ইসরাঈল রাষ্ট্রের পতন

ইসরাঈলী সালতানাতের শাসক ও এর অধিবাসীরা প্রতিবেশী জাতিগুলোর দেখাদেখি শিরক ও চারিত্রিক অধঃপতনের দিকে ধাবিত হলো। তাদেরকে এ অধঃপতনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য হযরত ‘ইলিয়াস', হযরত 'আল- ইউসা’ ‘আমুস’ আলাইহিস সালাম যথেষ্ট চেষ্টা চালালেন। কিন্তু এ জাতি এসব গর্হিত কাজ থেকে ফিরে এলো না। তাই এদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হলো। খৃস্টপূর্ব ৭২১ সালে আশওয়ারের কঠোর শাসক ‘সরগুন’ তাদের রাজধানী সামেরিয়াকে জয় করে ইসরাঈলী রাষ্ট্রের অবসান ঘটায়। হাজার হাজার ইসরাঈলী ইহুদী তরবারীর আঘাতে মারা গেলো। সাতাইশ হাজারেরও বেশী প্রভাবশালী ইসরাঈলী ইহুদীকে দেশ থেকে বহিষ্কার করে 'আশুরী রাষ্ট্রের পূর্ব জেলাগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিচ্ছিন্ন করে দিলো ।
ইহুদীয়া রাষ্ট্রের পতন
দ্বিতীয় রাষ্ট্র ইহুদীয়াও হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের পর শিক সহ নৈতিক অধঃপতনের শিকার হলো । এখানেও হযরত ইয়াসইয়াহ ও হযরত ইয়ারমিয়াহ, তাদের বুঝালেন, তাদের খারাপ খারাপ কাজ হতে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা-সাধনা চালালেন। কিন্তু তাদের হীন কার্যক্রমের ধারা শেষ হলো না । অবশেষে খৃস্টপূর্ব ৫৯৮ সালে বাবুলের বাদশাহ বুখতে নসর খোদার গজব হিসাবে আবির্ভূত হলো। ইয়ারদেশালম সহ গোটা সালতানাতে ইহুদীয়াকে জয় করে নিলো । তাদের শাসকও এ সময় গ্রেফতার হলো। এ অবস্থায় ইহুদীয়ারা বিদ্রোহ করে উঠলে খৃস্টপূর্ব ৫৮০ সালে বুখতে নসর আরো কঠিন আক্রমণ চালিয়ে ইহুদীয়াদের সকল ছোট বড় শহর ধ্বংস করে দিলো। ইয়ারদেশালম ও হায়কেলে সুলাইমানীকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করলো। ইহুদীয়াদের বহুসংখ্যক লোককে তাদের এ এলাকা থেকে বের করে নিয়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিলো। যাতে তারা আর শক্তি সঞ্চয় করতে না পারে। একথারই সমর্থনে কুরআন বলছে :
وَقَطَّعْنَهُمْ فِي الْأَرْضِ أُمَما ج - الاعراف : ١٦٨
“আমি তাদেরকে পৃথিবীতে খণ্ড বিখণ্ড করে বহু সংখ্যক জাতিতে বিভক্ত করে দিয়েছি।”-সূরা আল আরাফ : ১৬৮ ইহুদীয়াদের আবার ফিলিস্তিনে আগমন
ইসরাঈলী সালতানাত আর কোনো দিনই এ নৈতিক ও আকীদাগত বিশ্বাসের অধঃপতন পদস্খলন থেকে উঠে আসতে পারেনি। কিন্তু ইয়াহুদীয়া সালতানাতের অধিবাসিগণের মধ্যে একটা দল সত্যের উপর প্রতিষ্ঠত ছিলো। আর অন্যদেরও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার দাওয়াত দিতো। এসব লোকেরা নিজেরা সংশোধিত জীবন যাপনের চেষ্টা চালানো জারি রেখেছে। মানুষদেরকেও তারা তাওবা করার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
অবশেষে বাবুল সালতানাতের পতন ঘটলো । খৃস্টপূর্বে ৫৩৯ সালে ইরানের সেনাপতি 'সাইরাস' বাবুল জয় করে নিলো। এর পরের বছরই ইহুদীদেরকে আবার ফিলিস্তিনে ফিরে যেতে ও সেখানে দ্বিতীয়বারের মতো বসবাস করার আম নির্দেশ দিয়ে দিলো ।........
সাইরাস ইহুদীয়াদেরকে আবার হায়কেলে সুলাইমানী তৈরী করার নির্দেশও দিয়ে দিলো । সাইরাসের পরে 'দারাইউস প্রথম' খৃস্টপূর্ব ৪২২ সালে ইহুদীয়ার শেষ বাদশাহ পুতিকে ইহুদীরা গভর্ণর বানালেন । খৃস্টপূর্ব ৪৫৮ সালে হযরত ওযায়ের (আযরা) ইহুদীয়ায় পৌছলেন। শাহে ইরান তাকে এক শাহী ফরমানের মাধ্যমে দীনের দাওয়াতের পুনর্গঠনের কাজ ও প্রচারের ব্যাপারে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়ে দিলেন। এ ফরমান থেকে সুযোগ গ্রহণ করে হযরত ওযায়ের সব ভালো ভালো লোকদেরকে সমবেত করলেন। তাওরাতকে বিভিন্ন জায়গা হতে একত্রিত করলেন আবার নতুন করে। ইহুদীদেরকে দ্বীনি শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা করলেন। তাদের নৈতিক ও আকীদাগত খারাপ দিকগুলো সংসধোন করে নিলেন ।

ইউনানের উত্থান

ইসকান্দার আযমের বিজয়াভিযান এবং আবার ইউনানী শাসনের উত্থানের দ্বারা ইহুদী সালতানাতের গায়ে বিরাট ধাক্কা লাগলো। এমনকি খৃস্টপূর্ব ১৯৮ সনে শামের ইউনানী সালুকী হুকুমাত ফিলিস্তিনকে দখল করে ফেললো । ধর্মীয়ভাবে এ ইউনান বিজয়ীরা মুশরিক এবং সকল প্রকার নৈতিক অধঃপতনের পতাকাবাহী ছিলো। তারা ইহুদী ধর্ম শিক্ষা ও ইহুদী সাংস্কৃতিকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করতো । ইহুদীদের একটি অংশ স্বয়ং তাদের নীতিতে বিলীন হয়ে গিয়ে তাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে লাগলো। খৃস্টপূর্বে ১৭৫ সালে ৪র্থ 'ইটোকাস' ক্ষমতায় আরোহণ করে শক্তি খাটিয়ে ইহুদী ধর্মকে নিঃশেষ করে দেবার চেষ্টা করলো। তিনি হায়কেলে সুলায়মানীতে মূর্তি রেখে দিয়ে ইহুদীদেরকে তার সামনে সাজ্দা করার জন্য বাধ্য করলো। ইটোকাস তাদের কুরবানীর গাহতে কুরবানী দেয়া বন্ধ করে দিয়ে মূর্তিদের জন্য কুরবানী দিতে ইহুদীদেরকে হুকুম দিলো। যাদের ঘরে তাওরাতের কোনো সংস্করণ পাওয়া যাবে অথবা যারা 'সাবতের' দিনের উপর আমল করবে অথবা বাচ্চাদের খাতনা করাবে তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি বিধান করলো। কিন্তু এ কড়াকড়ি ও বাড়াবাড়ী মূল বনী ইসরাঈলীদের মন-মানসিকতাকে পরিবর্তন করতে পারেনি। বরং তাদের মধ্যে হযরত ওযায়ের আলাইহিস সালামের সৃষ্টি দীনি রূহের প্রভাবে একটি বিরাট দ্বীনি আন্দোলন গড়ে উঠে। এ আন্দোলনই ইতিহাসের পাতায় “মাক্কাবী বিদ্রোহ” নামে খ্যাত আছে।
মাক্কাবী আন্দোলন
হযরত ওযায়ের আলাইহিস সালামের প্রচারিত দ্বীনদারীর স্ত্রীটের বিরাট ফলাফলের কারণে ইহুদীদের অধিকাংশ লোকই এ মাক্কাবী আন্দোলনে যোগ দিলো। অল্প দিনের মধ্যেই তারা ইউনানীদেরকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে একটি স্বাধীন দেশ কায়েম করলো। এ স্বাধীন দেশটি খৃস্টপূর্ব ৬৭ সাল পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিলো। ধীরে ধীরে এ রাষ্ট্রটি ইহুদী ও ইসরাঈলী রিয়াসাতের অন্তর্গত এ ধরনের অঞ্চলগুলোও তাদের অধীনে নিয়ে নিলো। বরং তারা এমন কিছু কিছু এলাকাও জয় করে নিলো যা হযরত দাউদ ও হযরত সুলাইমান আলাই- হিস সালামের কালেও জয় করা হয়নি ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]