ইসলামি অর্থব্যবস্থায় বায়তুলমাল-এর প্রয়োজনীয়তা স¤পর্কে লিখুন।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। ইসলামি জীবন ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য শাখা হিসেবে ইসলামি অর্থনীতি
ইসলামি আদর্শের মূল লক্ষ্য অর্জনের একটি উপলক্ষ ও উপকরণ হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকে। ইসলামি
অর্থনীতির মূল উৎস হচ্ছে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ। যুগে যুগে ইসলামি অর্থনীতিবিদগণ গবেষণা করে ইসলামি
অর্থ ব্যবস্থার নীতি নির্ধারণ করেছেন। কুরআন-সুন্নাহ ও ইসলামি চিন্তাবিদদের রচনার উপর নির্ভর করে ইসলামি
অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য তথা মূলনীতিগুলো নি¤েœতুলে ধরা হলো ঃ
সকল ক্ষেত্রে ‘আমর বিল মারুফ’ ‘নাহি আনিল মুনকার’-এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘তাযকিয়া’ ও ‘তাকওয়া’
অজর্ন।
‘আমর বিল মারুফ’ বা সৎ কাজের আদেশ (অন্য কথায় সুনীতির প্রতিষ্ঠা) এবং ‘নাহি আনিল মুনকার’ বা অন্যায়
কাজের নিষেধ (অন্য কথায় দুর্নীতির উচ্ছেদ) ইসলামি অর্থনীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য বা মূলনীতি। যে অর্থনীতি ও
সমাজ ব্যবস্থায় যুগপৎ সুনীতির প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতির উচ্ছেদের জন্য বলিষ্ঠ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেই সেই অর্থনীতি
ও সমাজ ব্যবস্থায় অসহায় এবং মজলুমের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের
ফরিয়াদে দিগন্তহয়ে ওঠে সচকিত। আমর বিল মারুফ ও নাহী আনিল মুনকারের বিধান নেই বলেই পুঁজিবাদ
মানুষের কাক্সিক্ষত কল্যাণ অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু সেই অর্থনীতি সচল রাখার উদ্দেশ্যে কৌশল বদলানো
হচ্ছে বারবার। কখনও বা মার্কেন্টাইলিজমকে দেয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব, কখনও বা অদৃশ্য হস্তকে। আবার
কখনও গুরুত্ব পেয়েছে ডবষভধৎব ঊপড়হড়সরপং, কখনও ও বা পূর্ণ কর্মসংস্থানের প্রেসক্রিপশন। কিন্তু তাতেও
শেষ রক্ষা হয়নি। নৈতিকতা বিবর্জিত ও ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক মানুষের সৃষ্ট সংকট মোচনের দায়িত্ব শেষ অবধি
রাষ্ট্রকে নিতে হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে, কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস বা ঝঃৎঁপঃঁৎধষ ধফলঁংঃসবহঃ-এর কথা। কিন্তু
ইতোমধ্যেই এর বিপক্ষেও তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যে সমাজে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন
নেই সে সমাজ ধ্বংস হয়ে গেছে ইতিহাস তার সাক্ষী। এরই প্রতিবিধানের জন্যে ইসলামে সুনীতির প্রতিষ্ঠা ও
দুর্নীতির উচ্ছেদের জন্যে কঠোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। পবিত্র কুরআনে সূরা আলে-ইমরানের ১১০ নং আয়াতে
বলা হয়েছে-
ك᠑ نْ تُ مْ خَ يْ رَ أ᠑ مَّ ةٍ أ᠑ خْ ر᠒ جَ تْ لِ لنَّ اس᠒ تَ أ᠔ مُ رُ ونَ ᗷ ِٱل᠔ مَ عْ رُ وفِ و تَ نْ هَ وْ نَ عَ ن᠒ ٱل᠔ مُ نْ ᜻᠐ ر᠒
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে; তোমরা সৎসাজের নির্দেশ দেবে এবং
অসৎকাজে নিষেধ করবে।”
বস্তুতপক্ষে মানুষের মধ্যে সমাজের সকল স্তরে সত্য ও মিথ্যার যে দ্ব›দ্ব রয়েছে তারই প্রতিবিধানের জন্যে সুনীতির
স্বপক্ষে ও দুর্নীতির বিপক্ষে অবস্থান নিতে ইসলাম নির্দেশ দিয়েছে। মানুষের চূড়ান্তকল্যাণ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ
বিনির্মাণে ইসলামের এ নির্দেশ অমোঘ ও কালজয়ী। অর্থনীতির ক্ষেত্রে একথা অধিক প্রযোজ্য।
এ নীতি প্রয়োগের মৌল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে পরিশুদ্ধ করা। তার জীবন ও সমাজকে পবিত্র করা। দোখাভীতি
বা তাকওয়া এরই ভিত্তি। কুরআন ও সুন্নাহর সকল বিধানের মূল লক্ষ্য হলো ইহকালীন জীবনে মানুষকে সঠিক ও
সত্য পথে পরিচালনার মাধ্যমে তাকে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি বা আশরাফুল মাখলুকাতের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা।
এজন্য তাকে অবশ্যই পরিশুদ্ধ বা পবিত্র হতে হবে। আল্লাহভীতি এর অপরিহার্য সোপান। যার মধ্যে আল্লাহভীতি
রয়েছে সে চারিত্রিক পরিশুদ্ধি বা তাযকিয়া অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, কোন জাগতিক আইন, বিধি-নিষেধ এমনকি জেল-যুলুমও মানুষকে অন্যায় ও কলুষতা হতে
বিরত রাখতে সমর্থ হয়নি। এ বিশ্বচরাচরের স্রষ্টা নিছক খেয়াল-খুশীর বশে মানুষ সৃষ্টি করেননি। তার একটি মহৎ
উদ্দেশ্য এর পেছনে অন্তর্নিহিত ছিল। প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সবই তাঁর গোচরীভূত। সকল কাজের পুরস্কার বা
তিরস্কারের তিনিই মালিক, এ বোধ-বিশ্বাস অন্তরে সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্তশুধু শাস্তিমূলক অবস্থা কাউকে অসৎ কাজ
হতে স্থায়ীভাবে বিরত রাখতে সমর্থ হয়নি। এজন্যই ইসলামে আমর বিল মারুফ ও নাহী আনিল মুনকারের সাথে
সাথে তাযকিয়া ও তাকওয়ার ওপর এত বেশি গুরুত্ব আরোপিত হয়েছে।ইসলামি অর্থনীতির মূলনীতিসমূহের মধ্যে
এটি সর্বাগ্রে স্থান পেয়েছে।
সকল কর্মকান্ডেই শরীআহর বিধান মান্য করা
ইসলামি জীবন ব্যবস্থায় কিছু কিছু পেশা, খাদ্য ও পানীয় এবং কর্মকান্ডকে হারাম বা অবৈধ বলে চিহ্নিত করা
হয়েছে। ঐসব কাজ করা এবং খাদ্য ও পানীয় ভোগ, উৎপাদন, বিপণন ইত্যাদি সকল কিছু হারাম বা নিষিদ্ধ। এ
সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন-
ᛒ َسْ أ᠐ ل᠑ ونَ كَ عَ ن᠒ ٱل᠔ خَ مْ ر᠒ وَ ٱل᠔ مَ ᛳْ سِ ر᠒ قُ لْ فِ يهِ مَ ቯ إِ ثْ مٌ ك᠐ بِ يرٌ .
লোকে তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বল, এগুলোর মধ্যে রয়েছে মহাপাপ।” (সূরা আল-বাকরা :
২১৯)
সরকার বা আইন পরিষদ বা অনুরূপ প্রতিষ্ঠান নিজেদের স্বার্থ বা প্রয়োজনের তাগিদেই কোন কাজকে বৈধ আবার
কোন কাজকে অবৈধ বলে চিন্নিত করে থাকে। মানুষের মনগড়া মতবাদেই কেবল এ সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে
একই ধরনের কাজ একবার আইনত নিষিদ্ধ আবার অন্য সময়ে আইনত সিদ্ধ হয়। উদাহরণস্বরূপ মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রে মদ পান ও মদ তৈরি নিষিদ্ধকরণ ও পরবর্তীকালে পুনরায় অনুমোদনের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।
কিন্তু ইসলামে এ ধরনের মনগড়া সিদ্ধ-নিষিদ্ধের সুযোগ রাখা হয়নি। যা সিদ্ধ বা বৈধ তা চিরকালের জন্য ও
সকলের জন্যেই বৈধ এবং যা নিষিদ্ধ বা অবৈধ তাও চিরকালের জন্যে ও সকলের জন্যেই অবৈধ। উদাহরণস্বরূপ
মদের উল্লেখ করা যেতে পারে। গোটা পশ্চিমা বিশ্বে আঠারো বছর বয়সের নিচে মদপান নিষিদ্ধ। কিন্তু যেদিন
পরিবারের ছেলেমেয়ের কারো বয়স আঠারো বছর পূর্ণ হয় সেদিন ঘটা করে মদ্যপানের উৎসব করা হয়। এ
ধরনের দ্বিমুখী আচরণ ও মানসিকতার সুযোগ ইসলামে নেই। পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রে রাষ্ট্রের অনুমতি থাকলে বা
আইনের বিধান করে নিলে যেকোন সমাজ বিধ্বংসী ও মানবতার জন্যে অবমাননাকর কাজও বৈধতা পেয়ে যায়।
জুয়াখেলা ও পতিতাবৃত্তি এর জাজ্জ্বল্যমান উদাহরণ। প্রথমটি সমাজ বিধ্বংসী এবং পরবর্তীটি মানবতার জন্যে
অবমাননাকর। কিন্তু যথোপযুক্ত ফি দিয়ে লাইসেন্স করে নিলে কি পুঁজিবাদী অর্থনীতি, কি সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি
উভয় ক্ষেত্রেই এ দু’টি কাজ শুধু বৈধতা লাভ করেনা, সমাজেরও অনুমোদন পেয়ে যায়। বিপরীতক্রমে যা হালাল
বা বৈধ তা প্রাপ্তির বা অর্জনের চেষ্টা করা এবং যা হারাম বা অবৈধ তা পরিত্যাগ বা বর্জনের চেষ্টা করা ইসলামি
জীবন বিধান তথা ইসলামি অর্থনীতির দাবি।
ইসলামি বিধান অনুযায়ী যে কোন ব্যক্তি হালাল বা বৈধ পদ্ধতিতে ধন-সম্পদ উপার্জনের পূর্ণস্বাধীনতা রাখে।
সেজন্যে সে নিজের যোগ্যতা ও সামর্থ্য অনুসারে যে কোন উপায় অবলম্বন করতে পারে এবং যে কোন পরিমাণ
অর্থও উপার্জন করতে পারে। তার এ বৈধ মালিকানা থেকে তাকে বঞ্চিত করার কেউ নেই। তবে হারাম বা
নিষিদ্ধ পন্থায় এক কর্পদকও উপার্জন করার তার অনুমতি নেই। বরং হারাম পদ্ধতিতে উপার্জন থেকে তাকে
আইন প্রয়োগ করেই বিরত রাখা হবে। এক্ষেত্রে অপরাধের পর্যায় বা গুরুত্ব অনুসারে তাকে অবশ্যই কারাদন্ড বা
অর্থদন্ড দেয়া যেতে পারে ; এমনকি তার ধনসম্পদ বাজেয়াপ্ত পর্যন্তকরা যেতে পারে।
আদল (ন্যায়বিচার) ও ইহসান (কল্যাণ)-এর প্রয়োগ
আদল (ন্যায় বিচার) ও ইহসান (কল্যাণের প্রতিষ্ঠা) ইসলামের আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ বিধান। ইসলামি অর্থনীতির
ক্ষেত্রেও তা সমভাবেই প্রযোজ্য। পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র বা অন্য কোন ইজমের অর্থনীতিতে সুবিচারের এ প্রসংগটি
একেবারেই অনুপস্থিত। সেখানে বরং মানুষের স্বাভাবিকতা বা ফিতরাতের বিরোধী নীতিই কার্যকর রয়েছে। ঐ সব
অর্থনীতিতে দুর্বলের, দরিদ্রের, বঞ্চিতের তথা সমাজের মন্দভাগ্য লোকদের জন্যে স্বীকৃত কোন অর্থনৈতিক
অধিকার ছিল না। পর পর দু’টি বিশ্বযুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহামন্দা এবং শিল্পসমৃদ্ধ দেশসমূহের ট্রেড
ইউনিয়নগুলোর প্রচন্ড চাপের মুখে পরবর্তীকালে কিছু কিছু কল্যাণধর্মী পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। এ সমাজে
একচেটিয়া কারবারী মুনাফাখোর ব্যবসায়ী ঘৃণ্য চোরাকারবারী ধনী মজুতদার ও দুর্নীতিপরায়ণ আমলার কথাই
আইনের মর্যাদা পেয়ে থাকে। ফলে দরিদ্র আরও দরিদ্র হচ্ছে, ধনী হচ্ছে আরও ধনী হচেছ। ধনবৈষম্য হচ্ছে
আরও প্রকট। ইউএনডিপির স¤প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে বিলম্বে হলেও এ সত্য স্বীকার করে নেয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে সমাজে জবাবদিহিতার উপস্থিতি অপরিহার্য। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা
হযরত উমর ইবনুল খাত্তাবের (রাঃ) আমলে মদীনার জনগণের মধ্যে বিলিকৃত কাপড় সকলেই পেয়েছিলেন এক
খন্ড করে। কিন্তু তিনি কিভাবে দু’খন্ড কাপড় ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছিলেন তার জবাব দিতে হয়েছিল জনতার
সামনে খুতবা দেয়ার পূর্বেই। আদল ও ইহসান প্রতিষ্ঠার স্বার্থে রাসূল (সা) -এর জামাতা ইসলামের চতুর্থ খলিফা
হযরত আলী (রাঃ)-কে হাজির হতে হয়েছিল কাযীর এজলাসে সাধারণ নাগরিকের মতোই। বর্মের মালিকানার
সেই মামলায় তিনি হেরে গিয়েছিলেন। উমাইয়া ও আব্বাসীয় খিলাফতের যুগেও বিচারের এ ব্যবস্থা বিদ্যমান
ছিল। ন্যায়বিচারের অন্য অর্থ সমাজ হতে অন্যায় ও যুলমের উচ্ছেদ এবং সবলের প্রতিরোধ। ইসলামি শরীআর
ব্যাত্যয় যুলমকেই ডেকে আনে। তার সময়োচিত প্রতিরোধ ও উচ্ছেদ না হলে দুর্বল ও দরিদ্র শ্রেণীই প্রতারিত,
নিগৃহীত, বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্তহয়। এজন্যেই ইসলামি অর্থনীতিতে এর প্রতিবিধানের উদ্দেশ্যে আদল ও ইনসাফ
প্রতিষ্ঠা অন্যতম মূলনীতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে। আদল বা সুবিচারের স্বার্থে আইনের তাৎক্ষণিক ও যথাযথ
প্রয়োগ ইসলামি বিধানের অপরিহার্য অঙ্গ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ সূরা মায়িদার ৮নং আয়াতে বলেন- َـوُ ه ᠔وا ᠑لِ دْ ٱع
ٰىَ ـوْ ق لتَِّ لُ بَ ـرْ ق ᠐أ “তোমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা কর, এটা তাকওয়ার অতি নিকটবর্তী।” একই সঙ্গে ইহসান বা
কল্যাণের প্রসঙ্গটি ইসলামি অর্থনীতিতে গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হয়েছে। ইহসান সম্পর্কে সূরা বাকারার ১৯৫ নং
পরায়র্ণসৎকম আল্লাহ, কর সৎকাজ তামরা “েআর وَ أ᠐ حْ سِ ـنُ وۤ ا᠔ إِ نَّ ٱللᡐ ـهَ ᘌ ُحِ ـبُّ ٱل᠔ مُ حْ سِ ـنِ ينَ -ছয়েহে বলা তআেয়া
লোকদের ভালোবাসেন।” দুর্বলের প্রতি অর্থনৈতিক দিক থেকে কল্যাণের হাত প্রসারিত করা ইসলামি অর্থনীতির
অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মূলত এ কারণেই যাকাতের মত একটি বাধ্যতামূলক ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত
হয়েছে উশর, সাদাকাতুল ফিতর ও করযে হাসানা। সমাজে যারা অসহায় ও অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল তাদের
সমস্যার কিছুটা হলেও সুরাহা হয় যদি যথোচিতভাবে যাকাত ও উশর আদায় ও বণ্টন হয়, ফিতরা প্রদান করা
হয় এবং করযে হাসানার দুয়ার উন্মুক্ত রাখা হয়। দুর্বল, বঞ্চিত, ইয়াতীম, ঋণগ্রস্ত, মুসাফির, পীড়িত ও
আর্তজনেরা অর্থনৈতিক এ কল্যাণ ইসলামি সমাজে পেয়ে থাকে তাদের অধিকার হিসেবেই, দয়ার দান হিসেবে নয়।
ভারসাম্যপূর্ণ জীবন যাপনের প্রয়াস
ইসলাম সর্বস্ব ত্যাগের বা সন্নাসের ধর্ম নয়, আকণ্ঠ ভোগের বা চরম আসক্তিরও ধর্ম নয়। বরং ত্যাগ ও ভোগ এ
দুয়ের মাঝামাঝি জীবন যাপনের জন্যেই ইসলামে তাগিদ দেয়া হয়েছে। যে সংসারত্যাগী সে কৃষক অর্থনৈতিক
কোন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করার জন্যে আদৌ আগ্রহ বোধ করে না। তাই দুনিয়ার লোকদের কোন উপকার করা
তার সাধ্য বা ক্ষমতা বহির্ভুত। অপরপক্ষে যে ভোগী, যেকোন উপায়ে ভোগলিপ্সা চরিতার্থ করাই তার একান্ত
বাসনা। ভোগ করার জন্যে, নিজের বিলাস-ব্যসন চরিতার্থ করার জন্যে সব রকম উপায়ে সে ধন-সম্পদ উপার্জনে
সচেষ্ট থাকবে। এক্ষেত্রে তার কাছে ন্যায়নীতি বা বৈধতা-অবৈধতার প্রশ্ন যেমন তুচ্ছ তেমনি পরের কল্যাণে অর্থ-
সম্পদ ব্যয় করা তার কাছে মুর্খতা। এক্ষেত্রে নিজে তো সে কৃপণতা করেই অন্যকেও কৃপণাতায় প্ররোচিত করে।
কৃপণতার অর্থনৈতিক তাৎপর্য হলো ব্যয় সংকুচিত হওয়া। ফলে চাহিদা সংকুচিত হওয়া এবং পরিণামে কর্মসংস্থান
ও উৎপাদন সংকুচিত হওয়া। অর্থনীতিতে এর পরিণাম নিদারুণ অশুভ।
ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ জীবনের মূল বক্তব্যই হলো নিজে সৎ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে চেষ্টা করা, অন্যকেও সেভাবে
বাঁচতে সহযোগিতা করা। প্রকৃত মুসলমান আড়ম্বরপূর্ণ জীবনের জন্যে না নিজের সব মূল্যবোধ ও ঈমানী
চেতনাকে বিসর্জন দেবে, না অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করবে। বরং কল্যাণ ও মঙ্গলের পথে তার যাত্রার
সহযোগী করে নেবে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব ও সমাজের মন্দভাগ্য লোকদের।
মহান আল্লাহ তা‘আলা আল-কুরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেন-
ٱل ᡐ ذِ ينَ يَ ᘘ ْخَ ل᠑ ونَ وَ ᗫ َأ᠔ مُ رُ ونَ ٱلنَّ اسَ ᗷ ِٱل᠔ ᘘ ُخْ لِ وَ ᗫ᜻ َ᠔ تُ مُ ونَ مَ ቯ آتَ اهُ مُ ٱللᡐ هُ مِ ن فَ ضْ لِ هِ .
“যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দিয়েছেন তা
গোপন করে”। (সূরা আন-নিসা : ৩৭)
তিনি আরও বলেন-
إِ نَّ ٱل᠔ مُ ᘘ َذِّ ر᠒ ᗫنَ ᛿᠐ انُ وۤ ا᠔ إِ خْ وَ انَ ٱلشَّ ᘭ َاطِ ين᠒.
“নিশ্চয় যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই।” (সূরা বনী ইসরাইল : ২৭)
বরং তিনি ব্যয়ের ব্যাপারে সঠিক পথ নির্দেশনা দিয়েছেন এভাবে-
وَ ٱلᡐ ذِ ينَ إِ ذَ ᕧ أ᠐ نفَ قُ وا᠔ ل᠐ مْ ᛒ ُسْ ر᠒ فُ وا᠔ وَ ل᠐ مْ ᘌ َقْ تُ رُ و ا᠔ وَ ᠐ᝏ انَ بَ يْ نَ ذ ٰ لِ كَ قَ وَ اما᠍ .
“এবং যারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করনো, কৃপণতা ও করে না, বরং তারা আছে এতদুভয়ের মাঝে মধ্যম
পন্থায়।” (সূরা আল-ফুরকান : ৬৭)
ব্যক্তির সম্পদে সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা
ইসলাম ব্যক্তির সম্পদে সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং এজন্যে বিভিন্ন পদ্ধতির কথাও উল্লেখ করেছে।
আল-কুরআনে নিকটাত্মীয়-স্বজনেরও হক প্রতিষ্ঠিত করেছে। সমাজে কোন ব্যক্তি যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত
সম্পদের অধিকারী হয় এবং তার আত্মীয়দের কেউ ন্যূনতম প্রয়োজন পূরণে অসমর্থ হয় তাহলে সামর্থ্য অনুযায়ী
ঐ আত্মীয়কে সহায়তা করা তার সামাজিক দায়িত্ব। এভাবে কোন জাতির বা দেশের এক একটি পরিবার যদি স্ব স্ব
আত্মীয়-স্বজনকে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে দেশ হতে দারিদ্র্য যেমন দূর হবে তেমনি
পরমুখাপেক্ষী পরিবারের সংখ্যাও হ্রাস পাবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আল-কুরআনে ঘোষণা করেছেন-
وَ فِ يۤ أ᠐ مْ وَ الِ هِ مْ حَ قٌّ لᡐ لسَّ ቯئِ لِ وَ ٱل᠔ مَ حْ رُ ومِ .
“তাদের ধন-সম্পদে প্রার্থী ও অভাবগ্রস্তদের অংশ নির্ধারিত রয়েছে।” (সূরা আল-জারিয়াহ : ১৯)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন-
وَ آتِ ذَ ا ٱل᠔ قُ رْ بَ ىٰ حَ قَّ هُ وَ ٱل᠔ مِ سْ كِ ينَ وَ ٱبْ نَ ٱلسَّ ᙫ ِᘭلِ .
“তুমি আত্মীয়-স্বজন ও গরিব এবং পথের কাঙ্গালগণকে তোমার নিকট হতে তাদের পাওনা দিয়ে দাও।” (সূরা
বনী ইসরাইল : ২৬)
উপরের আয়াত দু’টি হতে সুস্পষ্টভাবে এ তথ্য প্রতিভাত হয় যে, বৈধ পন্থায় উপার্জিত অর্থ-সম্পদে অন্যদেরও
অধিকার রয়েছে। বিশেষত আত্মীয়-স্বজন এবং সমাজে যারা মন্দভাগ্য তাদের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতার
হাত বাড়িয়ে দেয়া ঈমানী দায়িত্ব।
যাকাতের অর্থ প্রদান সাহেবে নিসাব ব্যক্তিদের জন্যে বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে কুরআনুল কারীমের নির্দেশ
অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের পর যাদের হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকবে তাদের জন্যে দরিদ্র আত্মীয়-স্বজন,
প্রতিবেশী ও সমাজের বঞ্চিত ভাগ্যাহত লোকদের ন্যূনতম প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে এ অর্থ ব্যয় করা
বাধ্যতামূলক।
পৃথিবীর অন্য কোনও অর্থনৈতিক সমাজের বিত্তহীন ও অভাবগ্রস্তলোকের প্রয়োজন পূরণ ও কল্যাণ সাধনের জন্যে
এ ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সৃষ্টি
বেকারত্ব এক সর্বগ্রাসী অভিশাপ। বেকারত্ব দারিদ্র ডেকে আনে এবং বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতার দিকে ঠেলে দেয়।
তাছাড়া অনেকে মুলধনের অভাবে কোন কর্মের সংস্থান করতে পারে না। ইসলামি সমাজে প্রত্যেক নাগরিকের
ন্যূনতম প্রয়োজন মেটানোর দায়িত্ব সরকারের। এজন্য ইসলাম নির্দেশিত যাকাত, সাদাকাহ, দান-খয়রাত
ইত্যাদির মাধ্যমে লোকদের অভাব বিমোচন করা হয়। যাকাত ও সাদাকাহর অর্থ সংগ্রহ করে ইসলামি সমাজে
বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সৃষ্টি করা হয় এবং লোকদের বেকার হাতকে কর্মীর হাতে ও
ভিক্ষুকের হাতকে দাতার হাতে পরিণত করে। ফলে আর্থ-সামাজিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসে এবং সমাজে শান্তিও
নিরাপত্তা বজায় থাকে।
হালাল উপায়ে উপার্জন ও হালাল পথেই ব্যয়
ইসলামি বিধানে ব্যবহারিক জীবনে কিছু কাজকে হালাল বা বৈধ এবং কিছু কাজকে হারাম বা অবৈধ বলে চিন্নিত
করা হয়েছে। উপার্জন, ভোগ, বণ্টন, উৎপাদন প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রেই ঐ বিধান প্রযোজ্য। ইসলামি বিধান
অনুযায়ী যে কেউই স্বাধীন ও অবাধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে। যে সমস্তবিষয় শরীআর দৃষ্টিতে
হালাল বা বৈধ সেসবের উৎপাদন, ভোগ, বণ্টন ও সেসব উপায়ে উপার্জনের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। ইসলামি
অর্থনীতির মৌলিক নীতিমালার অন্যতম মুখ্য নীতি হচ্ছে- ‘আমর বিল মারুফ’ বা সৎ কাজের আদেশ অর্থাৎ
সুনীতির প্রতিষ্ঠা এবং ‘নাহী আনিল মুনকার’ বা অসৎ কাজের নিষেধ অর্থাৎ দুর্নীতির উচ্ছেদ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন আল-কুরআনে ঘোষণা করেছেন-
ᘌ ٰأ᠐ يُّ هَ ا ٱلنَّ اسُ ᛿᠑ ل᠑ وا᠔ مِ مَّ ا فِ ى ٱلأَ رْ ض᠒ حَ ᢿ َᢻ ًطَ يِّ ᘘا᠍ وَ ᢻ َتَ ᙬَّ ᘘ ِعُ وا᠔ خُ طُ وَ اتِ ٱلشَّ ᘭ ْطَ انِ .
“হে মানব ! পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র তোমরা তা থেকে আহার কর। কখনো শয়তানের পথ অনুসরণ
করো না।” (সূরা আল-বাকারা : ১৬৮)
আল-কুরআনের অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে-
فَ ᝣ ل᠑ وا᠔ مِ مَّ ا رَ زَ قَ ᠑ᝣ مُ ٱللᡐ هُ حَ لاᢻ ًطَ يِّ ᘘا᠍ وَ ٱشْ ك᠑ رُ وا᠔ نِ عْ م ةَ ٱللᡐ هِ .
“আল্লাহ তোমাদেরকে যেসব খাদ্য দান করেছেন, তন্মধ্যে যা হালাল ও পবিত্র তা তোমরা আহার কর আর
আল্লাহর অনুগ্রহরাজির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।” (সূরা আন-নাহল : ১১৪)
ইসলামে হালাল বা বৈধ পদ্ধতিতে যে কেউ অর্থ উপার্জনের পূর্ণ স্বাধীনতা রাখে। এজন্যে সে নিজের পছন্দমত
যেকোন উপায় ও পন্থা অবলম্বন করতে পারে। এর সাহায্যে যেকোন পরিমাণ অর্থ ও রোজগার করতে পারে। কিন্তু
হারাম উপায়-পদ্ধতিতে একটি পয়সাও উপার্জন করার অধিকার ইসলাম স্বীকার করে না। ইসলামি অর্থনীতিতে সে
সুযোগ কারো জন্যেই উন্মুক্ত থাকে না। যেসব সামগ্রীর ভোগ নিষিদ্ধ সেসবের উৎপাদন, বিপণন ও বাণিজ্য
নিষিদ্ধ। সুদ যেমন নিষিদ্ধ, মদ-জুয়াও তেমনি নিষিদ্ধ। অনুরূপভাবে অনৈসলামিক পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যও
নিষিদ্ধ। দুর্ভাগ্যের বিষয়, বর্তমান যুগে ইসলাম বহির্ভূত সকল মতাদর্শ বা ইজমভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়
উপার্জন, ভোগ, বণ্টন, উৎপাদন, বিনিয়োগ প্রভৃতি কোন ক্ষেত্রেই বৈধতা বিচার বা হালাল হারামের পার্থক্য
নেই। সেখানে সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে অর্থাৎ লাইসেন্স করে নিলে বা উপযুক্ত ট্যাক্স দিলে সব ধরনের
উপার্জনের পন্থাই বৈধ। সরকারকে ধার্যকৃত নির্ধারিত কর ফি শুল্ক ইত্যাদি প্রদান সাপেক্ষে যে কোন উৎস হতে বা
যে কোন পরিমাণ আয়ই বৈধ করার সুযোগ রয়েছে।
পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে উৎপাদন, ভোগ, বণ্টন, উপার্জন, বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে কোন শেষ সীমা বা নীতি
নৈতিকতার প্রশ্ন নেই। ভোগবাদী এ ব্যবস্থায় যেসব পন্থায় উৎপাদন বা যেসব অর্থনৈতিক কার্যক্রম সমাজের জন্যে
ক্ষতিকর বা শ্রেণী বৈষম্য সৃষ্টিকারী এবং যেসব পন্থায় ভোগ সমাজের জন্যে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সেসবও সমাজ এবং
অর্থনীতিতে অপ্রতিহতভাবে চলতে পারে। সমাজতন্ত্রেরও অবস্থা প্রায় একই রকম ছিল। তফাৎ এই যে, সেখানে
উপার্জন ও ভোগের স্বাধীনতা বিনিয়োগ ও বণ্টনের দায়িত্ব রাষ্ট্র দ্বারা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ছিল। এখন অবশ্য সেই
অবস্থা আর নেই। পুঁজিবাদের বিলাসী জীবন ও ইন্দ্রিয় আসক্তির মোহের জোয়ারে সমাজতন্ত্র তলিয়ে গেছে।
ইসলাম এ দু’ধরনের নীতির কোনটিই সমর্থন করে না। যা বৈধ, যে পরিমাণ বৈধ তা সকলের জন্যেই সমভাবে
বৈধ। অনুরূপভাবে যা হারাম বা নিষিদ্ধ তা সকলের জন্যেই সমভাবে নিষিদ্ধ।
অবৈধ বা হারাম উপায়ে উপার্জন, বণ্টন, বিনিয়োগ প্রভৃতি অর্থনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ প্রধানত
তিনটি। প্রথমতঃ অবৈধ উপায়ে আয়ের উদ্দেশ্যে জনগণের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুলুম চালানো হয়।
দ্বিতীয়তঃ চারিত্রিক নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সমাজবিধ্বংসী কার্যক্রমসমূহ এসব অবৈধ বা হারাম অর্থনৈতিক
কার্যক্রমের ফসল এবং তৃতীয়তঃ অবৈধ উপায়ে অর্জিত ধন-সম্পদ সাধারণত অবৈধ কাজেই ব্যয় হয়। অবৈধ
কাজে ব্যায়ের অর্থই হচ্ছে সামাজিক অনাচার ও অত্যাচারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া।
যাকাত ব্যবস্থা প্রবর্তন
মানুষের অর্জিত সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ যাকাত হিসেবে প্রদান করা ইসলামের বিধান, যা ইসলামের বুনিয়াদের
ক থেমোলামাল রদে“তা خُ ـذْ مِ ـنْ أ᠐ مْ ـوَ الِ هِ مْ صَ ـدَ قَ ةً تُ طَ هِّ ـرُ هُ مْ وَ تُ ـزَ ᡒᜧ يهِ مْ ।দবুনিয়া তম্যঅন
যাকাত গ্রহণ করুন যাতে এর মাধ্যমে আপনি সেগুলোকে পবিত্র এবং বরকতময় করতে পারেন।” (সূরা আত-তাওবাহ:
১০৩)।
এ সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেছেন-
ان الله قد فرض عليهم صدقة تؤخذ من اغنᘭاء هم فترد على فقراء هم.
“নিশ্চয় আল্লাহ তাদের ওপর সদকাহ্ ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট থেকে আদায় করে দরিদ্রদের
মধ্যে বণ্টন করা হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
যাকাতের মাধ্যমে সম্পদ পরিশুদ্ধ ও বর্ধিত হয়, যা অনাদায়ে কিয়ামতে কঠিন শাস্তির সংবাদ প্রদান করা হয়েছে।
সূতরাং ইসলামি অর্থ ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা প্রবর্তন।
মৌলিক মানবিক প্রয়োজন নিশ্চিত করণ
কোন সমাজে আপামর জনসাধারণের ন্যূনতম মানবিক প্রয়োজন পূরণ না হলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা
অবশ্যম্ভাবী। চুরি-ডাকাতি, ব্যভিচার, মাদকাসক্তি হতে শুরু করে এইডসের মতো ঘাতক ব্যাধি সমাজে ছড়িয়ে
পড়বে মহামারীর মতো। এসব সর্বনাশ হতে পরিত্রাণ পেতে হলে চাই মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের যথার্থ
ব্যবস্থা।
ইসলাম তার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে এ প্রয়োজন পূরণের নিশ্চয়তা বিধান করেছে। যাকাত ব্যবস্থার
বাস্তবায়ন, বায়তুল মালের প্রতিষ্ঠা, ব্যক্তির সম্পদে সমাজের বঞ্চিতদের অধিকারের স্বীকৃতি, সামাজিক কল্যাণ ও
নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং রাষ্ট্রের ন্যায়সঙ্গত হস্তক্ষেপ একযোগে এ গ্যারান্টিই দেয়।
সমাজের সকল মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের নিশ্চয়তা বিধান ইসলামি অর্থনীতির অন্যতম মূলনীতি।
মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পাঁচটি- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা। এ প্রয়োজন পূরণ করার জন্যে ইসলাম
ব্যক্তি ও রাষ্ট্রকে যে তাগিদ দিয়েছে তার নযীর আর কোন অর্থনীতিতে নেই। মূলত এ প্রয়োজন পূরণের
অপরিহার্যতা ও গুরুত্ববোধ থেকেই ইসলামে বায়তুল মাল হতে প্রত্যেক নাগরিকের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা
মেটাবার জন্যে ব্যয় করার বিধান রয়েছে।
ইবনে হাযম তাঁর সুবিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল-মুহাল্লাতে বলেন- “প্রতি এলাকার ধনীরা তাদের নিজ নিজ এলাকায়
বসবাসরত অসহায় ও নিঃম্বদের মৌলিক চাহিদা পূরণে বাধ্য। যদি বায়তুল মালে মজুদ সম্পদ এজন্যে পর্যাপ্ত না
হয় তাহলে দুঃস্থ ও দরিদ্রদের প্রয়োজন পূরণের জন্যে রাষ্ট্রপ্রধান বিত্তশালীদের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে
তা আদায়ে বাধ্য করতে পারেন।”
অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও স্বাস্থ্যের মতো অপরিহার্য মৌলিক মানবিক প্রয়োজন পূরণ না হলে একদিকে মানুষ যেমন
অসুস্থ, অশক্ত ও রুগ্ন হয়ে পড়বে তেমনি শিক্ষার অভাবে সে খাঁটি মানুষ হতে পারবে না। ইসলামে জ্ঞান অর্জন
ফরয করা হয়েছে। নবী (সা) বদরের যুদ্ধে শিক্ষিত যুদ্ধবন্দীদের প্রত্যেকের মুক্তিপণ নির্ধারণ করেছিলেন মদীনার
দশ জন বালকবালিকাকে শিক্ষাদান করানোর বিনিময়ে। দীর্ঘ চৌদ্দশত বছর পরে আজ বিশ্ববাসীর কাছে
গণশিক্ষার প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে। অথচ এ প্রয়োজন পূরণের জন্যে ইসলামে কত আগেই না তাগিদ দেয়া
হয়েছে। অজ্ঞতার জন্যে সেসব শিক্ষা হতে আমরা বঞ্চিত রয়েছি।
উত্তরাধিকার আইন
ইসলামি অর্থ ব্যবস্থায় মৃত ব্যক্তির ঋণ, অসিয়ত ও দাফন খরচের পর অবশিষ্ট সম্পদ বিধান মত তার
উত্তরাধিকারদের মধ্যে বন্টনের সুব্যবস্থা রয়েছে। যার ফলে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদ ব্যয়-বণ্টনে কোন
অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয়।
যুগপৎ দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ অর্জন
ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ইহকালীন কর্মকান্ডের জন্যে পরকালীন মুক্তি বা শাস্তির এমন
দ্ব্যর্থহীন ও দৃঢ় ঘোষণা দেয়া হয়নি। বৌদ্ধ ধর্মে দুনিয়াকে জীর্ণ বস্ত্রের মতো ত্যাগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে,
পক্ষান্তরে ইসলামে কর্মবীর হতে বলা হয়েছে। খৃষ্ট ধর্মে সকল পাপের ভারবহনকারী হবেন যীশু। পরকালে তিনিই
হবেন পরম পরিত্রাত্মা। সূতরাং তাঁর ওপর বিশ্বাস ও দায়িত্ব অর্পণ করে দুনিয়ার সকল বৈধ-অবৈধ ভোগ বিলাসে
মত্ত হওয়ায় যেমন বাধা নেই, তেমনি বাধ্য-বাধকতা নেই উপায়-উপার্জনের এবং সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে হালালহারামের বিধি-বিধান মেনে চলার। হিন্দু ধর্মে কোন সুনির্দিষ্ট ও সুলিখিত অর্থনৈতিক আচরণ বিধিই নেই। বরং
খৃষ্ট, হিন্দু ও ইহুদী- পৃথিবীর এ তিনটি ধর্ম একযোগে পুঁজিবাদকেই বরণ করে নিয়েছে।
এরই বিপরীতে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনাদর্শ ইসলামে অর্থনৈতিক সুকৃতি বা হালাল কাজের জন্যে
ইহকালীন কল্যাণের সুসংবাদের পাশাপাশি পারলৌকিক জীবনেও আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া
হয়েছে। অপরদিকে যারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করবে, গরীব-দুঃখীদের কোন উপকারে সচেষ্ট হবে না বরং
হারাম কাজে অংশ নেবে যারা তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তির দুঃসংবাদ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-
وَ ٱلᡐ ـذِ ينَ ᘌ᜻ َ᠔ نِ ـزُ ونَ ٱلـذَّ هَ بَ وَ ٱل᠔ فِ ضَّ ـةَ وَ ᢻ َيُ نفِ قُ ونَ هَ ـا فِ ـى سَ ـᙫ ِᘭلِ ٱللᡐ ـهِ فَ ᛞ َشِّ ـرْ هُ مْ
ᗷ ِعَ ذَ ابٍ أ᠐ لِ ᘭمٍ
“যন্ত্রনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দিন সেই লোকদের যারা স্বর্ণ-রৌপ্য পুঁজি করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ
করে না।” (সূরা আত্-তাওবা : ৩৪)
তাই ইসলামি জীবন ব্যবস্থা তথা ইসলামি অর্থনীতিতে আখিরাতের কল্যাণ অর্জনের প্রতি এত গুরুত্ব দেয়া
হয়েছে। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের শেষে মুনাজাতেরও বান্দা আল্লাহর কাছে যুগপৎ দুনিয়া ও
আখিরাতের কল্যাণই প্রার্থনা করে। আখিরাত যে মুসলমানের জীবনে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা অনুধাবনের
জন্যে রাসূলে করীমের (সা) একটি মাত্র উক্তি যথেষ্ট। তিনি বলেন- এ দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্রস্বরূপ। এর
অন্তর্নিহিত অর্থই হচ্ছে এখানে যে যেমন বীজ বুনবে অর্থাৎ কাজ করবে আখিরাতে সে তেমন শস্য বা প্রতিফল
পাবে। প্রকৃতপক্ষে তাযকিয়া অর্জন ও তাকওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি হলে এবং আখিরাতকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে
নিলে ইহকালের জীবনধারা খোদায়ী বিধান অনুসারে পরিচালিত হতে বাধ্য এবং এ পথেই যুগপৎ দুনিয়া ও
আখিরাতের কল্যাণ অর্জন সম্ভব।
বায়তুল মাল গঠন
ইসলামি অর্থনীতিতে বায়তুল মাল বা সরকারি কোষাগার গঠনের নির্দেশ রয়েছে। রাষ্ট্রীয় আয়ের একটি অংশ
বায়তুল মালে জমা থাকবে। দেশের যে কোন নিরুপায় ব্যক্তি বা নিরাশ্রয়ের রক্ষণাবেক্ষণ, ভরণ-পোষণ রাষ্ট্রের
দায়িত্ব ও কর্তব্য। এমনকি, মৃত ব্যক্তি যদি পরিবার নিয়ে বাঁচার তাগিদে ঋণ করে থাকে এবং পরিশোধ করা তার
পক্ষে সম্ভব না হয়, তাহলে সে ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপর ন্যস্তহবে। এমনিভাবে বিভিন্নমুখী প্রয়োজনের
সময় আর্থিক সুবিধা বিধানের জন্য ইসলামি রাষ্ট্র বায়তুল মাল গঠন করে থাকে।
ধন-সম্পদের ইনসাফ ভিত্তিক বণ্টন
আয় ও সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টনের ওপরেই নির্ভর করে একটি জাতির বা দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতি। দেশের
জনসাধারণের সর্মসংস্থান, উৎপাদন বৃদ্ধি, বিনিয়োগের সুযোগ এবং সেই সাথে কারো কাছে যেন সম্পদ পুঞ্জীভূত
হতে না পারে তা নির্ভর করে সমাজে বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর। বস্তুত সমাজে কি ধরনের অর্থনীতি বা
অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু রয়েছে তার ওপরই নির্ভর করে- আয় ও সম্পদ বণ্টন সুষ্ঠু হবে, না বৈষম্যপূর্ণ হবে।
ইসলামি অর্থনীতিতে সমাজে আয় ও ধনবণ্টন কিভাবে বণ্টন হবে তার মূলনীতিগুলো কুরআন ও সুন্নাহতে
সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামি আকীদা মোতাবিক সমস্তসম্পদের মালিকানা আল্লাহরই। তিনিই এর
স্রষ্টা। মানুষকে সীমিত সময়ের জন্যে তিনি এর শর্তাধীন মালিক করে দিয়েছেন। এখানে স্বেচ্ছাচারিতামূলক আয়
ও ভোগের যেমন সুযোগ নেই তেমনি ইচ্ছামত তা ব্যয়েরও সুযোগ নেই। এ মূল দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষিতেই কুরআন ও
হাদীসে সম্পদ, উপার্জন, ব্যবহার ও বণ্টনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ এসেছে। সেগুলোর মধ্যে
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ কয়েকটির এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে।
ᘌ َا أ᠐ يُّ هَ ا ٱلᡐ ذِ ينَ آمَ نُ وا᠔ ᢻ َتَ أ᠔ ᝏ ل᠑ وۤ ا᠔ أ᠐ مْ وَ ال᠐ ᠑ᝣ مْ بَ ᚏ ْنَ ᠑ᝣ مْ ᗷ ِٱل᠔ ᘘ َاطِ لِ إِ ᢻَّ أ᠐ ن تَ ᜻᠑ ونَ تِ جَ ارَ ةً عَ ن تَ رَ ا
ض᠏ مِّ نْ ᠑ᝣ مْ .
“হে মুমিনগণ! তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য যদি পরস্পরের
সম্মতিক্রমে হয় তবে আপত্তি নেই।” (সূরা আন-নিসা : ২৯)
ك᠐ ىْ ᢻ َᘌ᜻ َ᠑ ونَ دُ ول᠐ ةً بَ يْ نَ ٱلأَ غْ نِ ᘭ َቯءِ مِ نᜓ᠑ مْ .
“যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান কেবল তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে” (সূরা আল-হাশর : ৭)
وَ ᢻ َتُ ᘘ َذِّ رْ تَ ᘘ ْذِ يرا᠍ - إِ نَّ ٱل᠔ مُ ᘘ َذِّ ر᠒ ᗫنَ ᛿᠐ انُ وۤ ا᠔ إِ خْ وَ انَ ٱلشَّ ᘭ َاطِ ين᠒
“অপব্যয় কর না। যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই।” (সূরা বনী ইসরাইল : ২৬-২৭)
وَ فِ يۤ أ᠐ مْ وَ الِ هِ مْ حَ قٌّ لᡐ لسَّ ቯئِ لِ وَ ٱل᠔ مَ حْ رُ ومِ .
“এবং তাদের ধন-সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্তও বঞ্ছিতদের হক।” (সূরা আয-যারিয়াহ : ১৯)
وَ ٱلᡐ ذِ ينَ ᘌ᜻ َ᠔ نِزُ ونَ ٱلذَّ هَ بَ وَ ٱل᠔ فِ ضَّ ةَ وَ ᢻ َيُ نفِ قُ ونَ هَ ا فِ ى سَ ᙫ ِᘭلِ ٱللᡐ هِ فَ ᛞ َشِّ رْ هُ مْ ᗷ ِع ذَ ابٍ أ᠐ لِ ᘭمٍ .
“যারা স্বর্ণ, রৌপ্য, সঞ্চয় করে রাখে এবং আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে না তাদের কঠিন আযাবের সুসংবাদ দাও।” (সূরা আত-তাওবা : ৩৪)
রাসূল (সা) বলেছেন ঃ “সর্বোত্তম কাজ হলো বৈধ উপায়ে উপার্জন করা।”
সুতরাং, ধন-সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে ইসলামি নীতিমালার আলোকেই উপযুক্ত কর্মপদ্ধতি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে
হবে। তবেই বৈষম্য ও বেইনসাফী হতে জনগণ রক্ষা পাবে।
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি, ইসলামি অর্থব্যবস্থাই মানুষের সার্বিক কল্যাণ সাধনে সক্ষম
একমাত্র অর্থ ব্যবস্থা। এটা একদিকে যেমন মানুষের মৌলিক অপরিহার্য প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব নেয়;
অনুরূপভাবে নিয়মতান্ত্রিক স্বাধীনতারও পূর্ণ নিরাপত্তা দান করে। এটা যেমন শোষণ লুণ্ঠনের সকল পথ বন্ধ করে,
অপরদিকে অন্যায়, বিলাসিতা ও লালসা চরিতার্থের প্রাসাদকেও চূর্ণ করে দেয়।
১. আমর বিল মারূফ- শব্দের অর্থ হচেছক. সৎ কাজের আদেশ; খ. সৎ কাজ করা;
গ. ইবাদত করা; ঘ. দুর্নীতি উচ্ছেদ করা।
২. তাযকিয়া শব্দের অর্থ হচেছক. আল্লাহভীতি; খ. আল্লাহর উপর ভরসা করা;
গ. আত্মশুদ্ধি; ঘ. ঈমান গ্রহণ করা।
৩. ইহসান বলতে বুঝায়ক. ন্যায়বিচার করা; খ. কল্যাণের প্রতিষ্ঠা;
গ. মানবতার সেবা করা; ঘ. দরিদ্রের উপর অন্যায় করা।
৪. আমরা ভারসাম্যপূর্ণ জীবন-যাপনের প্রয়াস পাইক. ইসলামে; খ. গ্রীক দর্শনে;
গ. সন্ন্যাসবাদে; ঘ. নির্বানবাদে।
৫. হালাল উপায়ে উপার্জন ও বণ্টননীতি হচেছক. সমাজতন্ত্রের বিধান; খ. ধনতন্ত্রের বিধান;
গ. ইসলামের বিধান; ঘ. ধর্মনিরপেক্ষ বিধান।
সংক্ষিপ্ত রচনামূল উত্তর-প্রশ্ন
১. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ-এর গুরুত্বইসলামি দৃষ্টিকোণের আলোকে বিচার করুন।
২. সকল কর্মকান্ডেই শরীআর অনুসরণ করতে হবে- প্রমাণ করুন।
৩. অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের গুরুত্বআলোচনা করুন।
৪. ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ জীবন যাপনে প্রয়াসী-ব্যাখ্যা করুন।
৫. ইসলামে হালাল উপার্জন ও হালাল উপায়ে বণ্টনের গুরুত্ববর্ণনা করুন।
৬. ইসলামি অর্থব্যবস্থা মানবিক প্রয়োজন নিশ্চিত করে- আলোচনা করুন।
৭. ইসলামি অর্থব্যবস্থায় বায়তুলমাল-এর প্রয়োজনীয়তা স¤পর্কে লিখুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামি অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্টগুলো আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]