রাসূল (সা.)-এর আনুগত্যের গুরুত্ব বর্ণনা করতে পারবেন।
ق ُلْ إ ِن كُنتُم ْ تُحِ بُّونَ ٱلل َّھَ فَٱتَّب ِعُونِى یُحْب ِبْكُمُ ٱلل َّھُ وَ یَغْفِرْ ل َكُمْ ذ ُنُوبَكُمْ وَ ٱلل َّھُ غَفُورٌ
رَّ حِ یمٌ
(أل عمران-٣١(
٠.١
مَّنْ یُطِع ِ ٱلرَّ سُولَ فَقَدْ أ َطَاعَ ٱلل َّھَ وَ مَن تَوَ ل َّىٰ فَمَآ أ َرْ سَلْنَاكَ عَل َیْھِمْ حَفِیظا ً ( النساء-
(٨٠
٠.٢
وَ أ َطِیعُوا ْ ٱلل َّھَ وَ أ َطِیعُوا ْ ٱلرَّ سُولَ وَ ٱحْ ذَرُ وا ْ فَإ ِن تَوَ ل َّیْتُمْ فَѧٱعْل َمُوۤ ا ْ أ َنَّمَ ѧا عَل َѧىٰ رَ سُѧولِنَا
ٱلْبَلاَغ ُ ٱلْمُب ِینُ (المائدة-٩٢(
٠.٣
অনুবাদ
১. বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং
তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্তক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আলে ইমরান : ৩১)
২. কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিলে তোমাকে তাদের
উপর তত্ত¡াবধায়ক প্রেরণ করিনি। (সূরা আন নিসা : ৮০)
৩. তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর ও রাসূলের আনুগত্য কর এবং সতর্ক হও; যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও,
তবে জেনে রাখ যে, স্পষ্ট প্রচারই আমার রাসূলের কর্তব্য। (সূরা আল-মায়িদা : ৯২)
শব্দার্থ ও টিকা
تحبونে তামরা ভাল বাসবে।
فاتبعونىে তামরা আমার অনুসরণ করবে।
یحببكمে তামারদেরকে ভালবাসবেন।
یغفرلكمে তামাদের ক্ষমা করবেন।
اطیعواে তামরা অনুগত হও।
تولوا তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
اطاع فقدে স মান্য করল।
حفیظ রক্ষণাবেক্ষণকারী, রক্ষক।
احذروا সতর্ক হও, আÍরক্ষা কর।
আল্লাহর বাণী اللھ تحبون এর ব্যাখ্যা
ھѧالل ونѧتحب অর্থ হচ্ছে, তোমরা আল্লাহকে মহব্বত কর বা ভালবাস। এ মহব্বত বা ভালবাসা বলা হয় সুন্দর ও
মনঃপুত বস্তুর প্রতি মনের আকর্ষণকে। রাসূল (সা) কে ভালবাসার অর্থ রাসূলের আনুগত্য করা। ভালবাসা বিভিন্ন
ধরনের হয়ে থাকে। এখানে ভালবাসার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হল১. স্বভাবজাত ভালবাসা
এমন ভালবাসা যা মানুষের স্বভাব প্রসূত, ক্ষমতা প্রয়োগ করে এ ভালবাসা সৃষ্টি করা যায় না। যেমন সন্তান-সন্ততি ও
পিতামাতার প্রতি ভালবাসা।
২. জ্ঞান ও যুক্তিসিদ্ধ ভালবাসা
এমন ভালবাসা যাকে ভালবাসতে জ্ঞান ও যুক্তি পথ নির্দেশ করে। যেমন- তিক্ত ঔষধ মানুষের মন স্বাভাবিকভাবে
সেবন করতে চায় না, কিন্তু সুস্থ হওয়ার আশায় জ্ঞান তা সেবন করতে নির্দেশ করে।
৩. ঈমানগত ভালবাসা
এমন ভালবাসা যে ভালবাসায় সকল প্রকার ভালবাসার উপর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা)-এর ভালবাসাকে অগ্রাধিকার
দেয়া হয়। আল্লাহ ও রাসূলকে সকল কিছুর উপর অধিক ভালবাসতে হয়, নতুবা ঈমান ক্ষতিগ্রস্তহয়।
রাসূল (সা)-এর আনুগত্য
নবী-রাসূলগণ আল্লাহর প্রেরিত প্রতিনিধি। আল্লাহ তাআলার সার্বভৌমত্ব মানুষের মাঝে কার্যকর হয় নবী রাসূলের
মাধ্যমেই। এ জন্য তাঁর নির্দেশাবলীর অনুগত্য করা তাঁর প্রদর্শিত পন্থার অনুসরণ করা এবং ফয়সালাসমূহ বিনা
প্রতিবাদে মেনে নেয়া প্রত্যেক ব্যক্তি, দল ও সমাজের জন্য অপরিহার্য। রাসূলের আনুগত্যের মাধ্যমে যা লাভ করা
যায়, নিæে তা উল্লেখ করা হলআল্লাহর ভালবাসা লাভ
রাসূলের আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর ভালবাসা লাভ করা যায়। পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভ হয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ
বলেন, “বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর। আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং
তোমাদের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেবেন।” (সূরা আলে ইমরান : ৩১)
আল্লাহর অনুগত্য করা
রাসূল (সা)-এর আনুগত্য অর্থ আল্লাহর অনুগত্য করা, আর রাসূল (সা)-কে অমান্য করার অর্থ হচ্ছে আল্লাহকে
অমান্য করা। হাদীসে এসেছে, “যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে আমাকে
অমান্য করল, সে আল্লাহকে অমান্য করল।” (বুখারী)
রাসূল (সা)-এর সুন্নাতের প্রতি ভালবাসা
রাসূল (সা)-এর আনুগত্যের অর্থ হচ্ছে- তাঁর প্রতিষ্ঠিত সুন্নাহকে ভালবাসা আর এরই মাধ্যমে জান্নাত লাভের আশা
করা। নবী করীম (সা) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে ভালবাসে সে আমাকে ভালবাসে। আর যে আমাকে
ভালবাসে সে আমার সাথে জান্নাতে অবস্থান করবে।” (আল-হাদীস)
ইসলামী জীবন ব্যবস্থার অনুসরণ
আল্লাহর রাসূলের আনুগত্যের বাস্তব ও কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে ইসলামের সমগ্র বিধি-বিধান ব্যক্তিগত, পারিবারিক,
ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবনে মনে-প্রাণে গ্রহণ করা এবং বাস্তব জীবনে তার প্রতিফলন ঘটানো।
নবী করীম (সা) বলেছেন, “সহজ অবস্থায় ও কঠিন অবস্থায় এবং সন্তুষ্টিতে ও অসন্তুষ্টিতে তথা তোমার অধিকার ক্ষুণœ
হওয়ার ক্ষেত্রেও রাসূলের কথা শ্রবণ করা এবং আনুগত্য করা তোমার কর্তব্য।” (মুসলিম)
অগ্রাধিকার প্রদান
যে কোন বিষয়ে আনুগত্যের ক্ষেত্রে নবী করীম (সা)-এর হুকুমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যেমন নবী করীম (সা)
বলেছেন, “তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্তঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমাদের বাবা, মা, সন্তান-সন্তুতি ও
সকলের চেয়ে আমাকে অধিক ভালো না বাসবে।”
আনুগত্যের পরিধি
আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা)-এর আনুগত্য নিঃশর্তভাবে হতে হবে। অর্থাৎ কোন বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ
কি তা জানার পর বিনা বাক্য ব্যয়ে তা পালন করাই মানুষের কর্তব্য ও রাসুলের আনুগত্যের পরিধি ও মাপকাঠি।
যেমন- নবী করীম (সা) বলেছেন, “সহজ অবস্থায় ও কঠিন অবস্থায় এবং সন্তুষ্টিতেও অসন্তুষ্টিতে তথা তোমার অধিকার
ক্ষুণœহওয়ার ক্ষেত্রেও শ্রবণ করা ও আনুগত্য করা তোমার কর্তব্য।” (মুসলিম)
আনুগত্য না করা বিদ্রোহের নামান্তর
সর্বাবস্থায় রাসূল (সা)-এর আনুগত্য করতে হবে। আনুগত্য হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়া যাবে না। মুখ ফিরিয়ে নেয়া
আল্লহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নামান্তর। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, “তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর ও রাসূলের
আনুগত্য কর এবং সতর্ক হও। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে জেনে রেখ যে, স্পষ্ট প্রচারই আমার রাসূলের
কর্তব্য।” (সূরা আল-মায়িদা : ৯২)
নবী করীম (স.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি
আমার নাফরমানি করল সে আসলে আল্লাহর নাফরমানি করল।” (সহীহ বুখারী)
ঈমানের পরিপূর্ণতা
রাসূল (সা.)-এর আনুগত্য ও অনুসরণ ঈমানের অংশ। রাসূল (সা)-এর আনুগত্য অর্থ হচ্ছে, ঈমানের পূর্ণতা লাভ।
আনুগত্যের ক্ষেত্রে কিছু মানবো আর কিছু মানবো না তাহলে এটা পরিপূর্ণ আনুগত্য হবে না বরং তার মধ্যে ঈমানের
দুর্বলতা প্রকাশ পেল। সে নিজেকে পূর্ণ ঈমানদার হিসেবে দাবি করতে পারবে না।
সারসংক্ষেপ
নবী-রাসূলগণ আল্লাহর প্রেরিত প্রতিনিধি। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মানুষের মাঝে কার্যকর হয় নবী-রাসূলের মাধ্যমেই। এ
জন্য রাসূলুল্লাহ (স) -এর নির্দেশাবলীর আনুগত্য করা, তাঁর প্রদর্শিত পন্থার অনুসরণ করা এবং তাঁর দেয়া
ফয়সালাসমূহ বিনা প্রতিবাদে মেনে নেয়ার নাম রাসূল (সা.)-এর আনুগত্য। আল্লাহর আনুগত্য, আল্লাহর ভালবাসা,
ইসলামী জীবনব্যবস্থার অনুসরণ, অনুকরণ, রাসূল (সা)-এর সুন্নাতের প্রতি যতœ নেয়া, সর্বক্ষেত্রে রাসূল (সা)-কে
অগ্রাধিকার প্রদান, ঈমানের পরিপূর্ণতা লাভ ইত্যাদি বিষয় রাসূল (সা)-এর আনুগত্যের মাধ্যমেই স¤পন্ন হয়ে থাকে।
নৈর্ব্যক্তিক উত্তর প্রশ্ন
১. تحبون শব্দের অর্থ-
ক. তোমরা ভালবাসবে; খ. তুমি ভালবাসবে;
গ. আমরা ভালবাসব; ঘ. সে ভালবাসবে।
২. রাসূল (স)-এর ভালবাসাক. ঈমানের অঙ্গ; খ. সুন্নাত;
গ. বিদআত; ঘ. উপরের কোন উত্তরই সঠিক নয়।
২. রাসূল (স)-কে ভালবাসতে হবেক. অনুকুল পরিবেশে; খ. সর্বাবস্থায়;
গ. সুন্নাত পালনের মাধ্যমে ঘ. উপরের সব ক’টি উত্তরই সঠিক।
৩. রাসুল (স)-এর আনুগত্য না করাক. বিদআত; খ. মাকরূহ;
গ. বিদ্রোহের নামান্তর; ঘ. মুবাহ।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. সংশ্লিষ্ট আয়াতগুলোর অনুবাদ করুন।
২. আল্লাহকে ভালবাসার অর্থ কী? বুঝিয়ে লিখুন।
৩. ব্যাখ্যা করুন- “রাসূল (সা)-এর আনুগত্য করাই আল্লাহর আনুগত্য করা।”
৪. রাসূল (সা)-এর আনুগত্যের পরিধি বর্ণনা করুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. কুরআন-হাদীসের আলোকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর প্রতি আনুগত্যের বিষয় বিস্তারিতভাবে লিখুন।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত