ফিক্হ শাস্ত্রের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখুন।

ফিক্হ শাস্ত্রের স¤প্রসারণ
ফিক্হ-এর মতো অন্য কোন ইলম মুসলমানদের নিকট অধিক গুরুত্ব লাভ করেনি। রাসূলুল্লাহ (স)-এর
সময় থেকে শুরু করে প্রত্যেক যুগে ইলমে ফিক্হর ওপর অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। রাসূল (স)
তাঁর সাহাবীদের ফিক্হ শিক্ষা দিতেন এবং তাঁদেরকে গবেষণা ও ইজতিহাদের প্রশিক্ষণ দিতেন।
রাসূলের (স) যুগে ছয়জন সাহাবী ফাতওয়া দিতেন। তাঁর ইন্তিকালের পর সাহাবীগণ ঐ ৬ জনের নিকট
ফিক্হ শিক্ষা করতে থাকেন। সাহাবী ও তাবিঈদের মধ্যে তাদের বহু অনুসারী ছিলেন, যারা ফাতওয়ার
কাজের জন্য নিয়োজিত ছিলেন।
মদীনা নগরী ওহী-এর প্রাণকেন্দ্র ছিল এবং তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান (রা) পর্যন্তবেশির ভাগ
সম্মানিত সাহাবীদের আবাসস্থল ছিল। পরবর্তীতে মদীনায় অবস্থানরত তাবিঈগণ সাহাবীদের থেকে
ইলমে ফিক্হ ও হাদীস শিক্ষা করেন।
মদীনায় ৭ জন ফকীহর অত্যন্তমর্যাদা ছিল। পরবর্তীকালে মদীনায় অবস্থানরত ইমাম মালিকের (র)
উস্তাদগণ তাদের (মদীনার ফকীহগণ) থেকে ফিক্হ শিক্ষা করেন। ইমাম মালিক তা একত্রিত করে
মানুষের মধ্যে প্রচার করতে থাকেন। আর এভাবেই তিনি মালিকী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে
পরিচিতি লাভ করেন।
এছাড়া খলীফা উমর (রা) কুফা নগরী নির্মাণ করেন এবং সেখানে বহু আরবীয় পÐিতদের আবাসস্থল
গড়ে তোলেন। সেখানকার সাধারণ মানুষকে ফিক্হ শিক্ষাদানের জন্য আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা)
প্রেরণ করেন। পরবর্তীকালে কুফায় বহু বিশিষ্ট সাহাবী তাদের আবাসস্থল গড়ে তোলেন। যাদের সংখ্যা
ছিল এক হাজার চারশত। হযরত আলী (রা) তাঁর খেলাফতকালে তথায় মুসলিম বিশ্বের রাজধানী স্থাপন
করেন। ঐ সাহাবীগণ কুফা নগরীর সর্বত্র তাঁদের ইলম প্রচার করেন। এতে করে তাবিঈদের মধ্যে
তাদের বহু অনুসারী সৃষ্টি হয়। ইবরাহিম আন-নাখয়ী তাদের বিক্ষিপ্ত ইলম একত্রিত করেন।
ইমাম আবু হানীফা (র)-এ সকল সাহাবী ও তাঁদের অনুসারীদের ইলমসমূহ একত্র করে বহু পরীক্ষানিরীক্ষার পর তা সংরক্ষণ, সংকলন এবং প্রচার করেন। এভাবে প্রচার ও প্রসার দ্বারা তাঁর ফিক্হ
মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। আর তিনি হানাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিতি লাভ
করেন। ইমাম আবু হানীফা (র) তাঁর ছাত্রদের নিয়ে একটি ফিক্হ বোর্ড গঠন করেন। যে বোর্ডের
ফকিহর সংখ্যা ছিল ৪০ জন। তাঁরা প্রক্যেতইে ফিক্হ, হাদীস, উলুমুল কুরআন ও আরবি ভাষার উপর
মহাপÐিত ছিলেন।
অনুরূপভাবে ইমাম শাফিঈ (র) মক্কার পÐিতদের থেকে জ্ঞান অর্জন করেন। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন
মুসলিম ইবনে খালিদ-যিনি ইবনে জুবায়ের ও আতা ইবনে আবি রাবাহ থেকে ইলম শিখেন। তাঁরা
ছিলেন ইবনে আবাসের (রা) শিষ্য। অতপর ইমাম শাফিঈর ফিক্হ প্রচার ও প্রসার লাভ করে এবং
তিনি শাফিঈ মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
এরপর ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (র) হাম্বলী মাযহাবের ইমাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। অবশ্য
তিনি তাঁর গবেষণাকৃত মাসআলাগুলো সংকলন করেননি এবং তাঁর ছাত্রদেরকেও এগুলো সংকলনের
নির্দেশ দেননি। কারণ একই মাসআলায় তাঁর একাধিক অভিমতো ছিল। পরবর্তীতে তাঁর অনুসারীদের
রাসূলের (স) যুগে ছয়জন সাহাবী ফাতওয়া দিতেন। তাঁর ইন্তিকালের পর সাহাবীগণ ঐ ছয়জনের নিকট ফিক্হ শিক্ষা করতে থাকেন। মুখ থেকে তাঁর মাযহাবের মাসআলা বা রিওয়াআতগুলো সংকলিত হয়।
ফিক্হ শাস্ত্রের গুরুত্ব
ইসলামে ফিক্হ শাস্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। ফিক্হ ইসলামের মূল বা নির্যাস এবং ধর্মের বাস্তব দিক,
যাকে ইমাম আবু হানীফা (র) ফিক্হে আকবার বলেছেন।
ফিক্হর দ্বারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (স) নির্দেশ মোতাবেক সঠিক ভাবে ইবাদত করা যায়।
মুয়ামালাত বা লেনদেন সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দেওয়া যায়, মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বস্থাপন করা যায়
এবং এর দ্বারা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ফিক্হর দ্বারাই তাদের মধ্যকার বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত
হয়, ইসলামী ভাবধারায় পরিবার ও সমাজ গঠন করা যায়। পরিবার ও সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে
যেমন বিয়ে, তালাক, মিরাস, অসিয়াত তথা পরিবার ও সমাজ জীবনের সকল বিষয় সম্পর্কে অবহিতো
হওয়া যায়।
রাসূল (স) তাঁর সাহাবীগণকে ফিক্হ শিক্ষা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করতেন। কোন লোক ইসলামে দীক্ষিত
হলে তিনি ঐ ব্যক্তিকে অজু গোসল, নামায ও কুরআন তিলাওয়াতসহ যাবতীয় ইসলামী বিধি-বিধান
শিক্ষা দেয়ার জন্য সাহাবীদের হাতে তুলে দিতেন অথবা নিজেই এগুলো শিক্ষা দিতেন। ফিক্হ এর
দ্বারা ইবাদত তথা- অযু, গোসল, নামায, রোযা হজ্ব, যাকাত প্রভৃতি সকল প্রকার ইবাদত সম্পর্কে
অবহিতো হওয়া যায়।
ফিক্হই মানুষকে সঠিকভাবে ইবাদত করার পথদির্নেশনা দেয়। ত্বাহারাত, নামায, রোযা, হজ্ব ও
যাকাত ইত্যাদির খুটিনাটি নিয়মাবলির বর্ণনা ফিক্হ এর মাধ্যমেই পাওয়া যায়। অনুরূপভাবে লেনদেন
সম্পর্কেও ফিক্হ-এর মাধ্যমে অবহিতো হওয়া যায়।
রাসূল (স) বলেন : الدین فى یفقھھ خیرا بھ اللھ یرد من “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে
দীনের গভীর জ্ঞান দান করেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
ফিক্হ শাস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা
রাসূল (স)-এর যুগে ফিক্হ শাস্ত্রের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ছিল না। আর এর প্রয়োজনও ছিল না। কেননা সে
সময় যখনই কোন সমস্যার উদ্ভব হতো, সাথে সাথে ঐ ব্যাপারে সরাসরি কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ
হতো অথবা আল্লাহর ইঙ্গিতে রাসূল (স) তার সমাধান পেশ করতেন। আর সাহাবীগণ তা মেনে
চলতেন। কিন্তু রাসূল (স)-এর ইন্তিকালের পর সাহাবীদের আর সে সুযোগ থাকল না। তখন কোন
সমস্যা সৃষ্টি হলে সে বিষয়ের সমাধান দিতে তাঁদের নিজেদেরই ইজতিহাদ (গবেষণা) করতে হতো।
সাহাবী ও তাবিঈদের যুগে ইসলামী রাষ্ট্রের সীমা আরব বিশ্বের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। রোম ও পারস্য
সাম্রাজ্য মুসলমানদের করতলগত হয়। ইউরোপে স্পেন পর্যন্ত, আফ্রিকায় মিশর ও উত্তর আফ্রিকা পর্যন্ত,
এশিয়ায় তুরস্ক ও সিন্ধু পর্যন্তইসলাম বিস্তার লাভ করে। ফলে ইসলাম নতুন নতুন সভ্যতা, সংস্কৃতি ও
জীবন-জীবিকার সংস্পর্শে আসে। ইসলামী সমাজে নিত্য নতুন সমস্যা ও সংকটের আবির্ভাব ঘটতে
থাকে যার সমাধান কুরআন ও হাদীসে সরাসরিভাবে উল্লেখ নেই। ফিক্হবিদগণ গবেষণার মাধ্যমে
এসবের সামাধান দিতেন।
অপরপক্ষে তখন মুসলমানদের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। খিলাফতে
রাশিদার শেষের দিকেই মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক ও আকীদাগত কোন্দল আরম্ভ হয়। আহলুস
সুন্নাত ওয়াল জামাআতের পাশপাশি শিয়া, খারেজী, রাফেযী, মুতাযিলা ইত্যাদি বাতিল স¤প্রদায়গুলোর
অভ্যুদয় ঘটে। তারা সর্ব সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তিও গোলযোগ সৃষ্টির প্রয়াস পায়। এমন কি বানু
উমাইয়া যুগের মাঝামাঝি সময় সত্যপন্থী মুসলিম আলিমগণও দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। যা নিম্নরূপক. আহলুল হাদীস : যারা শুধু কুরআন ও সুন্নাহর প্রকাশ্য বর্ণনানুযায়ী আমল করা জরুরি মনে করেন
এবং রায়, গবেষণা ও কিয়াসের সাহায্যে মাসআলার উপর চিন্তা গবেষণা করা থেকে বিরত
থাকেন। এদের পূর্বসূরী সাহাবীগণ ছিলেন হযরত আব্বাস, যুবায়ের, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ও
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবন আস (রা) প্রমুখ। হিজাযবাসীগণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাসআলা ও
আহকাম প্রণয়নে নয় শুধু হাসীদের উপর নির্ভর করতেন। আর হিজাযই ছিল হাদীসের মূল
ফিক্হ্র দ্বারাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (স) নির্দেশ
মোতাবেক সঠিক ভাবে ইবাদত করা যায়।
মুয়ামালাত বা লেনদেন সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দেওয়া যায়, মানুষের মধ্যে
পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করা যায় এবং এর দ্বারা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রস্থল। হিজাযবাসীগণ মনে করতেন, সকল বিষয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য হাদীসই যথেষ্ট,
যুক্তি বা কিয়াসের প্রয়োজন নেই।
খ. আহলুর রায় (যুক্তিবাদী) : তারা কুরআন ও হাদীসের জ্ঞানের সাথে বুদ্ধিবৃত্তি (প্রজ্ঞা) প্রয়োগকে
জরুরি মনে করেন। আহলে হাদীসগণ ভবিষ্যতের সম্ভাব্য মাসআলাগুলো সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা
করতে পছন্দ করতেন না। পক্ষান্তরে যুক্তিবাদীগণ সম্ভাব্য মাসআলাগুলোর ব্যাপারেও
চিন্তা ভাবনা করতেন। পরবর্তী যুগে ইব্রাহীম আন-নাখয়ী ও ইমাম আবু হানীফার আগমন ঘটে।
তাঁদের মতে শরীআতের সকল আহকাম যুক্তি সম্বলিত, যার মধ্যে মানুষের মঙ্গল নিহিতো আছে।
তাঁরা প্রতিটি বিধানের কারণ ও তাঁর উসূল বা মূলনীতি বের করতেন। যার উপর ভিত্তি করে তারা
নতুন নতুন মাসআলা প্রণয়ন করতেন। এভাবে ইরাক নগরী আহলুর রায় বা যুক্তিবাদীদের
কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়।
এর ফলে আহলুল হাদীস ও আহলুর রায় এর মধ্যে সামান্য বিরোধ পরিলক্ষিত হয়। তবে এ
মতোবিরোধের বেলায় শিয়া ও খারেজীদের মতো তাদের মধ্য কোন প্রকার বিদআতের অনুপ্রবেশ
ঘটেনি।
প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের ইমামগণ ইসলামী শরীআত প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একই পরিবারভুক্ত লোকদের
মতো ছিলেন। তাদের মধ্যে কোন প্রকার বৈরিভাব ছিল না। তাঁরা একে অপরের মতোামতো গ্রহণ
করতেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের গবেষণা লব্ধ মাসআলার প্রায় দুই তৃতীয়াংশের মধ্যে ঐকমত্যো
ছিল। বাকী এক তৃতীয়াংশের মধ্যে কারো কারো কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করার ফলে এবং
ফাতওয়ার স্থানকাল পাত্র ভেদে কিছুটা মতো বিরোধ পরিলক্ষিত হয়।
এছাড়া যে সব মাসআলার ক্ষেত্রে তাঁদের পরস্পরের মধ্যে মতোবিরোধ রয়েছে তার কারণ হল,
কোন মাসআলায় কারো নিকট সে দলীলটি অধিক গ্রহণয্যো, যার ব্যাপারে অন্য ইমামের নিকট
সংশয় ছিল। আবার কারো নিকট কোন মাসআলা সহজতর মনে হয়েছে, যা অন্যের কাছে কঠিন
মনে হয়েছে।
ইমামদের মধ্যে মতোবিরোধের কারণ
প্রকৃতপক্ষে আহলুর রায়গণ কখনো সহীহ হাদিসের উপর রায়কে প্রাধান্য দেননি। এ সম্পর্কেইমাম
শাফিঈর উক্তি প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, মুসলমানগণ এ কথার উপর ঐকমত্যো পোষণ করেছেন
যে, যার নিকট রাসূলের (স) কোন সহীহ হাদীস রয়েছে তাঁর পক্ষে কখনো রাসূলের (স) হাদীস বাদ
দিয়ে কারো কথা গ্রহণ করা অসম্ভব। আর এটা কল্পনাও করা যায় না যে, তারা রাসূলের (স) হাদীসের
বিরোধিতা করবে। তবে যদি কাউকে দেখা যায় আপাত দৃষ্টিতে সে রাসূলের (স) কোন হাদীস ছেড়ে
দিয়েছেন, তাহলে এর কারণ হয়ত তার নিকট ঐ হাদীসটি পৌঁছেনি, অথবা তার নিকট ঐ হাদীস
পৌঁছেছে কিন্তু তার বর্ণনাকারী দুর্বল বলে প্রমাণিত। যদিও ঐ হাদীস অন্যদের নিকট সহীহ বলে
প্রমাণিত অথবা অন্যদের নিকট যে হাদীস পৌঁছেছে তার নিকট ঐ হাদীসের বিপরীতে হাদীস পৌঁছেছে।
এখানে আমরা একটি উদাহরণ বর্ণনা করছি, যাতে একথা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, উভয় দলই (ফকীহ ও
আহলুল হাদীস) প্রকৃত পক্ষে হাদীসের উপরই আমল করেছেন। তবে ইজতিহাদের বেলায় তাদের
প্রত্যেকের অভিমতো ভিন্নরূপ। যাদের নিকট যে হাদীস সহীহ বলে প্রমাণিত হয়েছে, তারা সেই
হাদীসের উপরই আমল করেছেন। উদাহরণটি নিম্নরূপ:
ইমাম আবুহানীফা ও ইমাম আওযায়ী (র) একদা মক্কায় মিলিত হন। তখন ইমাম আওযায়ী (র) ইমাম
আবু হানীফাকে বললেন, আপনারা নামাযের রুকুতে ও রুকু হতে মাথা উত্তোলনের সময় হাত উঠান না
কেন? ইমাম আবু হানীফা উত্তরে বলরেন, এ দু’অবস্থায় হাত উঠান সম্পর্কে রাসূল (স) হতে কোন
সহীহ হাদীস নেই। তখন আওযায়ী (র) বললেন, আপনি কি করে একথা বললেন? অথচ আমার নিকট
যুহরী, ইমাম সালিম ইবন ওমর এর সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেন যে, “রাসূল (স) নামাযের শুরুতে
তাকবীরে তাহরীমার সময়, রুকুতে যাওয়ার সময় এবং রুকু হতে মাথা উত্তোলনের সময় হাত
উঠাতেন।”
ইমাম আওযায়ী (র) আরও বললেন, আমার হাদীসের সনদে রয়েছেন ইমাম যুহরী, সালিম ও ইবনু
চার মাযহাবের ইমামগণ ইসলামী শরীআত
প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একই পরিবারভুক্ত লোকদের
মতো ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কোন প্রকার বৈরিভাব ছিল না। তাঁরা
একে অপরের মতামত গ্রহণ করতেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের গবেষণা লব্ধ মাসআলার প্রায় দুই
তৃতীয়াংশের মধ্যে ঐকমত্য ছিল।
ওমর। পক্ষান্তরে আপনার হাদীসের সনদে রয়েছেন, হাম্মাদ, ইব্রাহীম, আলকামা ও ইবনে মাসউদ।
এখন কার সনদ উত্তম? তখন ইমাম আবু হানীফা বললেন, হাম্মাদ, যুহরী অপেক্ষা এবং ইব্রাহীম,
সালিম অপেক্ষা বড় ফকীহ। এছাড়া আলকামা ইলম ও ফিকহের দিক থেকে ইবনে ওমর অপেক্ষা কোন
অংশে কম নন। যদিও ইবনে ওমর রাসূলের (স) সাহাবী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। আর
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের তো কোন কথাই নেই। তিনি রাসূলের (স) যুগ হতেই বিশিষ্ট ফকীহ হিসেবে
খ্যাত ছিলেন। তখন আওযায়ী চুপ করে গেলেন।
অতএব দেখা যাচ্ছে, হিজাযবাসী ও ইরাকবাসীগণ উভয়ই হাদীসকে প্রাধান্য দিতেন। তবে কোন হাদীস
এক দলের নিকট সহীহ বলে প্রমাণিত হলে, তা অন্য দলের নিকট সহীহ বলে গণ্য হতো না। ফলে
বিভিন্ন মাসআলায় ও ফাতওয়ায় তাদের পরস্পরের মধ্যে সামান্য মতোবিরোধ পরিলক্ষিত হয়। এ জন্য আমরা কোন পক্ষকে দায়ী করতে পারি না।
 সঠিক উত্তরের পাশে টিক ( চিহ্ন দিন১. আল্লাহ যার মঙ্গল কামনা করেন তাকে তিনি
ক. ধন-সম্পদ দেন; খ. অধিক সন্তান দেন;
গ. দ্বীনের জ্ঞান দেন; ঘ. সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করেন।
২. রাসূলের যুগে কতজন সাহাবী ফাতওয়া দিতেন?
ক. ২০ জন; খ. ৫০ জন;
গ. কেউ দিতেন না; ঘ. ৬ জন।
৩. প্রসিদ্ধ চার ইমাম ইসলামী শরীয়াতের প্রচার ও প্রসারেক. একই পরিবারভুক্ত ছিলেন; খ. তাঁদের মধ্যে চরম মতোবিরোধ ছিল;
গ. একে অপরের শত্রæ ছিলেন; ঘ. তাঁদের মধ্যে মারামরি লেগে থাকত।
৪. ইমাম আবু হানীফার গবেষণা বোর্ডে কতজন ফকীহ ছিলেন?
ক. ৬০ জন; খ. ৯০ জন;
গ. ৩০ জন; ঘ. ৪০ জন।
৫. আহলুর রায়-এর কেন্দ্রস্থল ছিলক. মদিনা; খ. মক্কা;
গ. ইরাক; ঘ. ইয়ামান।
সংক্ষিপ্ত রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. ইলমে ফিক্হ-এর গুরুত্ব আলোচনা করুন।
২. ফিক্হ শাস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা লিখুন।
৩. আহলুর রায় -এর গবেষণা সম্পর্কে লিখুন।
৪. আহলুল হাদীসের মাসআলা প্রদান সম্পর্কে বর্ণনা দিন।
৫. আহলুর রায় ও আহলুল হাদীসের মতোবিরোধ সম্পর্কে লিখুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. ফিক্হ শাস্ত্রের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখুন।
২. চার ইমামের মাসআলা গবেষণা সম্পর্কে লিখুন।
৩. আহলুর রায় ও আহলুল হাদীসের মধ্যে মতোবিরোধ ছিল কি? বিস্তারিত লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]