একটি যুক্তি কখন অবৈধ হয়? যুক্তির অবৈধতা সংক্ষিপ্ত সত্যসারণীর মাধ্যমে প্রমাণ করা যায়।

আশ্রয়বাক্য যদি সত্য হয় এবং সিদ্ধান্তমিথ্যা হয় তাহলে যুক্তিটি অবৈধ
আমরা সত্যসারণী ব্যবহার করে কোন যুক্তির অবৈধতা প্রমাণ করে দেখাতে পারি। আমরা এখানে যে
পদ্ধতির মাধ্যমে যুক্তির অবৈধতা প্রমাণ করব তা সংক্ষিপ্ত সত্যসারণী কৌশল নামে পরিচিত। এই
পদ্ধতি অনুসারে সম্ভাব্য সকল সত্যমূল্য নিবেশন না করে, বরং যেভাবে সত্যমূল্য নিবেশন করলে
আশ্রয়বাক্য সত্য কিন্তু সিদ্ধান্তমিথ্যা হতে পারে কেবল সেই চেষ্টাই করা হয়। যদি দেখা যায় যে এভাবে
সত্যমূল্য নিবেশন করে আশ্রয়বাক্যকে সত্য এবং সিদ্ধান্তকে মিথ্যা দেখানো যাচেছ তাহলে যুক্তিটি
অবৈধ হবে। আর যদি এটা সম্ভব না হয় অর্থাৎ সত্যমূল্য নিবেশন করে আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত
মিথ্যা এরকম দেখানো না যায়, তবে যুক্তিটি বৈধ হবে। উদাহরণস্বরূপ
যদি বৃষ্টি হয় তাহলে মাটি ভিজে।
যদি বন্যা হয় তাহলে মাটি ভিজে।
 যদি বৃষ্টি হয় তাহলে বন্যা হয়।
যুক্তিটিকে প্রতীকায়ন করলে আমরা পাই
অ  ই
ঈ  ই
 অ  ঈ
এই যুক্তিটিতে এমনভাবে মানশর্ত বা সত্যমূল্য নিবেশন করতে হবে যাতে আশ্রয়বাক্য দুটি সত্য এবং
সিদ্ধান্তটি মিথ্যা হতে পারে। সিদ্ধান্ত‘অ  ঈ’ যদি মিথ্যা হয় তাহলে ‘অ’ সত্য এবং ‘ঈ’ মিথ্যা হবে।
আশ্রয়বাক্যগুলির ক্ষেত্রে এমনভাবে মানশর্ত নিবেশন করতে হবে যাতে সেগুলি সত্য হতে পারে। প্রথমে
প্রথম আশ্রয়বাক্যটি ধরা যাক: এটি হল ‘অ  ই’ , এই বচনটি যদি সত্য হয় তাহলে ‘ই’ সত্য হবে।
তারপর দ্বিতীয় আশ্রয়বাক্যটি দেখা যাক : ‘ঈ  ই’ । প্রথম আশ্রয়বাক্য থেকে জানা গেছে ‘ই’ সত্য
এবং সিদ্ধান্তথেকে জানা গেছে ‘ঈ’ মিথ্যা, তাহলে ‘ঈ  ই’ হল সত্য। এবার নি¤œলিখিতভাবে যুক্তিটির
ওপর মানশর্ত বা সত্যমূল্য নিবেশন করা যাক
(১) অ ই
ঞ ঞ ঞ

(২) ঈ ই
ঋ ঞ ঞ

(৩) অ ঈ
ঞ ঋ ঋ

(১) অ এবং ই সত্য, অতএব ‘অ  ই’ সত্য
(২) ঈ মিথ্যা এবং ই সত্য, অতএব ‘ঈ  ই’ সত্য
(৩) অ সত্য এবং ঈ মিথ্যা, অতএব ‘অ  ঈ’ মিথ্যা
সুতরাং দেখা যাচেছ যে, যুক্তিবাক্যগুলি সত্য, কিন্তু সিদ্ধান্তমিথ্যা হওয়ায় যুক্তিটি অবৈধ বলে প্রমাণিত
হচেছ। অর্থাৎ এখানে মানশর্ত নিবেশন করে দেখানো সম্ভব যে, আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্তমিথ্যা।
এই যুক্তিটি আমরা সংক্ষিপ্ত সত্য সারণীর মাধ্যমে এভাবে লিখে প্রমাণ করতে পারি :
অ ই ঈ অ  ই ঈ  ই অ  ঈ
ঞ ঞ ঋ ঞ ঞ ঋ
সংক্ষিপ্ত সত্যসারণী কৌশল প্রয়োগের পদ্ধতি
এভাবে কোন যুক্তিকে অবৈধ বলে প্রমাণ করতে হলে প্রথম যুক্তিটিকে আগের উদাহরণটির মত সাজিয়ে
লিখতে হবে। তারপর সিদ্ধান্তের মানশর্ত হিসেবে সিদ্ধান্তটির নিচে ‘ঋ’ এবং আশ্রয়বাক্যগুলির নিচে
মানশর্ত হিসেবে ‘ঞ’ বসিয়ে দেখতে হবে সত্য সত্যই আশ্রয়বাক্যটির মান সত্য কিনা। যদি সিদ্ধান্ত
মিথ্যা হয়, আর আশ্রয়বাক্য সত্য হয় তাহলে বুঝতে হবে যুক্তিটি মূলত অবৈধ। একটা উদাহরণ নেয়া যাক
যদি বন্যা হয় তাহলে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
যদি দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় তাহলে অনেক মানুষ মারা যায়।
 যদি বন্যা হয় তাহলে অনেক মানুষ মারা যায়।
যুক্তিটিকে প্রতীকায়িত করলে
উ  ঊ
ঊ  ঋ
 উ  ঋ
যুক্তিটিকে প্রথমে নি¤োক্ত আকারে সাজিয়ে লিখা যাক
(উ  ঊ) (ঊ  ঋ) (উ  ঋ)
ঞ ঞ ঋ
সিদ্ধান্ত‘উ  ঋ’ কে মিথ্যা হতে হলে ‘উ’ কে সত্য এবং ‘ঋ’ কে মিথ্যা হতে হবে। অতএব লিখা যায়
যে,
(উ  ঊ) (ঊ  ঋ) (উ  ঋ)
ঞ ঞ ঞ ঋ ঋ
এবার আশ্রয়বাক্যগুলির দিকে খেয়াল করা যাক। প্রথম আশ্রয়বাক্যটি হল ‘উ  ঊ’। এই বচনটিকে
সত্য হতে হবে। এই বচনটিকে সত্য হতে হলে ‘উ’ এবং ‘ঊ’কে সত্য হতে হবে। এই বচনটিকে সত্য
হতে হলে ‘ঊ’ কে সত্য হতেই হবে। কারণ সিদ্ধান্তথেকে আমরা জানতে পারছি যে, ‘উ’সত্য। তাহলে লেখা যায় যে,
(উ  ঊ) (ঊ  ঋ) (উ  ঋ)
ঞ ঞ ঞ ঞ ঞ ঋ ঋ
দ্বিতীয় আশ্রয়বাক্যটিকেও সত্য হতে হবে। দ্বিতীয় আশ্রয়বাক্যটি হল ‘ঊ  ঋ’। ঊএর সত্যমূল্য প্রথম
আশ্রয়বাক্য থেকে প্রাপ্ত। ‘ঊ’এর সত্যমূল্য হল ‘ঞ’, আর ‘ঋ’এর সত্যমূল্য হল ‘ঋ’। এটি সিদ্ধান্তথেকে
জানা গেছে। কিন্তু ‘ঊ’ যদি ঞ হয় এবং ‘ঋ’ যদি ঋ হয় তাহলে ‘ঊ  ঋ’ সত্য হতে পারে না। অর্থাৎ ‘ঊ
 ঋ’ বচনটি মিথা। সুতরাং সিদ্ধান্তমিথ্যা এবং আশ্রয়বাক্যগুলি সত্য তা প্রমাণ করা যাচেছ না। কারণ
প্রথম আশ্রয়বাক্য ঞ হলেও দ্বিতীয়টি হচেছ না। ফলে যুক্তিটি অবৈধ বলা যাবে না। তাহলে এটিকে এভাবে লিখা যায়
(উ  ঊ)
ঞ ঞ ঞ
(ঊ  ঋ)
ঞ ঋ ঋ
 (উ  ঋ)
ঞ ঋ ঋ
এর অর্থ হল :
(উ  ঊ) (ঊ  ঋ) (উ  ঋ)
ঞ ঞ ঞ ঞ ঋ ঋ ঞ ঋ ঋ
দ্বিতীয় বচনটির ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যটি সত্য বলে দেখানো যাচেছ না। সুতরাং যুক্তিটি বৈধ।
অবৈধতা প্রমাণের এই পদ্ধতিটি সত্যসারণীর সাথে নিবিড়ভাবে স¤পর্কিত। এই পদ্ধতিতে মাত্র একটি
সারির প্রয়োজন হয়। ফলে কম শ্রম দিতে হয় এবং সময় বাঁচে। এই পদ্ধতি সত্য সারণী পদ্ধতির চেয়ে
সরল ও সহজ। তথাপি সত্য সারণী পদ্ধতির মাধ্যমে যে সমস্তযুক্তির অবৈধতা প্রমাণ করা যায় এই পদ্ধতির মাধ্যমেও সে সমস্তযুক্তির অবৈধতা প্রমাণ করা যায়।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। অবৈধতা প্রমাণ পদ্ধতি ব্যাখ্যা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। একটি যুক্তি কখন অবৈধ হয়?
২। যুক্তির অবৈধতা সংক্ষিপ্ত সত্যসারণীর মাধ্যমে প্রমাণ করা যায়।
সংক্ষিপ্ত সত্যসারণী কৌশলের সাহায্যে নি¤েœর যুক্তিগুলির অবৈধতা প্রমাণ করুন
*ক) অ  ই খ) (ঙ া চ)  ছ
ঈ  উ ছ  (চ া জ)
ই া ঈ ঙ  (ূ ঝ  চ)
অ া উ (ঝ  ঙ)  ূ জ
চ  ছ
গ) ঞ  ট ঘ) ঔ  (ক  খ)
ট  (ঠ. ড) ক  (ূ খ  গ)
ঠ  (ঞ া ঢ) (খ া গ)  ঘ
ঞ া ঢ ঔ  ঘ
 ঞ . ঢ
ঙ) ঊ  (ঋ া এ)
এ  (ঐ . ও)
ূ ঐ
ঊ  ও
সমাধান
ক) অ  ইঞ
ঈ  উঞ
ই  ঈঞ
অ  উঞ

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]