জাতীয় শক্তির উপাদানসমূহ বর্ণনা করুন।

জাতীয় শক্তির সংজ্ঞা
জাতীয় শক্তির সংজ্ঞা নিরূপনের পূর্বে ‘শক্তি’ বলতে কি বুঝায় তা জানা দরকার। পদার্থবিদ্যায় শক্তি
বলতে ঊহবৎমু, আর সামাজিক বিজ্ঞানে সামর্থ্য (ঈধঢ়ধপরঃু) বুঝানো হয়। সামাজিক বিজ্ঞানের
পরিভাষায় শক্তি বলতে আমরা এমন এক ধরণের সামর্থ্য বুঝি, যার সাহায্যে কোন মানুষ অন্যের মন
এবং কাজের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। শক্তির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে জর্জ সোয়জেনবার্গার তাঁর
‘চড়বিৎ চড়ষরঃরপং’ নামক গ্রন্থে বলেছেন যে, শক্তি হল একজনের ইচ্ছাকে অন্যের উপর চাপিয়ে দেবার
ক্ষমতা এবং যদি তারা সেটা মানতে না চায় তখন তাদেরকে তা মানতে বাধ্য করার সামর্থ।
‘শক্তি’ সম্পর্কে ধারণা পাবার পর আমরা জাতীয় শক্তির সংজ্ঞা নির্ধারণের প্রয়াস পাবো। একথা ঠিক,
শক্তিই হচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির চ‚ড়ান্ত নির্ধারক। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি জাতি কতটুকু প্রভাব
বিস্তার করতে পারে তা শক্তি দিয়েই বিচার করা হয়। বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমানে যে ক্ষমতার লড়াই
চলছে, তার মূলে নিহিত আছে শক্তি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি জাতির অবস্থান কোথায় হবে এবং
সে কী ভ‚মিকা পালন করবে, তা নির্ধারিত হয় ঐ জাতির শক্তির উপর। প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে শক্তি
ছাড়া আন্তর্জাতিক রাজনীতির কথা চিন্তা করা যায় না।
এখন দেখা যাক, জাতীয় শক্তি বলতে কি বুঝায়। অধ্যাপক লার্চের (খধৎপযব) মতে, জাতীয় শক্তির
অর্থ হ’ল অন্যান্য রাষ্ট্রের উপর কোন রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা এবং নিজের উপর অন্য রাষ্ট্রের
অনুরূপ প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতাকে প্রতিহত করার সামর্থ। অধ্যাপক প্যাডেলফোর্ড এর মতে, জাতীয়
স্বার্থ সংরক্ষণ এবং উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সকলপ্রকার ক্ষমতার যোগফলকেই জাতীয় শক্তি বলে
অভিহিত করা যায়। এসকল সংজ্ঞার আলোকে এক কথায় বলা যায় যে, জাতীয় শক্তি হ’ল একটি রাষ্ট্র
কর্তৃক তার জাতীয় স্বার্থ এবং জাতীয় উদ্দেশ্য সাধনের ক্ষমতার যোগফল।
জাতীয় শক্তির উপাদান
জাতীয় শক্তি অনেকগুলো উপাদানের সমষ্টি। এদের মধ্যে কতকগুলো তুলনামূলকভাবে স্থায়ী আর
বাকিগুলো প্রায়শ পরিবর্তনশীল। তবে জাতীয় শক্তি গঠনে এর প্রত্যেকটিই কমবেশি গুরুত্বপূর্ণ।
জাতীয় শক্তির উপাদানগুলো নি¤œরূপ :
তুলনামুলকভাবে স্থায়ী উপাদান :
১. ভৌগোলিক অবস্থান
২. প্রাকৃতিক সম্পদ
৩. শিল্পসামর্থ
৪. সামরিক প্রস্তুতি
৫. জনসংখ্যা।
অপেক্ষাকৃত অস্থায়ী উপাদান :
১. জাতীয় চরিত্র ও মনোবল
২. সরকারের দক্ষতা
৩. ক‚টনৈতিক নৈপুণ্য।
ভৌগেলিক অবস্থা : সাধারণত: একটি দেশের অবস্থান, আয়তন ও ভ‚-প্রকৃতির উপর সে দেশের
ভৌগোলিক অবস্থা নির্ভর করে। কোন দেশের ভৌগোলিক অবস্থান তার জাতীয় শক্তিকে বৃদ্ধি অথবা
খর্ব করতে পারে। মার্কিন যুওরাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থানকে বিচার করলে আমরা দেখতে পাই যে,
পৃথিবীর অন্যান্য মহাদেশ হতে চতুর্দিক থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে বলে তার শক্তি অনেকাংশে
বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ কোন বৃহৎ শক্তি কখনও তাকে আক্রমণ করতে পারেনি। অনুরূপভাবে ইংলিশ
চ্যানেল দ্বারা মূল ইউরোপীয় ভ‚খন্ড থেকে বিচ্ছিন্নতা ইংল্যান্ডের জাতীয় শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
অপরদিকে হিমালয় ও ভারত কর্তৃক পরিবেষ্টিত অবস্থানের কারণে নেপালের জাতীয় শক্তি
অনেকাংশেই খর্বিত হয়েছে।
ভ‚-অবস্থানের পাশাপাশি কোন দেশের আয়তনও বিভিন্নভাবে জাতীয় শক্তি নির্ধারণে সাহায্য করে।
প্রথমত, বিশাল ভ‚-ভাগ বিপুল সংখ্যক মানুষের আবাসস্থল এবং বিভিন্ন ধরনের সম্পদের সরবরাহ
কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। দ্বিতীয়ত, বিশাল ভ‚-ভাগ বৈদেশিক আক্রমণের সময়ে পশ্চাদপসরণের
সুবিধা সৃষ্টি করে। এর ফলে সামরিক দিক থেকে অনুক‚ল পরিস্থিতির সুযোগ নেয়া যায়। তৃতীয়ত,
দেশের আয়তন বড় হলে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকেন্দ্রকে সীমান্ত-অঞ্চল থেকে দূরে স্থাপন করা যায়। বৈদেশিক
আক্রমণকারীর পক্ষে সেই দেশ দখল করে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সুতরাং একথা বলা যায়,
কোন দেশের আয়তন তার শক্তির সাথে সংশি ষ্ট। -
ভ‚-অবস্থান ও ভ‚-আয়তনের মতো ভ‚- প্রকৃতিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কোন রাষ্ট্রের সীমান্ত এলাকায় নদী,
পাহাড়, সাগর, মহাসাগর ইত্যাদি থাকলে তার প্রতিরক্ষা- ব্যবস্থা খুবই দৃঢ় থাকে। অপরপক্ষে সমতল
ভ‚মির বিশাল সীমান্ত যে কোন সময়ে আক্রমণকারীর দখলে চলে যেতে পারে। অভ্যন্তরীণ ভ‚-গঠনও
জাতীয় শক্তিকে প্রভাবিত করে। সহজ চলাচল সম্ভব হলে জাতীয় ঐক্য ও নিরাপত্তা যতটুকু রক্ষা করা
সম্ভব, দুর্গম এলাকায় ততটুকু সম্ভব নয়।
প্রাকৃতিক সম্পদ : সাধারণভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে খনিজ সম্পদ, বনজ সম্পদ, মৃত্তিকার
উর্বরতা প্রভৃতিকে বুঝায়। কোন জাতির শক্তি ও সামর্থ সেই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের উপর
অনেকাংশে নির্ভরশীল। প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে দুর্বল কোন দেশের পক্ষে খুব সহজে বৃহৎ
শক্তিতে পরিণত হওয়া সম্ভব নয়। শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার জন্যে যে সকল অস্ত্রশস্ত্র
প্রস্তুত করা দরকার তার জন্য লোহা, এ্যালুমিনিয়াম, খনিজ তেল, রাবার, ইউরেনিয়াম, প্লুটোনিয়াম
প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এছাড়া, আধুনিক শিল্প, যান্ত্রিক কৃষিউৎপাদন ব্যবস্থা, যোগাযোগ ও যাতায়াত এবং গণপূর্ত কার্যক্রমের জন্য খনিজ সম্পদের ব্যবহার
অপরিহার্য। কাজেই যেসকল দেশ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ সেসকল দেশ খুব সহজে তাদের সামরিক
শক্তি বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে পারে।
খনিজ সম্পদের মতো খাদ্য শস্য এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কৃষিজ দ্রব্য দেশের শক্তি বৃদ্ধির
পক্ষে খুবই প্রয়োজনীয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সম্পদ ও বনজ সম্পদের অভাব স্বাভাবিক এবং
যুদ্ধকালীন অবস্থায় কোন দেশের পক্ষে অসুবিধার সৃষ্টি করে। খাদ্যের ক্ষেত্রে চিরন্তন ঘাটতি জাতীয়
শক্তি এবং প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে কিভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে অতীতের গ্রেট ব্রিটেন ও
জার্মানি তার দৃষ্টান্ত। খাদ্যশস্যের দিক থেকে আত্মনির্ভরশীলতা জাতীয় শক্তি ও সামর্থ্য বৃদ্ধির
সহায়ক। খাদ্যের ক্ষেত্রে কোন দেশের ঘাটতি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তার দুর্বলতারই প্রমাণ। যদিও
খাদ্যসহ কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদন আধুনিককালে অনেকটাই বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিবিদ্যাগত অগ্রগতির
সাথে সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভ‚মির উর্বরতার গুরুত্বও কোন অংশে কম নয়।
শিল্প সামর্থ : প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যতীত জাতীয় শক্তি যেমন অকল্পনীয় তেমনি শিল্প উৎপাদন ছাড়াও
জাতীয় শক্তির কল্পনা ভিত্তিহীন। কঙ্গোতে প্রচুর পরিমাণে ইউরেনিয়াম আছে। কিন্তু কঙ্গো আমেরিকা
বা রাশিয়ার মত শক্তিশালী নয়। কারণ, কঙ্গোতে ইউরোনিয়াম ব্যবহার করার মত শিল্প বা কারখানা
নেই। আবার ভারতে প্রচুর পরিমাণে কয়লা ও লোহা পাওয়া যায়। তথাপি ভারতকে বৃহৎ শক্তির মধ্যে
গণ্য করা হয় না। কারণ, ভারতে সমস্ত খনিজ দ্রব্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করার মতো শিল্পের
প্রসার ঘটেনি। তাছাড়া, বর্তমান যুগ অস্ত্র প্রতিযোগিতার যুগ। শিল্প সামর্থ না থাকলে জীবন যাত্রার
উচ্চমান অর্জন ও জনকল্যাণ নিশ্চিত করাও সম্ভব নয়। কাজেই, শিল্প সামর্থ ছাড়া জাতীয় শক্তি অর্জন
করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়।
সামরিক প্রস্তুতি : জাতীয় শক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক/উপাদান হচ্ছে সামরিক প্রস্তুতি। সামরিক
শক্তির উপর নির্ভর করেই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শক্তির পরিমাপ করা হয়। সামরিক ক্ষমতার
ভিত্তিতেই ‘পরাশক্তি’ কিংবা ‘প্রধান শক্তির ’ প্রতিষ্ঠা ঘটেছে। কোন দেশের সামরিক প্রস্ততি কতটুকু তা
নির্ভর করে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সংখ্যাগত ও গুণগত বিবেচনার উপর। স্থল, জল ও আকাশ সীমার
নিরাপত্তা এবং এসকল ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করার জন্য তাদের চেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্যের
বাহিনী থাকা দরকার। শুধু অধিক সংখ্যার সশস্ত্র বাহিনীই নয়, তাদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও
সরঞ্জামও থাকতে হবে। এছাড়া, সামরিক নৈপুণ্য, সুযোগ্য সামরিক নেতৃত্ব এবং উচ্চ মনোবলের
অধিকারী সুশৃঙ্খল সামরিক বাহিনী জাতীয় শক্তি অর্জনের জন্যে অপরিহার্য। তবে বর্তমান যুগে
গতানুগতিক পদাতিক, নৌ এবং বিমান বাহিনীর শক্তির উপর সামরিক প্রস্তুতি সর্বাংশে নির্ভরশীল নয়।
আনবিক অস্ত্র এবং আন্ত:মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রসহ কৌশলগত অস্ত্রভান্ডারের উপর জাতীয় শক্তি
বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাই যেসকল দেশ এ ধরনের অস্ত্র উৎপাদন ও তা ব্যবহার করায় যত বেশি
সামর্থ্য অর্জন করতে পারবে সেসকল দেশই হয়ে উঠবে তত বেশি শক্তিশালী।
জনসংখ্যা: জনসংখ্যা কোন দেশ বা জাতির গুরুত্বপূর্ণ শক্তি যদি সে জনসংখ্যা শিক্ষিত ও দক্ষ হয়।
কিন্তু অশিক্ষিত ও অদক্ষ জনসংখ্যা অনেক সময় দেশের জন্যে বোঝা হয়ে উঠে। জনসংখ্যা দেশের
প্রয়োজন ও সম্পদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে সেই দেশের অগ্রগতি সহজসাধ্য হয়। একারণে কোন
সম্পদশালী দেশে জনসংখ্যা কম থাকলে এজন্যে তাদের অগ্রগতি ব্যহত হতে পারে। জাতীয় শক্তি
হিসেবে জনসংখ্যার গুরুত্ব এ কারণে যে, কম জনসংখ্যার কোন দেশের পক্ষেই বৃহৎ শক্তি হয়ে ওঠা
সম্ভব নয়। অধিক জনসংখ্যা বিভিন্ন দিক থেকে জাতীয় শক্তির পক্ষে সহায়ক হয়। যেমন প্রথমত,
শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর জন্য জনবল প্রয়োজন হয়। দ্বিতীয়ত, অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশকে
শত্রু সহজেই দখল করে নিতে পারে না। তৃতীয়ত, দেশের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শ্রমশক্তির সরবরাহ
নিশ্চিত করার জন্যও বেশি জনসংখ্যার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। চতুর্থত, অভ্যন্তরীণ বাজারের
জন্যেও অধিক জনেসংখ্যা অপরিহার্য।
জাতীয় চরিত্র ও মনোবল : জনসাধারণের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও মনোবলের উপর একটি দেশের
জাতীয় শক্তি অনেকাংশে নির্ভরশীল। কোন জাতির মধ্যে আত্মবিশ্বাস, সাহস এবং জাতীয় স্বার্থের
প্রশ্নে সচেতনতা থাকলে সে জাতি টিকে থাকতে ও এগিয়ে যেতে পারে। কিন্তু যে জাতি
আত্মবিশ্বাসহীন, ভীরু এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে অসচেতন, সে জাতি দুর্বল হয়ে থাকে ও সহজেই
পরাভ‚ত হয়। যুদ্ধ কিংবা যে কোন জাতীয় বিপর্যয়কালে জাতির মধ্যে যদি আত্মত্যাগের মানসিকতা
এবং দৃঢ় মনোবল থাকে তাহলে সহজেই বিপর্যয় মোকাবেলা করা সম্ভব । শান্তিকালীন সময়েও
উন্নত চরিত্র ও উচ্চ মনোবল জাতি গঠন ও রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক হয়। এর ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও
বর্ধিত ভ‚মিকা পালনের সুযোগ বেড়ে যায়।
সরকারের দক্ষতা : সরকারের দক্ষতার উপর দেশের সংহতি, অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক অবস্থান
বহুলাংশে নির্ভর করে। সরকার যদি সুদক্ষ হয় তাহলে জাতীয় শক্তির অন্যান্য উপাদানগুলোকে
সমম্বিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে পারে। আর সরকার অদক্ষ হলে দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সাধিত
হয় না। ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও আন্তর্জাতিক ভ‚মিকা প্রসারিত করাও
সম্ভবপর হয়ে উঠে না। সরকারের কর্মকুশলতা ও সুযোগ্য নেতৃত্বের জন্যেই আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন,
চীন প্রভৃতি দেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
কূটনৈতিক মান : জাতীয় শক্তি নির্ধারণে ক‚টনীতির ভ‚মিকা অপরিসীম। ক‚টনীতির মান উন্নত না হলে
জাতীয় শক্তির অনেক উপাদানকেই কাজে লাগানো যায় না। আর ক‚টনীতির মান উন্নত হলে
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অগ্রনী ভ‚মিকা পালন করা সম্ভব হয়। এর ফলে অন্যের প্রভাব ঠেকানো এবং
অন্যের উপর প্রভাব বিস্তারের সুযোগ বেড়ে যায়। অর্থাৎ উচ্চমানের ক‚টনীতির মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থ
সংরক্ষণ এবং পররাষ্ট্র নীতির লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।
জাতীয় শক্তির আলোচিত এ সকল উপাদানের মধ্যে সকল পরিস্থিতিতেই সকল উপাদানের গুরুত্ব
সমান থাকে না। একেক সময়ে ও একেক পরিস্থিতিতে এক বা একাধিক উপাদানের গুরুত্ব
তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়। তবে কোন উপাদানই কখনও গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে না।
সারকথা আন্তর্জাতিক পরিসরে কোন রাষ্ট্র কতটুকু ভ‚মিকা পালন করতে পারবে তা নির্ভর করে সেই
রাষ্ট্রের জাতীয় শক্তির উপর। জাতীয় শক্তির অর্থ হল অন্যান্য রাষ্ট্রের উপর কোন রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার
করার ক্ষমতা এবং নিজের উপর অন্য রাষ্ট্রের অনুরূপ প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতাকে প্রতিহত করার
সামর্থ। জাতীয় শক্তির কতকগুলো স্থায়ী ও কতকগুলো অস্থায়ী উপাদান রয়েছে। তুলনামূলকভাবে
স্থায়ী উপাদানগুলো হল- ভৌগোলিক অবস্থা, প্রাকৃতিক সম্পাদ, শিল্পসামর্থ, সামরিক প্রস্তুতি ও
জনসংখ্যা। অপেক্ষাকৃত অস্থায়ী উপাদানগুলো হল-জাতীয় চরিত্র ও মনোবল, সরকারের দক্ষতা এবং ক‚টনৈতিক নৈপুণ্য।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন :
সঠিক উত্তরটি লিখুন।
১। সামাজিক বিজ্ঞানে শক্তি বলতে কি বুঝায় ?
ক) বল
খ) সামর্থ
গ) যোগ্যতা
ঘ) দক্ষতা।
২। জাতীয় শক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক/উপাদান কোন্টি?
ক) সামরিক প্রস্তুতি
খ) জনসংখ্যা
গ) কুটনৈতিক মান
ঘ) রাজনৈতিক নেতৃত্ব।
৩। কোন ক্ষমতার ভিত্তিতে ‘পরাশক্তি’ বা প্রধান শক্তির প্রতিষ্ঠা ঘটে?
ক) অর্থনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তিতে
খ) সামরিক ক্ষমতার ভিত্তিতে
গ) ক‚টনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তিতে
ঘ) প্রযুক্তিগত ক্ষমতার ভিত্তিতে।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন :
১। জাতীয় শক্তি বলতে আপনি কি বুঝেন?
২। জাতীয় শক্তির স্থায়ী উপাদান কি কি?
রচনামূলক প্রশ্ন :
১। জাতীয় শক্তির উপাদানসমূহ বর্ণনা করুন।
উত্তরমালা: ১. খ, ২. খ, ৩. খ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]