আল-কুরআনের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য বিস্তারিতভাবে লিখুন।

< আল-কুরআনের গুরুত্ব
বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিমান্বিত মহাগ্রন্থ আল-কুরআন বিশ্ব মানবতার প্রতি মহান আল্লাহর অনুগ্রহ ও অমূল্য অবদান। এ
কুরআন গোটা মানব জাতির জন্য পথপ্রদর্শক ও শাশ্বত জীবন ব্যবস্থা। মানব জীবনের এমন কোন বিষয় নেই যা এ গ্রন্থে
আলোচিত ও উপস্থাপিত হয়নি। আল্লাহ প্রদত্ত ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় বিধি-বিধানের সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত বিবরণের সমন্বয়
হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। এটা মানবের ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির দিশারী। এ কুরআন
চিরন্তন ও শাশ্বত। সর্ববিধ জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস এবং সামগ্রিক কল্যাণের ধারক ও বাহক। তাই পবিত্র কুরআনের গুরুত্ব
ও মাহাত্ম্য অপরিসীম। এখানে আল-কুরআনের গুরুত্বের কতিপয় দিক আলোচিত হলসর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদাপূর্ণ গ্রন্থ
মহাগ্রন্থ আল-কুরআন সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদাপূর্ণ মহিমান্বিত আসমানী কিতাব। সর্ববিধ কল্যাণের ভান্ডার এ গ্রন্থ। কুরআন সকল
দিকের বিচারেই একটি মর্যাদাপূর্ণ গ্রন্থ। কুরআনের প্রভাব এতই গভীর যে, একে যদি কোন পর্বতের উপর নাযিল করা
হত তাহলে সে পর্বত বিদীর্ণ হয়ে যেত। এর মাহাত্ম্য সম্বন্ধে স্বয়ং আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন-
ل َوْ أ َنزَ لْنَا ھَـٰذَا ٱلْق ُرْ آنَ عَل َىٰ جَبَلٍ ل َّرَ أ َیْتَھُ خَاشِعا ً مُّتَصَدِّعا ً مِّنْ خَشْیَةِ ٱلل َّھِ وَ تِلْكَ
ٱلأ َمْث َالُ نَضْرِ بُھَا لِلنَّاسِ ل َع َل َّھُمْ یَتَفَكَّ رُ ونَ
“আমি যদি এ কুরআন পাহাড়ের উপর নাযিল করতাম, তবে তুমি দেখতে তা আল্লাহর ভয়ে নত হয়ে বিদীর্ণ হয়ে
গিয়েছে। আমি এ দৃষ্টান্তমানুষের জন্য বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা করে।” (সূরা আল-হাশর : ২১)
কুরআন অতীব মর্যাদাপূর্ণ গ্রন্থ, এটা লাওহে মাহফুজে সুরক্ষিত, যা পবিত্র অবস্থা ছাড়া স্পর্শ করা যায় না। আল্লাহ
বলেন,
إ ِنَّھُ ل َق ُرْ آنٌ كَرِ یمٌ فِى كِتَابٍ مَّكْنُونٍ -لا َّ یَمَسُّھُ إ ِلا َّ ٱلْمُطَھَّرُ ونَ
“নিশ্চয় এটা সম্মানিত কুরআন, যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে। যারা পূত:পবিত্র তারা ছাড়া অন্য কেউ তা স্পর্শ করতে
পারবে না।” (সূরা আল-ওয়াকিয়া : ৭৭-৭৯)
মহান আল্লাহ আরো বলেন,
فَى صُحُفٍ مُّكَرَّ مَةٍ مَّرْ ف ُوعَةٍ مُّطَھَّرَ ةٍ ب ِأ َیْدِى سَفَرَ ةٍ كِرَ امٍ بَرَ رَ ةٍ
“তা আছে মর্যাদা সম্পন্নলিপিসমূহে, যা উন্নত, পবিত্র, মহান, পুত:চরিত্র লিপিকরের হাতে লিপিবদ্ধ।”
(সূরা আবাসা : ১৩-১৬)
আল-কুরআন উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন হওয়ার আর একটি নিদর্শন এই যে, একে স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা ‘আহসান’ (احسن(
বা সর্বোত্তম-সুন্দরতম বিশেষণে অভিহিত করেছেন এবং এতে উল্লিখিত নির্দেশসমূহের অনুসরণ মানব জাতির জন্য
অপরিহার্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে-
وَ ٱتَّب ِعُـوۤ ا ْ أ َحْسَنَ مَآ أ ُنزِ لَ إ ِل َیْكُم مِّن رَّ بِّكُـمْ مِّن قَ بْلِ أ َن یَأ ْتِیَكُـمُ ٱلْع َذَابُ بَغْتَة ً وَ أ َنتُمْ لاَ
تَشْعُرُ ونَ
“তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমাদের প্রতি উত্তম যা নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ কর, তোমাদের উপর
অতর্কিতভাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে আযাব আসার পূর্বে।” (সূরা আয-যুমার : ৫৫)
আল-কুরআন মুসলিম উম্মাহর জন্য খুবই সম্মান ও গৌরবের বস্তু। হযরত আয়েশা (রা) রাসূলুল্লাহ্ (স.)-এর একটি
হাদীস বর্ণনা করেছেন, যার ভাষা নি¤œরূপ-
ان لكل شئ شرفا یتبا ھون بھ وان بھاء امتى وشر فھا القران-
“মহানবী (স) বলেন, প্রত্যেক জিনিসেরই কিছু সম্মান বা গৌরবের বিষয় থাকে, সে রূপ আমার উম্মতের সৌন্দর্য ও
গৌরবের বিষয় হল কুরআন।” (আবু-নুআয়ম: হিলওয়াতুল আউলিয়া)
মহানবী (স) আরো বলেন,
ان ھذا القران حبل اللھ وھو النور المبین والشفاء النافع عقد لمن تمسك بھ
ونجاة لمن تبعھ-
“নিশ্চয় এ কুরআন আল্লাহর রজ্জু, অতি উজ্জ্বল আলো এবং উপকারী মহৌষধ। যে ব্যক্তি একে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরবে,
তার জন্য মুক্তির চুক্তিপত্র হবে এবং যে ব্যক্তি তা মেনে চলবে সে নাজাত পাবে।”
সর্বশেষ আসমানী কিতাব
পবিত্র কুরআন বিশ্ব মানবতার প্রতি মহান আল্লাহর সর্বশেষ আসমানী কিতাব। এরপর কিয়ামত পর্যন্তআর কোন ঐশী
গ্রন্থনাযিল হবে না। এর আগে মানব জাতির হিদায়াতের জন্য তাওরাত, যাবূর, ইনজীল নামক আরো বড় বড় তিনটি
আসমানী কিতাব এবং ১০০ খানা সহীফা বিভিন্ন নবী-রাসূলগণের কাছে নাযিল হয়েছিল। এগুলো স্বয়ং আল্লাহ
তা’আলার পক্ষ থেকেই নাযিল করা হয়েছিল। বর্তমানে এ আসমানী কিতাবগুলো আসল ভাষা ও অবিকল অবস্থায়
সংরক্ষিত নেই। বর্তমানের তাওরাত, যাবূর ও ইনজীল আসল নয়। আসল কিতাব বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হতে হতে
হিব্রæ এবং গ্রিক ইত্যাদি ভাষায় রূপান্তরিত হয়ে ইংরেজি ভাষায় আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। বিভিন্ন বিপর্যয় এবং
ইয়াহূদী-খ্রিস্টান পাদ্রীদের সুবিধামত বিকৃত করার ফলে ঐসব গ্রন্থের ওহীর আসল ভাষা ও শিক্ষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আর মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য এ আল-কুরআনই কিয়ামত পর্যন্তপথনির্দেশ করবে।
এ মর্মে আল্লাহর ঘোষণা-
إ ِنْ ھُوَ إ ِلا َّ ذِكْرٌ ل ِّلْع َال َمِینَ
“এটা তো বিশ্ব জগতের জন্য স্মারক গ্রন্থ।” (সূরা ছোয়াদ : ৮৭)
এস এস এইচ এল বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
ইউনিট-১ : আল-কুরআন: পরিচিতি ও বিষয়বস্তু পৃষ্ঠা-২৩
চিরন্তন ও শাশ্বত সত্য গ্রন্থ
অতীত যুগের সকল আসমানী গ্রন্থই ছিল নির্দিষ্ট কোন গোষ্ঠী, জাতি বা ভৌগোলিক সীমারেখা বেষ্টিত জনগোষ্ঠীর জন্য।
আর তা ছিলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হিদায়াতের উৎস। কিন্তু কুরআন মাজীদ কোন নির্দিষ্ট জাতি, গোষ্ঠী-স¤প্রদায়, দেশ
বা কালকে কেন্দ্র করে নাযিল হয়নি। এটা বরং সমগ্র বিশ্ব মানবতার জন্য সর্বাত্মক হিদায়াতের সওগাত নিয়ে আবির্ভূত
ٱلْحَمْدُ لِل َّھِ ٱل َّذِى أ َنْزَ لَ عَل َىٰ عَبْدِهِ ٱلْكِتَابَ وَ ل َمْ یَجْع َل ل َّھُ عِوَ جَاরনকে ঘাষর্ণা মেমে এ আল্লাহ মহান’। গ্রš জনীন¦বিশ ও ত¦শাশ, চিরন্তন এটা তাই। ছয়েহে
“সকল প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি তাঁর বান্দার প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন এবং তাতে তিনি কোন প্রকার বক্রতা
রাখেন নি।” (সূরা আল-কাহাফ : ১)
আল্লাহ আরও বলেন,
ق ُلْ یٰأ َیُّھَا ٱلنَّاسُ قَدْ جَآ ءَكُمُ ٱلْحَقُّ مِن رَّ بِّكُمْ
“বল, হে মানুষ ! তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমাদের কাছে সত্য এসেছে।” (সূরা ইউনুস : ১০৮)
সুতরাং এসব আয়াতের মর্ম থেকে বোঝা যায়, পবিত্র কুরআন চিরন্তন ও শাশ্বত গ্রন্থ। এর অনুসরণ করলেই মানবজাতি
পাবে মুক্তির দিশা।
পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা
এ পবিত্র কুরআনই ইসলামী জীবন ব্যবস্থার মূলনীতি ও অনুশাসনের উৎস। পবিত্র কুরআনের উপরই ইসলামের সম্পূর্ণ
ইমারতের অবকাঠামো প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ মানুষকে তাঁর খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাদের উপর
বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য আরোপ করেছেন। মানব জাতির বর্তমান ও অনাগত কালের যে সব সমস্যা ও প্রয়োজন দেখা
দেবে, তার সব কিছুরই মূলধারা ও মূলনীতি পবিত্র কুরআনে বলে দেয়া হয়েছে।
হযরত মুহাম্মদ (স) বিশ্বনবী এবং সর্বশেষ নবী। তাঁর পরে আর কোন নবী-রাসূল আসবেন না। কাজেই কুরআনের
মাধ্যমে ইসলামী জীবনব্যবস্থা পরিপূর্ণ করে দেয়া হয়েছে। এরপর জীবন বিধান হিসেবে, জীবন দর্শনরূপে বা জীবন
পথের দিশা স্বরূপ কোন কিছুরই প্রয়োজন হবে না। জীবন ব্যবস্থার পরিপূর্ণতার কথা ঘোষণা করে আল্লাহ তা’আলা
বলেন,
ٱلْیَوْ مَ أ َكْمَلْتُ ل َكُمْ دِینَكُمْ وَ أ َت ْمَمْتُ عَل َیْكُمْ نِعْمَتِى وَ رَ ضِ یتُ ل َكُمُ ٱلأِسْلاَمَ دِینا ً
“আজ দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত
করলাম।” (সূরা আল-মায়িদা : ৩)
وَ نَز َّ لْنَا عَل َیْكَ ٱلْكِتَابَ تِبْیَانا ً ل ِّكُلِّ شَيْ ءٍ وَ ھُدًى وَ رَ حْمَة ً وَ بُشْرَ ىٰ لِلْمُسْلِمِینَ
“আমি মুসলিমদের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ, পথনির্দেশ, দয়া ও সুসংবাদ স্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব
নাযিল করলাম।” (সূরা আন-নাহল : ৮৯)
কুরআনের বাহক মহানবী (স) বলেন, بالقران یتغن لم من منا لیس “যে কুরআনকে সুললিত কণ্ঠে পাঠ
করে না সে আমার উম্মতের মধ্যে শামিল নয়।” (বুখারী)
আল-কুরআনকে পরিপূর্ণভাবে জীবন বিধান হিসেবে মেনে না নিলে, তারা হয় খোদাদ্রোহী-কাফির। এ মর্মে আল্লাহ
বলেন,
وَ مَن ل َّمْ یَحْكُم ب ِمَآ أ َنزَ لَ ٱلل َّھُ فَأ ُوْ ل َـٰئِكَ ھُمُ ٱلْكَافِرُ ونَ
“আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।” (সূরা আল-ময়িদা : ৪৪)
ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং ইসলামের নীতি তথা আইন-কানুন সংক্রান্তযে কোন আলোচনায় পবিত্র কুরআনই চূড়ান্ত
দলীল বলে গৃহীত। এতেই মানব জাতির ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের অত্যাবশ্যকীয় যাবতীয় বিষয় ও ঘটনাবলীর
বিবরণ রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা এ মর্মে ঘোষণা করেন-
ھَـٰذَا بَصَائِرُ لِ لنَّاسِ وَ ھُدًى وَ رَ حْمَة ٌ ل ِّقَوْ مٍ یُوقِنُونَ
“এ কুরআন মানব জাতির জন্য সুস্পষ্ট দলীল এবং বিশ্বাসীর জন্য পথনির্দেশ ও রহমাত।” (সূরা আল-জাসিয়া : ২০)
ی َا أ َیُّھَا ٱلنَّاسُ قَدْ جَآءَكُمْ بُرْ ھَانٌ مِّن رَّ بِّكُمْ وَ أ َنْزَ لْنَآ إ ِل َیْكُمْ نُورا ً مُّب ِینا ً
“হে মানুষ! তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের প্রতি স্পষ্ট জ্যোতি
নাযিল করেছি।” (সূরা আন-নিসা : ১৭৪)
অতীত আসমানী কিতাবের শিক্ষার সার-সংক্ষেপ
অতীত নবী-রাসূলগণের দাওয়াত, হিদায়াত এবং সকল আসমানী কিতাবের শিক্ষার সার-সংক্ষেপ হলো এ পবিত্র আলকুরআন। সকল গ্রন্থের কার্যকারিতা রহিত করে দিয়ে পথভ্রষ্টতার পংকে নিমজ্জিত মানবতাকে মুক্তির প্রদীপ্ত পথ
সিরাতুল মুস্তাকীমের সন্ধান দিয়ে চলছে যুগ-যুগান্তর ধরে।
আল্লাহ তা’আলা আল-কুর‘আনের বিভিন্ন স্থানে এ মহাগ্রন্থের বিশিষ্টতা প্রসঙ্গে বলেন, এটা সেই গ্রন্থ, যা নবীদের উপর
নাযিল সকল গ্রন্থের সত্যতা স্বীকার করে। এ মহাগ্রন্থে পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহের শিক্ষা ও আদর্শের সারসংক্ষেপ বর্ণিত হয়েছে।
আল্লাহ বলেন,
وَ مِن قَبْلِھِ كِتَابُ مُوسَىٰ إ ِمَاما ً وَ رَ حْمَة ً وَ ھَـٰذَا كِتَابٌ مُّصَدِّقٌ
“এর পূর্বে ছিল মূসার (আ) কিতাব আদর্শ ও অনুগ্রহ স্বরূপ, এ কিতাব তার সমর্থক।” (সূরা আল-আহক্বাফ : ১২)
ل َقَدْ كَانَ فِى قَصَصِ ھِمْ عِبْرَ ةٌ لأ ُوْ لِى ٱلأ َلْبَابِ مَا كَانَ حَدِیثا ً یُفْتَرَ ىٰ وَ ل َـٰكِن تَصْدِیقَ
ٱل َّذِى بَیْنَ یَدَیْھِ وَ تَفْصِ یلَ كُلِّ شَيْ ءٍ وَ ھُدًى وَ رَ حْمَة ً ل ِّقَوْ مٍ یُؤْ مِنُونَ
“তাদের বিবরণীতে বিবেকবান লোকদের জন্য আছে শিক্ষা। এটা এমন বাণী যা মিথ্যা রচনা নয়। কিন্তু বিশ্বাসীদের
জন্য এটা পূর্ববর্তী আসমানী গ্রন্থে যা আছে তার সমর্থন এবং সমস্তকিছুর বিশদ বিবরণ, পথনির্দেশ ও রহমত।” (সূরা
ইউসুফ : ১১১)
وَ إ ِنَّھُ ل َتَنزِ یلُ رَ بّ ِ ٱلْع َال َمِینَ -نَزَ لَ ب ِھِ ٱلرُّ وحُ ٱلأ َمِینُ - عَل َىٰ قَلْب ِ كَ لِتَكُونَ مِنَ
ٱلْمُنْذِرِ ینَ -ب ِلِسَانٍ عَرَ ب ِيّ ٍ مُّب ِینٍ -وَ إ ِنَّھُ ل َفِى زُ بُرِ ٱلأ َوَّ لِینَ
“নিশ্চয় এটা বিশ্ব জাহানের প্রভুর নিকট থেকে নাযিলকৃত কিতাব। এটা তোমার হৃদয়ে বিশ্বস্তফেরেশতা জীবরাঈল
অবতরণ করেছেন, যাতে তুমি সতর্ককারী হতে পার। এটা নাযিল হয়েছে সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়। নিশ্চয় এর উল্লেখ
আছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।” (সূরা আশ-শুআরা: ১৯২-১৯৬)
চিরন্তন চ্যালেঞ্জের মুকাবিলায় উত্তীর্ণ গ্রন্থ
পবিত্র কুরআন যে মহান আল্লাহর প্রত্যক্ষ কালাম, অকাট্যভাবেই তা প্রমাণিত হয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা ও
পরীক্ষা-নিরীক্ষায়।
আল-কুরআন নাযিল হওয়ার সময় আরবগণ নিজেদের ভাষার সাহিত্য রস ও লালিত্য সম্পর্কে গর্ববোধ করতো। অন্য
কোন ভাষাকে তারা কোন মর্যাদাই দিত না। এজন্য অনারবদের ‘আজমী’ বা মূক বলে অভিহিত করতো। যখন হযরত
মুহাম্মদ (স)-এর উপর কুরআন অবতরণ শুরু হয়, তখন কুরআনের ভাষার বিশুদ্ধতা ও অলংকার তাদের গর্ব-
অহংকারকে ¤øান ও নি¯প্রভ করে দেয়। আল-কুরআনের বাক্শৈলী, বলিষ্ঠ যুক্তিধারা ও ভাষার মাধুর্যে বিমোহিত হয়ে
লোকেরা ইসলামের দিকে ধাবিত হতে শুরু করে। একে আল্লাহর মহান বাণী বলে গ্রহণ করে। কিন্তু কিছু লোক
নিজেদের কুসংস্কার ও জেদের বশবর্তী হয়ে একে মানুষের রচনা বলে রটাতে থাকে। একে কবিতা, যাদু ইত্যাদি বলে
উপহাস করে। এতে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে এবং অনাগত কাল পর্যন্তযাদের মনে এমন ধারণা জন্ম নেবে, তাদের
লক্ষ্য করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, এটা যদি সত্যিই কোন মানুষের রচনা হয়ে থাকে, তাহলে তোমরা তো বলিষ্ঠ
অলংকারপূর্ণ ভাষার অধিকারী; তোমরা অনুরূপ বাক্য রচনা করে দেখাও। আল-কুরআনের এটা একটি বড় মু’জিযা ও
বৈশিষ্ট্য যে, কোন মানুষই প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্তকুরআনের অনুরূপ বাক্য রচনা করতে পারেনি। কিয়ামত পর্যন্ত
কোন মানুষ বা জিন তা পারবে না। সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে কুরআনের এ চ্যালেঞ্জ বিগত দেড় হাজার বছর ধরে ছুঁড়ে
দেয়া আছে। যুগে যুগে বহু মানুষ বিশেষ করে ইসলাম বিরোধী মহল এমন কি ইয়াহূদী-খ্রিস্টান জগত চেষ্টা চালিয়ে
যাচ্ছে। কিন্তু এ চিরন্তন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় কেউ সফল হয়নি। কুরআনের বিরোধীরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেও ব্যর্থতার
গ- ানি আনত শিরে স্বীকার করে নিজেদের অপারগতা প্রকাশ করে অকুষ্ঠ চিত্তে তারা বলতে বাধ্য হয়েছেالبشر كلام من ھذا لیس
“না, এটা কোন মানুষের বাণী নয়।”
وَ إ ِن كُنْتُمْ فِى رَ یْبٍ مِّمَّا نَزَّ لْنَا عَل َىٰ عَبْدِنَا فَأ ْتُوا ْ ب ِسُورَ ةٍ مِّن مِّث ْلِھِ وَ ٱدْعُوا ْ شُھَدَآءَكُم مِّنলছিলবে গইআে রকে লঞ্জা্যচে কুরআন াথক মতারক্ষঅ এ ই্যঅবশ
دُونِ ٱلل َّھِ إ ِنْ كُنْتُمْ صَادِقِینَ
“আমি আমার বান্দার প্রতি যা নাযিল করেছি, তাতে তোমাদের কোন সন্দেহ থাকলে তোমরা তার অনুরূপ কোন সূরা
আনয়ন কর। তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে ডাক।” (সূরা আলবাকারা : ২৩)
أ َمْ یَق ُول ُونَ ٱفْتَرَ اهُ ق ُلْ فَأ ْتُوا ْ ب ِسُورَ ةٍ مِّث ْلِھِ
“তারা কি বলে, সে এটা রচনা করেছে? বল, তবে তোমরা এর মত একটি সূরা রচনা করে আন।” (সূরা ইউনুস :
৩৮)
কুরআনের এ চ্যালেঞ্জ কেউ গ্রহণ করে অনুরূপ কোন সূরা বা বাক্য তৈরি করতে পারেনি। কুরআনের এ অনন্যতা ও
বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, সমগ্র মানবজাতি এবং জিনজাতি একত্র হয়ে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করেও কুরআনের
অনুরূপ একটি আয়াতও রচনা করতে পারবে না।
কুরআনের ভাষা ও গুণগত মান
আল-কুরআন এক অতুলনীয়, অনুপম ও অপ্রতিদ্ব›দ্বী মহাগ্রন্থ। আল-কুরআনের অত্যুচ্চ ভাব-ভাষা, অলংকার, উপমা,
ছন্দ-মূর্ছনা, রচনাশৈলী, বিষয়বস্তুর অভিনব গ্রন্থনা, বাক্যের অনুপম বিন্যাস, শাব্দিক দ্যোতনা সব ঘিরে এক অতুলনীয়
চিরন্তন- সাহিত্যের মানে অধিষ্ঠিত গ্রন্থ। তাই এ গ্রন্থখানি মহানবী (স)-এর শাশ্বত মু’জিযাপূর্ণ এক অপ্রতিদ্ব›দ্বী গ্রন্থ।
আল-কুরআনের এটাও একটি অতুলনীয় বৈশিষ্ট্য যে, সাহিত্যের বিচারেও আল-কুরআন মহত্তম সাহিত্য। এর
তিলাওয়াতের প্রভাব এতই গভীর যে, এর দ্বারা সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে মানুষের হৃদয়ের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষের
হৃদয়-মন জাগ্রত হয় এবং অন্তর আল্লাহর প্রেম ও ভালবাসায় উদ্বেলিত হয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলার ঘোষণা-
ٱلل َّھُ نَزَّ لَ أ َحْسَنَ ٱلْحَدِیثِ كِتَابا ً مُّتَشَاب ِھا ً مَّث َ انِىَ تَقْشَعِرُّ مِنْھُ جُل ُودُ ٱل َّذِینَ یَخْ شَوْ نَ رَ بَّھُمْ
ث ُمَّ تَلِین ُ جُل ُودُھُمْ وَ ق ُل ُوبُھُمْ إ ِل َىٰ ذِكْرِ ٱلل َّھِ ذٰ لِكَ ھُدَى ٱلل َّھِ یَھْدِى ب ِھِ مَن یَشَآءُ وَ مَن
یُضْلِلِ ٱلل َّھُ فَمَا ل َھُ مِنْ ھَادٍ
“আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম বাণী সম্বলিত গ্রন্থ, যা সুসামঞ্জস এবং যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয়। এতে যারা তাদের
প্রভুকে ভয় করে তাদের শরীর রোমাঞ্চিত হয়। তারপর তাদের দেহ মন বিনম্্রহয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে। এটাই
আল্লাহর পথনির্দেশ। তিনি যাকে ইচ্ছা এর দ্বারা পথ প্রদর্শন করেন, আল্লাহ যাকে বিভ্রান্তকরেন, তার কোন পথপ্রদর্শক
নেই।” (সূরা আয-যুমার : ২৩)
পাশ্চাত্য পন্ডিত ঔ. ঘধংরয (জন নেইশ) কুরআনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মন্তব্য করেন
“মূল আরবী ভূবনে কুরআনের নিজস্ব মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য ও মোহনীয় শক্তি আছে। এর বাক্যরীতি সংক্ষিপ্ত ও সমুন্নত
এবং এর সংক্ষিপ্ত তাৎপর্যপূর্ণ বাক্যসমূহ প্রায়শই সাদৃশ্যপূর্ণ, সেগুলোর প্রকাশ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক শক্তির অধিকারী।”

আল-কুরআনের বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে বড় বৈশিষ্ট্য হল-এর বাক্য, শব্দ, ভাব, ভাষা, পাঠ, উচ্চারণ খুবই সহজ সুন্দর ও
সাবলীল। এটা বুঝতে, মুখস্থ করতে, মনে রাখতে কোনরূপ অসুবিধা হয় না। এ কারণে প্রত্যেক যুগে পৃথিবীতে লক্ষ
লক্ষ হাফিয এবং কুরআনের অসংখ্য ভাষ্যকার বিদ্যমান ছিলেন, আছেন আর কিয়ামত পর্যন্তথাকবেন। এটাই
কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার বড় পরিচায়ক।
বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা
আল-কুরআন কাঠামোগতভাবে সংক্ষিপ্ত পরিসরের হলেও এর বক্তব্য ও বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা সুগভীর। প্রতিটি শব্দবাক্য ও বক্তব্য এতই ব্যাপক যে, এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে হাজার হাজার পৃষ্ঠা সম্বলিত তাফসীর গ্রন্থের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফরাসি মনীষীর মন্তব্যটি যথার্থ বলে প্রতীয়মান হয়। তিনি বলেন, “কুরআন বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বিজ্ঞান
সংস্থা, ভাষাবিদদের জন্য শব্দকোষ, ব্যাকরণবিদগণের জন্য এক ব্যাকরণ গ্রন্থ এবং আইন বিধানের জন্য একটি
বিশ্বকোষ।”
আল-কুরআন এমন একটি মাহাত্ম্যপূর্ণ গ্রন্থ, যাতে সকল বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
كِتَابٌ ف ُصِّ ل َتْ آیَاتُھُ ق ُرْ آنا ً عَرَ ب ِیّا ً ل ِّقَوْ مٍ یَعْل َمُونَ بَشِیرا ً وَ نَذِیرا ً
“এক কিতাব, বিশদভাবে বিবৃত হয়েছে এর আয়াতসমূহ, আরবী ভাষায় কুরআন, জ্ঞানী স¤প্রদায়ের জন্য,
সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী।” (সূরা হা-মীম আস-সাজদা : ৩-৪)
জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল উৎস
সর্ববিধ জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস হিসেবে পবিত্র কুরআনের মাহাত্ম্য অপরিসীম। মহান স্রষ্টা ও সৃষ্টিকুলের সম্পর্ক, সৃষ্টি
জগতের রহস্য, ভূতত্ত¡, সৌর বিজ্ঞান, পদার্থ ও রসায়ন, মনোবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, নৃ-বিজ্ঞান, সমাজতত্ত¡, ইতিহাস,
দর্শন-নীতিশাস্ত্র, ধর্মতত্ত¡ প্রভৃতি জ্ঞান-বিজ্ঞানের মৌলিক দিকনির্দেশনা রয়েছে বিজ্ঞানময় এ পবিত্র কুরআনে। অফুরন্ত
জ্ঞান-ভান্ডারে পরিপূর্ণ পবিত্র কুরআন সকল যুগের মানুষের মনে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা ও আবিস্কারের নব নব দিগন্তের
সন্ধান দিয়ে আসছে। জাগতিক ও আধ্যাত্মিক উভয় দিকের চরম বিকাশে পবিত্র কুরআন অনুপম দিশারী। আলকুরআনে বলা হয়েছে-
وَ یَرَ ى ٱل َّذ ِینَ أ ُوتُوا ْ ٱلْعِلْمَ ٱل َّذِيۤ أ ُنزِ لَ إ ِل َیْكَ مِن رَّ بِّكَ ھُوَ ٱل ْحَقَّ وَ یَھْدِيۤ إ ِل َىٰ صِ رَ اطِ
ٱلْع َزِ یزِ ٱل ْحَمِیدِ
“যাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান দান করা হয়েছে তারা জানে, তোমার প্রভুর নিকট থেকে তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা
সত্য। এটা পরাক্রমশালী প্রশংসাই আল্লাহর পথনির্দেশ করে।” (সূরা আস-সাবা : ৬)
আল্লাহ তা‘আলা কুরআনকে জ্ঞানগর্ভ কিতাব, মানুষের হিদায়াত ও রহমতের উৎস হিসেবে বর্ণনা করে বলেন,
تِلْكَ آیَاتُ ٱلْكِتَابِ ٱلْحَكِیمِ -ھُدًى وَ رَ حْمَة ً ل ِّل ْمُحْسِنِینَ
“এগুলো জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত, পথনির্দেশ ও দয়াস্বরূপ সত্যপরায়ণদের জন্য।” (সূরা লুকমান : ২-৩)
আল-কুরআনের বিজ্ঞানময়তা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-
إ ِنَّ فِى خَلْقِ ٱلسَّمَاوَ اتِ وَ ٱلأ َرْ ضِ وَ ٱخْتِلاَفِ ٱلْل َّیْلِ وَ ٱلنَّھَارِ ل َـاۤ یَاتٍ لِ ّـأ ُوْ لِى ٱلأ َلْبَابِ -
ٱل َّذِینَ یَذ ْكُرُ ونَ ٱلل َّھَ قِیَاما ً وَ ق ُعُودا ً وَ عَل َ ىٰ جُنُوب ِھِمْ وَ یَتَفَكَّرُ ونَ فِى خَلْقِ ٱلسَّمَاوَ اتِ
وَ ٱلأ َرْ ضِ رَ بَّنَآ مَا خَل َق ْتَ ھٰ ذَا بَاطِ لا ً
“নিশ্চয় আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিবসের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য, যাঁরা দাঁড়িয়ে,
বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে। তারা বলে, হে
আমাদের প্রভূ! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করোনি।” (সূরা আলে-ইমরান : ১৯০-১৯১)
সারকথা
বিশ্বমানবের চরম দূর্নিনে যখন মানবতা অবহেলিত, উপেক্ষিত এমন কি চরম অপমানিত ও নির্যাতিত। মানবতার
ফরিয়াদ শ্রবণের জন্য যখন বিশ্বের বুকে কেউ ছিল না, জড়বাদ, বন্তুবাদ এবং ভোগবাদের গোলক ধাঁধায় যখন সকলেই
দিশেহারা, বিভ্রান্ত, পথভ্রষ্ট ও আত্মবিস্মৃত, মানব জাতির এমন সংকটময় মুহূর্তে বিশ্বমানবতার পরিপূর্ণ বিকাশ ও উৎকর্ষ
সাধন তথা সামগ্রিক কল্যাণ ও মুক্তির জন্য বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের করুণা স্বরূপ মহাগ্রন্থ আল-কুরআন
নাযিল হয়। ফলে বিপন্ন এবং অসহায় মানবতা পরিত্রাণের পথ খুঁজে পায়।
মূলত মানব জাতির ইতিহাস পরিবর্তনে, মানবতার পূর্ণ বিকাশ ও উন্মেষ সাধনে পবিত্র কুরআনের অবদান সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কুরআন মানুষের চিন্তা ও নৈতিক জগতে অভূতপূর্ব বিপ্লব এনেছে। ব্যক্তিগত, সমাজগত জীবনে এবং
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে এককথায় জীবনের সকল পর্যায়ে এক মহাবিপ্লবের সৃষ্টি করেছে। আর এ মহাবিপ্লবের
অধিনায়ক হলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স)। আর তাঁর সংবিধান হলো মহাগ্রন্থ আল-কুরআন।
কুরআন আঁধার আকাশে উজ্জ্বল সূর্যরূপে নাযিল হলো। মানব জাতি সে আলোক ধারায় ¯œাত হয়ে বিশ্ব প্রকৃতিকে চোখ
মেলে গভীর দৃষ্টি দিয়ে দেখলো ও জানলো। আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হলো। বর্তমান জড়বাদী সভ্যতার অশান্ত
এ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে বিশ্বকে প্রকৃত শান্তির পথে পরিচালনা করতে পারে আল্লাহর এ অমর কিতাব আলকুরআন। মানব জীবনে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের গুরুত্ব তাই অপরিসীম।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন দিন
১. পবিত্র কুরআন কোথায় সুরক্ষিত আছে?
ক. আসমানে
খ. মক্কা-মদীনায়
গ. মসজিদ-মাদ্রাসায়
ঘ. লাওহে মাহফুযে
২. ‘কুরআন মাজীদ পবিত্র অবস্থা ছাড়া স্পর্শ করা যায় না’- এটা কার বাণী?
ক. হযরত মুহাম্মদ (স)-এর
খ. হযরত উমর (রা)-এর
গ. মহান আল্লাহর
ঘ. হাদীসের বাণী
৩. সর্বশেষ আসমানী কিতাব কোনটি ?
ক. বুখারী শরীফ
খ. ইনজীল
গ. বাইবেল
ঘ. আল-কুরআন
৪. অতীত আসমানী কিতাবের আসল ভাষা এখনও কি ?
ক. বিলুপ্ত হয়ে গেছে
খ. জাদুঘরে সুরক্ষিত আছে
গ. বিকৃত হয়েছে
ঘ. আসলরূপে আছে
৫. কুরআন কা’দের জন্যে নাযিল হয়েছে ?
ক. আরববাসীদের জন্যে
খ. মুসলমানদের জন্যে
গ. মুত্তাকীদের জন্যে
ঘ. সমগ্রমানব জাতির জন্যে
৬. ইসলামী জীবনব্যবস্থার প্রধান উৎস কী ?
ক. আল-কুরআন
খ. আল-হাদীস
গ. গণতন্ত্র
ঘ. ইজমায়ে উম্মাত
৭. ‘না, এটা কোন মানুষের বাণী নয়’-এটি কার কথা?
ক. রাসূলের
খ. কুরআন বিরোধীদের কথা
গ. সাহাবীদের
ঘ. হাদীসের
৮. ‘কুরআন বিজ্ঞানীদের জন্যে একটি বিজ্ঞান সংস্থা’-একথা কে বলেছেন ?
ক. পাশ্চাত্য পন্ডিত জন নেইশ
খ. আল্লামা ইকবাল
গ. একজন ফরাসি কবি
ঘ. হযরত আলী (রা)
৯. বর্তমান অশান্তবিশ্বকে প্রকৃত শান্তির পথে পরিচালনা করতে পারেক. আল-কুরআন
খ. গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা
গ. আধুনিক বিশ্বব্যবস্থা
ঘ. নতুন বিশ্বব্যবস্থা
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর ঃ ১.ঘ, ২.গ, ৩.ঘ, ৪.গ, ৫.ঘ, ৬.ক, ৭.খ, ৮.ক, ৯.ক
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১. সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদাপূর্ণ গ্রন্থ হিসেবে আল-কুরআনের গুরুত্ব বর্ণনা করুন।
২. সর্বশেষ আসমানী কিতাব হিসেবে আল-কুরআনের গুরুত্ব তুলে ধরুন।
৩. “আল-কুরআন একটি চিরন্তন ও শাশ্বত মহাগ্রন্থ” ব্যাখ্যা করুন।
৪. “আল-কুরআন একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা” আলোচনা করুন।
৫. “আল-কুরআন ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান ও নীতির চূড়ান্তমানদন্ড” পর্যালোচনা করুন।
৬. “পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবের সকল শিক্ষার সারসংক্ষেপ পবিত্র কুরআনে সন্নিবেশিত হয়েছে” এ কথার প্রমাণ
দিন।
৭. সকল চ্যালেঞ্জের মুকাবিলায় উত্তীর্ণগ্রন্থহিসেবে কুরআনের গুরুত্ব লিখুন।
৮. আল-কুরআনের ভাষা ও গুণগত মান আলোচনা করুন।
৯. কুরআন মাজীদের বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা নিরূপণ করুন।
১০. জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল উৎস হিসেবে আল-কুরআনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. আল-কুরআনের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য বিস্তারিতভাবে লিখুন।
২. আল-কুরআন একটি চিরন্তন শাশ্বত মহাগ্রন্থ এবং পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা, কুরআন ও হাদীসের আলোকে প্রমাণ করুন।
৩. সর্বশেষ আসমানী কিতাব হিসেবে কুরআনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]