অজীবজনিবাদ ব্যাখ্যা করুন। জৈবিক প্রক্রিয়ার যান্ত্রিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করুন।

আমরা বিগত পাঠে যন্ত্র ও জীব দেহের পার্থক্য আলোচনা করেছি। বর্তমান পাঠে আমরা
জীবনের যান্ত্রিক ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা করবো। যান্ত্রিক মতবাদের মতে, জীবন জড় থেকেই
উদ্ভূত এবং জড়েরই জটিল রূপমাত্র।
প্রাণের স্বরূপ : যান্ত্রিক মতবাদ
যান্ত্রিকবাদের মতে, প্রাণ জড়েরই জটিল রূপমাত্র এবং জীবদেহ একটি জটিল যন্ত্রমাত্র। প্রাণ
ও জড়ের মধ্যে কোন বিশেষ পার্থক্য নেই বরং এদের মধ্যে শুধুপরিমাণগত পার্থক্য রয়েছে।
জড় ও গতির যৌগিক প্রক্রিয়ার ফলে সমস্ত জীবের উদ্ভব হয়ে থাকে।
জড়বাদীরা তাঁদের মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যার সাহায্য নিয়ে
থাকেন। তাঁদের মতে, যে কোন জীবদেহ বিশ্লেষণ করলেই কার্বন, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন,
ক্যাালসিয়াম প্রভৃতি রাসায়নিক উপাদান দেখতে পাওয়া যায়। তাই জীবদেহ ও জড় পদার্থের
মধ্যে উপাদানের দিক থেকে কোন পার্থক্য দেখা যায় না। জীবদেহ ও জড় পদার্থের মধ্যে শুধু
পার্থক্য এই যে, জীব দেহের মধ্যে একটা জটিল গঠন ব্যবস্থা দেখা যায় অর্থাৎ যন্ত্রের তুলনায়
জীবদেহ হলো জটিলতর। জড়বাদীদের মতে, ভৌতিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফলেই জীব
কোষের উদ্ভব হয়ে থাকে। এই জীবকোষ বহু কোষে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও জীবদেহের সৃষ্টি করে।
অজীবজনিবাদ
জড়বাদীদের মতে, জীবদেহে কোন রহস্যজনক প্রাণ শক্তির (ারঃধষ ভড়ৎপব) স্থান নেই।
প্রাণশক্তি জড় শক্তির একটি বিশেষ রূপমাত্র। প্রাণ জৈবিক প্রক্রিয়া থেকে স্বতন্ত্র কিছুনয়।
যন্ত্রের মতো জীব দেহকেও যান্ত্রিক কার্যকারণ সম্পর্ক দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। যন্ত্রবাদ বা
জড়বাদের মূল বক্তব্য এই যে, যন্ত্র ও জীবদেহ একই জড় শক্তির দুটি ভিন্ন প্রকাশমাত্র।
ভৌতিক ও রাসায়নিক ক্রিয়ার সাহায্যে প্রাণের ব্যাখ্যা করাই যন্ত্রবাদীদের মুখ্য উদ্দেশ্য।
প্রাণের মূলে রয়েছে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং জড় শক্তির ক্রিয়া। তাঁদের মূলকথা এই
যে, জড় থেকেই প্রাণের উৎপত্তি। প্রাণ সম্পর্কে জড়বাদীদের এই অভিমতকে অজীবজনিবাদ বলা হয়।
জৈবিক প্রক্রিয়ার যান্ত্রিক ব্যাখ্যা
জড়বাদীদের মতে, উদ্দীপকের রাসায়নিক আকর্ষণের ফলেই জীব দেহের মধ্যে স্বতঃস্ফ‚র্ত
প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তাই জীবদেহ পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য বিধান কালে যে উত্তেজনা
দেখায়, তার মূলে যন্ত্রবাদীরা কোন প্রাণ শক্তির উপস্থিতি স্বীকার করেন না। জীব দেহের উপর
উদ্দীপকের প্রতিক্রিয়াকে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা করার ব্যাপারে যন্ত্রবাদীদের মধ্যে বিশেষ
আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। প্রাচীন গ্রিক পরমাণুবাদী থেকে শুরু করে কোপারনিকাস, গ্যালিলিও
ডেকার্ট, নিউটন প্রমুখ মনীষীরা যন্ত্রবাদের ভিত্তি আরও সুদৃঢ় করেন। এর পরে হার্বার্ট স্পেন্সার
ও ডারউইন বর্তমান কালের যন্ত্রবাদের অনেক উন্নতি সাধন করে এক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেন।
হাক্সলি (ঐীঁষবু) তাঁর প্রসিদ্ধ ‘ফিজিক্যাল বেসিস অব লাইফ' (চযুংরপধষ ইধংরং ড়ভ খরভব)
গ্রন্থে গ্রিক পরমাণুবাদীদের প্রাণ সম্পর্কীয় যান্ত্রিক মতবাদকে আরও জোরালোভাবে সমর্থন
করেন। টেন্ডন (ঞবহফড়হ)সহ অনেক আধুনিক বিজ্ঞানীও যান্ত্রিক মতবাদ সমর্থন করেছেন।
তাঁদের মতে, জড় ও গতি শক্তির যৌথ প্রক্রিয়ার ফলেই এ জগতে নতুন নতুন বস্তুর আবির্ভাব ঘটে থাকে।
সমালোচনা
যন্ত্রবাদীদের মতবাদ জড়বাদের স্বাভাবিক পরিণতি ছাড়া আর কিছুই নয়। জড় ও প্রাণ এক ও
অভিন্ন হতে পারে না, কেননা জড় ও প্রাণের মধ্যে মৌলিক ও গুণগত পার্থক্য রয়েছে।
প্রাণ সংযুক্ত জীবকোষে এমন কতগুলো গুণ রয়েছে, যার উদ্ভব ভৌতিক ও রাসায়নিক পদার্থ
থেকে হতে পারে না। যান্ত্রিক ব্যাখ্যা সব বিষয়ে চলে না। পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যায়
যান্ত্রিক ব্যাখ্যা চলতে পারে, কেননা এসব বিজ্ঞান জড় পদার্থ নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু
প্রাণের এমন কতগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেগুলোর যান্ত্রিক ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব নয়।
যন্ত্রবাদীদের মতে, প্রাণ জড় থেকে উদ্ভূত এবং গুণের দিক থেকে প্রাণ ও জড়ের মধ্যে কোন
পার্থক্য নেই, যন্ত্রবাদীদের এ মত সঠিক নয়। জড় প্রাণের আবির্ভাবের জন্য বড় জোর একটি
পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তুপ্রত্যক্ষভাবে প্রাণ সৃষ্টি করতে পারে না। তাছাড়া, প্রাণের
আত্মসংরক্ষণ, আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মপুনরুৎপাদন প্রভৃতি ধরনের এমন কতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে,
যেগুলো জড়ের মধ্যে নেই। যদিও কিছুসংখ্যক জীববিজ্ঞানী যান্ত্রিক পদ্ধতিতে জীব দেহের
ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন, তথাপি অনেক আধুনিক জীববিজ্ঞানী ও শরীরতত্ত¡বিদ এ যান্ত্রিক
পদ্ধতিতে প্রাণের ব্যাখ্যা দেয়ার প্রচেষ্টাকে নিরুৎসাহিত করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বৃটিশ
শরীরতত্ত¡বিদ জে. এস. হ্যালডেন -এর নাম উল্লেখ করা যায়। তাঁর মতে, প্রাণ
বলতে যে বস্তুকে আমরা বুঝি তার পেছনে একটি আলাদা সত্তা রয়েছে, যা জড়ের মধ্যে নেই।
তাঁর মতে, জড় ও প্রাণের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে এবং এজন্য প্রাণের যান্ত্রিক
ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব নয়। জে. আর্থার থমসন তাঁর ‘দি সিস্টেম অব এনিমেট লাইফ' (ঞযব
) গ্রন্থে বলেন, “পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যার নীতি দৈনন্দিন
জীবনের শারীরিক কার্যক্রম অথবা আচরণ, উন্নয়ন ও বিবর্তনের পূর্ণ বিবরণ দিতে অক্ষম।”
এসব বিষয় “সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র জৈবিক প্রশ্নের উত্তর দিতে যথেষ্ট নয়” যন্ত্রবাদীদের যুক্তিসমূহ
যন্ত্রবাদীরা যন্ত্রবাদের সমর্থনে যেসব যুক্তি উপস্থাপন করেন তা আরও বিশদভাবে আমরা এখন
আলোচনা করবো :
প্রথমত যন্ত্রবাদীদের মতে, প্রাণ ও জীবন কোন রহস্যময় বস্তুনয়। যদি জীবের জীবন ধারণের
বিভিন্ন প্রক্রিয়া যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা করা যায়, তবেই জীবন ও প্রাণের যথার্থ ব্যাখ্যা করা
সম্ভব। যেহেতুপ্রাণ রহস্যজনক কোন সত্তা নয়, সুতরাং প্রাণের ব্যাখ্যার জন্য কোন রহস্যজনক
তত্ত¡ স্বীকার করার কোন অর্থ হয় না।
দ্বিতীয়ত অধুনা জীববিদ্যার অগ্রগতির ফলে একাধিক জৈবিক প্রক্রিয়াই যান্ত্রিকভাবে ব্যাখ্যা করা
সম্ভব হচ্ছে। ইন্দ্রিয় সংক্ষোভের সাথে সংবেদনের সম্পর্ক, জীব দেহের অঙ্গের ও মাংস পেশীর
বৃদ্ধি প্রভৃতি জৈবিক ব্যাপারকে মোটামুটি যান্ত্রিকভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। তাছাড়া আমাদের
ফুসফুসের কাজের সাথে কামারের হাপরের এবং ¯œায়ুনালীর কাজের সাথে টেলিফোনের তারের
কোন পার্থক্য নেই। সুতরাং যদিও অনেক জৈবিক প্রক্রিয়াকে এখনও যান্ত্রিকভাবে ব্যাখ্যা করা
সম্ভব হয়নি, অদূর ভবিষ্যতে যে সে সমস্ত জৈবিক প্রক্রিয়াও যান্ত্রিকভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না তা বলা যায় না।
তৃতীয়ত বিজ্ঞান সাধারণত যান্ত্রিক ব্যাখ্যাকেই যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা বলে মনে করে। আজকের
দিনের পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যার উন্নতির মূলে আছে সেসব বিষয়বস্তুর যান্ত্রিক ব্যাখ্যা।
জীববিদ্যার সমকালীন উন্নতির মূলেও আছে যান্ত্রিক পদ্ধতির উপর অধিক গুরুত্বারোপ।
জীবনের গতি-প্রকৃতির যান্ত্রিক ব্যাখ্যাই তার অগ্রগতির সূচনা করে। সুতরাং জীবনের ব্যাখ্যা
যান্ত্রিক হওয়াই স্বাভাবিক।
চতুর্থত যন্ত্রবাদীদের মতে, প্রাণের যান্ত্রিক ব্যাখ্যাই প্রাণকে সহজবোধ্য করে তোলে। যান্ত্রিক
ব্যাখ্যা না দিতে পারলে প্রাণ দুর্বোধ্য ও রহস্যময় থেকে যাবে। ভৌতিক প্রক্রিয়াগুলো আমরা
পরীক্ষাগারে পর্যবেক্ষণ করতে পারি। সুতরাং প্রাণকে যদি ভৌতিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়
রূপান্তর করা হয়, তাহলে প্রাণের ব্যাখ্যা সহজবোধ্য হয়। অর্থাৎ জীবনের যান্ত্রিক ব্যাখ্যাই
হলো যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা।
পঞ্চমত প্রাণবাদ শক্তির নিত্যতা নিয়মের বিরোধী। যন্ত্রবাদীদের মতে, জীবের যদি বিশেষ
প্রাণশক্তি থাকে তবে তা জীবনের ভৌতিক ও রাসায়নিক শক্তির সাথে একই পর্যায়ে থাকবে।
সুতরাং দৈহিক শক্তি ক্রমাগত প্রাণশক্তি এবং প্রাণশক্তি দৈহিক শক্তিতে রূপান্তরিত হবে। ফলে
জীবদেহে ক্রমাগত দৈহিক শক্তির উন্নতি ও অবনতি ঘটবে। কিন্তুশক্তির নিত্যতা নিয়মানুসারে কোন দেহে যে পরিমাণ জড় বা শক্তি বাইরে থেকে আসে তার হ্রাস-বৃদ্ধি সম্ভব নয়। সুতরাং প্রাণশক্তি বলে কোন বিশেষ শক্তি নেই।
ষষ্ঠত যন্ত্রবাদীরা তাঁদের সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলেন যে, অনেক জৈবিক দ্রব্য আজকাল
পরীক্ষাগারে সৃষ্টি করা যায়। যেমন পিত্ত রস এবং আরো অনেক বস্তুকে একটা জীবন্ত জীব
দেহের সৃষ্টি বলে মনে করা হয়। সুতরাং এগুলোর মধ্যে এক প্রকার বিশেষ প্রাণ শক্তির পরিচয়
পাওয়া যায়। আজকাল এগুলো রাসায়নিক পরীক্ষাগারে উৎপন্ন করা যায়।
সপ্তমত যন্ত্রবাদী হার্বার্ট স্পেন্সারের মতে, প্রাণ হলো “বহিঃশক্তির সাথে আন্তর শক্তির ক্রমাগত
সামঞ্জস্যবিধান”
যন্ত্রবাদীদের যুক্তিগুলো এতক্ষণ আলোচনা করা হলো। এবার তাঁদের যুক্তিগুলোর দোষ-ত্রæটি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
যন্ত্রবাদীদের যুক্তির সমালোচনা
প্রথমত যন্ত্রবাদীদের প্রথম যুক্তি অনুসারে একথা বলা যায় যে, বাস্তবিকই প্রাণ বা জীবন কোন
রহস্যজনক বস্তুনয়। কিন্তুএকথা শুধুমাত্র যন্ত্রবাদীদের বক্তব্যই সমর্থন করে না। প্রাণবাদীরাও
জীবনকে কখনও রহস্যজনক মনে করেন না। তাঁরা জীবনকে জড় থেকে স্বতন্ত্র বলে মনে
করেন বলেই জীবনকে রহস্যজনক বলা যায় না। তাছাড়া, যন্ত্রবাদীরা কেবল জড়ই যে
রহস্যজনক নয়- এ কথার পক্ষে কোন নিখুঁত যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেননি।
দ্বিতীয়তঃ যন্ত্রবাদীদের দ্বিতীয় যুক্তির মধ্যে বেশ সত্যতা আছে বলে মনে হলেও আসলে তা
নয়। একথা সত্য যে, সম্প্রতি কিছুসংখ্যক বিজ্ঞানী জীব দেহের যান্ত্রিক ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা
করেছেন। তবে এক্ষেত্রে যে খুব একটা অগ্রগতি হয়েছে তা বলা যায় না। হ্যালডেন, বোস
প্রমুখ প্রথম শ্রেণীর প্রাণিবিজ্ঞানী জীব দেহের যান্ত্রিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করেননি। তাছাড়া, জীবনের
সামগ্রিকভাবে যান্ত্রিক ব্যাখ্যা সম্ভব হবে এটাও আমাদের একটা বিশ্বাসমাত্র। বিশ্বাস যুক্তি নয়।
সুতরাং জীবনের পূর্ণ যান্ত্রিক ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য আমাদের আরও অনেকদিন হয়তো অপেক্ষা করতে হবে।
তৃতীয়ত পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যার আলোচ্য বস্তুর সাথে জীববিদ্যার আলোচ্য বস্তুর
মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যার আলোচ্য বিষয় হলো জড় পদার্থ।
সুতরাং যান্ত্রিক পদ্ধতি এসব বিজ্ঞানের জন্য খুবই উপযুক্ত হতে পারে। কিন্তুজীববিদ্যার
আলোচ্য বিষয় প্রাণ। প্রাণের কতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে, প্রাণের সাথে জড়ের মৌলিক পার্থক্য
আছে। ফলে জীববিদ্যাকেও পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যার ন্যায় যান্ত্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করতে
হবে একথা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয়।
চতুর্থত যন্ত্রবাদীদের চতুর্থ যুক্তিটি আদৌ সঙ্গত বলে মনে হয় না। কেননা জীবনকে ভৌতিক ও
রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তর করে তার ব্যাখ্যা দিতে পারলে প্রাণ সহজবোধ্য হয়ে উঠবে
যন্ত্রবাদীদের এটা একটা বিশ্বাসমাত্র। এরা উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে তা দর্শাতে পারেননি।
তাঁরা কেবল যে বিষয়টিকে প্রমাণের কথা ভাবছেন, তাকে পূর্ব থেকেই গ্রহণ করে নিয়েছেন।
পঞ্চমত যন্ত্রবাদীদের পঞ্চম যুক্তিটিকে দু'দিক থেকে সাজানো যায়। প্রথমত প্রাণী দেহের
অন্তর্নিহিত অথবা ক্রিয়াশীল ভৌতিক শক্তির পরিমাণ সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়, সুতরাং বৃদ্ধি ও অবনতি নির্ণয় করা যায় না। দ্বিতীয়ত প্রাণশক্তি জড় শক্তির পর্যায়ে নয়। কারণ প্রাণ শক্তির প্রকৃতি হলো জড় শক্তির গতি ও ক্রিয়াকে নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করা। ফলে জড় শক্তির
সাহায্যে প্রাণশক্তি তার উদ্দেশ্য সাধন করতে পারে। প্রাণশক্তি নিজেই সক্রিয়, আর জড়শক্তি নিষ্ক্রিয়।
ষষ্ঠত যন্ত্রবাদীদের ষষ্ঠ যুক্তিটি কোন সত্যিকারের যুক্তি নয়। পরীক্ষাগারে যে জীবকোষের সৃষ্টি
করা হয় তা জীবন্ত নয়, মৃত। জীবন্ত জীবকোষের ক্রিয়া-কর্ম আলাদা। তাদের ক্রিয়া-কর্মকে
ভৌতিক ও রাসায়নিক পদ্ধতির দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না।
সপ্তমত হার্বার্ট স্পেন্সারের ধারণা যুক্তিযুক্ত নয়। কেননা জীবদেহের ভেতর-বাইরের সামঞ্জস্য
রাসায়নিক শক্তির দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না। জীবদেহ হলো স্বনিয়ন্ত্রিত, স্বসামঞ্জস্যপূর্ণ,
স্বরক্ষক প্রজনন শক্তিসম্পন্ন। এটা ভৌতিক ও রাসায়নিক শক্তির জটিল আকার নয়। জীবন হলো নতুন কিছু। জীবন হলো জড় শক্তির চেয়ে উচ্চ স্তরের এক সাংগঠনিক শক্তি।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। জীবন বা প্রাণ কি আসলেই জড়ের জটিল রূপ? আলোচনা করুন।
৪। যন্ত্রবাদীদের যুক্তিগুলো উল্লেখ করুন এবং আলোচনা করে নিজের মতামত দিন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। অজীবজনিবাদ ব্যাখ্যা করুন।
২। জৈবিক প্রক্রিয়ার যান্ত্রিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করুন।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তর লিখুন।
১। প্রাণ হলো বহিঃশক্তির সাথে আন্তঃশক্তির ক্রমাগত সামঞ্জস্যবিধান -উক্তিটি করেন
(অ) হ্যালডেন (আ) নিউটন
(ই) হার্বার্ট স্পেন্সার (ঈ) এরিস্টটল
২। যান্ত্রিক মতবাদ অনুসারে, জীবদেহ ও জড়-পদার্থের মধ্যে পার্থক্য হলো যন্ত্রের তুলনায়
জীবদেহ
(অ) সহজতর (আ) জটিলতর
(ই) সরলতর (ঈ) কোনটিই নয়
৩। ‘ফিজিক্যাল বেসিস অফ লাইফম্ব গ্রন্থটির লেখক
(অ) হার্বার্ট স্পেন্সার (আ) ডারউইন
(ই) হাক্সলী (ঈ) টেন্ডন
৪। ‘দি সিস্টেম অফ এনিমেট লাইফম্ব গ্রন্থটির লেখকÑ
(অ) জে, আর্থার থমসন (আ) জে.এস. হ্যালডেন
(ই) কোপারনিকাস (ঈ) গ্যালিলিও
সত্য হলে ‘স', মিথ্যা হলে ‘মি' লিখুন।
১। যন্ত্রবাদীরা জীবদেহে কোন প্রাণ-শক্তির উপস্থিতি স্বীকার করেন না।
সঠিক উত্তর
১। (ই) ২। (আ) ৩। (ই) ৪। (অ)
১। স

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]