কুরআন নাযিলের পর্যায় ও পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে লিখুন। কুরআন কেন খন্ডাকারে নাযিল হয়েছিল ? বিশ্লেষণ করুন।

আল-কুরআন নাযিল
আমরা জানি, নুযূলুল কুরআন অর্থ কুরআনের অবতরণ। কুরআনের অবতরণ সম্পর্কিত আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। আল-কুরআন বিশ্ববাসীর কাছে একদিনে বা এক সঙ্গে নাযিল হয়নি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর
নবুওয়াতী জীবনের দীর্ঘতেইশ বছর ধরে একটু একটু ও অল্প অল্প করে নাযিল হয়েছে। মহানবী (স)-এর পরিচালিত
সমাজ বিল্পবের দাওয়াত এবং নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে ও বিভিন্ন উপলক্ষে কুরআন নাযিল হয়েছিল।
একই সময়ে একটি গ্রন্থাকারে তা নাযিল না হওয়ার কারণ ও তাৎপর্য অনেক। অল্প অল্প ও বিভিন্ন সময়ে নাযিল হওয়ার
কারণে কুরআন মাজীদ মুখস্থ ও আয়ত্ত করা রাসূল (স) এবং তাঁর সাহাবীদের পক্ষে খুবই সহজ ও সুবিধাজনক
হয়েছিল। এর ফলে কুরআন অনুধাবন ও তার আইন-কানুন, বিধি-বিধান পালন, অনুসরণ ও বাস্তবায়ণ সহজ হয়েছিল।
সর্বপ্রথম কুরআন নাযিল হয়েছিল ৬০৯ খ্রিস্টাব্দের রমযান মাসের ১৭ বা ২৭ তারিখ শবে কদরে। এ সময় তিনি মক্কার
অদূরে হেরা গুহায় আল্লাহর ইবাদতে গভীরভাবে ধ্যান মগ্নছিলেন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। এ সময় সূরা
আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাযিল হয়। এর পর কুরআনের আয়াত ও সূরাসমূহ ক্রমাগত নাযিল হতে থাকে এবং তা
চলতে থাকে মহানবী (স)-এর ইন্তিকাল পর্যন্ত। এ সময় রাসূলের (স) বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
আল-কুরআন নাযিলের পর্যায়
কুরআন ও হাদীসের ভাষ্য থেকে বুঝা যায় যে, কুরআন মাজীদ আল্লাহ তাআলার আরশে আযীমে লাওহে মাহফূযে
(محفوظ لوح (সংরক্ষিত অবস্থায় ছিল। এ প্রসঙ্গে কুরআনে বলা হয়েছে-
بَلْ ھُوَ ق ُرْ آنٌ مَّجِ یدٌ -فِى ل َوْ ح ٍ مَّحْفُوظٍ
“এতো সম্মানিত কুরআন, সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ।” (সূরা আল-বুরূজ : ২১-২২)
কুরআন মাজীদ লাওহে মাহ্ফুজে কখন, কি পদ্ধতিতে সংরক্ষিত ও লিপিবদ্ধ রয়েছে তা আল্লাহ তাআলা সর্বাধিক
জানেন।
সেখান থেকে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স) -এর নিকট দু’টো পর্যায়ে তা নাযিল হয়।
প্রথম পর্যায়
প্রথম পর্যায়ে মহান আল্লাহর আরশে আযীমে অবস্থিত ‘লাওহে মাহফূয’ বা ‘সুরক্ষিত ফলক’ হতে সম্পূর্ণ কুরআন একই
সাথে রমযান মাসের মহিমান্বিত (ক্বদর) রজনীতে পৃথিবী সংলগ্ন আসমানের তথা বায়তুল ইয্যাতে নাযিল হয়। এ মর্মে
মহান আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছে-
شَھْرُ رَ مَضَانَ ٱل َّذِيۤ أ ُ نْزِ لَ فِیھِ ٱل ْق ُرْ آنُ
“রমযান মাস, এ মাসেই কুরআন নাযিল হয়েছে।” (সূরা আল-বাকারা : ১৮৫)
সূরা আদ-দুখানে বলা হয়েছে-
إ ِنَّآ أ َنزَ لْنَاهُ فِى ل َیْل َةٍ مُّبَارَ كَةٍ إ ِنَّا كُنَّا مُنذِرِ ینَ
“আমি একে নাযিল করেছি এক বরকতময় রজনীতে, আমি তো সতর্ককারী।” (সূরা আদ-দুখান : ৩)
إ ِنَّا أ َنزَ لْنَاهُ فِى ل َیْل َةِ ٱلْقَدْرِ - ছয়েহে বলা রদকে-আল রাূস
“নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি মহিমান্বিত রজনীতে।” (সূরা আল-কদর : ১)
কদর রজনীতে কুরআন নাযিল হয়েছে একথাটির তিনটি ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে১. লাওহে মাহফূয হতে সম্পূর্ণ কুরআন কদরের রাতে দুনিয়ার সংলগ্ন আকাশে নাযিল হয়েছে এবং সেখান থেকে
প্রয়োজন অনুসারে অল্প অল্প করে দীর্ঘ ২৩ বছরে মহানবী (স)-এর উপর নাযিল হয়েছে।
২. এ কুরআনের এক একটি অংশ প্রতি বছর কদরের রাতে দুনিয়ার নিকটতম আকাশে নাযিল হয়েছে। আর সেখানে
থেকে প্রয়োজন অনুসারে সুদীর্ঘ ২৩ বছর রাসূলের (স) প্রতি নাযিল হওয়া অব্যাহত থাকে।
৩. কদরের রাতে কুরআন নাযিলের সূচনা হয়েছে। এরপর যখন প্রয়োজন দেখা দিয়েছে, তখনই প্রয়োজন মাফিক
বিভিন্ন আয়াত নাযিল হয়েছে। শেষোক্ত ব্যাখ্যা অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে অনেকে মনে করেন। আল্লাহই ভাল
জানেন।
মহানবী (স) এ প্রসঙ্গে বলেন, “লাওহে মাহফূয থেকে কুরআনকে পৃথিবীর আকাশে বায়তুল ইয্যাতে রাখা হয়।
অতপর জিবরাঈল (আ) ক্রমশ তা রাসূলের (স) প্রতি নাযিল করতে থাকেন।” (ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বায়হাকী,
নাসাঈ ও তাবরানীতে বর্ণিত হয়েছে।)
দ্বিতীয় পর্যায়
দ্বিতীয় পর্যায়ে দুনিয়ার আকাশের বায়তুল ইয্যাত থেকে মহানবীর (স) প্রতি জিবরাঈলের (আ) মাধ্যমে ওহীযোগে
প্রয়োজন মত কুরআনের আয়াত ও খন্ড খন্ড সূরা নবী জীবনের ২৩ বছরকাল ব্যাপী নাযিল হয়।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর ঘোষণা-
وَ ق ُرْ آنا ً فَرَ قْنَاهُ لِتَقْرَ أ َهُ عَل َى ٱلنَّاسِ عَل َىٰ مُكْثٍ وَ نَزَّ ل ْنَاهُ تَنْزِ یلا ً
“আমি কুরআন নাযিল করেছি খন্ড খন্ড ভাবে যাতে তুমি তা মানুষের নিকট পাঠ করতে পার ক্রমে ক্রমে এবং আমি তা
ক্রমশ নাযিল করেছি।” (সূরা বনী ইসরাইল : ১০৬)
আল্লাহ তাআলা আরও ঘোষণা করেন-
وَ قَالَ ٱل َّذِینَ كَفَرُ وا ْ ل َوْ لاَ نُزِّ لَ عَل َیْھِ ٱلْق ُرْ آنُ جُمْل َة ً وَ احِ دَةً كَذٰ لِكَ لِنُث َبِّتَ ب ِھِ ف ُؤَادَكَ
وَ رَ تَّلْنَاهُ تَرْ تِیلا ً
“কাফিরগণ বলে, সমগ্র কুরআন তার উপর একবার নাযিল হল না কেন? এভাবেই আমি নাযিল করেছি তোমার হৃদয়কে
তা দ্বারা মযবূত করবার জন্য এবং তা ক্রমে ক্রমে স্পষ্টভাবে আবৃত্তি করেছি।” (সূরা আল-ফুরকান : ৩২)
হযরত মুহাম্মদ (স) -এর উপর কুরআন অল্প অল্প করে নাযিল হওয়ার কারণে কাফির ও ইয়াহূদীরা প্রশ্ন তুলেছিল।
হযরত ইবনে আব্বাসের (রা) বর্ণিত হাদীসে দেখা যায় “তিনি বলেন, একদা ইয়াহূদীরা বলল, হে আবুল কাসিম!
সম্পূর্ণকুরআন কেন একত্রিতভাবে নাযিল হল না যেমন তাওরাত মূসা (আ)-এর উপর একসঙ্গে নাযিল হয়েছিল?
ইয়াহূদীদের এ অভিযোগের জবাবে উপরে উল্লেখিত আয়াত দু’টো নাযিল হয়।” (ইমাম সূয়ূতী : আল-ইতকান, ১ম খন্ড)
খন্ডাকারে কুরআন নাযিলের তাৎপর্য
কুরআন মাজীদ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর উপর খন্ডাকারে নাযিল হওয়ার বেশ কিছু তাৎপর্য রয়েছে। তাফসীরকারগণ
পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে যে সব তাৎপর্যের কথা বিশ্লেষণ করেছেন তার সারসংক্ষেপ হল১. ইসলাম বিরোধী-কাফির-মুশরিকদের বিভিন্নমুখী নির্যাতন, নিপীড়ন ও উৎপীড়নের মোকাবেলায় নবীর হৃদয়-মনকে
দৃঢ় ও প্রশান্তরাখা।
২. পূর্ণ কুরআন এক সঙ্গে নাযিল হলে তা বহন করা কোমল হৃদয় সত্তার অধিকারী নবীর জন্য কষ্টসাধ্য হতো।
৩. শরীআতের বিধি-বিধান ও নির্দেশাবলী পর্যায়ক্রমে জারি করা ও পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করার জন্য।
৪. কুরআন মাজীদ হিফয করা, উপলদ্ধি করা এবং সে অনুসারে জীবন গঠন করা যাতে সহজ সাধ্য হয়।
৫. সমাজ বিপ্লবের লক্ষে সংঘটিত বিভিন্ন বিবরণ পেশ করা এবং এ সমস্তঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিমগণকে সতর্ক
করা। তাদেরকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দান করা।
৬. উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবেলা এবং সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করা।
৭. আল-কুরআন যে স্বয়ং আল্লাহ তাআলারই পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে, মানুষের অন্তরে এ সত্যটি বদ্ধমূল করা। বস্তুত
এসব তাৎপর্য ও হিকমতের কারণেই পবিত্র কুরআন একসঙ্গে নাযিল না হয়ে ২৩ বছর ব্যাপী খন্ডাকারে নাযিল
হয়।
কুরআন নাযিলের ইতিবৃত্ত
সর্বপ্রথম পবিত্র কুরআন ওহী হিসেবে নাযিলের সূচনা সম্পর্কে বুখারী শরীফে উল্লেখ আছে। উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আয়েশা (রা) বর্ণনা করেন-
اول ما بدئ بھ رسول اللھ صلى اللھ علیھ وسلم من الوحى الرؤیا الصا لحة
فى النوم
“মহানবীর (স) প্রতি সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে ওহী অবতরণের সূচনা হয়েছিল-।” অতপর তাঁর মধ্যে নির্জনে ইবাদত করার
আগ্রহ সৃষ্টি হয়। তখন তিনি হেরা পর্বতের একটি গুহায় রাতের পর রাত ইবাদতে ধ্যানমগ্ন থাকেন। এমতাবস্থায় একদা
হযরত জিবরাঈলের (আ) মাধ্যমে তাঁর নিকট সূরা ‘আলাকের’ প্রথম পাঁচ আয়াত সর্বপ্রথম নাযিল হয়। জিবরাঈল (আ)
মহানবীর (স) নিকট এসে বললেন, পড়–ন ! তিনি বললেন, “আমি তো পড়তে জানি না।” মহানবী (স) বলেন, তখন
জিবরাঈল (আ) আমাকে চেপে ধরলেন, তারপর ছেড়ে দিয়ে আবার বললেন, পড়–ন! আমি আবার বললাম, “আমি
পড়তে জানি না।” তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে চেপে ধরে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়–ন! আপনার প্রভুর নামে- যিনি
মানুষকে জমাট বাঁধা রক্ত হতে সৃষ্টি করেছেন।” (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৩)
অতপর মহানবী (স) কম্পিত হৃদয়ে ঘরে ফিরে বিস্তারিত ঘটনা পতœী “খাদীজাতুল কুবরা (রা)”কে বললেন। খাদীজা
(রা) সবকিছু শুনে হযরতকে (স) সান্ত¡না প্রদান করে স্বীয় চাচাতো ভাই ধর্ম বিশেষজ্ঞ “ওয়ারাকা ইবনে নওফেল” -এর
নিকট নিয়ে যান। ‘ওয়ারাকা’ সবকিছু শুনে বললেন: ভয় নেই, মূসার (আ) কাছে আল্লাহ যে নামূসকে পাঠিয়েছিলেন, এ
সেই নামূস অর্থাৎ হযরত জিবরাঈল ফেরেশতা। আপনিই প্রতিশ্রæত শেষ নবী। আমি বেঁচে থাকলে আপনার সমর্থন
করতাম। ওয়ারাকার কথায় নবী করীম (স) ও খাদীজা (রা) আশ্বস্তহলেন।”
বর্ণিত আছে, হযরত জিবরাঈল (আ) স্বরূপে এ ওহী নিয়ে এসেছিলেন। জিবরাঈল (আ) যখন এ ওহী নিয়ে আসেন,
রাসূলুল্লাহ্ (স) তখন হেরা গিরি গুহায় অবস্থান করছিলেন।
এ ঘটনার পর তিন বছর পর্যন্তসরাসরি আর কোন ওহী নাযিল হয়নি। তিন বছর বা কারো মতে, আড়াই বছর পর
আবার ওহী নাযিল শুরু হয় এবং সুদীর্ঘ তেইশ বছরে পরিপূর্ণ কুরআন অবতরণ হওয়া সুসম্পন্ন হয়। ওহী বিরতি
কালকে ফাতরাত (فترة (নামে অভিহিত করা হয়। বিরতির উদ্দেশ্য ছিল, প্রথম ওহী নাযিলের ফলে নবীর (স) মনে
যে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল এবং তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যে প্রভাব পড়েছিল, তা স্বাভাবিক করা। ফলে ধীরে ধীরে তিনি তা
সহ্য করার ক্ষমতা লাভ করবেন। এ সময়ে ওহী আসা বন্ধ থাকলে মহানবী (স) চিন্তিত হয়ে পড়লেন, কয়েকবার তিনি
পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করে আকাশের দিকে তাকাতেন এজন্য যে, কোথাও জিবরাঈল (আ)-কে দেখতে পাবেন
অথবা কোন প্রকার আওয়াজ শুনতে পাবেন। পরিশেষে একদিন এমন ঘটনা হয়, তিনি পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ
করলেন আর জিবরাঈল (আ) তাঁর সামনে এসে বললেনحقا اللھ رسول انك محمد یا “হে মুহাম্মদ ! আপনি সত্যি সত্যিই আল্লাহর রাসূল।”
এ কথা শুনে মহানবী (স)-এর মন শান্তহল এবং তিনি ফিরে এলেন। এর কিছু দিন পর আবার তিনি হেরা পর্বতের
কাছে গেলে তিনি দেখতে পান হযরত জিবরাঈল (আ) আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থানে একটি আসনে বসে আছেন।
মহানবী (সা) তাঁকে ঐ অবস্থায় দেখে ভয় পেয়ে নিজ গৃহে ফিরে আসেন এবং বললেন- دثرونى دثرونى
“আমাকে কম্বল দিয়ে আচ্ছাদিত করে দাও।” এমতাবস্থায় সূরা মুদ্দাসসিরের প্রথম আয়াতগুলো নাযিল হয়।
یٰأ َیُّھَا ٱلْمُدَّث ِّرُ -ق ُمْ فَأ َنذِرْ - وَ رَ بَّكَ فَكَبِّرْ
“হে বস্ত্রাচ্ছাদিত ব্যক্তি! উঠো, সতর্ক কর এবং তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো।” (সূরা আল-মুদ্দাচ্ছির : ১-
৩)
এরপর নিয়মিতভাবে ওহী নাযিল শুরু হয় এবং মহানবীর (স) জীবনের শেষ দিন পর্যন্ততা অব্যাহত থাকে। পবিত্র
কুরআন ও ইসলামের পরিপূর্ণতা এবং পূর্ণাঙ্গতার ঘোষণা দিয়ে দশম হিজরিতে বিদায় হাজ্জের সময় মহান আল্লাহ বাণী
নাযিল করেন-
ٱلْیَوْ مَ أ َكْمَلْتُ ل َكُمْ دِینَكُمْ وَ أ َت ْمَمْتُ عَل َیْكُمْ نِعْمَتِى وَ رَ ضِ یتُ ل َكُمُ ٱلأِسْلاَمَ دِینا ً
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণকরলাম এবং
ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করলাম।” (সূরা আল-মায়িদা : ৩)
এরপর বিধান সম্বলিত তথা হালাল-হারাম সংক্রান্তকোন আয়াত আর নাযিল হয়নি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের
(রা) বর্ণনায় দেখা যায়, সর্বশেষ ওহী নাযিল হয়েছিল রাসূলুল্লাহ্র (স) ইনতিকালের সাত দিন আগে। তা হল-
وَ ٱتَّق ُوا ْ یَوْ ما ً تُرْ جَعُونَ فِیھِ إ ِل َى ٱلل َّھِ ث ُمَّ تُوَ ف َّىٰ كُلُّ نَف ْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَ ھُمْ لاَ یُظْل َمُونَ
“তোমরা সেই দিনকে ভয় কর, যে দিন তোমরা আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। অতঃপর প্রত্যেককে তার কর্মের ফল
পুরোপুরি প্রদান করা হবে। আর তাদের প্রতি কোন রূপ অন্যায় করা হবে না।” (সূরা আল-বাকারা : ২৮১)
অপর একটি বর্ণনায় আছে, সর্বশেষ ওহী ছিল সূরা আন-নাসর-
إ ِذَا جَآءَ نَصْرُ ٱلل َّھِ وَ ٱلْفَت ْحُ
“যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়।” (সূরা আন-নাসর : ১)
সারকথা
ইসলামিক স্টাডিজ-১ : উলূমুল-কুরআন ও উলূমুল-হাদীস বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম
ইউনিট-১ : আল-কুরআন: পরিচিতি ও বিষয়বস্তু পৃষ্ঠা-৩৪
ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এ কারণে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে ও পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কুরআন
খন্ডাকারে সুদীর্ঘ ২৩ বছর সময়কাল ব্যাপী পর্যায়ক্রমে নাযিল হয়। আর তা সাথে সাথে আল্লাহর নির্দেশক্রমে যথাস্থানে
লিপিবদ্ধ করে গ্রন্থাকারে বিন্যাস করা হয়।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন দিন
১. কত খ্রিস্টাব্দে কুরআন নাযিলের সূচনা হয়ক. ৬০৯ খ. ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে
গ. ৫৭১ খ্রিস্টাব্দে ঘ. ৬৯০ খ্রিস্টাব্দে
২. কত বছরব্যাপী কুরআন নাযিল হয় ?
ক. ২৫ বছর খ. ২৩ বছর
গ. ২৭ বছর ঘ. ১৩ বছর
৩. কুরআন কীভাবে নাযিল হয়েছিল?
ক. খন্ডাকারে খ. কিতাব আকারে
গ. গ্রন্থাবদ্ধ অবস্থায় ঘ. সহীফা আকারে
৪. সর্বপ্রথম কোন সূরার কত আয়াত নাযিল হয় ?
ক. সূরা মুয্যাম্মিলের পাঁচ আয়াত খ. সূরা মুদ্দাসসিরের পাঁচ আয়াত
গ. সূরা ফাতিহার সাত আয়াত ঘ. সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর ঃ ১.ক, ২.খ, ৩.ক, ৪.ঘ
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১. আল-কুরআন গ্রন্থাকারে এক সঙ্গে নাযিল হয়নি কেন?
২. কুরআন নাযিলের পর্যায় ও পদ্ধতি লিখুন।
৩. কুরআন নাযিলের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করুন।
৪. ফাত্রাতুল ওহী (الوحى فترة (বলতে কী বোঝায় ?
৫. কুরআনের সর্বশেষ আয়াত কোনটি ? এ ব্যাপারে তাফসীরকারদের মতামত লিখুন।
৬. খন্ডাকারে কুরআন নাযিলের তাৎপর্য লিখুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. কুরআন নাযিলের পর্যায় ও পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে লিখুন।
২. কুরআন কেন খন্ডাকারে নাযিল হয়েছিল ? বিশ্লেষণ করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]