বচনাকারের সংজ্ঞা দিন। বচনাকার কত প্রকার ও কি কি ? কুগঠিত ও সুগঠিত সূত্রের পার্থক্য উদাহরণসহ উল্লেখ করুন।

আমরা বিভিন্ন প্রকারের বচন আলোচনা করেছি। এতে আমাদের ধারণা হয়েছে যে, যুক্তি বা ন্যায়ের
বৈধতা বিচারে বচনের সত্য-মিথ্যা নয়, বরং তার আকারই লক্ষণীয় বিষয়। সুতরাং আমাদের বচনের আকার স¤পর্কে ¯পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
বচনাকার
বচনের দু’রকমের আকার রয়েছে ১। সাধারণ আকার ও ২। বিশেষ আকার। সংযৌগিক, বৈকল্পিক,
প্রাকল্পিক, নিষেধক ও সমমান বচনের সাধারণ আকার। যথাক্রমে হল ঢ়.য় ঢ়ায় ঢ়য় ূ ঢ় ঢ়য়
এগুলিকে এই বচনগুলির ‘মৌলিক আকার’ও বলা হয়। এই বচনগুলি গঠিত হয় সাধারণত এভাবে
এদের মধ্যে নিষেধক ছাড়া আর সব ক’টিতেই দু’টি বচনবর্ণ ও একটি সংযোজক রয়েছে। নিষেধক
বচনাকারে রয়েছে একটি বচনবর্ণ ও একটি নিষেধক চিহ্ন। এখানে সঠিক অর্থে কোন সংযোজক নেই।
সংযোজক ও নিষেধক চিহ্নকে আমরা সার্বিকভাবে ‘সত্যাপেক্ষ চিহ্ন’ বলতে পারি। অতএব বলা যায়,
বচনবর্ণ ও সত্যাপেক্ষ চিহ্ন দিয়ে গঠিত কোন প্রতীক-পর¤পরায় বচন
বর্ণের স্থলে বচন সংস্থাপন করলে যদি একটি বচন পাওয়া যায়, তাহলে সেই প্রতীক পর¤পরাকে
বচনাকার বলে। আর এই প্রতীক পর¤পরাকে আমরা ‘বাচনিক সূত্র’ বা ‘বচন সূত্র’ বলতে পারি।
বচনাকার সত্যও নয়, মিথ্যাও নয়
উল্লেখ্য বচনাকার কোন বচন নয়, সেজন্য তা সত্যও নয়, মিথ্যাও নয়। বচনাকারের অন্তর্গত বচন বর্ণের জায়গায় কোন বচন সংস্থাপন করা হলেই একটি বচন পাওয়া যায়।
বচন ও বচনাকারের পার্থক্যের জন্য আমরা এখানে ইংরেজি বর্ণমালার ঢ় থেকে শুরু করে পরবর্তী ছোট
হাতের বর্ণগুলোকে ‘বচনাকার’ রূপে প্রকাশ করার জন্য এবং বড় বর্ণগুলোকে বচন প্রকাশ করার জন্য ব্যবহার করবো। যেমন
ঢ়ায় দিয়ে আমরা বুঝবো বৈকল্পিক বচনাকার, কিন্তু চাছ দিয়ে বুঝবো একটি বৈকল্পিক বচন। তেমনিভাবে, চছ, চ. ছ ইত্যাদি এক একটি যৌগিক বচন।
বচনকে সত্য বা মিথ্যা হতে হয়। কিন্তু চ. ছ সত্য কি মিথ্যা বুঝা যায় না। কারণ ঢ় ও য় এর মতো চ
এবং ছ ও প্রতীক; তবে এদের মধ্যে একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। ঢ় আর য় (এবং তাদের মতো
অন্যান্য বচনবর্ণ) ‘অধ্রæবক’ বচনবর্ণ, কিন্তু চ আর ছ ‘ধ্রæবক’ ) বচনবর্ণ।
অর্থাৎ ঢ় আর য় কেবল সংযৌগিক অপেক্ষককে দু’টি নির্বিশেষ বচনের ‘স্থান’ নির্দেশ করে। কিন্তু চ আর
ছ দু’টি বিশেষ কিন্তু অনির্দিষ্ট ‘বচন’ নির্দেশ করে। চ আর ছ অনির্দিষ্ট এই অর্থে যে, এরা দু’টি বিশেষ
বচন হলেও তারা ঠিক কোন্ বচন তা জানার দরকার নেই। ঢ় ও য় এর বদলে অনির্দিষ্ট সংখ্যক বচন
প্রতিস্থাপিত হতে পারে। চ ও ছ এই বচন-শ্রেণীর অন্তর্গত দু’টি বচন। এসব বচনের
যুক্তির বৈধতা বিচারের জন্য আমাদের জানার দরকার নেই। সেজন্য দু’টি বচন উল্লেখ না করে দু’টি প্রতীক (চ ও ছ) ব্যবহার করা হচেছ। বলা বাহুল্য, বৈকল্পিক বচনাকার সম্বন্ধে যা বলা হলো, অন্যান্য বচনাকার সম্বন্ধে তাই প্রযোজ্য।
উল্লিখিত বচনাকারগুলি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এ আকারগুলি অপেক্ষাকৃত জটিল
বচনের ‘বিশেষ’ আকার। উদাহরণস্বরূপ
১। বাংলাদেশে শান্তিআসবে এবং বাংলাদেশের মানুষ সুখে থাকবে।
২। বাংলাদেশে শান্তিআসবে এবং হয় সকল বাংলাদেশী সুখে থাকবে নয়তো আবার বন্যা হবে।
৩। হয় বাংলাদেশে শান্তিআসবে এবং সকল বাংলাদেশী সুখে থাকবে, নয়তো আবার বন্যা শুরু হবে এবং বহু লোক মারা যাবে।
৪। হয় বাংলাদেশে শান্তিআসবে এবং সকল বাংলাদেশী সুখে থাকবে, নয়তো আবার যদি বন্যা শুরু
হয় তাহলে বহু লোক মারা যাবে।
৫। যদি বাংলাদেশে শান্তিআসে অথবা বন্যা শুরু হয়, তাহলে হয় সকল বাংলাদেশী সুখে থাকবে
নয়তো বহু বাংলাদেশী মারা যাবে এবং খাবার পানির সংকট দেখা দিবে।
[ ঢ় = বাংলাদেশে শান্তিআসবে।
য় = সকল বাংলাদেশী সুখে থাকবে।
ৎ = আবার বন্যা শুরু হবে।
ং = বহু লোক মারা যাবে।
ঃ = খাবার পানির সংকট দেখা দিবে। ]
এগুলির প্রতীকায়িত রূপ হবে
(১) ঢ়.য়
(২) ঢ়. (য় া ৎ)
(৩) (ঢ়.য়) া (ৎ.ং)
(৪) (ঢ়.য়) া (ৎ  ং)
(৫) (ঢ়া ৎ)  [য়া (ং.ঃ)]
এখানে ১' ও ২' উভয়ই সংযৌগিক বচনাকার। ২ এর বদলে ১'কেও আমরা ২ এর বচনাকার হিসেবে
উল্লেখ করতে পারি। কিন্তু ১' ২' এর ‘সাধারণ’ আকার, আর ২' তার ‘বিশেষ’ আকার।
আবার ৩ এর বচনাকার হিসেবে ৩ এর বদলে আমরা ঢ়ায় লিখতে পারি। তখন ঢ়ায় হবে সাধারণ
আকার এবং ৩' হবে তার বিশেষ আকার। তাহলে প্রশ্ন জাগে আমরা কিভাবে বচনের সাধারণ ও বিশেষ আকার পাই ?
বচনের সাধারণ ও বিশেষ আকার
কোন বচনাকার যতই জটিল হোক না কেন, তার মধ্যে একটি ‘মূল’ সংযোজক থাকে। বচনের সাধারণ
আকার সেই মূল সংযোজক দ্বারা নির্ধারিত হয়। আবার জটিল বচনের উপাদান বচনগুলিও প্রত্যেকটি
একটি যৌগিক বচন হতে পারে, যার মধ্যে একাধিক বচনবর্ণথাকে। কোন জটিল বচনের অন্তর্গত
প্রত্যেকটি ভিন্ন বচনের জন্য একটি ভিন্ন প্রতীকবর্ণ প্রয়োগ করলে এবং প্রতিটি সংযোজকের জন্য একটি
ভিন্ন সংযোজক প্রতীক ব্যবহার করলে যে প্রতীক-পর¤পরা পাওয়া যায়, তা-ই সেই জটিল বচনের
বিশেষ আকার। বিপরীতভাবে বলা যায়, কোন বচন-সূত্রের অন্তর্গত প্রতিটি বচনবর্ণের স্থলে একটি ভিন্ন
বচন বসালে যে জটিল বচন পাওয়া যায়, সূত্রটি সেই বচনের বিশেষ আকার।
একটি যৌগিক বচন সীমাহীনভাবে জটিল হতে পারে
একটি জটিল যৌগিক বচন সীমাহীনভাবে জটিল হতে পারে। উপাদান বচনগুলি যৌগিক হতে পারে,
অর্থাৎ উপাদানেরও উপাদান থাকতে পারে এবং সেগুলিও আবার যৌগিক বচন হতে পারে। পূর্বোক্ত
দৃষ্টান্ত ৫' এর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে, প্রাকল্পিক সংযোজকের ডান দিকের অনুগটি
যৌগিক। যৌগিক অনুগটি বৈকল্পিক, আবার ডান দিকের বিকল্পটি একটি সংযৌগিক বচন। এভাবে মূল
সংযোজক  এর উভয় দিক বাড়িয়ে যৌগিক বচনাকারটিকে অনির্দিষ্টভাবে জটিল করা যেতে পারে।
কোন বচনাকারের স্থলে কোন বচনবর্ণ বসালে সে বচনটিকে বচনাকারের ‘সংস্থাপন দৃষ্টান্ত’
বা ‘প্রতিকল্প দৃষ্টান্ত’ বলে। যেমন উপরের ১ বচন ১ এর, ২ বচন ২ এর
সংস্থাপন দৃষ্টান্ত। তবে সাধারণ ও বিশেষ আকারের পার্থক্যটিও এখানে স্মরণীয়।
২ বচন ১ বচনাকারেরও সংস্থাপন দৃষ্টান্ত। কিন্তু সেখানে ১ ২ এর ‘বিশেষ আকার’ নয়, সাধারণ আকার
মাত্র। সুতরাং কোন বচন বিশেষ আকার হিসেবে কোন বচনাকারের সংস্থাপন দৃষ্টান্তনা হলেও ‘সাধারণ
আকার’ হিসেবে তা সেই বচনাকারের সংস্থাপন দৃষ্টান্তহতে পারে। ১ ও ২ এর ক্ষেত্রে সেই সাধারণ আকারটি সংযৌগিক বচনাকার ।
এখানে দু’টি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন
সুগঠিত ও কুগঠিত সূত্র
১। বচনাকার প্রতীক পর¤পরা হলেও যে কোন প্রতীক পরম্পরাই বচনাকার নয়। বচনাকার হতে হলে
প্রতীক পর¤পরাকে নির্দিষ্ট নিয়মে পর¯পরের সাথে মিলিত হতে হবে। নিয়মিতভাবে গঠিত প্রতীক
পরম্পরাকে ‘সুগঠিত সুত্র’ বলা হয়। যেমন (ঢ় . য়) া ৎ। আর
অনিয়মিতভাবে গঠিত প্রতীক পর¤পরাকে ‘কুগঠিত সূত্র’ বলা হয়। যেমন া ঢ়য় ।
যে প্রতীক পর¤পরায় বচনবর্ণ বসালে বচন পাওয়া যায় তাকে যথার্থ বচনাকার বলে। কুগঠিত সূত্র যথার্থ বচনাকার নয়।
বচনবর্ণ ব্যবহারের নিয়ম
বচনাকার প্রকাশের জন্য ইংরেজি বর্ণ ঢ় থেকে শুরু করে ছোট হাতের বর্ণগুলি আমরা ইতিপূর্বে ব্যবহার
করব বলেছি। এখানে দু’টি বিষয় মনে রাখতে হবে (ক) কোন বচনাকারের প্রথম বচনবর্ণ হবে ঢ়,
তারপর য়, তারপর ৎ, তারপর ং, এভাবে পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করার। (খ) কোন যৌগিক বচনের
বচনাকার দেখানোর সময় যৌগিক বচনটিতে কোন উপাদান বচন একাধিকবার ব্যক্ত হলে বচনাকারে
তার জায়গায় প্রত্যেকবারই একই বচনবর্ণ বসাতে হবে। যেমন ‘যদি কোন স্থানে বন্যা হয় তাহলে সে
স্থানে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়, কিন্তু যদি কোন স্থানে বন্যা হয় তাহলে সে স্থানে পরের বছর প্রচুর ফসল
উৎপন্ন হয়’।
‘কোন স্থানে বন্যা হয়’ এই উপাদান বচনটি উক্ত বচনে দু’বার উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং এর বচন
সূত্র হবে
(ঢ়য়) . (ঢ়ৎ)
একটি বচনের জন্য শুরু থেকে শেষপর্যন্তএকই প্রতীকবর্ণ ব্যবহার করতে হবে
আবার কোন মূর্ত যুক্তিতে একই বচন একাধিকবার উক্ত হলে তাকে প্রতীকায়িত করার সময় শুরু থেকে
শেষপর্যন্তএকই প্রতীকবর্ণ ব্যবহার করতে হবে। যেমন
বন্যা হলে প্রচুর ফসল নষ্ট হয়।
ফসল নষ্ট হলে খাদ্যাভাব দেখা দেয়।
সুতরাং বন্যা হলে খাদ্যাভাব দেখা দেয়।
এ যুক্তিটির প্রতীক রূপ হবে
চ  ছ
ছ  জ
চ  জ
রচনামূলক প্রশ্ন
১। বচনাকার ব্যাখ্যা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। বচনাকারের সংজ্ঞা দিন। বচনাকার কত প্রকার ও কি কি ?
২। কুগঠিত ও সুগঠিত সূত্রের পার্থক্য উদাহরণসহ উল্লেখ করুন।
৩। বচনবর্ণের বিশেষ আকার নির্দেশ করুন?
প্রতীকে রূপ দিন
ছবি বড় হলে ঢ়
ডাক্তার হবে য়
দেশের সেবা করবে ৎ
বেবী বড় হলে ং
শিক্ষকতা করবে ঃ
স্বাধীন ব্যবসা করবে ঁ
ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শেখাবে া এবং
জনকল্যাণমুখী কাজ করতে শেখাবে ি ধরে নিচের বচনগুলি বচনাকারে প্রতীকায়িত করুন
ক) ছবি বড় হলে ডাক্তার হবে এবং দেশের সেবা করবে।
খ) বেবী বড় হলে শিক্ষকতা করবে অথবা স্বাধীন ব্যবসা করবে।
গ) শিক্ষকতা করলে ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শেখাবে এবং কল্যাণমুখী কাজ
করতে শেখাবে তাহলে তারও দেশ সেবা হবে।
ঘ) ছবি বড় হলে ডাক্তার হবে না এবং দেশের সেবা করবে না অথবা সে ডাক্তার হবে এবং দেশের
সেবা করবে।
সঠিক উত্তর
ক) ঢ়  (য়.ৎ)
খ) ং  (ঃ া ঁ)
গ) ঃ  (া.)ি  ৎ
ঘ) ঢ়  ূ (য়.ৎ) া ঢ়  (য়.ৎ)

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]