হাদীস শিক্ষা ও সংগ্রহে ইমাম বুখারীর সফরের একটি বর্ণনা দিন।

সহীহ আল-বুখারী পরিচিতি
ইমাম বুখারীর যুগ পর্যন্তঅনেক হাদীস গ্রন্থ সংকলিত হয়। তবে সেগুলো তাঁর দৃষ্টিতে যঈফমুক্ত ছিল না। তাঁর উস্তাদ
রাহওয়াই একদা তাঁকে বললেন, “তুমি যদি রাসূলের সহীহ হাদীসগুলো একত্র করতে” -এ কথাটি তাঁর মনে রেখাপাত
করে। তাই তিনি একখানি বিশুদ্ধ হাদীস সংকলনের ইচ্ছা পোষণ করেন। এর পাশাপাশি তিনি একদা মহানবী (স) কে
স্বপ্নে দেখেন যে, তিনি তাঁকে পাখা করছেন এবং তাঁর চেহারা মুবারক থেকে মাছি তাড়াচ্ছেন। এ স্বপ্নের ব্যাখ্যায় স্বপ্ন
বিশ্লেষকগণ বলেন, আপনি মহানবী (স)-এর হাদীস হতে মিথ্যাকে অপসারিত করবেন।
এতে অনুপ্রাণিত হয়ে ইমাম বুখারী ২১৭ হিজরী সালে সহীহ হাদীস সংকলনে মনোনিবেশ করেন। আর দীর্ঘ ষোল বছর
কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমে প্রায় ছয় লক্ষ হাদীস হতে যাচাই-বাছাইয়ের পর হাদীস গ্রন্থটি সংকলন করেন।
এভাবে তিনি ২৩৩ হিজরী সালে এ কাজ সমাপ্ত করেন।
সহীহুল বুখারী নামটি গ্রন্থটির মূল নাম নয়। এর আসল নামের ব্যাপার দু’টি মত পাওয়া যায়।
এক.
الجامع الصحیح المسند من احادیث الرسول صلى اللھ علیھ وسلم وسننھ وایامھ
দুই.
الجامع المسند الصحیح المختصر من امور رسول اللھ صلى اللھ علیھ وسلم
وسننھ وایامھ
প্রায় নব্বই হাজার লোক সরাসরি ইমাম বুখারীর নিকট হতে সহীহ আল-বুখারী গ্রন্থখানি শ্রবণ করেছেন, যা গ্রন্থখানির
সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করে। এছাড়া মুসলিম মিল্লাতের এ ব্যাপারে ঐকমত্য রয়েছে যে, কুরআন মাজীদের পরে
বিশুদ্ধতম গ্রন্থ হল সহীহ আল-বুখারী। মুসলিম মিল্লাতের এ ব্যাপারেও ঐকমত্য রয়েছে যে, সিহাহ সিত্তাসহ সংকলিত
সকল হাদীসগ্রন্থের উর্ধ্বে সহীহ আল-বুখারীর স্থান।
সহীহ আল-বুখারীর হাদীস সংখ্যা
পুণরুল্লেখসহ - ৭২৭৫ এবং পুনরুল্লেখ ছাড়া ৪০০০ হাদীস। (ثلاثیات (বা তিন মাধ্যম বিশিষ্ট সংখ্যা - ২২।
বুখারী শরীফের (كتاب (বা অধ্যায় সংখ্যা ১৬০ এবং (باب (বা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ৩৪৫০। ইমাম বুখারী যে সকল
শায়খ থেকে তাঁর সহীহ গ্রন্থে হাদীস গ্রহণ করেছেন তাদের সংখ্যা ২৭৯।
ইমাম মুসলিম ও তাঁর সহীহ গ্রন্থ
নাম মুসলিম, উপনাম আবুল হাসান, উপাধি ‘আসাকিরুদ্দীন। পিতা হাজ্জাজ আল-কুশাইরী। মুসলিম জাহানে তিনি
ইমাম মুসলিম নামে পরিচিত। বর্তমান সোভিয়েত রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত খোরাসানের প্রধান নগর নিশাপুরে বনী হাওয়াযীন
গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্ণনাম হলো- আবুল হাসান আসাকিরুদ্দীন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল- কুশরাইরী
আল-নিশাপুরী।
ইমাম মুসলিম ২০২ হিজরী মুতাবিক ৮১৭ খ্রিস্টাব্দে এমন দিনে জন্মগ্রহণ করেন, যেদিন আহলে সুন্নাত ওয়াল
জামায়াতের প্রখ্যাত ফকীহ ইমাম শাফি’ঈ (র) ইন্তিকাল করেন।
প্রাথমিক শিক্ষার হাতে খড়ি তিনি স্বগৃহেই লাভ করেন। তাঁর পিতা হাজ্জাজ আল-কুশাইরী একজন নামকরা হাদীস
বর্ণনাকারী ছিলেন। তিনি তাঁর নিকটই হাদীস সম্পর্কিত প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করেন। অতপর ১৮ বছর বয়সে তিনি
পূর্ণমাত্রায় হাদীস শিক্ষা শুরু করেন। তিনি অত্যন্তমেধাবী ছিলেন এবং হাদীস শাস্ত্রের জ্ঞান লাভের জন্য কঠোর অধ্যয়ন
করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর হাদীস শাস্ত্রে উচ্চ শিক্ষা লাভ ও হাদীস সংগ্রহের জন্য তিনি মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রে
গমন করেন। আর হাদীসের বিশিষ্ট ওস্তাদ ও মুহাদ্দিসের নিকট হতে হাদীস শিক্ষা ও সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে ইরাক,
হিজায, মিসর, সিরিয়া, বাগদাদ প্রধান।
তিনি তাঁর শিক্ষা জীবনে অগণিত শিক্ষকের নিকট থেকে হাদীস অধ্যয়ন করেন। এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ কয়েকজন হলেনইমাম আহমদ, ইসহাক ইবনে রাহওয়াই, ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া, সাঈদ ইবনে মানসুর আল-যুহলী এবং ইমাম
বুখারী প্রমুখ প্রখ্যাত মুহাদ্দিসবৃন্দ।
ইমাম বুখারী (র) যখন শেষ জীবনে নিশাপুর গমন করেন। তিনি তখন তাঁর শিষ্যত্ব লাভ করেন। তিনি বুখারীর
বিরুদ্ধবাদীদের প্রতিরোধ করার চেষ্ঠা করেন। একদিনের ঘটনা এর প্রমাণ বহন করে।
তিনি তার হাদীসের ওস্তাদ মুহাম্মদ ইবনে ইয়াহইয়া যুহলীর মজলিসে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে উপস্থিত ছিলেন। এমন
সময় মুহাদ্দিস যুহলী বললেন- “বিশেষ একটি মাস‘আলায় যে লোক ইমাম বুখারীর মতামত বিশ্বাস করে ও তাঁর রায়
গ্রহণ করে সে যেন আমার মজলিস হতে উঠে যায়।”একথা শ্রবণের সঙ্গে সঙ্গে তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং স্বীয় গৃহে
প্রত্যাবর্তন করে এই ওস্তাদর নিকট হতে শ্রæত ও লিখিত হাদীসমূহের সকল কপি ফেরত পাঠিয়ে দিলেন এবং যুহলীর
বর্ণনাসূত্রে হাদীস বর্ণনা সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করেন। তিনি হাদীস শাস্ত্রে বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি যে
হাদীসের ইমাম ছিলেন এ বিষয়ে বিশ্বের হাদীসবেত্তাগণ সকলে একমত। সেকালের বড় বড় মুহাদ্দিসগণ তাঁর নিকট
হাদীস শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। তাঁর ছাত্রদের তালিকায় যাঁদের নাম প্রসিদ্ধ তাঁদের কয়েকজন হলেনআবূ হাতীম আর-রাযী, মূসা ইবনে হারুন, আহমাদ ইবনে মাজমা, ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ, আবু আওয়ানা, ইবনে
খুজাইমাহ এবং ইমাম তিরমিযী (র) প্রমুখ।
এঁরা সকরেই তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও পান্ডিত্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। হাদীস শাস্ত্রে তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের কথা সর্বজনস্বীকৃত।
তাছাড়া তার রচিত গ্রন্থাবলী তাঁর পান্ডিত্যের অকাট্য প্রমাণ।
তিনি হাদীসের জ্ঞান লাভের পর আজীবন হাদীস সংকলনের কাজে ব্যস্তছিলেন। এই ক্ষণজন্মা মনীষী ২৪ রজব ২৬১
হিজরী সালে সামান্য অসুস্থতায় ইন্তিকাল করেন। তিনি নিশাপুরে সমাধিস্থ হন।
তিনি হাদীস শাস্ত্রের বিশিষ্ট হাফিয ছিলেন। এ সম্পর্কে ইবনে বাশার বুনদার এর উক্তি হলো- “হাফিজে হাদীস ছিলেন
চারজন- বুখারী, মুসলিম, দারিমী এবং আবু যুরয়া।” তাঁর চরিত্র ছিল অত্যন্তউন্নত। জীবনে কারো গীবত করেননি এবং
কাউকে গালি দেননি।
হাদীস শাস্ত্রে প্রবল পান্ডিত্যের সাথে সাথে তিনি অনেক মূল্যবান গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। তাঁর গ্রন্থাবলীর মধ্যে অধিকাংশই
হাদীস ও হাদীস বিষয়ক। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হলো ‘সহীহ লি মুসলিম’। এটা ছাড়া তাঁর আরো বহু গ্রন্থ
রয়েছে। তিনি সরাসরি উস্তাদদের নিকট থেকে ছাটাই, যাচাই ও চয়ন করে এ গ্রন্থখানি প্রণয়ন করেন।
হাদীস গ্রন্থনার কাজ সমাপ্ত হলে তিনি তদানীন্তন প্রখ্যাত হাফিযে হাদীস ইমাম আবূ যুরয়ার সম্মুখে উপস্থাপন করেন। এ
প্রসঙ্গে স্বয়ং তিনি বলেন“আমি এ গ্রন্থখানি ইমাম আবূ যুরয়ার নিকট পেশ করেছি। তিনি যে সব হাদীসের সনদে দোষ আছে বলে ইঙ্গিত
করেছেন, আমি তা পরিত্যাগ করেছি। আর যে হাদীস সম্পর্কে তিনি মত দিয়েছেন যে, এটা সহীহ এবং ত্রæটিমুক্ত আমি
তা-ই এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত করেছি।”
এতে প্রমাণিত হয় যে, তিনি কেবল স্বীয় জ্ঞান ও বুদ্ধি বলেই কোন হাদীস সহীহ মনে করে তার গ্রন্থে চয়ন করেননি।
বরং প্রত্যেকটি হাদীসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে সমসাময়িক অন্যান্য মুহাদ্দিসদের নিকট পরামর্শ চেয়েছেন। আবূ যুরয়ার
নিকট তিনি পরীক্ষার জন্য হাদীস উপস্থাপন করেছিলেন। সমসাময়িক মুহাদ্দিসগণ যে হাদীসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে
একমত হয়েছেন, তিনি কেবল তা-ই সংকলন করেছেন।
এভাবে দীর্ঘ ১৫ বছর পর্যন্তঅবিশ্রান্তসাধনা, গবেষণা ও যাচাই-বাছাইয়ের পর সহীহ হাদীসসমূহের এক সুসংবদ্ধ
সংকলন তৈরী করেন।
এ গ্রন্থে সর্বমোট ১২ হাজার হাদীস সন্নিবেশিত হয়েছে। এর মধ্যে একাধিক দ্বিরুক্ত হাদীসও রয়েছে। সেগুলো বাদ
দিয়ে মোট হাদীসের সংখ্যা চার হাজার। তা হলে বলা যায়- পুনরুল্লেখসহ হাদীস সংখ্যা ১২০০০ এবং পুনরুল্লেখ ছাড়া
হাদীস সংখ্যা ৪০০০।
তিনি উস্তাদ এবং ছাত্রের মধ্যে সমসাময়িক যুগের হওয়াকেও হাদীস গ্রহণের জন্য শর্তারোপ করেন। তার গ্রন্থে
ছুলাসিয়াত হাদীস নেই; কিন্তু রুবায়িআত ৮১টিরও বেশি হাদীস রয়েছে।
জামে’ হওয়ার জন্য যে আটটি শর্তের প্রয়োজন তার মধ্যে তাফসীর ব্যতীত প্রত্যেকটি বিষয়ই এতে বিদ্যমান। তাই
একে জামে’ না বলে সহীহ বলা হয়। তাঁর সংকলিত হাদীস গ্রন্থখানি তাঁর নিকট হতে বহু ছাত্রই শ্রবণ করেছেন এবং
তাঁর সূত্রে তা বর্ণনাও করেছেন।
সারকথা
হিজরি তৃতীয় শতাব্দী হাদীস সংরক্ষণ ও সংকলনের স্বর্ণযুগ। এ সময় ছিল হাদীস সংকলনের চূড়ান্তপর্যায়। এ সময়
বিশ্ববিখ্যাত হাদীস গ্রন্থসমূহ সংকলিত হয়েছিল। এর মধ্যে আবার সহীহ বুখারী ও মুসলিম বিশুদ্ধতার বিচারে সর্বশীর্ষে।
ইমাম বুখারী ছিলেন একজন দুর্লভ মেধার অধিকারী শ্রেষ্ঠ হাদীস বিজ্ঞানী। তাঁকে ইমামুল মুহাদ্দিসীন ও আমিরুল
মু’মিনীন ফিল-হাদীস উপাধিতে ভূষিত করা হয়। হাদীস শাস্ত্রে তাঁর শ্রেষ্ঠ অবদান হল বিশ্ববিখ্যাত হাদীস সংকলন সহীহ
আল-বুখারী। পবিত্র কুরআনের পরেই এ গ্রন্থের অবস্থান। সিহাহ সিত্তার অপর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থটি হল ‘সহীহ লি-মুসলিম’। এর
সংকলক ইমাম মুসলিমও ছিলেন হাদীস শাস্ত্রের একজন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী। হাদীস শাস্ত্রে তাঁর মৌলিক অবদান
সর্বজনস্বীকৃত। সিহাহ সিত্তার এ দু’টি সংকলনকে একত্রে সহীহাইন বল হয়।
সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন দিন
১. হাদীস গ্রন্থসমূহের মধ্যে সহীহাইন হলক. তিরমিযী ও মুসলিম খ. আবু দাউদ ও নাসায়ী
গ. বুখারী ও মুসলিম ঘ. বুখারী ও তিরমিযী
২. ইমামুল মুহাদ্দিসীন হলেনক. ইমাম তিরমিযী (র) খ. ইমাম আবু হানীফা (র)
গ. ইমাম বুখারী (র) ঘ. ইমাম মালিক (র)
৩. ইমাম বুখারী (র)-এর মুখস্থ হাদীস সংখ্যা কত ?
ক. তিন লক্ষ খ. ছয় লক্ষ
গ. পাঁচ লক্ষ ঘ. সত্তর হাজার
৪. সহীহ মুসলিম গ্রন্থে সর্বমোট হাদীস সংখ্যা কত ?
ক. এক লক্ষ খ. বার হাজার
গ. চার হাজার ঘ. ছয় হাজার
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর ঃ ১. গ, ২. গ, ৩. খ, ৪. খ
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. সহীহাইন বলতে কী বুঝায় ? লিখুন।
২. ইমাম বুখারীর জন্ম ও শিক্ষা সম্পর্কে আলোকপাত করুন।
৩. হাদীস শিক্ষা ও সংগ্রহে ইমাম বুখারীর সফরের একটি বর্ণনা দিন।
৪. হাদীসে ইমাম বুখারীর অবদান লিপিবদ্ধ করুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. ইমাম বুখারী (র) এর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে বর্ণনা দিন।
২. ইমাম মুসলিম (র) এর পরিচয় দিন। হাদীস শাস্ত্রে তাঁর অবদান ব্যাখ্যা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]