অনর্থক নয় - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়---আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি 

বেয়ারা পাঠিয়ে কারা টাকা তোলে ব্যঙ্ক থেকে?
আমি তো নিজের সইটা এখনো চিনি না
বিষম টাকার অভাব!নেই। শুধু হৃৎপিন্ড হাওয়া টেনে নেয়ে
হাসি কুলকুচো করি। মাথায় মুকুট নেই বলে
কেউ ধার দিতেও চায় না।
কিছু টাকা জমা আছে ব্লাড ব্যাঙ্কে। সামান্য।
কাঁটা ছাড়ানো মাছের মতন
গদ্য লিখলে ক্যাশ আসে। পারি না। কবিতায় দশ টাকা
তাই বা মন্দ কি, কত দীর্ঘ দিন বন্ধুদেরটেবিলে বসিনি।
কতই তো দিলে বিধি- চোখ, নাক, হাত, ডিগ্রি, জিভ, ঘোরাঘুরি
কয়েকখানা বড় সাইজ উপন্যাস শেষ করার সামর্থ দিলে না?
শিল্পের জননী নাকি দুঃখ? সর্বনাশ, আমার তো কোনো দুঃখ নেই।
খুব গোপনে জানাচ্ছি
(একমাত্র টাকা কিংবা দুঃখ না-থাকার-দুঃখ যদি গণ্য হয়!)
কে কোথায় পায়নি প্রেম, এর সঙ্গী ভোগ করছে ওর সন্ধেবেলা
এসব চমৎকার লাগে।
কে যেন আমায় কথা দিয়েছিল! কথা সাঁতরে গেছে অন্ধকারে-
ভয়ঙ্কর জানলা খুলে রাত দুটোয় এক ঝলক আলো এসে পড়ে
মাঝে মাঝে চোখে মুখে। অমনি চেঁচিয়ে উঠি উল্লাসে মুখ তুলেঃ
বিশ্বাসঘাতিনী ভাগ্যে হয়েছিলে নারী, তাই বেঁচে থাকা এত রোমাঞ্চের
নেশাফেশা কিছু নেই, দুঃখ নেই, গোপনে চুপচাপ বাঁচতে চাই
তাও কত শক্ত দেখেছি, চারবেলা অদ্ভুত চাকরি, ঘুমহীন চোখে
কবিতার আরাধনা
কেন এই আরাধনা? ওভারটাইম দশা টাকা?
ছোট ছোট ঝাল লঙ্কা কিংবা ঠিক টিনের চিরুনির মতো রেদে
পঞ্চাশটা কাবুলিকে স্বপ্ন দেখে আজ দুপুরে চমকে গেছি ট্রামে।
কোর্বন স্ট্রীটের মোড়ে বুড়ো দরবেশ চাইলো অমরত্ব খুবই আন্তরিক
কপালে কুষ্ঠের কাদা। তিনটে নয়া পয়সা দিয়ে মানুষের মতো অভিমান
সংকেতবিহীন কন্ঠে জানালুমঃ
যদি রাস্তা চিনতে পারো, যাও হে অনন্তধামে সন্ধের আগেই
ঈশ্বরের পাশে একটি তোমার জন্যেই খালি আসন রয়েছে আমি জানি
পরমহূর্তেই আমি পামের পাগলীর কাছে হাত পেতে দাঁড়িয়ে-
তিনটে পয়সা দাও ভাই আজ আমাকে
গাড়ি ভাড়া নেই বহুদূরে যেতে হবে।
মায়ের তোরঙ্গ থেকে সিঁদুরের গুড়ো ঝেড়ে আজও
সম্রাট পঞ্চম জর্জ কাটামুন্ডে সহাস্যবয়াস
যাও মাছের বাজারে ইয়োর ম্যাজিস্টি , পুঁইশাক, সিগারেট, কুমড়োয়
দেখি কতো তোমার মুরোদ! সব ম্যাজিক ভুলে গেছি-
একত্রিশ হারিখে দেখছি অ্যালয়ের কুশব্দ ইয়ার্কি
এখানে ওখানে নদী- কালো জল, প্রত্যহ স্নান সেরে বহু পবিত্র গন্ডার
চৌরঙ্গীর চতুর্দিকে হুটোপুটি করে- হাসে, মেয়েদের খোলা তলপেটে
সুড়সুড়ি দেয় কিংবা ঠোঁট চাটে, নুন ঝাল মিশিয়ে
প্রথম শীতের এই মনোরম সন্ধ্যাগুলি কাঁটা চামচে দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে
সুস্বাদে চিবিয়ে খায়। সমস্ত রাস্তাই আজ ভিড়ে ভর্তি ভিড়ে
ভর্তি, অসম্ভব, আমি হঠাৎ কোথায় আজ হারালুম আমার নিজস্ব
গোপন প্রস্থান পথ- এ দুর্দিনে ফটকার বাজারে!



FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]