মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ, অনির্ধারণবাদ ও স্ব-নির্ধারণবাদী মতবাদসমূহ

> আমাদের আচার-আচরণ ভাল কি মন্দ ইত্যাদি বিবেচনা করা নৈতিকতার কাজ। এ কাজটি
সুচাওæরূপে সম্পন্ন করতে হলে আমাদের আচার-আচরণকে বুঝা খুবই জওæরী। কিন্তু বিষয়টি খুবই
দুরূহ এ জন্য যে, মানুষের আচার-আচরণ খুবই জটিল ব্যাপার। মনোবিজ্ঞান এ ব্যাপারে
আমাদেরকে কিছুটা সাহায্য করতে পারে। আর এখানেই নৈতিকতার সঙ্গে মনোবিজ্ঞানের
যোগাযোগ।
যেসব বিষয় নৈতিকতার সঙ্গে মনোবিজ্ঞানের সম্পৃক্ততাকে তুলে ধরে তাদের মধ্যে নৈতিক বিষয়ে
মানুষের নির্বাচন ক্ষমতা (ঈযড়রপব) এবং নৈতিক অবধারণ গঠনের পেছনে যে মানসিক বিষয়গুলো
থাকে তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নৈতিক জীবনে প্রথম বিষয়টির ভ‚মিকা খুবই পরিচিত। আমরা নিত্য
বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতির সম্মুখীন হই যেখানে ন্যায়-অন্যায়ের ব্যাপার থাকে। নৈতিক জীবন যাপন
করতে হলে ন্যায়কেই বেছে নিতে হয়। এ বাছাই অবশ্য তেমন শক্ত কিছু নয়, ব্যাপারটা শক্ত হয়ে
দাঁড়ায় যখন দুটো ন্যায়ের মধ্যে আমাদেরকে বেছে নিতে হয়। যেমন ‘ক’ প্রতিশ্রæতি দিল যে, সে
আজ বেলা ৩টায় ‘খ’ এর সঙ্গে দেখা করবে। নিদিষ্ট সময়ের একটু আগে খবর এলো যে, তার
আরেক বন্ধু ‘গ’ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ‘ক’ কি এখন ‘গ’ কে দেখতে যাবে, না ‘খ’ এর সঙ্গে তার যে
প্রতিশ্রæতি আছে তা পালন করবে? যে কাজটি করার সিদ্ধান্তই সে গ্রহণ করুক না কেন অপর কাজটি
করতে না পারার জন্য সে কিছুটা পীড়া অনুভব করবেই; কিন্তু তদ্সত্তে¡ও সে একটা কাজ করারই
সিদ্ধান্তনিবে এবং এই যে সিদ্ধান্তসে নিবে তা প্রমাণ করে যে, তার ইচ্ছার স্বাধীনতা আছে।
কিন্তু সত্যিই কি মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা আছে? প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে, যেমন আমরা আগেই
উল্লেখ করেছি, অনৈচ্ছিক কাজ- যাতে স্বাধীনতা নেই তা নৈতিক কাজ নয়। এই হিসেবে ইচ্ছার
স্বাধীনতাকে নৈতিকতার অন্যতম স্বীকার্য বিষয় বলে মনে করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক বলে মনে
হলেও এটা সত্য যে, আধুনিক মনোবিজ্ঞানীরা, বিশেষ করে আচরণবাদী এবং তৎপূর্ববর্তী মনঃ
সমীক্ষণবাদীরা মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে পুরোপুরি স্বীকার করেন না। তাঁরা মূলত অধিবিদ্যক নির্ধারণবাদের সমর্থক। তাঁদের যুক্তি হলো : সকল জাগতিক ঘটনারই কোন কারণ আছে, সব মানবিক কাজ কর্মই জাগতিক ঘটনা, সুতরাং সব মানবিক কাজ কর্মেরই কারণ আছে। আচরণের ভাল-মন্দ বুঝতে হলে তাদের প্রকৃতিকে বুঝতে হবে। এ ব্যাপারে মনোবিজ্ঞান আমাদেরকে সাহায্য করতে পারে। নৈতিক জীবনে মানুষের নির্বাচন ক্ষমতার সবিশেষ ভ‚মিকা রয়েছে যার উৎস মনোবৈজ্ঞানিক। মানুষের নির্বাচন ক্ষমতা তার ইচ্ছার স্বাধীনতা নির্দেশ করে। মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা আছে কিনা এ ব্যাপারে অবশ্য মনোবিজ্ঞানীরা প্রশ্ন তুলেছেন। এর ফলে
তাদেরকে আমরা নির্ধারণবাদের সমর্থক বলতে পারি।
অর্থাৎ মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, আমাদের কাজকর্মের সবই পূর্ববর্তী কোন না কোন ঘটনা দ্বারা
নির্ধারিত হয়। এ মত অনুযায়ী একজন চোর কিংবা একজন বিকৃত যৌনচারী ব্যক্তি তার কাজের জন্য
দায়ী নয় এই অর্থে যে, তাদের বর্তমান অবস্থা, হয় যে পরিস্থিতিতে তারা বেড়ে ্ওঠেছে তার ফল,
নয় কোন জন্মগত ত্রæটির ফল। শেষোক্ত মতটি ইদানিং বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জিন প্রযুক্তির
উন্নয়নের ফলে। অনেক জীব বিজ্ঞানী এখন দাবি করেন বিশেষ বিশেষ অপরাধের পেছনে বিশেষ
বিশেষ ‘জিনের’ অবদান রয়েছে। এ মতবাদের সূত্র ধরে বহু অনৈতিক কাজকে এখন নৈতিক না
হোক অন্তত আইন সংগত করা হয়েছে বহু দেশে। এ মতবাদকে আমরা নির্ধারণবাদ বলতে পারি।
নির্ধারণবাদ খুব জনপ্রিয় মতবাদ নয়। বিশেষত বিজ্ঞান হিসেবে মনোবিজ্ঞানের অসম্পূর্ণ অবস্থার
আলোকে অনেকে মনে করেন যে, ইচ্ছার স্বাধীনতা প্রশ্নে ব্যবহারবাদী এবং মনঃসমীক্ষাবাদী
মতবাদের বাইরেও মনোবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে। তাঁদেরকে আমরা অনির্ধারণবাদী বলব
এবং তাঁদের যুক্তিগুলোকে নি¤েœাক্তভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে।
অনির্ধারণবাদের যুক্তিসমূহ
(১) আমাদের কান্ডজ্ঞানই বলে দেয় যে, আমাদের কাজ-কর্মে আমরা স্বাধীন। ড. স্যামুয়েল
জনসনের মত প্রখর কান্ডজ্ঞান সম্পন্ন অদার্শনিক একে এভাবে ব্যক্ত করেছেন, “ জনাব, আমরা জানি
যে, আমাদের ইচ্ছা স্বাধীন, আর ব্যাপারটার এখানেই শেষ”। দু‘একটা উদারহণ দিয়ে এই বিষয়টি
বুঝানো যেতে পারে। আমার বই এর তাক থেকে আমি একটি বই তুলে নিলাম। আমি জানি যে আমি
ইচ্ছা করলে পাশের বইটিও নিতে পারতাম। অথবা আমি বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গেলাম। বন্ধুর স্ত্রী
জিজ্ঞেস করলেন, ‘কফি না চা?’ আমি দুটোই পান করি; অতএব কোন্টি আমি চাই এ ব্যাপারে আমার
স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ। এমন হতে পারে যে, কফি খাওয়ার পর আমি ভাবতে পারি, চা খেলেই বোধ হয়
ভাল করতাম। সেই মুহ র্তে আমি জানি আমি ইচ্ছা করলেই চা খেতে পারতাম।
(২) নির্ধারণবাদের সঙ্গে অদৃষ্টবাদের পার্থক্য খুব সামান্যই। অদৃষ্টবাদী বিশ্বাস করেন তাঁর
ভাগ্যে পূর্বে যা লেখা হয়েছে তার বাইরে কিছুই ঘটবে না। এর অর্থ হচ্ছে পৃথিবীতে প্রকৃত কোন
পরিবর্তন সম্ভব নয়; বিশ্ব একটি ঘুড়ি উড়ানোর নাটাই এর মত যা থেকে সময়ের আবর্তনের সঙ্গে
সঙ্গে পূর্বে স্থিরীকৃত ঘটনাবলী বেরিয়ে আসে। এমন একটি বিশ্ব কারো কাম্য হতে পারে না। কেননা
নতুনত্বহীন এ বিশ্ব হবে চরম একঘেঁয়েমিপূর্ণ। এই বিশ্বে নৈতিকতাও সম্ভব নয় এই অর্থে যে, নৈতিক
প্রয়াসের জন্য এখানে যথেষ্ট উৎসাহের অভাব থাকবে।
(৩) মানুষের কাজকর্ম পূর্ববর্তী ঘটনার দ্বারা নির্ধারিত থাকে, পূর্ণ নিশ্চয়তার সঙ্গে একথা বলা
যায় না। একজন ভাল লোক যিনি সব সময়ই ভাল কাজ করে আসছেন, হঠাৎ করে এমন অপরাধ
করে ফেলতে পারেন যা অকল্পনীয়। বাস্তবে এমন ঘটে। মনোবিজ্ঞানীরা প্রায়ই এই ধরনের ঘটনার যে
ব্যাখ্যা দেন তা প্রাকল্পিক, আর তাই সম্পূর্ণ সন্তোষজনক নয়।
অনির্ধারণবাদের সমালোচনা
অনির্ধারণবাদীদের এ সব যুক্তি অবশ্য একদম অকাট্য নয়। তাঁদের প্রথম যুক্তি অর্থাৎ আমি সরাসরি
জানি যে, আমি যে কাজটা করেছি তা না করে বিকল্প অন্য একটি কাজও করতে পারতাম, সব সময়
সত্য নাও হতে পারে। আমি আমার সামর্থ্য সম্পর্কেই ভুল ধারণা পোষণ করতে পারি। তাই দেখা
যায় যাঁরা কোন একটি পেশায় ব্যর্থ তাঁরা প্রায়ই আক্ষেপ করে থাকেন, অন্য কোন বিশেষ একটি
পেশায় তিনি ভাল করতে পারতেন। কিন্তু তাঁকে যাঁরা ভাল জানেন, তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন যে, তিনি ঐ পেশায়ও একই ধরনের ব্যর্থতা প্রদর্শন করতেন। নির্ধারণবাদীদের বিপক্ষে রয়েছেন অনির্ধারণবাদীরা যারা ইচ্ছার স্বাধীনতা স্বীকার করেন। নির্ধারণবাদীদের প্রধান যুক্তি হলো, আমাদের কান্ডজ্ঞানই বলে দেয় যে, আমরা আমাদের কাজে-কর্মে স্বাধীন।
নির্ধারণবাদীদের সঙ্গে অদৃষ্টবাদীদের তুলনাটিও খুব যুৎসই নয়। অদৃষ্টবাদ কর্মস্পৃহাকে ব্যাহত করে,
এই তত্ত¡ ঐতিহাসিকভাবে সমর্থিত নয়। প্রথম যুগের মুসলমানরা কিংবা খ্রিস্টান ক্যালভিনিস্টরা
অদৃষ্টে বিশ্বাস করতেন, কিন্তু তাঁদের কর্মস্পৃহা ছিল অসাধারণ। তাঁরা বিশ্বের বুকে বিরাট পরিবর্তন
এনেছিলেন। অদৃষ্টবাদী আওরঙ্গজেব যুদ্ধের ময়দানে নামাজ পড়েছেন, আবার যুদ্ধও করেছেন।
অনির্ধারণবাদীদেরকে নির্ধারণবাদীরা একথাও বলতে পারেন যে, তাদের তত্ত¡, যেমন সাধারণত মনে
করা হয়, নৈতিকতাকে অসম্ভব করে তোলে না। যেমন লিলি মনে করেন, “এমন কি আমরা যদি এই
মত গ্রহণও করি যে, আমাদের কাজসমূহ পূর্ববর্তী কারণ দ্বারা সম্পূর্ণভাবে নির্ধারিত, তবুও নৈতিক
অবধারণ গঠন আমাদের পক্ষে সম্ভব হতে পারে; যেমন, আমরা প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলীর সৌন্দর্য বা
কদর্যতা সম্পর্কে অথবা বিভিন্ন ধরনের মোটর ইঞ্জিনের ভালমন্দ সম্পর্কে নৈতিক অবধারণ গঠন
করতে পারি।” কিন্তু প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলীর সৌন্দর্য-কদর্যতা কিংবা মোটর ইঞ্জিনের ভাল-মন্দ প্রকৃত
নৈতিক অবধারণ গঠন করে না। নির্ধারণবাদীদের যুক্তির বিপক্ষে এ ব্যাপারে মূল অভিযোগটি হচ্ছে,
নৈতিকতার সঙ্গে যে দায়িত্বের প্রসঙ্গ জড়িত তাঁরা তার কোন সুরাহা করতে পারেন না। এ
প্রসঙ্গটিকে সামনে রেখেই ইচ্ছার স্বাধীনতা বিষয়ে আরেকটি মতবাদ গড়ে ওঠেছে যাকে বলা হয় স্ব- নির্ধারণবাদ।
স্ব-নির্ধারণবাদ ও তার যুক্তিসমূহ
নির্ধারণবাদীদের মূল যুক্তি যে, পৃথিবীর সব কিছুই, এমনকি মানুষের কাজ-কর্মও কোন কোন কারণ
দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, মূলত এই কারণগুলোকে বহিঃস্থ বিষয় হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু বহিঃস্থ কারণ
পুরোপরি কোন ঘটনা ব্যাখ্যা করতে পারে না। এটা জানা কথা যে, ভ‚মিকম্প ঘরবাড়ি বিনষ্টের
কারণ, কিন্তু ঘরবাড়িগুলো যদি খুবই উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয় তাহলে তা বিনষ্ট নাও হতে
পারে। এতে প্রমাণ হয় যে, ভ‚মিকম্পে ঘরবাড়ি নষ্ট হওয়ার একটা অভ্যন্তরীণ কারণও রয়েছে যা
হচ্ছে তাদের দুর্বল কাঠামো। মনোবিজ্ঞানীরা স্বীকার করতে বাধ্য, মানুষের কাজের পেছনে এমন
কিছু অভ্যন্তরীণ কারণ থাকে যার দুর্বলতা বা সবলতা তার কাজের চরিত্র নির্ধারণ করে। মানুষ
যেহেতু একজন সচেতন প্রাণী সেহেতু এটাও তারা স্বীকার করতে বাধ্য যে, তার সবলতা বা
দুর্বলতাগুলো শুধুই তার আয়ত্তাতীত কোন সূত্র থেকে পাওয়া নয়, তাদের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ
রয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, জড়ের স্তরের চেয়ে চেতনার স্তরে কার্যকরণ ভিন্নভাবে কাজ করে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাইরের জগতের একই জিনিষ এক এক মনে এক একভাবে কাজ করতে
পারে। শুঁড়ির দোকানের সাইনবোর্ড একজন মদ্যপায়ীর মনে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে, যারা
মদ্যপান-বিরোধী তাদের মনে ঠিক তার উল্টো প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে। মদ্যপায়ী তা দেখে উল্লসিত
হবে, আর মদ্যপান-বিরোধী দোকানটিকে কোনরকমে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার চিন্তা করবে। শুধু
তাই নয়, “যখন জড় জগতে কয়েকটি শক্তি একসাথে কাজ করে তখন একটা নিয়ম এই
শক্তিগুলোকে একত্রিত করে যাতে করে উৎপাদিত কার্যটিতে প্রত্যেকটি কারণেরই অংশ থাকে।
অপরপক্ষে যখন কয়েকটি পরস্পর বিরোধী প্রেষণা মনকে তাড়িত করে তখন এমন কোন মনস্তাত্তি¡ক
নিয়ম নেই যা আমাদেরকে সঠিকভাবে বলে দিবে কি কার্যটি উৎপাদিত হবে। তবে মনে হয় বাছাই
ক্রিয়ার ফলে সংশ্লিষ্ট কতগুলো প্রেষণা কোন কার্য উৎপাদন করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, আর এর
ফলে যে কার্য উৎপাদিত হয় তা মাত্র কিছু প্রেষণার ফল, সম্মিলিতভাবে সবগুলোর ফল নয়। যখন
আমি অর্থনীতির বদলে দর্শন পাঠ করার সিদ্ধান্তনেই তখন অর্থনীতি পাঠ করার আমার পূর্বতন
অনেক নির্ধারণবাদী একথাও বলতে পারেন যে, আমাদের কাজসমূহ পূর্ব থেকে নির্ধারিত হলেও নৈতিক অবধারণ সম্ভব। তবে এ যুক্তি অচল। শুধু তাই নয়, নির্ধারণবাদীরা নৈতিক দায়িত্বের প্রশ্নটির
সুরাহা করতে পারেন না। এর ফলেই উদ্ভব ঘটেছে স্ব- নির্ধারণবাদের। নির্ধারণবাদীরা কোন
কাজের কেবল বহিঃস্থ কারণের কথা বলে; কিন্তু যে কোন কাজের অন্তঃস্থ কারণও থাকে।
শক্তিশালী বাসনাটি সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং আমার শিক্ষা কার্যক্রম নির্ধারণে এর প্রায় কোন
ভ মিকাই থাকে না।” (লিলি, পৃষ্ঠা ৪৫-৪৬)
মূলকথা হচ্ছে, আমাদের কাজে কর্মে যেটুকু পূর্বনির্ধারণের ব্যাপার থাকে, তা আমাদের নিজেদের
দ্বারাই নির্ধারিত হয়, জড় জগতের মত বাইরের কোন শক্তি দ্বারা নয়। আর একথা তো জানা যে, স্ব-
নির্ধারণ কখনো স্বাধীনতার পরিপন্থী নয়। এই সীমিত অর্থেই ইচ্ছার স্বাধীনতাকে নৈতিকতার স্বীকার্য বিষয় হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। ইচ্ছার স্বাধীনতা কী? নৈতিকতার সাথে ইচ্ছার স্বাধীনতার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করুন।
২। নৈতিকতার স্বীকার্য সত্য হিসেবে ইচ্ছার স্বাধীনতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করুন।
৩। মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ, অনির্ধারণবাদ ও স্ব-নির্ধারণবাদী মতবাদসমূহ আলোচনা করুন? এদের মধ্যে কোন্ মতবাদটিকে আপনি অধিকতর
সন্তোষজনক বলে মনে করেন? আপনার মতের পক্ষে যুক্তি দিন।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন
সঠিক উত্তর লিখুন
১। আচরণবাদী মনোবিজ্ঞানীরা
ক. মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন
খ. মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে পুরোপরি স্বীকার করেন না
গ. উপরের কোনটিই নয়।
২। নির্ধারণবাদীরা মনে করেন
ক. আমাদের সকল কাজ-কর্মই কোন না কোন পূর্ববর্তী ঘটনা দ্বারা নির্ধারিত হয়।
খ. কেবলমাত্র আমাদের অনৈচ্ছিক কার্যাবলীই পূর্ব-নির্ধারিত।
গ. আমরাই স্বাধীনভাবে আমাদের কাজ-কর্ম নির্ধারণ করে থাকি।
৩। অনির্ধারণবাদী নীতিবিদগণ
ক. মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে স্বীকার করেন।
খ. মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেন।
গ. মানুষের অনৈচ্ছিক ক্রিয়ার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেন।
৪। স্ব-নির্ধারণবাদীদের মতে আমাদের কাজ-কর্মে যতটুকু পূর্ব নির্ধারণের ব্যাপারে থাকে তা
ক. জড় জগতের মত বাইরের কোন শক্তি দ্বারা নির্ধারিত হয়।
খ. আমাদেরকে অদৃষ্টবাদের দিকে চালিত হতে বাধ্য করে।
গ. আমাদের নিজেদের দ্বারাই নির্ধারিত হয়।
সত্য/মিথ্যা
১। মানুষের আচরণের ভাল-মন্দ বিচার করাই নৈতিকতার কাজ- সত্য/মিথ্যা।
২। মানুষের আচরণকে ভালভাবে বোঝার ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞান নীতিবিদ্যাকে সহায়তা করেসত্য/মিথ্যা।
৩। মানুষের ঐচ্ছিক ও অনৈচ্ছিক উভয় প্রকার কাজই নৈতিকতার বিবেচ্য বিষয়- সত্য/মিথ্যা।
৪। আচরণবাদী মনোবিজ্ঞানীরা মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাকে পুরোপরি স্বীকার করেন নাসত্য/মিথ্যা।
৫। স্ব-নিয়ন্ত্রণ স্বাধীনতার পরিপন্থী- সত্য/মিথ্যা।
সঠিক উত্তর
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন: ১। খ ২। ক ৩। ক ৪। গ
সত্য/মিথ্যা: ১। সত্য ২। সত্য ৩। মিথ্যা ৪।সত্য ৫। মিথ্যা

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]