যুক্তির কাঠামো বর্ণনা করুন। যুক্তি চেনার উপায় ব্যাখ্যা করুন।

যুক্তি হলো যুক্তিবিদ্যার মূল আলোচ্য বিষয়। অশুদ্ধ যুক্তি থেকে শুদ্ধ যুক্তিকে পৃথক করার জন্য বিভিন্ন
উপায় বা নিয়ম-কানুন উদ্ভাবন করাই যুক্তিবিদ্যার প্রধান কাজ। এজন্য যুক্তির যথার্থ কাঠামো কি, তাকে
চেনার উপায় কি? এসব জানা আবশ্যক। যুক্তির স্বরূপ কি, তার অন্তর্গত উপাদানসমূহ কি কি, ভাষায়
এটি কিভাবে প্রকাশিত হয়? এসব জানলে যুক্তিকে বুঝা ও চেনা যাবে।
যুক্তির কাঠামো : অনুমান ও যুক্তি
দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সময়ই আমরা নানা রকম অনুমান করি। ঘন কালো মেঘ দেখে অনুমান করি বৃষ্টি
হবে। আমাদের এই অনুমানের ভিত্তি হলো আমাদের পূর্বজ্ঞান। আমরা আগেই জানি বা জেনেছি যে,
ঘন কালো মেঘ থেকে সাধারণত বৃষ্টি হয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, অনুমান হলো এমন একটি
মানসিক প্রক্রিয়া যার সাহায্যে এক বা একাধিক জানা বা প্রদত্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন
তথ্যে উপনীত হওয়া যায়।
অনুমান কথাটি দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে : ১। মানসিক ক্রিয়ারূপে অর্থাৎ স্বীকৃত বচনের ভিত্তিতে
অপর একটি বচনে উপনীত হওয়ার মানসিক প্রক্রিয়ারূপে; এবং ২। বচনের সমষ্টি হিসেবে। অর্থাৎ যে
সমষ্টিতে অনুমান-ক্রিয়া ভাষায় প্রকাশিত হয় তাকে বলা হয় অনুমান। যুক্তিবিদ্যায় মানসিক ক্রিয়াটি
বুঝাবার জন্য অনুমান কথাটিকে ব্যবহার করা হয়। আর অনুমান ভাষায় প্রকাশিত হলে তাকে বলে
যুক্তি।
যুক্তিবিদ্যা অনুমান প্রক্রিয়ায় নয়, তবে এই অনুমানের প্রতিষঙ্গী হিসেবে যে যুক্তি
পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করে। সুতরাং যুক্তি হলো একাধিক বচনের সমষ্টি বা দল
যেখানে একটি বচন অন্যান্য বচন থেকে নিঃসৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ
সকল মানুষ হয় মরণশীল
সকল রাজনীতিবিদ হয় মানুষ
অতএব, সকল রাজনীতিবিদ হয় মরণশীল।
এখানে প্রথম দু’টি বচন থেকে তৃতীয় বচনটি অনিবার্যভাবে বা অবশ্যম্ভাবীরূপে নিঃসৃত হয়েছে। আর
প্রথম বচন দু‘টি তৃতীয় বচনের সত্যতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। এ থেকে বলা যায়, যুক্তি কেবল
কয়েকটি বচনের সমষ্টিমাত্র নয়। যুক্তিতে একাধিক বচন থাকে, এই একাধিক বচনের মধ্যে একটি সম্বন্ধ
বা নির্ভরতা থাকে। এই সম্বন্ধই নিছক বচন সমষ্টিকে একটি সংগঠনে পরিণত করে। সুতরাং যুক্তির
রয়েছে একটি বিশেষ সংগঠন বা কাঠামো।
যুক্তির কাঠামো : আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ত
যুক্তির কাঠামো বর্ণনার জন্য যুক্তিবিদ্যায় আশ্রয় বাক্য সিদ্ধান্ত শব্দ
দু’টি ব্যবহার করা হয়। যুক্তির অন্তর্গত বচনগুলির মধ্যে যে বচনটি অন্য বচন (বা বচনগুলির) ভিত্তিতে
স্বীকৃত বা প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে বলে সিদ্ধান্ত। আর যেসব বচনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তপ্রতিষ্ঠিত হয় তাকে
বলে আশ্রয়বাক্য। সুতরাং আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ রয়েছে।
আশ্রয়বাক্য যৌক্তিকভাবে সিদ্ধান্তকে প্রকাশ করে। বস্তুত সিদ্ধান্তেযা ব্যক্ত করা হয় তার তাৎপর্য
আশ্রয়বাক্য বা আশ্রয়বাক্যসম হের মধ্যে নিহিত থাকে। পূর্বে প্রদত্ত উদাহরণের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে,
‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ এবং ‘সকল রাজনীতিবিদ হয় মানুষ’ এই আশ্রয়বাক্য দু’টি সম্মিলিতভাবে
‘সকল রাজনীতিবিদ হয় মরণশীল’ এই সিদ্ধান্তকে যৌক্তিকভাবে প্রকাশ করছে, অর্থাৎ সিদ্ধান্তটি
আশ্রয়বাক্য দু’টির মধ্যে নিহিত রয়েছে। তবে সিদ্ধান্তআশ্রয়বাক্যের মধ্যে নিহিত থাকলেও তা
আশ্রয়বাক্যের পুনরুক্তি মাত্র নয়। আশ্রয়বাক্যে যা সুপ্ত থাকে বা অস্পষ্ট থাকে সিদ্ধান্তেতা স্পষ্টভাবে বিবৃত হয়।
উল্লেখ্য, আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তপরস্পর সাপেক্ষ পদ অর্থাৎ একই বচন একটি
যুক্তির মধ্যে আশ্রয়বাক্যরূপে এবং অন্য যুক্তির মধ্যে সিদ্ধান্তরূপে ব্যবহৃত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ
পূর্বে যুক্তিটিকে এখানে বিবেচনা করা যায়। যেমন
সকল মানুষ হয় মরণশীল
সকল রাজনীতিবিদ হয় মানুষ
অতএব, সকল রাজনীতিবিদ হয় মরণশীল।
এই যুক্তিতে ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ এটি আশ্রয়বাক্যরূপে গৃহীত হয়েছে; অথচ নিচের যুক্তিটিতে
সকল প্রাণী হয় মরণশীল
সকল মানুষ হয় প্রাণী
অতএব, সকল মানুষ হয় মরণশীল।
অর্থাৎ ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ এটি সিদ্ধান্তরূপে বিবৃত হয়েছে। সুতরাং স্বতন্ত্রভাবে বা বিচিছন্নভাবে
কোন বচনই আশ্রয়বাক্য কিংবা সিদ্ধান্তনয়। কোন যুক্তির মধ্যে স্বীকৃত বচনরূপে ব্যবহৃত হলে তা হবে
আশ্রয়বাক্য। আর যুক্তির অন্তর্গত স্বীকৃত বচন বা বচনসমূহ থেকে নিঃসৃত হলে তা হবে সিদ্ধান্ত।
যুক্তির আদর্শ আকার : প্রসঙ্গ আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ত
যুক্তির আদর্শ আকারে প্রথমে আশ্রয়বাক্যের উল্লেখ থাকে এবং শেষে থাকে সিদ্ধান্তের উল্লেখ। তবে
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভাষার রীতিতে যেসব যুক্তি ব্যবহৃত হয় তাতে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তসর্বদা
এরকম বিধিসম্মতভাবে সাজানো থাকে না। উদাহরণস্বরূপ, নিচের যুক্তিটি আমরা লক্ষ্য করতে পারি :
“তুমি জীবনে উন্নতি করতে পারবে না, কারণ তুমি বড়ই অলস, আর যারা অলসতা করে দিন কাটায় তারা জীবনে উন্নতি করতে পারে না”।
সাধারণ ভাষায় প্রকাশিত এই যুক্তিটিতে সিদ্ধান্তযথা ‘তুমি জীবনে উন্নতি করতে পারবে না’ প্রথমেই
উল্লিখিত হয়েছে। সিদ্ধান্তঅনেক সময় আশ্রয়বাক্যের মাঝেও ব্যবহৃত হয়, যেমন
“যারা চিন্তা করে অগ্রসর হয় না তারা সহসা বিপদগ্রস্তহয়। তুমি সহসা বিপস্ত্রস্তহবে। কেননা তুমি চিন্তা
করে অগ্রসর হও না।”
এই যুক্তিটিতে সিদ্ধান্তযথা ‘তুমি সহসা বিপদগ্রস্তহবে’ আশ্রয়বাক্য দু’টির মাঝখানে উল্লিখিত হয়েছে।
যুক্তিতে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তযেভাবেই সাজানো থাক না কেন, তা যথাযথভাবে সনাক্ত করাই বড়
কথা। কোন্টি আশ্রয়বাক্য আর কোনটি সিদ্ধান্ততা যথাযথভাবে সনাক্ত করতে না পারলে যুক্তির শুদ্ধতাঅশুদ্ধতা নিরূপণ করা অসম্ভব হবে।
অবশ্য যুক্তিতে সচরাচর এমন কিছু শব্দ থাকে যা যুক্তির সিদ্ধান্তকে চিনে নিতে সাহায্য করে। এরূপ শব্দ
সিদ্ধান্ত-বাক্যের অব্যবহিত পূর্বেবসে এবং সিদ্ধান্তকে নির্দেশ করে। সিদ্ধান্তনির্দেশক এরূপ শব্দ হলো,
‘অতএব’, ‘সুতরাং’, ‘কাজেই’, ‘ফলে’, ‘এর ফলে সিদ্ধান্তকরা যায় যে’, ‘সেহেতু’, ‘অনুমান করা যায়
যে’, ‘তাহলে বলা চলে’ ইত্যাদি। আশ্রয়বাক্য নির্দেশক কিছু শব্দ রয়েছে, যেমন ‘কারণ’, ‘যেহেতু’
ইত্যাদি; এরূপ শব্দ আশ্রয়বাক্যের পূর্বেবসে আশ্রয়বাক্যকে নির্দেশ করে।
তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, এমন অনেক যুক্তি আছে যাতে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তনির্দেশক
কোন শব্দ থাকে না। এরূপ ক্ষেত্রে, আমাদেরকে প্রথমত সমগ্র যুক্তিটির প্রসঙ্গ ও অর্থ পরিষ্কারভাবে বুঝে
নিতে হবে; দ্বিতীয়ত বক্তা বা যুক্তিদাতা কোন্ সত্য বা তথ্যের ভিত্তিতে কি প্রমাণ করতে চান তা
ভালভাবে বুঝতে হবে। যে সত্য বা তথ্যকে ভিত্তি বা অবলম্বন করে কিছু বলা হচেছ তা হবে
আশ্রয়বাক্য, আর যা বলতে চাওয়া হচেছ বা দাবি করা হচেছ তা হবে সিদ্ধান্ত। উদাহরণস্বরূপ, ‘সে তো
একদিন না একদিন মরবেই, সে যে মানুষ’। এই যুক্তিতে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তনির্দেশক কোন শব্দ
নেই। কিন্তু আমরা সহজে বুঝতে পারি যে, এখানে ‘সে মানুষ’ এই সত্যকে ভিত্তি করে ‘সে একদিন না
একদিন মরবেই’ এটিকে ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং ‘সে মানুষ’ এটি হলো আশ্রয়বাক্য আর সিদ্ধান্ত
হলো ‘সে একদিন না একদিন মরবেই’। আলোচ্য যুক্তিটিকে যুক্তিবিদ্যাসম্মতভাবে সাজালে নিæরূপ হবে :
সকল মানুষ হয় মরণশীল
সে হয় মানুষ
অতএব, সে হয় মরণশীল।
লক্ষণীয়, এমন কিছু যুক্তি আছে যাতে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তছাড়াও কিছু বাক্য বা বাক্যাংশ থাকে।
এসব বাক্য বা বাক্যাংশকে আপাতদৃষ্টিতে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে; তবে সিদ্ধান্তপ্রমাণের ক্ষেত্রে
এসব গুরুত্বপূর্ণপ্রভাব রাখে। উদাহরণস্বরূপ, “কোন লোকই অ¯পৃশ্য নয় এ তো তুমি জান, তাহলে
মেথররা অ¯পৃশ্য একথা তোমার মুখে শোভা পায় না”। এই যুক্তিটিকে যৌক্তিক আকারে সাজালে পাই:
কোন মানুষ নয় অ¯পৃশ্য
সকল মেথর হয় মানুষ
অতএব, কোন মেথর নয় অ¯পৃশ্য।
যুক্তি চেনার উপায়
আমরা এখন যুক্তি চেনার উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। প্রতিটি যুক্তিতে এক বা একাধিক আশ্রয়বাক্য
এবং একটি সিদ্ধান্তঘোষণা করা হয়। তবে কতকগুলো বচনের একটি ঘোষণা থাকলেই তা যুক্তি হয়ে
যায় না। পত্রিকা, খবরের কাগজ ও ইতিহাস গ্রন্থে বহু ঘোষণা থাকে; কিন্তু তাতে তুলনামূলকভাবে যুক্তি
কমই থাকে। কেননা এসব ঘোষণার অধিকাংশই হলো ঘটনার বিবরণ মাত্র।
যুক্তি হতে হলে যুক্তির মধ্যে ঘোষণা থাকা আবশ্যক, তবে নিছক ঘোষণাই যুক্তি হওয়ার যথেষ্ট শর্ত নয়।
তথাপি লক্ষণীয় ব্যাপার হলো আবশ্যকীয় শর্তই যুক্তিকে নানা প্রকার অযুক্তি (হড়হ-ধৎমঁসবহঃং)
থেকে পৃথক করে। নিচের উক্তিটি বিবেচনা করা যাক :
যদি শিল্পের বিষয়বস্তু হয় অর্থ প্রকাশক তা হলে তা হবে ভাষা।
এরূপ উক্তি বা বচনকে সাপেক্ষ বচন (পড়হফরঃরড়হধষ ঢ়ৎড়ঢ়ড়ংরঃরড়হ) বলা হয়। এই বচনের প্রথম
অংশ তথা উপাদান বচন ‘শিল্পের বিষয়বস্তু হয় অর্থ প্রকাশক’ এটিকে ঘোষণা করা হয়নি। এমনকি এই
বচনের দ্বিতীয় অংশ ‘তা হবে ভাষা’ একেও ঘোষণা করা হয়নি। এখানে কেবল ঘোষণা করা হয়েছে যে,
প্রথমোক্ত অংশ দ্বিতীয় অংশকে সংশ্লিষ্ট বা অভিব্যক্ত (রসঢ়ষু) করে। এখানে আদতে কোন আশ্রয়বাক্য
ঘোষণা করা হয়নি, অথবা কোন অনুমান করা হয়নি, কিংবা কোন সিদ্ধান্তকে সত্য বলে দাবি করা
হয়নি। সুতরাং এখানে কোন যুক্তি নেই। তবে প্রসঙ্গটিকে যদি নিæোক্তভাবে বলা হয়:
যেহেতু শিল্পের বিষয়বস্তু অর্থ প্রকাশক সেহেতু তা হলো ভাষা।
তাহলে এখানে আমরা একটি যুক্তি খুঁজে পাই। যেমন ‘শিল্পের বিষয়বস্তু অর্থ প্রকাশক’ এই বচনটিকে
আশ্রয়বাক্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আর ‘তা হলো ভাষা’ এই বচনটিকে উক্ত আশ্রয়বাক্য থেকে
নিঃসৃত বলে দাবি করা হয়েছে এবং এটিকে সত্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
আবার নিচের উক্তিটিকে প্রথম দৃষ্টিতে যুক্তি বলে প্রতিভাত হলেও বস্তুত কোন যুক্তি নয়। যেমন
বইয়ের নাম, বাঁধাই ও প্রচছদ আকর্ষণীয় হলেই বই ভালো হয় না, সুতরাং সতর্কভাবে বই বাছাই করা
উচিত।
এখানে সিদ্ধান্তনির্দেশক শব্দ ‘সুতরাং’ থাকলেও তার অব্যবহিত পরবর্তী বাক্য ‘সতর্কভাবে বই বাছাই
করা উচিত’ কোন সিদ্ধান্তনয়। ‘বইয়ের নাম, বাঁধাই ও প্রচছদ আকর্ষণীয় হলেই বই ভাল হয় না’ এটিও
কোন আশ্রয়বাক্য নয়। কেননা সমগ্র বাক্যের মধ্য দিয়ে একটি উপদেশ দেয়া হয়েছে মাত্র। আমরা
জানি উপদেশমূলক বাক্য বা বাক্যসমূহ বচন নয়, কেননা তা সত্য-মিথ্যা হতে পারে না।
এককথায়, একাধিক বচনের সমষ্টি হলেই তা যুক্তি হয়ে যায় না। আমরা সেই বচন সমষ্টিকে যুক্তি
বলবো যাতে ঘোষিত বা গৃহীত এক বা একাধিক বচনের সত্যতা থেকে অপর একটি বচনের সত্যতা
নিঃসৃত হয় বলে দাবি করা হয়। উল্লেখ্য এ দাবি সুস্পষ্ট বা অস্পষ্ট হতে পারে। নিচের দৃষ্টান্তদুটির
সাহায্যে পুরো বিষয়টিকে পরিষ্কারভাবে বুঝে নেয়া যায় :
(১) সেলিম নৃতত্তে¡ প্রথম স্থান পেয়ে পাস করে চাকুরি পেয়েছে, তাহলে তার মাসিক বেতন অনেক
বেশি।
(২) সেলিম নৃতত্তে¡ প্রথম শ্রেণী পেয়ে পাস করে চাকুরি পেয়েছে, তাহলে তার জন্য তার পিতাকে আর
টাকা পাঠাতে হবে না।
এখানে (১) একটি যুক্তি এবং এর অন্তর্গত ‘তাহলে’ শব্দটি সিদ্ধান্তনির্দেশক। এখানে ‘তাহলে’ শব্দটির
অর্থ হচেছ ‘সুতরাং’। পক্ষান্তরে (২) কোন যুক্তি নয়, কারণ এখানে ‘তাহলে’ শব্দটির অর্থ ‘এরপর’,
অর্থাৎ এটি সময় নির্দেশক, সিদ্ধান্তনির্দেশক নয়।
বস্তুত যুক্তি ও অযুক্তির পার্থক্য মুখ্যত উদ্দেশ্যগত। উভয়কে নিæোক্ত সূত্রাকারে প্রকাশ করা যায় :
ছ, যেহেতু চ
আমরা যদি এখানে ছ এর সত্যতা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে চ কে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করি তাহলে
এটি হবে একটি যুক্তি। তবে আমরা যদি ছ এর ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে ছ এর কারণ হিসেবে চ এর উল্লেখ
করি তাহলে ‘ছ, যেহেতু চ’ উক্তিটি যুক্তি বলে পরিগণিত হবে না। কেননা আমরা তখনই কোন বচন
সমষ্টিকে যুক্তি বলে গণ্য করব যখন তার উদ্দেশ্য হবে কোন বচনের সত্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য যথোপযুক্ত
হবে। পক্ষান্তরে কেবল ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া উদ্দেশ্য হলে তা যুক্তি বলে পরিগণিত হবে না। আমরা
অবশ্য প্রেক্ষাপট (পড়হঃবীঃ) থেকেই বক্তা বা লেখকের উদ্দেশ্য বা অভিপ্রায় আসলে কি তা বুঝে নিতে পারি।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। যুক্তির কাঠামো বর্ণনা করুন।
২। যুক্তি চেনার উপায় ব্যাখ্যা করুন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। অনুমান ও যুক্তির পার্থক্য লিখুন।
২। আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তপরস্পর সাপেক্ষ পদ - ব্যাখ্যা করুন।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তর লিখুন
১। যুক্তির আদর্শ আকারে প্রথমে
ক) সিদ্ধান্তের উল্লেখ থাকে খ) আশ্রয়বাক্যের উল্লেখ থাকে
গ) বচনের উল্লেখ থাকে ঘ) পদের উল্লেখ থাকে।
২। সিদ্ধান্তনির্দেশক শব্দ সিদ্ধান্তের
ক) অব্যবহিত পরে বসে খ) অব্যবহিত পূর্বেবসে
গ) মাঝখানে বসে ঘ) শেষে বসে।
৩। ‘কাজেই’ শব্দটি
ক) আশ্রয়বাক্য নির্দেশক খ) সিদ্ধান্তনির্দেশক
গ) সময় নির্দেশক ঘ) পরিণতি নির্দেশক।
৪। ‘যেহেতু’ শব্দটি
ক) সিদ্ধান্তনির্দেশক খ) আশ্রয়বাক্য নির্দেশক
গ) কার্যকারণ নির্দেশক ঘ) স¤পর্ক নির্দেশক
সঠিক উত্তর
১. খ) আশ্রয়বাক্যের উল্লেখ থাকে ২. খ) অব্যবহিত পূর্বেবসে ৩. খ) সিদ্ধান্তনির্দেশক
৪. খ) আশ্রয়বাক্য নির্দেশক

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]