ইহুদী নবী-রাসূলদের সাথে তাদের ব্যবহার

নবী-রাসূলদের সাথেও তারা কত গর্হিত আচরণ করেছে তা কুরআনের ভাষায় শুনুন ঃ
وَلَمَّا جَاءَ هُمْ رَسُولُ مَنْ عِنْدِ اللهِ مُصَدِّقُ لَمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِيقٌ مِّنَ الَّذِينَ
أوتُوا الكتب كتب الله وَرَاءَ ظُهُورِهِم كَأَنَّهُمْ لا يَعْلَمُونَ )
“যখনই তাদের নিকট আল্লাহর তরফ থেকে কোনো রাসূল আগমন করেন, তাদের নিকট থেকেই বিদ্যমান (আল্লাহর) কিতাবের সত্যতা স্বীকার ও সমর্থন করে তখনই এ ইহুদীদের (আহলি কিতাব) একটি দল আল্লাহর কিতাবকে এমনভাবে পেছনে ফেলে রেখেছে যেনো তারা এ সম্পর্কে কিছুই জানে না।”-সূরা আল বাকারা : ১০১
তাদের এ হঠকারিতার ব্যাপারে কুরআন আরো বলছে :
أَمْ تَقُولُونَ إِنَّ إِبْرهِمَ وَإِسْمَعِيلَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطَ كَانُوا هُودًا أَوْ نَصْرى ، قُلْ أَنْتُمْ أَعْلَمُ أَمَ اللَّهُ ، وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَهُ مِنَ
الله « وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ ٥ - البقرة : ١٤٠
“অথবা তোমরা আরো কি বলতে চাও যে, ইবরাহীম, ইসহাক, ইসমাঈল, ইয়াকুব ও ইয়াকুবের বংশধর সকলেই ইহুদী ছিলেন। কিংবা খৃস্টান। হে রাসূল আপনি বলে দিন, এ ব্যাপারে তোমরা বেশী জানো, না আল্লাহ বেশী জানেন ? যার নিকট আল্লাহর তরফ হতে কোনো সাক্ষ্য বর্তমান রয়েছে সে যদি তা গোপন করে তবে তার চেয়ে বড় যালেম আর কে হতে পারে ? জেনে রাখো তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে আল্লাহ মোটেই গাফিল নন।”-সূরা আল বাকারা : ১৪০
নবীদের ব্যাপারে এ ঝগড়া সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে : ياهل الكتب لِمَ تُحَاجُونَ فِي إِبْرهِيمَ وَمَا أُنزِلَتِ التَّوْرَةُ وَالْإِنْجِيلُ إِلا مِنْ
“হে আহলে কিতাব ! তোমরা ইবরাহীম সম্পর্কে আমার সাথে কেনো ঝগড়া করো ? তাওরাত ইঞ্জিল তো ইবরাহীমের পরে নাযিল হয়েছে। তোমরা কি এতটুকু কথাও বুঝ না ?”-সূরা আলে ইমরান : ৬৫
কুরআনে এ সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে :
كُلَّمَا جَاءَهُمْ رَسُولُ بِمَا لا تَهْوَى أَنْفُسَهُمْ لا فَرِيقًا كَذَّبُوا وَفَرِيقًا يَقْتُلُونَ
“যখনই তাদের নিকট কোনো রাসূল তাদের নফসের খাহেশের বিপরীত কোনো জিনিস নিয়ে এসেছে তখন তাদের কাউকে তারা মিথ্যাবাদী বলছে, আবার কাউকে হত্যা করছে।”-সূরা আল মায়েদা : ৭০
তাদের ওলামা ও নেতৃবৃন্দ
ইহুদী আলেম সমাজ ও নেতৃবৃন্দের চরিত্র এত হীন ও জঘন্য পর্যায় নেয়ে গিয়েছিলো যে, কুরআন সে সবের বর্ণনা দিয়ে বলছে :
يأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ كَثِيرًا مِّنَ الْاَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَاكُلُونَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ـ - التبوية : ٣٤
“হে ঈমানদারগণ, এ ইহুদীদের (আহলি কিতাব) অধিকাংশ আলেম আর দরবেশদের অবস্থা হলো তারা মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায় এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে।”-সূরা আত তাওবা : ৩৪
এ ইহুদী আলেমদের মুনাফেকী আচরণের কারণে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তাদেরকে এ ভাষায় র্ভৎসনা করেছিলেন :
“তিনি কহিলেন, হা ব্যবস্থাবেত্তারা, ধিক্ তোমাদিগকেও, কেননা তোমরা মনুষ্যদের উপরে দুর্ব্বহ বোঝা চাপাইয়া দিয়া থাক; কিন্তু আপনারা একটী অঙ্গুলি দিয়া সেই সকল বোঝা স্পর্শ কর না।”-১১ ঃ ৪৬
এদের এ ধরনের মুনাফেকী আচরণের কথা উল্লেখ করে কুরআনও এদের বলছে :
أَتَامُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِ وَتَنْسَوْنَ اَنْفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتُبَ ، أَفَلَا تَعْقِلُونَ
“তোমরা তো অন্যদেরকে ভালো কাজ করার জন্য হুকুম দিচ্ছো । কিন্তু নিজেদের বেলায় তা করা ভুলে যাচ্ছো। অথচ তোমরা আল্লাহর কিতাব পড়েছো। তোমরা কি একটুও বুদ্ধি-সুদ্ধি খরচ করে কাজ করছো না।”-সূরা আল বাকারা : ৪৪
। তারা কিতাবকে বিকৃত ভঙ্গিতে পড়তো যাতে মানুষ বুঝে তারা কিতাব পড়ছে। অথচ তারা কিতাব পড়ছে না। তাদের এ আচরণ সম্পর্কে কুরআন স্বয়ং বলছে :
وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًا يَلُونَ الْسِنَتَهُم بِالْكِتبِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ الْكِتُبِ وَمَا هُوَ مِنَ
الْكِتُبِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى الله الكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ ٥ - ال عمران : ۷۸
“তাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করার সময় জিহবাকে এমনভাবে উলট-পালট করে যাতে, তোমরা যেনো মনে করো তারা কিতাবের মূল ভাষণ পাঠ করছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে তা কিতাবের ভাষা নয়। তারা বলে, আমরা এতে যা কিছু পড়ি তা সবই আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত । অথচ প্রকৃতপক্ষে তা আল্লাহর তরফ হতে প্রাপ্ত নয় । তারা জেনে শুনে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা কথা আরোপ করছে।
-সূরা আলে ইমরান : ৭৮
আল্লাহ তাদের এ ধোঁকাবাজীর মুখোশ উন্মোচন করে বলছেন :
فَوَيْلٌ لِلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الكتب بِأَيْدِيهِمْ ، ثُمَّ يَقُولُونَ هَذَا مِنْ عِنْدِ اللهِ
لِيَشْتَرُوا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلاً ـ - البقرة : ٧٩
“অতএব ধ্বংস সেইসব লোকের জন্য অনিবার্য যারা নিজ হাতে শরীয়াতের বিধান রচনা করে তারপর লোকদেরকে বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। যাতে এর বিনিময়ে তারা সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে।”-সূরা আল বাকারা : ৭৯
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ আরো বলছেন ঃ
قُلْ مَنْ أَنْزَلَ الْكِتَبَ الَّذي جَاءَ بِهِ مُوسَى نُورًا وَهُدًى لِلنَّاسِ تَجْعَلُوْنَهُ
قَرَاطِيْسَ تُبْدُونَهَا وَتُخْفُونَ كَثِيرًا ج - الانعام : ۹۲
“তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, ঐ গ্রন্থ কে নাযিল করেছে যা মূসা নিয়ে এসেছিলো ? যা নূর বিশেষ এবং মানবজাতির জন্য হেদায়াত। তোমরা এ কিতাবকে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত পাতায় রেখে লোকদের জন্য প্রকাশ করছো । এবং বেশীর ভাগই গোপন করছো।।”-সূরা আল আনআম : ৯১


أَفَتَطْمَعُوْنَ أَنْ يُؤْمِنُوا لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِّنْهُم يَسْمَعُونَ كَلَامَ اللهِ ثُمَّ
يحرفونه مِن بَعْدِ مَا عَقَلُوه وهم يَعْلَمُونَ ٥ - البقرة : ٧٥
“হে মুসলমানেরা তোমরা কি আশা পোষণ করছো যে, লোকেরা তোমাদের দাওয়াতে ঈমান গ্রহণ করবে ? অথচ তাদের এক গোষ্ঠী আলেম, আল্লাহর কালাম শুনছে। আর খুব বুঝে শুনে জ্ঞাতসারে এর মধ্যে পরিবর্তন আনছে।”-সূরা আল বাকারা : ৭৫
فَبِمَا نَقْضِهِمْ مِيثَاقَهُمْ لَعَنْهُمْ وَجَعَلْنَا قُلُوبَهُمْ قَسِيَةٌ ، يُحَرِّفُوْنَ الْكَلِمَ عَنْ
مواضعه لا وَنَسُوا حَظًّا مِّمَّا ذَكَرُوا به ج - المائدة : ۱۳
“এখন তাদের অবস্থা হলো এমন যে, তারা শব্দ উলট-পালট করে বক্তব্যকে কোথা হতে কোথায় নিয়ে মূল কথার নাড়া-চাড়া করে ফেলে । যে শিক্ষা তাদেরকে দেয়া হয়েছিলো তার অধিকাংশই তারা ভুলে গিয়েছে।”-সূরা আল মায়েদা : ১৩
وَمِنَ الَّذِينَ هَادُوا سَمَّعُونَ لِلْكَذِبِ سَمْعُونَ لِقَوْمٍ أُخَرِينَ لا لَمْ يَأْتُوكَ ،
،
يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ مِنْ بَعْدِ مَوَاضِعِهِ ، يَقُولُونَ إِنْ أُوتِيْتُمْ هذَا فَخُذُوهُ وَإِن لَّمْ
تُؤْتَوْهُ فَاحْذَرُوا ط - المائدة : ٤١
“যারা ইহুদী হয়ে গেছে আর যাদের অবস্থা এই যে, তারা মিথ্যার জন্য উৎকর্ণ হয় এবং অন্য এমন লোকের জন্য যারা তোমার নিকট কখনো আসেনি। কথা খুঁজে বেড়ায়। আল্লাহর কিতাবের শব্দাবলীকে এসবের নির্দিষ্ট স্থান থাকা সত্ত্বেও এদেরকে আসল অর্থ হতে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং মানুষদেরকে বলছে যে, যদি তোমাদেরকে এ হুকুম দেয়া হয় তাহলে মানবে। আর তা না হলে মানবে না।”-সূরা আল মায়েদা : ৪১
أَلَمْ تَرَاَ إلَى الَّذِينَ أوتُوا نَصِيبًا مِّنَ الْكِ يُدْعَوْنَ إِلى كِتَبِ اللهِ لِيَحْكُم
بَيْنَهُمْ ثُمَّ يَتَوَلَّى فَرِيقٌ مِّنْهُمْ وَهُمْ مُعْرِضُونَ ٥ - ال عمران : ۲۳
“তুমি কি দেখনি যাদেরকে কিতাবের কিছু জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের অবস্থা কি ? তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের দিকে আহবান জানানো হয় তাদের মধ্যে ফায়সালা করার জন্য, তখন তাদের একটি অংশ ইতস্ততঃ করে আর ফায়সালার দিকে আসা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।”
وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَبَ إِلَّا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَ هُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ،
“যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তারা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছিল, কারণ প্রকৃত জ্ঞান পাওয়ার পর তারা পরস্পরের উপর প্রাধান্য বিস্তারের জন্যই এরূপ করেছে।”-সূরা আলে ইমরান : ১৯
وَدَّت طَائِفَةٌ مِّنْ أَهْلِ الْكِيبِ لَوْ يُوضَلُّونَكُمْ
يأهْلَ الْكِتب لِم
تَلْبِسُونَ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُونَ الْحَقَّ وَانْتُمْ تَعْلَمُونَ o وَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِّنْ
اَهْلِ الْكِتُبِ اَمِنُوا بِالَّذِي أَنْزِلَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَجْهَ النَّهَارِ وَاكْفُرُوا أُخِرَةَ
لَعَلَّهُم يَرْجِعُونَ وَلَا تُؤْمِنُوا إِلَّا لِمَنْ تَبِعَ دِينَكُمْ ط - ال عمران : ٦٩، ٧١-٧٣
“হে ঈমানদারেরা ! আহলে কিতাবদের এক অংশ চায় যে কোনোভাবে তোমাদেরকে সত্য পথ থেকে হটিয়ে দিতে।----হে আহলে কিতাব ! কেনো তোমরা সত্যবাদীদের উপর মিথ্যাবাদীর রং ছড়িয়ে তাদেরকে বিতর্কিত করে তুলছো ? জেনে বুঝে কেনো সত্যকে গোপন করছো ? আহলে কিতাবদের মধ্য হতে একটি দল বলছে এ নবীকে মান্যকারীদের উপর যে হুকুম নাযিল হয়েছে তার উপর সকালে ঈমান আনো সন্ধ্যায় একে অস্বীকার করো। সম্ভবত এ পদ্ধতিতে এই লোকেরা তাদের ঈমান থেকে সরে পড়বে। লোকেরা পরস্পর আরো বলে নিজের ধর্মীয় লোকদের ছাড়া আর কারো কথা মানবো না।”-সূরা আলে ইমরান : ৬৯,৭১-৭৩

তাদের সাধারণ লোকদের অবস্থা

ইহুদী জাতির কিছু লোক ছিলো অজ্ঞ মূর্খ। তারাও বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার পোষণ করতো। তাদের সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে :
وَمِنْهُم أميونَ لا يَعْلَمُونَ الْكِتَبَ إِلا أَمَانِي وَإِنْ هُمُ الأيَظُنُّونَ )
“তাদের মধ্যে দ্বিতীয় এক শ্রেণীর লোক আছে যাদের কিতাবের জ্ঞান নেই । তারা নিজেদের ভিত্তিহীন আশা-আকাঙ্খা পোষণ করে বসে আছে। শুধু নিজেদের আন্দাজ অনুমানের উপর চলছে।”-সূরা আল বাকারা : ৭৮
তারা অজ্ঞতা মূর্খতার চরম সীমায় গিয়ে পৌছেছে। তাদের আচরণ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে
اِتَّخَذُوا أَحْبَارَهُم وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِّنْ دُونِ اللّهِ.
“তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের আলেম ও দরবেশ লোকদেরকে তাদের রব বানিয়ে নিয়েছে।”-সূরা আত তাওবা : ৩১
তাদের আচরণের বাড়াবাড়ি সম্পর্কে কুরআনে আরো বলা হয়েছে :
وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُوا الشَّيْطينُ عَلَى مُلْكِ سُلَيْمَنَ ، وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَنُ وَلَكِنَّ
الشَّيطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السّحْرَة وَمَا أُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ
هَارُوتَ وَمَارُوتَ وَمَا يُعَلِمَنِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرُ،
L
فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ، وَمَا هُمْ بِصَارِينَ بِهِ مِنْ اَحَدٍ إِلا بِإِذْنِ اللهِ ، وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ ، وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَهُ مَالَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنْفُسَهُمْ لَوْ كَانُوا
L
:
“তারা ঐসব জিনিসকে মানতে শুরু করলো, শয়তান যা সোলায়মানের রাজত্বের নাম নিয়ে পেশ করেছিলো। প্রকৃতপক্ষে সোলায়মান কখনো কুফরী অবলম্বন করেননি। কুফরী তো অবলম্বন করেছে সেই শয়তানগণ যারা লোকদেরকে যাদু শিক্ষাদান করছিলো। বেবিলনের হারুত, মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা কিছু নাযিল করা হয়েছিলো তারা তার প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলো। অথচ তারা (ফেরেশতারা) যখনই কাউকেও এ জিনিসের শিক্ষা দিতো, প্রথমেই স্পষ্ট ভাষায় হুশিয়ার করে দিতো দেখো, আমরা শুধু একটি পরীক্ষা মাত্র। তোমরা কুফরীর পথে নিমজ্জিত হয়ো না। এরপরও তারা এ ফেরেশতাদের নিকট হতে সেই জিনিসই শিখছিলো যা দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো যায় । অথচ একথা সুস্পষ্ট যে, আল্লাহর অনুমতি ছাড়া এ উপায়ে তারা কারো কোনো ক্ষতি সাধন করতে পারতো না। কিন্তু এরপরও তারা এমন জিনিস শিখতো যা তাদের পক্ষে কল্যাণজনক ছিলো না বরং ছিলো ক্ষতিকর। তারা ভাল করেই জানতো এ জিনিসের খরিদ্দার হলে তাদের জন্য পরকালের কোনোই কল্যাণ নেই । তারা যে জিনিসের বিনিময়ে নিজেদের জীবন বিক্রয় করেছে, তা কতই না নিকৃষ্ট জিনিস। হায়! একথা যদি তারা জানতে, বুঝতে পারতো।”-সূরা আল বাকারা : ১০২
এ আয়াতে বনী ইসরাঈল তথা ইহুদীদের যে অবস্থার কথা বলা হয়েছে তা হলো মাওলানা আবুল আ'লা মওদূদী রাহমাতুল্লাহ আলাইহির মতে- “বনী ইসরাঈল যে সময়ে বার্বেলে দাস ও বন্দী জীবনযাপন করছিলো সে সময়ে তাদের পরীক্ষার জন্য আল্লাহ তাআলা দু' ফেরেশতাকে প্রেরণ করেছিলেন। লূত আলাইহিস সালামের জাতির কাছে যেরূপ ফেরেশতাগণ সুদর্শন বালকরূপ ধারণ করে গিয়েছিলেন। এ ইসরাঈলীগণের কাছেও এভাবে ফেরেশতারা সম্ভবত পীর-ফকিরের রূপ ধারণ করে গিয়েছিলেন। সেখানে তারা হয়তো একদিন যাদুর বাজারে নিজেদের দোকান ফেঁদে বসেছিলেন ও অন্য দিকে তারা লোকদের কাছে যুক্তিজ্ঞান সহ সত্য পৌঁছে দিয়ে সতর্ক করার দায়িত্ব পূর্ণভাবে পালনের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে সাবধান করে দিতেন যে, দেখো আমরা তোমাদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। তোমরা তোমাদের পরকাল নষ্ট করো না । কিন্তু তারপরও লোকে তাদের পেশ করা সিফলী আমলিয়াত – যাদুর হীন কর্মকাণ্ড ও তাবিজ-তুমার মন্ত্রতন্ত্রের জন্য উন্মাদের মতো ছুটে আসতো ।'
দ্বীনের সাথে তাদের গাদ্দারীর কথা কুরআনে আরো বলা হয়েছে :
وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلَى خَائِنَةٍ مِّنْهُمْ إِلا قَلِيلاً مِّنْهُمْ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاصْفَح ط
“কিতাবের যে জ্ঞান তাদেরকে দেয়া হয়েছিলো তার অধিকাংশই তারা ভুলে গিয়েছিলো। প্রায় প্রত্যেক দিনই তাদের কোনো না কোনো খেয়ানত ও বিশ্বাসঘাতকতার সন্ধান পাওয়া যেতো। তাদের খুব কম লোকই এ দোষ হতে মুক্ত ছিলো।”-সূরা আল মায়েদা : ১৩
তাদের সম্পর্কে এ সূরায়ই আরো বলা হয়েছে :
وَتَرَى كَثِيرًا مِنْهُم يُسَارِعُونَ فِي الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاكْلِهِمِ السُّحْتَ ، لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ لَوْلا يَنْههُمُ الرَّبَّنِيُّونَ وَالْأَحْبَارُ عَنْ قَوْلِهِمُ الْإِثْمَ وَأَكْلِهِم
السحتَ ، لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَصْنَعُونَ 0 - المائدة : ٦٢-٦٣
“তোমরা দেখতে পাও, এদের অনেক লোকই গুনাহ ও যুল্ম এবং খুব বেশী বাড়াবাড়ির কাজে চেষ্টা সাধনা করে বেড়ায়। হারাম মাল খায় । মোটকথা এরা যাকিছু করে তা খুবই গর্হিত। এদের আলেম, পীর পুরোহিতগণ তাদেরকে গুনাহর কথা বলা এবং হারাম মাল খাওয়া হতে কেনো বিরত রাখেন না ?”-সূরা আল মায়েদা : ৬২-৬৩
ইহুদীদের সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে :
لِلْكَذِبِ أَكْلُونَ لِلسُّحْتِ ط - المائدة : ٤٢ سَمَعُونَ
“এসব লোক মিথ্যা শ্রবণকারী ও হারাম মাল ভক্ষণকারী।”
-সূরা আল মায়েদা : ৪২
فَبِظُلْمٍ مِّنَ الَّذِينَ هَادُوا حَرَّمْنَا عَلَيْهِم طَيِّعِت أحلَّت لَهُم وَبِصَدِهِم عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ كَثِيرًا وَأَخْذِهِمُ الرِّبوا وَقَدْ نُهُوا عَنْهُ وَاكْلِهِمْ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ ط
“মোটকথা এ ইহুদী নীতি অবলম্বনকারী লোকদের এ যুল্মমূলক কাজের কারণে এবং এ কারণে যে, এরা আল্লাহর পথ হতে লোকদেরকে বিরত রাখে এবং সুদ গ্রহণ করে, যা হতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিলো ও লোকদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে। আমরা এমন অনেক পাক-পবিত্র জিনিসই তাদের প্রতি হারাম করে দিয়েছি।”
-সূরা আন নিসা : ১৬০-১৬১
ياَيُّهَا الرَّسُولُ لَا يَحْزُنُكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِي الْكُفْرِ مِنَ الَّذِينَ قَالُوا آمَنَّا بِأَفْوَاهِهِمْ وَلَمْ تُؤْمِنْ قُلُوبَهُمْ ، وَمِنَ الَّذِينَ هَادُوا ءِ سَمْعُونَ لِلْكَذِبِ سَمْعُونَ لِقَوْمٍ أُخَرِينَ * لَمْ يَأْتُوكَ - يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ مِنْ بَعْدِ مَوَاضِعِهِ ، يَقُولُونَ إِنْ
أُوتِيتُمْ هذَا فَخُذُوهُ وَإِن لَّمْ تُؤْتَوْهُ فَاحْذَرُوا - - المائدة : ٤١
“হে নবী সেসব লোক যারা কুফরীর পথে খুব দ্রুত গতিতে অগ্রসর হচ্ছে তারা যেনো তোমার দুঃখের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। তারা সেইসব লোক যারা মুখে মুখে বলে আমরা ঈমান এনেছি অথচ তাদের মন ঈমান আনেনি। অথচ তারা ঐসব লোক যারা ইহুদী হয়ে গেছে। যারা মিথ্যার জন্য- উৎকর্ণ হয়। এবং অন্য এমন লোকের জন্য, যারা তোমার কাছে কখনো আসেনি, তাদের জন্য কথা খোঁজ করে বেড়ায় । আল্লাহর কিতাবের শব্দসমূহকে এর আসল জায়গা নির্ধারিত হবার পরও প্রকৃত অর্থ হতে সরিয়ে দেয়। লোকদের বলে তোমাদের এই আদেশ দেয়া হলে তা মানবে, তা না হলে মানবে না।”-সূরা আল মায়েদা : ৪১

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]