যুক্তিবিদ্যার মূল কাজ হলো যুক্তির বৈধতা নিরূপণ করা। যুক্তির বৈধতা তার অন্তর্গত বচনের সত্যতার
ওপর নির্ভরশীল নয়। যুক্তির বৈধতা একটি আকারগত বিষয়। সুতরাং আকারগত বিষয়কে সাধারণ তথা
প্রাকৃতিক (হধঃঁৎধষ) ভাষার পরিবর্তে সাংকেতিক ভাষায় প্রকাশ করলে তা হবে অধিকতর যথাযথ ও
প্রাসঙ্গিক। সাধারণ ভাষার অ¯পষ্টতা ও দ্ব্যর্থকতা যুক্তির অন্তর্গত
বচনগুলির পার¯পরিক আকারগত স¤পর্ক বোঝার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এসব কারণে অর্থাৎ যুক্তির
যথাযথ আকার উপস্থাপন, সহজ প্রকাশ ও ¯পষ্ট অর্থ অনুধাবনের স্বার্থে প্রতীকের সহায়তা তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা হলো যুক্তিবিদ্যার এমন একটি শাখা যা যুক্তির অভ্যন্তরীণ বচনকে প্রতীকায়ন করে
যুক্তির বৈধতা ও অবৈধতা নিরূপণ করে।
আকারগত বিজ্ঞান
যুক্তিবিদ্যা হলো অবৈধ যুক্তি থেকে বৈধ যুক্তিকে পৃথক করার পদ্ধতি ও বিধি-বিধানসমূহের আলোচনা।
সুতরাং জগৎ ও জীবনের কোন বাস্তব বা বস্তুগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা তার লক্ষ্য নয়। যুক্তিবিদ্যায়
আমরা যুক্তির বৈধতা নিরূপণ করি বৈধ বা ভাল যুক্তির নিয়মের সঙ্গে মিলিয়ে; বাস্তব জগতের সংগে
মিলিয়ে নয়। এজন্য যুক্তিবিদ্যা পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান প্রভৃতি জ্ঞানশাখার মত
কোন বস্তুগত বিজ্ঞান নয়। যুক্তিবিদ্যা হলো গণিতের মত একটি আকারগত বিজ্ঞান।
প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা যেহেতু সাধারণ ভাষার পরিবর্তে প্রতীকী ভাষা ব্যবহার করে সেহেতু তা সাবেকী
যুক্তিবিদ্যার তুলনায় অধিকতর আকারগত। বস্তুত প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা বীজগণিতের মত একটি স¤পূর্ণ
আকারগত বিজ্ঞান।
অমূর্ত আলোচনা বা বিদ্যা
আকারগত বিজ্ঞান মাত্রই অমূর্তবিদ্যা। ঐ বিজ্ঞানকে আমরা অমূর্ত বলি যা বাস্তব ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা
বিবরণের পরিবর্তে কতকগুলি সাধারণ ও মৌলিক নিয়ম অনুসন্ধান ও আলোচনা করে। প্রতীকী
যুক্তিবিদ্যায় কোন বিশেষ বা বাস্তব যুক্তির বৈধতা-অবৈধতা আলোচিত হতে পারে। তবে এটি তার মূল
লক্ষ্য নয়। বৈধ যুক্তির সাধারণ আকার ও নিয়মই তার মূল আলোচ্য। এসব আকার ও নিয়ম হলো
অমূর্ত। বিধায় প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা হয়ে পড়ে এক অমূর্ত আলোচনা।
সাবেকী ও প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা (
সাবেকী যুক্তিবিদ্যার ইতিহাস প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার তুলনায় দীর্ঘ। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা সাবেকী যুক্তিবিদ্যার
একটি বিকশিত ও আধুনিক রূপ। একটি বিদ্যার ক্রমবিকাশের দুটি ধাপের মধ্যে যে পার্থক্য থাকে
এদের মধ্যে পার্থক্যও ঠিক অনুরূপ।
প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার মত সাবেকী যুক্তিবিদ্যায়ও প্রতীকের ব্যবহার রয়েছে। যুক্তিকে সংক্ষিপ্ত, সহজ ও
¯পষ্ট করার জন্য সাবেকী যুক্তিবিদরাও প্রতীকের ব্যবহার করেন। তবে তাঁদের এই ব্যবহার ছিল একটি
নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ। বিশেষত যৌক্তিক কাঠামোকে সু¯পষ্ট করার জন্য সাবেকী যুক্তিবিদরা
প্রতীকের ব্যবহার করেন। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যায় প্রতীকের ব্যবহার কোন নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ
থাকে না।
উপর্যুক্ত সাদৃশ্যের কারণে যথার্থই বলা হয় সাবেকী যুক্তিবিদ্যার সাথে প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার পার্থক্য গুণগত
নয়, মাত্রাগত।
প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা অবরোহধর্মী। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার একটি শাখাকে বলা হয় বাচনিক কলন
এখানে সরল বচনকে বিশ্লেষণ না করে ‘এবং ’,
‘অথবা’, ‘যদি-তবে’ ইত্যাদি যৌক্তিক সংযোজকের তাৎপর্যের ভিত্তিতে এক অবরোহী পদ্ধতি গড়ে
তোলা হয়। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার আরেক শাখাকে বলা হয় বিধেয় কলন
যেখানে সরল বচনের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এক ভিন্ন ধরনের অবরোহী পদ্ধতি গড়ে তোলা হয়।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। সাবেকী ও প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার পার্থক্য লিখুন।
২। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা একটি পুরোপুরি আকারগত বিজ্ঞান- ব্যাখ্যা করুন।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তর লিখুন
১। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা হলো একটি
ক) আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান খ) প্রাকৃতিক বিজ্ঞান
গ) আকারগত বিজ্ঞান ঘ) বিষয়নিষ্ঠ বিজ্ঞান।
২। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার আলোচ্য বিষয়
ক) আকারগত খ) বস্তুগত
গ) মূর্ত ঘ) অমূর্ত।
৩। সাবেকী যুক্তিবিদ্যার সাথে প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার পার্থক্য
ক) পরিমাণগত খ) গুণগত
গ) মাত্রাগত ঘ) বস্তুগত।
৪। প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা
ক) আরোহধর্মী খ) অবরোহধর্মী
গ) প্রতীকধর্মী ঘ) উপরের কোনটিই নয়।
সঠিক উত্তর
১। গ) আকারগত বিজ্ঞান ২। ঘ) অমূর্ত। ৩। গ) মাত্রাগত ৪। খ) অবরোহধর্মী
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত