বিশিষ্ট বচন কাকে বলে? বচনাকার কাকে বলে? বচন ও বচনাকারের মধ্যে পার্থক্য সাধারণ বচনকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? এদের প্রতীক রূপগুলি লিখুন।

বিশিষ্ট বচন ও সাধারণ বচন
সরল বচনসমূহ পর¯পর সত্যাপেক্ষকরূপে যুক্ত হয়ে যৌগিক বচন গঠনের মাধ্যমে যে যুক্তি তৈরি করে
শুধু তার বৈধতা প্রমাণের যৌক্তিক পদ্ধতি নিয়েই আমরা এ যাবৎ আলোচনা করেছি, যা নি¤েœর যুক্তিটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যেমন
সকল মানুষ হয় মরণশীল।
রহিম হয় মানুষ।
 রহিম হয় মরণশীল।
প্রদত্ত যুক্তিটিতে ‘রহিম হয় মানুষ’ ও ‘রহিম হয় মরণশীল’ বাক্য দুটিকে বলা হয় বিশিষ্ট বচন এবং
‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ আশ্রয় বাক্যটিকে বলা হয় সাধারণ বচন। সুতরাং বিশিষ্ট বচন বলতে নির্দিষ্ট
কোন কিছু বা নির্ধারিত ব্যক্তিবিশেষকে বুঝায় এবং সাধারণ বচন বলতে সকল কিছু বা অন্তত কোন
কিছুকে নির্দেশ করে যেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বা বিশিষ্ট কোন কিছু বর্তমান থাকে।
অযৌগিক বচন দ্বারা গঠিত যুক্তির বৈধতা তার অভ্যন্তরীণ গঠন কাঠামোর ওপর নির্ভর করে
অযৌগিক বচন দ্বারা গঠিত যুক্তিটির বৈধতা তার অভ্যন্তরীণ যৌক্তিক গঠন কাঠামোর ওপর নির্ভর করে।
এই ধরনের যুক্তির বৈধতা বিচারের জন্য অযৌগিক বচনসমূহের বিশ্লেষণ ও অভ্যন্তরীণ গঠন কাঠামো
প্রতীকায়নের পদ্ধতি নিয়ে আমরা ক্রমান্বয়ে আলোচনা করব।
ব্যষ্টি শুধু ব্যক্তি নয় অন্য যে কোন জিনিসকে বুঝায়
উপরে প্রদত্ত যুক্তিটির দ্বিতীয় আশ্রয়বাক্যটি একটি বিশিষ্ট বচন এবং এটি ঘোষণা করছে যে, রহিম এমন
একটি ব্যক্তি (রহফরারফঁধষ) যা মানুষ গুণস¤পন্ন। আমরা ‘রহিম’কে উদ্দেশ্য পদ এবং ‘মানুষ’কে বিধেয়
পদ বলতে পারি। যে কোন সদর্থক বিশিষ্ট বচন ঘোষণা করে যে, এর উদ্দেশ্য পদ দ্বারা সূচিত ব্যক্তির
বিধেয় পদ দ্বারা সূচিত গুণাবলী রয়েছে। ব্যষ্টি বলতে শুধু ব্যক্তিকেই বুঝায় না, অন্য যে কোন
জিনিসকে, যেমন প্রাণী, শহর, জাতি, গ্রহ ইত্যাদিকেও বুঝায় যার গুণগুলি তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিধেয় হতে
পারে। গুণ বলতে শুধু বিশেষণকেই বুঝায় না, নাম ও কাজকেও বুঝায়। যেমন, ‘রহিম হয় ধনী’ এবং
‘রহিম একজন ধনবান’ দুটি বচনের অর্থ একই। এই দুটি বচনই ঘোষণা করছে, রহিম একজন ধনী লোক।
সাধারণত প্রতীকায়নের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বুঝতে ধ-ি রূপে এবং গুণ বুঝাতে অ-ড পর্যন্তআকারে ব্যবহৃত
হয়
যে সরল বচনে ব্যক্তি বিশেষের নাম উল্লেখ থাকে তাকে বিশিষ্ট বচন বলে। বিশিষ্ট বচনের প্রতীকায়নে
ব্যক্তির স্থানে ইংরেজি বর্ণমালার ধ থেকে ি এবং গুণের স্থানে অ থেকে ড (অর্থাৎ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ছোট
এবং গুণের ক্ষেত্রে বড় হাতের অক্ষর) ব্যবহৃত হবে। বাক্যে প্রদত্ত পদের ইংরেজি শব্দের প্রথম অক্ষর
ব্যবহৃত হবে এবং গুণসূচক বর্ণটি আগে বসবে। যেমন ’রহিম হয় মরণশীল’এর প্রতীক রূপ হবে গৎ। অনুরূপভাবে
তানিম হয় দয়ালু  কঃ
জামাল হয় সৎ ঐল
ঢাকা হয় শহর  ঈফ
বচনাকার হল বচন কাঠামো
ব্যক্তিকে বুঝানোর জন্য যে প্রতীক ব্যবহৃত হয় তাকে বলা হয় ব্যক্তি ধ্রæবক । আর গুণকে বুঝানোর জন্য যে প্রতীক ব্যবহৃত হয় তাকে ‘বিধেয় ধ্রæবক’ বা ‘গুণ ধ্রæবক’
বলে। ব্যক্তি ধ্রæবক ব্যবহার না করে যে কোন ব্যক্তিনাম গ্রাহক প্রতীক
ব্যবহার করেও বিশিষ্ট বচনকে প্রকাশ করা যায়। এখানে এমন একটি অধ্রæবক প্রতীক ব্যবহার করা যায়
যেটি প্রয়োজন মত সরিয়ে তার স্থানে যে কোন ব্যক্তির নাম বসিয়ে দেয়া যায়। এই প্রতীকটি হল ী। ী
হল অধ্রæবক বা গ্রাহক প্রতীক । যেমন গী এর অর্থ হল 'ী' গ গুণস¤পন্ন। গী বচন
নয়। এটা বচনাকার বা বচনাপেক্ষক বচনাকার কোন বচন নয়, বচন
কাঠামো মাত্র। তাই গী সত্য বা মিথ্যা হতে পারে না। কিন্তু বচন সত্য বা মিথ্যা হতে পারে। ী এর
পরিবর্তে যদি কোন ব্যক্তির নাম সেখানে বসান হয় তবেই সেটি বচন হয়ে যায়। যেমন ‘ী’ এর স্থানে ‘ৎ’
বসালেই ‘গৎ' একটি বচন হবে। এর অর্থ হবে রহিম মরণশীল গুণস¯পন্ন। বচনাপেক্ষকে অধ্রæবকের
পরিবর্তে ধ্রæবক প্রতিস্থাপন করে বচন পাওয়ার প্রক্রিয়াকে নিদর্শায়ন বলে। নঞর্থক
বিশিষ্ট বচনসমূহ যেমন ‘করিম নয় সৎ’ এবং ‘রহিম নয় সৎ’ কে আমরা প্রতীকায়ন করতে পারি ‘ূঐশ’
এবং ‘ূঐৎ’। ‘ূঐী’ বচনাপেক্ষক থেকে নিদর্শায়নের মাধ্যমে আমরা ূঐশ এবং ূঐৎ প্রতিস্থাপক দৃষ্টান্তদুটি পাই।
সাধারণ ও বিশিষ্ট বচনের পার্থক্য
সাধারণ বচন ও বিশিষ্ট বচনের মধ্যে পার্থক্য হল সাধারণ বচনে বিশিষ্ট বচনের মত কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি
বা ব্যষ্টির নাম উল্লেখ থাকে না। যেমন ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ এবং ‘কতক জিনিস হয় ভঙ্গুর’।
নিদর্শায়নের মাধ্যমে এই বচনগুলি পাওয়া যায় না, বচনাপেক্ষক থেকে এসব বচন পাওয়া যায়। তাই
এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় সাধারণীকরণ বা মাণকবদ্ধকরণ। উপরে ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’এই সাধারণ
বচনটিকে আমরা এভাবেও প্রকাশ করতে পারি
প্রদত্ত যে কোন ব্যষ্টির ক্ষেত্রে সেটি যা-ই হোক সেটি হয় মরণশীল।
এখানে অপেক্ষিক সর্বনাম ‘সেটি’ তার পূর্ববর্তী ‘মানুষ’ (গধহ) শব্দটিকে নির্দেশ করে। আমরা সর্বনাম
‘সেটি’এর পরিবর্তে ব্যক্তি অধ্রæবক (বসিয়ে প্রদত্ত সাধারণ বচনটির পূর্বগকে
শব্দান্তরিত করে এভাবে লিখতে পারি
যে কোন ী এর ক্ষেত্রে, ী হয় মরণশীল।
এই বচনটিকে আমরা এভাবেও প্রকাশ করতে পারি
যে কোন ী এর ক্ষেত্রে, গী।
(ী) কে বলা হয় সার্বিক মাণক
বচনাংশ ‘যে কোন ী এর ক্ষেত্রে’ ‘(ী)’ কে বলা হয় ‘সার্বিক মাণক’ (টহরাবৎংধষ ছঁধহঃরভরবৎ) এবং
একে আমরা যদি প্রতীকায়ন করি এভাবে ‘(ী)’ তাহলে আমাদের প্রথম বচনটির প্রতীকায়ন
(ী) গী
আমরা একইভাবে শব্দান্তরিত করে দ্বিতীয় সাধারণ বচন ‘কতক জিনিষ হয় ভঙ্গুর’কে এভাবে লিখতে পারি
অন্তত একটি জিনিস (ঃযরহম) আছে যা হয় ‘ভঙ্গুর’ ।
অন্তত একটি জিনিস আছে যা এমন যে তা হয় ‘ভঙ্গুর’ ।
অন্তত একটি ী আছে যা এমন যে তা হয় ‘ভঙ্গুর’ ।
অন্তত একটি ী আছে যা এমন যে তা হয় ইী অর্থাৎ (ী) ইী
(ী)কে বলা হয় অস্তিত্ববাচক মাণক
‘অন্তত একটি ী আছে যা এমন যে’ এই বচনাংশটিকে বলা হয় অস্তিত্ববাচক বা সত্তাবাচক মাণক
এবং একে প্রতীকায়ন করা হয় এভাবে ‘(ী)’। এই প্রতীকের সাহায্যে
আমরা ২য় সাধারণ বচনটিকে প্রতীকায়ন করলে পাই
(ী) ইী
বচনাপেক্ষকের পূর্বে মাণক বসালে সাধারণ বচন পাওয়া যায়
সাধারণ বচন হল বচনাপেক্ষকেরই একটি আকার যার পূর্বে সার্বিক অথবা সত্তাবাচক মাণক বসানো হয়।
এটা সু¯পষ্ট যে, কোন বচনাপেক্ষকের সার্বিক মাণকবদ্ধকরণ সত্য হয়, যদি এবং কেবল যদি তার সব
প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য হয় এবং বচনাপেক্ষকের সত্তা মাণকবদ্ধকরণ সত্য
হয়, যদি এবং কেবল যদি তার অন্তত একটি প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্তসত্য হয়। যদি আমরা স্বীকার করি যে
অন্তত একটি ব্যষ্টি আছে তাহলে প্রত্যেকটি বচনাপেক্ষকের অন্তত একটি প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্তআছে (সত্য
অথবা মিথ্যা)। এই অনুমান থেকে যদি বচনাপেক্ষকের একটি সার্বিক মাণকবদ্ধকরণ সত্য হয় তাহলে
এর সত্তাবাচক মাণকবদ্ধকরণও সত্য হবে।
সার্বিক ও অস্তিত্ববাচক বচন দু’টির মধ্যকার আরেকটি স¤পর্ককে অতিরিক্ত দুটি সাধারণ বচন যথা
‘কতক জিনিস নয় ভঙ্গুর’ এবং ‘কোন জিনিস নয় ভঙ্গুর’ এর মাধ্যমে দেখানো যেতে পারে। ‘কতক
জিনিস ভঙ্গুর’ বচনটির প্রতীক রূপ হল ‘(ী) ূ ইী’ এবং ‘কোন জিনিস নয় ভঙ্গুর’ বচনটির প্রতীক
রূপ হল ‘(ী) ূ ইী’। এ থেকে দেখা যায় যে, একটি বচনাপেক্ষকের সার্বিক মাণকবদ্ধকরণের নঞর্থক
রূপটি যৌক্তিকভাবে নতুন বচনাপেক্ষক, যা প্রথম বচনাপেক্ষকের সম্মুখে নেতিবাচক চিহ্ন স্থাপনের
কারণে গঠিত হয় । তাহলে আমরা চার প্রকারের সাধারণ বচন পেলাম
(১) সদর্থক সার্বিক মাণক
(২) নঞর্থক সার্বিক মাণক
(৩) সদর্থক অস্তিত্ববাচক মাণক
(৪) নঞর্থক অস্তিত্ববাচক মাণক
সার্বিক ও অস্তিত্ববাচক মাণক তথা বচনসমূহের মধ্যকার স¤পর্ককে নি¤োক্ত বর্গক্ষেত্রের মাধ্যমে বর্ণনা
করা যায়, যেখানে গ্রিকবর্ণ ‘ফাই’ () কে যে কোন গুণের প্রতীক হিসেবে আমরা ব্যবহার করতে পারি।
যদি ধরে নেয়া হয় যে, জগতে অন্তত একটি ব্যষ্টি আছে তাহলে আমরা বলতে পারি যে, উপরের বচন
দুটির মধ্যে বিপরীত বিরোধিতার সম্বন্ধ বিদ্যমান। তারা একত্রে মিথ্যা হতে পারে, কিন্তু একত্রে সত্য
হতে পারে না। নিচের বচন দু’টির সম্বন্ধ অধীন-বিপরীত বিরোধিতার। তারা একত্রে সত্য হতে পারে,
কিন্তু মিথ্যা হতে পারে না। বচনগুলি যখন বর্গক্ষেত্রের ঠিক উল্টো দিকে থাকে তখন তাদের মধ্যকার
সম্বন্ধকে বলা হয় বিরুদ্ধ বিরোধিতার সম্বন্ধ। এদের একটি সত্য হলে অন্যটি অবশ্যই মিথ্যা হবে। এবং
শেষত প্রতি পার্শ্বের ক্ষেত্রে নিচের বচনের সরাসরি উপরের বচনের মধ্যকার সম্বন্ধটি হল অসম
বিরোধিতার। এদের উপরের বচনটির সত্যতার দ্বারা নিচের বচনটির সত্যতা নিরূপিত হয়।
বিপরীত (ী) ী (ী)
রচনামূলক প্রশ্ন
১। মাণক কী? উদাহরণ সহকারে সার্বিক ও সত্তাবাচক মাণকের স্বরূপ ও পার্থক্য উল্লেখ
করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। বিশিষ্ট বচন কাকে বলে? কিভাবে এটি প্রতীকায়ন করা যায়?
২। বচনাকার কাকে বলে? বচন ও বচনাকারের মধ্যে পার্থক্য দেখান।
৩। সাধারণ বচনকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? এদের প্রতীক রূপগুলি লিখুন।
১। নিচের বচনগুলি প্রতীকায়ন করুন
ক) ববিতা নয় দয়ালু।
খ) জামিল হয় সাহসী।
গ) কতক মানুষ হয় জ্ঞানী।
ঘ) সকল বাঘ হয় হিংস্র।
ঙ) কোন মানুষ নয় ফেরেস্তা।
২। সত্য হলে ‘স’ মিথ্যা হলে ‘মি’ লিখুন।
ক) 'ী' হল অধ্রæবক যাকে পরিবর্তন করা যায়।
খ) গুণ প্রতীকায়নের জন্য ইংরেজি ছোট হাতের অক্ষর ব্যবহৃত হয়।
গ) (ী) প্রতীকটিকে বলা হয় সার্বিক মাণক।
ঘ) বচনাপেক্ষক থেকে বচন পাওয়ার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘সাধারণীকরণ’।
ঙ) বিপরীত বিরোধিতার সম্বন্ধযুক্ত বচন দুটি এক সাথে সত্য হতে পারে না।
সঠিক উত্তর
১। ক) ূকন খ) ইল গ) (ী)ডী ঘ) (ী)ঋী ঙ) (ী)ূঅী
২। ক) স খ) মি গ) মি ঘ) স ঙ) স

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]