যুক্তরাষ্ট্রে ও ব্রিটেনের আইন সভার কমিটি ব্যবস্থার মধ্যে তুলনা করুন।

বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের আইন সভাতেই কমিটি ব্যবস্থা বিদ্যমান। আইন সভাগুলোর কাজের
ব্যাপকতা, সদস্যদের হাতে সময়ের স্বল্পতা এবং আইন সম্পর্কে সদস্যদের জ্ঞানের অভাব প্রভৃতি কারণে
আইন সভাগুলোর মাঝে কমিটি গঠনের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের আইন সভার
কমিটিগুলো স্ব স্ব দেশে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে থাকে। তবে উভয় দেশের
আইন সভার কমিটি ব্যবস্থার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। উভয় দেশের কমিটি ব্যবস্থায় তুলনামূলক আলোচনা থেকে তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
গঠনগত পার্থক্য ঃ
উভয় দেশের কমিটি ব্যবস্থার মধ্যে গঠনগত পার্থক্য বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ব্রিটিশ কমন্স সভায়
কমিটিগুলোর সদস্য মনোনয়নের জন্য একটি ‘মনোনয়ন কমিটি’ (ঈড়সসরঃঃবব ড়ভ ংবষবপঃরড়হ) রয়েছে।
পক্ষান্ত্ররে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কমিটিগুলোর সদস্য মনোনয়নের জন্য উভয় কক্ষের সরকারী ও বিরোধী
দলের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গঠিত ‘কমিটিগুলো কমিটি’ নামে একটি উচ্চতর কমিটি রয়েছে।
দলীয় প্রভাব ঃ
যুক্তরাষ্ট্রে আইন সভার কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় মনোভাব বিশেষভাবে প্রাধান্য পায়। আইন সভার
প্রতিটি কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘিষ্ঠ দল তাদের আনুপাতিক হারে কমিটিগুলোতে সদস্য প্রেরণ
করে। কিন্ত্র‘ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় মনোভাব এতটা প্রাধান্য পায় না।
সদস্যদের যোগ্যতা ঃ
যুক্তরাষ্ট্রে কমিটি গঠনের সময় সদস্যদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও যোগ্যতার দিকে বিশেষ খেয়াল
রাখা হয়। কিন্ত্র‘, ব্রিটেনে কমিটি গঠনের সময় এ সকল বিষয়কে খুব বেশী আমলে আনা হয় না।
সীমাবদ্ধতা ঃ
যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলো প্রয়োজন মনে করলে কমিটির বাইরের লোকের সাথে পরামর্শ করতে পারে। কিন্ত্র‘,
ব্রিটেনে সাধারণতঃ তা করা হয় না।
কমিটি ও সদস্য সংখ্যা ঃ
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কমিটির সংখ্যা অনেক বেশী তবে প্রতিটি কমিটির
সদস্য সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। পক্ষান্তরে, ব্রিটেনে কমিটির সংখ্যা কম হলেও প্রতিটি কমিটির সদস্য
সংখ্যা অনেক বেশী।
বিল প্রণয়ন ও উত্থাপন ঃ
ব্রিটেনে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রচলিত না থাকায় ক্যাবিনেটই আইনের খসড়া প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ
ভ‚মিকা পালন করে থাকে। মন্ত্রীগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারী বিলগুলো আইন সভায় উত্থাপন করেন।
পক্ষান্ত্ররে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রচলিত থাকায় ক্যাবিনেট সদস্যরা আইনের খসড়া প্রণয়ন
কিংবা আইন সভায় বিল উত্থাপন করতে পারেন না। যুক্তরাষ্ট্রে উপরোক্ত দায়িত্ব পালন করে আইন সভার
স্থায়ী কমিটিগুলো। তাই বলা যায়, বিল প্রণয়ন ও আইন সভায় বিল উত্থাপনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের
কমিটিগুলোর ভ‚মিকা ব্রিটিশ কমিটিগুলোর ভ‚মিকা অপেক্ষা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
বিল পরিচিতি ঃ
যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলোর সভাপতির পদ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কমিটির সভাপতি বেশী মর্যাদা ও প্রচার
পেয়ে থাকেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিলগুলো কমিটির সভাপতির নামে পরিচিতি লাভ করে। কিন্তুব্রিটেনে
কমিটিগুলোর সভাপতির নামে কোন বিল পরিচিতি লাভ করে না। এখানে কমিটির সভাপতি পুরোপুরি
নিরপেক্ষ ভ‚মিকা পালন করেন।
আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ঃ
আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও ব্রিটিশ কমিটিগুলোর ভ‚মিকা যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলোর তুলনায় যথেষ্ট দুর্বল।
কেননা যুক্তরাষ্ট্রে কোন বিলের মূলনীতিগুলো কংগ্রেসের কোন কক্ষে গৃহীত হওয়ার পূর্বে বিলটিকে কমিটির
নিকট প্রেরণ করা হয়। কিন্তুব্রিটিশ আইন সভায় বিলের নীতিগুলো গৃহীত না হওয়া পর্যন্ততা কমিটিতে
প্রেরণ কর হয় না। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলো যে কোন বিলকে বাতিল করে দিতে পারে। কিন্ত্র‘
ব্রিটেনের কমিটিগুলো তা পারে না।
স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাব ঃ
যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে আইন সভায় কমিটিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে বিধায় স্বার্থান্বেষী
গোষ্ঠী লবিং-এর মাধ্যমে কমিটির সদস্যদের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালায়। পক্ষান্তরে, ব্রিটেনে আইন
প্রণয়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রীগণ মুখ্য ভ‚মিকা পালন করেন। তাই সেখানে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী মন্ত্রীদের উপর প্রভাব
বিস্তারের চেষ্টা চালায়।
সদস্য পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা ঃ
ব্রিটিশ কমিটিগুলোর তুলনায় মার্কিন কমিটিগুলোর গুরুত্ব সার্বিক বিচারে অনেক বেশী; তাই কমিটির
সদস্য পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ আইন সভার সদস্যদের তুলনায় মার্কিন আইন সভার সদস্যদের
আগ্রহ বেশী দেখা যায়।
চ‚ড়ান্ত্রক্ষমতা ঃ
যুক্তরাষ্ট্রে বিল সম্পর্কে কমিটিগুলোই চ‚ড়ান্তসিদ্ধান্তগ্রহণ করতে পারে কিন্তু ব্রিটিশ কমিটিগুলোর এমন
কোন ক্ষমতা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে কোন বিল প্রসঙ্গে আইন সভার দুই কক্ষের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে তা মেটানোর জন্য সিদ্ধান্ত্র
গ্রহণ কমিটি (উবপরফব ঈড়সসরঃঃবব) নামে একটি কমিটি গঠনের বিধান আছে। কিন্তু ব্রিটেনে এ ধরণের কোন প্রথা নেই।
সারকথাঃ
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের কমিটি ব্যবস্থায় উপরোক্ত তুলনামূলক আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের
কমিটিগুলো ব্রিটেনের কমিটিগুলোর অনেক উর্ধ্বে অবস্থান করে। প্রেসিডেন্ট উড্ড্রো উইলসন-এর উক্তি
এই ক্ষেত্রে যথার্থ -‘কমন্স সভার স্থায়ী কমিটিসহ অন্যান্য কমিটিগুলো পুরাতন ধরনের, তারা কেবল
অনুসন্ধান ও রিপোর্ট প্রদান করতে পারে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলোর অভিনবত্ব এই যে, তা আইনের প্রস্তাব উত্থাপনসহ আইন প্রণয়নে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করতে পারে’। যুক্তরাষ্ট্রের কমিটিগুলোর সভাপতির পদ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
সঠিক উত্তরে টিক দিন
১. আইন সভার কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় মনোভাব বিশেষভাবে প্রাধান্য পায় কোন দেশে?
ক. বাংলাদেশে;
খ. ভারতে;
গ. ব্রিটেনে;
ঘ. যুক্তরাষ্ট্রে।
২. কমিটি গঠনের সময় সদস্যদের দক্ষতা ও যোগ্যতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হয় -
ক. ব্রিটেনে;
খ. যুক্তরাষ্ট্রে;
গ. বাংলাদেশে।
৩. আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রীরা মুখ্য ভ‚মিকা পালন করেক. ফ্রান্সে;
খ. যুক্তরাষ্ট্রে;
গ. ব্রিটেনে।
উত্তরমালাঃ ১. ঘ ২. খ ৩. গ
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্নঃ
১. ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে বিল প্রণয়ন কিভাবে হয়?
রচনামূলক প্রশ্নঃ
১. যুক্তরাষ্ট্রে ও ব্রিটেনের আইন সভার কমিটি ব্যবস্থার মধ্যে তুলনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]