আল্লাহর সাথে ওয়াদা করে তার বিরোধিতা

ইহুদী জাতি থেকে অনেক আগেই ওয়াদা নেয়া হয়েছিলো। তারা আল্লাহর সব রাসূলের উপর বিশেষ করে শেষ নবীর প্রতি ঈমান আনবে। তারা তার সাথে মিলে সত্যকে প্রতিষ্ঠা ও বিজয়ী করার জন্য জিহাদ করবে। বস্তুতঃ হযরত মূসা আলাইহিস সালাম নিজের জাতির জন্য আল্লাহর রহমত ও নিরাপত্তার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন । তখন আল্লাহর দরবার হতে ইরশাদ হলো :
قَالَ عَذَابِي أُصِيبُ بِهِ مَنْ أَشَاءُ ، وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَوةَ وَالَّذِينَ هُم بِايْتِنَا يُؤْمِنُونَ الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيُّ الْأُمِّيُّ الَّذِي يَجِدُونَهُ مَكْتُوبًا عِنْدَ هُمْ فِي التَّوْرَةِ وَالْإِنْجِيلِ ن ز
“আল্লাহ বলেন, সাজা তো আমি যাকে চাই তাকে দেই। কিন্তু আমার রহমত প্রতিটি জিনিসের উপর ছেয়ে আছে। আর তা আমি ঐসব লোকের জন্য লিখে রাখবো যারা নাফরমানী হতে বেঁচে থাকবে। যাকাত আদায় করবে। আমার আয়াতের উপর ঈমান আনবে। যারা এ উম্মি নবীর আনুগত্য করবে। যার উল্লেখ তাদের নিকট রক্ষিত কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত দেখতে পাবে!”-সূরা আল আরাফ : ১৫৬-১৫৭
مُحَمَّدٌ رَّسُولُ اللهِ ، وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُم تَرهُم ركَعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلاً مِّنَ اللهِ وَرِضْوَانًا ، سيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِمْ مَنْ أَثَرِ السُّجُودِ َذلِكَ مَثَلُهُمْ فِى التَّورةِ ، وَمَثْلُهُم فِى الْإِنْجِيلِ - ط
“মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। যেসব লোক তার সাথে রয়েছে তারা কাফেরদের উপর বজ্র কঠোর। পরস্পরে খুবই রহমদিল । তুমি তাদেরকে কখনো দেখবে রুকূ' করছে, কখনো সাজদা করছে। তারা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ তালাশ করছে। সাজ্দা করার চিহ্ন তাদের চেহারায় প্রস্ফুটিত । এসব তাদের বৈশিষ্ট্য যা তাওরাতে আছে এবং ইঞ্জিলেও আছে।”
তাওরাতের দ্বিতীয় বিবরণ ১৮ : ১৮ এ আছে ঃ 46
-সূরা আল ফাতাহ : ২৯
আমি উহাদের জন্য উহাদের ভ্রাতৃগণের মধ্য হইতে তোমার সদৃশ এক ভাববাদী উৎপন্ন করিব, ও তাঁহার মুখে আমার বাক্য দিব ; আর আমি তাঁহাকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিব, তাহা তিনি উহাদিগকে বলিবেন । শুধু এখানেই শেষ নয়। বরং তাদের নবী-রাসূলগণ বারবার তাদেরকে একথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। হযরত মূসা আলাইহিস সালামের কথা উপরে উল্লেখ হয়েছে। হযরত ঈসা আলাইহিস সালামও বনী ইসরাঈলকে শেষ নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর আগমনের শুভসংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহ বলছেন :
وَإِذْ قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ يُبَنِي إِسْرَاءِ يْلَ إِنِّي رَسُولُ اللهِ إلَيْكُمْ مُصَدِّقًا بَينَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَةِ وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَّاتِي مِنْ بَعدِى اسْمُهُ أَحْمَدُ ط لَّمَا
“এবং সেই সময়ের কথা স্মরণ করো যখন ঈসা ইবনে মারিয়াম বলেছিলেন, হে বনী ইসরাঈল আমাকে আল্লাহর রাসূল বানিয়ে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন এবং আমি আমার আগে পাঠানো ‘তাওরাতে' বিশ্বাসী । আর আমার পরে একজন রাসূল আসবেন। যার নাম হবে আহমাদ। আমি তার আগমনের শুভ সংবাদ দিচ্ছি।”-সূরা আস সাফ : ৬
তাই যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আবির্ভাব ঘটলো তখন ইহুদীরা তাঁকে বিলক্ষণ চিনতে পারলো। কিন্তু এরপরও তারা কুফরী হতে বিরত থাকেনি ।
কুরআন এ ব্যাপারটি স্পষ্ট করে বলেছে :
وَالَّذِينَ أتَيْنَهُمُ الْكِتب يَعْرِفُونَهُ كَمَا يَعْرِفُونَ أَبَنَاءَ هُم ، وَإِنَّ فَرِيقًا مِّنْهُم
لَيَكتُمُونَ الْحَقِّ وَهُم يَعْلَمُونَ ٥ - البقرة : ١٤٦
“যাদেরকে আমি কিতাব দান করেছি তারা (ইহুদী জাতি) এমনভাবে একে চিনে-জানে যেভাবে তারা তাদের সন্তানকে চিনে-জানে । কিন্তু তাদের একটি দল জেনে বুঝে সত্যকে গোপন করে রেখেছে।
-সূরা আল বাকারা : ১৪৬
শুধু তা-ই নয়। বরং তারা (ইহুদীরা) সত্য ও সত্যপন্থীদের মুকাবিলায় কুফর ও কুফরপন্থীদের বন্ধুত্ব ও সত্যতা অবলম্বন করেছে। কুরআনের ভাষায় :
تَرَى كَثِيرًا مِنْهُم يَتَولُونَ الَّذِينَ كَفَرُوا ، لَبِئْسَ مَا قَدَّمَتْ لَهُمْ أَنْفُسُهُمْ أَنْ
سَخِطَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَفِي الْعَذَابِ هُمْ خَلِدُونَ ٥ - المائدة : ٨٠
“আজ তুমি তাদের মধ্যে অনেক লোক দেখছো যারা ঈমানদারদের মুকাবিলায় কাফেরদের সাহায্য সহযোগিতা ও তাদের সাথে বন্ধুত্ব করছে। নিশ্চয় অত্যন্ত খারাপ পরিণামই সামনে রয়েছে যার ব্যবস্থা তাদের প্রবৃত্তিসমূহ তাদের জন্য করেছে। আল্লাহ তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারা চিরস্থায়ী আযাবে নিমজ্জিত।”-সূরা আল মায়েদা : ৮০
তাদের অহমিকা ও পথভ্রষ্টতা এতদূর সীমা অতিক্রম করে গেছে যে, তারা আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে তাদের মনগড়া ধ্যান-ধারণা ও তাগুতের (শয়তান) বন্দেগী অবলম্বন করলো। তারা আল্লাহ দ্রোহীদের ব্যাপারে বলতে লাগলো । কুরআনের ভাষায় :
لِلَّذِينَ كَفَرُوا هَؤُلَاءِ اهْدَى مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا سَبِيلاً - النساء : ٥١
“ঈমানদারদের চেয়ে তো এ কাফেররাই অধিক সঠিক পথে আছে।”
-সূরা আন নিসা : ৫১
সত্যের সাথে দুশমনির ও সত্যপন্থীদের সাথে হিংসা বিদ্বেষে এ লোকেরা কাফিরদের চেয়েও বেশ বেড়ে গেছে। কুরআন বলছে :
لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَةٌ لِلَّذِينَ آمَنُوا الْيَهُودَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُوا :
“তোমরা ঈমানদারদের শত্রুতার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী কঠোর পাবে ইয়াহুদী মুশরিকদেরকে।”-সূরা আল মায়েদা : ৮২
قُلْ مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِجِبْرِيلَ فَإِنَّهُ نَزَّلَهُ عَلَى قَلْبِكَ بِإِذْنِ اللَّهِ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُدًى وَبُشْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ ٥ مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِلهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَرُسُلِهِ
وَجِبْرِيلَ وَمِيْكُل فَإِنَّ اللَّهَ عَدُوٌّ لِلْكَفِرِينَ - البقرة : ۹۸۹۷ -
“তাদেরকে বলো যারা জিবরাঈলের সাথে শত্রুতা পোষণ করে তাদের জানা থাকা উচিত যে জিবরাঈল আল্লাহর হুকুমেই এ কুরআন তোমার হৃদয়ে ঢেলে দিয়েছে। যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যতা স্বীকার ও সমর্থন করে এবং ঈমানদারদের জন্য সঠিক পথের সন্ধান ও সাফল্যের সুসংবাদ নিয়ে এসেছে। যারা আল্লাহ তাআলার ফেরেশতা এবং জিবরাঈল ও মিকাঈলের শত্রু, আল্লাহ সেই কাফেরদের শত্রু।”
-সূরা আল বাকারা : ৯৭-৯৮ يأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِنُوا الَّذِينَ اتَّخَنُوا دِينَكُمْ هُزُوا وَلَعِبًا مِّنَ الَّذِينَ أوتُوا الْكِتَبَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ ، وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنْ كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ) وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى الصَّلوةِ اتَّخَذُوهَا هُزُوًا وَلَعِبا ، ذلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لا يَعْقِلُونَO قُلْ يَاهْلَ الْكِتَبِ هَلْ تَنْقِمُونَ مِنَّا إِلَّا أَنْ اُمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلُ : وَأَنَّ أَكْثَرَكُمْ فَسَقُونَ ٥ - المائدة : ٥٩٥٧
“হে ঈমানদার লোকেরা ! তোমাদের সামনে আহলি কিতাবের যারা তোমাদের দ্বীনকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও বিনোদনের সামান বানিয়ে নিয়েছে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে নিজেদের বন্ধু প্রিয়জন বানিও না। যদি তোমরা মু'মিন হয়ে থাকো। তোমরা যখন নামাযের আহবান জানাও তখন তারা তা নিয়ে বিদ্রূপ করে। তা নিয়ে খেলা করে। কারণ তাদের বুদ্ধি-জ্ঞান কিছু নেই । তাদেরকে বলো, হে আহলি কিতাব! যে কথার জন্য তোমরা আমাদের উপর বিগড়ে আছো ; তাতো এছাড়া আর কিছুই নয় যে, আমরা আল্লাহর উপর, দ্বীনের ঐ তালীমের উপর ঈমান এনেছি যা আমাদের উপর নাযিল হয়েছে । আমাদের আগেও নাযিল হয়েছিলো । আর তোমরা অধিকাংশ লোক ফাসেক।”-সূরা আল মায়েদা ঃ ৫৭-৫৯
يَأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا بِطَانَةً مِنْ دُونِكُمْ لَا يَأْلُونَكُمْ خَبَالاً ، وَدُّوا مَا عَنتُمْ ، قَدْ بَدَتِ الْبَغْضَاء مِنْ أَفْوَاهِهِمْ ، وَمَا تُخْفِي صُدُورُهُمْ أَكْبَرُ ط قَدْ بَيْنَا لَكُمُ الْايْتِ إِنْ كُنتُمْ تَعْقِلُونَ ، فَانْتُمْ أَوْلَاءِ تُحِبُّونَهُمْ وَلَا يُحِبُّونَكُمْ وتُؤْمِنُونَ بِالْكِتب كلِهِ ، وَإِذَا لَقُوكُمْ قَالُوا آمَنَّا ، وَإِذَا خَلَوْا عَضُوا عَلَيْكُمُ ق الْأَنَامِلَ مِنَ الْغَيْظِ ، قُلْ مُوتُوا بِغَيْظِكُمْ ، إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِه
“হে ঈমানদারগণ ! তোমরা মু'মিন ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোনো ত্রুটি করে না। তোমরা কষ্টে থাকো, তাতেই তাদের আনন্দ, শত্রুতা প্রসূত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যাকিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে তা আরো অনেক বেশী জঘন্য। আমরা তোমাদেরকে সুস্পষ্ট ও পরিষ্কার হেদায়াত দান করেছি, যদি তোমরা বুদ্ধিমান হও। তোমরা তো তাদের ভালোবাস, কিন্তু তারা তোমাদের প্রতি কোনো ভালোবাসাই পোষণ করে না, অথচ তোমরা সমস্ত আসমানী কিতাবকে মান। তারা যখন তোমাদের সাথে মিশে তখন বলে আমরাও তোমাদের রাসূল এবং তোমাদের কিতাব মেনে নিয়েছি। পক্ষান্তরে তারা যখন তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে যায় ৷ তোমাদের উপর তাদের ক্রোধ এত বেড়ে যায় যে, তারা নিজেদের আঙ্গুল কামড়াতে থাকে। (হে রাসূল! আপনি) বলুন তোমরা তোমাদের আক্রোশে জ্বলেপুড়ে মরতে থাকো। আল্লাহ মনের কথা সবচেয়ে ভালো জানেন।”-সূরা আলে ইমরান : ১১৮-১১৯
এভাবেও ইহুদী জাতি তাদের নিজেদের সংশোধন, হিদায়াত এবং আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও রেজামন্দি হাসিলের শেষ সুযোগ হারিয়ে বসলো । এটাই তাদের সেই অপরাধ, যার কারণে অবশেষে তারা চিরদিনের জন্য অবমাননা ও লাঞ্ছনার শিকারে পরিণত হয়েছে এবং 'দুনিয়ার জীবনের লাঞ্ছনা আর কিয়ামাতের দিন কঠিন আযাবের দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। এটাই তাদের জাতীয় বিধিলিপি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইহুদীদের অধঃপতনের ইতিহাসের এক একটা দিক, এবং ইহুদীদের গোটা কার্যক্রম একটি পরিপূর্ণ চিত্র কুরআন মাজিদে বিদ্যমান আছে। এটা ছিলো তাদের শত শত বছরের অধঃপতনের স্বাভাবিক পরিণতি। এ ইতিহাসের উপর একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেই একথা সহজেই বুঝে আসে। কেনো এদের অস্তিত্ব ধ্বংস ও বাতিলের সামর্থ হয়ে দাঁড়িয়েছে ? কি কারণে এরা দুনিয়ায় সর্বত্র অপবিত্র, অপরাধী, দোষ-ত্রুটিপূর্ণ, দুর্বল চরিত্রহীন, বিভ্রান্তি ও মানবীয় বঞ্চনার বুনিয়াদী কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর দুনিয়ার যেখানেই কোনো সুনাম নেক কাজ, কল্যাণ, ভালো অথবা আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগী নজরে পড়বে তা হবে ইয়াহুদী জাতির প্রকৃত পরিচয় ও চেহারার বিপরীত ।
ইহুদী জাতির উপর অভিশাপের এ একটা বিস্ময়কর শিক্ষণীয় দিক। এ লোকেরা আজ প্রতিটি মিথ্যা, দুষ্কৃতি, অনিষ্ট ও ধ্বংসের পতাকাবাহী ও প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে গোচরিভূত হচ্ছে। যার দরুন বিশ্বমানবতা আজ মুখ থুবড়ে পড়ছে। আল্লাহর সাথে দুশমনির পর বিশ্বমানবতার সাথে দুশমনি করা ইহুদী জাতির সবচেয়ে বড় জাতীয় অপরাধ ।
এ বিষয়টি শেষ করার আগে আমি কুরআনে আমাদের সামনে পেশ করা ইহুদী জাতির জাতীয় ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের একটা সামষ্টিক আলোচনা পাঠকের সামনে তুলে ধরবো। ইনশাআল্লাহ । আল্লাহ সম্পর্কে তাদের বিভ্রান্তি,
ইহুদীদের অধঃপতনের মূল কারণ হলো আল্লাহর ধারণায় তাদের বিভ্রান্তি ।
কুরআন বলছে :
وقَالَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصْرِى نَحْنُ ابْنَةُ اللهِ واحباؤُهُ ، قُلْ فَلِمَ يُعَذِّبُكُم بِذُنُوبِكُمْ ،
بَلْ أَنْتُمْ بَشَرٌ مِّمَّنْ خَلَقَ - - المائدة : ۱۸
“ইহুদী ও খৃস্টানরা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান এবং তার খুব প্রিয়জন । তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন। যদি তা-ই হয় তাহলে তিনি তোমাদেরকে পাপের কারণে কেনো শাস্তি দান করেন ? বরং (সত্য কথা হলো) মূলতঃ তোমরাও অন্যান্য সৃষ্ট মানুষের মতো সাধারণ মানুষ।”
কুরআনে আরো বলছে : -সূরা আল মায়েদা : ১৮
وَقَالَتِ الْيَهُودُ عُزَيْزُ نِ ابْنُ اللهِ وَقَالَتِ النَّصْرَى الْمَسِيحُ ابْنُ اللَّهِ ، ذَلِكَ ط ج قَوْلُهُمْ بأَفْوَاهِهِمْ ، يُضَاهِنُونَ قَوْلَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ قَبْلُ ، قَتَلَهُمُ اللهُ ، أَنَّى يُؤْفَكُونَ ٥ - التوبة : ٣٠
“ইহুদীরা বলে, ওযায়ের আল্লাহর পুত্র। আর খৃস্টানরা বলে মসিহ আল্লাহর পুত্র। এসব কথা ভীত্তিহীন, যা তাদের মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে। এসব কথা তাদের পূর্ববর্তী কাফেরদের মতো আল্লাহর মার এদের উপর। এরা কোথা হতে এসব ধোঁকা খাচ্ছে।”-সূরা আত তাওবা : ৩০
আল্লাহ আরো বলছেন : وَقَالَتِ الْيَهُودُ يَدُ اللهِ مَغْلُولَةٌ غُلَّتْ أَيْدِيهِمْ وَلُعِنُوا بِمَا قَالُوا ، بَلْ يَدَهُ ید مَبْسُوطَتُنِ ا يُنْفِقُ كَيْفَ يَشَاءُ ط - المائدة : ٦٤ لا
“আর ইহুদীরা বলে, আল্লাহর হাত বন্ধ হয়ে গেছে। তাদেরই হাত বন্ধ হোক। এসব বাজে কথা বলার জন্য তাদের উপর অভিসম্পাত। বরং আল্লাহর হাত উন্মুক্ত । তিনি যেভাবে চান খরচ করেন।”
-সূরা আল মায়েদা : ৬৪
তাদের ব্যাপারে কুরআন আরো বলছে :
وَإِذَا لَقُوا الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا ، وَإِذَا خَلاَ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ قَالُوا اتُحَدِّثُونَهُمْ بِمَا فَتَحَ اللهُ عَلَيْكُمْ لِيُحَاجُوكُم بِهِ عِنْدَ رَبِّكُمْ ، أَفَلَا تَعْقِلُونَ اَوَلَا يَعْلَمُونَ أنَّ اللهَ يَعْلَمُ مَا يُسِرُونَ وَمَا يُعْلِنُونَ - البقرة : ٧٦-٧٧
“যখন তারা মুসলমানদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে আমরা মুসলমান হয়েছি। আর যখন পরস্পরের সাথে নিভৃতে একান্তে মত বিনিময় করে তখন বলে, পালনকর্তা তোমাদের জন্য যা প্রকাশ করেছেন তাকি তাদের কাছে (মুসলমান) বলে দিচ্ছো। তাহলে যে তারা এগুলোকে আল্লাহর সামনে তোমাদের বিরুদ্ধে দলিল হিসাবে পেশ করবে। তারা কি এতটুকুও জানে না যে, আল্লাহ সে সব বিষয় জানেন যা তারা গোপন করে ও যা প্রকাশ করে ।”-সূরা আল বাকারা : ৭৬-৭৭
আখিরাত সম্পর্কে তাদের ভুল ধারণা
তাদের জীবনের সবচেয়ে ভুল ও গোমরাহীর মূল কারণ হলো পরকাল সম্পর্কে তাদের এ ভুল ধারণার বিভ্রান্তি । কুরআনের ভাষায়-
وقَالُوا لَنْ يُدْخُلَ الْجَنَّةَ إِلا مَنْ كَانَ هُودًا أَوْ نَصْرُى ، تِلْكَ أَمَا نِيُّهُمْ ، قُلْ
هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ إِنْ كُنتُم صدقين - البقرة : ۱۱۱
b
“তারা বলে, কোনো ব্যক্তিই জান্নাতে যেতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত সে ইহুদী কিংবা (খৃস্টানদের মতে) খৃস্টান না হবে। এটা তাদের মনের বাসনা মাত্র। বলে দিন, তোমাদের দাবীতে তোমরা সত্যবাদী হলে তার প্রমাণ পেশ করো।”-সূরা আল বাকারা : ১১১
তাদের সম্পর্কে আল্লাহ কুরআনে বলছেন :
وَقَالُوا لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ إِلا أَيَّامًا مَعْدُودَةً ، قُلْ اتَّخَذْتُمْ عِنْدَ اللهِ عَهْدًا فَلَنْ
يُخْلِفَ اللهُ عَهْدَهُ أَمْ تَقُولُونَ عَلَى اللهِ مَا لا تَعْلَمُونَ - البقرة : ۸۰
“তারা বলে, দোযখের আগুন কোনো অবস্থাতেই আমাদেরকে হাতে গণা কয়েকদিন ছাড়া স্পর্শ করতে পারবে না। তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তোমরা আল্লাহর কাছ থেকে এমন কোনো ওয়াদা পেয়ে গেছো নাকি যা তিনি ভঙ্গ করতে পারবেন না ?”-সূরা আল বাকারা : ৮০
قُلْ إِنْ كَانَتْ لَكُمُ الدَّارُ الْآخِرَةُ عِنْدَ اللهِ خَالِصَةً مِّنْ دُونِ النَّاسِ فَتَمَنَّوا
الْمَوْتَ إِنْ كُنتُم صدقين - البقرة : ٩٤
“তাদেরকে বলুন, সত্যিই আল্লাহর কাছে পরকালের ঘর (জান্নাত) সকল মানুষকে বাদ দিয়ে যদি তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে থাকে, (তাহলে এমন ভালো জিনিস পাবার জন্য) তোমাদের তো উচিত মৃত্যু কামনা করা । যদি তোমাদের ধারণায় তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।”
-সূরা আল বাকারা : ৯৪
وَيَجْعَلُوْنَ الله مَا يَكْرَهُونَ وَتَصفُ الْسِنَتُهُمُ الْكَذِبَ اَنَّ لَهُمُ الحُسنى
لاَجَرَمَ أَنْ لَهُمُ النَّارَ وَانَّهُمْ مُفْرَطُونَ ٥ - النحل : ٦٢
“তাদের মুখ আরো মিথ্যা কথা বলে যে, তাদের জন্য আখিরাতে কেবল মঙ্গলই নিহিত (তাদের কথা ঠিক নয়) তাদের জন্য তো একটিই জিনিস সেখানে আছে। তাহলো জাহান্নামের আগুন। এদেরকে অবশ্যই সবার আগে এখানে পৌঁছানো হবে।”-সূরা আন নাহল : ৬২
আল্লাহ বলছেন :
ذلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا لَنْ تَمَسُّنَا النَّارُ إِلا أَيَّامًا مَّعْدُودَت من وَغَرَّهُمْ فِي دِينِهِم مَّا
كانوا يفترون - ال عمران : ٢٤
“তাদের জীবন পদ্ধতি এরূপ হবার কারণ এই যে, তারা বলে যে, জাহান্নামের আগুন আমাদেরকে স্পর্শও করতে পারবে না । আর যদি জাহান্নামের শাস্তি মিলেও তা হবে হাতে গণা কয়েকদিন। তাদের মনগড়া বিশ্বাস তাদেরকে তাদের দ্বীনের ব্যাপারে বড় ভুল ধারণায় নিমজ্জিত রেখেছে।”-সূরা আলে ইমরান : ২৪

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]