ব্রিটিশ পার্লামেন্টের গঠন ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করুন।

যুক্তরাজ্য বা গ্রেট ব্রিটেনের আইন সভার নাম পার্লামেন্ট। এটি গ্রেট ব্রিটেনের আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত
কার্যক্রমের সর্বোচচ সংস্থা। রাজা বা রানী এবং পার্লামেন্টের দু‘টি কক্ষ - হাউস অব লর্ডস (ঐড়ঁংব ড়ভ
খড়ৎফং)এবং হাউস অব কমন্স (ঐড়ঁংব ড়ভ ঈড়সসড়হং) কে নিয়ে এই পার্লামেন্ট গঠিত হয়েছে। এ
পার্লামেন্ট সুদীর্ঘকাল ধরে প্রথা পদ্ধতির মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিকাশ লাভ করেছে। আধুনিক বিশ্বের
অনেক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের আইন সভা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুকরণে গড়ে উঠেছে বলে যুক্তরাজ্যের
পার্লামেন্টকে ‘‘পার্লামেন্টের জননী” লা হয়।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ক্রমবিকাশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় প্রথম দিকে এটি ছিল রাজার অর্থ
সংগ্রহের জন্য সমর্থন আদায়ের একটি মাধ্যম বিশেষ। পরাক্রমশালী রাজশক্তির অধীনে থেকে সামন্তশ্রেণী
রাজনৈতিক কর্তৃত্ব পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করতে না পেরে তারা যাজক শ্রেণীর সাথে হাত মিলিয়ে রাজশক্তির
বিরুদ্ধাচারণ করে। এর ফলে রাজার ক্ষমতা কিছুটা হলেও হ্রাস পায় এবং সামন্তশ্রেণী পার্লামেন্টকে
নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে রাজার নিরঙ্কুশ ক্ষমতার পরিবর্তে ধনিকবনিক শ্রেণী পার্লামেন্টের উপর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করে। শুরুতে সাধারণ মানুষ কমন্স সভার সদস্য নির্বাচনে
অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় নি। পরে ১৮৩২ সাল থেকে ১৯২৮ সালের মধ্যে অনেক নুতন নুতন আইন
ও সংস্কার সাধিত হওয়ার ফলে পর্যায়ক্রমে মধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে শুরু করে নি¤œ-মধ্যবিত্ত, শহরের শ্রমিক
শ্রেণী, নারীসহ যুক্তরাজ্যের সকল প্রাপ্ত বয়স্ক সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার লাভ করেন।
যুক্তরাজ্যে পার্লামেন্টই আইনগতভাবে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সার্বভৌম। সুদীর্ঘকাল ধরে প্রথা ভিত্তিক
আইন পরিচালিত হওয়ার ফলে এবং কোন লিখিত সংবিধান না থাকায় পার্লামেন্টের ক্ষমতার উপর কোন
আইনগত বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়নি। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েল্স ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের জন্য ব্রিটিশ
পার্লামেন্ট যে কোন আইন প্রণয়ন, বাতিল বা সংশোধন করার ক্ষমতা রাখে। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অবাধে
ইচ্ছেমত আইন প্রণয়ন করতে পারে। পূর্বে যদি কোন আইন বা কাজ অবৈধ বলে গণ্য হত তা বৈধ
ঘোষণার ক্ষমতাও রাখে। যা পূর্বে বৈধ ছিল তা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য বলে ঘোষণা দিতে পারে। আদালতের
সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করতে পারে। প্রয়োজনে জনগণের মতামত না নিয়েই পার্লামেন্ট তার মেয়াদ বর্ধিত
করতে পারে। কোন দেশাচারকে বিলুপ্ত করে অন্য কোন দেশাচারকে পার্লামেন্ট অবশ্য পালনীয় বলে
আইন জারী করতে পারে। পার্লামেন্ট কর্তৃক গৃহীত কোন বিল আইনে পরিণত হতে হলে তাতে রাজা বা
রানীর সম্মতির প্রয়োজন হয়। অবশ্য রাজা বা রানী এরূপ বিলে সম্মতি দিয়ে থাকেন। ১৭০৭ সালের পর
কোন রাজা বা রানীর এরূপ বিলে অসম্মতি দেন নি বিধায় এটি এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অবশ্য
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অটুট আছে বলেই পার্লামেন্ট জনগণের চিন্তা চেতনার
পরিপন্থী কোন আইন প্রণয়ন করে না। পার্লামেন্টের সদস্যগণ কমন ল, পূর্ব দৃষ্টান্ত, প্রচলিত প্রথা ও
জনমতের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রেখেই আইন প্রণয়ন করে থাকে।
পার্লামেন্টের সর্বোচচ মেয়াদ পাঁচ বৎসর হলেও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাজা বা রানী যে কোন সময়
পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিতে পারেন। প্রথা অনুযায়ী সরকারী বাজেট অনুমোদনসহ অন্যান্য অতি প্রয়োজনীয় ও
অপরিহার্য কিছু কার্য সম্পাদনের জন্য পার্লামেন্টকে বছরে অন্ততঃ একবার অধিবেশনে বসতে হয়। প্রত্যেক যুক্তরাজ্যে পার্লামেন্টই আইনগতভাবে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সার্বভৌম। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টকে পার্লামেন্টের জননী বলা হয় সঠিক উত্তরে টিক দিন
১. কয়টি কক্ষ নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট গঠিত ?
ক. ২টি;
খ. ৩টি;
গ. ১টি;
ঘ. ৪টি।
২. যুক্তরাজ্যের সর্বোচচ আইন প্রণয়নের ব্যাপারে কে মূখ্য ভ‚মিকা পালন করে?
ক. স্পীকার
খ. রাজা বা রানী
গ. প্রধানমন্ত্রী
ঘ. কমন্সসভা।
৩. রাজা বা রানী যে কোন সময় পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিতে পারেন কার পরামর্শে?
ক. বিচারপতি;
খ. স্পীকারের;
গ. প্রধানমন্ত্রীর;
ঘ. আইনমন্ত্রীর।
৪. যে কোন আইন বিধিবদ্ধ, বাতিল বা সংশোধন করার ক্ষমতা রাখে -
ক. শাসন বিভাগ;
খ. বিচার বিভাগ;
ঘ. প্রিভি কাউন্সিল‘
ঘ. পার্লামেন্ট।
উত্তরমালাঃ ১, ক ২, খ ৩, গ ৪ ঘ
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্নঃ
১. ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কক্ষ দু’টির নাম কি ?

রচনামূলক প্রশ্নঃ
১. ব্রিটিশ পার্লামেন্টের গঠন ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]