অবস্থানগত বিচারে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ খ্যাত বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্তর্গত। এর বর্তমান আয়তন প্রায় ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে আধুনিক সভ্যতার সর্বত্রই মানবগোষ্ঠীর জীবন-সংস্কৃতির সাথে ভৌগোলিক পরিবেশের নিবিড় সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়েছে। ভূগোল প্রাকৃতিক অবস্থান নির্ণয় করে আর ইতিহাস মানবগোষ্ঠীর সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কার্যকর পরিচায়ক। তাই ঐতিহাসিক ঐতিহ্য, ভৌগোলিক অবস্থান ও সামাজিক আচরণের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। মানুষের কর্মকাণ্ড একটা ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে সম্পন্ন হয়ে থাকে বিধায় এ ৩টির সমন্বয়েই গড়ে ওঠে জাতি ও ভাষা এবং পরিণতিতে মানুষের জীবন-সংস্কৃতি। বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি আর বাংলা ভাষার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য; যেহেতু অবস্থান, ইতিহাস আর ভাষার সমন্বয় ঘটেছে।
বঙ্গ ও বাংলা নামের উৎপত্তি
Banga and Origin of the Name of Bangla
প্রায় ৮০ হাজার বর্গমাইল বিস্তৃত নদীবিধৌত পলি দ্বারা গঠিত এক বিশাল সমভূমি হলো এ বাংলা। প্রাথমিক পর্যায়ে একই ভূখণ্ডের মাঝে বিভিন্ন ভৌগোলিক নামের অবস্থিতি ছিল বিধায় বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি নিয়েও অনেক মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয় ।
কারও কারও মতে, বঙ্গ নাম থেকেই বঙ্গাল এবং পরবর্তীতে বাঙ্গালা নামের উৎপত্তি হয়েছে।
কেউ কেউ মনে করেন, অতীতে বং নামের এক জনগোষ্ঠী এ অঞ্চলে বসবাস করত এবং তাদের নামানুযায়ী অঞ্চলটি বঙ্গ নামে পরিচিতি লাভ করে ।
মুসলিম ধর্মীয় কাহিনি অনুসারে হযরত নুহ (আ.)-এর এক পুত্র হাম এবং হামের পুত্র হিন্দের ৪ পুত্র ছিল যথাক্রমে ১. পূরব, ২. বঙ (বং), ৩. দাকন, ৪. নাহরাওয়াল।
হিন্দের ২য় পুত্র ‘বঙ’ (বং) এ উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলে বসতি স্থাপন করলে বঙের বংশধরদের বসতি বা আবাসস্থলের নাম হয় 'বঙ্গ' অর্থাৎ বঙের বংশধরদের আবাসস্থলই 'বঙ্গ' নামে পরিচিত।
অপরদিকে, অনেক হিন্দু ঐতিহাসিক ধর্মশাস্ত্রের বা পুরাণের ভিত্তিতে উল্লেখ করেন যে, বলী রাজার ঔরষে ও রানি সুদেষ্ণার গর্ভে জন্মলাভ করা ৫ পুত্র- অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, পুণ্ড্র ও সুহ্মের মধ্যে বঙ্গের নামানুসারেই তাঁর অধিকৃত অঞ্চল বঙ্গ নামে পরিচিতি লাভ করে ।
খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতকে ঐতিহাসিক মুনি কর্তৃক রচিত ‘ঐতরেয় আরণ্যক' গ্রন্থে সর্বপ্রথম বঙ্গ নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। মুসলমান পূর্ব যুগে ব্যাপক অর্থে বাংলা বা বাঙ্গালার ব্যবহার পাওয়া যায় না। ঐ সময়ে বঙ্গ বা বঙ্গাল দ্বারা বাংলার অংশ বিশেষকে নির্দেশ করা হতো। ঐতিহাসিক শামস-ই-সিরাজ আফীফ সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহকে “শাহ-ই- বাঙ্গালা’ ‘শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান' অর্থাৎ ‘সুলতান-ই-বাঙ্গালা' রূপে আখ্যা দিয়েছেন ।
মূলত এ সময় থেকেই 'বাঙ্গালা' নামের প্রচলন শুরু হয়েছে। মুঘল আমলে এ ভূভাগ 'সুবাহ বাঙ্গালা' বলে পরিচিতি পেয়েছিল। সম্রাট আকবরের সভাসদ ও 'আইন-ই-আকবরী' গ্রন্থের প্রণেতা আবুল ফজল 'বাঙ্গালা' নামের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, বাঙ্গালার আদি নাম ছিল 'না'। প্রাচীনকালে এখানকার রাজারা ১০ গজ উঁচু ও ২০ গজ বিস্তৃত প্রকাণ্ড বাঁধ বা 'আল' নির্মাণ করতেন। 'বা' শব্দের সাথে 'আল' যোগ হয়ে রঙ্গাল, বাঙ্গাল বা বাঙ্গালা নামের উৎপত্তি হয়েছে। সুকুমার সেন মত প্রকাশ করেন যে, বঙ্গ থেকে 'বাঙ্গালা' বা 'বাঙ্গালাহ'র উৎপত্তি হয়েছে। 'বাালা' নামটি মুসলমান অধিকারকালে সৃষ্ট এবং ফরাসী 'বাঙ্গালা' থেকে পর্তুগীজ 'বেঙ্গালা' ও 'ইংরেজি 'বেতাল' শব্দটি এসেছে। পরবর্তীকালে বাঙ্গালা কিংবা বাংলা যা ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজি ভাষায় 'বোল' (Bengal) বলেই প্রায় দুইশ বছর পরিচিতি লাভ করেছে।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত