বিপরীত বিরোধিতা কাকে বলে? কোন কোন্ বচনের মধ্যে বিপরীত বিরোধিতা রয়েছে?

বচনের বিরোধিতা
যুক্তিবিদ্যা বিভিন্ন ধরনের বচনের সম্ভাব্য স¤পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। বচনের বিরোধিতাও বচনের
এক ধরনের স¤পর্ক। এই ধরনের স¤পর্ক বচনের মধ্যে বর্তমান থাকে যখন আদর্শ আকারের
শর্তনিরপেক্ষ বচন শুধু গুণ বা পরিমাণ কিংবা গুণ ও পরিমাণ উভয় দিক থেকে একে অপর থেকে ভিন্ন
হয়। তাহলে আমরা বলতে পারি যদি দু’টি আদর্শ আকারের শর্তনিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ
এক হয় এবং বচন দু’টি যদি হয় গুণের দিক থেকে না হয় পরিমাণের দিক থেকে, না হয় গুণ-পরিমাণ
উভয় দিক থেকে ভিন্ন হয় তাহলে তাদের মধ্যে যে স¤পর্কের সৃষ্টি হয় তাকে বচনের বিরোধিতা বলে। যেমন
‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’
‘কোন মানুষ নয় মরণশীল’।
এ দু’টি বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় এক এবং এদের মধ্যে গুণের দিক থেকে পার্থক্য আছে বলে এদের
মধ্যে স¤পর্ক আছে। এই স¤পর্ক হল বিরোধিতার স¤পর্ক। কিন্তু দু’টি বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় ভিন্ন
হলে এদের মধ্যে কোন স¤পর্ক থাকবে না। যেমন
‘সকল মানুষ হয় জ্ঞানী’
‘কোন ছাত্র নয় সৎ’।
এই বচন দু’টির মধ্যে কোন স¤পর্ক নেই।
বচনের বিরোধিতার যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা থেকে আমরা প্রথমত তিন ধরনের বিরোধিতা পাই
১। ভিন্ন গুণস¤পন্ন দু’টি বচনের বিরোধিতা।
২। ভিন্ন পরিমাণস¤পন্ন দু’টি বচনের বিরোধিতা।
৩। গুণ ও পরিমাণ উভয় দিক থেকে ভিন্ন দু’টি বচনের বিরোধিতা।
এদের মধ্যে ভিন্ন গুণবিশিষ্ট দুটি বচনের মধ্যে যে বিরোধিতা তা আবার সার্বিক বচনের ক্ষেত্রে হতে
পারে আবার দু’টি বিশেষ বচনের ক্ষেত্রে হতে পারে। সুতরাং আমরা মোট চার রকমের বিরোধিতার
স¤পর্ক দেখতে পাই
১। একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত দু’টি সার্বিক বচন যদি শুধু গুণের দিক থেকে ভিন্ন হয় অর্থাৎ একটি
সদর্থক ও অপরটি নঞর্থক হয় তাহলে বচন দু’টির স¤পর্ককে বলা হয় ‘বিপরীত বিরোধিতা’।
অতএব একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত অ এবং ঊ বচনের স¤পর্ককে বলা হবে বিপরীত বিরোধিতা। যেমন
‘সকল মানুষ হয় সাহসী’ অ
‘কোন মানুষ নয় সাহসী’ ঊ
এ দু’টি বচন একসাথে সত্য হতে পারে না কিন্তু একসাথে মিথ্যা হতে পারে।
২। একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত দু’টি বিশেষ বচন যদি শুধু গুণের দিক থেকে ভিন্ন হয় তাহলে তাদের
স¤পর্ককে বলা হয় ‘অধীন-বিপরীত বিরোধিতা’। অতএব একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত ও ও ঙ
বচনের স¤পর্ককে বলা হবে ‘অধীন বিপরীত বিরোধিতা’। যেমন
‘কোন কোন মানুষ হয় সাহসী’ ও
‘কোন কোন মানুষ নয় সাহসী’ ঙ
এ দু’টি বচন অর্থাৎ অধীন বিপরীত বিরোধিতাযুক্ত দু’টি বচন একসাথে মিথ্যা হতে পারে না কিন্তু
উভয়ে একসাথে সত্য হতে পারে।
৩। একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত দু’টি বচন যদি গুণ ও পরিমাণ উভয় দিক থেকে ভিন্ন হয় অর্থাৎ একটি
বচন যদি সার্বিক সদর্থক এবং অন্যটি বিশেষ নঞর্থক কিংবা একটি সার্বিক নঞর্থক এবং অন্যটি
বিশেষ সদর্থক হয় তাহলে তাদের স¤পর্ককে বলা হয় ‘বিরুদ্ধ বিরোধিতা’। সুতরাং একই উদ্দেশ্য
ও বিধেয়যুক্ত ঊ ও ও এবং অ ও ঙ বচনের স¤পর্কের নাম হল ‘বিরুদ্ধ বিরোধিতা’। এদেরকে পূর্ণ
বিরোধিতাও বলা হয়। যেমন
‘কোন মানুষ নয় সাহসী’ ঊ
‘কোন কোন মানুষ হয় সাহসী’ ও
‘সকল মানুষ হয় সাহসী’ অ
‘কোন কোন মানুষ নয় সাহসী’ ঙ
বিরুদ্ধ বিরোধিতার স¤পর্কযুক্ত দু’টি বচন একসাথে সত্য হতে পারে না আবার মিথ্যাও হতে পারে
না।
৪। একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত এবং একই গুণবিশিষ্ট দু’টি বচন যদি শুধু পরিমাণের দিক থেকে ভিন্ন
হয় তাহলে তাদের স¤পর্ককে বলা হয় অসম বিরোধিতা। সুতরাং একই উদ্দেশ্য ও বিধয়যুক্ত অ ও
ও এবং ঊ ও ঙ বচনের স¤পর্কের নাম অসম বিরোধিতা। যেমন
‘কোন মানুষ নয় সাহসী’ ঊ
‘কোন কোন মানুষ নয় সাহসী’ ঙ
‘সকল মানুষ হয় সাহসী’ অ
‘কোন কোন মানুষ হয় সাহসী’ ও
অসম বিরোধিতাযুক্ত দু’টি বচনের সার্বিক বচনটিকে বলা হয় অধিসংশ্লেষক এবং বিশেষ বচনটিকে
বলা হয় উপসংশ্লেষক। অ বচন ও বচনের অধিসংশ্লেষক এবং ও বচন অ বচনের উপসংশ্লেষক। ঊ
বচন ঙ বচনের অধিসংশ্লেষক এবং ঙ বচন ঊ বচনের উপসংশ্লেষক। অধিসংশ্লেষক সত্য হলে
উপসংশ্লেষক সত্য হবে কিন্তু উপসংশ্লেষক সত্য হলে অধিসংশ্লেষক হবে অনিশ্চিত। আবার
উপসংশ্লেষক মিথ্যা হলে অধিসংশ্লেষক মিথ্যা হবে কিন্তু অধিসংশ্লেষক মিথ্যা হলে উপসংশ্লেষক
হবে অনিশ্চিত।
বচনের এ পর্যন্তআমরা যে সমস্তবিরোধিতা পেলাম তা একটি চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। এই
চিত্রটি ‘বিরোধিতার বর্গক্ষেত্র’ বা ‘বিরোধ-চতুষ্কোণ’ নামে পরিচিত।
অ সকল ঝ হয় চ ঊ কোন ঝ নয় চ
ও কোন কোন ঝ হয় চ ঙ কোন কোন ঝ নয় চ
উল্লেখ্য প্রচলিত এই চতুষ্কোণটি থেকে ভিন্ন ধরনের একটি চতুষ্কোণ প্রাচীন যুক্তিবিদ অ্যারিস্টটল
আলোচনা করেন। তাঁর চতুষ্কোণটি নিæরূপ
বিরুদ্ধ বিরোধিতা
অ্যারিস্টটল বচনের বিরোধিতা বলতে কেবল বিরুদ্ধ বিরোধিতা ও বিপরীত বিরোধিতাকে স্বীকার
করেছেন। অধীন-বিপরীত কিংবা অসম বিরোধিতাকে স্বীকার করেননি।
সারাংশ
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বচনের যে চার প্রকার বিরোধিতা পেলাম তাহলো ১। বিপরীত
বিরোধিতা ২। অধীন বিপরীত বিরোধিতা ৩। বিরুদ্ধ বিরোধিতা ও ৪। অসম বিরোধিতা।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। বচনের বিরোধিতা ব্যাখ্যা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। বিপরীত বিরোধিতা কাকে বলে? কোন কোন্ বচনের মধ্যে বিপরীত বিরোধিতা রয়েছে?
২। বিরোধ-চতুষ্কোণ কী? এর একটি চিত্র আঁকুন।
৩। বিরুদ্ধ বিরোধিতার উদাহরণসহ সংজ্ঞা দিন।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তর লিখুন
১। দু’টি শর্তনিরপেক্ষ বচনের মধ্যে অসম বিরোধিতা হয়
ক) দু’টি বচনের মধ্যে শুধু গুণগত পার্থক্য হলে
খ) দু’টি বচনের মধ্যে শুধু পরিমাণগত পার্থক্য হলে
গ) দু’টি বচনের মধ্যে গুণ ও পরিমাণগত পার্থক্য হলে
ঘ) দু’টি বচনের উদ্দেশ্য ভিন্ন হলে।
২। বিরুদ্ধ বিরোধিতার অপর নাম
ক) অধীন বিপরীত বিরোধিতা খ) বিপরীত বিরোধিতা
গ) পূর্ণবিরোধিতা ঘ) অসম বিরোধিতা।
৩। অসম বিরোধিতার সার্বিক বচনকে বলে
ক) উপসংশ্লেষক খ) অধিসংশ্লেষক
গ) আশ্রয়বাক্য ঘ) সিদ্ধান্ত।
সঠিক উত্তর
১। খ) দু’টি বচনের মধ্যে শুধু পরিমাণগত পার্থক্য হলে
২। গ) পূর্ণবিরোধিতা ৩। খ) অধিসংশ্লেষক

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]