গণিতের মত যুক্তিবিদ্য বিশেষত প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো বিশেষ ধরনের
প্রতীকের ব্যাপক ব্যবহার। ফলে বিভিন্ন প্রকার প্রতীকের সংগে আমাদের পরিচয় থাকা প্রয়োজন।
প্রতীক
কোন কিছু নির্দেশ করা, জ্ঞাপন করা বা বুঝাবার জন্য যে লিখিত বা কথিত চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে
প্রতীক বলে। উদাহরণস্বরূপ কোন বাক্যের শেষে ‘!’ দিয়ে বুঝানো হয় যে বাক্যের বিষয়বস্তু বিস্ময়সূচক;
সুতরাং ‘!’ একটি প্রতীক। প্রতীককে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায়, যথা শব্দ প্রতীক ও অশব্দ
প্রতীক।
শব্দ প্রতীক ও অশব্দ প্রতীক
শব্দ হলো আমাদের সবচেয়ে পরিচিত প্রতীক। আমরা শব্দ ব্যবহার করে কিছু নির্দেশ করি, জ্ঞাপন করি
বা বোঝাই। যেমন ‘কলম’ শব্দটি কলম নামক দ্রব্য বোঝায়, ‘সততা’ শব্দটি একটি গুণ নির্দেশ করে,
‘যায়’ শব্দটি একটি ক্রিয়া বোঝাই। প্রতিটি শব্দই এক একটি প্রতীক। শব্দকে বলে শব্দ প্রতীক।
শব্দ নয় এমন প্রতীকও আমরা ব্যবহার করি। যেমন গণিতের ‘+’, ‘-’, ‘’, ‘’ ইত্যাদি প্রতীক। এ
ধরনের প্রতীককে বলে অশব্দ প্রতীক। যুক্তিবিদ্যায় বিশেষতঃ প্রতীকী যুক্তিবিদ্যায় বহু অশব্দ প্রতীক
ব্যবহৃত হয়। বস্তুত প্রতীক বলতে সচরাচর অশব্দ প্রতীককেই বুঝায়। উল্লেখ্য বর্ণ প্রতীকও এক
প্রকারের অশব্দ প্রতীক।
বর্ণ প্রতীক
প্রতীকী যুক্তিবিদ্যায় দু’রকমের বর্ণ প্রতীক ব্যবহৃত হয়; যথা গ্রাহক প্রতীক (অধ্রæবক প্রতীক) ও বাক্য
সংক্ষেপক প্রতীক। গ্রাহক প্রতীক ব্যবহার করা হয় বাক্য ও যুক্তির আকার নির্দেশ করার জন্য। এ
কারণে বলা হয় যে বর্ণ প্রতীকের দ্বারা আকারের শূন্যস্থান নির্দেশ করা হয় তাকে বলে গ্রাহক প্রতীক।
উদাহরণস্বরূপ
এখানে ঢ় ও য় হলো গ্রাহক প্রতীক। আমরা গ্রাহক প্রতিক হিসেবে সাধারণত নিচের প্রতীকগুলো
ব্যবহার করি
ঢ়, য়, ৎ, ং, ঃ, ঁ, া, ,ি ী, ু, ু
এই বাক্যকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা যায় এভাবে
এখানে (১) হলো (২) এর সংক্ষিপ্ত রূপ এবং এটি বাক্য কোন আকার নয়। এক্ষেত্রে চ ও ছ কোন
গ্রাহক প্রতীক নয়। বর্ণ প্রতীক চ ও ছ এখানে আণবিক বাক্যের সংক্ষেপক। আমরা সচরাচর ইংরেজি
বর্ণমালার বড় হাতের বর্ণকে বাক্য সংক্ষেপ করার জন্য ব্যবহার করি। (১) ও (১) এর পার্থক্য
বিশেষভাবে লক্ষণীয়। (১) হলো আকার, তাই তা সত্য-মিথ্যা হতে পারে না। কিন্তু (১) হলো বাক্য,
বিধায় তা সত্য-মিথ্যা হতে পারে।
ধ্রæবক প্রতীক ও গ্রাহক প্রতীক
প্রতীককে আবার দু’ভাগে ভাগ করা যায় : ধ্রæবক প্রতীক ও গ্রাহক প্রতীক
। গ্রাহক প্রতীক নিয়ে আমরা আগেই আলোচনা করেছি। গ্রাহক প্রতীক ছাড়া অন্য সকল
প্রতীকই ধ্রæবক প্রতীক। ‘অমুক’, ‘তমুক’, ‘যাহা-তাহা’, ‘যখন-তখন’ প্রভৃতি ছাড়া সাধারণ ভাষায়
ব্যবহৃত শব্দগুলি যেমন চেয়ার, টেবিল, মানুষ, গরু, সততা ইত্যাদি ধ্রæবক প্রতীক। কারণ এদের অর্থ
ধ্রæবক বা স্থিরীকৃত। একইভাবে সংযোজক ‘এবং’, ‘অথবা’, ‘যদি-তাহলে’, ‘যদি এবং কেবল যদি’, ‘না’
প্রভৃতি ধ্রæবক প্রতীক।
বিষয়ক ও আকারক প্রতীক
ধ্রæবক প্রতীক আবার দু’প্রকার ১) উপাদান জ্ঞাপক বা বিষয়ক প্রতীক (হড়হ-ষড়মরপধষ পড়হংঃধহঃ)
এবং ২) আকার জ্ঞাপক বা আকারক প্রতীক
যৌক্তিক সংযোজক ‘এবং’, ‘অথবা’, ‘যদি-তাহলে’ প্রভৃতি আকারক প্রতীক। এ জাতীয় প্রতীক বাক্য ও
যুক্তির আকার নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকে এবং অথবা প্রভৃতি আকারক প্রতীককে কারক বলে
অভিহিত করেন।
যুক্তিবিদ্যা যৌক্তিক আকার নিয়ে আলোচনা করে। এজন্য এক্ষেত্রে বিষয়বস্তু জ্ঞাপক বা বিষয়ক প্রতীক
যেমন ‘মানুষ’, ‘সমাজ’, ‘গণতš’ প্রভৃতির কোন স্থান নেই। যুক্তিবিদ্যালয় ভাষার উপকরণ হলো
গ্রাহক প্রতীক ও আকারক প্রতীক। আরো ¯পষ্টভাবে বলা যায় যুক্তিবিদ্যার ভাষা-উপকরণ হলো
ক) বাক্য গ্রাহক ঢ়, য়, ৎ, ং, ঃ, ঁ, া প্রভৃতি; ব, ভ, ম, প্রভৃতি
খ) আকারক হড়ঃ, ধহফ, ড়ৎ, রভ-ঃযবহ প্রভৃতি; এমন নয় যে এবং, অথবা, যদি-তাহলে
প্রভৃতি
গ) যতিচিহ্ন ও বন্ধনী ‘,’, ‘;’, ‘’, ‘’ ইত্যাদি
প্রতীক লিপি
আধুনিক যুক্তিবিদ্যায় তথা প্রতীকী যুক্তিবিদ্যায় যুক্তিবিদরা এবং, অথবা, যদি-তাহলে প্রভৃতি আকারক
শব্দ প্রতীকের পরিবর্তে অশব্দ প্রতীক ব্যবহার করেন। যেমন ‘এবং’ এর পরিবর্তে ‘.’, ‘অথবা’ এর
পরিবর্তে ‘া’ প্রতীক ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরূপ
ঢ় ড়ৎ য় ব অথবা ভ
এর পরিবর্তে লেখেন
ঢ় া য় ব া ভ।
আধুনিক যুক্তিবিদ্যায় যৌক্তিক সংযোজকের বদলে কি কি প্রতীক ব্যবহার করা হয় তার একটি তালিকা
নিচে দেয়া হলো
মূল যৌক্তিক সংযোজক প্রতীক প্রতীকের নাম
এবং, ও, আর বিন্দু বা ফড়ঃ
যদি-তাহলে নাল বা যড়ৎংব-ংযড়ব
বা, অথবা, কিংবা া ফলা বা াবষ
যদি এবং কেবল যদি সমমান বা বয়ঁরাধষবহপব
এমন নয় যে, না ঢেউ বা পঁৎষ
উপরোক্ত প্রতীক ছাড়াও প্রতীকী যুক্তিবিদ্যায় অনেক ধরনের প্রতীক ব্যবহৃত হয়। যেমন প্রতীকী
যুক্তিবিদ্যার বিধেয় কলন (ঢ়ৎবফরপধঃব পধষপঁষঁং) এ (ী ), (ী), /, প্রভৃতি প্রতীক ব্যবহৃত
হয়।
সকল যুক্তিবিদ আবার একই বিষয়ের জন্য একই প্রতীক ব্যবহার করেন না। এজন্য প্রতীকগুলোর
বিকল্পরূপ আছে
আমাদের গৃহীত প্রতীক (ঙঁৎ ঝুসনড়ষং) বিকল্প প্রতীকসমূহ
ঢ় ঢ়, ঢ়, ঢ়
ঢ় য় ঢ়য়, ঢ়য়, ঢ়্য়
ঢ়য় ঢ়য়
ঢ়য় ঢ়য়
(ী) ী
(ী) (ী), ী
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
রচনামূলক প্রশ্ন
১। বিভিন্ন প্রকার প্রতীক বর্ণনা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। শব্দ ও অশব্দ প্রতীকের পার্থক্য প্রদর্শন করুন।
২। ধ্রæবক ও গ্রাহক প্রতীকের পার্থক্য প্রদর্শন করুন।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত