ইসরাঈলী গণহত্যার পঞ্চাশ বছর

বিগত অর্ধ শতাব্দী ধরে চলে আসা ইসরাঈলী গুপ্তহত্যার সর্বশেষ শিকার হলেন গত ২০ আগস্ট রোজ বৃহস্পতিবার বিশিষ্ট হামাস নেতা ইসমাঈল আবু শানাব । অতীত ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব থেকেই ইহুদীরা রাষ্ট্র গঠনের জন্য যেসব ঘৃণ্য পন্থা অবলম্বন করেছে তার মধ্যে গুপ্তহত্যা ছিল অন্যতম ও প্রধান অস্ত্র । ১৯৪৬ সালের ২২ আগস্ট তারা কিং ডেভিড হোটেলে হামলা চালায়। সেখানে ছিল বৃটিশ মিলিটারী কমান্ড অফিস ও সরকারী সচিবালয়। ঐ ঘটনায় ৯১জন নিহত হয় । তার মধ্যে ২৮জন ছিল বৃটিশ ও ৬৩জন ছিল আরব। ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ দূত কন্ডেকোকে বানাদোতের উপর হামলা চালায় ইসরাঈলীরা। তার অপরাধ ছিল তিনি ফিলিস্তিনীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তিনি বলেন, ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যেসব ফিলিস্তিনীকে সন্ত্রাসের মুখে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাদেরকে ফিরিয়ে আনা উচিত। তিনি জেরুজালেমে সকলের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের আহ্বান জানান এবং পবিত্র নগরীকে কলংকিত করার জন্য ইহুদীদেরকে “আগ্রাসী শক্তি” বলে অভিহিত করেন। এরপর ইসরাঈলীরা তাদের গুপ্তহত্যার তালিকায় তার নামভুক্ত করে ।
১৯৫৬ সালে ইসরাঈলীরা গাজা সিটির প্রতিরোধ কমান্ডার মিশরীয় সেনা
কমান্ডার মোস্তফা হাফেজকে খতম করার জন্য গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের তত্ত্বাবধানে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আবার ১৯৬৩ সালে সাবেক ইসরাঈলী প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক শামীর ফ্রিডম ফাইটার নামে এক জঙ্গী সংগঠনের প্রধান থাকাকালে মিসরকে মিসাইল প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়তা দেয়ার অজুহাতে জার্মান বিশেষজ্ঞদের বিরুদ্ধে মিসরে এক গোপন হামলা চালায়। এতে অনেক লোক মারা যায়।
১৯৭০ দশকে ইসরাঈলীরা গোটা ইউরোপে ফিলিস্তিনীদের খুঁজে বের করার জন্য গোয়েন্দা স্কোয়াড পাঠিয়ে তার গুপ্তহত্যা তৎপরতা বাস্তবায়নের সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত শুরু করে। এ ধরনের তৎপরতা নরওয়ের রাজধানী অসলোতে এক ব্যর্থ হামলার কারণে প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং তা তখন বন্ধ রাখা হয়। অসলোর ঐ হামলায় ফিলিস্তিনীদের পরিবর্তে একজন আলজেরিয়ান নিহত হয়। ১৯৯৩ সালে বিবিসি-এর সাথে সাক্ষাতকারে ইসরাঈলী মিলিটারী ইন্টেলিজেন্স-এর সাবেক প্রধান আহরন ইয়ারীভ স্বীকার করেন যে, বিভিন্ন
সময় ইউরোপ ও অন্যান্য স্থানে পরিচালিত ইসরাঈলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অভিযান থেকে ইসরাঈলী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সবসময় দূরত্ব বজায় রেখে চলতো। তিনি বিবিসিকে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোল্ডামেয়ার স্বয়ং ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ নেতাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে গোপন অভিযান চালিয়ে খতম করার নির্দেশ দেন। ১৯৭২ সালে তারা ফিলিস্তিন পপুলার ফ্রন্টের বিশিষ্ট নেতা হাসান কানাদানীকে হত্যা করে। ১৯৭৩ সালে ইসরাঈলী গোয়েন্দারা ৩জন ফিলিস্তিনী নেতা ইউসিফ নজর, কামমান ওদওয়ান ও কামান নাসেরকে হত্যা করে। একই বছর মোসাদ ফাতাহ নেতা মুহাম্মাদ বদিয়াকে হত্যা করে ।
ইসরাঈলীরা অতপর ১৯৭৫ সালে এক নির্মম অভিযানে প্যালেস্টাইন ফোর্স-১৭-এর প্রতিষ্ঠাতা নেতা মাহমুদ আল হাসমারীকে প্যারিসের বাসভবনে টেলিফোন-বোমার সাহায্যে হত্যা করে। সংস্থাটি ১৯৭০-এর দশকে আরাফাতসহ ফিলিস্তিনী উর্ধ্বতন নেতাদের বিশেষ নিরাপত্তার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আরাফাতের নিরাপত্তা বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। এর চার বছর পর ফোর্স-১৭-এর নেতা আবু হাসান সালাম 'বৈরুতে দূর নিয়ন্ত্রিত গাড়ীবোমায় নিহত হন। ১৯৮৮ সালে ইহুদী কমান্ডোরা ফিলিস্তিনী মুক্তি সংস্থার নেতা খলীল আৰু জিহাদ ও ৭০জন ফিলিস্তিনী কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করে । এ নির্মম গণহত্যাটি সাবেক ইহুদী নেতা এহুদ বারাকের নির্দেশে হয়েছিল।
১৯৯২ সালে মার্কিন এ্যাপাচি সামরিক হেলিকপ্টারের সাহায্যে ইসরাঈলী সেনারা লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতা আব্বাস আল মুসাবিকে স্ত্রী-পুত্রসহ হত্যা করে। ১৯৯৫ সালের অক্টোবর মাসে ইসলামী জিহাদ সেক্রেটারী জেনারেল ফতেহ আল কোকাসী মাল্টায় ২জন মোসাদ এজেন্টের গুলিতে নিহত হন । ১৯৯৮ সালে মোসাদ সদস্যরা হামাস পলিটব্যুরো প্রধান খালেদ মার্শালকে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু এ প্রচেষ্টা ফাঁস হয়ে যায় এবং চক্রান্তকারীরা জর্দানে ধরা পড়ে। ইসরাঈলী একটি গবেষণা কেন্দ্র হতে তথ্য পাওয়া যায় যে, ২০০৩ সালের মে মাস পর্যন্ত তারা মোট ১৩৫টি পরিকল্পিত হামলা ঘটিয়েছে। এতে মোট ২৪৯জন ফিলিস্তিনী নেতা ও সাধারণ নাগরিক নিহত হয়। বিগত ২ বছর যাবত ইসরাঈলীরা ট্যাংক, হেলিকপ্টার গানশীপ নিয়ে ফিলিস্তিনী নিরীহ মানুষের উপর প্রতিদিন আক্রমণ চালাচ্ছে এবং শত শত নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করছে, তাদের বাড়ি-ঘর ধ্বংস করছে। আর এর ইন্ধনদাতা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ইসরাঈলীদের এসব পরিকল্পিত হামলা, গুপ্তহত্যা নিসন্দেহে যুদ্ধাপরাধ । আন্তর্জাতিক আইন ও মানবতাবাদী সংগঠনগুলো ইসরাঈলের এ নিষ্ঠুরতাকে অমানবিক বলে আখ্যায়িত করছে। তারা ইসরাঈলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার দাবী করছে। এক জরিপে দেখা যায় যে, দুই-তৃতীয়াংশ ইসরাঈলী জনগণ যুদ্ধাবস্থা থামানোর পক্ষে এবং হত্যানীতির বিরুদ্ধে তাদের শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করেছে। কিন্তু মার্কিন মদদপুষ্ট ইসরাঈলের রাজনৈতিক সামরিক জান্তা কখন তাদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করবে তা কেউ বলতে পারে না ।
অভিশপ্ত ইহুদী জাতির বেঈমানীর ইতিহাস ও ষড়যন্ত্রের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে অভিশপ্ত ইহুদী জাতির বেঈমানীর ইতিহাস লেখা হয়েছে।
বইটির পাণ্ডুলিপি প্রকাশনায়ও গিয়েছিল অনেক আগে ১৯৯৫ সনের দিকে। পূর্ণ হয়ে আসতে বেশ সময় লেগে গেলো। এর মধ্যে এ অভিশপ্ত জাতির অভিশাপ চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের মাত্রা বেড়ে গেছে আরো অনেক গুণ। যা বইতে আনা সম্ভব হয়নি। তবে পত্র-পত্রিকায় এ অভিশপ্ত জাতির বর্বরতা ও নৃশংসতায় কিছু চিত্র তুলে ধরেছে। তার কিছু চিত্র এ্যালবাম আকারে বইটিতে সংযোজন করা হলো ।
এ ছবিগুলো দেখলে ও ক্যাপশন পড়লে মুসলমানদেরকে নিঃশেষ করে দেবার জন্য কি অমানবিক নির্যাতন ও নিষ্পেষণ চালাচ্ছে মুসলিম ভাই-বোন, মা ও অবুঝ শিশুদের উপর তা বুঝা যাবে। ক্যাপসন ছাড়া ঘটনার আর বিস্তারিত কিছু লেখা সম্ভব হলো না ।
পাঠকদের তরফ থেকে বইটি ও ক্যাপশনের উপর কোনো কথা থাকলে প্রকাশনার ঠিকানায় লিখলেই চলবে। আল্লাহ মুসলিম জাতিকে এ অভিশপ্ত ইহুদী জাতির হাত থেকে রক্ষা করুন এবং করবেনই একদিন এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তার আগে মুসলিম মিল্লাতকে শিক্ষা নিতে হবে ও প্রস্তুতি নিতে হবে আল্লাহ প্রদত্ত পথে দৃঢ়তার সাথে চলে ও জিহাদ করে ।
-লেখক
পশ্চিম তীর শহর তুলকারমে নিহত ফিলিস্তিনী ওমর সুবুহর মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তাঁর আত্মীয়স্বজন। ইসরাঈল হলিকপ্টার গানশিপের গোলায় সুবুহ নিহত হন। রয়টার্স, সৌজন্যে জনকণ্ঠ, ৮/৯/২০০১ইং
রাজা ও পশ্চিম তীরে সরাঈলীদের অব্যাহত {হিংসতায় একের পর
এক এক লাশ হচ্ছেন ফলিস্তিনীরা। সম্প্রতি সাজা উপত্যকায় নিহত নারি খালিদের লাশ দাফনের জন্য নিয়ে
পাওয়ার সময়
ফিলিস্তিনীরা
সরাঈলের বিরুদ্ধে
ক্ষোভ প্রদর্শন
রেন। রয়টার্স,
সীজন্যে, ইনকিলাব
০১/০১/২০০১


াজায় রাফাহ উদ্বাস্তু শিবিরে দাফন অনুষ্ঠানে ১৬ বছর বয়সী প্রিয় ভাই সাফকাত কোয়েশতার শোকে বোন ান্নায় ভেঙে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার সাফকাতকে দাফন করা হয়। আগের রাতে ইসরাঈলী সৈন্যরা তাকে গুলী রে হত্যা করে । রয়টার্স, সৌজন্যে ইনকিলাব, ২৭/১/২০০১ ইং

প্ত ইহুদী জাতীর বেঈমানীর ইতিহাস
১৩১


পরাঈলী
তিন মাস তমিজীর
র মাতা
মতো স্তিফাদা
যাবত
দিয়া-ই-
শিশু।
একটি
দুজন
নিহত

চশপ্ত ইহুদী জাতীর বেঈমানীর ইতিহাস
১৩৩

86

াজার দক্ষিণে রাফায় গত বৃহস্পতিবার এক দাফন অনুষ্ঠানের সময় ইসরাঈলী সৈন্যরা ন্ট্রোলের সাহায্যে বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ৪জন ফিলিস্তিনীকে হত্যা করে। নিহদের মধ্যে াশ বহন করে নিয়ে যাচ্ছে তার আত্মীয়-স্বজন ও সহকর্মীরা। রয়টার্স, সৌজন্যে ইনকিলাব, ০০১ইং।
পারিবারিক গ্রন্থাগার জামরীন! বিনতে যুজাহি


১২৩
গাজা উপত্যকার উদ্বাস্তু শিবিরে ইসরাঈলী সৈন্যদের গুলীতে নিহত আবদুল করিম মনসুরের লাশ দাফনের জন্য বাড়ীর বাইরে নিয়ে যাবার সময় রোববার তার দু' মেয়ে ক্রন্দন করছে। তাদের সান্ত্বনা দচ্ছেন একজন অজ্ঞাত মহিলা। শনিবার বাড়ীর ছাদে ডিশ এন্টিনা ঠিক করার সময় ইসরাঈলী সন্যরা মনসুরকে গুলী করে হত্যা করে। এপি
পশ্চিম তীরের জেনিন উদ্বাস্তু শিবিরে ইসরাঈলের নৃশংস হামলায় বিধ্বস্ত একটি বাড়ীর ধ্বংসস্তূপের মাঝে এক ফলিস্তিনী শিশু বিশ্ববাসীর কাছে চরম জিজ্ঞাসা নিয়ে বিশ্বয়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আর কতকাল তাদের এমনি ইসরাঈলী বর্বরতার শিকার হতে হবে।-সূত্র ইন্টারনেট, সৌজন্যে-ইনকিলাব, ২০/০৪/২০০২ইং


যদ আল হিন্দি (৫০) গাজায় তার বাড়ীতে দাফন করার আগে তার ২ বছর বয়সী মেয়ের কফিন ঘরে ভেঙ্গে পড়েন। গাজায় তার পত্নী রান্দা আল হিন্দি (৪০) ও মেয়ে নূর গাড়ীতে করে যাওয়ার সময় লী সৈন্যদের গুলীতে নিহত হন।-সূত্র ইন্টারনেট, সৌজন্যে ইনকিলাব, ৮/৭/২০০২ইং
ভূখণ্ডের রফায় সোমবার নিজ বাড়ীতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে দুই সন্তানসহ নিহত সামির আবু দের দাফন অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনী এক আত্মীয়ার বিলাপ। রয়টার্স, সৌজন্যে ইনকিলাব, ২২/৮/০১


১২৫
OGL
এক ফিলিস্তিনী মায়ের করুণ আর্তি। সন্তানকে ইসরাঈলী সৈন্যরা হত্যা করেছে। নিকট আত্মীয়রা নিহত ছেলেটি দাফনে যোগ দেবে তারও উপায় নেই, কারণ ইসরাঈলীরা বিভিন্ন স্থানে চেকপয়েন্ট বসিয়ে ফিলিস্তিনীদের চলাচলে বাধা দিচ্ছে। অসহায় মা মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছেন, ইসরাঈলীদের এ অন্যায় যুলুমের অবসান হে কবে।-সূত্র রয়টার্স সৌজন্যে ইনকিলাব, ৫/৯/২০০১ইং
10
ইসরাঈলী সৈন্যদের গুলীতে নিহত ফিলিস্তিনী ফাতাহ তানজিমের এক সদস্যের দাফন অনুষ্ঠানে রবিবার পশ্চি তীরের হেবরন শহরে তার আত্মীয়স্বজনের আহাজারি। রয়টার্স, সৌজন্যে ইনকিলাব, ৪/১/২০০১

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]