গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ভ‚মিকা ও গুরুত্ব বর্ণনা করুন।

চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির ইতিহাস ঃ
মেহনতী মানুষের শোষণের প্রতিবাদ স্বরূপ এ দলটির সৃষ্টি। এ পার্টির ইতিহাস এক সুদীর্ঘ কালের
ইতিহাস। দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়েই এ দলটির আর্বিভাব ঘটে। এ দলের সংগ্রামের মধ্যমে শ্রমিক শ্রেণীর
একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। সমাজতান্ত্রিক সংগঠন ও সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পেছনে এ দলের
ভ‚মিকা অপরিসীম। শ্রমিক শ্রেণী অনুভব করেছিল, পুঁজিবাদের উচ্ছেদ ছাড়া তাদের মুক্তি আসতে পারে
না।
সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিষ্ট পার্টির অনুকরণেই চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির জন্ম। চীন হল প্রাক্তন
সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপ্লবের ছোয়া লেগেছিল গণপ্রজাতন্ত্রী চীনে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছুকাল পূর্বে জাপান চীনের উপর সমাজ্যবাদী আক্রমণ চালায়। এ
সংকটের সময় মার্কসীয় আদর্শে অনুপ্রাণিত হয় চীনের বুদ্ধিজীবী ও তরুণ ছাত্র সমাজ সোভিয়েতের
সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সাফল্যে উৎসাহিত হয়। ১৯১৮ সালে পিকিং এ একটি মার্কসবাদী পাঠচক্র গড়ে
উঠে। এর নেতৃত্বে এগিয়ে আসে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের চেন তুং-সিউ (ঈযবহ ঞঁ- ঐংরহ) ও লি-তা-চাও
(খব ঞধ ঈযধড়) হুনান প্রদেশের ছাত্র মাও সেতুং ও এ নেতৃত্বে যোগ দেয়। দিনে দিনে চীনের বিভিন্ন
স্থানে কমিউনিষ্ট পার্টির আলোচনা জমে উঠে। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ভয়াটিয়াসকি (ঠড়রঃরঁংশু)
কমিনটার্ন চীনে সফরে আসেন। তার নেতৃত্ব ছিল প্রখর। তিনি চীনে মার্কসবাদী সংগঠনগুলোকে একত্রিত
করতে সক্ষম হন। এর কিছুদিন পরই ১৯২১ সালের ১লা জুলাই সাংহাই শহরে কমিউনিষ্ট পার্টির জন্ম
হয়। এ পার্টির অর্বিভাব চীনের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
পরবর্তীতে কমিউনিস্ট পার্টি সাম্রাজ্যবাদী শাসন আর শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। শোষণের
বিরুদ্ধে আন্দোলন দিনে দিনে জোরদার হতে থাকে। গণতান্ত্রিক বিপ্লবও দিনে দিনে দানা বেঁধে ওঠে।
এ পার্টির দ্বারাই ১৯৪৯ সালে মাও সেতুং-এর নেতৃত্ব চীনে বিপ্লব সুসম্পন্ন হয়। জন্ম নেয় আধুনিক
গণপ্রজাতন্ত্রী (সমাজতন্ত্রিক) চীন। ১৯৮২ সালের সংবিধানে কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্কে বিধান রাখা হয়।
এ পার্টিকে সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় আনা হয়। মার্কসবাদ লেনিনবাদ ও মাও সেতু-এর আদর্শে
পরিচালিত হয়ে কমিউনিস্ট পার্টি আজও চীনকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ নীতিগুলো নি¤œরূপঃ
কমিউনিস্ট পার্টির গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের সর্বহারা শ্রেণীর এক মাত্র দল। শুরু থেকে এ পার্টি কতিপয়
সাধারণ নীতি অনুসরণ করে। এগুলোই পার্টির মৌলিক ভিত্তি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ নীতি ও
লক্ষ্যগুলো ছিল নি¤œরূপঃ
১। মার্কস-লেনিন ও মাও-এর আদর্শ ঃ গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম নীতি হল মার্কস,
লেনিন ও মাও এর আদর্শ অনুসরণ। এটিই হল কমিউনিষ্ট পার্টির মূল ভিত্তি। এ আদর্শ অনুসারে কমিউনিষ্ট
পার্টি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত। বিশেষ করে মাও-সেতুং এর মতাদর্শ দুনিয়া জুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
এ মতাদর্শের কারণেই চীনে সমাজতন্ত্রের আর্বিভাব হয়। দ্বাদশ কাংগ্রেসে (১৯৮২) এ আদর্শকে তাত্তি¡ক
বলে আখ্যায়িত করা হয়।
২। সমভোগী সমাজ ব্যবস্থা ঃ সমভোগী সমাজব্যবস্থা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় ভিত্তি। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম লক্ষ্য ছিল সমভোগী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। শ্রমিক
শ্রেণী ভেবেছিল সমভোগী সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে তাদের কল্যাণ নিহিত। এ কারণে কমিউনিস্ট পার্টি গঠনের
ক্ষেত্রে সমভোগী সমাজ ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
৩। চারটি মৌল দায়িত্ব ঃ কমিউনিস্ট পার্টি চারটি মৌল দায়িত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। সমাজতান্ত্রিক
আধুনিকীকরণ ও সাম্যবাদে কমিউনিস্ট পার্টির চারটি মূল দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হল ঃ-
 অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর পুর্নগঠন, পার্টির সদস্যদের বিপ্লবী প্রেরণায় শিক্ষিত করে তোলা;
 সমাজতান্ত্রিক আত্মকি সভ্যতা সৃষ্টি করা;
 সকল ক্ষেত্রে সমাজতান্ত্রিক বিরোধী অপরাধ মূলক কাজকর্মকে দক্ষতার সঙ্গে দমন করা।
 সাংগঠনিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির পরিচালনার ধরন, ধারন বদলান।
৪। গণতান্ত্রিকতা ঃ গণতান্ত্রিকতা গণ -প্রজাতন্ত্রী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম ভিত্তি। এ পার্টি গঠনের
শুরুতে গণতান্ত্রিক আদর্শের কথা বলা হয়। পার্টির ভিত্তিগত উপাদান হিসেবে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকরণ ও
গণতান্ত্রিক নীতির কথা বলা হয়। পার্টির উদ্যোগতাগণ মনে করতেন গণতন্ত্রের মধ্যেই শ্রমিকের কল্যাণ
নিহিত।
৫। শ্রমিক শ্রেণীর প্রাধান্য ঃ কমিউনিস্ট পার্টি মূলত শ্রমিক শ্রেণীরই পার্টি। দ্বাদশ পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত
পার্টি- সংবিধান অনুসারে চীনের কমিউনিস্ট পার্টিহল শ্রমিক শ্রেণীরই অগ্রবর্তী বাহিনী।
৬। সংখ্যাগরিষ্ঠতার নীতি ঃ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি গঠনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা বলা হয়। সংখ্যা
গরিষ্ঠতা থেকে গণতন্ত্রের সৃষ্টি। শুরুতেই বলা হয় যে, পার্টির সমস্তস্তরের সকল সিদ্ধান্তেসংখ্যাগরিষ্ঠতার
মতানুসারে গৃহীত হবে। সাথে বিপ্লবী গণ-সংগঠনকে পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠার নীতি অনুসরণের কথা বলা হয়।
পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠন
গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠন বেশ সুসংগঠিত। পার্টির সর্বোচ্চ কেন্দ্রীয় সংগঠন
হল জাতীয় কংগ্রেস (ঘধঃরড়হধষ ঢ়ধৎঃু পড়হমৎবংং) এ সংগঠনের ভিত্তিতে কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত
হয়। চীনের প্রশাসন ব্যবস্থা মূলত এ কংগ্রেসকেই কেন্দ্র করে আবর্তিত। এ কংগ্রেস প্রতি পাঁচ বছর পর
পর নির্বাচিত হয়। এ ক্ষেত্রে পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠনের ভুমিকা অপরিসীম। এ কেন্দ্রীয় কমিটি জাতীয়
কংগ্রেসের অধিবেশন আহবান করে। পাঁচ বছর অতিক্রান্তহওয়ার আগেও অধিবেশন আহবান করা যায়।
তবে তা সম্ভব একমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে। আবার কখনও কখনও প্রাদেশিক পর্যায়ের সংগঠনের একতৃতীয়াংশ দাবী করলে অধিবেশন ডাকা যায়। কতজন প্রতিনিধি জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিবে এবং তারা
কিভাবে নির্বাচিত হবে তা পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি নির্ধারণ করবে। কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা পার্টির সাধারণ সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন।
কমিউনিস্ট পার্টির ভ‚মিকা ও গুরুত্ব
চীনের সামাজিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে কমিউনিস্ট পার্টির ভ‚মিকা
১। সমাজতন্ত্রপ্রতিষ্ঠা ঃ সমাজতন্ত্রপ্রতিষ্ঠা গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির প্রধান কাজ। পার্টি
সংবিধানে পার্টির চরম লক্ষ্য প্রতিষ্ঠার উপর বেশী গুরুত্ব আরোপ করা হয়। পার্টির লক্ষ্য হল
সমাজতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়ন করা। এ ব্যাপারে সাংবিধানিক ঘোষণা দেয়া আছে। সংবিধানে বলা
হয় পার্টির উদ্দেশ্য হবে শিল্প, কৃষি, প্রতিরক্ষা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সমাজতান্ত্রিক আদর্শ
বাস্তবায়ন। পার্টির দ্বাদশ কংগ্রেসে রাজনৈতিক বিষয়টি সমাজতন্ত্রের উপর বেশী জোর দেয়া হয়। কমিউনিস্ট পার্টি হল শ্রমিক শ্রেণীরই অগ্রবর্তী বাহিনী।
২। অভ্যন্তরীণ কাজ ঃ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। অভ্যন্তরীণ
কাজ পার্টির জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে পার্টি বিবিধ কাজ সম্পদন করে। এগুলো
হলঃ ক) চীনের জাতিসম‚হকে সমাজতান্ত্রিক আধুনিকীকরণের পথে নেতৃত্ব দান খ) উন্নত বৈষয়িক
সভ্যতার সঙ্গে সঙ্গে উন্নত সমাজতান্ত্রিক আদর্শ ভিত্তিক সভ্যতা গঠনের লক্ষ্য জনগণকে পরিচালিত
করা গ) সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রের উত্তরণের লক্ষ্য সমাজতান্ত্রিক আইনকে কার্যকরী করা এবং
জনগণতান্ত্রিক একনায়কত্বকে সুসংহত করার জন্য জনগণকে পরিচালিত করা ঘ) চীনের
জাতিসমূহের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠায় আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করা ও
ঙ) মাতৃভ‚মিকে একত্রীকরণের ক্ষেত্রে সহযোগীদের সঙ্গে বিস্তৃত ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক ঐক্য গড়ে
তোলা। চ) অর্থনৈতিক সংস্কারের গতিকে উন্নততর করে সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা
ছ) উৎপাদন ব্যবস্থাকে পুনর্বিন্যস্তকরা, কৃষি ব্যবস্থার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ ও বুনিয়াদী শিল্পের
বিকাশ সাধন। ঝ) চীনের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও সম্প্রসারিত
করা। এগুলো হল কমউিনিস্ট পার্টির মৌলিক অভ্যন্তরীণ কাজ।
৩। আন্তর্জাতিক কার্যাবলী ঃ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কতিপয় কার্যাবলী পালন করে।
এ কার্যাবলী সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। সাংবিধানকিভাবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কতিপয় নীতির উল্লেখ
রয়েছে। এগুলো হলঃ ক) ঔপনিবেশবাদ, সামাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এবং মানব প্রগতি
ও বিশ্বশান্তির স্বার্থে সকল দেশের শ্রমিক, নিপীড়িত জাতি ও জনগণের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা খ)
শক্তিশালী চীনের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক, স্বাধীনতা, ক্ষমতা ও অন্য রাষ্ট্রের
অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অন্যান্য দেশের কমিউনিস্ট ও ওয়ার্কাস পার্টির সঙ্গে চীনা
কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক স্থাপন। এগুলো হল বৈদেশিক মূল নীতি। এগুলোর আলোকে কমিউনিস্ট
পার্টি বিশ্ব রাজনীতে তার স্থান করে নিয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বশান্তিও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এ সংগঠনটি
বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করছে।
৪। প্রাথমিক সংগঠন সম্পর্কিত ভ‚মিকা ঃ কমিউনিস্ট পার্টি প্রাথমিক সংগঠনের বিশেষ ভ‚মিকা পালন
করছে। প্রাথমিক সংগঠনটি কমিউনিস্ট পার্টির একটি মূল ভিত্তি। এ প্রসঙ্গে সাংবিধানের ৩২ নং
ধারায় বলা হয় যে, পার্টিপ্রাথমিক সংগঠন সম্পর্কিত নি¤েœাক্ত কার্যাবলী পালন করে।
ক) পার্টির নীতি ও কর্মসূচী প্রচার ও কার্যকর করা ও ঊর্ধ্বতন পার্টি সংগঠনের ও স্ব-স্ব সিদ্ধান্তকে
কার্যকরী করা খ) পার্টি সদস্যদের মার্কসবাদ- লেনিনবাদ ও মাও-এর বক্তব্য অধ্যয়ন পার্টি সম্পর্কিত
জ্ঞান ও ব্যক্তি গত বৈজ্ঞানিক ও সাধারণ জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে সংগঠিত ও শিক্ষিত করা গ) পার্টির
সদস্য ও কাজকর্ম সম্পর্কে জনগণের আলোচনা ও মতামতকে মূল্য দেয়া এবং জনগণের স্বার্থ ও
আইন গত অধিকার রক্ষা করা ঘ) জনগণের ভেতর থেকে অগ্রণী ব্যক্তি ও প্রতিভা বের করে তাদের
উৎসাহ দেয়া ঙ) পার্টি সদস্যদের কাজকর্মের সমালোচনা ও আত্মসমালোচনার ভিত্তিতে দোষত্রæটি
খুঁজে বের করা এবং আত্মঘাতি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পার্টি সদস্য ও জনগণের মধ্যে বৈপ্লবিক সর্তক
সৃষ্টি করা।
৫। রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ঃ রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একটি বিশেষ কাজ। ১৯৭৮ সালের
চীনের সংবিধানে রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্বের কথা স্বীকৃত ছিল। কিন্তু
১৯৮২ সালের সংবিধানে এ অবস্থার অবসান ঘটান হয়। বর্তমানে রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও কমিউনিস্ট পার্টিকে
পুরোপুরি পৃথক করার নীতি স্বীকৃত। পৃথককীকরণের নীতির ভিত্তিতে কমিউনিস্ট পার্টি রাষ্ট্র
পরিচালনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়। কংগ্রেস এ নির্দেশকে বাস্তবে রূপ দেয়।
৬। সরকার নিয়ন্ত্রণ ঃ সরকার নিয়ন্ত্রণ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একটি মৌলিক কাজ। ঐ পার্টি রাষ্ট্রকে
নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন উপায়ে এ নিয়ন্ত্রণমূলক কাজ করে থাকে।
এগুলো হল ক. নির্বাচন ও সিদ্ধান্তপ্রদানের নীতি খ. চীনের পার্টি ও সরকার ব্যবস্থা উভয়েই কাঠামো
পিরামিড ভিত্তিক। এ কারণে সরকারী কাজকর্ম পার্টির আদর্শে পরিচালিত করা। গ. সরকারের বিভিন্ন
পর্যায়ে পার্টির সদস্যগণ আসীন থেকে সরকারী কাজ কর্মের তত্ত¡াবধায়ন করে থাকে।
চীনের পার্টি ও সরকার ব্যবস্থা উভয়েই কাঠামো পিরামিড ভিত্তিক।
৭। সামরিক কাজ ঃ সামরিক কাজ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সর্বশেষ কাজ। ৭৮ সনের সংবিধানে সশস্ত্র
বাহিনীর উপর কমিউনিস্ট পার্টির কতৃত্বপূর্ণ ও নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু ৮২ সনের সংবিধানে তা বাতিল
করা হয়। বাস্তবে সশস্ত্রবাহিনীর উপর কমিউনিষ্ট পার্টির ভ‚মিকা পূর্বের মত থাকে। সামরিক বাহিনীর
গণ-মুক্তি ফৌজের পার্টি সংগঠনগুলো কমিউনিষ্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ অনুসারে পরিচালিত
হয়। ফলে চীনের সামরিক বাহিনীর উপর কমিউনিষ্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণ দেখা যায়।
সারকথাঃ
কমিউনিষ্ট পার্টি গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের সর্বোচ্চ পার্টি। পুজিবাদী অবস্থা উত্তরণের লক্ষ্যে এ পার্টির জন্ম।
শ্রমিক শ্রেণীর একনায়কত্বপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ পার্টির আর্বিভাব। সোভিয়েত সমাজতন্ত্রপ্রতিষ্ঠার পর পরই
তুং সিউ ও মাও সেতুং এর নেতৃত্বে কমিউনিষ্ট পার্টির জন্ম। ১৯২১ সলের ১লা জুলাই মাত্র ৭০ জন সদস্য
নিয়ে এর পদচারণা। ধীরে ধীরে এ সংগঠনটি চীনা জনসাধারণের জনপ্রিয়তা অর্জন করে। অভ্যন্তরীণ
বিষয় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বিষয়ে এ পার্টির গুরুত্ব ও প্রভাব অপরিসীম।
সঠিক উত্তরে টিক () দিন।
১. পিকিং- এ মার্কসবাদী চক্রটি গড়ে উঠেক. ১৯১৭ সনে ; খ. ১৯২৫ সনে
গ. ১৯১৮ সনে; ঘ. ১৯৪০ সনে।
২. চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির সৃষ্টি হয়ক. ১৯২১ সনের ১লা জুলাই; খ ১৯২১ সনের ৫ই জুলাই
গ. ১৯২০ সনের ১লা জুন; ঘ. ১৯২১সনের ২রা মার্চ।
৪. কমিউনিষ্ট পার্টির প্রাথমিক সদস্য ছিলক. ৬০ জন; খ. ১০০ জন
গ. ৪০ জন; ঘ. ৭০ জন।
উত্তরমালাঃ ১। খ, ২। গ, ৩। ক, ৪। ঘ
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্নঃ
১। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ নীতিগুলো ব্যাখ্যা করুন।
রচনামূলক প্রশ্নঃ
১। গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ভ‚মিকা ও গুরুত্ব বর্ণনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]