নবী ও রাসূলগণের নিষ্পাপ হওয়া সম্পর্কেদলীল-প্রমাণসহ আলোচনা করুন।

নবী ও রাসূলগণের নিষ্পাপ হওয়া
আল্লাহ তা’আলা মানব জাতির মধ্য হতে সর্বোত্তম আদর্শবান ব্যক্তিদের নবী ও রাসূল নির্বাচন করেছেন।
মানব সমাজে অবস্থান করেও তাঁরা অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, তীক্ষè বুদ্ধি, বিচক্ষণতা এবং উন্নত
চরিত্রের অধিকারী ও সত্যবাদী ছিলেন। তবে নবী-রাসূলগণ সম্পূর্ণ নিষ্পাপ বা পাপমুক্ত ছিলেন কিনা, এ
ব্যাপারে মুসলিম পÐিতগণ বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। চারটি বিষয়ে এ মতভেদ লক্ষ করা যায়। যথা১. বিশ্বাসগত দিক
মুসলিম পÐিতগণ এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেন যে, নবী-রাসূলগণ কুফর এবং বিদ্আত
থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। তবে ভ্রান্তমতাবলম্বীরা নবী-রাসূলগণের দ্বারা কুফরী কাজ সংঘটিত হওয়াকে
বৈধ মনে করেন। তাদের মতে নবী-রাসূলদের দ্বারা পাপকার্য সংঘটিত হওয়া বৈধ। আর
প্রত্যেকটি পাপকার্য তাদের নিকট কুফরের সমতুল্য। এমতাবস্থায় তাদের মতে নবী-রাসূলদের
দ্বারা কুফরী হওয়া সম্ভব। রাফেজীরা নবী-রাসূলদের দ্বারা প্রকাশ্যভাবে কুফরী করা জায়েজ বলে
মনে করে।
আবু মুহাম্মদ ইবনে হাযম (র) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল-মিলাল ওয়ান-নিহাল’ গ্রন্থেউল্লেখ করেন
যে, তাইয়্যিব আল-বাকিল্লানী আল-আশআরী বলেন, “আমি জনৈক ব্যক্তির নিকট থেকে শুনেছি
তিনি কাররামিয়াদের সম্পর্কে বলেন, তারা দীন প্রচারের ক্ষেত্রে নবী-রাসূলদের মিথ্যা কথা বলা
জায়েয মনে করেন।” আর এটা ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদেরও অভিমত।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অভিমত হল, নবী-রাসূলগণ অন্যান্য ক্ষেত্রের মত তাবলীগের
ক্ষেত্রেও কোন প্রকার মিথ্যা বলেননি এবং মিথ্যা বলা তাঁদের জন্য জায়েয নয়।
২. আল্লাহর নিকট থেকে প্রাপ্ত সকল বিধি-বিধান সম্পর্কিত দিক
মুসলিম পÐিতগণ এবং ফিকহবিদগণ এ ব্যাপারে ইজমা বা ঐকমত্য পোষণ করেন, নবী-রাসূলগণ
আল্লাহ তা’আলার নিকট থেকে যে শরীআত বা বিধান লাভ করেন তার মধ্যে কোন পরিবর্তন বা
পরিবর্ধন এবং খিয়ানত করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। ইচ্ছাকৃতভাবেও নয়, অনিচ্ছাকৃতভাবেও
নয়। অন্যথায় শরীআতের বিধানের উপর সামান্যতম বিশ্বাস এবং নির্ভরশীলতা মানুষের থাকত
না।
৩. ইজতিহাদ সম্পর্কিত দিক
মুসলিম পÐিতগণ ঐকমত্য পোষণ করেন যে, নবী-রাসূলগণের দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ভুলত্রæটি
হওয়া জায়েয নয়। ফাতওয়া ও গবেষণা সংক্রান্তবিষয়ে অনিচ্ছাকৃত কোন ভুলত্রæটি প্রকাশিত
হওয়ার ব্যাপারে মুসলিম পÐিতগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
৪. তাঁদের কাজ কর্ম ও পরিস্থিতিগত দিক
এ বিষয়ে মুসলিম পÐিতগণ মতভেদ করেছেন এবং তারা পাঁচটি স¤প্রদায়ে বিভক্ত হয়েছেন। যথা:
ক. বাতিলপন্থী হাশবিয়া স¤প্রদায়ের মতে নবী-রাসূলগণের দ্বারা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কবীরা ও সগীরা গুনাহ সংঘটিত হতে পারে।
নবী ও রাসূলগণ সকলগুনাহ থেকে নিষ্পাপমানব জাতির সর্বোত্তমআদর্শবান অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, তীক্ষèবিচক্ষণতা এবং উন্নতচরিত্রের অধিকারী ও সত্যবাদী ছিলেন।
খ. আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অধিকাংশ পÐিতদের মতে নবী-রাসূলগণ ইচ্ছাকৃত কবীরা
গুনাহ, নৈতিকতা ও ব্যক্তিত্ব বিরোধী সগীরা গুনাহ থেকেও মুক্ত।
গ. নবী-রাসূলদের পক্ষে ইচ্ছাকৃতভাবে কবীরা এবং সগীরা গুনাহ করা বৈধ নয়। কিন্তু
অনিচ্ছাকৃতভাবে যদি কোন পাপ হয়ে যায় বা কোন বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে যদি
অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন ভুল হয়ে যায় তবে তা বৈধ। আর এ মতবাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন
আবু আলী আলজুবায়ী। তিনি মুতাযিলা স¤প্রদায়ের একজন ইমাম ছিলেন।
ঘ. নবী-রাসূলগণ কবীরা এবং সগীরা কোন প্রকারের গুনাহই করতে পারেন না। ইচ্ছাকৃতভাবে
কোন গুনাহ করা তো দূরের কথা, অনিচ্ছাকৃতভাবে তা তাবিল (ধর্মের ব্যাখ্যা) করার সময়ে
কোন গুনাহ করতে পারেন না। কিন্তু ভুলবশত গুনাহ প্রকাশ পাওয়া বৈধ। অতপর তাঁরা ক্ষমা
প্রার্থনা করবেন তাঁদের ভুলত্রæটির জন্য। যেহেতু তাঁদের জ্ঞান পরিপূর্ণ। সুতরাং তাঁদেরকে
সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যক। আর এ মতবাদের প্রবক্তা হলেন আবু ইসহাক ইবরাহীম
ইবনে ইয়াসার আল-নাজ্জাম। তিনিও মুতাযিলা সম্প্রদায়ের একজন ইমাম।
ঙ. নবী-রাসূলগণ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত এবং ভুলবশত যাবতীয় কবীরা গুনাহ এবং সগীরা
গুনাহ হতে পবিত্র। শিয়া মতাবলম্বীগণ এ মতের অনুসারী।
নবী-রাসূলগণের পাপ থেকে পবিত্র হওয়ার সময়কাল
নবী-রাসূলগণের যাবতীয় পাপ কাজ থেকে পবিত্রতা কখন থেকে আরম্ভ হয় এ সম্পর্কেধর্মতত্ত¡বিদগণের
মতামত হচ্ছে১. কেউ কেউ মনে করেন, নবী-রাসূলগণ ভ‚মিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে জীবনের শেষ মুহ‚র্ত পর্যন্তযাবতীয়
গুনাহ থেকে পবিত্র।
২. অধিকাংশ মুসলিম পÐিতের মতে, নবুওয়াত প্রাপ্তির সময় থেকে নবী-রাসূলগণকে অবশ্যই যাবতীয়
পাপ কাজ থেকে পবিত্র থাকতে হবে। নবুওয়াত লাভের পূর্বে পাপ কাজ থেকে পবিত্র থাকা
আবশ্যক নয়। তবে সাধারণত আল্লাহ তাঁদেরকে নবুওয়াত লাভের পূর্বেও যে কোন প্রকার পাপ
থেকে হেফাজত করেন।
নবী-রাসূলগণের নিষ্পাপ হওয়ার দলীল
যারা মনে করেন, নবী-রাসূলগণ নবুওয়াত লাভের সময়কাল থেকে সকল প্রকার ইচ্ছাকৃত কবীরা এবং
সগীরা গুনাহ থেকে পবিত্র, তাদের দাবির সমর্থনে বিভিন্ন যুক্তি ও প্রমাণাদি উপস্থাপন করা হল।
১. যদি নবী-রাসূলগণের দ্বারা কোন পাপ কাজ সংঘটিত হয় তাহলে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, তাঁরা
তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত হয়ে যান এবং তাঁরা ভবিষ্যতে শাস্তির জন্য বিবেচিত হন যা গুনাহগার
উম্মতের অবস্থা থেকেও কঠিন। আর এটা গ্রহণযোগ্য নয় যে, একজন নবী মানুষকে হিদায়াতের
পথে আহবান করার পরিবর্তেনিজেই পাপে লিপ্ত হয়ে পড়বেন। সুতরাং নবী-রাসূলদের দ্বারা পাপ
কার্য সাধিত হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
আল্লাহ তা’আলার সবচেয়ে বড় নিয়ামত হল, “বান্দাদের উপর নবুওয়াত এবং রিসালাতের
নিয়ামত।” যিনি এ নবুওয়াত বা রিসালাত লাভে ধন্য তাঁর দ্বারা পাপ কাজ সাধিত হওয়া অতি
জঘন্য ও ঘৃণিত কাজ। নবী-রাসূলগণ উম্মতের চেয়ে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেন। এমনটি
কখনো হতে পারে না যে, একজন নবী বা রাসূল আল্লাহর কাছে সম্মানিত থাকবেন এবং উম্মতের
মধ্যে তাঁর অবস্থান নিম্নে থাকবে? এতে প্রমাণিত হয় যে, নবী-রাসূলগণ সমস্তপাপ কাজ থেকে
পবিত্র।
২. যদি নবী-রাসূলগণের দ্বারা পাপ কাজ সম্পাদিত হতো তাহলে তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতো না।
আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেন“হে মুমিনগণ! যদি কোন ফাসেক পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে,
তবে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে।” (সূরা আল-Ðজুরাত : ৬)
ফাসেক বা পাপাচারী ব্যক্তির সংবাদ পরীক্ষা করে দেখার কথা আয়াতে নির্দেশ এসেছে এবং
ফাসেক ব্যক্তির সাক্ষ্য যাচাই করা এবং স্থগিত করার আদেশ হয়েছে।
সুতরাং নবীদের দ্বারা পাপ কার্য সাধিত হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা দুনিয়ায় তাঁরা যদি পাপাচারি
সাব্যস্তহন এবং যদি তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য না হয় তাহলে কিয়ামত দিবসে তাঁদের সাক্ষ্য
কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে। অথচ আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা দিয়েছেন যে, হযরত মুহাম্মদ (স) ত প্রাপ্তির সময় থেকে
রাসূলগণকে অবশ্যই তীয় পাপ কাজ থেকে
পবিত্র থাকতে হবে। য়াত লাভের পূর্বে পাপ
জ থেকে পবিত্র থাকা আবশ্যক নয়। তবে
ণত আল্লাহ তাঁদেরকে য়াত লাভের পূর্বেও যে
কান প্রকার পাপ থেকে হেফাজত করেন। কিয়ামত দিবসে তাঁর উম্মতের জন্য সাক্ষী হবেন। যেমন পবিত্র কুরআনে আছে:
وَ كَذٰ لِكَ جَع َلْنَاكُمْ أ ُمَّة ً وَ سَطا ً ل ِّتَكُونُوا ْ شُھَدَآءَ عَل َى ٱلنَّاسِ وَ یَكُونَ
ٱلرَّ سُولُ عَل َیْكُمْ شَھِ یدا ً
“এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী স¤প্রদায় করেছি যাতে তোমরা সাক্ষী হও মানবমÐলীর
জন্য। আর রাসূল (স) সাক্ষী হয় তোমাদের জন্য।” (সূরা আল-বাকারা : ১৪৩)।
যদি কিয়ামত দিবসে রাসূল (স) তাঁর উম্মতের জন্য সাক্ষী হন, তাহলে কিভাবে সম্ভব তাঁর কাছ
থেকে পাপ সংঘটিত হওয়া যার ফলে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে না।
৩. নবী-রাসূলগণের দ্বারা যদি পাপ কাজ সাধিত হতো তাহলে তাঁদেরকে শাসন করা আবশ্যক হয়ে
পড়ত। কেননা সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা ওয়াজিব। নবী-রাসূলগণকে
শাসানো বৈধ নয়। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
إِنَّ ٱلَّذِینَ یُؤْ ذ ُونَ ٱللَّھَ وَ رَ سُولَھُ لَعَنَھُمُ ٱللَّھُ فِى ٱلدُّنْیَا وَ ٱلآخِ رَ ةِ
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিশম্পাত
করেন।” (সূরা আল-আহযাব : ৫৭)
নবী-রাসূলগণ যেহেতু শিক্ষকরূপে আবিভর্‚ত হয়েছেন, সেহেতু তাঁদের দ্বারা পাপ কাজ সাধিত
হওয়া সম্ভব নয়।
৪. যদি নবী-রাসূলগণের দ্বারা কোন পাপাচার সংঘটিত হয় তাহলে কিভাবে আমরা তাঁদের অনুসরণ
করব অথচ আমাদেরকে তাঁদের অনুসরণ করার জন্য আদেশ করা হয়েছে। যদি তাঁদের কাছ
থেকে পাপ সংঘটিত হতো তাহলে আমাদেরকে তাঁদের অনুসরণ করার জন্য আদেশ করা হতো
না। নবী-রাসূলগণ আসবেন শরীআত নিয়ে আর উম্মত তা গ্রহণ করবে না, বা গ্রহণ করার জন্য
আদিষ্ট হবে না এটাও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন:
ق ُلْ إِن كُنتُمْ تُحِ بُّونَ ٱللَّھَ فَٱتَّبِعُونِى یُحْ بِبْكُمُ ٱللَّھُ
“বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে
ভালবাসবেন।” (সূরা আলে-ইমরান : ৩১)
আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদেরকে কোন ফাসেক পাপাচারী ব্যক্তির অনুসরণের জন্য আদেশ করেন
না এবং করতে পারেন না। যেহেতুনবী মুহাম্মদ (স)-এর অনুসরণ করার আদেশ হয়েছে, সেহেতু
এটা প্রমাণিত হয় যে, হযরত মুহাম্মদ (স) সকল পাপ কাজ থেকে পবিত্র ছিলেন।
৫. যদি নবী-রাসূলগণের দ্বারা কোন পাপাচার সংঘটিত হতো, তাহলে তাঁরা আল্লাহর শাস্তিলাভের
অধিকারী হয়ে যেতেন এবং জাহান্নামে প্রবেশ করতেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَ مَ ن یَعْصِ ٱلل َّھَ وَ رَ سُولَھُ وَ یَتَعَدَّ حُدُودَهُ یُدْخِ لْھُ نَارا ً خَالِدا ً فِیھَا
وَ لَھُ عَذَابٌ مُّھِ ینٌ
“যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে এবং তাঁর দেওয়া সীমারেখা লংঘন করে তিনি
তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক
শাস্তি।” (সূরা আন-নিসা : ১৪)
নবী-রাসূলগণ জান্নাতে থাকবেন আল্লাহ তা’আলার এ কথার স্বীকৃতি স্বরূপ নবী-রাসূলগণ পাপ কাজ
করতে পারেন না। কেননা যারা জান্নাতী হবেন তারা পাপ কাজ থেকে মুক্ত ও পবিত্র থাকবেন।
উম্মতে মুহাম্মদী এ বিষয়ে একমত যে নবী-রাসূলগণ পাপ কাজ করতে পারেন না এবং তাঁদের দ্বারা
পাপ কাজ সংঘটিত হওয়া সম্ভব নয়।
৬. নবী-রাসূলগণ মানব জাতিকে তাঁদের অনুসরণ করার আদেশ দিয়েছেন এবং পাপ কাজ থেকে
বিরত থাকতে বলেছেন। আর যদি তাঁরাই আল্লাহর আনুগত্য ছেড়ে দেন এবং পাপাচারে লিপ্ত হন,
তাহলে তাঁরা আল্লাহ তা’আলার সেই আদেশের ভেতর এসে গেলেন, যাদের সম্পর্কেআল্লাহ
যদি নবী রাসূলগণের কোন পাপাচার সংঘটিতাহলে কিভাবে আমতাঁদের অনুসরণ করবআমাদেরকে তাঁদের অনুসরণ করার জন্য করা হয়েছে।
তা’আলা নিন্দাবাদ করে বলেছেন:
یٰ أ َیُّھَا ٱلَّذِینَ آمَ نُواْ لِمَ تَقُول ُونَ مَ ا لاَ تَفْعَلُونَ . كَبُرَ مَ قْتا ً عِندَ ٱللَّھِ
أ َن تَقُول ُواْ مَ ا لاَ تَفْعَلُونَ
“হে মুমিনগণ! তোমরা যা করো না, তা কেন বল? তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর কাছে
খুবই অসন্তোষজনক।” (সূরা আস-সাফ : ২-৩)
এ ধরনের কাজ অত্যন্তনিন্দনীয়। আল্লাহ তা’আলা হযরত শুয়াইব (আ) সম্পর্কেবলেছেন, তিনি
এ জাতীয় কাজ থেকে পবিত্র ছিলেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
وَ مَ آ أ ُرِ یدُ أ َنْ أ ُخَالِفَكُمْ إِلَىٰ مَ آ أ َنْھَ اكُمْ عَنْھُ
“আর আমি চাই না যে, তোমাদের যা থেকে নিষেধ করছি আমি নিজেই সে কাজে লিপ্ত হয়ে
পড়ি।” (সূরা হূদ : ৮৮)
এ আয়াত দ্বারাও নবী-রাসূলদের পাপাচার থেকে পবিত্র হওয়া প্রমাণ করা যায়।
৭. নবী-রাসূলগণ আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত। তাঁরা সর্বাপেক্ষা সৎলোক। তাঁদের কাছ থেকে কোন পাপ
সংঘটিত হয় না। মহান আল্লাহ বলেন-
وَ إِنَّھُمْ عِ ندَنَا لَمِ نَ ٱلْمُصْ طَفَیْنَ ٱلأ َخْ یَارِ
“আর তারা আমার কাছে মনোনীত ও সৎলোকের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা সোয়াদ : ৪৭)
এ আয়াত দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, নবী-রাসূলগণ সকল কাজ কর্মেসৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত
ছিলেন এবং নবী-রাসূলদের দ্বারা পাপ কাজ সংঘটিত হওয়া অসম্ভব।
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন:
إِنَّ ٱللَّھَ ٱصْ طَفَىٰ آدَمَ وَ نُوحا ً وَ آلَ إِبْرَ اھِیمَ وَ آلَ عِمْ رَ انَ عَلَى
ٱلْعَالَمِ ینَ
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ আদম, নূহ, ইবরাহীম এবং ইমরান -এর বংশধরদেরকে মনোনীত করেছেন
সমস্তজগৎবাসীর উপর।” (সূরা আলে-ইমরান : ৩৩)
আল্লাহ তা’আলা হযরত মূসা (আ)-এর ব্যাপারে বলেন:
إِنِّى ٱصْ طَفَیْتُكَ عَلَى ٱلنَّاسِ بِرِ سَالاَتِى وَ بِكَلاَمِ ى
“আমি তোমাকে আমার বার্তা পাঠানো এবং কথা বলার মাধ্যমে লোকদের উপর বৈশিষ্ট্য দান
করেছি।” (সূরা আল-আরাফ : ১৪৪)
৮. উলামায়ে কিরামগণ বলেছেন, নবী ও রাসূলগণ ফেরেশতাদের থেকেও উত্তম। আর এ বিষয়টি
দলিল দ্বারা প্রমাণিত যে, ফেরেশতাগণ কোন গুনাহের কাজে অগ্রসর হন না। নবী-রাসূলদের দ্বারা
যদি কোন পাপ কাজ অনুষ্ঠিত হতো তাহলে ফেরেশতাদের থেকে উত্তম হওয়া নবী-রাসূলদের জন্য
অসম্ভব হয়ে যেত। আল্লাহ তা’আলা বলেন :
أ َمْ نَجْ عَلُ ٱلَّذِینَ آمَ نُ واْ وَ عَمِ لُواْ ٱلصَّالِحَ اتِ كَٱلْمُفْسِدِینَ فِى
ٱلأ َرْ ضِ أ َمْ نَجْ عَلُ ٱلْمُتَّقِینَ كَٱلْفُجَّارِ
“আমি কি বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলদেরকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কাফিরদের সমতুল্য করে
দেব? আমি কি খোদাভীরুদের পাপাচারীদের সমান করে দেব?” (সূরা সোয়াদ : ২৮)
নবীগণ ফেরেশতাদের থেকে উত্তম হওয়ায় একথা প্রমাণিত হয় যে, নবী ও রাসূলগণ নিষ্পাপ।
তাঁদের দ্বারা কোন কবীরা কিংবা সগীরা গুনাহ অনুষ্ঠিত হয় না। আল্লাহ তা’আলা তাঁদের সকল পাপ কাজ থেকে বিরত রাখেন। াসূলগণ আল্লাহ কর্তৃক নীত। তাঁরা সৎলোক। দের কাছ থেকে কোন কার পাপ সংঘটিত হয় না।
 সঠিক উত্তরের পাশে টিক ( চিহ্ন দিন১. নবী ও রাসূলগণ শুধু তাবলীগের ক্ষেত্রে মিথ্যা বলে থাকেন এটি কাদের অভিমত?
ক. মুরজিয়াদের;
খ. মুতাযিলাদের;
গ. হানাফীদের;
ঘ. কাররামিয়াদের।
২. ‘নবী ও রাসূলগণের ইচ্ছাকৃতভাবে কবীরা গুনাহ থেকে পবিত্র হওয়ার দরকার নেই’ এ মতটি
পোষণ করেনক. আশআরিয়াগণ;
খ. যায়েদিয়াগণ;
গ. শিয়া সম্প্রদায়;
ঘ. হাশবিয়াগণ।
৩. আবু আলী আল-জুবায়ী কে ছিলেন?
ক. হাম্বলী মাযহাবের বিখ্যাত পÐিত;
খ. কাররামিয়া স¤প্রদায়ের একজন ইমাম;
গ. বাহাইয়া স¤প্রদায়ের একজন পÐিত;
ঘ. মুতাযিলা স¤প্রদায়ের একজন ইমাম।
৪. ‘নবী ও রাসূলগণ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত কোনভাবেই কবীরা বা সগীরা গুনাহ করতে পারেন না’
এটি কার অভিমত?
ক. ইমাম আবু হানীফা (র)-এর;
খ. ইমাম মালিক (র)-এর;
গ. ইবনুল আরাবীর;
ঘ. ইবনে ইয়াসার আল-নাজ্জামের।
সংক্ষিপ্ত রচনামূলক-প্রশ্ন
১. নবী ও রাসূলগণ নিষ্পাপ ছিলেন কিনা, এ বিষয়ে মুসলিম পÐিতদের মতামত আলোচনা করুন।
২. নবী ও রাসূলদের কাজ-কর্ম, আচার-আচরণ ও পরিস্থিতিগত দিক নিয়ে মুসলিম পÐিতগণের মধ্যে যে মত পার্থক্য দেখা যায়, তা আলোচনা করুন।
৩. ‘নবী ও রাসূলগণ নবুওয়াত লাভের সময়কাল থেকে নিষ্পাপ ছিলেন’ এ মতের স্বপক্ষে বিভিন্নযুক্তি
প্রমাণ উপস্থাপন করুন।
বিশদ রচনামূলক-প্রশ্ন
১. নবী ও রাসূলগণের নিষ্পাপ হওয়া সম্পর্কেদলীল-প্রমাণসহ আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]