পূঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় ধন-স¤পদ বণ্টননীতি ইসলামি অর্থব্যবস্থায় স¤পদ বণ্টননীতি মিরাসী আইনের মূলনীতি কী? খারাজ ও জিযিয়া স¤পর্কে টীকা সাদাকা ও করযে হাসানা কী? ওয়াকফ কী? ওয়াকফের গুরুত্ব লিখুন।

ধন বণ্টন বিষয়ে অর্থনৈতিক মতবাদগুলো একরকম নয়। পুঁজিবাদ মানুষের ব্যক্তি মালিকানার অবাধ স্বাধীনতার
মাধ্যমে বৈধ-অবৈধ সব ধরনের উপার্জনকে সম্পদ অর্জনের উপায় ঘোষণা করে সম্পদ বন্টনে এক সেচ্ছাচারিতার
আশ্রয় নিয়েছে। এ মতবাদের সম্পূর্ণ বিপরীতে সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা সামষ্টিক বা রাষ্ট্রীয় মালিকানার উপর
নির্ভরশীল হওয়ায় এ মতবাদ সম্পদ বন্টনের পরিসরকে সীমাবদ্ধ করেছে। পূঁজিবাদের শোষণ, স্বৈরাচারিতা ও
সমাজতন্ত্রের সেচ্ছাচারিতার বিপরীতে ইসলামি অর্থব্যবস্থা সম্পদ বন্টনে এক নব দিগন্তের সূচনা করেছে। এ
বণ্টনব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বৈজ্ঞানিক ও সুষম যা মানবতার জন্য কল্যাণকর ও অর্থনৈতিক উন্নতির পাথেয়।
পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় ধন বণ্টননীতি
পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ব্যক্তি মালিকানা নির্ভর। এ ব্যবস্থায় মানুষ শর্তহীনভাবে সম্পদ অর্জন করতে
পারে। ব্যক্তি মালিকানায় সমাজ, রাষ্ট্র বা অন্য কারো হস্তক্ষেপের কোন অধিকার নেই। এ ব্যবস্থায় সম্পদ শুধু মাত্র
তাদের মধ্যে বন্টিত হবে যারা সরাসরি উৎপাদন কাজে অংশ গ্রহণ করে বা উৎপাদন কাজে যাদের অংশ রয়েছে।
অর্থনীতির পরিভাষায় তাকে উৎপাদক বলে। এ মতবাদের দৃষ্টিতে উৎপাদনের অংশ বা উপকরণ চারটি। সেসব
উপকরণ ও ধন বন্টনে তার অংশ নি¤œরূপ ঃ
১. মূলধন ঃ মূলধন বলা হয় ঐ উৎপাদনের উপকরণ বা উৎপাদনের উৎপাদিত উপকরণকে যা অধিক মাত্রায়
উৎপাদনের জন্য বারবার উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা যায়। মূলধন তার পারিতোষিক হিসেবে পাবে সূদ।
২. শ্রম ঃ শ্রম বলা হয় ঐ প্রচেষ্টাকে যা মুনাফা সৃষ্টির জন্য প্রয়োগ করা হয়। মানুষের দৈহিক শ্রমই
প্রনিধানযোগ্য। শ্রম প্রয়োগকারী শ্রমিক তার শ্রমের বিনিময়ে মজুরী পাবে।
৩. ভূমি ঃ ভূমিকে প্রাকৃতিক উপদান বলা হয়। ভূমি বলতে ভূপৃষ্ট বুঝালেও অর্থনীতিতে এর বিশেষ অর্থ রয়েছে,
যা সৃষ্টিতে মানুষ কোনরূপ চেষ্টা সাধনা ব্যয় করেনি এমন সব সম্পদকে ভূমি বলা হয়। সম্পদ বন্টনের
বেলায় ভূমি ভাড়া পাবে।
৪. সংগঠন ঃ সংগঠন বা উদ্যোক্তা বলতে উৎপাদনের ঐ উপকরণকে বুঝায় যা উৎপাদনের অন্যান্য
উপকরণসমূহ (মূলধন, শ্রম, ভূমি) একত্রিত করে, উৎপাদন কার্যের যাবতীয় ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা করে
এবং এতদসংক্রান্তলাভ-ক্ষতির দায়-দায়িত্ব বহন করে। পূঁজিবাদের দৃষ্টিতে সম্পদ বন্টনে সংগঠনকে মুনাফা
প্রদান করা হবে।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় ধন বণ্টন নীতি
ধনতন্ত্রের বিপরীতে সমাজতন্ত্র সম্পূর্ণরূপে সামষ্টিক বা রাষ্ট্রীয় মালিকানা নির্ভর। এ ব্যবস্থায় সমস্তসম্পত্তির মালিক
রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের সম্পত্তিতে সাধারণ মানুষের কোন অধিকার নেই। রাষ্ট্রের সম্পদ শুধু তাদের মধ্যেই বন্টিত হবে,
যারা রাষ্ট্রের কল্যাণার্থে উৎপাদনে শ্রম ব্যয় করবে। চাই এ শ্রম দৈহিক বা বুদ্ধিবৃত্তিক হোক। আর এ শ্রম
প্রয়োগের বিনিময় হিসেবে মজুরী প্রদান করা হবে।
ইসলামি অর্থব্যবস্থায় ধন বণ্টন নীতি
ইসলামি অর্থনীতিতে সম্পদের প্রকৃত মালিকানা আল্লাহর। বান্দা বা মানুষ সে সম্পদে প্রতিনিধি স্বরূপ। আর এ
প্রতিনিধিত্বের অধিকারে নিজ অধীনস্থ সম্পদে সে কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা রাখে। ব্যক্তির সম্পদে সমাজ বা রাষ্ট্রের
হস্তক্ষেপের অধিকার রয়েছে। এজন্য ইসলামি অর্থনীতিতে সম্পদ বন্টনে দ্বীমুখি প্রভাব বিদ্যমান। ব্যক্তিগত ও
সামাজিক দু’ মাধ্যমই এখানে স্বীকৃত। এ অর্থব্যবস্থার দৃষ্টিতে সম্পদ বন্টনের দু’টি পর্যায় রয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে যারা সরাসরি উৎপাদন কাজে অংশ গ্রহণ করবে তাদের মধ্যে সম্পদ বণ্টন করা হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে যারা উৎপাদন কাজে অংশ গ্রহণ করে না, কিন্তু শরীয়াত উৎপাদিত অর্থে তাদের অংশের স্বীকৃত দেয়।
এ দু’ পর্যায়ের বিস্তারিত বর্ণনা নি¤œরূপ
প্রথম পর্যায় ঃ যারা উৎপাদনে সরাসরি অংশ গ্রহণ করে।
ইসলামি অর্থনীতিতে সম্পদ প্রথম পর্যায়ে তাদের মধ্যে বণ্টন করা হবে যারা সরাসরি উৎপাদন কাজে অংশ গ্রহণ
করে বা য়াদের উৎপাদন কাজে অংশ রয়েছে। আল্লাহ বলেন ঃ
لᡒ لرِّ جَ الِ نَ صِ ᛳبٌ مِّ مَّ ا ٱ᠔ᜧ ᙬ َسَ بُ وا᠔ وَ لِ ل ِّ سَ ቯءِ نَ صِ ᛳبٌ مِّ مَّ ا ٱ᠔ᜧ ᙬ َسَ بْ نَ .
“পুরুষ যা অর্জন করে সে তার অংশ পাবে এবং নারী যা অর্জন করে সে তার অংশ পাবে।” (সূরা আন-নিসা:৩২)
এ অর্থ ব্যবস্থায় উৎপাদকের সংখ্যা ও পরিভাষা পুঁজিবাদ বা সমাজতন্ত্রের মত নয় বরং এর চেয়ে ভিন্ন, যা নি¤œরূপ

১. মূলধন ঃ ইসলামি অর্থনীতির দৃষ্টিতে মূলধন হল ঐসব সামগ্রী যা ব্যয় বা পরিবর্তন ছাড়া উৎপাদন কাজে
ব্যবহার করা যায় না। যেমন- নগদ টাকা পয়সা, খাদ্য ইত্যাদি। আর মূলধনের বিনিময় হবে মুনাফা সুদ নয়।
মূলধনদাতাকে অবশ্যই উৎপাদনের লাভ-ক্ষতির ঝুকি বহন করতে হবে।
২. ভৌত সম্পত্তি ঃ কোন প্রকার পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও ব্যয় ছাড়া যে সব সামগ্রী পুনঃ পুনঃ উৎপাদন কাজে
ব্যবহার্য হয় তাকে ভৌত সম্পত্তি বলা হয়। যেমন- ভূমি, ঘর, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। এসব সম্পত্তির বিনিময় হিসেবে
তার মালিককে ভাড়া প্রদান করা হবে মজুরী।
৩. শ্রম ঃ উৎপাদনে মুনাফা সৃষ্টির জন্য যে চেষ্টা-সাধনা ব্যয় করা হয় তাই-ই শ্রম। দৈহিক শ্রম যেমন- কৃষি,
দিনমজুরী, বুদ্ধিভিত্তিক শ্রম যেমন- শিক্ষক, ডাক্তার আইনগত শ্রম বা ওকালতি সব প্রকার শ্রমই এর মধ্যে
অন্তর্ভুক্ত। আর শ্রমের বিনিময়ে শ্রমিক পাবে।
৪. উদ্যোক্তা ঃ ইসলামি অর্থনীতিতে উদ্যোক্তা পদ্ধতি অন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে ভিন্ন। অন্যান্য ব্যবস্থায়
উদ্যোক্তা উৎপাদনের সকল দায়-দায়িত্ব বহন করে। কিন্তু ইসলামি অর্থনীতিতে ব্যবসার প্রকারভেদ অনুযায়ী
উদ্যোক্তার দায়িত্ব বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন- মুদারাবা ব্যবসায় উদ্যোক্তা শুধুপরিচালনাগত শ্রম প্রয়োগের জন্য
মজুরী পেয়ে থাকে, এখানে উৎপাদনের লাভ-ক্ষতির সম্পূর্ণ ঝুকি মূলধনদাতা (ব্যক্তি/ব্যাংক/সংস্থা)-কে বহন
করতে হয়। আবার মুশারাকা পদ্ধতিতে উদ্যোক্তাও মূলধনের যোগান দেয় বিধায় সে মুনাফা পায়। এ ক্ষেত্রে সে
পরিচালনাগত শ্রম ব্যয় করার কারণে মজুরী এবং মূলধন যোগান দেয়ার কারণে মুনাফা দু’টোই পেতে পারে।
দ্বিতীয় পর্যায়
সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে ইসলামের অর্থনৈতিক দর্শনের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হল, ইসলাম দূর্বলকে সবল করা,
বেকারত্ব দূরীকরণ ও দারিদ্রতা দূরীকরণের জন্য এক সুচিন্তিত কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এরই ফলশ্রæতিতে
উৎপাদকের সম্পদে সমাজের অক্ষম ও অসহায়দের অংশ নির্ধারণ করেছে। এ পর্যায়ের খাত সমূহ নি¤œরূপ ঃ
১. যাকাত ঃ
সমাজে ধন-সম্পদের আবর্তন ও বিস্তার সাধনের উদ্দেশ্যেই ধনীদের উপর যাকাত ফরজ করা হয়েছে। যাকাতের
বাধ্যবাধকতা কুরআনী আইন দ্বারা সাবস্ত্য ঃ
َاة و ᠐ᜧ ٱلزَّ ᠔واُ آتَ وَ ة ᠐ا ـلو ٱلصَّ ᠔واُ مᘭ ِق ᠐أَ و “তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর এবং যাকাত দাও।” (সুরা আন-নুর :৫৬)
সকল বর্ধিষ্ণু বা পরিবর্তনযোগ্য সম্পদের উপরই যাকাত ধার্য হবে। আর এর লক্ষ্য হল, যুগপৎভাবে ধনীর হৃদয়
ও তার সম্পদের পরিশুদ্ধি। আল্লাহ বলেন-
خُ ذْ مِ نْ أ᠐ مْ وَ الِ هِ مْ صَ دَ قَ ةً تُ طَ هِّ رُ هُ مْ وَ تُ زَ ᡒᜧ يهِ مْ بِ هَ ا.
“তুমি তাদের সম্পদ থেকে সাদকা গ্রহণ করবে। এর দ্বারা তুমি তাদের পবিত্র ও পরিশোধিত করবে।” (সুূরা
আত্-তাওবা : ১০৩)
যাকাত ঠিকমত আদায় করলে এ উদ্দেশ্য পুরোপুরিই বাস্তবায়িত হতে পারে। দু’ধরনের সম্পদের উপর যাকাত
আদায় করা হবে। প্রথমত প্রকাশ্য সম্পদ এর মধ্যে রয়েছে গরু, ছাগল, উট, দুম্বা প্রভৃতি গবাদি পশু। দ্বিতীয়তঃ
অপ্রকাশ্য সম্পদ, এর মধ্যে রয়েছে স্বর্ণ, রৌপ, খনিজ সম্পদ, নগদ টাকা ও ব্যবসায়িক পণ্য।
যেসব মালের উপর যাকাত ফরয সেসব মাল একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের অধিক হতে হবে। রাসূল (সা)-এর স্পষ্ট
উক্তি রয়েছে- “পাঁচটির কম সংখ্যক উট ও চল্লিশটির কম ছাগলের যাকাত নেই। অনুরূপভাবে দু’শত নগদ রৌপ্য
মুদ্রার কমের উপর এবং ফসল ও দানার পাঁচ অসাকের কম পরিমাণের উপর যাকাত নেই।” গরুর ব্যাপারে
মতভেদ থাকলেও নির্ভরযোগ্য মত হল, ত্রিশ। অন্যান্য সম্পদের ক্ষেত্রে ৭.৫ ভরি সোনা বা ৫২.৫ তোলা
রৌপ্যের মূল্যের সমপরিমাণ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে আরো যে শর্তটি বিদ্যমান তা হল, নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক
বছর পূর্ণ হতে হবে। অর্থাৎ নেসাব পরিমাণ বা তদুর্ধ সম্পদ যদি কারো অধীনে এক বছর থাকে তবে তাতে
যাকাতের বিধান কার্যকর হবে।
যাকাতের সম্পদ যেসব খাতে বন্টিত হবে তা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন ছাড়াই আল্লাহর বাণীতে স্পষ্ট উল্লেখ
রয়েছে ঃ
إِ نَّ مَ ا ٱلصَّ دَ قَ اتُ لِ ل᠔ فُ قَ رَ آءِ وَ ٱل᠔ مَ سَ اᜧ ِين᠒ وَ ٱل᠔ عَ امِ لِ ينَ عَ ل᠐ يْ هَ ا وَ ٱل᠔ مُ ؤَ لᡐ فَ ةِ قُ ل᠑ ᗖᖔـُ هُ مْ وَ فِ ى
ٱلرِّ قَ ابِ وَ ٱل᠔ غَ ار᠒ مِ ينَ وَ فِ ى سَ ᙫ ِᘭلِ ٱللᡐ هِ وَ ٱبْ ن᠒ ٱلسَّ ᙫ ِᘭلِ فَ ᠒ᖁ ᗫضَ ةً مِّ نَ ٱللᡐ هِ وَ ٱللᡐ هُ عَ لِ ᘭمٌ
حَ كِ ᘭمٌ .
“সাদকা তো কেবল নি:স্ব, অভাবগ্রস্তও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য,
দাস মুক্তির জন্য, ঋণে ভারাক্রান্তদের আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য। এ হল আল্লাহর বিধান। আল্লাহ
সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা আত্-তাওবাহ : ৬০)
ওশর ও ওশরের অর্ধেক
ওশর শব্দের অর্থ-এক-দশমাংশ। জমির ফসলের এক-দশমাংশ পরিমাণ কর বা রাজস্ব গ্রহণ করা হয় বলে তাকে
ওশর বলে। ইসলামি অর্থব্যবস্থায় উৎপাদিত ফসলের ১০% এবং ক্ষেত্র বিশেষে ৫% ভূমি রাজস্ব হিসেবে সরকারী
কোষাগারে জমা দেয়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য কর্তব্য। ওশর প্রদানের নির্দেশ মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের দলীল
দ্বারা সাব্যস্তঃ
ᘌ ٰأ᠐ يُّ هَ ا ٱلᡐ ذِ ينَ آمَ نُ وۤ ا᠔ أ᠐ نْ فِ قُ وا᠔ مِ ن طَ يِّ ᘘ َاتِ مَ ا ك᠐ سَ ᙫ ْتُ مْ وَ مِ مَّ ቯ أ᠐ خْ رَ جْ نَ ا ل᠐ ᠑ᝣ م مِّ نَ ٱلأَ رْ ض᠒ .
“হে মুমিনগণ ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা ভূমি থেকে তোমাদের জন্য উৎপাদন করি তন্মধ্যে যা
উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর।” (সূরা আল-বাকারা : ২৬৭)
এ ব্যাপারে আরো সুস্পষ্ট নির্দেশ এসেছে। আল্লাহ বলেন-
᛿᠑ ل᠑ وا᠔ مِ ن ثَ مَ ر᠒ ەِ إِ ذَ ᕧ أ᠐ ثْ مَ رَ وَ آتُ وا᠔ حَ قَّ هُ يَ وْ مَ حَ صَ ادِ ەِ وَ ᢻ َᘻ ُسْ ر᠒ فُ وۤ ا᠔ إِ نَّ هُ ᢻ َᘌ ُحِ بُّ
ٱل᠔ مُ سْ ر᠒ فِ ينَ .
“যখন তা ফলবান হয় তখন এর ফল আহার করবে আর ফল তোলার দিনে এর হক আদায় করবে এবং অপচয়
করবে না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।” (সূরা আল-আনয়াম : ১৪১)
এখানে হক অর্থ জমির ফসল ভোগ করার বিনিময়। আর এ বিনিময় পদ্ধতি রাসূল (সা) নির্ধারণ করেছেন ঃ
فᘭما سقت السماء والانهار والعيون او ᛿ان غᘭلا العشر و فᘭما سقى
ᗷالسوانى والنضح نصف العشر.
“যে জমি বৃষ্টি, ঝর্ণধারা বা নদী-নালার পানিতে সিক্ত হয় অথবা তা স্বতই সিক্ত থাকে তার ফসলের এক-দশমাংশ
এবং যে জমিতে পানি সিঞ্চনে সিক্ত করা হয় তার বিশ ভাগের একভাগ (৫%) ফসল ভ‚মির কর রূপে দিতে
হবে।” (আবু দাউদ)
সাদকাতুল ফিতর
রমযান মাস শেষে ঈদের দিন প্রত্যেক ধনীব্যক্তি গরীবদের মধ্যে যে শস্য কিংবা তার মুল্য রোযার ফিৎরা বাবদ
বণ্টন করে তার নাম সাদকায়ে ফিতর বা যাকাতুল ফিতর। এ সাদকাহ প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ-নারী, স্বাধীন-দাস,
ছোট-বড় সকলের উপর ফরয।
الا ان صدقة الفطر واجᘘة على ᛿ل ذكرا او اᙏشى حرا او عᘘدا صغيرا اوكبيرا
مدان من قمح او سوا ءە صاع من طعام.
“মনে রেখ! সাদকাতুল ফিতর প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, স্বাধীন, দাস, বড়-ছোট সকলের উপর দুই মুদ গম বা
তার সমপরিমান এক ছা খাদ্য প্রদান করা ওয়াজিব।” (তিরমিজী)
ইমাম বুখারী আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন ঃ
রসুল (স.) এক ছা খেজুর অথবা এক ছা যব পরিমান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, স্বাধীন-দাস, বড়-ছোট সকলের
উপর সাদকায়ে ফিতর আদায় আবশ্যক করেছেন। আর ঈদের সালাতে বের হওয়ার আগে তা আদায় করার সময়
নির্ধারণ করেছেন।
৪. উত্তরাধিকার ঃ
ইসলামি অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তিগত মালিকানার অধিকার ব্যক্তির নিজ জীবন পর্যন্তসীমিত নয়। বরং তা উত্তরাধিকার
সূত্রে বংশানুক্রমিকভাবে অনন্তকাল পর্যন্তচলতে থাকবে। ব্যক্তির নিজের জীবনে যেসব লোকের সাথে তার
বৈষয়িক কিংবা আত্মিক অথবা রক্তের নিকটতম সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে এবং যে সব লোক তার লাভ-
লোকসানকে নিজের লাভ লোকসান বলে মনে করেছে, তার মালিকানা ধন-সম্পত্তি তার মৃত্যুর পর ঐসব
লোকদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট নিয়মানুযায়ী বণ্টন করা হবে। এই উত্তরাধিকার আইন কেবল ব্যক্তির উৎপন্ন দ্রব্যের
উপরই প্রবর্তিত হবে না বরং উৎপাদনের উপকরণের (গবধহং ড়ভ ঢ়ৎড়ফঁপঃরড়হ) উপরও কার্যকর হবে।
ইসলামের মীরাসী আইনের মূলনীতি নি¤œরূপ-
لᡒ لرِّ جَ الِ نَ صᛳِبٌ مِّ مَّ ا تَ رَ كَ ٱل᠔ وَ الِ دَ انِ وَ ٱلأَ قْ ᖁ َᗖ ُونَ وَ لِ ل ِّ سَ ቯءِ نَ صِ ᛳبٌ مِّ مَّ ا تَ رَ كَ
ٱل᠔ وَ الِ دَ انِ وَ ٱلأَ قْ ᖁ َᗖ ُونَ مِ مَّ ا قَ لَّ مِ نْ هُ أ᠐ وْ ك᠐ ثُ رَ نَ صِ ᘘᚏا᠍ مَّ فْ رُ وضا᠍ .
“পিত-মাতা এবং নিকটতম আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পদে পুরুষের অংশ রয়েছে এবং পিতা-মাতা ও
আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পদে নারীরও অংশ রয়েছে। তা অল্পই হোক বা বেশীই হোক, এক নির্ধারিত
অংশ।”(সূরা আন-নিসা : ৭)
এ আইন প্রয়োগ করা হবে মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে তার দাফন-কাফন ও ওসিয়ত পূরণ করার পর।
৫. ওসিয়তঃ
ইসলামি অর্থনীতি ব্যক্তিগত সম্পত্তির অবকাশ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পদের উপর ব্যক্তির নিজ ইচ্ছা-বাসনা কার্যকর
করার যে সীমাবদ্ধ অধিকার প্রদান করে, তার মধ্যে ওসিয়ত অন্যতম। আল্লাহ বলেনঃ
ك᠑ تِ بَ عَ ل᠐ ᘭ ْ᠑ᝣ مْ إِ ذَ ا حَ ضَ رَ أ᠐ حَ دَ ᛿᠑ مُ ٱل᠔ مَ وْ تُ إِ ن تَ رَ كَ خَ يْ را᠍ ٱل᠔ وَ صِ ᘭَّ ةُ .
“তোমাদের মধ্যে কারো মৃত্যুকাল উপস্থিত হলে সে যদি ধন-সম্পদ রেখে যায় তবে তার পিতামাতাও আত্মীয়-
স্বজনের জন্য ওসিয়াত করার বিধান তোমাদের দেয়া হলো।” (সূর আল-বাকারাহ : ১৮০) এ আয়াতের ভিত্তিতেই
মুলত ইসলামি অর্থব্যবস্থায় ওসিয়ত বিধিবদ্ধ হয়েছে। অতএব প্রত্যেক সম্পত্তিমালিক মৃত্যুর পুর্বে নিজে ধনসম্পত্তি সম্পর্কে যদি কোন ওসিয়ত করে, তবে মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই তার ওসিয়ত পুরণ করতে হবে। বস্তুুত
ইসলামি অর্থনীতিতে ওসিয়ত একটি সুপারিশ মাত্র নয়, বরং অনিবার্যরুপে তা কার্যকর করতে হবেই। তাই সম্পদ
বন্টনে এ অসীয়াতের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এমন অনেক নিকটাতœীয় থাকতে পারে যারা আইনগত কারণে
মৃতের সম্পত্তি থেকে মীরাস লাভ করতে পারে না, বরং বঞ্চিত হয়। তখন সম্পত্তির মালিকের কর্তব্য এ সুযোগ
ব্যবহার করে মীরাস বঞ্চিত নিকটতম ব্যক্তিদের জন্য ওসিয়ত করা। ওসিয়ত সংক্রান্তবিষয়ে দুটি ম‚লনীতি
প্রণিধানযোগ্য ঃ
প্রথমতঃ ওয়ারিস বা উত্তরাধিকারীর জন্য কোন ওসিয়ত করা যাবে না। রাসুল (স.) বলেনঃ
ان الله قد اعطى ᛿ل ذي حق حقه فلا وصᘭة لوارث.
“মিরাস ব্যবস্থার মাধ্যমে আল্লাহ প্রত্যেক হকদারকে তার হক যথার্থভাবে দিয়ে দিয়েছেন। অতএব উত্তরাধিকারীর
জন্য কোন ওসিয়ত করা যাবে না। (তিরমিযী)
দ্বিতীয়তঃ ওসিয়ত মোট সম্পত্তির মাত্র এক তৃতীয়াংশ পরিমান করা যাবে। রাসুল (স.) সা’দ বিন আবূঅক্কাস
(রা) এর এক প্রশ্নের জবাবে বলেনঃ
الثات والثلث كثير
“------ হ্যাঁ, এক তৃতীয়াংশই আর এই এক তৃতীয়াংশই যথেষ্ট -------- ।”(মুসলিম)
ইসলামি ফিকহবিদগণ ওসিয়তকে পাঁচভাগে ভাগ করেছেনঃ
১. ওয়াজিব ওসিয়তঃ ওসিয়তকারীর অধীনে আল্লাহ বা বান্দার যেসব আর্থিক হক রয়েছে তা আদায় করার জন্য
ওসিয়ত করা। যেমনঃ যাকাত আদায়, আমানত পালন ইত্যাদি।
২. মানদুব ওসিয়ত ঃ যা দ্বারা আল্লাহর আনুগত্য, তার নৈকট্য এবং মানুষের কল্যাণ প্রত্যাশা করা হয়। যেমন-
কোন কল্যাণ সংস্থার জন্য ওসিয়ত করা।
৩. মুবাহ ওসিয়ত ঃ যেমন- বন্ধু-বান্ধবের জন্য ওসিয়ত।
৪. মাকরূহ ওসিয়ত ঃ ইসলামের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয় এমন কোন কাজের জন্য ওসিয়ত করা।
৫. হারাম ওসিয়ত ঃ যেমন- মদ বিতরণের জন্য ওসিয়ত।
খারাজ ও জিযিয়া
ইসলামি রাষ্ট্রে অমুসলিমদের মালিকানা ও ভোগাধিকৃত জমি থেকে যে রাজস্ব আদায় করা হয় তাকে খারাজ বলা
বলে। খারাজের পরিমাণ নির্ধারণ করা ইসলামি রাষ্ট্রের কর্তব্য। ইসলামি রাষ্ট্রকে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা বিশেষ
সতর্কতার সাথে জমির জরিপ ও গুণাগুণ নির্ণয় করেই এ কাজ সম্পন্ন করতে হবে। অমুসলিমদের জমি থেকে
খারাজ হিসেবে যে রাজস্ব আদায় হবে তা রাষ্ট্রের সামগ্রিক অর্থভান্ডারে জম হবে এবং দেশের সার্বিক প্রয়োজন
পূরণ ও সর্বজনীন কল্যাণ ও উৎকর্ষ সাধনের ক্ষেত্রে বন্টিত হবে।
খারাজ নির্ধারণের ব্যাপারে জমির গুণাগুণ উর্বরতার পার্থক্য, প্রয়োজনীয় চাষের পরিমাণ পার্থক্য, পানি সেচ করার
আবশ্যকতার পার্থক্যের প্রতি বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে। যেন জমির প্রকৃত গুণ অনুপাতেই রাজস্ব ধার্য হতে পারে।
অন্যথায় ভূমি মালিকের উপর অবিচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার প্রকৃত পরিমাণ অপেক্ষা রাজস্ব কম ধার্য
হলে তাতে সামষ্টিক অধিকার ক্ষুণœ হবে।
ইসলামি রাষ্ট্রের অনুগত অমুসলিম বাসিন্দাদের নিকট থেকে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন পূরণের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে একটি
বিশেষ কর গ্রহণ করা হবে, ইসলামি অর্থনীতির পরিভাষায় তাকে জিযিয়া বলা হয়। জিযিয়া অর্থ বিনিময়। রাষ্ট্র
প্রজা-সাধারণের রক্ষণাবেক্ষণের যে দায়িত্ব গ্রহণ করে, তাদেরকে যে নিরাপত্তা দান করে, রাষ্ট্র তারই বিনিময়ে
প্রয়োজন পরিমাণে কর আদায় করার অধিকার রাখে। জিযিয়া অনুরূপ একটি কর। এ করের স্বীকৃতি কুরআন
মজীদে রয়েছে-
حَ تَّ ىٰ ᘌ ُعْ طُ وا᠔ ٱل᠔ جِ ᖂ ْᗫ ةَ عَ ن ᘌ َدٍ وَ هُ مْ صَ اغِ رُ ونَ .
“যে পর্যন্তনা তারা নত হয়ে স্বহস্তেনিযিয়া দেয়।” (সূরা আত্-তাওবাহ : ২৯)
জিযিয়ার পরিমাণ নির্ধারণের কাজ রাষ্ট্র সরকার ও অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরস্পরিক
আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন করাই সঠিক পন্থা। প্রত্যেক ধনশালী উপার্জনশীল ব্যক্তির আর্থিক সামর্থ্য ও রাষ্ট্রীয়
প্রয়োজন এ উভয় দিক লক্ষ্য রেখেই তা নির্ধারণ করতে হবে। এটাও লক্ষ্যণীয় যে, এ ব্যাপারে যেন দাতা ও
গ্রহীতা কারো প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার না হয়। জিযিয়া সাধাণত টাকায় আদায় করা হবে। কিন্তু পারস্পরিক
সমঝোতার ভিত্তিতে বিশেষ কোন শিল্প পণ্যের মাধ্যমে ও তা আদায় করা অসংগত নয়। নবী (সা) ও খোলাফায়ে
রাশেদুনের আমলে বিভিন্ন শিল্পোৎপাদনকারীদের থেকে জিযিয়া বাবদ শিল্পপণ্যও গ্রহণ করেছেন। (কিতাবুল
খারাজ)
কাফফারাহ
কাফফারাহ বলা হয় গোনাহ মাফের এবং তার প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার প্রচেষ্টাকে। কখনো কখনো মুসলিম
ব্যক্তি এমন কোন হারাম কাজ বা অপরাধে পতিত হয় যার শান্তিবিধানে আর্থিক জরিমানা প্রদান করতে হয়,
যেমন- শপথ ভঙ্গ করা, ইহরাম অবস্থায় ইহরামের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু করা ও যিহার ইত্যাদি।
মহান আল্লাহ তাওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে মানুষের অপরাধ ক্ষমা করেন। এতদসত্তে¡ও এ পরিসরে আর্থিক
জরিমানাকে বিধিবদ্ধ করার মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ হিকমত রয়েছে। তা হল এ সম্পদের মাধ্যমে সমাজের অক্ষম ও
অসহায়দের সামাজিক ভিত্তি স্থাপন করা।
সাদাকাহ ও করযে হাসানাহ
সমাজের অসহায় ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের স্বচ্ছল ও স্বাবলম্বী করার জন্য প্রত্যেক ধনবান মুসলিম ব্যক্তির উপর
যাকাত আদায় ফরয। কিন্তু শুধু এই ফরয আদায় করেই কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক দায়িত্ব থেকে রেহাই পায়
না। সমাজ ও জাতির জন্য প্রয়োজনে আরো অর্থ ব্যয় করার দায়িত্ব তার রয়েছে। রাসুল (সা) যাকাত ও সাধারণ
দান বা সাদকাহর মধ্যে পার্থক্যের সম্পর্ক নির্ণয় করেছেন-
ان فى المال حقا سوى الزكوة تلا هذە الاᘌة التى فى الᘘقرة :
لᛳس البر ان تولوا وجوهᜓم قᘘل المشرق و المغرب و ل᜻ن البر
من آمن ᗷالله و اليوم الاخر و الملائكة وال᜻تاب والنᙫيين و اتى
المال على حᘘه ذوى القربى واليتامى والمساᜧين و ابن
السᘭᙫل والسائلين و فى الرقاب و اقام الصلوة و اتى الزكوة.
“যাকাত ছাড়াও ধন-সম্পদে জাতির অধিকার রয়েছে। অতঃপর তিনি সূরা বাকারাহর আয়াত পড়লন- কেবল পূর্ব-
পশ্চিমে মুখ করলেই নেকী পাওয়া যায় না, বরং আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা, কিতাব ও নবীগণের উপর ঈমান
আনা ও আল্লাহর ভালবাসার বশবর্তী হলে নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন, নিঃসম্বল পথিক, অভাবগ্রস্তও
দাসদের জন্য অর্থ ব্যয় করা এবং নামায আদায় করা ও যাকাত দেয়াই হল যথার্থ নেক আমল।” (তিরমিজী) এ
আয়াত ও হাদীস থেকে দান-সাদকাহ ও মানবতার কল্যাণে সম্পদ ব্যয়ের আবশ্যকীয়তা বর্ণিত হয়েছে।
এ ছাড়া সমাজের লোকদের আকস্মিক প্রয়োজন পূরণ করার জন্য করযে হাসানাহ দেয়াও মুসলমানের অন্যতম
দায়িত্ব। কুরআন মাজীদে করযে হাসানাহ দেয়ার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহ দেয়া হয়েছে-
مَّ ن ذَ ا ٱلᡐ ذِ ى ᘌ ُقْ ر᠒ ضُ ٱللᡐ هَ قَ رْ ضا᠍ حَ سَ نا᠍ فَ ᘭ ُضَ اعِ فَ هُ ل᠐ هُ أ᠐ ضْ عَ افا᠍ ك᠐ ثِ يرَ ةً وَ ٱللᡐ هُ
ᘌ َقْ ᘘِضُ وَ ᗫ َᛞ ْسُ طُ وَ ល ِل᠐ ᘭ ْهِ تُ رْ جَ عُ ونَ .
“এমন কে আছে যে আল্লাহকে করযে হাসানা দেবে ? তিনি তার বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন। আর আল্লাহ সংকুচিত ও
স¤প্রসারিত করেন এবং তোমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হবে।” (্সূরা আল-বাকারা : ২৪৫)
একইভাবে দাস মুক্তকরণে সম্পদ ব্যয় করাও ইসলামে এক গুরুত্ববহ ইবাদত হিসেবে স্বীকৃত। সম্পদ বন্টনের এ
ক্ষেত্রটি অর্থনৈতিক দৃষ্টিতেও অসীম গুরুত্বের দাবীদার।
কুরবানী ও আক্কীকাহ
নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের জন্য পশু কুরবাণী ওয়াজিব। ইমাম আবু হানীফার মতে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ যা
পালন করলে অসীম সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়, তার অমান্যকারীকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত করা না
হলেও সে রাসূল (সা)-এর শাফায়াত থেকে বঞ্চিত হবে।
আক্কীকাহ সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেন ঃ
مع الغلام عقᘭقة فارᗫقوا عنه دما وامᘭطوا عنه الاذى.
“প্রত্যেক সন্তানের জন্য আক্কীকাহর বিধান রয়েছে। অতএব সে রক্ত প্রবাহিত কর এবং তার থেকে কষ্ট লাঘব
কর।” (মুসলিম ব্যতীত সিহাহ সিত্তার সকল গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।)
আক্কীকাহ ও কুরবানীর ক্ষেত্রে সম্পদ ব্যায়ের নির্দেশের মধ্যে এক ঐশী হিকমত বিদ্যমান। কারণ এ যবেহের
গোশত সমাজের নিঃস্ব মানুষরে মধ্যে বণ্টন, তাদেরকে ভক্ষণ করানো এবং পশুর চামড়া বিক্রির টাকা তাদেরকে
প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক দায়িত্ব পালন সম্ভব হয়।
ওয়াকফ
আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ওয়াকফ অর্থ আটক করা বা বন্দী করা। পরিভাষায় ওয়াকফ বলা হয় ঐ সম্পত্তিকে
যা মানব কল্যাণে চিরস্থায়ীভাবে বন্দবস্তকরা হয়।
ইসলামি আইনশাস্ত্রে ওয়াকফ দু’ প্রকার ঃ
১. পারিবারিক ওয়াকফ ঃ যেমন- নাতী-নাতীন বা নিকটবর্তীদের জন্য ওয়াকফ করা।
২. কল্যাণমূলক ওয়াকফ ঃ মানব কল্যাণে ওয়াক্তফ করা।
বলা হয়ে থাকে, ওয়াকফের প্রচলন রাসূল (সা) থেকেই শুরু। কেননা তিনি তাঁর সমূদয় সম্পত্তি আল্লাহর পথে
বিলায়ে দেন। কেউ কেউ বলেন, মুখাইরেখ ওহুদ যুদ্ধে তার সম্পত্তি ওয়াকফ করেন। তিনি ওসিয়ত করেন, আমি
যদি যুদ্ধে মারা যাই তবে আমার সম্পত্তি হন্তগত করেন এবং তা সাদকাহ করে দেন। এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে,
৭ম হিজরীে খায়বারে উমর (রা) একখন্ড জমি প্রাপ্ত হন অতঃপর তিনি তা ওয়াকফ করে দেন।
রাসূল (সা) বলেন ঃ
اذا مات الاᙏسان انقطع عنه عمله الا من ثلاثة : صدقة جارᗫة , او علم
ي تفع ᗷه , او ولد صالح ᘌدعو له.
“যখন মানুষ মারা যায় তখন তার সব আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমলের দরজা খোলা থাকে,
সাদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং সৎপুত্র যে তার জন্য দোয়া করে।” (মুসলিম)
সাদকাহ জারিয়া বা প্রবাহমান দান বলতে এখানে ওয়াকফ বুঝানো হয়েছে।
অতএব বলা যায়, ইসলামি অর্থব্যবস্থায় ধন বন্টনের যেন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে তা মানুষের সার্বিক
কল্যাণের দিক-নির্দেশনা। পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে ইসলামি অর্থনীতির এ সম্পদ বণ্টন ব্যবস্থাই মানুষের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও মুক্তি দিতে পারে।
১. পূঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় উৎপাদনের উপকরণ ক’টি?
ক. তিনটি খ. দুইটি
গ. চারটি ঘ. পাঁচটি।
২. ইসলামি অর্থব্যবস্থায় স¤পদের প্রকৃত মালিক কে?
ক. রাষ্ট্র খ. জনগণ
গ. আল্লাহ তাআলা ঘ. মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)
৩. ক’টি ছাগল থাকলে যাকাত দিতে হবে?
ক. ২০টি খ. ৩০টি
গ. ৪০টি ঘ. ২৫টি।
৪. নদী-নালার পানি দ্বারা সিক্ত ফসলের কয়ভাগ যাকাত দিতে হয়?
ক. পাঁচ ভাগের এক ভাগ খ. চারভাগের এক ভাগ
গ. দশ ভাগের এক ভাগ ঘ. বিশ ভাগের একভাগ।
৫. ইসলামি আইনে ওয়াকফ কয় প্রকার?
ক. চার প্রকার খ. তিন প্রকার
গ. দুই প্রকার ঘ. পাঁচ প্রকার।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. পূঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় ধন-স¤পদ বণ্টননীতি উল্লেখ করুন।
২. ইসলামি অর্থব্যবস্থায় স¤পদ বণ্টননীতি আলোচনা করুন।
৩. ইসলামের মিরাসী আইনের মূলনীতি কী? লিখুন।
৪. খারাজ ও জিযিয়া স¤পর্কে টীকা লিখুন।
৫. সাদাকা ও করযে হাসানা কী? লিখুন।
৬. ওয়াকফ কী? ওয়াকফের গুরুত্ব লিখুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. ইসলামি অর্থব্যবস্থায় ধন-স¤পদ বণ্টননীতি স¤পর্কে সবিস্তারে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]