দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির পার্থক্য দার্শনিক পদ্ধতির শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করুন।

দার্শনিক আলোচনা ও অনুসন্ধানের জন্য যে প্রণালী বা পন্থা অবলম্বন করা হয় তাকে
দার্শনিক পদ্ধতি বলে। দেশ-কালভেদে বিভিন্ন দার্শনিক দার্শনিক আলোচনা ও অন্বেষার জন্য
বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করেন। বর্তমান ইউনিটে বিভিন্ন দার্শনিক পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা
হবে। কতিপয় দার্শনিক পদ্ধতির পরিচয় নবম ইউনিটেও বর্ণনা করা হয়েছে। যে কোনো
জ্ঞানের শাখা বা বিষয় আয়ত্ত করতে হলে তার পদ্ধতিসমূহ সম্বন্ধে সম্যক ধারণা লাভ করা প্রয়োজন। পূর্ববর্তী ইউনিট হতে আমরা দার্শনিক সমস্যার একটি মোটামুটি পরিচয় লাভ করেছি। বর্তমান
পাঠে আমরা এসব সমস্যা কিভাবে আলোচনা করা যায় বা সমাধান করা যায় তা নিয়ে
আলোচনা করব। কিভাবে অর্থাৎ কোন্ োপদ্ধতিতে দার্শনিক আলোচনা-অনুসন্ধান করা হবে
এবং করা সঙ্গত সে সম্বন্ধে দার্শনিকগণ স্বাভাবিকভাবে একমত নন। স্থান-কাল-পাত্রভেদে
বিভিন্ন দার্শনিক ও দার্শনিক সম্প্রদায় বিভিন্ন প্রকার দার্শনিক পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন।
দর্শনের ইতিহাস থেকে বোঝা যায়, দার্শনিক পদ্ধতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশেষত ধর্মবিশ্বাস,
যুগের মেজাজ ও সমকালীন চিন্তা-রীতি প্রভ‚ত প্রভাব ফেলেছে।
দার্শনিক পদ্ধতি
দর্শনের পদ্ধতি হলো বিচার-বিশ্লেষণমূলক। কোনো ধারণা প্রত্যয় (পড়হপবঢ়ঃং) বা
সমস্যা -কে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও সামগ্রিক পটভ‚মির আলোকে যুক্তিচিন্তার নিয়ম
ও কৌশলের সাহায্যে বিচার-বিশ্লেষণ করাই দর্শনের পদ্ধতি। আর এই বিচার- বিশ্লেষণের
মাধ্যমে দার্শনিক সমস্যার স্বরূপ বা তাৎপর্য উদ্ঘাটন করাই দর্শনের কাজ।
দার্শনিক পদ্ধতি ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি
বিজ্ঞান পদ্ধতি হিসেবে সাধারণত পরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণভিত্তিক আরোহী অনুমান বা
সাধারণীকরণ নীতি অনুসরণ করে। সমস্ত প্রকৃতিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে
অনুসন্ধানের এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
কিন্তু দর্শনের আলোচ্য বিষয় প্রধানত কতকগুলো প্রত্যয় বলে এতে বিজ্ঞানের উপরোক্ত পদ্ধতি
অনুসৃত হতে পারে না। দর্শনে জগৎ ও জীবনের ভিত্তিস্থানীয় বা মৌলিক প্রত্যয়সমূহ -কে সামগ্রিক
দৃষ্টিকোণ ও পটভ‚মি হতে বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং এসবের তাৎপর্য নির্ণয় করা হয়। আর এসবই করা হয় যুক্তিচিন্তা তথা বুদ্ধিবৃত্তির সাহায্যে।
আমরা জানি, গণিতেও মননাÍক বা বৌদ্ধিক পদ্ধতি অনুসৃত হয়। অবরোহী
অনুমান বা সাধারণীকরণের মাধ্যমেই গাণিতিক স ত্র ও
সিদ্ধান্তসমূহ গড়ে উঠে, এক্ষেত্রে আরোহী অনুমান অনুপস্থিত। কতিপয় দার্শনিক মনে করেন,
গাণিতিক এই পদ্ধতিই হলো দার্শনিক পদ্ধতি।
দর্শনের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, দার্শনিক স্পিনোজার মতো কোনো কোনো দার্শনিক
দর্শনে জ্যামিতিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন। আধুনিক দর্শনের
জনক ডেকার্টের দার্শনিক চিন্তা-প্রণালীও ছিল অবরোহাÍক তথা মননাÍক। তবে দর্শনের
ইতিহাস থেকেই পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে, দর্শনে গাণিতিক বা জ্যামিতিক পদ্ধতির ব্যবহার
সার্থকতা লাভ করেনি। দর্শনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত শব্দ, ধারণা বা প্রত্যয় প্রায়শই গাণিতিক
স্পষ্টতা ও ঋজুতা বজায় রাখতে পারে না। বিভিন্ন দার্শনিক কখনো কখনো একই শব্দ বিভিন্ন
অর্থে ব্যবহার করেন। তাছাড়া গাণিতিক সিদ্ধান্ত নিশ্চয়াÍক। পক্ষান্তরে, দর্শনের সিদ্ধান্ত
সম্ভাব্যমাত্র। এজন্য গণিতের নিশ্চয়াÍক অবরোহী পদ্ধতি দর্শনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে
না। যদি এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হত, তবে দর্শনের সিদ্ধান্তও নিশ্চায়াÍক হত।
দার্শনিক পদ্ধতির শ্রেণীবিভাগ জ্ঞান লাভের
সামর্থ্য, জ্ঞানের উপকরণ ও সীমা প্রভৃতি বিচার-বিশ্লেষণ না করে অনেক দার্শনিক দার্শনিক
আলোচনায় অগ্রসর হয়েছেন। অনেকে আবার দার্শনিক সমস্যা সমাধানের প র্বে উপরোক্ত
জ্ঞানতাত্তি¡ক বিষয়সমূহ নিয়ে প্রথমে আলোচনা করেন। অতঃপর দার্শনিক সমস্যায় ব্রতী হন।
দার্শনিক অন্বেষায় প্রবৃত্ত হওয়ার প্রারম্ভে জ্ঞানতত্তে¡র প্রতি দার্শনিকের এই যে দৃষ্টিভঙ্গি তার
উপর ভিত্তি করে সকল দার্শনিক মতবাদকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় : নির্বিচারী মতবাদ ও
বিচারবাদী মতবাদ। একইভাবে, এসব মতবাদ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতিসমূহকে যথাক্রমে নির্বিচারবাদী
পদ্ধতি ও বিচারবাদী পদ্ধতি বলে আখ্যায়িত করা হয়।
দার্শনিক সমস্যা সমাধান বা অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে যেসব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় সেগুলোকে
বিশ্লেষণী পদ্ধতি, স্বজ্ঞামূলক পদ্ধতি, দ্বা›িদ্বক পদ্ধতি প্রভৃতি পদ্ধতিতে বিভক্ত করা যায়।
পরবর্তী পাঠসমূহে আমরা বিভিন্ন প্রকার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। দার্শনিক পদ্ধতির স্বরূপ ব্যাখ্যা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির পার্থক্য উল্লেখ করুন।
২। দার্শনিক পদ্ধতির শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করুন।
ক) সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে ‘মি’ লিখুন।
১। স্পিনোজা দর্শনে জ্যামিতিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
২। ডেকার্টের দার্শনিক চিন্তা-প্রণালী ছিল অবরোহাÍক।
৩। সকল দার্শনিক মতবাদকে নির্বিচারবাদী ও বিচারবাদীরূপে ভাগ করা যায়।
৪। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের পদ্ধতি হলো মুখ্যত আরোহাÍক।
সঠিক উত্তর ক.
১। স ২। স ৩। স ৪। স

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]