সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটি লিখুন। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করুন।

সূত্র
মিল প্রদত্ত সহ-পরিবর্তনের সূত্র : ‘যখনই কোন একটি ঘটনার বিশেষভাবে পরিবর্তন হয়, তখনই যদি
অন্য একটি ঘটনাও কোন একভাবে পরিবর্তিত হয়, তাহলে সেই ঘটনাটি অন্য ঘটনাটির কারণ বা কার্য বা তার সাথে কোন প্রকারের কার্য-কারণ স¤পর্কে যুক্ত হবে’।
সূত্রটি থেকে ¯পষ্ট বোঝা যাচেছ যে, এই সূত্রটি কারণ ও কার্যের পরিমাণগত
পার্থক্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সহ-পরিবর্তন হলো পরিমাণগত পদ্ধতি, কারণ এখানে কারণ ও কার্যের
পরিমাণগত হ্রাসবৃদ্ধির ভিত্তিতে পদ্ধতিটি প্রযুক্ত হয়।
পরিমাণের দিক থেকে কার্য-কারণ সমান
পরিমাণের দিক থেকে কারণ ও কার্য পর¯পর সমান। কাজেই কারণ ও কার্যের মধ্যে যে কোন একটি
বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে অপরটিতেও অনুরূপ বৃদ্ধি বা হ্রাস দেখা যাবে। দুটি ঘটনা যদি এক সাথে বাড়ে বা
কমে, তাহলে মনে করা যেতে পারে যে, ঘটনা দু’টির মধ্যে কার্য-কারণ সম্বন্ধ আছে। এদের একটি হল
পূর্ববর্তী ঘটনা এবং অন্যটি হল অনুবর্তী ঘটনা। এদের মধ্যে পূর্ববর্তী ঘটনাটি হল অনুবর্তী ঘটনাটির
কারণ। মোটকথা সহ-পরিবর্তন পদ্ধতিতে দুটি ঘটনার সহ-পরিবর্তন লক্ষ্য করেই ঘটনা দু’টির মধ্যে
কার্য-কারণ স¤পর্ক অনুমান করা হয়।
সহ-পরিবর্তন দু’প্রকার হতে পারে ১। সম-পরিবর্তন ও ২। বিষম পরিবর্তন।
সম-পরিবর্তন
যখন পূর্ববর্তী ঘটনা বৃদ্ধি পেলে অনুবর্তী ঘটনাটিও বৃদ্ধি পায় এবং পূর্ববর্তী ঘটনাটি হ্রাস পেলে অনুবর্তী
ঘটনাটিও হ্রাস পায় তখন তাকে সম-পরিবর্তন বলে। যেমন তাপ যত বাড়ে বস্তুর আয়তনও ততই বাড়ে।
বিষম পরিবর্তন
যখন পূর্ববর্তী ঘটনা বৃদ্ধি পেলে পরবর্তী ঘটনা হ্রাস পায় অথবা পূর্ববর্তী ঘটনা হ্রাস পেলে পরবর্তী ঘটনা
বৃদ্ধি পায় তখন তাকে বিষম পরিবর্তন বলে। যেমন জিনিসের সরবরাহ যত বাড়ে, তার চাহিদাও তত কমে।
সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি অন্বয়ী ও ব্যতিরেকী পদ্ধতির এক বিশেষ রূপান্তর।
সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির দৃষ্টান্তসমূহ নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণ হতে সংগ্রহ করা হয়। যদি সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির
দৃষ্টান্তগুলি নিরীক্ষণের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় এবং পদ্ধতিটির সহগামী ঘটনাগুলি বিভিন্ন দৃষ্টান্তেবিভিন্ন
হয় তবে সে পদ্ধতিকে অন্বয়ী পদ্ধতির এক বিশেষ রূপান্তর বলা হয়। আর যদি সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির
দৃষ্টান্তগুলো পরীক্ষণের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় এবং সহগামী ঘটনাগুলি সব দৃষ্টান্তেঅপরিবর্তিত থাকে
তবে তাকে ব্যতিরেকী পদ্ধতির বিশেষ রূপান্তর বলা হয়।
সহ-পরিবর্তন পদ্ধতিকে সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে প্রতীকায়িত করার উদ্দেশ্যে নানারকম চিহ্ন বা
সংকেত ব্যবহার করা হয়। পরিমাণভেদ নির্দেশ করার জন্য ১, ২, ৩ ইত্যাদি কিংবা + এবং - চিহ্ন ব্যবহার করা যেতে পারে। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির প্রতীকায়িত রূপ নিচে দেয়া হল
পূর্ববর্তী ঘটনা অনুবর্তী ঘটনা
অ১ ই ঈ ধ১ ন প
অ২ ই ঈ ধ২ ন প
অ৩ ই ঈ ধ৩ ন প
সুতরাং অ হল ধএর কারণ, অথবা অ ও ধ কার্য-কারণ স¤পর্কে যুক্ত
এই উদাহরণে দেখা যাচেছ, পূর্ববর্তী ঘটনার মধ্যে অ বৃদ্ধি পাচেছ এবং তার সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী ঘটনার
মধ্যে ধ অনুরূপভাবে বৃদ্ধি পাচেছ। আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় অপরিবর্তিত আছে। সুতরাং সিদ্ধান্তকরা
হল পূর্ববতী ঘটনা অ এবং অনুবর্তী ঘটনা ধ কার্য-কারণ স¤পর্কে স¤পর্কিত।
সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য
প্রাকৃতিক বিষয় বা ঘটনাসমূহের মধ্যে এমন কিছু বিষয় বা ঘটনা আছে যেগুলোকে নিরীক্ষণ বা
পরীক্ষণের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণভাবে অপনয়ন করা যায় না। যেমন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, বায়ুর চাপ, তাপ
ইত্যাদি। এগুলি কোন বিষয় বা ঘটনাতে স্থায়ীভাবে অবস্থান করে। এগুলিকে অন্যান্য বস্তু থেকে আলাদা
করে নিয়ে স্বতন্ত্রভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায় না। মিল (গরষষ) এসব বিষয়ের নাম দিয়েছেন স্থায়ী কারণ
। যদিও এসব স্থায়ী কারণের স্বতন্ত্রপর্যবেক্ষণ সম্ভব নয় তবুও এগুলিকে কিছু
পরিমাণে বৃদ্ধি বা হ্রাস করে এগুলির বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করা যায়। এসব ক্ষেত্রে সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি
প্রয়োগ করে কার্য-কারণ স¤পর্ক স্থাপন করা যায়। অন্য কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করে এসব স্থায়ী কারণের
অপনয়ন কিংবা স্বতন্ত্রপর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়। এ বৈশিষ্ট্য একমাত্র সহ-পরিবর্তন পদ্ধতিরই আছে।
সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির সুবিধা
এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হল এই পদ্ধতি ব্যতিরেকী পদ্ধতির বিকল্প। যেখানে ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগ
করা যায় না সেখানে সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। বিশেষ করে স্থায়ী কারণ স¤পর্কে
অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে কার্য-কারণ স¤পর্ক নির্ণয় করা যায়। এই পদ্ধতির আরো
অন্যান্য সুবিধার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল এই পদ্ধতির মাধ্যমে কার্য ও কারণের পরিমাণগত
হ্রাস-বৃদ্ধির সঠিক অনুপাত নির্ধারণ করা যায় যা অন্য কোন পদ্ধতির মাধ্যমে সম্ভব নয়।
সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির অসুবিধা
এই পদ্ধতির বড় অসুবিধা হল এই পদ্ধতি গুণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। শ্রম ও উৎপাদনের
মধ্যে সহ-পরিবর্তনের সম্বন্ধ আছে। শ্রমের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে উৎপাদনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু
শ্রমের পরিমাণ বেশি বৃদ্ধি পেলে তা ক্লান্তিতে পরিণত হয়। তখন কিন্তু আর উৎপাদন বৃদ্ধি পায় না। এখানে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে অর্থাৎ একটি বিষয় (শ্রম) অন্য একটি বিষয়ে (ক্লান্তিতে) পরিণত
হয়েছে বলে এই পদ্ধতির প্রয়োগ এক্ষেত্রে ব্যর্থ।
এছাড়া এই পদ্ধতির প্রয়োগ কেবলমাত্র যেসব ঘটনা বাড়ে-কমে সেসব ক্ষেত্রেই সম্ভব, অন্য ক্ষেত্রে নয়। অতএব এ পদ্ধতির প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্তসীমিত।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি ব্যাখ্যা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটি লিখুন।
২। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করুন।
৩। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি উদাহরণ সহকারে বিশ্লেষণ করুন।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তর লিখুন
১। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি
ক) অবরোহী পদ্ধতি খ) আরোহী পদ্ধতি
গ) দু’টিই ঘ কোনটাই নয়
২। সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি
ক) দোষ-ত্র“টিমুক্ত পদ্ধতি খ) স¤পূর্ণব্যর্থ একটি পদ্ধতি
গ) দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের অনুপযোগী পদ্ধতি ঘ) কার্য-কারণ স¤পর্ক অনুসন্ধানের পদ্ধতি
সঠিক উত্তর
১। খ) আরোহী পদ্ধতি ২। ঘ) কার্য-কারণ স¤পর্ক অনুসন্ধানের পদ্ধতি

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]