হাদীসের আলোকে ইসলামে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব বিস্তারিত ভাবে আলোচনা

রাস্তা-ঘাটে মলমূত্র ত্যাগ নিষিদ্ধ
عن ابى ھریرة رضى اللھ عنھ قال: ان رسول اللھ صѧلى اللѧھ علیѧھ وسѧلم: قѧال اتقѧو
اللعا نبین قالوا وما اللعا نان یارسول اللѧھ قѧال الѧذى یتخلѧى فѧى طریѧق النѧاس او فѧى
ظلھم. (مسلم)
হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: তোমরা দু’জন অভিশপ্ত ব্যক্তি থেকে
দূরে থাকবে। তাঁরা বলেন, ঐ অভিশপ্ত দু’জন কারা? যে ব্যক্তি মানুষের চলাচলের রাস্তায় অথবা ছায়াদার গাছের নিচে
প্রস্রাব-পায়খানা করে। (মুসলিম)
ব্যাখ্যা
রাস্তাঘাটে বা মানুষ চলাচলের পথে প্রস্রাব-পায়খানা করা নিষিদ্ধ। তাছাড়া কোন ছায়াদার বৃক্ষের বা ফলদার বৃক্ষের
নিচে প্রস্রাব-পায়খানা করা নিষিদ্ধ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) অত্যন্তকঠোর ভাষায় রাস্তাঘাটে বা ছায়াদার ও
ফলদার বৃক্ষের নিচে প্রস্রাব-পায়খানা করার ব্যাপারে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন। তিনি রাস্তা-ঘাটে তথা লোক
চলাচলের পথে এবং ছায়াদার ও ফলদার বৃক্ষের নিচে প্রস্রাব-পায়খানাকারীকে অভিশপ্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
যারা রাস্তাঘাটে এবং ছায়াদার ও ফলদার বৃক্ষের নিচে প্রস্রাব-পায়খানা করে মানুষ তাদেরকে গালি গালাজ করে।
তাদের প্রতি অভিশাপ দেওয়া মানুষের স্বভাবগত অভ্যাস। কেননা মানুষ এতে কষ্ট পায়। পরিবেশ দূষিত হয়। ফলে
তারা অভিশাপের হকদার হয়ে যায়। যদি অভিশাপ দেয়া বৈধ হয় তাহলে তার প্রতি এমন দোয়া করা হয় যা তাকে
আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর যদি অভিশাপ দেয়া বৈধ না হয় তাহলে সে গুনাহগার হয়ে যায়। হাদীস
শরীফে আছে হযরত হুযায়ফা ইবনুল আসাদ থেকে বর্ণিত- যে ব্যক্তি মুসলমানদেরকে রাস্তা-ঘাটে কষ্ট দেয় তার প্রতি
অভিসম্পাত করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদীসে মহানবী (সা)
বলেন, যে ব্যক্তি মানুষ চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে তার প্রতি আল্লাহ তাআলার অভিশাপ,
ফেরেশতাদের অভিশাপ এবং সকল মানুষের অভিশাপ। এ হাদীস দ্বারা রাস্তা-ঘাটে প্রস্রাব-পায়খানাকারী ব্যক্তি অভিশপ্ত
হয়ে পড়ে। হাদীসে যে ছায়ার কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে ঐ ছায়া যেখানে মানুষ খর-তাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য
আশ্রয় নেয় বা ফলদার বৃক্ষ- যা থেকে ফল নিচে পড়ে এবং মানুষ তা খায় এমন ছায়াদার জায়গা। সকল ছায়া এখানে
উদ্দেশ্য নয় যার নিচে বসে প্রস্রাব-পায়খানা করা নিষিদ্ধ।
ইমাম আবূ দাউদ মুআয (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তোমরা অভিশপ্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকবে- যে ব্যক্তি এমন
জায়াগায় প্রস্রাব-পায়খানা করে যেখানে লোকজন পানি পান করা বা অজুর জন্য আসা-যাওয়া করে। কোন পুকুর বা
খালের পাড় অথবা নদীর কিনারায় এমন চওড়া রাস্তা যার মধ্য দিয়ে লোকজন পায়ে হেঁটে চলে এবং ছায়াদার বৃক্ষের
নিচে যেখানে মানুষ বসে বিশ্রাম গ্রহণ করে। সমাজের লোকজন ব্যবহার করে এমন পানির ধারে পায়খানা-প্রস্রাব করা
নিষিদ্ধ। খাল-বিল ও নদীর ধারে প্রস্রাব-পায়খানা করা নিষিদ্ধ। অপর হাদীসে আছে- সাত জায়গায় প্রস্রাব-পায়খানা
করা নিষিদ্ধ। যথা- লোক চলাচলের রাস্তার উপর, ছায়াদার বৃক্ষের নিচে যেখানে মানুষ বিশ্রাম গ্রহণ করে। এমন
জায়গা যেখান থেকে মানুষ অজু বা পান করার জন্য পানি গ্রহণ করে। জন সাধারণের জন্য ব্যবহৃত পানির স্থানে,
ফলদার বৃক্ষের নিচে, খাল, বিল বা নদীর ধারে এবং মসজিদের দরজার সামনে। হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (রা.)
থেকে অপর একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে- মহানবী (সা) বলেন-তোমরা কিবলার দিকে মুখ করে অথবা কিবলাকে
পিছন ফিরে প্রস্রাব-পায়খানা করবে না। বরং যদি নিশ্চিত হও যে, পূর্ব-পশ্চিমে কিবলা নেই তবে তা করতে পার।
পরিবেশ রক্ষার জন্য আমাদের যত্র-তত্র মল-মূত্র ত্যাগ করা বৈধ নয়। এটা আমাদের পরিবেশ দুষিত করে। ক্ষেত্র
বিশেষে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে মানুষ বাস করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাছাড়াও
মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তহওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
জীব-জন্তুর প্রতি দয়া করা
قال رسول اللھ صلى اللھ علیھ وسلم بینمѧا رجѧل یمشѧى بطریѧق اشѧتد علیѧھ العطѧش.
فوجد بئرا فنزل فیھا فشرب. ثم خرج فاذا كلب یلھث یأكل الثرى مѧن العطѧش. فقѧال
الرجل لقد بلغ ھذا الكلب من العطش مثل الذى كان بلغ بى. فنزل البئر فملأ خفھ ثѧم
امسكھ بفیھ. فسقى الكلب فشكر اللھ لھ فغفرلھ: فقالوا یѧا رسѧول اللѧھ صѧلى اللѧھ علیѧھ
وسلم: و انا لنا فى البھѧائم اجѧرا ؟ فقѧال نعѧم! فѧى كѧل ذات كبѧد رطبѧة اجѧر. (بخѧارى
,مسلم ,ابو ھریرة رضى اللھ عنھ)
হযরত আবূ হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, এক ব্যক্তি পথ চলতে গিয়ে ভীষণভাবে তৃষ্ণার্ত
হয়ে পড়ল। সে (এদিক সেদিক অনুসন্ধানের পর) একটি ক‚প দেখতে পেয়ে তার মধ্যে নেমে পানি পান করল।
(তথায় বালতি এবং রশির ব্যবস্থা ছিল না)। অতঃপর ক‚প থেকে বের হয়েই সে একটি কুকুর দেখতে পেল যে
পিপাসায় কাতর হয়ে জিহŸা বের করে ভিজা মাটি চাটছে। লোকটি মনে মনে ভাবল নিশ্চয় কুকুরটি তার ন্যায় অত্যন্ত
পিপাসার্ত। সে তৎক্ষণাৎ ক‚পে অবতরণ করল এবং স্বীয় চামড়ার মোজা পানি দ্বারা পূর্ণ করে মুখে কামড়ে ধরে উঠে
আসল এবং কুকুরটিকে পান করাল। আল্লাহ তার এ কাজটি অত্যন্তপছন্দ করলেন এবং তার সকল পাপ ক্ষমা করে
দিলেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল ! পশুদের প্রতি দয়া প্রদর্শনে আমাদের জন্য সাওয়াব আছে
কি ? তিনি বললেন, হ্যাঁ, যে কোন প্রাণীর প্রতি সদয় ব্যবহার করলে সাওয়াব লাভ করা যায়। (বুখারী ও মুসলিম)
ব্যাখ্যা
সকল সৃষ্টিই আল্লাহর। আল্লাহর কোন সৃষ্টিকে কষ্ট দেওয়া কারো উচিত নয়। আল্লাহ মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত
হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং সকল সৃষ্ট প্রাণীকে মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছেন। সকল বস্তু ও
প্রাণীই মানুষের অধীন হিসেবে কাজ করছে। তাই, মানুষের উচিত সকল প্রাণীর প্রতি সদয় আচরণ করা। অনর্থক
কোন প্রাণীকে কষ্ট না দেয়া এবং অনর্থক কোন প্রাণীকে আঘাত করা বা হত্যা না করা। পশু-পাখীকে কষ্ট দেয়া স্বয়ং
স্রষ্টাকে কষ্ট দেয়ার শামিল। আলোচ্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে- কুকুরের মতো একটি নিকৃষ্ট প্রাণীকে জনৈক ব্যক্তি পানি
পান করানোর কারণে আল্লাহ তার সকল পাপ মাফ করে দিয়েছেন।
অপর এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, বণী ইসরাইলের এক মহিলা বিড়ালের কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। উক্ত
মহিলা বাড়ী থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার সময় বিড়ালটিকে কোন খাদ্য না দিয়ে বেঁধে রেখেছিল। বিড়ালটি খাদ্যের
অভাবে নিস্তেজ হয়ে এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মহিলার এ কাজটি আল্লাহর কাছে খুবই নিন্দনীয় কাজ
হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কেননা সে যদি বিড়ালটিকে ছেড়ে দিত, তাহলে বিড়ালটি পোকা-মাকড় বা অন্যান্য খাদ্য
সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করত এবং খাদ্য খেয়ে প্রাণে রক্ষা পেত। কিন্তু উক্ত মহিলা বিড়ালকে খাদ্যতো দিলইনা বরং
বিড়ালটিকে বেঁধে রাখল। ফলে খাদ্যের অভাবে বিড়ালটি মারা গেল। পশু-পাখীর সাথে এ ধরনের আচরণ করা
অমানবিক ও পাপের কাজ। সুতরাং প্রতিটি মানুষ তথা মুসলমানকে এ জাতীয় অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা
আবশ্যক। হাদীসটি মানবজাতিকে পশু-পাখীর প্রতি দয়া করে নিজেদের আচার-আচরণ সুন্দর করার ইঙ্গিত বহন
করে। অপর এক হাদীসের মাধ্যমে জানা যায় যে, কোন এক ব্যক্তি তার উট দিয়ে অতিরিক্ত বোঝা বহন করাত এবং
উটটিকে সে পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানীয় দিতনা। ফলে উটটি একদিন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর কাছে ঐ ব্যক্তির
বিরূদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) লোকটিকে ডেকে এনে উটের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও
পানীয় সরবরাহের নির্দেশ দান করলেন। ইসলাম পশু-পাখীর প্রতি সদয় হওয়ার ব্যাপারে কত সুন্দর বিধান দিয়েছে
তা অকল্পনীয়। ইসলাম স¤পর্কে জ্ঞান আহরণ করে পশু-পাখীর উপর মানুষের কর্তব্যবোধ স¤পর্কে জানতে চেষ্টা করা
উচিত।
বৃক্ষরোপণ এর গুরুত্ব
عن انس رضى اللھ تعالى عنѧھ قѧال قѧال رسѧول اللѧھ صѧلى اللѧھ علیѧھ وسѧلم: مѧا مѧن
مسلم یغرس غرسا او یزرع زرعا فیأكѧل منѧھ انسѧان او طیѧر او بھیمѧة الا كانѧت لѧھ
صدقة. (متفق علیھ)
হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: যদি কোন মুসলমান বৃক্ষরোপণ করে
অথবা কোন শস্য ফলায় এবং তা থেকে কোন মানুষ কিংবা পাখি অথবা পশু ভক্ষণ করে, তবে তা তার জন্য সাদকা
স্বরূপ গণ্য হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
ব্যাখ্যা
এ হাদীসে সৃষ্টি জীব-জন্তুর প্রতি মানব জাতির দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা বলা হয়েছে। সাথে সাথে এ কথার প্রতিও ইঙ্গিত
করা হয়েছে যে, মানুষের কোন শ্রমই বৃথা যায় না। তাছাড়া বৃক্ষরোপণের উপকারিতার প্রতিও ইংগিত করা হয়েছে।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব এবং মহান আ্ল্লাহর প্রতিনিধি। প্রতিনিধি হিসেবে পশু-পাখি ও অন্যান্য সৃষ্টি জীবের লালন
পালন ও সেবা যতেœর দায়িত্ব মানুষের উপর অর্পিত। এ উদ্দেশে মানুষ যদি কোন বৃক্ষরোপণ করে কিংবা জমিতে শস্য
বীজ বপন করে এবং উক্ত বৃক্ষের ফল-ফলাদি ও জমির ফসলাদি যখন কোন মানুষ, পশু কিংবা পাখি ভক্ষণ করবে,
তখন এতে ঐ ব্যক্তি সাদকার সাওয়ার লাভ করবে।
কেননা, ইসলামের বিধান মতে সকল প্রাণীর প্রতি মানুষের কতকগুলো কর্তব্য ও দায়িত্ব আছে। যারা উক্ত নির্দেশ
মুতাবিক নিজ দায়িত্ব পালন করবে, তারাই আদর্শ মানুষ বলে বিবেচিত হবে। আর তাদেরই জন্য রয়েছে মহান
আল্লাহর দরবারে অফুরন্তপুরস্কার।
এ হাদীসে বলা হয়েছে- কোন মুসলমান কর্তৃক রোপণ করা গাছের ফলফলাদি বা উৎপাদিত খাদ্য-শস্যাদি যদি কোন
মানুষ কিংবা কোন পথিক খেয়ে জীবন ধারণ করে অথবা কোন পাখি বা কোন পশু খেয়ে ফেলে তবে এটাও তার জন্য
সাদকা বা দান স্বরূপ গণ্য হবে।
অর্থাৎ তার পরিশ্রম বিফলে যাবে না বরং এর পরিবর্তে সে দানের সমতুল্য সাওয়াব লাভ করবে। মহান আল্লাহর সৃষ্টি
জীব তা যে শ্রেণীরই হোক না কেন, তাদের প্রতি মানুষের দয়াশীল থেকে হবে। এমনকি এদের প্রয়োজনীয় উপকার
সাধন করতে হবে। তবেই মহান আল্লাহ মানুষকে পুরস্কৃত করবেন।
উক্ত হাদীসের মর্মবাণী হচ্ছে এই যে, পশুপাখির প্রয়োজন মেটালে এবং তাদের উপকার করলে মহান আল্লাহর নিকট
মানুষ মহাপুরস্কারে ভূষিত হবে। মানুষ ও পশু-পাখি সকলেরই খাদ্যের প্রয়োজন। পশুপাখির প্রতি দয়া প্রদর্শন ও
তাদের খাদ্যের যোগান দেয়া মানুষের কর্তব্য। এ কর্তব্য পালন করলে মহান আল্লাহ তাকে দান-খয়রাত ও সাদকার
পুণ্য দেবেন।
মদ ও মাদক দ্রব্যের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা অভিশপ্ত
عن ابن عمر رضى اللھ عـنھ قال قال رسول اللھ صلى اللѧھ علیѧھ و سѧلم: لعѧن
اللѧھ الخمѧر و شѧاربھا و سѧاقیھا وبائعھѧا و مبتاعھѧا و عاصѧرھا و معتصѧرھا و
حاملھا والمحمولة الیھ (رواه ابوداؤد و ابن ماجة)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন
মদকে, উহার পানকারীকে, উহা যে পান করায় তাকে, উহা যে ক্রয় করে তাকে, উহা যে প্রস্তুত করে তাকে, উহা যে
অর্ডার দেয় তাকে, উহা যে বহন করে তাকে, উহা যার কাছে বহন করে নিয়ে যাওয়া হয় তাকেও। (আবু দাউদ ও
ইবনে মাজা)
মদ ও মাদক দ্রব্যের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অভিশাপ প্রাপ্ত। ইসলাম মানবতার রক্ষাকবচ।
ইসলাম মানব স্বভাব বিরুদ্ধ যাবতীয় বিষয়কে অবৈধ ঘোষণা করেছে। মদ ও মাদকাসক্তি যা মানব প্রকৃতি ও স্বভাব
বিরুদ্ধ। যা মানুষের দৈহিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক, আর্থ-সামাজিক ও নৈতিক তথা সর্বদিক দিয়ে অনিবার্য
ধ্বংসকারী। তাই ইসলাম মদ ও মাদকতার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার উদাত্ত আহŸান জানিয়েছে। এর উৎপাদন, ক্রয়বিক্রয় ও ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
মহানবী (সা) আরো বলেছেন-
الخلق عیال اللھ فاحب خلق الى اللھ من احسن الى عیالھ .
“সমগ্র সৃষ্টিজগত আল্লাহ তাআলার পরিবার সদৃশ। সৃষ্টির মধ্যে সে ব্যক্তিই মহান আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়জন, যে
ব্যক্তি সৃষ্টিজগতে আল্লাহ তাআলার পরিবারের প্রতি বেশি সদয়।”
অতএব এ থেকে বোঝা যায় যে, খিদমতে খালকের গুরুত্ব মানব জীবনে কত বেশি।
আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি দয়া
‘খিদমত’ (دمتѧخ (শব্দের অর্থ সেবা বা খিদমত, যতœ, পরিচর্যা ইত্যাদি। আর ‘খালক’ (قѧخل (অর্থ সৃষ্টি জগৎ,
সৃষ্টি জীব। সুতরাং খিদমতে খালক কথাটির অর্থ সৃষ্টির সেবা। ব্যবহারিক অর্থে শুধু মানুষেরই নয় বরং নিখিল সৃষ্টি
জগতের প্রতিটি জীব ও জড় বস্তুর প্রতি স্রষ্টা মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশানুযায়ী কর্তব্য পালনের নামই হচ্ছে
‘খিদমতে খালক’ বা সৃষ্টির সেবা।
মহানবী (সা) এ প্রসঙ্গে বলেন-
ارحموا من فى الارض یرحمكم من فى السماء
“তোমরা পৃথিবীবাসীর উপর দয়া প্রদর্শন কর, তাহলে আকাশে যিনি আছেন তিনিও তোমাদের উপর দয়া প্রদর্শন
করবেন।” (তিরমিযী)
সেবা মানুষের ধর্ম। নিখিল সৃষ্টি জগতের সব কিছুই মহান আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। তিনি সব কিছুরই স্রষ্টা ও
প্রতিপালক। সকল সৃষ্টির প্রতিই তার করুণাধারা সমভাবে বর্ষিত হচ্ছে। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত ও আল্লাহর
খলীফা। তাই তার উপরই জগতের অন্যান্য সৃষ্টিকূলের রক্ষণাবেক্ষণ ও হিফাজতের ভার ন্যস্ত। সুতরাং আল্লাহর
প্রতিনিধি হিসেবে কুল মাখলুকাতের (সমগ্র সৃষ্টিজগতের) প্রতি মানবের দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরিসীম। মানুষ, পশুপাখি, কীট-পতঙ্গ, বৃক্ষ-লতা, উদ্ভিদরাজি, নির্জীব জড় পদার্থের প্রতিও মানবের যথেষ্ট কর্তব্য রয়েছে। কাজেই কোন
সৃষ্টিকেই তুচ্ছ মনে করে অবহেলা ও অমর্যাদা করা মানুষের উচিত নয়। মহান স্রষ্টার সকল সৃষ্টির সেবা তথা খিদমতে
খালকের মাধ্যমে মানব নিজেকে তাঁর আপন স্রষ্টার নিকট সবার চেয়ে অধিক প্রিয় বলে প্রমাণিত করতে পারে। আল
কুরআনে বর্ণিত হয়েছে-
وَ مَن یُع َظِّ مْ شَع َائِرَ ٱلل َّھِ فَإ ِنَّھَا مِن تَقْوَ ى ٱلْق ُل ُوبِ .
“কেউ আল্লাহর নির্দশনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তার অন্তরের তাকওয়ার সঞ্জাত।” (সূরা আল-হজ্জ : ৩২)
সমাজ জীবনে খিদমতে খালকের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
মানুষ সামাজিক জীব। সে একা কোন কাজই সম্পাদন করতে পারে না, এমনকি মানবের জীবন ধারণের জন্যও
প্রয়োজন হয় অসংখ্য সৃষ্টির সহযোগিতা। আর আল্লাহ তাআলা সমুদয় সৃষ্টিকে মানবের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন।
সুতরাং মানবের উচিত সৃষ্টির সেবায় এগিয়ে আসা। এ হিসেবে খিদমতে খালকের গুরুত্ব অপরিসীম।
খিদমতে খালকের মাধ্যমে আল্লাহর অপার করুণা লাভ করা যায়্। যে মানুষ অপরের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে না, সে
আল্লাহর করুণা ও দয়া পায় না। এ মর্মে মহানবী (সা) বলেন-
لا یرحم اللھ من لا یرحم الناس
“যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে না আল্লাহ তার প্রতি করুণা করেন না।”
মহানবী (সা) আরো বলেন-
خیر الناس من ینفع الناس
“যিনি মানুষের উপকার করেন তিনিই শ্রেষ্ঠ মানুষ।”
খিদমতে খালকের মাধ্যমে জান্নাত লাভ হয়। খিদমতে খালক জান্নাতের পথ প্রশস্তকরে। সৃষ্টির সেবাকারী পরম সুখে
জান্নাতে অবস্থান করবে। করুণার নবী (সা) এ প্রসঙ্গে বলেন ঃ “কোন মুসলমান অপর কোন মুসলমানকে বস্ত্রহীন
অবস্থায় বস্ত্র দান করল, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন। কোন মুসলমান অপর কোন
মুসলমানকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য দান করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতে ফল খাওয়াবেন। আর কোন মুসলমান অন্য
মুসলমানকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পানি পান করালে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে সীলমোহরকৃত হাউজে কাউসারের
পানি পান করাবেন।” (আবু দাউদ)
সৃষ্টির সেবায় মানুষের দায়িত্ব-কর্তব্য
সৃষ্টি জগতের সকল সৃষ্টির মধ্যে মানুষই যেহেতু প্রধান সৃষ্টি ; তাই মানুষের উপকার করাই হল তার প্রধান ও প্রথম
কর্তব্য। মানুষ মানুষের ভাই। তাই মানুষের সকল বিপদাপদে সাহায্যের জন্য মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। কেউ
ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত, পীড়িত, অভাবগ্রস্ত, বস্ত্রহীন, দুঃস্থ ও বিপন্ন হয়ে পড়লে তার প্রতি সদয় হয়ে তার সকল দুঃখ বেদনা
মোচন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা মানুষের কর্তব্য। মানুষের সেবা করলে আল্লাহ প্রীত হন এবং তিনি মানুষের
সেবাকে নিজের সেবা হিসেবে গ্রহণ করেন। মানুষের শক্তি-সামর্থ্য সীমিত, একই সাথে সকলের সেবা করা তার পক্ষে
সম্ভব নয় ; কাজেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ সেবা দান করতে হবে। পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন, নিকটাত্মীয়-
স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীগণ সেবা পাবার ক্ষেত্রে অগ্রণী। অতঃপর অপরাপর মানুষের সেবায় যথাসম্ভব নিয়োজিত থাকতে
হবে।
শুধুমাত্র মানুষের খিদমত করলেই খিদমতে খালক-এর দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ, উদ্ভিদরাজি
ইত্যাদি সৃষ্টির প্রতিও তার সেবার হাত বাড়াতে হবে। নতুবা আল্লাহর খলীফা ও শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে মানুষের দায়িত্ব
অপূর্ণ থেকে যাবে। কাজেই পশু-পাখির ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম গৃহপালিত গবাদি পশু ও উপকারী পাখি, হাস-মুরগি, কবুতর
ইত্যাদির যতœ নেয়া প্রয়োজন। অতঃপর অপরাপর পশু-পাখি, কুকুর, বিড়াল, কাক, চিল ইত্যাদিকেও প্রয়োজনীয়
সেবা দান করা উচিত। বিনা কারণে কোন প্রাণীকে কষ্ট দেয়া ঠিক নয়। ভাষাহীন পশুদের উপর সাধ্যাতীত বোঝা
চাপানোও উচিত নয়। তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য দান করা কর্তব্য। বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “একজন নবীকে
এক পিপীলিকা দংশন করলে তিনি সমস্তপিপীলিকা পুড়ে মেরে ফেলেন। এতে মহান আল্লাহ ওহী যোগে তাকে
জানালেন“তুমি একটির অপরাধে আমার মহিমা ঘোষণাকারী একটি স¤প্রদায়কে শেষ করে দিলে ?”
মানব সেবা ও জীব-জন্তুর প্রতি সদয় ব্যবহারের সাথে সাথে উদ্ভিদ জগতের সাথে এমনকি অচেতন জড় পদার্থের
প্রতিও সদয় ব্যবহার করার নির্দেশ ইসলাম দিয়ে থাকে। একদা অকারণে এক ব্যক্তি গাছের পাতা ছিড়লে মহানবী
(সা) তাকে সাবধান করে বলেন, “প্রত্যেক পাতাই মহান স্রষ্টার মহিমা গায় ও গুণ কীর্তন করে।”
চেতন পদার্থের ন্যায় অচেতন পদার্থের প্রতিও সদয় ব্যবহার করা প্রসঙ্গে মহানবী (সা) ঘোষণা করেন- “আল্লাহ পাক
প্রত্যেক পদার্থের উপর ‘‘রহমত’’ কথাটি অঙ্কিত করে রেখেছেন। সুতরাং প্রত্যেক বস্তুর প্রতিই সদয় থেকে হবে।
অতএব বিনা কারণে গাছ-পালা কর্তন করা ইসলাম আদৌ সমর্থন করে না। পানিও অকারণে ও অতিরিক্ত খরচ করা
থেকে ইসলাম নিষেধ করেছে।
মহান আল্লাহ মানুষের ওপর যেরূপ করুণা করেছেন তেমনি সকল সৃষ্টি জগতের প্রতিও মানুষকে করুণা করতে নির্দেশ
দিয়েছেন-
و احسن كما احسن اللھ الیك.
“তোমার প্রতি আল্লাহ যেরূপ ইহসান করেছেন, তুমিও তদ্রƒপ সৃষ্টির প্রতি ইহসান কর।” মহামানব গৌতম বৌদ্ধ এ
কারণেই বলেছেন, “জীবে দয়া করে যেজন- সেজন সেবিছে ঈশ্বরে।”
قال رسول اللھ صѧلى اللѧھ علیѧھ و سѧلم و الѧذى نفسѧى بیѧده لا یѧؤمن عبѧد حتѧى یحѧب
لاخیھ ما یحب لنفسھ. (بخارى ,مسلم ,انس)
হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে মহান সত্তার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ করে
বলছি, কোন ব্যক্তি মুমিন পারবে না যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করবে অপরের জন্যেও তা পছন্দ করবে।”
(বুখারী ও মুসলিম)
উকবা ইবন আমের (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি : এক মুসলিম অপর
মুসলিমের ভাই। অতএব কোন মুসলিম তার ভাইয়ের নিকট কিছু বিক্রি করার সময় তাতে যদি কোন দোষ ত্রæটি থাকে
তা যেন স্পষ্টভাবে বলে দেয়। কেননা দোষ-ত্রæটি গোপন রাখা কোন মুসলিম ব্যবসায়ীর জন্য হালাল নয়।” (ইবনে
মাজা)
আলোচ্য পাঠে পরিবেশ সংক্রান্তকয়েকটি হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে। আমাদের চার পাশে যা কিছু আছে সব মিলিয়েই
পরিবেশ। পরিবেশ অত্যন্তব্যাপক বিষয়। এখানে সকল বিষয় বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তাই এখানে যে সকল কারণে
পরিবেশ দূষিত হয়, মানুষ কষ্ট পায়, পশু-পাখি আর্তনাদ করে রোগ জীবানু ছাড়ায় এ সকল বিষয় এখানে উল্লেখ করা
হয়েছে। তাছাড়া পশু-পাখী যেমন আমাদের পরিবেশের অংশ তেমনি গাছ-পালা, নদ-নদী, পুকুর, খাল-বিল সবকিছুই
পরিবেশের অংশ। ধুমপান, মাদক দ্রব্য সেবন এগুলোও পরিবেশ নষ্ট করে। তাই এ পাঠে- এ সকল বিষয় আলোচিত
হয়েছে। এ পাঠের হাদীসের আলোকে আমরা পরিবেশকে দূষণ মুক্ত রাখার চেষ্টা করে আল্লাহর প্রিয় পাত্র থেকে সচেষ্ট থাকব।
১. অভিশপ্ত ব্যক্তি কারা?
ক. যে ব্যক্তি ছায়াদার ও ফলদার বৃক্ষের নিচে মল-মূত্র ত্যাগ করে; খ. যে ব্যক্তি জনপথে মল-মূত্র ত্যাগ করে;
গ. যে ব্যক্তি চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে; ঘ. উপরের সব ক’টি উত্তরই সঠিক।
২. হাদীসে কতটি স্থানে মল-মূত্র ত্যাগ করা নিষিদ্ধ করেছে?
ক. ৫ জায়গায়; খ. ৭ জায়গায়;
গ. ৩ জায়গায়; ঘ. ২ জায়গায়।
৩. কিবলার দিকে মুখ করে মল-মূত্র ত্যাগ করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেনক. মহানবী (সা); খ. আল্লাহ তায়ালা;
গ. হযরত উমর (রা); ঘ. হযরত আলী (রা)।
৪. পশু-পাখীর প্রতি দয়া করাক. ইসলামের বিধান; খ. পুণ্যের কাজ;
গ. মহানবীর সুন্নাত; ঘ. সব ক’টি উত্তরই সঠিক।
৫. মানুষের পরিচয় কী?
ক. মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি; খ. মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব;
গ. মানুষ সামাজিক জীব; ঘ. সব ক’টি উত্তরই সঠিক।
সংক্ষিপ্ত রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. হাদীসের আলোকে ফলদার বৃক্ষ ও জনপথে মল-মূত্র ত্যাগের পরিণাম আলোচনা করুন।
২. কয় জায়গায় মল-মূত্র ত্যাগ নিষিদ্ধ? হাদীসের আলোকে লিখুন।
৩. পশু-পাখীর প্রতি আমাদের কর্তব্য কী? হাদীসের আলোকে লিখুন।
৪. বৃক্ষ রোপণ ও মাঠে ফসল ফলানোর গুরুত্ব হাদীসের আলোকে বর্ণনা করুন।
৫. মদ ও মাদকতা স¤পর্কে ইসলামী বিধান কী? লিখুন।
৬. মানব জীবনে খিদমতে খালকের গুরুত্বআলোচনা করুন।
৭. মাঠে শস্য ফলানো ও বৃক্ষ রোপণের হাদীসটির অনুবাদ ও ব্যাখ্যা লিখুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. হাদীসের আলোকে ইসলামে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব বিস্তারিত ভাবে আলোচনা কএসএসএইচএল বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]