বনী ইসরাঈলরা প্রায় পাঁচ হাজার বছর গোটা মানবজাতির ধর্মীয় নেতা ও পথপ্রদর্শকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত থাকে। তারা তাদের পূর্ব পুরুষ ও মিল্লাতে মুসলিমার পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পথ অনুসরণ করে চলা, সততা, সরলতা ও পরিপূর্ণভাবে তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার ফলেই এ মর্যাদায় অভিষিক্ত হতে পেরেছিলো।
কুরআন পাকেও হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের বড় বৈশিষ্ট্য ও গুণাগুণ হিসাবে তাঁর নির্ভেজাল তাওহীদবাদের অনুসারী হবার কথা ঘোষণা করেছে। সকল প্রকার শিরক হতে তিনি ছিলেন মুক্ত। বলা হয়েছে :
قُلْ إِنَّنِي هَدْ نِي رَبِّي إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ دِينًا قِيمًا مِّلَّةَ إِبْرَهِيمَ حَنِيفًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ ، قُلْ إِنَّ صَلاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي
لِلّهِ رَبِّ الْعَلَمِينَ لَاشَرِيكَ لَهُ ، وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ .
“(হে মুহাম্মদ!) বলুন আমার রব নিসন্দেহে আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন সম্পূর্ণ ও সর্বতোভাবে সঠিক দ্বীন। যাতে একটুও বেঁকা তেড়া নেই । ইবরাহীমের পথ, যা তিনি একাগ্রমনে অবলম্বন করেছিলেন । তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। বলো, (হে রাসূল!) আমার নামায, আমার সকল নিয়ম-কানুন, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহ তাআলার জন্য । যার কোনো শরীক নেই। আমাকে এ কথারই আদেশ দেয়া হয়েছে। আর ইবাদাতের জন্য মাথা নতকারীদের মধ্যে আমিই প্রথম।”-সূরা আল আনআম : ১৬১-১৬৩
এরপর বনী ইসরাঈলরা একটি জাতি হিসাবে নেতৃত্বের এ মর্যাদা যখন পেলো, তাদেরকে জোর দিয়ে বিশেষ করে বলে দেয়া হলো ঃ
نَ إِلا الله من وَبِالْوَالِدَينِ إِحْسَانًا وَذِي الْقُرْبَى وَالْيَتْمَى وَالْمَسْكِينَ
قف
وَقُولُوا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَأَقِيمُوا الصَّلوةَ وَأتُو الزكوة ط ثُمَّ تَوَلَّيْتُمْ إِلا قَلِيلاً
منْكُمْ وَأَنْتُمْ مُعْرِضُونَ ٥ - البقرة ٨٣:
“আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না । পিতা-মাতার সাথে, আত্মীয়- স্বজনের সাথে, ইয়াতীম-মিসকিনের সাথে ভালো ব্যবহার করবে । সাধারণ মানুষের সাথে ভালো আচরণ করবে। নামায কায়েম করবে। যাকাত
আদায় করবে। মুষ্টিমেয় লোক ছাড়া তোমরা সকলেই এ প্রতিশ্রুতি ভংগ করেছ এবং এখন পর্যন্ত সেই অবস্থাতেই রয়েছ।”-সূরা বাকরা : ৮৩
خُنُوا مَا آتَيْنَكُمْ بِقُوَّةٍ وَاذْكُرُوا مَا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ - البقرة : ٦٣
“যে কিতাব তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে তা তোমরা মজবুত করে আঁকড়ে ধরবে । এতে যেসব হুকুম, আহকাম ও উপদেশবাণী লেখা আছে তা স্মরণ রাখবে। বস্তুত এরই সাহায্যে আশা করা যায় তোমরা তাকওয়ার নীতি মেনে চলতে পারবে।”-সূরা আল বাকারা : ৬৩
وَقَالَ اللهُ إنّي مَعَكُمْ ، لَئِنْ أَقَمْتُمُ الصَّلوةَ وَأتَيْتُمُ الزَّكَوةَ وَأمَنْتُم بِرُسُلِي
وَعَزَّرْتُمُوهُمْ وَأَقْرَضْتُمُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا - المائدة : ۱۲
“আল্লাহ বলেছেন, আমি তোমাদের সাথে আছি। যদি তোমরা নামায কায়েম রাখো । যাকাত আদায় করো এবং আমার নবীগণকে মান্য করো । তাদের সাহায্য এবং শক্তি বৃদ্ধি করো এবং তোমাদের আল্লাহকে উত্তম কর্জ দিতে থাকো।”-সূরা আল মায়েদা : ১২
বনী ইসরাঈলকে নেতৃত্বের আসনে সমাসীন করার সময় আল্লাহ তাআলা তদের কাছ থেকে যে ওয়াদা নিয়েছিলেন তার উল্লেখ ‘বাইবেলেও’ আছে :
“হে ইস্রায়েল, শুন ; আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু একই সদাপ্রভু ; আর তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ, ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়া আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করিবে। আর এই যে সকল কথা আমি অদ্য তোমাকে আজ্ঞা করি, তাহা তোমার হৃদয়ে থাকুক। আর তোমরা প্রত্যেকে আপন আপন সন্তানগণকে এ সকল যত্নপূর্ব্বক শিক্ষা দিবে, এবং গৃহে বসিবার কিম্বা পথে চলিবার সময়ে এবং শয়ন কিম্বা গাত্রোত্থান কালে ঐ সমস্তের কথোপকথন করিবে।”-দ্বিতীয় বিবরণ, ৬ : ৪-৭
“তোমরা আপনাদের জন্য অবস্ত প্রতিমা নির্ম্মাণ করিও না, এবং ক্ষোদিত প্রতিমা কিম্বা স্তম্ভ স্থাপন করিও না, তাহার কাছে প্রণিপাত করিবার নিমিত্তে তোমাদের দেশে কোন ক্ষোদিত প্রস্তর রাখিও না ; কেননা আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর। তোমরা আমার বিশ্রামবার সমাদর করিও ; আমি সদাপ্রভু।”- লেবীয় পুস্তক, ২৬ : ১-২
তারা যেনো ভেবেছিলো হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তাঁর খোদাভীতি ও পরিপূর্ণ আনুগত্যশীলতার জন্য যেভাবে দ্বীনের বিশ্ব নেতৃত্বের মর্যাদায় আসীন হয়েছিলেন। তারাও তাদের খোদাভীতি ও আনুগত্যশীলতার জন্য বিশ্ব নেতৃত্বের আসন লাভ করেছিলো ।
বস্তুত হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম তাঁর মৃত্যুর সময় তাঁর ছেলেদেরকে যে ‘অসিয়াত' করেছিলেন তার বিবরণ 'গাজে বুর্গে কাসাসে ইয়াহুদ' গ্রন্থে এভাবে উল্লেখ আছে :
“ইসহাক যখন বুঝতে পারলেন তাঁর জীবনাবসান অত্যাসন্ন। তিনি তাঁর ছেলেদেরকে নিজের কাছে ডেকে এনে বললেন, হে আমার ছেলেরা ! আমি তোমাদেরকে আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলছি, আল্লাহর সিফাত হলো সুউচ্চ, বিরাট বড়, চিরন্তন এবং পরাক্রমশালী। যে আল্লাহ আসমান জমিন ও এ দু'য়ের মধ্যে যাকিছু আছে তাঁর প্রত্যেকটি জিনিসেরই সৃষ্টিকর্তা। তোমরা শুধু তাঁকেই ভয় করে চলবে। ইবাদাত শুধু তাঁরই করবে।”
শেষ অংশ তো মনে হচ্ছে “ইয়্যাকা’নাবুদ ওয়া ইয়্যাকানাসতাঈন'-এর হুবহু তরজমা ।
এ গ্রন্থেরই দ্বিতীয় ভলিউমের ১৪১ পৃষ্ঠায় হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামেরও এ ধরনের একটি অসিয়াত তার ছেলেদের উদ্দেশ্যে উল্লেখ আছে।
জুয়ুস ইনসাইক্লোপেডিয়ায় ইহুদীদের এ অহংকারী অবস্থা ও মনোভাবের কথা এভাবে ব্যক্ত করেছে :
“বনি ইসরাঈলের উপর আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত প্রচার করার বিশেষ দায়িত্ব ও ফরজ কাজ অর্পিত হয়েছিলো। সূর্য পূজা, চাঁদ পূজা, তারকা পূজার বিরুদ্ধে তারা অবিরত জিহাদ করতে থাকবে।”-জিলদ ৬, পৃ-৫
হিষ্টোরিজ, হিষ্টি অব্ দি ওয়ার্ল্ডের লেখক আরো অগ্রসর হয়ে দাবী করেছেন, “দ্বীনে তাওহীদের বুনিয়াদই গড়ে উঠেছিলো বনী ইসরাঈলে ।”
বনী ইসরাঈলকে দাওয়াতে হকের পতাকাবাহীরূপেই সৃষ্টি করা হয়েছিলো । সত্যের সাক্ষ প্রদানকে তাদের বুনিয়াদী ফরয, অবশ্য কর্তব্য হিসাবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
শুধু তা-ই নয় বরং বনী ইসরাঈলকে দাওয়াতে হকের পতাকাবাহীও বানানো হয়েছিলো। শাহাদাতে হক বা সত্যের সাক্ষ্য প্রদান করাকে তাদের বুনিয়াদী দায়িত্ব কর্তব্য হিসাবেও নির্দিষ্ট করা হয়েছিলো । আল্লাহ বলেছেন :
وَإِذْ اَخَذَ اللَّهُ مِيْثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَب لَتُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُونَهُ .
فَنَبَدُوهُ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ وَاشْتَرَوْا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلاً ، فَبِئْسَ مَا يَشْتَرُونَ
“এ আহলে কিতাবকে (বনী ইসরাঈল)! এ অঙ্গীকারের কথাও স্মরণ করিয়ে দাও, যে ওয়াদা আল্লাহ তাদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন যে, তোমাদেরকে আল্লাহর কিতাবের শিক্ষাসমূহ মানুষের মধ্যে প্রচার করতে হবে। একে গোপন রাখতে পারবে না। কিন্তু তারা কিতাবকে পিছনের দিকে ফেলে রেখেছে এবং সামান্য মূল্যে তাকে বিক্রয় করেছে। এটা তারা যা করেছে তা কতই না খারাপ কাজ।”-সূরা আলে ইমরান : ১৮৭
এ বনী ইসরাঈল জাতিকে আল্লাহ এতো মর্যাদা ও গৌরব দান করার পেছনে এসব দায়িত্ব পালন করাই ছিলো মূল কারণ। এ কারণেই বনী ইসরাঈলের মধ্যে একের পর এক অসংখ্য নবীকে পাঠিয়েছেন। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এদের মধ্যে কিছু কিছু ভালো মানুষও ছিলেন তারা নবীদের দাওয়াতে সাড়া দিয়েছিলেন। তাদের সাথে ছিলেন। তাঁদেরকে সহযোগিতা যুগিয়েছেন। কিন্তু বনী ইসরাঈল গোষ্ঠীর অধিকাংশের আচার-আচরণ আল্লাহ, আল্লাহর কিতাব, আল্লাহর রাসূলদের সাথে খুবই লজ্জাজনক ছিলো
বনী ইসরাঈলের মু'মিন-মুখলিস বান্দাহদের ব্যাপারে কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় প্রসংশা করে বলা হয়েছে :
وَلَقَدْ أَتَيْنَا مُوسَى الْكِتب فَلَا تَكُنْ فِي مِرْيَةٍ مِّنْ لِقَائِهِ وَجَعَلْنَهُ هُدًى لَبَنِي
إِسْرَاءِ يْلَ وَجَعَلْنَا مِنْهُمْ أَئِمَّةً يُهْدُونَ بأَمْرِنَا لَمَّا صَبَرُوا ، وَكَانُوا بِايْتِنَا
يوقنون O - السجدة : ٢٣-٢٤
“এর আগে আমি মূসাকে কিতাব দান করেছি। অতএব তা লাভ করা সম্পর্কে তোমাদের মনে কোনো সন্দেহের সৃষ্টি হওয়া উচিত নয়। এ কিতাবকে আমি বনী ইসরাঈলের জন্য হিদায়াত হিসাবে বানিয়েছি। যতদিন তারা ধৈর্যধারণ করেছে এবং আমার আয়াতের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। ততদিন আমি তাদের মধ্যে এমন পথপ্রদর্শক ও নেতা পাঠিয়েছি যারা আমার নির্দেশে তাদের মধ্যে পথপ্রদর্শনের কাজ করেছে।”
-সূরা আস সাজদা : ২৩-২৪
আর এ মু'মিন, মুখলিস বান্দাহদের ব্যাপারে সূরা আরাফে বলা হয়েছে :
وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِينَ كَانُوا يُسْتَضْعَفُونَ مَشارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِي بُرَكْنَا فيهَا ، وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ الْحُسْنَى عَلَى بَنِي إِسْرَاءِ يْلَا بِمَا صَبَرُوا - وَدَمَرْنَا
ط
مَا كَانَ يَصْنَعُ فِرعون وقومه وَمَا كَانُوا يَعْرِشُونَ ٥ - الاعراف : ۱۳۷
“আর আমি এ ফিরাউন গোষ্ঠীর জায়গায় ঐসব লোকদেরকে এ জমিনের পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত বলয়ের ওয়ারিশ বানিয়ে দিয়েছি, সমৃদ্ধশালী করেছি, যাদেরকে তারা দুর্বল করে রেখেছিলো । এভাবে বনী ইসরাঈলদের ব্যাপারে তোমার আল্লাহর কল্যাণময় ওয়াদা পূরণ হয়েছে কারণ তারা ধৈর্যের সাথে কাজ করেছিলো। আর ফেরাউন ও তার লোকজনের সে সবকিছুই আমরা বরবাদ করে দিলাম যা তারা বানাচ্ছিল এবং উঁচু করেছিলো।”-সূরা আল আরাফ : ১৩৭
তালুত ও তাঁর সঙ্গী, সাথীদের সত্যবাদিতা দৃঢ়তার কথাও এ ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে :
فَلَمَّا جَاوَزَهُ هُوَ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ ، قَالُوا لَاَطَاقَةَ لَنَا الْيَوْمَ بِجَالُوْتَ وَجُنُودِهِ ، قَالَ الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُمْ مُلْقُوا اللَّهِ « كَمْ مِنْ فِئَةٍ قَليلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةٌ كَثِيرَةُ بِإِذْنِ اللهِ ، وَاللهُ مَعَ الصَّبِرِينَ وَلَمَّا بَرَزُوا لِجَالُوتَ وَجُنُودِهِ قَالُوا رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَفِرِينَ . فَهَزَمُوهُمْ بِاِذْنِ الله قد - البقرة : ٢٤٩-٢٥١
“এরপর তালুত এবং তার সহযাত্রী মুসলমানগণ যখন নদী পার হয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলো, তখন তারা তালুতকে বললো : আজ জালুত এবং তার সৈন্য বাহিনীর সাথে মুকাবিলা করার কোনো শক্তিই আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু যারা মনে করতো যে, তাদেরকে একদিন আল্লাহর সাথে নিশ্চয়ই সাক্ষাত করতে হবে, তারা বললো : অনেকবারই দেখা গেছে যে, এক ক্ষুদ্রতম দল আল্লাহর অনুমতিক্রমে একটি বৃহত্তর দলের উপর জয়ী হয়েছে। আল্লাহ নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের সাথী রয়েছেন। যখন তারা জালুত ও তার সৈন্য বাহিনীর সম্মুখীন হলো, তখন তারা দোয়া
করলো : হে আমাদের রব, আমাদেরকে ধৈর্যদান করো, আমাদের পদক্ষেপ সুদৃঢ় করো এবং এ কাফের দলের উপর আমাদেরকে বিজয় দান করো। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর অনুমতিক্রমেই তারা কাফেরদের পরাজিত করে দিলো।”-সূরা আল বাকারা : ২৪৯-২৫১
এতো হলো বনী ইসরাঈলের কিছু মু'মিন-মুখলিসিনের কথা। কিন্তু বনী ইসরাঈল তথা ইহুদী জাতির অধিকাংশই ছিলো বেঈমান। তারা আল্লাহর হুকুমের সাথে খুবই লজ্জাকর ব্যবহার করেছে। তাদের এ ন্যক্কার ও লজ্জাজনক অবস্থার কথা উল্লেখ করে আল্লাহ কুরআনে বলেছেন :
وَلَقَدْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَاءِ يْلَ وَاَرْسَلْنَا إِلَيْهِمْ رُسُلاً ، كُلَّمَا جَاءَ هُمْ رَسُولُ بِمَا لا تَهْوَى أَنْفُسُهُمْ : فَرِيقًا كَذَّبُوا وَفَرِيقًا يَقْتُلُونَ ، وَحَسَبُوا الا
تَكُونَ فِتْنَةٌ فَعَمُوا وَصَمُوا ثُمَّ تَابَ اللهُ عَلَيْهِم ثُمَّ عَمُوا وَصَمُوا كَثِيرٌ مِنْهم
“আমি বনী ইসরাঈল থেকে মযবুত ওয়াদা গ্রহণ করেছি। তাদের নিকট অনেক রাসূল পাঠিয়েছি। কিন্তু যখনই কোনো রাসূল তাদের কৃপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে কোনো কথা নিয়ে এসেছে তখন তারা কাউকে মিথ্যাবাদী বলেছে, কাউকে হত্যা করেছে, এবং নিজেরা ধারণা করে নিয়েছে যে, এখন আর কোনো ফেতনার সৃষ্টি হবে না। তাই তারা অন্ধ ও বধির হয়ে গিয়েছিলো। এরপরও আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও তাদের অধিকাংশ লোক আরো বেশী অন্ধ ও বধির হতে চললো।”-সূরা আল মায়েদা : ৬৯-৭১
এদের ইতিহাস সম্পর্কে কুরআন আরো বলেছে :
وَلَقَدْ أَتَيْنَا بَنِي إِسْرَاءِيلَ الْكِتَبَ وَالْحُكْمَ وَالنَّبُوَّةَ وَرَزَقْنهُم مِّنَ الطَّيِّبت
وَفَضَّلْنَهُم عَلَى الْعَلَمِينَ ، وَأَتينهُم بَيِّنت مِّنَ الْأَمْرِ، فَمَا اخْتَلَفُوا إِلَّا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ لا بَغْيًا بَيْنَهُمْ ، إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيمَةِ فِيمَا
“এর আগে আমি বনী ইসরাঈলকে কিতাব, হুকুম ও নবুয়াত দান করেছিলাম। তাদেরকে আমি জীবন ধারণের জন্য উত্তম জীবিকা দান করেছিলাম। গোটা দুনিয়ার মানুষের উপর তাদেরকে অধিক মর্যাদাশীল
করেছিলাম । দ্বীনের ব্যাপারে তাদেরকে সুস্পষ্ট হিদায়াত দান করেছিলাম ! এরপর তাদের মধ্যে যে মতবিরোধের সৃষ্টি হলো তা তাদের অজ্ঞতার কারণে নয় । বরং নির্ভুল জ্ঞান লাভের পরই মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। আর তা হয়েছে এ কারণে যে তারা একে অপরের উপর বাড়াবাড়ি করতে চাচ্ছিলো।”-সূরা আল জাসিয়া ঃ ১৬-১৭
সাধারণভাবে ও সংক্ষিপ্তভাবে ইহুদী জাতির ব্যাপারে কুরআনের এ বর্ণনার পর বিস্তারিতভাবে এ জাতির বেঈমানীর ইতিহাস ও ব্যাখ্যা জানার জন্য তাদের পাঁচ হাজার বছরের অপরাধ ও বিদ্রোহের ইতিহাসের উপর একবার মনোযোগ সহকারে দৃষ্টি দেয়াই যথেষ্ট ।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত