খাতামুন নবুওয়াত বলতে কী বুঝেন? ‘হযরত মুহাম্মদ (স) সর্বশেষ নবী ও রাসূল ছিলেন’

হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন খাতামুল আম্বিয়া
আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রেরিত বান্দা হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মাধ্যমে সকল নবী ও রাসূলের রিসালাতের
উপর খাতাম বা মোহর লাগিয়ে দিয়েছেন। যেমন তিনি খাতাম লাগিয়ে দিয়েছেন তাঁর পূর্ববর্তী সকল
শরীআতের উপর। অতঃপর তাঁর শরীআত ছাড়া আর কোন শরীআত গ্রহণযোগ্য হবে না। হযরত
মুহাম্মদ (স)-এর পর আর কোন নবী আসবেন না। আল্লাহ তা’আলা হযরত মুহাম্মদ (স)-কে যতগুলো
বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করেছিলেন তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্য হল, তার দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে
নবুওয়াতের মোহর অংকিত করে দেওয়া। তারপর থেকে তিনি নবুওয়াত সমাপ্তকারী হিসেবে চিহ্নিত
হয়েছেন। তিনি ছিলেন খাতামুন নবুওয়াত বহনকারী। রাসূল (স)-এর ভ‚মিষ্ঠ হওয়ার পরই তিনি
খাতামুন নবুওয়াত দ্বারা মোহরাংকিত ছিলেন। আর সে ঘটনা ঘটেছিল বনী সাদ গোত্রে যখন তিনি দুগ্ধ
পান করতেন।
খাতামুন নবুওয়াত-এর অর্থ
খাতামুন নবুওয়াত আরবি শব্দ। এর অর্থ নবুওয়াতের পরিসমাপ্তি। হযরত মুহাম্মদ (স)-এর পর
মানবজাতির হিদায়াতের জন্য আর কোন নবী বা রাসূল আসবেন না। খাতাম শব্দের আভিধানিক অর্থ
হলো মোহর লাগানো, বন্ধ করা, শেষ পর্যন্তপৌছে যাওয়া এবং কোন কাজ শেষ করে দায়িত্ব থেকে
অব্যাহতি লাভ করা। যেমন:
ختم العمل اى فرغ من العمل
এর অর্থ হলো: কাজ শেষ করে ফেলা অর্থাৎ কাজ থেকে অব্যাহতি লাভ করা। বলা হয়, الاناء ختم
পাত্রের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে, যাতে করে তার ভেতর থেকে কোন জিনিস বাইরে আসতে এবং বাইরে
থেকে কোন কিছু ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। তদ্রƒপ الكتاب ختم এর অর্থ হলো পত্র বন্ধ করে
তার উপর মোহর লাগিয়ে দেওয়া। ফলে পাত্রটি সংরক্ষিত হল। আরো বলা যায় القلب على ختم
অন্তরের উপর মোহর লাগিয়ে দিয়েছে। এরপর বাইরের কোন কথা আর সে বুঝতে পারবে না এবং তার
ভেতরের কোন স্থিতিশীল কথা বাইরে বেরুতে পারবে না। আরো বলা হয়, أى شئ كل خاتمة
واخرتھ عاقبتھ অর্থাৎ প্রত্যেক জিনিসের খাতিমা অর্থাৎ তার পরিণাম এবং পরিসমাপ্তি। আরো
প্রচলিত আছে। اخره بلغ اى الشئ ختم অর্থাৎ কোন জিনিসকে খতম করার অর্থ হল তা শেষ
পর্যন্তপৌঁছে যাওয়া। খতমে কুরআন এ অর্থেই ব্যবহৃত হয়। আর এ অর্থের উপর ভিত্তি করেই প্রত্যেক
সূরার শেষ আয়াতকে বলা হয় খাওয়াতিম। ‘লিসানুল আরব’ নামক অভিধানে আছে, أى القوم خاتم
اخرھم অর্থাৎ ‘জাতির শেষ ব্যক্তিটি’। যেমন বলা হয়, القوم خاتم جاء অর্থাৎ ‘গোত্রের সবাই
এসে গেছে এমন কি শেষ ব্যক্তিও এসেছেন।’ এখানে একথা বলার কোন অবকাশ নেই যে, গোত্রের
খাতামুন নবুওয়াত আরশব্দ। এর অর্থ নবুওয়াপরিসমাপ্তি। হযরত মুহ(স)-এর পর মানবজািিহদায়াতের জন্য আর নবী বা রাসূল আসবেন
শ্রেষ্ঠ ও কামিল ব্যক্তি এসেছেন।
সে জন্যই সমগ্র অভিধান বিশারদ এবং তাফসীরকারগণ একযোগে ‘খাতামুন নাবিয়ীন’ শব্দের অর্থ গ্রহণ
করেছেন ‘আখিরু নাবিয়ীন’ অর্থাৎ নবীদের শেষ। আরবি অভিধান এবং প্রবাদ অনুযায়ী খাতাম এর অর্থ
ডাক ঘরের মোহর নয়, যা চিঠির উপর লাগিয়ে চিঠি পোষ্ট করা হয়। বরং সেই মোহর যা খামের মুখে
এই উদ্দেশ্যে লাগানো হয় যে, তার ভেতর থেকে কোন জিনিস বাইরে বেরুতে পারবে না এবং বাইরের
কোন জিনিস ভেতরে প্রবশে করতে পারবে না।
আল-কুরআনের আলোকে খাতামুন নুবওয়াত প্রমাণ
যুগে যুগে আল্লাহ তা’আলা মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দেওয়ার উদ্দেশ্য যে সকল নবী ও রাসূল
প্রেরণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে নবীকুল শ্রেষ্ঠ হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন সর্বশেষ নবী ও রাসূল। হযরত
মুহাম্মদ (স)-কে আল্লাহ তা’আলা এমন একটি ধর্ম বা জীবনাদর্শ দিয়ে প্রেরণ করেছেন যে, তাতে নতুন
কিছু সংযোজন এবং বিয়োজন করার ব্যবস্থা নেই এবং প্রয়োজনও নেই। ইসলাম এমন একটি জীবনাদর্শ
যা সর্বাবস্থায় সর্বযুগের উপযোগী। এটা একটি পূর্ণাঙ্গ, সুন্দর ও উন্নততর জীবন ব্যবস্থা এবং উত্তম
আদর্শ। এর পর আর কোন আদর্শ ও জীবন ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই। কিয়ামত পর্যন্তমহানবী হযরত
মুহাম্মদ (স)-এর আনীত জীবন ব্যবস্থাই চালু থাকবে। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে :
وَ آخَ رِ ینَ مِ نْھُمْ لَمَّا یَلْحَ قُواْ بِھِ مْ وَ ھُوَ ٱلْعَزِ یزُ ٱلْحَكِیمُ
“এবং তাদের অন্যান্যদের জন্যও, যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী,
প্রজ্ঞাময়।” (সূরা আল-জুমুআহ : ৩)
অত্র আয়াতে রাসূল (স)-এর বিশ্বজনীন ও চিরন্তন নবুওয়াত এবং রিসালাতের কথাই বলা হয়েছে। এ
আয়াত দ্বারা এটাও প্রমাণিত হয় যে, তাঁর এ নবুওয়াত এবং রিসালাত পৃথিবীর এক প্রান্তথেকে অপর
প্রান্তপর্যন্তমানবগোষ্ঠীর জন্য এবং পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ততা বর্তমান থাকবে। সুতরাং অপর কোন নবী
বা রাসূলের আগমনের কোন সম্ভাবনাই থাকতে পারে না এবং কোন অবকাশও নেই।
হযরত মুহাম্মদ (স) যে সর্বশেষ নবী ছিলেন একথা আল-কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত হয়েছে। এ
প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেন:
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أ َبَآ أ َحَدٍ مِّن رِّ جَالِكُمْ وَ ل َـٰكِن رَّ سُولَ ٱلل َّھِ وَ خَاتَمَ ٱلنَّبِیِّینَ وَ كَانَ ٱلل َّھُ
ب ِكُلِّ شَيْ ءٍ عَلِیما ً
“মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নয়, বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ
সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।” (সূরা আল-আহযাব : ৪০)
বিদায় হজ্জে আরাফাত ময়দানে অবতীর্ণ আল-কুরআনের আয়াতটি ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর
সর্বশেষ নবী ও রাসূল হওয়ার সুষ্পষ্ট প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
ٱلْیَوْ مَ أ َكْمَ لْتُ لَكُمْ دِینَكُمْ وَ أ َتْمَ مْ تُ عَلَیْكُمْ نِعْمَ تِى وَ رَ ضِ یتُ لَكُمُ
ٱلأِ سْلاَمَ دِینا ً
“আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম
এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করালাম।” (সূরা আল-মায়িদা : ৩)
আল্লাহ তা’আলা তাঁর দীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন এবং বান্দাদের প্রতি তাঁর নিয়ামতরাজিও পরিপূর্ণ
করে দিয়েছেন। সুতরাং আর কোন নতুন দীনের আবির্ভাব বা নতুন কোন নবীর আগমন নিষ্প্রয়োজন।
এ আয়াতের আলোকে হযরত মুহাম্মদ (স) সর্বশেষ নবী এবং তাঁর কিতাবই সর্বশেষ আসমানী কিতাব।
এর পর আর কোন নবী-রাসূল আসবেন না এবং কোন আসমানী কিতাবও পৃথিবীতে অবতীর্ণ হবে না। যরত মুহাম্মদ (স) কে আল্লাহ তা’আলা এমন
কটি ধর্ম বা জীবনাদর্শ য় প্রেরণ করেছেন যে, নতুন কিছু সংযোজন বিয়োজন করার ব্যবস্থা ইসলাম এমন একটি জীবনাদর্শ যা সর্বাবস্থায় সর্বযুগের উপযোগী। হাদীসের মাধ্যমে খাতামুন নবুওয়াতের প্রমাণ
পবিত্র হাদীসের মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ (স)-এর খতমে নবুওয়াত প্রমাণিত। উদাহরণ স্বরূপ এখানে
কতিপয় হাদীসের উদ্ধৃতি প্রদান করা হল। হযরত মুহাম্মদ (স) বলেন-
أن مثلى ومثل الأنبیاء من قبلى كمنلى رجل بنى بیتا فأ
حسنھ وأجملھ الا موضع لبنة من زاویة من زواباه. فجعل
الناس یطو فونھ ویعجبون لھ ویقو لون ھلا وضعت ھذه
اللبنة؟ قال : فأنا اللبنة . وأنا خاتم النبیین .
“আমি ও আমার পূর্ববর্তীদের দৃষ্টান্তহলো এই যে, এক ব্যক্তি একটি প্রাসাদ নির্মাণ করলো এবং খুব
সুন্দর ও শোভনীয় করে সেটি সজ্জিত করলো। কিন্তুতার এক কোণে একটি ইটের স্থান ফাঁকা ছিল।
প্রাসাদটির চতুর্দিকে মানুষ ঘুরে ঘুরে তার সৌন্দর্যদেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলবে, এ স্থানে একটি ইট
রাখা হয়নি কেন? তিনি বললেন : আমিই সেই ইট এবং আমিই শেষ নবী। অর্থাৎ আমার আগমনের পর
নবুওয়াতের দালান পূর্ণতা লাভ করেছে। এখন এর মধ্যে এমন কোন শূন্য স্থান নেই যাকে পূর্ণ করার
জন্য আবার কোন নবীর প্রয়োজন হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)।
মুসনাদ ইমাম আহমদে বর্ণিত আছে :
ان رسول اللھ صلى اللھ علیھ وسلم قال : فضلت على
الأنبیاء بست، أعطیت جوامع الكلم ونصرت بالرعب
وأحلت لى الغنا ئم وجعلت لى الارض مسجدا وطھورا و
أرسلت الى الخلق كافة وختم بى النبییون .
“রাসূল (স) বলেন, ছয়টি বিষয়ে অন্যান্য নবীদের উপর আমাকে শ্রেষ্ঠত্বদান করা হয়েছে:
১. আমাকে পূর্ণ অর্থ ব্যঞ্জক সংক্ষিপ্ত কথা বলার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ২. শত্রæর অন্তরে ভয়-ভীতি
সৃষ্টির দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। ৩. গণীমতের অর্থ সম্পদ আমার জন্য হালাল করা হয়েছে।
৪. পৃথিবীর জমীনকে আমার জন্য মসজিদে পরিণত করা হয়েছে এবং মাটিকে পবিত্র করে দেওয়া
হয়েছে। ৫. সমগ্র দুনিয়ার জন্য আমাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ৬. আমার উপর
নবীদের আগমন শেষ করে দেওয়া হয়েছে।” (মুসলিম, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
তিরমিযী শরীফের হাদীসে বর্ণিত। রাসূল (স) বলেন,
ان الرسالة والنبوة قد انقطعت فلا رسول بعدى ولا نبى
“রিসালাত এবং নবুওয়াতের ধারাবাহিকতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমার পর আর কোন রাসূল এবং
নবী আসবেন না।” (তিরমিযী)
মুসনাদ দারেমীতে বর্ণিত। রাসূল (স) বলেন:
أنا قائد المر سلین ولا ضخروأنا خاتم النبیین ولا فخر
“আমি রাসূলগণের নেতা, এতে আমার গর্বের কিছু নেই, আমি সর্বশেষ নবী, এতেও আমার গর্বের কিছু
নেই।” (দারিমী)
বুখারী ও মুসলিম শরীফে আছে, রাসূল (স) বলেন:
أنا محمد أنا أحمد وأنا المحى ألذى یمحى بى الكفر وأنا
الحاشر الذى یحشر الناس على عقبى وأنا العاقب الذى لیس
بعده نبى .
“আমি মুহাম্মদ, আমি আহমদ। আমি বিলুপ্তকারী, আমার সাহায্যে বিলুপ্ত করা হবে। আমি
সমবেতকারী, আমার পরে লোকদের হাশরের ময়দানে সমবেত করা হবে। আমি সবার শেষে
আগমনকারী, যার পরে আর কোন নবী আসবেন না।” (বুখারী ও মুসলিম)
তিরিমিযী শরীফে বর্ণিত আছে। রাসূল (স) বলেন:
لو كان بعدى نبى لكان عمربن الخطاب
“আমার পরে যদি কোন নবী হতো, তা হলে উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) নবী হতো।” (তিরমিযী)
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূল (স) বলেন :
قال رسول اللھ صلى اللھ علیھ وسلم لعلى أنت منى بمنز لة
ھارون من موسى الا أنھ لا نبى بعدى
“রাসূল (স) আলী (রা)-কে বলেন, “আমার সঙ্গে তোমার সম্পর্ক মূসার সঙ্গে হারুনের সম্পর্কের
মতো। কিন্তু আমার পরে আর কোন ব্যক্তি নবী হবেন না।” (বুখারী ও মুসলিম)
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)-এর নিকট থেকে সাহাবা কিরাম হাদীসগুলো বর্ণনা করেছেন এবং বহু
মুহাদ্দিস অত্যন্তশক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য সনদসহ উল্লেখ করেছেন। এগুলো অধ্যয়ন করার পর
স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি শেষ নবী। তাঁর পর কোন নবী আসবেন না। নবুওয়াতের
ধারাবাহিকতা তাঁর উপর খতম হয়ে গেছে এবং তাঁর পরে যে ব্যক্তি নবী দাবি করবে সে হবে দাজ্জাল
এবং কাজ্জাব। আল-কুরআনে খাতামুন নাবিয়ীন শব্দের চাইতে বেশী শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য এবং
প্রামাণ্য ব্যাখ্যা আর কি হতে পারে? তাছাড়া রাসূল্লাহর (স) বাণীই এখানে প্রকৃত সনদ এবং প্রমাণ।
সাহাবা কিরামের ইজমা দ্বারা খাতামুন নবুওয়াত-এর প্রমাণ
পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহর পর সাহাবায়ে কিরামের ইজমা ইসলামী শরীআতের তৃতীয় মূল ভিত্তি
হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। হযরত মুহাম্মদ (স) যে শেষ নবী ও রাসূল এবং তার উপর যে নবুওয়াত খতম
হয়েছে তা ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। সমস্তনির্ভরযোগ্য ঐতিহিাসিক বর্ণনা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে,
রাসূলুল্লাহ (স)-এর ইন্তেকালের অব্যবহিত পরেই যে সকল মিথ্যবাদী লোক নবুওয়াতের দাবি করে এবং
যারা তাদের নবুওয়াত স্বীকার করে নেয় তাদের সকলের বিরুদ্ধে সাহাবায়ে কিরাম সম্মিলিতভাবে যুদ্ধ
করেছিলেন। এ সম্পর্কে মূসাইলামা বিন কাযযাবের ব্যাপারটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সে রাসূল
(স)-এর নবুওয়াত অস্বীকার করেনি বরং সে দাবি করেছিল যে, রাসূলুল্লাহ (স)-এর নবুওয়াতে তাকেও
অংশীদার করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (স)-এর ইন্তেকালের পূর্বে সে তাঁর নিকট যে চিঠি পাঠিয়েছিল তা
ছিল নিম্নরূপ:
“আল্লাহর রাসূল মূসায়লামার পক্ষ থেকে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (স)-এর নিকট প্রেরণ করা হল।
আপনার উপর শান্তিবর্ষিত হোক। আপনি জেনে রাখুন, আমাকে আপনার সাথে নবুওয়াতের কাজে
শরীক করা হয়েছে।”
এভাবে রিসালাতে মুহাম্মদীকে স্পষ্টভাবে স্বীকার করে নেওয়ার পরও তাকে ইসলাম বহির্ভুত বলে ঘোষণা
করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়েছে। সাহাবায়ে কিরামের ইজমার দ্বারা হযরত মুহাম্মদ
(স)-এর মাধ্যমে নবুওয়াত পরিসমাপ্তি হয়েছে বলে প্রমাণিত।
তাছাড়া হিজরী প্রথম শতক থেকে নিয়ে আজ পর্যন্তপ্রত্যেক যুগের এবং সমগ্র মুসলিম জাহানের প্রত্যেক
এলাকায় আলিম সমাজ এ ব্যাপারে একমত যে, হযরত মুহাম্মদ (স)-ই সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তাঁর
পরে আর কোন নবী বা রাসূল নেই।
নবী ও রাসূল প্রেরণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, যুগোপযোগী একটি পরিপূর্ণও সুন্দরতম জীবনাদর্শ
মানব জাতির সামনে উপস্থাপন করা। মহানবী (স)-এর আনীত আল-কুরআন তথা ইসলামী
জীবন ব্যবস্থা কিয়ামত পর্যন্তযেমন সকল যুগের উপযোগী, তেমনি একটি পরিপূর্ণও সুন্দরতম
জীবনাদর্শ। তাই বিকল্প কোন জীবনাদর্শেরও প্রয়োজন নেই এবং নবীরও প্রয়োজন নেই।
 সঠিক উত্তরের পাশে টিক ( চিহ্ন দিন১. ‘খাতামুল ইনা’ শব্দের অর্থ হচ্ছেক. পাত্রের মুখ বন্ধ করে দেওয়া;
খ. পাত্রের মুখে সীলমোহর লাগিয়ে দেওয়া;
গ. পাত্রকে উপুর করে রাখা;
ঘ. পাত্রের মুখে কোন জিনিস দিয়ে চাপা দেওয়া।
২. খাতামুন নবুওয়াত শব্দের অর্থ হলোক. হযরত মুহাম্মদ (স) সর্বশেষ নবী;
খ. হযরত মুহাম্মদ (স) সর্বশ্রেষ্ঠ নবী;
গ. হযরত মুহাম্মদ (স)-এর উপর নবুওয়াতের স্বীকারোক্তি;
ঘ. নবুওয়াতের পরিসমাপ্তি।
৩. ‘লিসানুল আরাব’ একটিক. তাফসীরের কিতাব;
খ. হাদীসের কিতাব;
গ. অভিধান গ্রন্থ;
ঘ. ইসলামের আইনের কিতাব।
৪. রিসালাত ও নবুওয়াত দু’টিক. একই অর্থ বিশিষ্ট শব্দ;
খ. ভিন্নার্থক শব্দ;
গ. বিপরীত অর্থবোধক শব্দ;
ঘ. প্রায় সমার্থবোধক শব্দ।
৫. পৃথিবীর দ্বিতীয় মসজিদ কোনটি?
ক. কাবা শরীফ;
খ. মসজিদে নববী;
গ. মসজিদুল আকসা;
ঘ. মসজিদে কুবা।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. ‘হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন খাতাম্মল আম্বিয়া’ কথাটি বুঝিয়ে বলুন।
২. খাতামুন নবুওয়াত শব্দটির আভিধানিক অর্থ উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করুন।
৩. আল-কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে খাতামুন নবুওয়াত প্রমাণ করুন।
৪. হাদীসের আলোকে খাতামুন নবুওয়াত প্রমাণ করুন।
৫. ইজমা বলতে কী বুঝেন? ইজমা দ্বারা কী খাতামুন নবুওয়াত প্রমাণ করা যায়? বুঝিয়ে লিখুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. খাতামুন নবুওয়াত বলতে কী বুঝেন? ‘হযরত মুহাম্মদ (স) সর্বশেষ নবী ও রাসূল ছিলেন’
আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]