তাওহীদ বলতে কী বোঝেন? তাওহীদে বিশ্বাসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করুন।

তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদ
তাওহীদ ইসলামি জীবন ব্যবস্থার মূলভিত্তি। ইসলামি জীবন ব্যবস্থাকে মনে প্রাণে গ্রহণ করার জন্য এবং
তদনুযায়ী জীবন পরিচালিত করার জন্য তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করা অপরিহার্য।
রুবুবিয়াত বা বিশ্বসৃষ্টি পরিচালনায়, ইবাদাত ও দাসত্বে এবং গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহকে এক ও একক
হিসেবে স্বীকার করা অপরিহার্য। রুবুবিয়াত, উলুহিয়াত ও গুণবাচক নামের ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে
কাউকে অংশীদার করা যাবে না। কেউ আল্লাহকে একক উপাস্য ও প্রতিপালক হিসেবে বিশ্বাস না
করলে সে মুমিন হতে পারে না। তাওহীদ ইসলামের প্রবেশদ্বার এবং পৃথিবী থেকে চির বিদায় গ্রহণের
সময় একান্তআবশ্যকীয় বিষয়। তাওহীদে অবিশ্বাসী অভিশপ্ত এবং চির জাহান্নামী। তাওহীদ মুসলিম
জাতির প্রাণশক্তির উৎস হিসেবে বিবেচিত। জীবনে-মরণে, সুদিনে-দুর্দিনে, একমাত্র বিশ্ব নিয়ন্তা,
সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা আল্লাহ তা’আলার উপর নির্ভরতাই তাওহীদের মূলকথা।
তাওহীদে বিশ্বাসী মুমিন দ্বিত্ববাদ, বÐত্ববাদ, নাস্তিক্যতাবাদ ও পৌত্তলিকতাবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন
থাকে। তাওহীদে বিশ্বাস মুমিন জীবনে অফুরন্তপ্রেরণা এবং আত্মার পরম তৃপ্তি বয়ে আনে। মোটকথা,
গোটা ইসলামি ব্যবস্থাপনাই তাওহীদের ধারণা ও বিশ্বাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানব জীবনকে
সত্য, সুন্দর ও সুশৃংখল করতে তাওহীদের শিক্ষা অনস্বীকার্য। তাওহীদ-এর পরিচয়
তাওহীদ আরবি শব্দ। এটা ইসলামি বিশ্বাসের মূলভিত্তি। তাওহীদ-এর আভিধানিক অর্থ: একত্ববাদ বা
কাউকে একক বলে স্বীকার করা। আরবি توحید) তাওহীদ) শব্দটি وحد মূল ঋতু হতে নির্গত। এর
অর্থ হল-একক বলে স্বীকার করা, এক বলে মেনে নেওয়া, কোন সত্তাকে এক বা একক বলে স্বীকৃতি
দেওয়া। প্রচলিত অর্থে তাওহীদ শব্দের অর্থ আল্লাহ তা’আলার একত্ববাদ।
পারিভাষিক অর্থ
আল্লাহ তা’আলাকে একমাত্র ইবাদতের যোগ্য একক সত্তা হিসেবে স্বীকার করা ও বিশ্বাস করাই
তাওহীদ। ইসলাম ধর্মকেও তাওহীদ বলা হয়। কেননা, এর ভিত্তি হল, আল্লাহ তা’আলা এক এবং
একক তাঁর ক্ষমতায় এবং কর্মে কোন অংশীদার নেই। তিনি সত্তাগতভাবে একক এবং গুণগতভাবেও
একক, যার কোন সমতুল্য নেই। আর তিনি উপাসনার দিক থেকেও একক এবং ইবাদাত ও দাসত্বের
ক্ষেত্রেও একক। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। তিনি মানুষের সকল চিন্তা ও ধারণার ঊর্ধ্বে। তিনি অনাদি ও
অনন্ত। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। তিনি সৃষ্টিকর্তা ও বিশ্বজগতের প্রতিপালক। তিনি যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি
করেন এবং যেভাবে ইচ্ছা সৃষ্টি পরিচালনা করেন। তিনি অসীম জ্ঞানের অধিকারী এবং সমস্তজ্ঞান, শক্তি
ও মঙ্গলের উৎস।
তাওহীদ ইসলামি আকীদার মূলভিত্তি
তাওহীদ হচ্ছে ইসলামি বিশ্বাসের মূলভিত্তি। হযরত আদম (আঃ) থেকে নিয়ে সকল নবী ও রাসূলের
দাওয়াতের প্রথম কথা, ইসলামের প্রথম মঞ্জিল, যেখান থেকে একজন মুমিন আল্লাহর পথে ধাবিত হয়।
তাওহীদ হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার উলুহিয়াত, রুবুবিয়াত এবং আসমা ওয়াসসিফাত এর উপর এককভাবে
বিশ্বাস স্থাপন করা। কোন ব্যক্তি যদি নামায আদায় করে কিন্তুআল্লাহ তা’আলাকে একক উপাস্য, একক
প্রতিপালনকারী হিসেবে বিশ্বাস না করে, তাহলে সে ব্যক্তি মুমিন হতে পারে না। ইসলামের প্রবেশদ্বার
হল ‘তাওহীদ’ আর দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নেওয়ারও মূলমন্ত্রহল তাওহীদ। যেমন- হযরত মুহাম্মদ
(সা) থেকে বর্ণিত হাদিস:
من كان اخر كلامھ لا إلھ إلا اللھ دخل الجنة
“যার শেষ কথা হবে ‘আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই’ (তাওহীদ), সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
এ স্বীকারোক্তি একজন মুমিন মুসলিমের জন্য জীবনের প্রথমে যেমন অপরিহার্য, জীবনের শেষ মুহ‚র্তেও
তেমনি অপরিহার্য।
তাওহীদ একজন মানুষের প্রতি আল্লাহ তা’আলার প্রথম আদেশ এবং শেষ আদেশ। তাওহীদ নবী ও
রাসূলগণের দাওয়াতের প্রথম ও প্রধান বিষয়। মানবজীবনের দিশারী হিসেবে যুগে যুগে লক্ষাধিক নবী ও
রাসূল এ পৃথিবীতে আবিভর্‚ত হয়েছেন। তাঁরা সকলেই তাওহীদের শিক্ষাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রাণ
চেষ্টা করে মানব সমাজকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন। সকলেই একটি মাত্র ছোট বাক্য
اللھ الا الھ لا) আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই) এ কথায় বিশ্বাস স্থাপন করার জন্য দাওয়াত
দিয়েছেন। হযরত আদম (আ) থেকে নিয়ে সকল নবী-রাসূল তাঁদের জীবনভর এবং নবীকুল শ্রেষ্ঠ
তাওহীদ অর্থ আল্লাহ
তা’আলা এক এবং একক,
তাঁর ক্ষমতায় এবং কর্মে
কোন অংশীদার নেই। তিনি
সত্তাগতভাবে একক এবং
গুণগতভাবেও একক, যার
সমতুল্য কেউ নেই। আর
তিনি উপাসনার দিক
থেকেও একক এবং ইবাদত
ও দাসত্বের ক্ষেত্রেও একক।
হযরত মুহাম্মদ (সা) তাঁর নবী জীবনের সুদীর্ঘ তেইশটি বছর তাওহীদের শিক্ষা প্রচারের জন্য সংগ্রাম
করেছেন। মক্কার জীবনে নবুওয়াতের তের বছর শুধু তাওহীদ সংক্রান্তবাণীই প্রচার করেছেন এবং
তাওহীদের বাণী প্রচার করতে গিয়ে তিনি বÐ বাধা-বিঘœও নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন। তথাপিও তিনি
একাজ থেকে বিরত থাকেননি। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আয়াতসমূহের মাধ্যমে আমরা তার প্রমাণ পাই।
যেমন আল্লাহ বলেন-
ل َقَدْ أ َرْ سَ لْنَا نُوحا ً إ ِل َىٰ قَوْ مِھِ فَقَالَ یَاقَوْ مِ ٱعْبُدُوا ْ ٱلل َّھَ مَا ل َكُمْ مِّنْ إ ِل َـٰھٍ غَیْرُ هُ
“আমি তো নূহকে তার স¤প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম এবং সে তার স¤প্রদায়কে বলেছিল, হে
আমার স¤প্রদায়! আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ নেই।” (সূরা আলআরাফ : ৫৯)
হযরত হূদ (আ) বলেনঃ
یَاقَوْ مِ ٱعْبُدُوا ْ ٱلل َّھَ مَا ل َكُمْ مِّنْ إ ِل َـٰھٍ غَیْرُ هُ
“হে আমার স¤প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ
নেই।” (সূরা আল-আরাফ : ৬৫)
হযরত সালেহ (আ) বলেনঃ
یَاقَ وْ مِ ٱعْبُدُوا ْ ٱلل َّھَ مَا ل َكُمْ مِّنْ إ ِل َـٰھٍ غَیْرُ هُ
“হে আমার স¤প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ
নেই।” (সূরা আল-আরাফ : ৭৩)
আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেনঃ
وَ ل َقَدْ بَع َث ْنَا فِى كُلِّ أ ُمَّةٍ رَّ سُولا ً أ َنِ ٱعْب دُوا ْ ٱلل َّھَ وَ ٱجْتَنِبُوا ْ ٱلْطَّاغُوتَ
“আমি প্রত্যেক স¤প্রদায়ের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এ আদেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত
কর এবং তাগূত বর্জন করো।” (সূরা আন-নাহল : ৩৬)
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَ مَآ أ َرْ سَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّ سُولٍ إ ِلا َّ نُوحِ يۤ إ ِ ل َیْھِ أ َنَّھُ لاۤ إ ِ ل َـٰھَ إ ِلا َّ أ َنَا ْ
فَٱعْبُدُونِ
“আমি তোমার পূর্বে যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশই দিয়ে প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত
অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই ইবাদাত করো।” (সূরা আল-আম্বিয়া : ২৫)
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেনঃ
امرت أن أقاتل الناس حتى یشھدوا أن لا إلھ إلا اللھ و أن محمدا
رسول اللھ
“আমি আদিষ্ট হয়েছি মানুষের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যতক্ষণ পর্যন্তনা তারা এ সাক্ষ্য প্রদান করবে
যে, আল্লাহ ব্যতীত অপর কোন উপাস্য নেই এবং হযরত মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসূল।” (বুখারী ও
মুসলিম)
সুতরাং সত্য কথা হল যে, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক জ্ঞানবান নারী-পুরুষের উপর আল্লাহ তা’আলার
একত্ববাদের সাক্ষ্য প্রদান করা ওয়াজিব।
সকল ইমাম এ বিষয়ে একমত যে, ‘সর্বপ্রথম বান্দা যে বিষয়ের জন্য আদিষ্ট, তা হল আল্লাহ তা’আলার
একত্ববাদে বা তাওহীদে বিশ্বাস করা। আর এ বিষয়েও একমত যে, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায়ই এ একত্ববাদের
বা তাওহীদে বিশ্বাস করতে হবে। একজন মানুষের জন্য সালাত ওয়াজিব হওয়ার পূর্বে তাওহীদের উপর
বিশ্বাস স্থাপন করা ওয়াজিব। সালাত আদায় করার পূর্বেই তাওহীদে বিশ্বাস করতে হবে।
সকল ইমাম এ বিষয়ে
একমত যে, সর্বপ্রথম বান্দা
যে বিষয়ের জন্য আদিষ্ট,
তা হল আল্লাহ তা’আলার
একত্ববাদে বা তাওহীদে
বিশ্বাস করা। আর এ
বিষয়েও একমত যে, প্রাপ্ত
বয়স্ক অবস্থায়ই এ
একত্ববাদে বা তাওহীদে
বিশ্বাস করতে হবে।
ইসলামের সকল বিশ্বাস ও কর্মকাÐের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম ও মৌলিক জিনিস হচ্ছে, এ তাওহীদ
বা আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন। ইসলামি শরীআতের যত কর্মকাÐ আছে তা হচ্ছে এ
তাওহীদেরই শাখা-প্রশাখা মাত্র।
ইসলামের নৈতিক বিধি-ব্যবস্থা ও সামজিক আইন-কানুন এ তাওহীদ থেকেই উৎসারিত। এখানকার
প্রতিটি জিনিসেরই উৎস ও প্রত্যাবর্তনস্থল হচ্ছে আল্লাহর একক সত্তা। ফিরিশতা, আসমানী কিতাব,
নবী-রাসূল, কিয়ামত, আখিরাত, ফরয, ওয়াজিব এক কথায় প্রতিটি জিনিসের ভিত্তিই আল্লাহর
একত্ববাদের উপর প্রতিষ্ঠিত। এ একটি মাত্র জিনিসকে বিচ্ছিন্ন করে ফিরিশতা, কিয়ামত ও আখিরাতে
বিশ্বাস একেবারে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে; নবী-রাসূল এবং তাঁদের আনীত কিতাবাদি আনুগত্য লাভের
অনুপযোগী হয়ে পড়ে; ফরয, ওয়াজিব, আনুগত্য ইত্যাদি তাৎপর্য হারিয়ে ফেলে; আদেশ-নিষেধ ও
বিধি-ব্যবস্থায় কোন বাধ্যবাধকতা থাকে না।
মোটকথা, তাওহীদ এমন একটি কেন্দ্রবিন্দু, যা থেকে অপসৃত হলেই গোটা ইসলামি ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে
চুরমার হয়ে যায়। এমনকি ইসলাম বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব থাকে না। তাই তাওহীদ সম্পর্কে জ্ঞান
আহরণ করাকে সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা বলা হয়। আর তাওহীদের শিক্ষাকে আল-ফিকÐল আকবার বা সর্বশ্রেষ্ঠ
ফিকহ বলা হয়।
তাওহীদ হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার অধিকার যা বান্দার উপর ওয়াজিব। তাওহীদ ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ বুনিয়াদ।
সকল মূলনীতির মূল এবং আমলের ভিত্তি।
তাওহীদের উপকারিতা
তাওহীদের ইহকালীন ও পরকালীন অনেক উপকারিতা রয়েছে। সংক্ষেপে নিম্নে কয়েকটি উপকারিতা
সম্পর্কেআলোচনা করা হলঃ
১. ইহকালীন ও পরকালীন নানা ধরনের বিপদ-আপদ, দুঃখ-দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ লাভের প্রধান
অবলম্বন হচ্ছে তাওহীদ।
২. তাওহীদ বান্দার চির জাহান্নামী হওয়ার পথ রোধ করে, যদি তার অন্তরে সরিষা পরিমাণ তাওহীদও
বিদ্যমান থাকে। আর যদি তার অন্তর পরিপূর্ণভাবে তাওহীদের অনুসারী হয়, তাহলে তা
সম্পূর্ণভাবে বান্দার জন্যে জাহান্নামের পথ রোধ করে।
৩. তাওহীদে বিশ্বাসী ব্যক্তি হিদায়াতপ্রাপ্ত হয় এবং দুনিয়া ও আখিরাতে পরিপূর্ণনিরাপত্তা লাভ করে।
৪. বান্দার যাবতীয় প্রকাশ্য ও গোপনীয় ইবাদাত আল্লাহর কাছে গৃহীত হয় এবং এর জন্য সে বিনিময়
লাভ করে।
৫. তাওহীদ বান্দার জন্য সৎকাজ করার পথকে সুগম করে দেয় এবং অন্যায় কাজ পরিহার করতে
সহায়তা দান করে এবং বিপদাপদে সান্ত¡না যোগায়।
৬. তাওহীদ বান্দার দুঃখ-দুর্দশা ও কষ্ট লাঘব করে। বান্দা তাওহীদ ও ঈমানের পূর্ণতা অনুযায়ী দুঃখকষ্ট ও ব্যথা-বেদনাকে উদার চিত্তে এবং প্রশান্তমনে গ্রহণ করে নেয়। সাথে সাথে আল্লাহর দেওয়া
ভাগ্যলিপির দুঃখ-দুর্দশাকে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয়।
৭. তাওহীদের বিশেষ উপকারিতা হচ্ছে, তাওহীদ বান্দাকে মাখলুকের দাসত্ব, মাখলুকের সাথে অবৈধ
সম্পর্ক, তার প্রতি ভয়, তার কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশা এবং তারই উদ্দেশ্যে কাজ করা
ইত্যাদি থেকে মুক্তি দান করে। এর দ্বারাই বান্দা আল্লাহ তা’আলাকে ইলাহ বা উপাস্য এবং মাবুদ
হিসেবে মেনে নিয়ে প্রকৃত গোলামে পরিণত হয়।
৮. তাওহীদের আরও উপকারিতা হচ্ছে, তাওহীদ বান্দার হৃদয়ে যখন পরিপূর্ণতা লাভ করে এবং পূর্ণ
আন্তরিকতার সাথে অন্তরে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন তার অল্প আমলই অধিক সওয়াবের কারণ হয়।
তার কথা ও কাজের সওয়াব সীমা ও সংখ্যার হিসাব ছাড়াই বৃদ্ধি পেতে থাকে।
৯. তাওহীদের উপকারিতা হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলা তাওহীদবাদীদের উপর থেকে দুনিয়া ও
আখিরাতের অনিষ্টতা ও অকল্যাণ দূর করে দেন এবং উত্তম ও প্রশান্তিময় জীবন দান করেন। এর
ফলে আল্লাহ তা’আলাকে স্মরণ করার মাধ্যমেই তারা শান্তিলাভ করে।
১০. তাওহীদে বিশ্বাসের উপকারিতা এই যে, তাওহীদে বিশ্বাসের ফলে প্রতিটি মানুষ, জীব-জন্তুপশুইসলামের নৈতিক বিধিব্যবস্থা ও সামাজিক আইনকানুন এ তাওহীদ থেকেই উৎসারিত। এখানকার প্রতিটি জিনিসেরই উৎস ও প্রত্যাবর্তনস্থল হচ্ছে আল্লাহর একক সত্তা।
পাখি তার থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। আল্লাহর সকল সৃষ্ট বস্তুকে সে ভালবাসতে শিখে এবং
অনর্থক কাউকেও কষ্ট দেয় না।

পাঠোত্তর মূল্যায়ন
 নৈর্ব্যক্তিক উত্তর-প্রশ্ন
 সঠিক উত্তরে টিক ( চিহ্ন দিন১. তাওহীদ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছেক. একত্ববাদ; খ. রুবুবিআত;
গ. আল্লাহকে বিশ্বাস করা; ঘ. কোনটিই কঠিক নয়।
২. ইসলামি বিশ্বাসের মূলভিত্তি কী?
ক. আল্লাহ ব্যতীত কাউকে বিশ্বাস করা; খ. তাওহীদ;
গ. ইবাদাত করা; ঘ. সালাত আদায় করা।
৩. তাওহীদকে বলা হয়ক. ইসলামি আইনের উৎস; খ. ইসলামের বুনিয়াদ;
গ. ইসলামের প্রবেশ দ্বার; ঘ. নবী-রাসূলগণের কর্ম।
৪. নবী-রাসূলগণের প্রথম দায়িত্ব কী?
ক. ইসলামের দাওয়াত দেওয়া; খ. তাওহীদের বাণী প্রচার করা;
গ. নামায আদায় করা; ঘ. জিহাদ করা।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. তাওহীদ-এর আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ লিখুন।
২. ‘তাওহীদ ইসলামি আকীদার মূলভিত্তি’ বর্ণনা করুন।
৩. ‘তাওহীদ নবী-রাসূলগণের দাওয়াতের প্রথম ও প্রধান বিষয়’ বর্ণনা করুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. তাওহীদ বলতে কী বোঝেন? তাওহীদে বিশ্বাসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করুন।
২. তাওহীদে বিশ্বাসের উপকারিতা সম্পর্কেবিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]