং
ইসলামী বাহিনী যখন তাদের সকল প্রতিরোধ ভেংগে তাদের আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করেছে, কেবল তখনই
অস্ত্র সংবরু করেছে। এ ধরনের বিজিত লোকদের কাছ থেকে জিযিয়া কর তখনই গ্রহণ করা হয়। যখন
তাদেরকেই ইসলামী রাষ্ট্রের রক্ষিত নাগরিকে পরিণত করা হয়। এই শ্রেণীর অমুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক
মর্যাদা ও অবস্থান সম্পর্কে। বিধানগুলো হল১. মুসলমানদের সরকার তাদের কাছ থেকে জিযিয়া গ্রহণ করা মাত্রই তাদের সাথে সংরক্ষণ চুক্তি সম্পাদিত
হয়ে যাবে এবং তাদের জান ও মালের হিফাযত করা মুসলমানদের জন্য ফরয হয়ে পড়বে। কেননা জিযিয়া
গ্রহণ করা মাত্রই প্রমাণিত হল যে, তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
এরপর ইসলামী সরকার বা সাধারণ মুসলমানদের এ অধিকার থাকে না যে তাদের সম্পত্তি দখল করবে বা
তাদেরকে দাসদাসী বানাবে। হযরত উমর (রা) হযরত আবু উবায়দাকে দ্বর্থহীন ভাষায় লিখেছিলেন ঃ
“যখন তুমি তাদের কাছ থেকে জিযিয়া গ্রহণ করবে, তখন তোমার আর তাদের উপর হস্তক্ষেপ করার
অধিকার থাকবে না।” (কিতাবুল খারাজ পৃষ্ঠা ঃ ৮২)
২. রক্ষিত নাগরিকে পরিণত হওয়ার পর তাদের জমির মালিক তারাই হবে। সেই জমির মালিকানা
উত্তরাধিকার সূত্রে হস্তান্তরিত হবে এবং তারা নিজেদের সম্পত্তি বেচা-কেনা, দান করা ও বন্ধক রাখা
ইত্যাদির নিরংকুশ অধিকারী হবে। ইসলামী সরকার তাদেরকে বেদখল করতে পারবে না।
৩. জিযিয়ার পরিমাণ তাদের আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। যারা ধনী, তাদের কাছ থেকে বেশী, যারা
মধ্যবিত্ত তাদের কাছ থেকে কিছু কম এবং যারা দরিদ্র তাদের কাছ থেকে অনেক কম নেয়া হবে। আর যার
কোনো উপার্জনের ব্যবস্থা নেই, অথবা যে অন্যের দান দক্ষিণার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে, তার
জিযিয়া মওকুফ করে দেয়া হবে। জিযিয়ার জন্য যদিও কোনো বিশেষ পরিমাণ নির্ধারিত নেই তবুও তা
অবশ্যই এভাবে নির্ধারিত হওয়া চাই যাতে তা আদায় করা তাদের পক্ষে সহজ হয়। হযরত উমর (রা)
ধনীদের উপর মাসিক এক দিরহাম, মধ্যবিত্তদের ওপর মাসিক অর্ধ দিরহাম এবং গরীব লোকদের ওপর
মাসিক ১/৪ দিরহাম জিযিয়া আরোপ করেছিলেন।
৪. জিযিয়া শুধু যুদ্ধ করতে সক্ষম লোকদের ওপর আরোপ করা হবে। যারা যুদ্ধ করতে সমর্থ নয় যথা শিশু,
নারী, পাগল, অন্ধ, পংগু, উপাসনালয়ের সেবক, সন্যাসী, ভিক্ষুক বৃদ্ধ, বছরের উল্লেখযোগ্য সময় রোগে
কেটে যায় এমন রোগী এবং দাস-দাসী ইত্যাদিকে জিযিয়া দিতে হবে না।
৫. যুদ্ধের মাধ্যমে দখলীকৃত জনপদের উপাসনালয় দখল করার অধিকার মুসলমানদের রয়েছে। তবে সৌজন্য
বশত এই অধিকার ভোগ করা থেকে বিরত থাকা এবং উপাসনালয়গুলোকে যে অবস্থায় আছে সেই
অবস্থায় বহাল রাখা উত্তম। হযরত উমর (রা)-এর আমলে যত দেশ বিজিত হয়েছে সে সব দেশের
কোথাও কোনো উপাসনালয় ভাঙ্গা হয় নি বা তাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা হয় নি। ইমাম আবু
ইউসুফ (র) লিখেছেন ঃ
“সেগুলোকে যেমন ছিলো তেমনভাবেই রেখে দেয়া হয়েছে। ভাঙ্গা হয়নি বা তাতে কোনো ধরনের
হস্তক্ষেপ করা হয়নি।” তবে প্রাচীন উপাসনালয়গুলোকে ধ্বংস করা কোনো অবস্থায়ই বৈধ নয়।
উপরের দু’ শ্রেণীর নাগরিক ও তাদের পৃথক পৃথক মর্যাদা সম্পর্কে কারো আপত্তি থাকলে সে যেন পৃথিবীর
অন্যান্য রাষ্ট্র সংখ্যালঘু নাগরিকদের প্রতি যে আচরণ করে সে দিকে দৃষ্টিপাত করে।
বাস্তবিকই একথা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলা যায় যে, কোন রাষ্ট্রের মধ্যে তার আদর্শের ব্যতিক্রম আদর্শের বিশ্বাসী
সংখ্যালঘু নাগরিক যা কখনও অনেক জটিলতার সৃষ্টি করে থাকে একমাত্র ইসলামই ইনসাফ, সহিষ্ণুতা,
উদারতা ও বদান্যতার সাথে সে জটিলতার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যরা এ জটিলতার সমাধান প্রায়ই দু’টি পন্থায় করেছে- হয় তারা সংখ্যালঘুকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার চেষ্টা
করেছে অথবা শূদ্র বা অস্পৃশ্য শ্রেণী বানিয়ে রেখেছে। ইসলাম উপরোক্ত পন্থার পরিবর্তে তার নীতিমালা
মান্যকারী ও অমান্যকারীদের মধ্যে ন্যায়ানুগ একটি সীমা নির্ধারণ করে দেয়ার পন্থা গ্রহণ করেছে। ইসলাম তার
অনুসারীদেরকে তার নীতিমালা পূর্ণরূপে অনুসরণ করতে বাধ্য করে এবং উক্ত নীতিমালা অনুযায়ী রাষ্ট্রব্যবস্থা
পরিচালনার দায়িত্বভার তাদের উপর অর্পণ করে। আর যারা তার নীতিমালার অনুসারী নয় তাদেরকে সে দেশের
প্রশাসন ব্যবস্থা বহাল রাখার জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিধান মানতে বাধ্য করে। ইসলাম তাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনার
দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সাথে সাথে তাদের যাবতীয় সাংস্কৃতিক ও মানবীয় অধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করে।
১. মুসলিম নাগরিকদের ক্ষেত্রে দু’টি শর্ত লক্ষনীয় তা কী ?
ক. মুসলিম হওয়া ও আনুগত্য করা; খ. মুসলিম রাষ্ট্রের অধিবাসী হওয়া ও আনুগত্য করা;
গ. খোদাভীরু ও অনুগত হওয়া; ঘ. রাষ্ট্রের স্থায়ী অধিবাসী হওয়া ও অনুগত হওয়া।
২. নাগরিকত্ব বিলুপ্ত হয়ক. রাষ্ট্রের অবাধ্য হলে; খ. স্বেচছায় নিজ রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে অন্য
কোন রাষ্ট্রের নাগরিক হলে;
গ. পলায়ন করে অন্য রাষ্ট্রে চলে গেলে; ঘ. রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলার বিপরীত কোন কিছু করলে।
৩. আমাদের জন্য যেসব অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা থাকবে তাদের জন্যও তাই থাকবে এই উক্তিটি কার?
ক. হযরত আলী (রা) -এর খ. মুসলিম আইনবিদদের;
গ. নবী করীম (স) -এর; ঘ. হযরত উমর (রা) -এর।
৪. ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকের নিরাপত্তা বিধানক. ফরয; খ. ওয়াজিব;
গ. মুবাহ; ঘ. অত্যাবশ্যক নয়।
একথায় উত্তর দিন
১. ‘‘নাগরিক হল সেই সব ব্যক্তিবর্গ যারা কতগুলো কর্তব্য ও দায়িত্বের বন্ধনে রাষ্ট্রের সঙ্গে আবদ্ধ এবং রাষ্ট্রের
আনুগত্যের মাধ্যমে-এর সুবিধার ক্ষেত্রে সমভাবে অংশীদার’’- এ সংগাটি কার?
২. ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিকত্বের ভিত্তি কী ?
৩. কোন সৈনিক যুদ্ধ থেকে পলায়ন করলে তার নাগরিকত্ব কি বহাল থাকে?
৪. ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিকগণ কয়ভাগে বিভক্ত?
৫. ইসলাম তার পরিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার দায়িত্ব কার উপর চাপিয়ে দেয়?
৬. ‘‘অমুসলিম নাগরিকরা জিযিয়া আদায় করে এ উদ্দেশ্যে যে, তাদের জান-মাল মুসলিম নাগরিকদের মতই
সংরক্ষিত’’- এ উক্তিটি কার?
৭. অমুসলিম নাগরিক কয়ভাগে বিভক্ত?
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. সাধারণ নাগরিকের পরিচয় দিন।
২. ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিক কারা ? সংক্ষিপ্তাকারে লিখুন।
৩. ইসলামী রাষ্ট্রে একজন নাগরিকের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক? উল্লেখ করুন।
৪. মুসলিম নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য স¤পর্কে আলোকপাত করুন।
৫. অমুসলিম নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য স¤পর্কে আলোকপাত করুন।
৬. কী কী কারণে নাগরিকত্বের বিলুপ্তি ঘটে? আলোচনা করুন।
৭. অমুসলিম নাগরিক কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকারের পরিচয় দিন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. মুসলিম ও অমুসলিম নাগরিক স¤পর্কে বিস্তারিত লিখুন।
২. অমুসলিম নাগরিকদের প্রতি ইসলামী রাষ্ট্র কী ধরনের আচরণ করবে ? বিস্তারিত লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]