‘‘মানুষ মর্যাদাশীল ও সৃষ্টির সেরা জীব’’ আল-কুরআনের আলোকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

 মানব মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার পদ্ধতি আলোচনা করতে পারবেন।
١ .وَ ل َقَѧدْ كَرَّ مْنَѧا بَنِ ѧى آدَمَ وَ حَمَلْنَѧاھُمْ فِѧى ٱلْبَѧرِّ وَ ٱلْبَحْѧرِ وَ رَ زَ قْنَѧاھُمْ مِّѧنَ ٱلطَّیِّبَѧاتِ
وَ فَضَّلْنَاھُمْ عَل َىٰ كَثِیرٍ مِّمَّنْ خَل َقْنَا تَفْضِ یلا ً (الاسراء- ٧٠ (
وَ سَخَّرَ ل َكُمُ ٱلل َّیْلَ وَ ٱلْنَّھَارَ وَ ٱلشَّمْسَ وَ ٱلْقَمَرَ وَ ٱلْنُّجُومُ مُسَخَّرَ اتٌ ب ِأ َمْرِ هِ إ ِنَّ فِى ٢ .
ذٰ لِكَ لآَ یَاتٍ ل ِّقَوْ مٍ یَعْقِل ُونَ (النحل-١٢ (
অনুবাদ ঃ
১. আমি তো আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি; স্থলে ও সমুদ্রে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি। তাদেরকে উত্তম
রিয্ক দান করেছি এবং আমি যাদের সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সূরা আলইসরা : ৭০)
২. তিনিই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রজনী, দিবস, সূর্য এবং চন্দ্রকে আর নক্ষত্ররাজিও অধীন হয়েছে
তাঁরই নির্দেশে। অবশ্যই এতে বোধশক্তি সম্পন্ন স¤প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিশ্চিত নিদর্শন। (সূরা আন-নাহল : ১২)
শব্দার্থ ও টীকা
كرمنا এ শব্দটি متكلم جمع এর ছিগা, বহুবচন, বহছ معروف ماضى فعل اثبات ,মাছদার
تكریم অর্থ-আমি মর্যাদাবান করেছি, সম্মানিত করেছি।
حملنا আমি চলাচলের বাহন দিয়েছি, বাহন নির্ধারণ করেছি।
البر‘̄ ল, স্থলভাগ, ভূভাগ, বন-জঙ্গল, বহুবচন برور
البحر সাগর, সমুদ্র, দরিয়া, বহুবচন ابحار , بحار , بحور
اتѧالطیب বহুবচন, একবচনে ةѧالطیب অর্থ উৎকৃষ্ট বস্তু, উত্তম জিনিস, ভাল জিনিস, পবিত্র জিনিস, অত্র আয়াতে
اتѧالطیب দ্বারা সুস্বাদু খাদ্য ও পানীয় বস্তু এবং ঐ সকল উত্তম জিনিসকে বুঝানো হয়েছে, যা দ্বারা মানুষ স্বাদ লাভ
করে ও উপকৃত হয়। মানুষের শরীর বৃদ্ধি প্রাপ্ত ও শক্তিশালী হয় এবং রোগ-শোক থেকে বেঁচে থাকে।
فضلنا আমি শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি, প্রাধান্য দিয়েছি, অগ্রাধিকার দিয়েছি, মর্যাদা দিয়েছি।
سخر নিয়োজিত করেছেন, অধীন করেছেন, অনুগত করেছেন।
مسخرات বহুবচন, একবচনে مسخرة অর্থ হচেছ অধীন, হুকুমের অধীন, অনুগত।
ارѧوالنھ اللیل لكم سخر ঃ রাত্রি ও দিবসকে অনুবর্তী করার অর্থ এই যে, এগুলোকে মানুষের কাজে নিয়োজিত
করার জন্যে স্বীয় কুদরতের অনুবর্তী করে দিয়েছেন। রাত্রি মানুষকে আরামের সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ করে এবং দিবস
তার কাজ কর্মের পথ প্রশস্তকরে। এগুলোকে অনুগত করার অর্থ এরূপ নয় যে, রাত্রি ও দিবস মানুষের নির্দেশ মেনে
চলে। বরং মানুষ রাত দিনকে ব্যবহার করে উপকার লাভ করে।
মানব মর্যাদা
আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে এ পৃথিবীতে স্বীয় প্রতিনিধি রূপে সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান দান করেছেন।
ফিরিশ্তাকুলকে অবনত মস্তকে সম্মান প্রদর্শন করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা তার শ্রেষ্ঠত্বের বহিঃপ্রকাশ। মানব মর্যাদা
জানার পূর্বে মানব পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা দরকর। নিæে মানব পরিচিতি স¤পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হলমানব পরিচিতি
আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে ناس নামে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেন- اسѧالن اѧایھ یاে হ মানব জাতি !
(আল-বাকারা : ২১) আবার কোথাও انѧانس শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যেমন- সূরায়ে ইনফিতারের ৩নং
আয়াতে এসেছে-ریمѧالك كѧبرب ماغرك الانسان ایھا یا অর্থাৎ “হে মানব! কিসে তোমাদেরকে তোমাদের
মহান প্রভু থেকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে?”
انѧانس শব্দটি اسѧان) হতে উদ্ভুত। এর অর্থ আকৃষ্ট হওয়া, পোষমানা বা
পরস্পর সম্মিলিতভাবে হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করার প্রকৃতি বিশিষ্ট হওয়া। বহুবচন , اسѧان , یةѧاناس
ىѧاناس আর انѧانس শব্দের বিপরীত শব্দ ةѧوحش অর্থ নিঃসঙ্গতা, পোষমানানো হয়নি এমন, বর্বর, অসভ্য,
সংস্কৃতিহীন, পশুতুল্য, নির্দয়,অতএব শাব্দিক তাৎপর্য মানব জীবনের
সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়িত। কেননা মানুষ স্বভাবগতভাবে সামাজিক জীব। মানুষ মিলে-মিশে সমাজবদ্ধ হয়ে থাকে।
সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে পরস্পর সৌহার্দের সাথে বাস করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। সত্যিকার
অর্থে মানুষকে এজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, “পুণ্য ও তাকওয়া অর্জনে তোমরা পরস্পর সাহায্য
কর, পাপ ও সীমালংঘনে একে অপরকে সহযোগিতা করো না।” (সূরা আল-মায়িদা : ২)
মানুষের আকৃতিগত শ্রেষ্ঠত্ব
আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে গঠন-কাঠামোর দিক থেকে অতি সুন্দর দেহসৌষ্ঠব ও দেহাকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।
তাদের সুবিন্যস্তঅঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, হাত-পা, চোখ, কান, নাক, মুখ ইত্যাদি অন্যান্য জীব জগত হতে সম্পূর্ণ আলাদা ও
ভিন্ন প্রকৃতির করে তৈরী করেছেন। আল্লাহ বলেন, “নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছি।” (সূরা
আত্ তিন-৪) অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ মানবজাতিকে দান করেছেন- নারী পুরুষভেদে অতি সুন্দর ও চমৎকার
আকৃতি বিশিষ্ট। উপরন্তু তাদের সে অতুলনীয় সুন্দর দেহ পরিচালনের জন্য তাতে নিয়মিতভাবে রক্ত, গোশ্ত, অস্থি,
বায়ু পিত্ত, কফ ও শিরা-উপশিরাসমূহ সংযোজিত করেছেন। এসবই তাঁর অনুপম দান এবং অসীম অনুগ্রহ। মহান
আল্লাহ বলেন, “যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুঠাম দেহের অধিকারী করেছেন এবং সুবিন্যস্ত
করেছেন।” (সূরা আল-ইনফিতার : ৭-৮)
জলে, স্থলে মানুষের প্রভ‚ত্ব ও কর্তৃত্ব
মহান আল্লাহ জল ও স্থলভাগের যাবতীয় জীব-জন্তু ও যানবাহনকে মানুষের আরোহণের জন্য তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে
দিয়েছেন। যেমন তাদের আরোহণের জন্য ঘোড়া, গাধা, উট, হাতী, নৌকা ইত্যাদিকে মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন
করেছেন। কুরআনের ভাষায়, “নিঃসন্দেহে আমি বনী আদমকে সম্মানিত করেছি এবং তাদের জলে-স্থলে কর্তৃত্বদান
করেছি।” (সূরা বনী ইসরাঈল : ৭০)
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে প্রভুত্ব ও কর্তৃত্ব
আল্লাহ তাআলা শুধু স্থলভাগ ও জল ভাগই মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দেননি বরং নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে
সব কিছুকে মানব জাতির সেবায় নিয়োজিত করে দিয়েছেন। আল্লাহর বাণী- “তিনি-নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু
আছে, তা তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।” (সূরা লুকমান : ২০)
বস্তুত এ বিশ্ব জগতের সকল কিছুই মানব কল্যাণে জন্য সৃষ্টি। আসমান-যমীন, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, খাল-বিল,
আকাশ-পাতাল, আলো-বাতাস, ধন-সম্পদ, বিষয়-সম্পত্তি সকল কিছু মানুষের জন্য সৃষ্টি। এগুলোর প্রকৃত মালিক
আল্লাহ তাআলা আর ভোগাধিকারী মানব জাতি। আল্লাহ তাআলা বলেন, “যমীনে যা কিছু আছে তা তিনি তোমাদের
জন্য সৃজন করেছেন।” (সূরা আল-বাকারা : ২৯)। পৃথিবীর রূপ, পাখীর গান, নদীর কলতান, নারীর সৌন্দর্য
এককথায় পৃথিবীর সকল বস্তুই মানব কল্যাণে সৃজিত।
সৌর জগতের উপর মানুষের কর্তৃত্ব ও প্রভুত্ব
মহান আল্লাহ চন্দ্র, সূর্য, তারকারাজি, ছায়াপথ এক কথায় সমগ্র সৌরজগত মানবের আয়ত্তাধীন করে সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ তাআলার বাণী- “তিনিই তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছেন রাত্রি, দিন, সূর্য এবং চন্দ্রকে। তারকাসমূহ
তারই বিধানের কর্মে নিয়োজিত করেছেন। নিশ্চয় এতে বোধশক্তি সম্পন্নদের জন্য নিদের্শনাবলী রয়েছে।” (সূরা
আন-নাহল :১২)
জ্ঞান দান
আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে সৃষ্টি করে বিশ্বের সকল বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান দান করেছেন যেন সে সমগ্র সৃষ্টির উপরে
নিজের শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণœ রাখতে পারে। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার বাণী- “আর তিনি আদমকে সব জিনিসের নাম
শিখিয়ে দিলেন, অতঃপর তা ফেরেশতাদের সামনে পেশ করলেন।” (সূরা আল-বাকারা : ৩১)
ঐশী কিতাব দান
মানুষ যাতে পাপাত্মা শয়তানের প্ররোচনায় বিভ্রান্তও বিপথগামী হয়ে আল্লাহ তাআলার অবাধ্য না হয় সেজন্য তিনি এ
অফুরন্তধন-সম্পদের উপরও সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ ঐশী কিতাব আল-কুরআন দিয়ে মানব জাতিকে সম্মানিত
করেছেন। আল্লাহ তাআলা এ প্রসঙ্গে বলেন, “তিনি সত্যসহ তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন, যা তার পূর্বের
কিতাবের সমর্থক।” (সূরা আলে ইমরান : ৩)
ঈমান নামক দৌলত দান
মহান আল্লাহ মানুষকে উত্তম সৃষ্টির মর্যাদায় ভূষিত করার পর তাদের ঈমান নামক দৌলত দিয়ে পথ প্রদর্শন
করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, “বরং আল্লাহই তোমাদেরকে ঈমানের প্রতি পথ প্রদর্শন করে তোমাদের উপর অনুগ্রহ
করেছেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।” (সূরা আল-হুজুরাত : ১৭)
পবিত্র উপজীবিকা প্রদান
মহান আল্লাহ মানবজাতিকে সর্বক্ষেত্রে সৃষ্টিকুলের সেরা মর্যাদা প্রদানের পর তাদের পানাহারের ব্যাপারেও উক্ত শ্রেষ্ঠত্ব
ও মর্যাদা রক্ষা কল্পে তাদের জন্য পবিত্র পানাহার ও খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন, আর যাবতীয় অপবিত্র, খারাপ ও
কলুষিত দ্রব্যাদি ভক্ষণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। যেমন পবিত্র কুরআনে এসেছে“তোমরা পবিত্র দ্রব্যাদি হতে ভক্ষণ কর এবং সৎকর্ম সম্পাদন কর।” (সূরা আল-মুমিনুন : ৫১) “আর তিনি তোমাদের
উপর কলুষিত দ্রব্যাদি নিষিদ্ধ করেছেন।” (সূরা আল-আরাফ : ১৫৭)
অতএব মহান আল্লাহ মানব জাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব ঘোষণান্তেতাদের পবিত্র উপজীবিকা গ্রহণ এবং অপবিত্র ও
কলুষিত খাদ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
মানব মর্যাদা অক্ষুণœ রাখার উপায়
মানুষ শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। সুতরাং তার কর্মও হবে শ্রেষ্ঠ। ইসলাম তাকে শয়তানের প্ররোচনায় অন্যায় অপরাধে লিপ্ত না হওয়ার
জন্য বারবার স্মরণ করে দিয়েছে। সাথে সাথে পরস্পর পরস্পরকে উত্তম ও সৎকাজে সাহায্য ও সহানুভূতি প্রদান পূর্বক
একটি সুন্দর ও শান্তিময় সমাজ গঠনের প্রতি ইঙ্গিত করেছে। মহান তাআলা বলেন, “তোমরা সৎকাজের আদেশ
করবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে।” (সূরা আল-ইমরান : ১১০)
মহান আল্লাহ মাটির তৈরী এ মানুষকে সেরা সৃষ্টির মর্যাদায় বিভূষিত করেছেন সত্য ; তাই বলে মানুষ নিজেকে সব
চেয়ে উন্নত সত্তা বলে দাবি করবে না। তার মন-মস্তিষ্কে স্পর্ধা অহংকার ও বিদ্রোহের ভাবধারা থাকতে পারে না।
কারণ আল্লাহ তাআলাই হলেন সর্বময় ক্ষমতা ও শক্তির একমাত্র উৎস। তিনি স্বয়ং বলেন, “আমিই তোমাদের সর্বময়
প্রতিপালক।” (সূরা আন-নাযিআত : ২৪)
আবার মানুষ নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে নীচু সত্তা বলে ধারণা করাও ঠিক নয়। ডারউইনের বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করে
নিজেকে গাছ, পাথর বা জন্তু জানোয়ারের পরিবর্তিত রূপ হিসেবে বিশ্বাস করা বা তাদেরকে উপাস্য ভেবে মান্য করা
এক হীনমন্যতা মাত্র।
অতএব মানুষ না এতটা উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন, যতটা সে অহমিকা বশত নিজেকে নিয়ে অহংকার করে। আর না সে
এতটা তুচছ ও নিকৃষ্ট যতটা সে নিজেকে বানাতে চায়, এ দুটি অতি ও ইতির মাঝামাঝি মানুষের মর্যাদা। ইসলাম এ
চরম ধারণাকে বাতিল করে মানুষের সামনে তার প্রকৃত পরিচয়, তুলে ধরেছে। মানুষের মর্যাদা অক্ষুণœ থাকবে তার
ন্যায়পরায়ণতা, পরহেযগারী ও খোদাভীরুতার উপর। মহান আল্লাহ বলেন, “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি অধিক
মর্যাদার অধিকারী যে বেশী মুত্তাকী।” (সূরা আল- হুজুরাত : ১৩)
কবির ভাষায়নহে আশরাফ যার আছে শুধু বংশ পরিচয়
সেই আশরাফ জীবন যার পূর্ণ কর্মময়।
বস্তুত ইসলামই একমাত্র জীবন ব্যবস্থা যা মানব জাতিকে সত্যিকার মর্যাদা দিয়েছে। অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদ এতটা
মর্যাদা দেয়নি ও দিতে পারেনি। আর যারা মহান আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত এ মর্যাদাকে অক্ষুণœ রাখতে খোদাভীরুতা
অর্জন করবে, অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদন করবে তাদের জন্য রয়েছে পরকালের সফলতা। যেমন তাদের
ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেনতারাই তাদের প্রতিপালকের প্রদত্ত হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং তারাই সফলকাম। (আল- বাকারা-৫)
সারকথা
আদম সন্তান ঊর্ধ্ব ও অধঃজগতের সমস্তজীব-জন্তুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ। মহান আল্লাহ মানব জাতিকে গঠন কাঠামো, খাদ্য,
বাসস্থান, শিক্ষা, বুদ্ধিমত্তা, ঐশী কিতাব, খিলাফত থেকে নিয়ে সর্ব বিষয়ে সর্বাধিক মর্যাদা প্রদান করেছেন। তিনি
তাদেরকে অতি সুন্দর দেহ সৌষ্ঠব ও দেহাকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। স্থল-জলভাগ থেকে আরম্ভ করে চন্দ্র-সূর্য,
তারকারাজি, ছায়াপথ এক কথায় সমগ্র সৌরজগতকে মানবের আয়ত্তাধীন করে দিয়েছেন। আসমান-যমীন, পাহাড়পর্বত, নদী-নালা, খাল-বিল, আকাশ-পাতাল, আলো-বাতাস এমনকি পৃথিবীর রূপ, পাখীর গান, নদীর কলতান,
নারীর সৌন্দর্য এ বিশ্ব জগতের সকল কিছুই মানব কল্যাণে সৃজিত। অতএব উপরের আলোচনা হতে প্রতীয়মান হয়
যে, মহান আল্লাহ সকল বস্তুর উপর মানব জাতিকে শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব, প্রভূত্ব ও কর্তৃত্বের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ জীবের মর্যাদায় ভূষিত করেছেন।
নৈর্ব্যক্তিক উত্তর-প্রশ্ন
১. মানুষ কেন শ্রেষ্ঠ জীব?
ক. মানুষ ভাল-মন্দ পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখে; খ. আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান দান করেছেন;
গ. আল্লাহ ফেরেশতাকুলকে সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন; ঘ. উপরোক্ত সব ক’টি উত্তরই সঠিক।
২. কোনটি মানুষের মর্যাদার প্রমাণ?
ক. মানুষের গঠনাকৃতিগত সৌন্দর্য; খ. জলে-স্থলে মানুষের প্রভূত্ব ও কর্তৃত্ব;
গ. ভ‚-মন্ডল ও নভোমন্ডলে মানুষের প্রভ‚ত্ব ও কর্তৃত্ব; ঘ. উপরোক্ত সব ক’টি উত্তরই সঠিক।
৩. ‘‘তোমরা পবিত্র দ্রব্যাদি হতে ভক্ষণ কর’’-এটি কার কথা?
ক. মহান আল্লাহর; খ. মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর;
গ. হযরত আবু বকর (রা.)-এর; ঘ. ইমাম গাযালী (র.) -এর।
৪. বিবর্তনবাদের প্রবক্তা হলেনক. হার্বাট ¯েপনসার; খ. ডারউইন;
গ. সক্রেটিস; ঘ. গৌতম বুদ্ধ।
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১. সংশ্লিষ্ট আয়াতগুলোর অনুবাদ করুন।
سخر لكم اللیل والنھار -লিখুন টীকা. ২
৩. মানুষের পরিচয় দিন।
৪. মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার কতিপয় কারণ উল্লেখ করুন।
৫. মানব মর্যাদা অক্ষুণœরাখার উপায় বর্ণনা করুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. ‘‘মানুষ মর্যাদাশীল ও সৃষ্টির সেরা জীব’’ আল-কুরআনের আলোকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]