নৈতিক চরিত্র বলতে কী বোঝায়? হাদীসের আলোকে নৈতিক চরিত্র গঠনের গুরুত্ব ও উপায় স¤পর্কে একটি

নৈতিকতার গুরুত্ব
عن عبد اللھ بن عمرو رضى اللھ تعالى عنھ قال: قال رسول اللھ صلى اللھ علیھ و
سلم: ان من خیاركم أحسنكم اخلاقا (بخارى , مسلم)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (সা) বলেছেন: তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে
ভাল লোক হচ্ছে তারা, যাদের চরিত্র তোমাদের সকলের চেয়ে উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম)
ব্যাখ্যা
উদ্ধৃত হাদীস থেকে নৈতিক চরিত্রের গুরুত্ব সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে। নৈতিকতার ক্ষেত্রে মহানবী হযরত মুহাম্মদ
(সা) আদর্শ শিক্ষা উপস্থাপণ করেছেন- ঈমানের পরে সর্বাধিক গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় হচেছ মানুষের নৈতিক চরিত্র এবং
এটাকেই মানুষের সঠিক কল্যাণের উৎস বলে ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষ অসৎ কার্যাবলী থেকে নিজেকে দূরে রাখবে,
উত্তম ও উৎকৃষ্ট নৈতিক গুণাবলী গ্রহণ করবে, এটাই হল মানুষের বৈশিষ্ট্য। রাসূলে করীম (সা)-এর আগমনউদ্দেশ্যের মধ্যে একটি প্রধান দিক হচ্ছে জনগণের তাযকিয়া করা অর্থাৎ মানুষের মন-মগজ, চরিত্র ও কার্যাবলীকে
নির্মল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিস্কলুষ এবং সর্বপ্রকার ক্লেদ-কালিমা-মলিনতা থেকে মুক্ত করে তোলা। কেননা মানুষের
বৈশিষ্ট্য স্বীকৃত ও প্রমাণিত থেকে পারে উত্তম নৈতিক চরিত্রের মাধ্যমে। অত্র হাদীসের বক্তব্য হচ্ছে এই যে, নৈতিক
চরিত্রের দিক দিয়ে যে লোক সর্বোত্তম, ইসলামের দৃষ্টিতে সে-ই হচ্ছে উত্তম ব্যক্তি। এখানে প্রকৃত মনুষ্যত্ব ও উত্তম
নৈতিক চরিত্র একই জিনিসের দুই নাম। যার উন্নত মনুষ্যত্ব রয়েছে, সে-ই উৎকৃষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী; পক্ষান্তরে যার
উৎকৃষ্ট চরিত্র রয়েছে, সে-ই প্রকৃত মানুষ। উত্তম চরিত্র ছাড়া কোন মানুষ সঠিক মানুষ হওয়ার দাবী করতে পারে না।
নৈতিকতার গুরুত্বপ্রসঙ্গে- আরেকটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
عن جابر بن عبد اللھ رضى اللѧھ تعѧالى عنѧھ ان رسѧول اللѧھ صѧلى اللѧھ علیѧھ و سѧلم
قѧال: ان مѧن احѧبكم الѧى واقѧربكم منѧى مجلسѧا یѧوم القیامѧة أحاسѧنكم أخلاقѧا وان مѧن
ابغضكم الى وابعدكم منى یوم القیامѧة الثرثѧارون والمتشѧدقون و المتفیھقѧون قѧالوا یѧا
رسول اللھ: قد علمنا الثرثارین والمتشدقین فما المتفیھقون قال المتكبرون(ترمذى)
হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলে করীম (সা) বলেছেন ঃ তোমাদের মধ্যে আমার নিকট
অধিক প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন মর্যাদার দিক দিয়ে অধিক নিকটবর্তী হবে সেসব লোক, যারা তোমাদের মধ্যে
আখলাক ও নৈতিক চরিত্রের দিক দিয়ে উত্তম। পক্ষান্তরে তোমাদের মধ্যে আমার নিকট অধিকতর ঘৃণিত এবং
কিয়ামতের দিন আমার নিকট থেকে অধিক দূরে থাকবে সেসব লোক, যারা দ্রæত কথা বলে, লম্বা-লম্বা কথা বলে
লোকদের অস্থির করে তোলে এবং অহংকার পোষণ করে। সাহাবীগণ বললেন, তিন ধরনের লোকদের মধ্যে প্রথম দুই
ধরনের লোকদের স¤পর্কে তো আমরা জানি, কিন্তু শেষোক্ত লোক কারা ? নবী করীম (সা) বললেন- তারা হচ্ছে
অহংকারী লোক। (তিরমিযী)
ব্যাখ্যা
হাদীসটিতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর নিকটবর্তী ও প্রিয় লোক কে এবং কে প্রিয় নয়, তার একটি বাহ্যিক
মাপকাঠি পেশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, উত্তম চরিত্র সম্পন্ন ব্যক্তিগণই কিয়ামতের দিন রাসূলে করীমের (সা) নিকট
অধিকতর প্রিয় লোক বলে বিবেচিত হবে। তারা সেদিন রাসূলের (সা) সাহায্য লাভ করবে, রাসূলের (সা)
শাফাআতেরও অধিকারী হবে। কিন্তু যাদের মধ্যে তিন ধরনের দোষের কোন একটি থাকবে, তারা যেমন রাসূলের
প্রিয়পাত্র থেকে পারবে না, তেমনি রাসূলের নৈকট্য ও সাহায্য পেতে পারবে না। তাদের মধ্যে এক শ্রেণীর লোক
তারা, যারা খুব বেশী কথা বলে, কথা বলায় কৃত্রিমতা ও কপটতার প্রশ্রয় নেয়, এত দ্রæত এবং তাড়াতাড়ি কথা বলে
যে, অনেক সময় তা সঠিকভাবে বোঝাও যায় না। দ্বিতীয় শ্রেণীর লোক তারা, যারা দীর্ঘ ও লম্বা লম্বা কথা বলে, কথার
বাহাদুরীতে এত উচ্চমার্গে পৌছে যায় যে, তাদের যেন নাগাল পাওয়া যায় না। নিজেদের কথার উচ্চ প্রশংসা নিজেরাই
করতে থাকে। তাদের কথা থেকে এরূপ ভাব সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, তারা দুনিয়ায় কাউকেও পরোয়া করে না, কারো
মান-সম্মান-মর্যাদারও কোন মূল্য যেন তাদের কাছে নেই। আর তৃতীয় শ্রেণীর লোক হচেছ তারা, যারা মুখ ভরে কথা
বলে, কথা বলার সময় এমনভাব করে যে সমস্তকথা যেন মুখের ভেতরই বন্দী হয়ে পড়েছে এবং বিকট ধরনের শব্দই
শুধু শ্রæতিগোচর হয়। তাদের কথার মধ্যে এমন প্রচ্ছন্ন অথচ প্রকট ভাব লক্ষ্য করা যায় যে, তারা যেন সকলের
নাগালের বাইরে। অন্য সব লোক যেন তাদের থেকে অনেক ছোট, অনেক হীন এবং অনেক দূরে অবস্থিত। অহংকার,
আত্মভিমান ও আত্মশ্রেয়বোধ তাদের কথাবার্তার মধ্য দিয়ে নগ্নভাবে প্রকাশ লাভ করে। আলোচ্য হাদীসের দৃষ্টিতে
তারা শুধু রাসূলে করীম (সা)-এর কাছেই অপ্রিয় নয়, গোটা মানব সমাজেও তারা নিকৃষ্ট চরিত্রের লোক বলে
বিবেচিত। তারা আর যা-ই করুক না কেন, মানুষের অন্তর জয় করতে ও ভক্তি শ্রদ্ধা অর্জন করতে সমর্থ হয় না,
সত্যিকার মানুষের পরিচয় তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। তারা কপট, তারা মিথ্যাবাদী, তাদের থেকে সতর্ক
থাকা প্রয়োজন।
অশ্লীল কথাবার্তা নিষিদ্ধ
عن ابى الدرداء رضى اللھ تعالى عنھ- ان النبى صلى اللھ علیѧھ و سѧلم قѧال: مѧا مѧن
شѧئ اثقѧل فѧى میѧزان العبѧد المѧؤمن یѧوم القیامѧة مѧن حسѧن الخلѧق و ان اللѧھ یѧبغض
الفاحش البذى. (ترمذى)
হযরত আবুদ্দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত। মহানবী (সা) বলেন, কিয়ামতের দিন ঈমানদার বান্দার দাড়িপাল্লায় উত্তম
চরিত্র অপেক্ষা অধিক ভারী জিনিস আর কিছুই হবে না। আর যে লোক বেহুদা, অশ্লীল ও নিকৃষ্ট কথাবার্তা বলে,
আল্লাহ তাআলা তাকে মোটেই পছন্দ করেন না। (তিরমিযী)
ব্যাখ্যা
কিয়ামতের দিন ঈমানদার ব্যক্তির আমল ওজনকরা কালে তার উত্তম চরিত্রই অত্যন্তভারী জিনিসরূপে প্রমাণিত হবে।
তার অর্থ, ঈমানদার ব্যক্তি মাত্রই দুনিয়ায় অত্যন্তউত্তম চরিত্রবান হবে। কেননা ঈমান ও উত্তম নৈতিক চরিত্রের মধ্যে
গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। যেখানে ঈমান আছে, সেখানে অনিবার্যরূপে উন্নত নৈতিক চরিত্র থাকবে। ঈমান না হলে
যেমন উন্নত নৈতিক চরিত্র সম্ভব নয়, তেমনি সঠিক ঈমানের অনিবার্য ফল হচ্ছে উন্নত নৈতিক চরিত্র।
এ হাদীসে খারাপ চরিত্রের একটি বিশেষ গুরুতর দিক দৃষ্টান্তহিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তা হচ্ছে অশ্লীল কথা বলা
এবং বেহুদা, বাজে ও নীচ-হীন কথাবার্তা বলা। কথা মানুষের মনোভাব ও চিন্তাধারার বাহন। মানুষের অন্তরের
ভাবধারা ও ভিতরকার প্রকৃতরূপের প্রকাশ ঘটে মানুষের মুখের কথায়। কাজেই অশ্লীল কথা যেমন পরিত্যাজ্য,
অপ্রয়োজনীয়, তাই এ ধরনের কথাবার্তা বলাও একান্তই অবাঞ্ছনীয়। কথাবার্তা যার খারাপ, অশ্লীলতা ও হীনতা প্রকট
হয়ে উঠে যার কথাবার্তার মধ্য দিয়ে সে লোকের মন যে নিতান্তই কলুষতায় আচছন্ন তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এ ধরনের কথাবার্তা পরিত্যাগ করার আহŸবান জানিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে,
এ ধরনের কথা যারা বলতে অভ্যস্ত, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে একবিন্দু ও ভালবাসেন না, তাদের প্রতি আল্লাহর
অপরিসীম ক্রোধ ও অসন্তোষ পতিত হয়। মহান আল্লাহই যাদের প্রতি অসন্তুষ্ট, তাদের ভবিষ্যৎ কিছুতেই কল্যাণকর
থেকে পারে না। আনুষ্ঠানিক নেক আমলের বোঝা বিচারের পাল্লাকে ভারী করতে পারবে না, যদি না এর সাথে উত্তম
চরিত্র যোগ হয়, একথা হাদীস থেকে সু¯পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ হাদীসের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে প্রতিটি ঈমানদার
মুসলমানকে উত্তম চরিত্রের অধিকারী থেকে হবে। তার কথা বার্তা, আচার-আচরণে এর বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে
হবে। অশ্লীল কথা-বার্তা বর্জন করতে হবে। তা হলে আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দুনিয়া ও
আখিরাতে কামিয়াব লাভ করবেন।
মহানবী (সা)-এর চরিত্র
عن مالك رضى اللھ تعالى عنھ:انھ قد بلغھ ان رسول اللھ صلى اللھ علیھ و سلم قѧال
بعثت لأ تمم مكارم الاخلاق. (موطأ امام مالك)
ইমাম মালিক (র) থেকে বর্ণিত। তার নিকট এ খবর পৌঁছেছে যে, নবী করীম (সা) বলেছেন: আমাকে নৈতিক
চরিত্রের পরিপূর্ণতা দানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয়েছে। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
ব্যাখ্যা
হাদীসটি মূলত হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম মালিকের নিকট এটা নির্ভরযোগ্য ও ধারাবাহিক
সূত্রে পৌঁছেছে, যদিও তিনি তাঁর পূর্ববর্তী বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করেননি।
হাদীসে উল্লেখিত নৈতিক চরিত্র মাহাত্ম্য বলতে সে সব উত্তম নৈতিক ধারণা ও গুণকে বোঝানো হয়েছে, যার ভিত্তিতে
একটি পবিত্র মানবীয় সমাজ গড়ে উঠতে পারে। এবং সমাজ থেকে নৈতিকতার প্রভাবে সকল অন্যায়-অবিচার, হিংসাবিদ্ধেষ চুরি-ডাকাতি, ব্যাভিচার, হত্যা লুণ্ঠন, মিথ্যা বলা, ধোকা দেয়া প্রভৃতি সকল অন্যায় অশ্লীল ও নৈতিকতা
বিরোধী কাজ-কর্ম লোপ পেয়ে স্বর্গীয় সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
নৈতিক চরিত্র-মাহাÍ্যরে পূর্ণতা বিধানের অর্থ এই যে, নবী করীম (সা)-এর পূর্ববর্তী নবী ও তাঁদের অনুসারীগণ বিভিন্ন
সময়ে বিভিন্ন অবস্থার মধ্যে ও বিভিন্ন দেশে নৈতিক বৈশিষ্ট্যের বিভিন্ন দিকের শিক্ষাকে উজ্জ্বল উদ্ভাসিত করে
তুলেছেন। আর নিজেদের বাস্তব কর্মজীবন দিয়ে তার উন্নততর দৃষ্টান্তপেশ করেছেন। কিন্তু হযরতের আবির্ভাবের পূর্ব
পর্যন্তএমন কোন সর্বাত্মক ব্যক্তিত্ব ভূ-পৃষ্ঠে আগমন করেননি, যার দ্বারা ইসলামী নৈতিকতার সর্বাত্মক রূপ উপস্থাপিত
ও বিবৃত থেকে পারে এবং একদিকে নিজের জীবনে তা পালন করে দেখাতে ও অপরদিকে তদনুযায়ী একটি পূর্ণাঙ্গ
সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। বস্তুত এমন ব্যক্তিত্ব মানুষের গোটা ইতিহাসে একটি মাত্র পরিদৃষ্ট হয় এবং
তা হচ্ছে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদের ব্যক্তিত্ব। তিনি তাঁর তেইশ বৎসরের নবুয়তী জীবনে মানব জীবনের সমগ্র দিক ও
ক্ষেত্রের জন্য নৈতিক চরিত্রের অপূর্ব ও উজ্জ্বল নিদর্শন সংস্থাপন করেছেন। এ ব্যাপারে কোন একটি দিকেও একবিন্দু
অসম্পূর্ণতা বা ত্রæটি-বিচ্যুতি নেই। আর বস্তুত এ উদ্দেশ্যেই বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা) দুনিয়ায় আগমন করেছিলেন
এবং এ কাজকে পূর্ণতার চরম উন্নত স্তরে পৌঁছে দিয়েই তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করেছেন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) নিজেই ঘোষণা করেছেন যে, এ নৈতিক চরিত্র মাহাত্ম্যের পূর্ণতা বিধানের উদ্দেশ্যেই
তিনি দুনিয়ায় প্রেরিত হয়েছিলেন। এ থেকে স্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, এটা তাঁর জীবনের কোন আনুসঙ্গিক কাজ নয়
বরং এটাই হচ্ছে তাঁর নবুয়াতের মূল লক্ষ্য। বস্তুত দ্বীন ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি যত কাজই করেছেন,
যত কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকারই করেছেন, তার চূড়ান্তলক্ষ্য ছিল মানবজাতির সম্মুখে চূড়ান্তভাবে নৈতিক চরিত্র-মাহাত্ম্য
উজ্জ্বল উদ্ভাসিত করে তোলা। ব্যক্তি মানুষকে তার ভিত্তিতে গঠন করা এবং একটি পূর্ণাঙ্গ সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা উহার
ভিত্তিতে গড়ে তোলা। আর এর জন্য একমাত্র ইসলামী জীবন ব্যবস্থাই যে চূড়ান্তবিধান তাতে কোনই সন্দেহ থাকতে
পারে না। কেননা, ইসলামী জীবন ও সমাজ ব্যবস্থায় ইসলামী মূল্যবোধেরই লালন হয়ে থাকে। সরকার যেমন ইসলামী
মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক থাকেন তেমনি জনগণও ইসলামী জীবন ব্যবস্থাকে সকল স্তরে পালন করার জন্য আমৃত্যু
প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ইসলামী রাষ্ট্রে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়ের প্রতিরোধ সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সূতরাং
পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থাই কেবল মানুষকে সৎ, চরিত্রবান এবং নৈতিকতার মূল্যবোধে উজ্জীবিত করতে পারে।
নৈতিক চরিত্র গঠনের উপায়
عن ابى ذر رضى اللѧھ تعѧالى عنѧھ قѧال: دخلѧت علѧى رسѧول اللѧھ صѧلى اللѧھ علیѧھ و
سلم. فذكر الحدیث بطولھ الى ان قال: قلت یا رسول اللھ اوصنى قال اوصیك بتقوى
اللھ فانھ یزین لأمرك كلھ قلت زدنى قال: علیك بتلاوة القران و ذكر اللھ عز و جل
فانھ ذكر لك فى السماء و نور لك فى الارض قلت زدنى. قال: علیك بطول الصمت
فانѧھ مطѧردة للشѧیطان و عѧون لѧك علѧى امѧر دینѧك قلѧت زدنѧى . قѧال: ایѧاك و كثѧرة
الضحك فانھ یمیت القلب و یذھب بنور الوجھ قلت. زدنѧى قѧال: قѧل الحѧق و ان كѧان
مرا قلت زذنى . قال لا تخف فى اللھ لومة لائم قلت زدنى قال: لیحجѧدك عѧن النѧاس
ما تعلم من نفسك. (بیھقي , شعب الایمان)
হযরত আবূ যার আল-গিফারী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদিন আল্লাহর রাসূল (সা)-এর খিদমতে
হাযির হলাম। অতঃপর (হযরত আবূ যার, নতুবা তাঁর নিকট থেকে হাদীসের শেষের দিকের কোন বর্ণনাকারী) একটি
দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন (এ হাদীস এখানে বর্ণনা করা হয়নি)। এ প্রসঙ্গে হযরত আবু যার বলেন- আমি তোমাকে
নসীহত করছি ঃ তুমি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। কেননা এটা তোমার সমস্তকাজকে সুন্দর, সুষ্ঠু ও সৌন্দর্যমন্ডিত
করে দেবে। আবূ যার বলেন ঃ আমি আরো নসীহত করতে বললাম। তখন তিনি বললেন ঃ তুমি কুরআন মাজীদ
তিলাওয়াত করবে এবং আল্লাহকে সব সময়ই স্মরণে রাখবে। কেননা এ তিলাওয়াত ও আল্লাহর স্মরণের ফলেই
আকাশ রাজ্যে তোমাদের উল্লেখ করা হবে এবং এ যমীনেও তা তোমার জন্য ‘নূর’ স্বরূপ হবে।
আবু যার আবার বললেন ঃ হে আল্লাহর রাসূল ! আমাকে আরো নসীহত করুন। তিনি বললেন ঃ বেশীর ভাগ সময়
চুপচাপ থাকা ও যথাসম্ভব কম কথা বলার অভ্যাস করবে। কেননা এ অভ্যাস শয়তান বিতাড়নের কারণ হবে এবং
দ্বীনের ব্যাপারে এটা তোমার সাহায্যকারী হবে। আবু যার বলেন- আমি বললাম ঃ আমাকে আরো কিছু উপদেশ দিন।
বললেন ঃ বেশী হেসো না, কেননা এটা অন্তরকে হত্যা করে এবং মুখমন্ডলের জ্যোতি এর কারণে বিলীন হয়ে যায়।
আমি বললাম ঃ আমাকে আরো উপদেশ দিন। তিনি বললেন ঃ সব সময়ই সত্য কথা ও হক কথা বলবে- লোকদের
পক্ষে তা যতই দুঃসহ ও তিক্ত হোক না কেন । বললাম, আমাকে আরো নসীহত করুন। তিনি বললেন ঃ আল্লাহর
ব্যাপারে কোন উৎপীড়কের উৎপীড়নকে আদৌ ভয় করবে না। আমি বললাম ঃ আমাকে আরো নসীহত করুন। তিনি
বললেন ঃ তোমার নিজের সম্পর্কে তুমি যা জান, তা যেন তোমাকে অপর লোকদের দোষত্রæটি সন্ধানের কাজ থেকে
বিরত রাখে। (বায়হাকী)
ব্যাখ্যা
আলোচ্য হাদীসে প্রথম লক্ষণীয় যে, একজন সাহাবী রাসূলে করীমের নিকট নসীহত ও উপদেশ লাভ করার ইচ্ছা
প্রকাশ করেন এবং নসীহত করতে বলেন। তিনি সংক্ষিপ্ত নসীহত করলেন; কিন্তু সংক্ষিপ্ত নসীহত থেকে সাহাবী
মোটেই পরিতৃপ্ত থেকে ও ক্ষান্তথেকে পারেননি। বরং বারবার নসীহত প্রার্থনা করলেন। বারবার বেশী বেশী করে
নসীহত করার জন্য কাতর প্রার্থনা জানালেন। এ ঘটনা আমাদেরকে এ পথ নির্দেশই দান করে যে, প্রত্যেক ঈমানদার
ব্যক্তিরই কর্তব্য তার অপেক্ষা অধিক অভিজ্ঞ, অধিক জ্ঞানী ও মুত্তাকী ব্যক্তির নিকট থেকে বিভিন্ন নসীহত শ্রবণ করা,
তা কবুল ও পালন করা। বস্তুত কেবল আবু যার গিফারী (রা) একাই নন, প্রায় সকল সাহাবীই রাসূলের (সা) নিকট
থেকে উপদেশ গ্রহণ করতেন। সাধারণভাবেও শব্দ শ্রবণ ও কবুল করতেন এবং বিশেষভাবেও করতেন এবং
ব্যক্তিগতভাবেও তা করতেন। ভাল চরিত্রবান হওয়ার অভিলাসী যারা, এটা তাদের এক স্থায়ী স্বভাব।
আলোচ্য হাদীসে নবী করীম (সা) প্রথমত তাকওয়া অবলম্বনের উপদেশ দিয়েছেন। কেননা তাকওয়া মু’মিন লোকদের
সকল প্রকার কাজকে সুন্দর, সুষ্ঠু ও সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ করে দেয়। কাজেই যে লোক তাকওয়া
অবলম্বন করবে তার সমগ্র জীবন আনুগত্যশীল ও সে আল্লাহর বিধান পালনকারী হয়ে উঠবে। তার ভেতর ও বাইর
এবং অন্তর ও বাইরের জীবন সুসংগঠিত, সুনিয়ন্ত্রিত, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও সৌন্দর্যমন্ডিত হবে। তার জীবন হবে সুদৃঢ়
আদর্শবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এক স্থায়ী নীতির অনুসারী।
তারপর কুরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহর যিকর করার উপদেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন যে, এটা করলে
তার ফলে উর্ধ্বতম জগতেও তার কথা আলোচিত হবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন ঃ
فَٱذ ْكُرُ ونِيۤ أ َذ ْكُرْ كُمْ
“তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ করব।” (সূরা আল-বাকারা : ১৫২)
অপর এক হাদীসে বলা হয়েছে “কোন বান্দা যখন এ পৃথিবীতে আল্লাহর স্মরণ করে, তখন আল্লাহ তাআলা তার
নিকটবর্তী ফেরেশতাদের মধ্যে তার স্মরণ ও আলোচনা করেন।” কুরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহর স্মরণ করার আর
একটা বরকত হচ্ছে এর ফলে এ দুনিয়ায় একটি নূর লাভ হয়। যিকর ও তিলাওয়াতের নূর মূলত ব্যক্তির অন্তর্লোকেই
প্রষ্ফুটিত হয় ; কিন্তু এর ষ্ফুরণ ঘটলে ব্যক্তির সমগ্র ব্যবহারিক জীবনে তা পরিব্যাপ্ত হয়।
অতঃপর অধিক সময় চুপ করে থাকার ও কথা কম বলার উপদেশ দিয়েছেন। বলেছেন- এটা এমন একটি হাতিয়ার
যার দ্বারা শয়তানকে বিতাড়িত করা যায়, শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভবপর এবং দ্বীন
পালনের ব্যাপারে এ থেকে বড়ই সাহায্য ও সহযোগিতা পাওয়া যায়। বস্তুত যে লোক অধিক মাত্রায় কথা বলতে
অভ্যস্ত, চুপ থাকা যার স্বভাব বিরোধী, তার পক্ষে যে কোন মুহূর্তে শয়তানের ধোকায় পড়া এবং দ্বীন পালনের দায়িত্ব
ভুলে যাওয়া অসম্ভব বা কঠিন কিছুই নয়। শাণিত তরবারির মত অধিক চালু রসনার মারফতে শয়তান মানুষকে যত
বিভ্রান্তিকর ও অনিষ্টকর কাজের মধ্যে ফেলতে পারে তত আর কোন মাধ্যমে পারে না। মিথ্যা কথা বলা, গীবত করা,
পরের উপর মিথ্যা দোষারোপ করা, গালমন্দ করা, পরস্পরের নিকট পরস্পরের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা লাগিয়ে শত্রæতার
সৃষ্টি করা প্রভৃতি বড় বড় গুনাহ এ চুপ না থাকার কারণেই হয়ে থাকে। আর যে লোক অধিক চুপচাপ থাকতে অভ্যস্ত,
তার দ্বারা এ ধরনের অপরাধ কর্মই হয়ে থাকে তবে অধিক চুপচাপ থাকার অর্থ কখনো এটা নয় যে, প্রয়োজনীয় কথাও
বলা যাবে না। বরং উহার অর্থ হচ্ছে- প্রয়োজন ছাড়া কথা না বলা এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত না বলা। আর ভাল ভাল
কথা-দ্বীন ইসলামের, কুরআন-হাদীসের কথা না বলাও উহার অর্থ নয়, একথা মনে রাখা আবশ্যক।
অতঃপর অধিক হাসা-হাসি না করার উপদেশ দিয়েছেন। কারণস্বরূপ বলেছেন- অধিক হাসা-হাসি করার ফলে আত্মা
মরে যায়, চেহারা বা মুখমন্ডল জ্যোতিহীন হয়ে পড়ে। আত্মা মরে যাওয়ার অর্থ অধিকতর গাফলতি ও দায়িত্বহীনতা
দেখা দেয়া এবং অনুভূতির বিলুপ্তি ঘটা। মনুষ্যত্বের পক্ষে এটা এক প্রকারের মৃত্যুও বটে। আর এ গাফলতির
অন্ধকারই মনকে মারে, ব্যক্তির মুখমন্ডলকেও আচ্ছন্ন করে ফেলে। অথচ ঈমানদার লোকদের মুখমন্ডল সব সময়ই
উজ্জ্বল ও জ্যোতির্ময় হয়ে থাকে।
এরপর আল্লাহর রাসূল (সা) একটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দান করেছেন। তা হচ্ছে, আল্লাহর ব্যাপারে কোন
উৎপীড়কের উৎপীড়নকে ভয় না করা। ভয় মানুষের প্রকৃতিগত ব্যাপার ; তবে ইসলামের নির্দেশ এই যে, ভয় কেবল
আল্লাহকেই করবে, তাকে ছাড়া আর কাউকেও ভয় করবে না। বস্তুত যে লোক আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করে
না, সে হয় নির্ভীক, বীর এবং সাহসী। কিন্তু যে লোক আল্লাহ ছাড়া অন্য শক্তি বা ব্যক্তিকে ভয় করে তার মত ভীতু
লোক কেউ থেকে পারে না। সকল ক্ষেত্রে তার মস্তক নতই থাকবে, কখনো উঁচু থেকে পারবে না। ফলে সে দুনিয়ার
সামান্য ও নগণ্য জিনিসের সম্মুখে মস্তক ধূলায় লুটায়ে চরমভাবে লাঞ্ছিত হবে। এ ধরনের ব্যক্তির চরিত্র বলতে কিছুই
থাকতে পারে না। লাঞ্ছনা আর অবমাননাই তার কপালের লিখন হয়ে পড়ে।
নৈতিকতা অনুসারে ঈমানের শ্রেণী বিভাগ
عن ابى سعید ن الخدرى رضى اللھ تعѧالى عنѧھ عѧن رسѧول اللѧھ صѧلى اللѧھ علیѧھ و
سلم قال: من راى منكم منكرا فلیغیره بیده فان لم یستطع فبلسانھ فان لم یستطع فبقلبھ
و ذالك اضعف الایمان . (مسلم)
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কোন প্রকার অন্যায়
ও পাপ কার্য অনুষ্ঠিত থেকে দেখলে যেন সে তার হাত দ্বারা তা অবশ্যই পরিবর্তন করে দেয়। এরূপ করার শক্তি না
থাকলে মুখ দ্বারা এর পরিবর্তন করার জন্য চেষ্টা করবে, আর তাও সাহস না করলে অন্ততঃ মন দ্বারা এর পরিবর্তন
কামনা করবে। আর এটা হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতার পর্যায়। (মুসলিম)
ব্যাখ্যা
‘মুনকার’ শব্দের অর্থ- অন্যায়, পাপ ও আল্লাহর নাফরমানী হয় এমন যাবতীয় কাজকেই বোঝায় এবং এ ধরনের যে
কোন কাজ বা অনুষ্ঠান দেখলে ঈমানদার লোকদের কর্তব্য হচ্ছে উহার পরিবর্তনের জন্য তৎপর হওয়া। বস্তুত এরূপ
অবস্থায় কোন ঈমানদার ব্যক্তিই নিষ্ক্রিয়, নিস্তব্ধ ও নিরপেক্ষ হয়ে বসে থাকতে পারে না। আলোচ্য হাদীসে অন্যায় ও
পাপকে পরিবর্তন করার জন্য ক্রমিক পর্যায় ও অবস্থার তারতম্যের দৃষ্টিতে তিনটি উপায় পেশ করা হয়েছে। প্রথমত:
হাত দ্বারা উহার পরিবর্তন করা। দ্বিতীয়ত: মুখের ভাষা ও মুখপত্রের সাহায্যে এর পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করা আর
তৃতীয়ত: মন দ্বারা উহার পরিবর্তনের কামনা করা। অন্যায় কাজ প্রতিরোধ করার জন্য লোকদের সামর্থের পার্থক্য ও
অবস্থার বিভিন্নতার কারণে উল্লেখিত তিনটি উপায়ই প্রণিধানযোগ্য। কোন অন্যায় কাজ অনুষ্ঠিত থেকে দেখলে সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তির বা ব্যক্তিসমষ্টির যদি ক্ষমতা থাকে তবে নিজেদের হস্তদ্বারা কিংবা ক্ষমতা প্রয়োগ করেই এর প্রতিরোধ করতে
হবে। শক্তি প্রয়োগ করা সম্ভব না হলে মুখে এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং সেজন্য জনমত গড়ে তুলতে
হবে। আর অবস্থা যদি এতদূর খারাপ হয়ে গিয়ে থাকে যে, মুখেও প্রতিবাদ করা সম্ভব হয় না, তখন অন্ততঃ মন দ্বারা
এটাকে খারাপ জানতে হবে এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সার্বিক পাপ, অন্যায় ও নাফরমানী পরিবর্তন করে সর্বত্র ইসলামী
জীবন ধারার বাস্তবায়নের জন্য নীরবে চেষ্টা করতে হবে। এটা না করলে ঈমানের দাবি পূর্ণ থেকে পারে না; ঈমান যে
আছে তার কোন প্রমাণও পাওয়া যায় না।
মুসলিম শরীফের অপর এক বর্ণনায় হাদীসের শেষ কথাটি বলা হয়েছে এ ভাষায়:
و لیس وراء ذلك ایمان حبة خردل
কোন ব্যক্তি অন্যায় ও পাপ কাজকে মন দ্বারা ঘৃণা না করলে ও তার পরিবর্তন কামনা না করলে একবিন্দু পরিমাণ
ঈমান আছে বলে ধারণা করা যাবে না।
উপরোক্ত সকল হাদীসই আমাদের সম্মুখে একটি সুষ্ঠু কর্মনীতি উপস্থাপিত করেছে। প্রথম পর্যায়ে ঈমানদার লোকদের
দায়িত্বহচ্ছে অন্যায় কি সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা অর্জন করা। কেননা কোনটি অন্যায় এবং তা কতখানি অন্যায় তা
জানা না থাকলে ও বুঝতে না পারলে এর সম্পর্কে কোন নীতিই গ্রহণ করা সম্ভব হবে না। সে সঙ্গে প্রয়োজন জনগণের
মধ্যে অন্যায়ের প্রতি আন্তরিক ঘৃণা জাগ্রত করতে চেষ্টা করা, সাধারণভাবে সমাজে অন্যায় বিরোধী একটি জনমত
তৈরি করা।
দ্বিতীয় পর্যায়ে মুখে, ভাষা-সাহিত্য ও পত্র-পত্রিকার মারফতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ আওয়াজ তোলা, জোরদার
প্রতিবাদ উত্থাপন করা। এর ফলে জনমতের এক প্রবল শক্তির উদ্ভব হবে। এ শক্তির সুষ্ঠু লালন ও সংহতি বিধানের
মাধ্যমে অন্যায় প্রতিরোধক ও সত্য প্রতিষ্ঠাকামী এক দুঃসাহসী আল্লাহ নিবেদিত প্রাণের এক দল গড়ে তোলা। শেষ
পর্যায়ে এ শক্তির সাহায্যে কার্যত অন্যায়ের মূলোৎপাটন করে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করা। এ দায়িত্ব পালন করা সমাজের
প্রতিটি মুসলিম নাগরিকের।
নৈর্ব্যক্তিক উত্তর-প্রশ্ন
সঠিক উত্তরে টিক দিন
১. তাযকিয়া-নাফস শব্দের অর্থ হচেছক. আত্মমর্যাদা; খ. তাকওয়া;
গ. আত্মশুদ্ধি; ঘ. আত্মসমালোচনা।
২. প্রকৃত মনুষ্যত্বের মানদন্ড কি?
ক. উত্তম নৈতিক চরিত্র; খ. বাহ্যিক আচরণ;
গ. পরোপকারিতা; ঘ. ব্যক্তি স্বাধীনতা।
৩. কিয়ামতের দিন ঈমানদারের দাড়িপল্লায় কোন্জিনিস অধিক ভারী হবে?
ক. নীতিকথা; খ. উত্তম চরিত্র;
গ. সমাজকর্ম; ঘ. মানবতাবোধ।
৪. দুর্বল ঈমানের পরিচয় কী?
ক. অন্যায় কাজে শক্তি প্রয়োগ করে বাঁধাদান; খ. অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দেয়া;
গ. মুখে মুখে অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করা; ঘ. অন্তরে অন্যায় কাজের প্রতি ঘৃণা পোষণ করা।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
عن مالك رضى اللھ تعالى عنھ : قد بلغھ ان رسول اللھ صلى اللھ علیھ وسلم .১
قال : بعثت لأتمم مكارم الاخلاق.
এ হাদীসটির ব্যাখ্যা লিখুন।
২. ব্যাখ্যা করুন-‘ঈমানদার ব্যক্তির দাঁড়িপাল্লায় উত্তম চরিত্র অপেক্ষা ভারী জিনিস আর কিছুই হবে না।’
৩. নৈতিক চরিত্রের গুরুত্বহাদীসের আলোকে বর্ণনা করুন।
৪. হাদীসের আলোকে নৈতিক চরিত্র গঠনের উপায় বর্ণনা করুন।
৫. হাদীসের আলোকে ঈমানের তিনটি স্তরের বিবরণ দিন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. নৈতিক চরিত্র বলতে কী বোঝায়? হাদীসের আলোকে নৈতিক চরিত্র গঠনের গুরুত্ব ও উপায় স¤পর্কে একটি নাতিদীর্ঘ রচনা লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]