মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পীকারের ক্ষমতা ও কার্যাবলী বর্ণনা করুন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আইন সভার নাম কংগ্রেস। কংগ্রেস একটি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা। আইন
প্রণয়ন করাই এর প্রধান কাজ। এ ছাড়া মার্কিন কংগ্রেস মার্কিন নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের কার্য তদন্তকরা
সহ সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে থাকে। সংবিধান প্রণেতাগণ সুচিন্তিত বিচার
বিশ্লেষণের পর মার্কিন কংগ্রেসকে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। কংগ্রেসের নি¤œকক্ষ ‘প্রতিনিধি
সভা’ এবং উচ্চকক্ষ ‘সিনেট’ নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রীয়
ব্যবস্থার ঐতিহ্য অনুসারে ‘নি¤œকক্ষ’ বা ‘প্রতিনিধি’ সভা হল মার্কিন জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক কক্ষ আর উচ্চকক্ষ
বা ‘সিনেট’ হল অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রতিনিধিত্বমূলক কক্ষ। মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি সভা ও সিনেটের সদস্যরা
জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন। ব্রিটেনের কমন্স সভা (ঞযব ঐড়ঁংব ড়ভ ঈড়সসড়হং) এবং ভারতের
লোকসভাকে যে অর্থে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক বলা যায়, সেই অর্থে মার্কিন প্রতিনিধি সভাও হল একটি
জনপ্রতিনিধিত্বমূক কক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে গিয়ে মার্কিন সংবিধান প্রণেতাগণ একটি স্বাধীন
বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থা উদার নৈতিক গণতন্ত্রের প্রতিভূস্বরূপ। তাই স্বাভাবিকভাবে
মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব অপরিহার্য। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেডেমোক্রেটিক পার্টি ও
রিপাবলিকান পার্টি এ দু’টি দলের প্রাধান্য বিদ্যমান। মার্কিন কংগ্রেসের নি¤œকক্ষ হল প্রতিনিধি সভা। জাতীয় ভিত্তিতে সমগ্র জাতির প্রতিনিধিদের নিয়ে
প্রতিনিধি সভা গঠিত হয়। কোন অঙ্গরাজ্য থেকে কতজন প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন তা ঐ রাজ্যের
জনসংখ্যার উপর নির্ভর করে। প্রতিনিধি সভার সদস্যদের নির্বাচনের জন্য প্রত্যেক রাজ্যকে কতকগুলো
নির্বাচনী জেলায় ভাগ করা হয়। সাধারণত প্রতিনিধি সভার একজন সদস্য প্রায় ৪,৬৫,০০০ জনের
প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন সংবিধান কার্যকর করার সময় প্রতিনিধি সভার সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৫
জন। কিন্তু ১৯২৯ সালে একটি আইনের মাধ্যমে প্রতিনিধি সভার সদস্য সংখ্যা ৪৩৫ জন নির্দিষ্ট করে
দেওয়া হয়। বর্তমানে আলাস্কা, ডিলাওয়ারা, নোভাদা, উত্তর ডাকোটা, ভারমন্ট ও ওমিং এ ৬টি অঙ্গরাজ্যে
মাত্র একজন করে প্রতিনিধি আছেন। আবার ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্কে যথাক্রমে ৩৯ ও ৪৩ জন
প্রতিনিধি রয়েছেন।
প্রার্থীর যোগ্যতা ঃ
মার্কিন প্রতিনিধি সভায় নির্বাচিত হতে হলে প্রার্থীদের কতকগুলো যোগ্যতা থাকতে হবে। যথা
 প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে;
 কমপক্ষে সাত বছরের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে;
 যে অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচন করবেন সেই অঙ্গরাজ্যে বাসিন্দা হতে হবে
 কোন সরকারী পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। ১৮ বছর বয়সের সকল নারীপুরুষ নাগরিক ভোটার হওয়ার অধিকার রাখেন।
প্রতিনিধি সভার অধিবেশন ঃ
বছরে অন্ততঃ একবার প্রতিনিধি সভার অধিবেশন আহŸান করতে হয়। সাধারণতঃ ৩রা জানুয়ারী অধিবেশন
আহŸান করা হয় এবং ৩১শে জুলাই সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। তবে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অধিবেশন
সাধারণত একই সঙ্গে বসে এবং একই সঙ্গে শেষ হয়। আবার রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলে বছরের যে কোন
সময় বিশেষ অধিবেশন আহŸান করতে পারেন। এছাড়া প্রতিনিধি সভার অধ্যক্ষ স্পীকার এবং সিনেটের
সভাপতি অথবা উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘু দলের নেতৃদ্বয় প্রয়োজনবোধে বিশেষ অধিবেশন
আহŸান করতে পারেন। প্রতিনিধি সভার সদস্যগণ অধিবেশন পরিচালনার জন্য নিজেদের মধ্য থেকে
একজনকে অধ্যক্ষ বা স্পীকার নির্বাচন করেন। তিনিই সাধারণত সভার অধিবেশনে সভাপতিত্ব করে
থাকেন।
কমিটি ব্যবস্থাঃ
মার্কিন প্রতিনিধি সভার বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে কমিটিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে থাকে।
প্রতিনিধি সভায় প্রায় ৬০টির অধিক কমিটি আছে। এর মধ্যে স্থায়ী কমিটির সংখ্যা ২০-এর অধিক। স্থায়ী
কমিটি, বিশেষ কমিটি, সমগ্র কক্ষের কমিটি, যুগ্ম কমিটি, কনফারেন্স কমিটি ইত্যাদি, কার্যকর আছে।
অনেকে এ কমিটিগুলোকে কংগ্রেসের হাত, চোখ, কান বলে অভিহিত করেছেন।
ক্ষমতা ও কার্যাবলী ঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সভাকে কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করতে হয়। যথা
 আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রতিনিধি সভা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। প্রতিনিধি সভায় যে কোন
ধরনের বিল উত্থাপন করা যায়। অর্থ বিলের ক্ষেত্রে প্রতিনিধি সভা বিশেষ ক্ষমতা ভোগ করে। কেননা
অর্থ বিল কেবলমাত্র প্রতিনিধি সভাতে উত্থাপন করতে হয়, সিনেটে উত্থাপন করা যায় না। কিন্তু
সাধারণ আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সম্মতির প্রয়োজন হয়। তবে কোন বিল
নিয়ে উভয় কক্ষের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে উভয় কক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ‘কনফারেন্স
কমিটি’ (ঈড়হভবৎবহপব পড়সসরঃঃবব) তার চ‚ড়ান্তসমাধান করে থাকে।
 রাষ্ট্রপতি কিংবা উপ-রাষ্ট্রপতির বিরূদ্ধে রাজদ্রোহিতা বা উৎকোচ গ্রহণসহ যে কোন অভিযোগের
কারণে একমাত্র প্রতিনিধিসভা আনতে পারে। কিন্তু এ অভিযোগের
চ‚ড়ান্তবিচারের ক্ষমতা প্রতিনিধি সভার নেই। এ ব্যাপারে সিনেট চ‚ড়ান্তসিদ্ধান্তনিয়ে থাকে।
 সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উভয় কক্ষই গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে থাকে।
 রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন প্রার্থী নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হলে সে ক্ষেত্রে
প্রতিনিধি সভা গোপন ব্যালট প্রথার মাধ্যমে সর্বাধিক সংখ্যক ভোট প্রাপ্ত প্রথম তিন জনের মধ্য থেকে
যে কোন একজনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে থাকে। এক্ষেত্রে সিনেটের কোন কর্তৃত্ব নেই।
 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন কোন রাজ্যকে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারেও সিনেটের ন্যায় প্রতিনিধি সভারও
সম্মতির প্রয়োজন হয়।
 প্রতিনিধিসভা সভার কার্য পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নিয়ম-কানুন প্রণয়ন ও প্রচলিত নিয়ম-কানুন
পরিবর্তন করতে পারে।
প্রতিনিধি সভার স্পীকার বা অধ্যক্ষ
যুক্তরাজ্যের কমন্স সভার ন্যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সভার সভাপতিকে স্পীকার বলা হয়। মার্কিন
সংবিধান অনুসারে প্রতিনিধি সভার নব-নির্বাচিত সদস্যগণ নিজেদের মধ্যে থেকে একজনকে স্পীকার
হিসেবে নির্বাচিত করেন। অধিবেশনে তিনিই সভাপতিত্ব করেন। তিনি দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
তবে তাঁর দল পুনরায় প্রতিনিধি সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলে তিনি পুনঃনির্বাচিত হতে
পারেন। মার্কিন প্রতিনিধি সভার স্পীকার যুক্তরাজ্যের কমন্স সভার স্পীকার এর ন্যায় সর্বসম্মতিক্রমে
নির্বাচিত নন এবং তিনি দলনিরপেক্ষ নন। কেননা তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে
প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে নির্বাচিত হন এবং স্পীকার থাকাকালীন সময় নিজ দলের স্বার্থের পৃষ্ঠপোষকতা করে
থাকেন। অধিকন্তু তিনি প্রতিনিধি সভায় নিজ দলের নেতারূপে কাজ করেন এবং প্রতিনিধি সভার
সভাপতিত্বের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেন। তিনি সভার আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং ভোটও দেন।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় ‘ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি’ অনুসৃত
হওয়ার ফলে শাসন বিভাগের প্রধান বা ক্যাবিনেট সদস্যরা কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে
পারেন না কিংবা প্রতিনিধি সভায় নেতৃত্ব দিতে পারেন না। ফলে কংগ্রেসের নি¤œকক্ষ অর্থাৎ প্রতিনিধি
সভার নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা স্পীকারের হাতে ন্যস্তথাকে। তাই স্পীকার নির্বাচনের সময়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সভায় প্রধান দু‘টি শক্তিশালী দলের (মধ্যে তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতা দেখা যায়।
স্পীকারের ক্ষমতা ও কার্যাবলীঃ
মার্কিন প্রতিনিধি সভার স্পীকারের ক্ষমতা ও প্রভাব দীর্ঘ দিনের বিবর্তনের ফল। ১৯১০ সালের পূর্বে তিনি
অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তাঁর ক্ষমতা এত ব্যাপক ছিল যে তিনি নিজের আস্থাভাজন
ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন কমিটি গঠন করতে পারতেন এবং নিজের খুশিমত প্রতিনিধি সভায় বিল উত্থাপন
এবং তা পাসের ব্যবস্থা করতে পারতেন। বিধি প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে বিধি প্রণয়ন ও সংবিধান
সংশোধনের ক্ষেত্রেও তিনি সীমাহীন ক্ষমতা ভোগ করতেন। স্পীকারের এ ক্ষমতা ও প্রভাবের জন্য অনেকে
তাঁকে জার (তধৎ) নামে অভিহিত করেছেন। কিন্তু ১৯১০ সালে রিপাবলিকান পার্টির স্পীকার ঔড়ংবঢ়য,
এ, ঈধহহড়হ-এর স্বৈরাচারী কার্যকলাপের জন্য তাঁর নিজের দলের বেশ কিছু সদস্য বিদ্রোহ ঘোষণা করেন
এবং তাঁরা গণতন্ত্রী দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে সামিল হন। এ আন্দোলনের ফলে স্পীকার আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সম্মতির প্রয়োজন হয়।
অপসারিত হন এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা স্পীকারের হাতছাড়া হয়। বর্তমানে
বিভিন্ন কমিটিতে সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে স্পীকারের ক্ষমতা অনেকাংশে সংকুচিত হয়েছে। তবে
স্পীকারের ক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস পেলেও, স্পীকার এখনও নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করে থাকেন।
নি¤েœসেগুলো উল্লেখ করা হল ঃ
অধিবেশন পরিচালনা ঃ
স্পীকার প্রতিনিধি সভার অধিবেশন পরিচালনা করেন এবং সভাপতিত্ব করেন। তিনি সভার বিতর্ক,
সদস্যদের বিতর্কে অংশগ্রহণ, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করেন। প্রতিনিধি সভাকক্ষে সদস্যদের বক্তৃতা
প্রদানের সুযোগ করে দেওয়া স্পীকারের কাজ। কোন একটি বিষয়ের উপর বক্তৃতাদানের সময় একাধিক
সদস্য দন্ডায়মান হলে সভার নিয়মানুযায়ী কোন্ সদস্য আগে বলবেন তা স্পীকার ঠিক করে দেন।
সাধারণতঃ বক্তব্য পেশের সুযোগ-সুবিধা বন্টনের ক্ষেত্রে স্পীকার নিজ দলীয় সদস্যদের প্রতি বিশেষ
আনুক‚ল্য দেখিয়ে থাকেন। কোন বিতর্কিত বিষয় সমাধানের জন্য তিনি প্রতিনিধি সভায় ভোট গ্রহণ ও
তার ফলাফল ঘোষণা করেন। সভার সদস্য হিসেবে তিনি ভোট প্রদান করতে পারেন। তবে সাধারণতঃ
তিনি ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু কোন বিষয়ে উভয় পক্ষে সমান ভোট পড়লে যে অচলাবস্থার
সৃষ্টি হয় তা নিরসনের জন্য তিনি সভার সভাপতির ক্ষমতা বলে ভোট প্রদান করে সমস্যার সমাধান
করেন।
নিয়মাবলী ব্যাখ্যাঃ
সভাপতি হিসেবে সভার কার্যাবলী পরিচালনার জন্য যেসব নিয়মকানুন আছে তা ব্যাখ্যা করার অধিকতর
ক্ষমতা স্পীকারের । কোন নিয়ম সম্পর্কে সভার সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিলে তিনি সংশ্লিষ্ট
বিষয়ের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। অবশ্য সভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য স্পীকারের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হলে তা
বাতিল করে দিতে পারেন। কিন্তু স্পীকার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হওয়ায় তাঁর ব্যাখ্যা বা সিদ্ধান্ত
সাধারণতঃ বাতিল হয় না। তাই এ সকল ক্ষেত্রে বৈধতার প্রশ্নে স্পীকারের ব্যাখ্যাই চ‚ড়ান্তবলে গৃহীত
হয়।
শান্তিশৃংখলা রক্ষা ঃ
প্রতিনিধি সভার শান্তিশৃংখলা রক্ষা করার দায়িত্ব স্পীকারের। অধিবেশন চলাকালে কোন সদস্য যাতে
বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে না পারে সে দিকে তাঁকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়। কোন সদস্য স্পীকারের নির্দেশ
অমান্য করলে তিনি উক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন । তবে এক্ষেত্রে সভার
নির্দেশের প্রয়োজন হয়। বিশৃংখলা চরম আকার ধারণ করলে তিনি নিজ ক্ষমতা বলে অধিবেশন
সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বা বন্ধ করে দিতে পারেন। অধিবেশন চলাকালে সদস্যগণ অসম্মানজনক বা
অপ্রাসঙ্গিক কোন শব্দ বা ভাষা ব্যবহার করলে তিনি তা নিয়ন্ত্রণ করেন।
কমিটিতে বিল প্রেরণঃ
স্পীকারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা হল প্রতিনিধি সভার বিভিন্ন কমিটিতে বিল প্রেরণ করা। কোন্
কমিটিতে কোন্ বিল পাঠান হবে তা স্পীকারকেই সিদ্ধান্তনিতে হয়। তবে বর্তমানে এক্ষেত্রে কিছুটা
পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বিলের বিষয়বস্তু অনুসারে প্রতিনিধি সভার ক্লার্ক(ঈষবৎশ) বিলগুলোকে
কমিটিসমূহের নিকট প্রেরণ করেন। অবশ্য অনেক সময় কোন্ বিল কোন্কমিটিঁতে পাঠাতে হবে এ বিষয়ে
কোন প্রশ্ন দেখা দিলে সে ক্ষেত্রে স্পীকারের সিদ্ধান্তই চ‚ড়ান্তবলে গণ্য হয়।
নিয়োগদানের ক্ষমতা ঃ
স্পীকার প্রতিনিধি সভার বিভিন্ন কমিটি ও কমিশন নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেন। তিনি
প্রতিনিধি সভার সমগ্র কক্ষ কমিটির (ঈড়সসরঃঃবব ড়ভ ঃযব যিড়ষব ঐড়ঁংব) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের
নিয়োগ করেন। এছাড়া আইনের দ্বারা গঠিত অন্যান্য যৌথ ও কমিশনের সদস্যদেরও তিনি নিয়োগ করতে
পারেন। আবার প্রতিনিধি সভায় অস্থায়ী স্পীকারকেও তিনি নিয়োগ করে থাকেন। তবে এ নিয়োগ
কেবলমাত্র তিন দিনের জন্য কার্যকর থাকে
সমন্বয় সাধন করা ঃ
মার্কিন প্রতিনিধি সভার সভাপতিকে একই সাথে প্রতিনিধি সভার সভাপতি এবং দলীয় নেতার কার্যের
মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে হয়। উপরন্তু তাঁকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও প্রতিনিধি সভার সদস্যদের মধ্যে যোগসূত্র
রক্ষাকারী হিসেবে ভ‚মিকা পালন করতে হয়।
আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ঃ
প্রতিনিধি সভার সভাপতি হিসেবে স্পীকার আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও প্রভাব বিস্তার করে থাকেন। যদিও
কোন বিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা স্ট্যান্ডিং কমিটি এর হাতে ন্যস্ত।
কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে তিনি এক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। তাই সার্বিক
বিবেচনায় প্রতিনিধি সভায় আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে এককভাবে স্পীকারই
হলেন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
সারকথাঃ
মার্কিন কংগ্রেসের নি¤œকক্ষ হল প্রতিনিধি সভা। প্রতিনিধি সভার সভাপতি এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা
হিসেবে স্পীকারের ভ‚মিকা যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ। তাই বর্তমানে মার্কিন স্পীকারের কর্তৃত্ব ও মর্যাদা
শাসনতন্ত্রের আনুষ্ঠানিক ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল, তেমনি পদাধিকারীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব, নিজ
দলের সাথে সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয়ের উপরও নির্ভরশীল। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে কার, বানস্টেইন ও
মারফি ( বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থায় সর্বাধিক ক্ষমতা
সম্পন্ন তিনজন পদাধিকারীর মধ্যে স্পীকার একজন।”
সঠিক উত্তরে টিক দিন
১. ১৯২৯ সালে আইনের মাধ্যমে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি সভা কতজনে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় ?
ক. ৪৩৫ জনে;
খ. ৪৩০ জনে;
গ. ৪২৫ জনে।
২. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারী-পুরুষের ভোটদানের বয়সসীমা কত?
ক. ২১ বছর;
খ. ১৮ বছর;
গ. ১৯ বছর।
৩. কংগ্রেসের উভয় কক্ষে কোন বিল নিয়ে মতভেদ দেখা দিলে চুড়ান্তসমাধান করেক. প্রেসিডেন্ট;
খ. স্পীকার;
গ. কনফারেন্স কমিটি।
৪. মার্কিন প্রতিনিধি সভার স্পীকারের ক্ষমতা হ্রাস করা হয় কত সালে?
ক. ১৯২০;
খ. ১৯১৫;
গ. ১৯১০।
উত্তরমালাঃ ১, ক ২, খ ৩, গ ৪ গ
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্নঃ
১. ১৯১০ সালে প্রতিনিধি সভার স্পীকারের ক্ষমতা কেন হ্রাস করা হয়েছিল?
রচনামূলক প্রশ্নঃ
১. মার্কিন প্রতিনিধি সভার কার্যাবলী আলোচনা করুন।
২. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পীকারের ক্ষমতা ও কার্যাবলী বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]