পরিশেষ পদ্ধতির সূত্রটি লিখুন। পরিশেষ পদ্ধতির বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করুন।

পরিশেষ পদ্ধতির সূত্র
কার্য-কারণ স¤পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য মিল যে আরোহ পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছেন তার সর্বশেষ
পদ্ধতি হল পরিশেষ পদ্ধতি। মিল প্রদত্ত সূত্রটি হলো- কোন ঘটনার যে অংশকে আগে থেকে
আরোহানুমানের সাহায্যে পূর্ববর্তী ঘটনার যে অংশের কার্য বলে জানা গিয়েছে, সেই অংশকে সমগ্র
ঘটনা থেকে বাদ দিলে যে অংশ অবশিষ্ট থাকে, তা অবশিষ্ট পূর্ববর্তী ঘটনার কার্য হবে।
সমজাতীয় কার্য-সংমিশ্রণ
এই সূত্র থেকে পরিশেষ পদ্ধতির একটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পাচেছ। অনেক ক্ষেত্রে একাধিক কারণ এক
সঙ্গে ক্রিয়া করার ফলে তাদের প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন কার্য পর¯পরের সাথে মিলে একটি মিশ্র কার্যের
(গরীবফ বভভবপঃ) সৃষ্টি হয়। এই মিশ্র কার্যটি যদি ভিন্ন ভিন্ন কার্যের সমজাতীয় হয়, তাহলে মিশ্র
কার্যটিকে বলা হয় ‘সমজাতীয় কার্য-সংমিশ্রণ’
সমজাতীয় কার্য-সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে পরিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে কার্য-কারণ স¤পর্ক নির্ণয় করা যায়।
যেমন কতগুলি কারণ এক সঙ্গে ক্রিয়া করে একটি জটিল ঘটনা সৃষ্টি করেছে। এই জটিল ঘটনার কোন
কোন অংশের কারণ আমরা আগে থেকেই জানি। এক্ষেত্রে শুধু ঘটনাটির অবশিষ্ট অংশের কারণ বের
করতে পারলেই জটিল ঘটনাটির ব্যাখ্যা পূর্ণহয়। যে অংশটুকু স¤পর্কে আমাদের জানা আছে সেই
অংশটুকু বাদ দিলে পূর্ববর্তী ঘটনার যা অবশিষ্ট থাকবে তাকেই পরবর্তী ঘটনার অবশিষ্ট অংশের কারণ
বলে মনে করতে হবে। অবশিষ্ট বা পরিশিষ্ট অংশের ভিত্তিতে কার্য-কারণ স¤পর্ক প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে এই পদ্ধতিকে পরিশেষ পদ্ধতি বলা হয়েছে।
সংকেতের সাহায্যে পরিশেষ পদ্ধতিকে এভাবে প্রতীকায়িত করা যায় :
পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনা
অ ই ঈ -- ধ প ন
জানা আছে ই হল ন এর কারণ
জানা আছে ঈ হল প এর কারণ
সুতরাং অ হল ধ এর কারণ
অ, ই, ঈ এই তিনটি ঘটনা এক সঙ্গে ক্রিয়া করে ধ ন প ঘটনাটি সৃষ্টি করেছে। আরোহ অনুমানের
সাহায্যে আমাদের আগে থেকেই জানা আছে যে, ই হল ন এর কারণ এবং ঈ হল প এর কারণ অর্থাৎ নপ হল ইপ এর কার্য। এবার জটিল ঘটনা ধনপ থেকে নপ বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ধ এবং পূর্ববর্তী
ঘটনাবলী অইঈ থেকে ইঈ বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে অ । সুতরাং অনুমান করা হল অ হল ধ এর কারণ।
দৈনন্দিন জীবনে পরিশেষ পদ্ধতির প্রয়োগ
ব্যবহারিক জীবনে পরিশেষ পদ্ধতি বহুল পরিমাণে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। আরগন গ্যাস আবিষ্কার এই
পদ্ধতিরই ফল। দৈনন্দিন জীবনে আমরা দেখি মালপত্রসহ ট্রাকের ওজন নেয়া হয়। এর উদ্দেশ্য হল
ট্রাকে বোঝাই করা মালপত্রের ওজন জেনে নেয়া। খালি ট্রাকের ওজন আগে থেকেই জানা থাকে।
তারপর মালপত্রসহ ট্রাকের ওজন থেকে খালি ট্রাকের ওজন বাদ দিলেই মালপত্রের ওজন পাওয়া যায়। পরিশেষ পদ্ধতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য
আবিষ্কারের পদ্ধতি
একটি জটিল ঘটনার বেশির ভাগ অংশই যখন আমাদের জানা হয়ে যায়, তখন অবশিষ্ট অংশটুকু ব্যাখ্যা
করতে আমরা এই পদ্ধতির সাহায্য গ্রহণ করি। এই পদ্ধতির সাহায্যে আমরা অতীত জ্ঞানের আলোকে
অনাবিষ্কৃত ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারি। জ্যোতির্বিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানের অনেক আবিষ্কার এই পদ্ধতির সাহায্যে সম্ভব হয়েছে। তাই এই পদ্ধতিকে আবিষ্কারের পদ্ধতি বলা হয়।
অবরোহী পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে আমরা কোন জটিল ঘটনা নিয়ে গবেষণা করার সময় তার মধ্য থেকে জানা বিষয়গুলি
গণনা করি। তারপর সমগ্র ঘটনা থেকে জানা বিষয়গুলি বাদ দিয়ে অবশিষ্ট পূর্ববর্তী ঘটনাকে অবশিষ্ট
অনুবর্তী ঘটনার কারণ বলে চিহ্নিত করতে পারি। এই পদ্ধতিতে নিরীক্ষণের ভ‚মিকা খুব কম। সিদ্ধান্ত
অনুমানের বেলায় হিসাব-নিকাশ ও অবরোহ প্রক্রিয়ার কাজই বেশি। তাই অনেকে এই পদ্ধতিকে
অবরোহী পদ্ধতি বলে অভিহিত করেছেন।
পরিশেষ পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা
মিল নিজেই বলেছেন, আবিষ্কারের যত পদ্ধতি আছে তাদের মধ্যে পরিশেষ পদ্ধতি অন্যতম। এই
পদ্ধতি প্রয়োগ করে নেপচুন গ্রহ ও আরগন নামক গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে। তাছাড়া দৈনন্দিন জীবনে এর
ব্যবহার ব্যাপক।
তাছাড়া প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে যত পদ্ধতি আছে তাদের মধ্যে পরিশেষ পদ্ধতিই প্রত্যাশার
চেয়ে বেশি ফল দেয়। এই পদ্ধতির সাহায্যে আমরা কার্য থেকে কারণ এবং কারণ থেকে কার্য অনুসন্ধান
করতে পারি।
জটিল ঘটনা বিশ্লেষণের ব্যাপারে এই পদ্ধতি খুবই সাহায্য করে। সব আরোহ পদ্ধতিই কমবেশি
পরিশেষ পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে থাকে। এই পদ্ধতি অনাবিষ্কৃতকে আবিষ্কার করার পথ প্রশ¯ করে এবং
সেই পথ ধরেই আরোহ অনুমানের যাত্রা শুরু হয়।
এই পদ্ধতির সাহায্যে কোন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান শুরু করা যায় না। অন্য পদ্ধতির সাহায্যে কিছুটা
এগিয়ে আসার পরই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।
যখন কোন মিশ্র কারণ হতে সৃষ্ট সংমিশ্রণটি ভিন্ন জাতীয় হয়, তখন আর এ পদ্ধতির প্রয়োগ চলে না। এ
পদ্ধতিতে যে ঘটনাটি কোন কার্যের প্রকৃত কারণ সেটি গুপ্ত থেকে যেতে পারে; এর স্থলে কোন অবাস্তব ঘটনা কোন কার্যের কারণ বলে মনে হতে পারে। এছাড়াও এ পদ্ধতিতে কোন কারণের উপাদানকে প্রকৃত কারণ বলে ভুল করার সম্ভাবনা থাকে।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। পরিশেষ পদ্ধতি ব্যাখ্যা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। পরিশেষ পদ্ধতির সূত্রটি লিখুন।
২। পরিশেষ পদ্ধতির বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করুন।
৩। পরিশেষ পদ্ধতি উদাহরণ সহকারে বিশ্লেষণ করুন।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তর লিখুন
১। পরিশেষ হল
ক) অবরোহী পদ্ধতি খ) আরোহী পদ্ধতি
গ) দুটিই ঘ. কোনটাই নয়।
২। সমজাতীয় কার্য-সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে পরিশেষ পদ্ধতি
ক) ব্যর্থ খ) সার্থক
গ) আংশিক সার্থক ঘ) আংশিক ব্যর্থ।
৩। পরিশেষ হল
ক) দোষ-ত্র“টিমুক্ত পদ্ধতি খ) স¤পূর্ণব্যর্থ একটি পদ্ধতি
গ) দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের অনুপযোগী পদ্ধতি ঘ) একটি আবিষ্কারের পদ্ধতি।
সঠিক উত্তর
১। ক) অবরোহী পদ্ধতি
২। খ) সার্থক
৩। ঘ) একটি আবিষ্কারের পদ্ধতি

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]