ব্রিটিশ কমন্স সভার ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন।

১২৯৫ সালের ‘মডেল পার্লামেন্ট হতে ধীরে ধীরে ক্রমবিকাশের মাধ্যমে হাউস অব কমন্স বর্তমান রূপ
পরিগ্রহ করেছে। এটি পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ। সদস্যগণ জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার ফলে বংশানুক্রমিক
ও অন্যান্য বিবেচনার দ্বারা প্রাপ্ত লর্ডসভার লর্ডগণের উপর কমন্সসভা প্রাধান্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
কমন্স সভার সদস্য সংখ্যা ৬৫৫ জন। নির্বাচকমন্ডলীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমন্স সভার সদস্য সংখ্যাও
বৃদ্ধি পেয়েছে। দু‘দশক আগেও এর সদস্য সংখ্যা ছিল ৬৩৫ জন।
সদস্যদের যোগ্যতাঃ
ব্রিটেনে গণতন্ত্রের ব্যাপক প্রসারের ফলে ভোটাধিকারেরও প্রসার ঘটেছে। যুক্তরাজ্যে ১৮ বছর বয়স্ক
প্রত্যেক নাগরিক প্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে পরিগণিত ও ভোটদানের অধিকারী। যদিও সার্বজনীন ভোটাধিকারের
নীতি অনুযায়ী প্রত্যেক ১৮ বছর বয়স্ক নর-নারী ভোটদানের অধিকার রাখে কিন্তু পার্লামেন্টের সদস্য
নির্বাচিত হতে হলে তাঁকে ২১ বছর বয়স্ক হতে হবে। আইন অনুযায়ী সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ কিংবা সামাজিক
অবস্থান, নির্বিশেষে যে কোন ২১ বছর বয়স্ক ব্রিটিশ নাগরিক কমন্স সভার নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন।
১৯৫৭ সালে প্রণীত কমন্স সভা অযোগ্যতা আইনানুযায়ী দেউলিয়া, উন্মাদ, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক
কাজের ফলে দন্ডিত ব্যক্তি, ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের চার্চের যাজক, রোমান ক্যাথলিক, চার্চের পুরোহিত,
সরকারী কর্মচারী, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের পিয়ারসন নির্বাচনে
অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তবে উত্তরাধিকার সূত্রে লর্ড সভার সদস্যপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি ১৯৬৩ সালের
পিয়ারেজ আইনানুসারে লর্ড উপাধি ত্যাগ করে কমন্স সভার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। কমন্স
সভার সদস্যগণ একক নির্বাচনী এলাকায় জনগণের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।
কমন্স সভার কার্যকালের মেয়াদঃ
সাধারণতঃ কমন্স সভার কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর। ১৯১১ সালের পূর্বে এই মেয়াদ ছিল ৭ বছর। তবে
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাজা বা রানী যে কোন সময় কমন্স সভা ভেঙ্গে দিয়ে নতুন সাধারণ নির্বাচনের
নির্দেশ দিতে পারেন। যার ফলে সকল সময় কমন্স সভা তার মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ করতে পারবে এমন
কোন কথা নেই। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা, দলে ভাঙ্গন অথবা
সংখ্যাগরিষ্ঠতা হ্রাসের দরুন সরকারের জনপ্রিয়তা প্রশ্নের সম্মুখীন হলে প্রধানমন্ত্রী কমন্স সভা ভেঙ্গে দেয়ার
জন্য রাজা বা রানীকে পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। তা’ছাড়া কমন্স সভার সাধারণ আসন নির্ধারিত
মেয়াদের পূর্বে কোন কারণে শূন্য হলে সেই আসনের জন্য উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কোন
সম্মানিত সদস্যের মৃত্যু, পদত্যাগ, রানীর অধীনে কোন পদে নিয়োগ, কক্ষ থেকে কোন সদস্যের বহিস্কার,
কোন সদস্যের পিয়ার পদপ্রাপ্তির ফলে কমন্স সভার আসন শূন্য হয়ে থাকে এবং এরূপ শূন্য আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
কমন্স সভার অধিবেশনঃ
রাজা বা রানী নিজে বা তাঁর হয়ে রাজকীয় কমিশন বছরে অন্ততঃ একবার পার্লামেন্টের অধিবেশন আহŸান
করেন। ঐতিহ্য অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর পর অধিবেশন আহŸানের বিধান ছিল, কিন্তু সরকারী আয়ব্যয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পাশের জন্য বছরে অন্ততঃ একবার অধিবেশন জরুরি হয়ে পড়ে। এটি এখন কমন্স সভার সদস্যগণ একক নির্বাচনী এলাকায় জনগণের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।
একটি শাসনতান্ত্রিক রীতিতে পরিণত হয়ে পড়েছে। সাধারণত অক্টোবর কিংবা নভেম্বর মাসে কমন্স সভার
অধিবেশন বসে। তবে মধ্যবর্তী সময়ে কমন্স সভার অধিবেশন মূলতবীর ব্যবস্থা আছে। কমন্সসভার
অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষণার সময়ে কোন বিলের আলোচনা অসমাপ্ত থাকলে তা পরবর্তী অধিবেশনের সময়
নতুন করে উত্থাপন করতে হয়। তবে এরূপ কোন অধিবেশন মূলতবীর সময় কোন বিলের উপর আলোচনা
অসমাপ্ত থাকলে অধিবেশন পুনরায় শুরু হওয়ার পর অসমাপ্ত আলোচনা আবার শুরু করা যায়।
কমন্স সভার ক্ষমতা ও কার্যাবলীঃ
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌম ক্ষমতা সম্পর্কে একটি প্রবাদ আছে। পার্লামেন্টের সর্বময় কর্তৃত্ব, জনপ্রিয়
কক্ষরূপে এর গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ, সিদ্ধান্তগ্রহণ ও নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য ডি
লোমী একবার বলেছিলেন, “ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নারীকে পুরুষে এবং পুরুষকে নারীতে রূপান্তরিত করা ছাড়া
সবকিছুই করতে পারে।” পার্লামেন্টের সার্বভৌমিকতা বলতে আসলে কমন্স সভার সার্বভৌমত্বকে বুঝায়।
হারভে ও ব্যাথার কমন্স সভার কার্যাবলীকে পাঁচটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেনঃ যথা-
 সরকারকে সমর্থন, তদারক, সমালোচনা ও তার বৈধতা রক্ষা করা;
 বিতর্কের ব্যবস্থা করা;
 প্রশাসনের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বাধীনতা সংরক্ষণ করা;
 আয়-ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা;
 আইন প্রণয়নে সহায়তা করা।
কমন্সসভার কার্যাবলী নি¤েœবিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলঃ
সরকার গঠনে কমন্স সভার ক্ষমতাঃ
রাজা বা রানী কমন্স সভার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ট দলের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে
অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ দান করেন। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল না থাকলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের
নেতাকে রাজা বা রানী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন। প্রত্যেক সাধারণ নির্বাচনের পর সরকার
গঠনে এভাবে সাহায্য করা সাংবিধানিক রীতি। পার্লামেন্টের কোন কক্ষের সদস্য নন এবং এমন কোন
ব্যক্তি ছয় মাসের বেশী সময় মন্ত্রী পদে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারবেন না। মন্ত্রী সভা গঠনের ক্ষেত্রে কমন্স সভার
ভ‚মিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারের কার্যকাল নিয়ন্ত্রণঃ
যুক্তরাজ্যে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার অন্যতম মৌলনীতি হল কমন্স সভার নিকট মন্ত্রী পরিষদের
দায়িত্বশীলতা। মন্ত্রীগণ ব্যক্তিগতভাবে অথবা যৌথভাবে তাদের কাজের জন্য কমন্স সভার নিকট দায়ী
থাকেন। মন্ত্রী সভা কমন্স সভার সমর্থন বা আস্থা হারালে পদত্যাগ করতে হয়। এমন অবস্থায় সরকারের
পতন ঘটে। তাই মন্ত্রীসভার অস্তিত্ব কমন্স সভার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, ছাঁটাই প্রস্তাব ও
মূলতবী প্রস্তাব গ্রহণ প্রভৃতির মাধ্যমে কমন্স সভা ক্যাবিনেটের কার্যকালকে নিয়ন্ত্রণ করে দায়িত্বশীল সরকার
গঠনে সহায়তা করে থাকে। কমন্স সভার ক্ষমতা প্রসঙ্গে বেজহট বলেছেন, কমন্স সভা যে কোন সময়ে যে
কোন সরকার গঠন করতে পারে, আবার যে কোন সময় যে কোন সরকারকে বিতাড়িত করতে পারে।
তাই তত্ত¡গত বিশ্লেষণে বলা হয়, কমন্স সভাই মন্ত্রিসভাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
আইন প্রনয়ণ সংক্রান্তকার্যঃ
যুক্তরাজ্য ও তার উপনিবেশগুলোর জন্য কমন্স সভা নতুন নতুন আইন প্রণয়ন, আইন বাতিল কিংবা
সংশোধন, পরিমার্জন, সংযোজন ও বিয়োজনের মত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা রাখে। কমন্স সভা প্রতিনিধিত্বমূলক
কক্ষ বিধায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিল এ কক্ষেই উত্থাপিত হয়। কমন্স সভায় কোন বিল গৃহীত হলে লর্ড সভা
সাধারণতঃ তা বাতিল করার ক্ষমতা রাখে না এবং রাজা বা রানীও সেই সব বিলে সম্মতি দিতে দ্বিধা
করেন না। অর্থমন্ত্রীর মাধ্যমে কমন্স সভার অর্থ বিল পেশ করা হয় এবং অন্যান্য বিলগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী পেশ করে থাকেন।
কমন্স সভায় বিল উত্থাপন হলে তা আলোচনা এবং যাচাই বাছাই ও অনুমোদিত হবার পর লর্ড সভার
অনুমোদনের জন্য উচ্চকক্ষ বা লর্ড সভায় প্রেরণ করা হয়। ১৯৪৯ সালের সংসদীয় আইন অনুসারে লর্ড
সভা কমন্স সভা কর্তৃক গৃহীত অর্থবিল ছাড়া অন্যান্য বিলকে এক বছরের বেশী স্থগিত রাখতে পারে না।
অতঃপর তৎপরবর্তী সময়ের পর লর্ড সভার অনুমোদন ছাড়াই উক্ত বিল রাজা বা রানীর সম্মতির জন্য
প্রেরণ করা হয়। যে সব বিলে কোন বিশেষ বিতর্ক থাকে না এমন সব বিল এবং বেসরকারী বিলসমূহই
সাধারণত লর্ড সভায় প্রথম উত্থাপিত হয়ে থাকে।
অর্থবিল সংক্রান্তক্ষমতাঃ
লর্ড সভায় প্রথমে কোন অর্থ বিল উত্থাপন করা হয় না। রাজা বা রানীর সম্মতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী এ বিল কমন্স
সভায় প্রথম উত্থাপন করেন। কোন বিল অর্থ বিল কিনা এ প্রশ্ন উত্থাপিত হলে কমন্স সভার স্পীকার
নির্দেশনামা জারীর মাধ্যমে তাঁর চ‚ড়ান্তসিদ্ধান্তদিতে পারেন। কমন্স সভায় কোন অর্থ বিল গৃহীত হলে লর্ড
সভা তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। বরং তা ১(এক) মাসের মধ্যে সংশোধন করার সুপারিশ করতে
পারে। কমন্স সভা এ সুপারিশ গ্রহণ না করে বিল রাজা বা রানীর সম্মতির জন্য প্রেরণ করতে পারে। রাজা
বা রানী কোন অর্থ বিলে সম্মতি জ্ঞাপন করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন না।
সরকারী আয়-ব্যয় নিয়ন্ত্রণঃ
রাজা বা রানীর পূর্বানুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী প্রত্যেক আর্থিক বছরের শেষে পরবর্তী আর্থিক বছরের জন্য
সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কে পার্লামেন্টে বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। এ বাজেটের মাধ্যমেই
ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আর্থিক নীতি জনগণ বুঝতে পারে। কমন্স সভার অনুমোদন ছাড়া কোন
কর ধার্য, করের হার পরিবর্তন, বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ কিংবা কর বিলোপ করা যায় না। সঞ্চিত তহবিল
থেকে কোন অর্থ ব্যয়ের জন্যও কমন্স সভার সম্মতির প্রয়োজন হয়। ব্যয় নিয়ন্ত্রক ও মহা হিসাব নিরীক্ষক,
সরকারী গাণিতিক কমিটি, আনুমানিক ব্যয় হিসাব কমিটি প্রভৃতির মাধ্যমে কমন্স সভা সরকারী আয়ব্যয়কে নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থ সংক্রান্তব্যাপারে কমন্স সভার একক ক্ষমতা রয়েছে কিন্তু লর্ড সভার এমন কোন
ক্ষমতা নেই। কমন্স সভায় গৃহীত কোন অর্থ বিল লর্ড সভা বড় জোর ১ (এক) মাস বিলম্বিত করার ক্ষমতা
রাখে কিন্তু প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। অবশ্য কতিপয় সীমাবদ্ধতার কারণে অধুনা কমন্সসভার ক্ষমতা
অর্থ সংক্রান্তক্ষেত্রে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করেন।
বিতর্ক ও আলোচনা অনুষ্ঠান সংক্রান্তক্ষমতাঃ
গ্রেট ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ বা কমন্স সভা সর্বাপেক্ষা বৃহৎ ও প্রভাবশালী বিতর্ক সভা হিসেবে
পরিচিত। জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যগণ জনগণের অনুকুলে কথা বলার জন্য এখান থেকে ব্যক্তিগত
এবং দলীয়ভাবে সুনাম অর্জনের সুযোগ পান। সাধারণতঃ সরকারী ও বেসরকারী বিল, রাজা বা রানীর
বার্তা, রাজকীয় ভাষণ, জাতীয় ও পররাষ্ট্রনীতি, সরকার বা বিশেষ কোন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির
অভিযোগ নিয়ে এখানে চিত্তাকর্ষক ও দৃষ্টি-আকর্ষণকারী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারী দল নিজেদের
উন্নয়নমূলক কাজের বিবরণ প্রদান করেন, আর বিরোধী দল যুক্তি তর্ক দিয়ে সরকারের নীতি ও কাজের
গঠনমূলক সমালোচনা করে নিজেদের জনপ্রিয়তা অর্জনের চেষ্টা করেন।
বর্তমানে নানা কারণে কমন্স সভার বিতর্ক ও আলোচনার গুরুত্ব বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে বলে অনেকে
মনে করেন।
তদন্তমূলক কার্য ও অভিযোগের প্রতিকারঃ
শাসন বিভাগের কার্যকলাপের উপর আনা অভিযোগের উপর ভিত্তি করে কমন্স সভাকে তদন্তমূলক দায়িত্ব
পালন করতে হয়। কমন্স সভা বিভিন্ন কমিটি গঠন করে তার মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের
কার্যকলাপের বাস্তব চিত্র উদঘাটন করে। জনমতের দিকে খেয়াল রেখে এবং কমন্স সভার দাবী অনুযায়ী
কোন মন্ত্রী সিলেক্ট কমিটি, বিভাগীয় কমিটি বা রয়্যাল কমিশন গঠন করে কোন নির্দিষ্ট সময়ে, কোন
নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর তদন্তের ব্যবস্থা করে থাকেন। এই কমিটি কর্তৃক আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে
তদন্তমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অনুসন্ধান, তথ্য সংগ্রহ, সাক্ষ্য গ্রহণ ইত্যাদির মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রতিবেদন
পেশ করে। এসব প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করেই কমন্স সভায় উত্তপ্ত বিতর্ক ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সংবিধান সংশোধনমূলক ক্ষমতাঃ
গ্রেট ব্রিটেনের সংবিধান অত্যন্তনমনীয় বিধায় সাধারণ আইন প্রণয়ন, আইন সংশোধন এবং সাংবিধানিক
আইন প্রণয়ন ও সংশোধন পদ্ধতির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কমন্স সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সমর্থনে
সাধারণ বিল যেভাবে অনুমোদিত হয় ঠিক সেভাবেই সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তন করা যায়। কমন্স
সভা কোন বিচারপতির অপসারণের সিদ্ধান্তগ্রহণ করলে রাজা বা রানী তাঁকে অপসারণ করে থাকেন।
স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষাঃ
পৃথিবীর বিভিন্ন উদার নৈতিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ন্যায় যুক্তরাজ্যের কমন্স সভাও বিভিন্ন স্বার্থকামী গোষ্ঠীর
স্বার্থরক্ষা করে থাকে। ঐ সব স্বার্থান্বেষী ও পেশাদারী গোষ্ঠীগুলো কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সাথে
ঘনিষ্ঠতা রক্ষা করে বলে কমন্স সভায় নিজ দলের সদস্যদের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থের অনুক‚লে আইন
প্রনয়ণ ও সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে থাকে।
সংযোগ সাধনমূলক কার্যঃ
জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে কমন্স সভার সদস্যগণ নিজ নিজ এলাকার জনগণের অভাব-অভিযোগ
ও সমস্যাবলী কমন্স সভায় উত্থাপন করেন। উত্থাপিত আলোচনার ভিত্তিতে সরকার প্রয়োজনীয় আইন
প্রণয়নের মাধ্যমে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এভাবে কমন্স সভা এক দিকে সরকার ও
জনগণের মধ্যে সংযোগ সেতু হিসেবে কাজ করে থাকে।
জনমত গঠন সংক্রান্তকার্যঃ
সরকারী দল ও বিরোধী দলের মধ্যে যে সকল বিষয়ের উপর সারগর্ভ ও সুনির্দিষ্ট বিতর্ক ও আলোচনা হয়
তা সংবাদপত্র, রেডিও ও টেলিভিশনের মাধ্যমে জনসাধারণের গোচরীভ‚ত হয়। এর ফলে জনসাধারণ
সরকার ও বিরোধী দলের নীতি ও কার্যাবলী সম্পর্কে তথা সমসাময়িক রাজনীতি ও অর্থনীতি সম্পর্কে
যথাযথ ধারণা করতে পারে। ভবিষৎ সরকার গঠনে জনসাধারণ সুচিন্তিতভাবে ভোট প্রদানের ব্যাপারে
সিদ্ধান্তগ্রহণ করতে পারে। সুতরাং দেখা যায়, তথ্য ও সংবাদের উৎসরূপে কমন্স সভা প্রকারান্তরে জনমত
গঠনে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করে থাকে।
সারকথাঃ
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সর্বময় কর্তৃত্ব তথা জনপ্রিয় কক্ষরূপে-এর গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ সিদ্ধান্তগ্রহণ ও
নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য বলা হয় যে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সবকিছুই করতে পারে। পার্লামেন্টের সার্বভৌম ক্ষমতা বলতে আসলে কমন্সসভার সার্বভৌমিকতাকেই বুঝায়।
সঠিক উত্তরে টিক দিন
১. কমন্স সভার সদস্য সংখ্যা ?
ক. ৬৩৫;
খ. ৫১৬;
গ. ৬৫৫;
ঘ. ৬৫৪।
২. ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নারীকে পুরুষ এবং পুরুষকে নারীতে রূপান্তরিত করা ছাড়া সবকিছুই করতে পারে”।
এ বক্তব্যটি কার?
ক. বেজহট;
খ. ডি, লোমী;
গ. গ্যাটেল;
ঘ. গার্ণার।
৩. মন্ত্রীসভাকে নিয়ন্ত্রণ করে -
ক. শাসন বিভাগ;
খ. কমন্স সভা;
গ. লর্ড সভা;
ঘ. রাজা বা রানী।
৪. সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করে -
ক. লর্ড সভা;
খ. প্রধানমন্ত্রী;
গ. রাজা বা রানী;
ঘ. কমন্স সভা।
উত্তরমালাঃ ১, গ ২, খ ৩, খ ৪ খ
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্নঃ
১. ব্রিটেনে কমন্স সভা কিভাবে গঠিত হয়?
২. ব্রিটেনে কমন্স সভার অধিবেশন কিভাবে চলে?
রচনামূলক প্রশ্নঃ
১. ব্রিটিশ কমন্স সভার ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]