ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যবসায়-বাণিজ্য ও এর শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

ইসলাম মানব কল্যাণের ধর্ম। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবসায় এর অপরিহার্যতা সুস্পষ্ট। তাই ইসলামে ব্যবসায়কে
হালাল করা হয়েছে। অবশ্য এক্ষেত্রে ইসলামি অর্থনীতি একটি সীমারেখা বর্ণনা করেছে। যা অনুসরণ করলে ক্রেতা
কিংবা বিক্রেতার কোন পক্ষই ক্ষতিগ্রস্তহয় না। ইসলামে এমন শ্রেণীর ব্যবসায় এর সমর্থন করা হয়েছে যা সাধারণ
মানুষের কল্যাণ সংরক্ষণ করতে পারে।
এখানে ব্যবসায় এর কতগুলো শ্রেণীর উল্লেখ করছি যা ইসলামি অর্থনীতি সমর্থন করে।
ব্যবসায়-এর শ্রেণী বিভাগ
বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবসায়কে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। যেমনবিনিময়কৃত বস্তুর দৃষ্টিতে
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে বিনিময় অপরিহার্য। বিনিময় হয়তো দ্রব্যের সাথে মুদ্রার কিংবা দ্রব্যের সাথে দ্রব্যের মাধ্যমে হয়ে
থাকে। এ দৃষ্টিতে ব্যবসায়কে তিনভাগে ভাগ করা হয়।
১. ضــــةᗷمقا بيع অর্থাৎ দ্রব্যের সাথে দ্রব্যের বিনিময়ে ব্যবসায় করা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ক্রেতা
একটি চাল কুমরার বিনিময়ে বিক্রেতার নিকট থেকে একটি মিষ্টি কুমরা ক্রয় করল। এ ধরনের ব্যবসায় হল বাই
মুকাবাদা।
এ ধরনের ব্যবসায় আজকল খুব একটা প্রচলিত নেই। তবে কোথাও চালু থাকলে তা ইসলামি অর্থনীতিতে বৈধ।
২. مطلق بيع অর্থাৎ সাধারণ পদ্ধতির ব্যবসায়। দ্রব্যকে মুদ্রার বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে বেচা-কেনা
করা। বর্তমান যুগে সাধারণত ব্যাবসায়ের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি গোটা পৃথিবীতে চালু আছে।
৩. ف صــــد بيع মুদ্রাকে মুদ্রার বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্তব্যবসায়। আধুনিক পৃথিবীতে মানি চেঞ্জারের
ব্যবসায়কে ف صــد بيع এর মধ্যে গণ্য করা যায়। এ জাতীয় ব্যবসায়কেও ইসলামি অর্থ ব্যবস্থায় বৈধ বলে
স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
লাভ কিংবা লোকসানের দৃষ্টিতে ব্যবসায় তিনভাগে বিভক্ত
১. حةᗷمرا بيع বা লাভজনক ব্যবসায়- যে ব্যবসায়ে বিক্রিত দ্রব্য ক্রয়মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করে
তাকে جةᗷمرا بيع বলে। যেমনি এক ব্যক্তি কোন একটি জিনিস ১০ টাকায় কিনে ১২ টাকায় বিক্রি করল।
২. ةᘭتول بيع) বাই তাওলিয়া) ঃ এমন ব্যবসায় যাতে ক্রয়কৃত মূল্যেই কোন কারণবশতঃ দ্রব্যটি বিক্রয় করা
হয়। এতে কোন লাভ করা হয় না।
৩. ةᘭوضــ بيع) বাই ওয়াদইয়্যাহ) ঃ ক্রয়কৃত দ্রব্যকে ক্রয়মূল্যের চেয়ে কমমূল্যে বিক্রি করাকে বা লোকসান
দিয়ে বিক্রি করাকে ةᘭوض بيع বা লোকসানী ব্যবসায় বলে।
মালিকানার সংখ্যার দৃষ্টিতে ব্যবসায় এর প্রকার
মালিকানা একক হওয়া কিংবা যৌথ হবার দৃষ্টিতে ব্যবসায় দুই প্রকার ঃ
১. فرد بيع অর্থাৎ একক মালিকানা সংক্রান্তব্যবসায়। যখন কোন ব্যবসায় এর মালিকানা একজন ব্যক্তির থাকে
তখন তাকে فرد بيع বলে। আমাদের দেশে ছোট-ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো অধিকাংশ একক মালিকানার
ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।
২. مشــــاركة بيع) বাই মুশারাকা) যৌথ কারবার বা কোন ব্যবসায় এর মালিক যখন একাধিক থাকে তখন
তাকে مشاركة بيع বলে। আমাদের দেশের লিমিটেড কোম্পানীগুলো সাধারণত এই শ্রেণীর ব্যবসায়।
আর এক শ্রেণীর ব্যবসায় আছে যার নাম ةᗖمضـار بيع-এতে একজন ব্যক্তির মূলধন আর অন্য ব্যক্তির শ্রমের
চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে যৌধ প্রচেষ্টায় ব্যবসায় করা। যেমন আবদুল্লাহ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আবদুর রহীমকে একটি
দোকান করে দিল। আবদুর রহীম শ্রম দিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করবে। লভ্যাংশ দুজনে চুক্তি অনুসারে ভাগ করে
নেবে।
নগদ বা বাকীর দৃষ্টিতে ব্যবসায় এর শ্রেণী বিভাগ
নগদ অর্থে, বাকীতে কিংবা অগ্রিম টাকা দিয়ে অর্ডারের মাধ্যমে ব্যবসায় করার দৃষ্টিতে ব্যবসায়কে তিন ভাগে ভাগ
করা হয়েছে।
১. معجل بيع) বাই মুআজজাল) বা নগদ ব্যবসায় ঃ নগদ অর্থ লেন দেনের মাধ্যমে ব্যবসায় করা হল বাই
মুআজাল।
২. مؤجل بيع) বাই মুআযজাল) বাকীতে ব্যবসায় ঃ কোন দ্রব্যকে ব্যবসায়ী নগদ অর্থে বিক্রয় না করে
পরবর্তীতে আদায়যোগ্য শর্তে বাকীতে বিক্রয় করাকে বাই-মুয়াজ্জল বলে।
৩. ســــــــلم بيع) বাই সালাম) বা অর্ডারের ব্যবসায়। তুলনামূলক কম দামে চাহিদাকৃত দ্রব্য সরবরাহের
অঙ্গিকারাবদ্ধ হয়ে অগ্রিম অর্থ গ্রহণ করে চাহিদা মোতাবেক মাল সরবরাহ করার ব্যবসায়কে سلم بيع বলে।
বৈধ কিংবা অবৈধ হওয়ার দৃষ্টিতে ব্যবসায় এর শ্রেণী বিভাগ
ইসলামি শরীয়তের দৃষ্টিতে সকল প্রকার ব্যবসায় বৈধ নয়। কোন কোন ব্যবসায় বৈধ আবার কোনটা সম্পূর্ণ অবৈধ।
কোনটা ত্রæটিযুক্ত হবে সংশোধনযোগ্য আবার কোনটা অপছন্দনীয়। এসব বিবেচনায় ব্যবসায়কে চার শ্রেণীতে বিভক্ত
করা যায়।
১. صــحيح بيع) বাই সহীহ) বা বৈধ ও বিশুদ্ধ ব্যবসায়ঃ এমন ব্যবসায় যাতে ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ইসলামি
ব্যবসায় নীতির মূল ও গুণগত দিকের প্রতিফলন ঘটে। যেমন ইজাব ও কবুলের মাধ্যমে প্রাপ্ত বয়স্ক ও সুস্থ মস্তিস্ক
সম্পন্ন বিক্রেতার নিকট থেকে ক্রয়-বিক্রয় করা।
২. اطلᗷ بيع) বাই বাতিল) বা অবৈধ ব্যবসায় যে ব্যবসায় মূলগত ও গুণগত উভয় দিক থেকে অশুদ্ধ তা হল
বাতিল ব্যবসায়। যেমন- শুকর, মৃত মানুষের, মাংস ক্রয়-বিক্রয় করা।
৩. فاســد بيع) বাই ফাসেদ) বা ত্রæটিযুক্ত ব্যবসায় ঃ যে ব্যবসায় মূলগত দিক থেকে শুদ্ধ তবে গুণগত দিক
থেকে অশুদ্ধ তা ফাসেদ (ত্রæটিযুক্ত) ব্যবসায়।
৪. مكروە بيع) বাই মাকরূহ) ঃ যে ব্যবসায় মূলগত ও গুণগত দিক থেকে শুদ্ধ তবে আনুষঙ্গিক কারণে ঠিক নয়, তাকে বাই-মাকরূহ বলে।
১. বিনিময়কৃত বস্তুর দৃষ্টিতে ব্যবসায়ক. দুই প্রকার খ. তিন প্রকার
গ. চার প্রকার ঘ. পাঁচ প্রকার
২. حةᗷمرا بيع বলতে বুঝায়ক. ক্রয়কৃত মূল্যে বিক্রয় করা খ. লাভে বিক্রয় করা
গ. লোকসানে বিক্রয় করা ঘ. কোনটাই ঠিক নয়।
৩. মালিকানার দৃষ্টিতে ব্যবসায়ক. তিন প্রকার খ. দুই প্রকার
গ. চার প্রকার ঘ. পাঁচ প্রকার
র্-থঅ بيع مؤجل .৪
ক. বাকীতে ব্যবসায় খ. নগদ দামে ব্যবসায়
গ. অগ্রিম অর্থ প্রদান করে ক্রয় করা ঘ. সবগুলো উত্তরই ঠিক
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. مطلق بيع বলতে কি বুঝায় ? লিখুন।
২. লাভ কিংবা লোকসানের দৃষ্টিকোণে ব্যবসায় কত প্রকার ও কী কী ? বর্ণনা দিন।
৩. سلم بيع বলতে কী বুঝায় ? ব্যাখ্যা করুন।
৪. ةᗫمضار بيع কী ? আলোচনা কর।
৫. صحيح بيع ও اطلᗷ بيع এর বর্ণনা দিন।
রচনামূলক উত্তর প্রশ্ন
১. ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যবসায়-বাণিজ্য ও এর শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]